অনুভবে তুমি পর্ব ৫৭
লিজা মনি
ইয়ানা — আমি ওনাকে একবারের জন্য চলে আসতে বলি নি। আমি শুধু চাই পাপাচার থেকে যেনো বেরিয়ে আসে। কাউকে মেরে ফেলা, খুন করা, কালো বাজার এইসব থেকে জেনো নিজেকে আড়াল করে ফেলে। ওনি মাফিয়ার শক্তি কাজে লাগিয়ে ভালো কাজ করুক মানা তো আর করছি না। সবাই বলে মাফিয়া মানেই খারাপ কিন্তু ওনি একজন লিডার হয়ে ভালো কাজ করুক। দেখিয়ে দিক যে সব মাফিয়ারা খারাপ হয় না। যেদিন কালো জগৎ থেকে নিজেকে বের করতে পারবে ওইদিন আমি ফিরব ওনার জীবনে এর আগে নয়। ভালো থাকবেন আপনারা সবাই।
ইয়ানা দরজার চৌকাঠে পা রাখতেই আহান শান্ত কন্ঠে বলে,,,,,
” আমার পাপের রাজত্য থেকে বাঁচার জন্য চলে যাচ্ছো কিন্তু বাহিরে যখন পা রাখবে তখন হাজারটা হিংস্র হাতের দাবানলে যখন পরবে তখন বাঁচাতে পারবে তো নিজেকে.
আহানের কথা শুনে ইয়ানা তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে,,,
” আমি যেমন একজন নারী ঠিক তার সাথে আমি একজন মা। আপনার পাপকে সহ্য করেছি বলে ভাববেন না সবাইকে সুযোগ দিব। শুধু ছুয়ে দেখুক প্রান নিয়ে আর বাড়ি পর্যন্ত যেতে পারবে না। নিজেকে তো আর শেষ করতে পারি না। আমি নিশ্বেস হয়ে গেলে আমার ছেলেটাও ঠিক আপনার মত করে গড়ে উঠবে।
ইয়ানা কান্নার ফলে গলায় বার বার গলায় কথা আটকে যাচ্ছে। তার পর ও নিজেকে ঠিক করে কাপাকাপা গলায় বলে,,,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
” আপনাকে মারতে পারি নি আমার ছেলে বাবা হারা হবে বলে। আমি ভালো বাসি বলে। নাহলে হয়ত সবকিছুর ওই সমাপ্তি ঘটাতাম একজনকে শেষ করে। ”
ইয়ানার কথা ঘরের প্রত্যাকটা মানুষের কর্নে বাজপাখির ন্যায় ঠেকে। ইয়ানা কিভাবে আহানের মৃত্যুর কথা বলতে পারলো।
আহান অবিশ্বাস্য নজরে ইয়ানার দিকে তাকায়। আজ সে কাকে দেখতে পাচ্ছে। আহানের সামান্য আচঁরে বিচলিত হয়ে যাওয়া মেয়েটা আজ অনায়াসে তার মৃত্যুর কথা বলছে।
ইয়ানা ও রাগের বশে কথাটি বলেছে। কিন্তু এখন নিজের ওই হৃদয় হাহাকার করছে কি বলে ফেললো ও। তারপর ও নিজেকে ঠিক রেখে সবার দিকে এক নজর তাকায়।
ইয়ানা সবার তাকানো দেখে মেকি হাসি দিয়ে বলে,,,
” সবাই ভাবছেন কিভাবে বললাম এই কথা। সত্যি কি করে বলতে পারলাম আমি এই কথা? কিন্ত কেনো জানি আজ মুখে কিছুই আটকাচ্ছে না। ক্লান্ত হয়ে পড়েছি আমি প্রতিদিন এত ভিবৎষ্য মৃত্যুর সম্মুখীন হয়ে। কিন্তু ওনার তো তাতে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। ওনি নিজেকে ছাড়া কাউকে ভালোবাসেন না। আচ্চা আপনি কি শুধুই জানোয়ারের মত মানুষ খুন করেন? মাফিয়ারা তো আর ও অনেক কিছু করর এই ধরুন নারী পাচার তাদের উপর নির্যাতন , শিশু পাচার আর ও অনেক কিছু আছে আপনি কি এইসব ও করেন।
রায়ান —- কি সব বলছো এইসব ইয়ানা। তুমি এখন নিজের মধ্যে নেই। আহান এইসব কিছু করে না।আর খুন বলতে শুধু দেশের নরখাদক গুলাকে শেষ করে। বিনা কারনে কোনো লাশ এখন ও এসিডে ডুবে নি।
ইয়ানা রায়ানের দিকে তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে,,,,
” খুন,, খুন ওই হয়। তার জন্য আইন আছে ওনার হাত কেনো রক্তাক্ত করতে হবে? আর আপনি ও তো রকজন আইনের কর্মী তাহলে আপনি কিভাবে এইসব সহ্য করছেন ভাইয়া? নিজের বন্ধুকে কি একবার বুঝানোর প্রয়োজন মনে করেন নি?
