অনুভবে তুমি পর্ব ২০
লিজা মনি
এরপর আহিয়া ইয়ানাকে নিয়ে আহানের রুমের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় আর বলে,,,,,
“””” এটা দাদাভাইয়ের রুম। আজ থেকে তোমার ও। দাদাভাই কখনো নিজের রুমে কাউকে ডুকতে দিতো না। আর আজকের রাতের জন্য শুভেচ্ছা বউ মনি। এখন আমি যাই।
আহিয়া এইখান থেকে চলে যায়। ইয়ানা একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে ভিতরে ডুকে। ভিতরে ডুকতেই ওর চোখ চরুকগাছ।ভয়ে আত্না কেপে উঠে। আহান নিজের হাতের তালুতে চাকু দিয়ে একের পর এক আঘাত করে যাচ্ছে। পুরো ফ্লোর রক্তে লাল হয়ে গেছে। আর মেঝেতে সমস্ত কাচের ছড়াছড়ি। ইয়ানার রক্তে ভীষন রকমের ফোবিয়া আছে।
তাই চিৎকার দিয়ে বলে,,,,,,
“” আহান কি করছেনটা কি। হাত থেকে এখনি ছুরিটা ফেলুন বলছি।”””
কিন্তু আহান ইয়ানাকে দেখে আরো দিশেহারা হয়ে পরে। তাই এইবার আগের তুলনায় বেশি জোরে আঘাত করে। ফলে মাংস ভেদ করে তাজা রক্ত পড়তে থাকে। ইয়ানার এইসব দেখে মাথা ঘুরতে থাকে। তারপর অস্পষ্ট ভাষায় বলে,,,
“”” প্লিজ আহান স্টপ।বন্ধ করুন আপনার এই পিশাচিক রুপ। আমি যাস্ট নিতে পারছি না। নিজের দেহে কিভাবে কোনো সুস্থ মানুষ এইভাবে আঘাত করে। এখনি বেন্ডেজ করে নিন বলছি। দেখেই আমার ঘা গুলিয়ে আসছে”””””
আহান যখন কোনো রেসপন্স করে নি তখন ইয়ানা নিজেই আহানের হাত বেন্ডেজ করে দেয়। আহান ইয়ানার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে কিন্তু হঠাৎ করেই চোখ মুখের রং বদলাতে থাকে। বার বার চোখে ভেসে উঠছে ইয়ানা আরেকজনের সামনে বউ সেজে বসে ছিলো। এই শাড়িটা পরেই বসেছিলো। তারপর ইয়ানার দিকে রাগী দৃষ্টি নিক্ষে করে বলে,,,,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“”” শড়ি খুলো? ”
ইয়ানা আচমকা এমন প্রশ্ন শুনে ভরকে যায়। তাই আহানের দিকে কপাল কুচকে বলে,,,,,
“” শাড়ি খুলবো মানে? মাথা ঠিক আছে আপনার।”””
আহান ইয়ানার দিকে ক্ষিপ্ত হয়ে বলে,,,
“” মাথা আমার ঠিক আছে বউ। কিন্তু তুমি যদি এখন শাড়িটা না পাল্টাও জানি না কতসময় মাথা ঠিক থাকবে।””
আহানের মুখে বউ ডাক শুনে এক শীতল হাওয়া বয়ে যায়। তারপর কিছু একটা ভেবে বলে,,,,,
“”আপনি আমার শাড়ির পিছনে পড়ে আছেন কেনো। আর আপনার কথায় আমি শাড়ি পাল্টাতে যাবো কেনো।উমম আপনি জানেন এই শড়িটা আমাকে আমার হবু বর কিনে দিয়েছিলো। আমার খুব পছন্দের শাড়ি এইটা। তাই আজ আর খুলছি না।”””