ইয়ানার কথা রায়ান মাথা নিচু করর ফেলে। আহানের উপর দিয়ে কথা বলার সাহস আছে নাকি কারোর। পুলিশগুলো ও তার ভয়ে আতঙ্ক হয়ে থাকে। কে বুঝাবে আহানকে সেই ক্ষমতা যে এখন ও কারোর হই নি।
ইয়ানা নিজের চুখের পানি মুছে ঠিক আহানের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে অশ্রুভেজা নয়নে বলে,,,,
” আজ আমি আপনার কাছে শেষ বারের মত একটা কথা জিজ্ঞাসা করছি উত্তরটা সত্যি সত্যি দিবেন?
আহান এতক্ষন চেয়ারে শক্ত করে দাঁড়িয়ে ছিলো। ইয়ানার কথা শুনে ইয়ানার দিকে তাকায়।
আহান — কি?
ইয়ানা — বলুন না দিবেন কি না?
আহান — হুম।
ইয়ানা — আপনার এই হাত কি আমাকে ছাড়া পরনারীকে স্পর্শ করেছে? আপনি কি কখনো নারী নিয়ে তামাসা করেছেন? দেশের সবাই জানত আপনি নারীদের দিকে ফিরে ও তাকান না কিন্তু অন্ধাকার টর্চার সেলের খবর তো আর কেউ জানে না। যেখানে হাজার ও মানুষের আর্তনাদ আর রক্তের দাগ লেগে আছে। বলুন না আমাকে ছাড়া কি আপনি পরনারীকে স্পর্শ করেছেন।
ইয়ানার কথা শুনে আহান মেকি হাসি দিয়ে বলে,,,
” এতটা অবিশ্বাস কর তুমি আমাকে? এত অবিশ্বাস মনের মধ্যে রেখে ও এই পাপিষ্ঠ হাতের ছোয়া নিজের শরীরে লাগালে কেনো?
ইয়ানা — প্রথমে তো লাগাতে চাই নি। ওই যে বললাম ভালোবেসে ফেলেছিলা। এই পাপিষ্ঠ হাত যখন আমাকে আলিঙ্গন করত তখন নিজেকে জীবনের সবচেয়ে ভাগ্যশালী মনে করতাম।ভেবেছিলাম পাপিষ্ঠ হাত তো কি হয়েছে একদিন আমার পবিত্রতা তাকে পবিত্র করে তুলবে। কিন্ত আমি আজ ব্যর্থ হয়ে আপনার সামনে দাঁড়িয়ে আছি অগ্নি, চৌধুরি। আমার পবিত্র মনের ভালোবাসা আপনাকে আলোর সন্ধান করাতে পারে নি।
ইয়ানা ইয়াজকে বুকের সাথে চেপে ধরে বলে,,,
“” আমার উত্তরটা কিন্তু পাই নি। আশা করি হিয়ালি না করে দিয়ে দিবেন।
আহান — যখন পুরো জীবন ওই পাপাচারে লিপ্ত তখন এই কাজ আর বাকি থাকবে কেনো?
আহানের কথা শুনে ইয়ানা দু কদম পিছিয়ে যায়। মাথায় যেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়ছে। চিৎকার দিয়ে বলতে ইচ্ছে করছে তার আহান এমন না। সে তো তার স্বামীকে চিনে হাজার খারাপ কাজ করলে ও নারী সঙ্গ দিতে পারে না। ইয়ানা এই প্রশ্নটা আহানকে অনেকবার করতে চেয়েছিলো। এমন কি তাদের একান্ত মুহূর্তে একবার এই প্রসঙ্গ নিয়ে কথা তুলে কিন্তু আহান সম্পূর্ন রুপে এড়িয়ে যায়। ইয়ানা ও আর কিছু বলে নি আহান রেগে যাবে বলে।
ইয়ানা — তাহলে এখান ও আমাকে বাজেভাবে ঠকিয়েছেন? আমি ও কি বলছি এখানে ঠকানোর কি আছে। মাফিয়া তো আপনি এইসব তো আপনাদের জন্য পানি ভাত। হাজার টা মেয়ের সঙ্গ দিবেন এইটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মাঝপথে আপনার এই পাপাচারে আমি আর আমার ছেলে কলঙ্কিত হয়ে গেলাম। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস তাই না আমি যে মেয়ে কোনোদিন অন্যায় দেখলে সহ্য করতে পারতাম না আজ সে একজনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে যার শির দাঁড়ায় শুধু কালো রক্ত বিদ্যামান।
ইয়ানার কথা শুনে আহানের আজ রাগ হচ্ছে না। কেনো জানি কথা গুলা ঠিক কলিজায় গিয়ে বিধছে। ইয়ানার মুখ থেকে প্রত্যেকটা শব্দচায়ন তীরের ফলার মত হৃদয়ে গেথে যাচ্ছে। এতটা অশান্তি কেনো হচ্ছে আজ। কিন্তু অগ্নি চৌধুরির তো এত খারাপ লাগার কথা না।
আহান — কিন্ত আমি তো তোমাকে ছাড়া আর কোনো মেয়েকে স্পর্শ করি নি।
ইয়ানা চমকে উঠে এই মাত্র ওই তো বলল আহান অনেক নারীর সঙ্গ দিয়েছে। এখন আবার না করছে।
ইয়ানা — ঠাট্টা করছেন আমার সাথে? এখন বলেছেন এখন আবার না করছেন।
আহান মুচকি হাসি দিয়ে বলে,,,,
” দেখছিলাম তোমার রিয়াকশন কি হয় । তবে তোমার চোখে ব্যাকুলতা ও দেখেছি।
ইয়ানা — আমার ইমোশন নিয়ে মজা করছেন তাই না। বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে আজ। কে জানে কয় জন মেয়ের রক্তাক্ত দেহ এই বদ্ধ টর্চার রুমে ছিলো।
আহান — এতটা অবিশ্বস। আমার প্রতি এতটা বিশ্বাস কোথায় গিয়েছে আজ। আমি মেয়ে ভুক্ত কখনো ছিলাম না।
ইয়ানা মেকি হাসি দিয়ে বলে,,,,
” কর্পূরের মত মিলিয়ে গেছে সব কিছু। অনেক দেরী হয়ে যাচ্ছে। আমি আসছি। কষ্ট হবে থাকতে এই মানুষটকে তো ভালোবাসতাম তবুও মানিয়ে নিতে পারব।
ইয়ানা ইয়াজকে নিয়ে ঘুরে যেতে নিবে তখন আবার ও আহানের এক শান্ত কন্ঠ ভেসে আসে,,,
” এইটাই তো চাও যে আমি সকল খারাপ কাজ ছেড়ে দেয়। ঠিক আছে ছেরে দিব আমি। যদি এইটা তোমার শান্তির কারন হয় তাহলে আমি সকল পাপ কাজ ছেড়ে দিব।”