এইদিকে আহান রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। পাশে থাকা টেবিলটা লাথি মেরে ফেলে দেয়। তারপর ফুলদানিটা হাত দিয়ে সজোরে আঘাত করে।ফলে আগের ক্ষতস্থান থেকে পুনরায় রক্ত পড়তে শুরু করে।ইয়ানা আহানের হাত দেখে আতকে উঠে।তারপর চিৎকার দিয়ে বলে,,,,,
“” আপনি মাফিয়া জানতাম। মানুষ মারা আপনার কাজ।কিন্তু এই জড় বস্তুগুলোর সাথে আপনার কিসের সত্রুতা। ওদেরকে কেনো পরোপারে পাঠাচ্ছেন ।আমাকে কিছু করতে পারছেন না সেই রাগ এগুলোর উপর মিটাচ্ছেন।
ইয়ানা আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই আহান ইয়ানার ঠোঁট নিজের ঠোঁট ধারা চেপে ধরে।ইয়ানার উষ্ঠ আহানের উষ্ঠের সাথে এক করে নিলো। তারপর ইয়ানার দুটি হাত দেয়ালের সাথে চেপে ধরে।তাদের দেহের উষ্নতা একে অপরের সাথে মিশে যাচ্ছে।আহান নিজেকে হারিয়ে ফেললো এক গভির জগতে। ইয়ানা একটা ঘোরের মধ্যে ছিলো। কিন্তু আহানের এই বেসামাল অত্যাচারে নিজের হুস ফিরে। ইয়ানা ছটফট শুরু করে। আহান এইবার ইয়ানাকে এক হাত দিয়ে কোমর চেপে ধরে। এতটা জোরে চেপে ধরেছিলো যেনো ইয়ানার কোমরের হারগুলো ভেঙ্গে যাবে। ইয়ানা অস্বস্তি আর রাগে ছটফট শুরু হয়। আহানের চুম্বন গভির থেকে আরও গভীর হয়।এই চুম্বনে লুকিয়ে আছে রাগ ক্ষোভ আর অনেকদিনের তৃষ্না। কিন্তু ইয়ানার চোখে ছিলো শূন্যতা। অনেক্ষন পর আহান ইয়ানাকে ছেড়ে দেয়। আহান বড় বড় শ্বাস টেনে নিজের ঠোঁট ভিজিয়ে নেয়। যে করেই হোক নিজেকে এই অদম্য ইচ্ছা থেকে আটকাতে হবে।আহান লক্ষ্য করে ইয়ানার ঠোঁট থেকে রক্ত ঝরছে।
সে ইয়ানার ঠোট মুছে দেওয়ার জন্য উদ্যত হতেই ইয়ানা আহানের হাত চেপে ধরে বলে,,,,,,
“” আচ্ছা ইসলামে স্বামীদের উপর আঘাত করা নিষেধ করেছে কেনো বলোনতো।”””””
আহান কপাল কুচকে বলে,,,,
“” মানে? “”
ইয়ানা এইবার আহান থেকে একটু দুরে সরে গিয়ে বলে,,,,,
“”” এই যে দেখুন আপনি আমাকে প্রথম দিন থেকে অত্যাচার করছেন এখনো আছেন। ভালোবাসেন না তবুও নিজের জেদের কারনে জোর করে বিয়ে করে নিলেন। আপনার অত্যাচার শুধু আমাতেই সিমাদ্ধ রাখেন নি। আমার ছোট বোনটাকে ও এর মধ্যে জড়ালেন। কিন্তু দেখেন আমি কিছুই করতে পারছি না। কেনো আহান কি করেছি আমি? কিসের শত্রুতা আপনার সাথে আমার? ইয়ানা কথা বলতে গিয়ে গলা কাপছিলো। কারন ইয়ানা আহানকে মনে মনে পছন্দ করতো। তাইতো একবার ভাই ডাকতে বারন করেছিলো বলে আর ডাকেনি। ফের প্রশ্ন ও করে নি কেনো ভাই ডাকতে নিষেধ করেছে। কিন্তু আজ যখন এত বড় সত্ত্যের সম্মুখীন হলো তখন ভিতর থেকে চুর্মার হয়ে যায়।
আহান ইয়ানার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে,,,,
“” শাস্তি দিতে চাও আমাকে হুম। সময় হলে সেটা ও মঞ্জুর করে নিবো। কিন্তু এখন এইটা সম্ভব নয় বউ ।তোমার বোনের কিছু হবে না।আর সময় হলে সব জানতে পারবে। ঠিক আছে তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও আমি খাবার নিয়ে আসছি।””””
ইয়ানা রাগী কন্ঠে বলে উঠে,,,,
“” একদম আমাকে বউ বলে ডাকবেন না। আর আমি খাবো না। আপনার খাবার আপনি খান।””
আহান একটা মুচকি হাসি দয়ে আহত সুরে বলে,,,,
“” বিয়ে করা বউকে বউ ডাকবো নাতো খালাম্মা ডাকবো।
আমাদের বাচ্চার কথা ও একটু ভাবো বউ । ওরা কি ডাকবে।”””
ইয়ানা আহানের দিকে রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাকায়। আহান ও ইয়ানাকে একটা চোখ মেরে চলে যায়।
ইয়ানা মনে মনে বির বির করে বলে,,,
“” অসভ্য””
একটু পর আহান ইয়ানার জন্য খাবার নিয়ে আসে। ইয়ানা খাবার দেখে নাক মুখ কুচকে বলে,,,,
“” খাবো না “””
আহান ইয়ানার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,
“”” জিজ্ঞাসা করে নি। আদেশ করেছি। তাই চুপচাপ খেয়ে নাও। মনে হয় সকাল থেকে কিছু খাও নি। এখন না খেলে শরীর খারাপ করবে।”””
ইয়ানা আহানের দিকে তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে,,,
“” বাহহহ কি মায়া। আর একটু আগে আমার পুরো পরিবারকে কাদিয়ে দিয়ে এসেছেন। জানি না ওরা কি অবস্থায় আছে। আমার পরিবার আমার শরীর আহান। শরীরকে আলাদা করে এখন তার ছায়ার জন্য শুভ কামনা করছেন মি, চৌধুরি।”
আহান ছেড়ে একটা নিশ্বাস বলে,,,
“” তুমি না ভালোভাবে বুঝার মেয়ে ওই না। আস্ত একটা ঘার ত্যারা। আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি এর মধ্যে যদি খাবার খাওয়া শেষ না করো তাহলে বিডিওর কথা মনে আছে নিশ্চয়
।
এই বলে আহান ওয়াশরুমে চলে যায়। কিছুক্ষন পর শাওয়ার নিয়ে এসে দেখে ইয়ানা খাবার শেষ কতে খাটের একপাশে চুপচাপ সুয়ে আছে। আহান একটা মুচকি হাসি
দিয়ে চলে যায় বেলকোনির দিকে।এত রাতে আহান নিকোটিনের ধোয়া উড়াতে ব্যস্ত।কিন্তু হঠাৎ আহানের ফোন বেজে উঠে। আহান যেনো এই ফোনের ওই অপেক্ষা করছিলো।
আহান ফোন তুলে বলে,,
” হুম আরিফ বল। মি, আসাদ হোসেনের শরীর এখন কেমন আছেন “”
আরিফ :: খুবি সংকীর্ন অবস্থা ছিলো। এখন আলহামদুলিল্লাহ বিপদ মুক্ত।
আহান :: ঠিক আছে তুই ওইদিকটায় সামলে নিস।
তারপর আহান এক দৃষ্টিতে পর্দার আড়ালে ইয়ানার ক্লান্ত মুখশ্রির দিকে তাকিয়ে থাকে। এই মুখটার দিকে তাকালে আহানের সমস্ত রাগ নিশ্বেস হয়ে যায়। সমস্ত ক্লান্তি কোথায় জানি বিলীন হয়ে যায়।