আহানের কথা কর্ণপাত হতেই ইয়ানা চমকিয়ে উঠে। ও ঠিক শুনেছে তো নাকি হ্যালোয়েশন হচ্ছে। ইয়ানার সাথে সাথে চৌধুরি ভিলার সবাই আহানের দিকে অবাক দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাকায়। আহান শান্ত দৃষ্টি ফেলে ইয়ানার দিকে তাকায়।
ইয়ানা — সত্যি বলছেন নাকি শুধু সাময়িকের জন্য বলেছেন।
আহান — তুমি জানো আমি আজ পর্যন্ত যা বলেছি তাই করেছি। মিথ্যে আশা আমি কখনো দেই না। তবে চাপ নিও না এই পাপীষ্ট হাত তোমাকে স্পর্শ করবে না। আমার স্পর্শ দ্বারা তোমাকে আর অপবিত্র করবো না। বিশ্বাস রাখতে পারো। এইটুকু বিশ্বাস নিশ্চয় আছে তবুও আমার ছেলেকে নিয়ে দুরে কোথা ও যেও না।
ইয়ানা ছলছলে চোখে আহানের দিকে তাকায়। আহানের চোখে কোনো ক্রোধ বা তিব্রতা নেই। এই আহানকে ইয়ানা চিনতে পাছে না। আগের আহান হলে ইয়ানাকে এতক্ষনে মেরে মাটিচাপা দিয়ে দিত। সামান্য এড়িয়ে চলল যেই ছেলে রেগে যেত সে আজ এতটা শান্ত হয়ে সব কথা হজম করে নিলো। আজ কি বেশি বলে ফেলেছি? আমার আহান কি বেশি কষ্ট পেয়েছে? ও তো আমার ধারালো কথা সহ্য করতে পারে না। কিন্তু ইয়ানা মনে মনে এইটা ভেবে খুব খুশি আহান অন্ধার থেকে সরে আসবে।
রাগ ইয়ানা কয়েকটা ভালোবাসার কথা বলেই ভেঙ্গে ফেলতে পারবে। কয়েকটা ভালোবাসার কথা বললে আহান ইয়ানাকে আবার কাছে টেনে নিবে রাগ করে থাকতেই পারবে না।
ইয়ানা খুশি হয়ে আহানের দিকে তাকাতেই আহান রুম থেকে দ্রুত প্রস্থান করে।
ইয়ানা আহান কে এইভাবে যেতে দেখে আর কিছু বলে না। এখন একটু রাগ করে থাকবে রাতে কয়েকটা মিষ্টি কথা বলে সেটা ঠিক করে নিব।
ইউভি — অসম্ভব কে তুমি সম্ভব করেছো তুমি ইয়ানা। তুমি আহানের মুখ থেকে সেই কথা বের করতে সক্ষম হয়েছো যেটা আজ পর্যন্ত কেউ করতে পারে নি।
রায়ান — তর মনে হয় সব কিছু ঠিক হয়ে গিয়েছে। আহানের দিকে তাকিয়েছিস একবার। ইয়ানার কথা রাখতে কালো বাজার থেকে হয়ত চলে আসবে কিন্তু মাফিয়া জগৎ থেকে কখনো আসবে না। কিন্ত ইয়ানার প্রত্যেকটা কথা আজ আহানকে ভিতর থেকে নাড়িয়ে তুলেছে। নাহলে তুই ভাব আহান এতটা শান্ত থাকার মানুষ। গিয়ে দেখ তাদের সম্পর্কের সমীকরন কোথায় গিয়ে দাড়ায়।
রায়ানের কথা শুনে ইয়ানা মুচকি হাসি দিয়ে বলে,,,
” ওনি কখনো আমার উপর রাগ করে থাকতেই পারবে না। দেখবেন কাল সব কিছু স্বাভাবিক। ‘
রায়ান — তাই যেনো হয় কিন্তু আহানের চোখে আজ অন্য কিছু ছিলো।
দাদুমনি আর সাজিদ চৌধুরির সামনে রায়ান আর ইউভি বসে। সাজিদ চৌধুরি কিছুক্ষন আগেই দেশে এসেছে। এসেই আহিয়া থেকে জানতে পারে আহান রানবীর তাদের শেষ করে দিয়েছে। মনে মনে অনেক খুশি তিনি। নিজের অর্ধাঙ্গিনি আর ভাই – বউদের ছবি বুকে জড়িয়ে অনেক্ষন কাঁদলেন। মাজিদের বউ হেনা এই বাড়িতে আসার পর থেকে সাজিদকে নিজের বড় ভাইয়ের মত সম্মান করতেন তিনি ও খুব ভালোবাসতেন তাকে। তারা মরে যাওয়ার পর নিজের ভাইয়ের একমাত্র সম্বলকে নিজের নামে বড় করতে থাকেন। সাজিদ চৌধুরির মেয়ে হিসাবে আহিয়া সবার কাছে পরিচিত।
বর্তমানে রায়ান আর ইউভি সাজিদ চৌধুরিকে সব কিছু খুলে বলছে।
সাজিদ চৌধুরি — ওই কু* ত্তার বাচ্চাকে আমি নিজের হাতে শেষ করার যদি সুযোগ পেতাম তাহলে আমার আত্না ঠান্ডা হত। আমার নাতিটাকে এইভাবে নিয়ে খেলেছে তারা। কিন্তু লিনিয়া নিজের পাপকর্ম এর জন্য অনুতপ্ত হয়ে মরেছে তবুও ওর প্রতি আমার সব চেয়ে বেশি রাগ। বোন হিসাবে বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলাম কিন্তু ও আমার সংসারটাকে ওই তছনছ করে দিলো। ওদেরকে মারার সুযোগ পেলে আমি কু*পি*য়ে হত্যা করতাম। ”
রাত গভীর থেকে গভীর হতে লাগলো। ইয়ানা ইয়াজকে দোলনায় শুইয়ে দিয়ে জানালার কাছে কাউচের বাহিরে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। রাত এখন প্রায় বারোটা ছুই ছুই। চার দিকে অন্ধকার কিন্তু চৌধুরি ভিলার উজ্জলময় লাইটের কারনে সব কিছু বুঝা যাচ্ছে। কিছুক্ষন পর জানালা দিয়ে দেখতে পেলো আহানের গাড়ি এসে পার্কিং এড়িয়ায় থেমেছে। ইয়ানার ঠোঁটে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠে।
কিছু সময়ের ব্যবধানে আহান রুমে ডুকে। ইয়ানা আহানের দিকে তাকায় লোকটাকে বড্ড অগুছালো লাগছে। কিন্তু একবার ও আহান ইয়ানার দিকে তাকায় নি সোজা ওয়াশরুমে চলে যায়। দশেক মিনিটের মধ্যে ফ্রেশ হয়ে বিছানার দিকে যায়। ইয়ানা খুশিতে গদগদ করে উঠে। বিছানায় শুয়ে পড়লেই ইয়ানা আহানের বক্ষে নিজের জন্য জায়গা করে নিবে। কিন্তু ইয়ানাকে ভুল প্রমানিত করে আহান বালিশ নিয়ে ছোফার কাছে যায়। ইয়ানা আহত শুরে বলে,,,
” বিছানা রেখে সোফায় কেনো ঘুমাচ্ছেন “?
আহান কিছু বলে না। ইয়ানা বিছানা থেকে নেমে আহানের কাছে যেতে নিবে তখন আহান বলে উঠে,,,,
” কাছে আসবে না ইয়ানা পাপীষ্ঠ হাত তোমার শরীরে লাগবে।
আহানের কথা শুনে ইয়ানার চোখে পানি চলে এসে।
ইয়ানা — প্লিজ এইভাবে বলবেন না। এই কথাটা বড্ড বেমানান লাগছে।
ইয়ানা আহানের দিকে আবার এগোতে যাবে তখন আহান চোখ বন্ধ করে রেখে বলে,,,,,
” খবরদার কাছে আসবে না। আমাকে অন্য রুমে যেতে বাধ্য করো না। আমার ছেলে এখানে আছে তাই আমি থাকছি। কিন্তু রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য বাধ্য করো না। বিশ্বাস রাখতে পারো তোমার কাছে যাব না এইটা তোমাকে অগ্নি চৌধুরু প্রতিশ্রুতি দিলো।
অনুভবে তুমি পর্ব ৫৬
আহানের প্রতিশ্রুতি শুনে ইয়ানার মষ্তিস্কের প্রতিটি নিউরন কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। ইয়ানা আহাত দৃষ্টি ফেলে আহানের দিকে তাকায়। কিন্তু আহানের চোখ ছিলো বন্ধ। চোখ খুলে রাখলে হইত বুঝতে পারত ইয়ানার চোখের করুন চাহনি।