রাতের এক কালো অধ্যায় কে বিদায় জানিয়ে নতুন দিনের সূচনা হয়। সূর্যের এক ফালি কিরন মুখের উপর পরতেই ইয়ানা পিটপিট করে চোখ মেলে তাকায়। তারপর লক্ষ্য করে এইটা তো ওর রুম নয়। এর পর আস্তে আস্তে কালকের সকল ঘটনা মনে পড়ে যায়। ইয়ানা নক মুখ কুচকে চারদিকে তাকায়। নাহ ডেবিলটা মনে হয় রুমে নেয়। তাহলে কি এত সকালে অফিসে চলে গেলো। যায় হোক আমার ভেবে এত লাভ নেয় পারলে জাহান্নামে যাক। ইয়ানা এইসব সাত পাচ ভেবে নিচে নামে।
দেখে পুরো ড্রয়িং রুম ফাকা। তার মানে কি তারা এখনো ঘুম থেকে উঠে নি। আর আমার আম্মু সকাল ৫ টা থেকে ঝাড়ুপিটা শুরু করতো। সে যাই হোক আমি তো এই বাড়ির বৌ। এই পরিবারের লোকগুলো ডেবিলটার মতো না। কাল যতটুকু দেখলাম তারা যথেষ্ট ভালো আছে। ইয়ানা এইসব ভাবতে ভাবতে গিয়ে রান্না বসায়।
একটু পর আহিয়া এসে ইয়ানার কাছে গিয়ে বলে,,,,,
“” আল্লাহ কি করছো এইসব বউমনি। তুমি এই বাড়ির বউ তুমি কেনো রান্না করছো। বাসায় অনেক সার্ভেন্ট আছে। যদি দাদাভাই জানতে পারে তুমি রান্না করছো তাহলে বাড়িতে ঘুর্নিঝর শুরু করে দিবে। আমরা একটু আগেই নাস্তা করে উপরে গিয়েছি। তোমাকে ডাকতে চেয়েছিলাম কিন্তু দাদুমনি দেয় নি। কাল অনেক ঝড় গেছে হয়তো তুমি ক্লান্ত। কাল রায়ান আর ইউভি ভাইয়ার মুখে যা শুনলাম ওহহ মাই গড।”””
ইয়ানা আহিয়ার দিকে তাকিয়ে অসহায় হয়ে বলে,,,,
“” তোমার দাদাভাই কি বললো তাতে কিছু যাই আসে না।
আর আমি এত দেরি করে ঘুম থেকে উঠলাম। ইসস বাড়ির নতুন বউ নাকি সবার পরে উঠেছে।””
আহিয়া ইয়ানার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে বলে,,,,
“” কোনো বেপার না বউমনি। কেউ কিছু মনে মরে নি। আর আমরা আমরাইতো কে মনে করবে শুনি।””
ইয়ানা আহয়ার কথা শুনে ফিক করে হেসে দেয়।
আহিয়া ইয়ানার দিকে তাকিয়ে বলে,,,
“” সে কি বউ মনি তুমার ঠোটে কি হয়েছে। মনে হচ্ছে কেটে গেয়েছিলো। এখনো ফুলে লাল হয়ে আছে।””
ইয়ানা আহিয়ার কথা শুনে অপ্রস্তুত হয়ে পরে। তারপর কথা ঘুরিয়ে বলে,,
“” আসলে কাল গহনা পড়তে গিয়ে একটু লেগে গেয়েছিলো। আচ্ছা আহিয়া তুমি কিসে পড়ো।”””
আহিয়া হাসি দিয়ে বলে,,,
“” আমি এইবার টেনে পড়ি””
ইয়ানার মুচকি হাসি দিয়ে বলে,,,
“” তাই। আচ্ছা তুমার দাদাভাই কোথায় গেছে বলতে পারো।””
আহিয়া ::: “কোথায় গিয়েছে বলতে পারি না। কিন্তু আজ একটা জরুরি মিটিং ছিলো। বাহিরের কম্পানির সাথে আব্বুর থেকে শুনেছি আরকি। একটু পর ওই চলে আসবে।”
তারা গল্প করতে করতে রান্না শেষ করে। দাদুমনি এসে ও ইয়ানাকে রান্না করতে বারন করেছিলো। কিন্তু ইয়ানা দাদুমনিকে ও মানিয়ে নেয়।
সবাই ডাইনিং রুমে খবার খেতে বসে। একটু পর আহান ও বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে। ইয়ানার দিকে এক পলক তাকিয়ে উপরে চলে যেতে নেয়।পছন থেকে দাদুমনি বলে,,,,,
“” আহান আজ ইয়ানা নিজের হাতে রান্না করেছে। আজ অন্তত সবার সাথে বসে খেয়ে নেও।””
আহান পিছন ফিরে বলে,,,
“” ইয়ানা রান্না করেছে বলে খাবার তো আর অন্যরকম হয়ে যাবে না তাই না। আমার খাবার পারলে উপরে পাঠিয়ে দাও”” বলেই উপরে চলে যায়। দাদুমনি একটা তপ্ত নিশ্বাস ফেলে। তারপর ইয়ানার দিকে তাকিয়ে বলে,,,
“” তুমি কষ্ট পেয়ে ও না। আসলে ও কারো সাথে বসে খায় না। এক কাজ করো তুমি খাওয়া শেষ করে আহানের খাবারটা রুমে নিয়ে যাও।””
ইয়ানা একটা হাসি দিয়ে বলে,,,
“” সমস্যা নেয় দাদুমনি। আপনারা খান আমি ওনার খাবারটা নিয়ে যাচ্ছি। আমি পরে খেয়ে নিবো।”””
এইবলে ইয়ানা আহানের জন্য খাবার নিয়ে উপরে যায়। ইচ্ছা তো করছে বেটার মাথা ফাটাতে। সবার সাথে বসে খেলে কি শরীরে অলার্জি শুরু হয়। ডেবিল একটা। ইয়ানা রুমে এসে দেখে আহান নেই। গেলো কোথায় এই সাইকো। একটু পর ওয়াশরুম থেকে পানির শব্দ আসে। ইয়ানা নাক মুখ কুচকে বলে,,,,,
“” কতবার শাওয়ার নেয় এই লোক। সকালে ওইতো শাওয়ার নিয়ে গেলো।””
ইয়ানার ভাবনার মাঝে আহান দরজা খুলে বাহিরে আসে। সদ্য গোসল করা শরীর দেখে ইয়ানা হা করে তাকিয়ে থাকে। এত সুন্দর ও মানুষ হয়। ইয়ানাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে আহান ঠুট চেপে হাসি আটকিয়ে রেখে বলে,,,,
“”হ্য দেখো দেখো তোমার ওইতো বর হয়। কোনো মহিলাতো আর ছিনিয়ে নিচ্ছে না। তুমি চাইলে আমি টাওয়ালটা ও খু…..
আহানকে আর কিছু বলতে না দিয়ে ধমক দিয়ে বলে,,,,,
“” চুপ ” অসভ্য একটু লজ্জা বলতে কিছু নেয়।খাবারটা খেয়ে নিন। আর কতবার শাওয়ার নিতে হয় আপনার।
আহান ইয়ানার সামনে এসে বলে,,,,
” একটু আগে বউয়ের সাথে রুমান্স করছি তাই হালাল ভাবে শাওয়ার নিয়েছে। আর আমি তোমার মতো লজ্জাশীল হলে রায়ানের ছেলেকে আমার মেয়ের জামাই বানাবো কি করে মেডাম।””
ইয়ানা আহানকে দাতে দাত চেপে বলে,,,
“” নির্লজ্জ লোক। আর একটা কথা বললে আপনার মাথা ফাটাবো। এই ধরুন খাবারটা খেয়ে নিন।””
আহান কাদো কাদো ফেইস করে বলে,,,,
“” খাবারতো দিয়ে গেছো কিন্তু খাবো কিভাবে?”
ইয়ানা বিরক্তি নিয়ে বলে,,,,
“” খাবেন কিভাবে মানে? হাত কি অরেকজনকে ভিক্ষে দিয়ে এসেছেন “””
আহান ইয়ানার কথ শুনে বলে,,,,,
“” ঠিক আছে খাবার নিয়ে চলে যাও। খাবো না হাত কেটে গিয়েছে।””
ইয়ানা আহানের দিকে কপাল কুচকে বলে,,,,
“” আমার জানা মতে তো আপনি হাত দিয়ে খাবার খান না। চামচ ব্যবহার করেন। তাহলে হাত কেটে যাক বা ভেঙ্গে যাক কি যায় আসে।”
আহান ইয়ানার কথায় থমথমে খেয়ে যায়। কি সাঙ্ঘাতিক মেয়েরে বাবা স্বামীর হাত ভাঙ্গার কামনা করছে।
আহান একটু রাগের ভাব নিয়ে বলে,,,,
“” দেখো আমি যদি খেতে পারতাম তাহলে নিশ্চয় এইসব বলতাম না। যদি খাইয়ে দিতে পারো তাহলে দিতে পারো। নয়তো খাবো না। আর এমনিতে আমি কাল থেকে কিছু খায় নি। বলেই আহান একটা রহস্যময় হাসি দেয়।
ইয়ানা আহানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,
“” অসম্ভব আমি আপনাকে খাইয়ে দিতে পারবো না। খাওয়া দরকার নেই আপনার। “”
এই বলে ইয়ানা চলে যেতে নেয়,,, পিছন থেকে আহান বলে,,,,
“” হায় কি কপাল আমার তিনদিন অভুক্ত থাকলেও কেও খবর নেয় না “”
তারপর ইয়ানা কিছু একটা ভেবে আহানের সামনে এসে দাতে দাত চেপে বলে,,,
“” ঠিক আছে বসুন “”
আহান ও খুশিতে গদগদ করে ইয়ানার সামনে দিয়ে বসে।
ইয়ানা আহানকে খাইয়ে দিচ্ছে। আহান শুধু খেয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে কত দিনের অভুক্ত। ইয়ানা মনে মনে রেগে বলে,,,,,
“” দেখো রাক্ষস কিভাবে খাচ্ছে। কয়েক কেজি মরিচের গুরো মেশালে ভালো হতো। একবার খাবারে প্রশংসা করলে কি হতো। দুর আমি ও কার কাছে প্রসংশা চাচ্ছি।””
আহান খাবার শেষ করে বলে,,,
রান্নাটা কে করেছে বলোতো। এই রান্নার মধ্যে ঝাল ঝাল গন্ধ পাচ্ছি। কেউ মরিচের গুড়ো মিশাতে চেয়েছিলো মনে হয়।
ইয়ানার ইচ্ছে করছিলো আহানের মাথা ফাটাতে। খচ্চর লোক খাওয়ার সময় খেয়েছিস আর এখন বদনাম করছিস। তারপর ইয়ানা অভিমানী কন্ঠে বলে,,,,,,
অনুভবে তুমি পর্ব ১৯
“”” খাবার যখন ভালো লাগে নি। তাহলে খেতে বলেছিলো কে। কেও তো আর জোর করে নি।””
বলেই ইয়ানা হন হন করে রুম ত্যাগ করে।
আহান কপাল কুচকে বির বির করে বলে,,,,,
“” আমার বউ যে এত ভালো রান্না করতে পারে আগে তো জানতাম না। আর বউ কি আমার অভিমান বা রাগ করলো। প্রশংসা করি নি বলে। তাহলে ঠিক আছে এই রাগ কোনো একদিন ভাঙ্গাবো সারপ্রাইজ দিয়ে।””