অনুভবে তুমি পর্ব ৯
লিজা মনি
রাত ফুরিয়ে গভীর আধার নেমে আসে। কিন্তু একজনের চোখে ঘুম নেই। সে খোলা ছাদে বসে ড্রিঙ্কস করতে ব্যস্ত। হয়তো কোন এক কালো অতীত ভোলার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
কিন্তু কি সেই কালো অতীত……………….?
রায়ান : আহান প্লিজ ভাই স্টপ। জানিস তুই অতিরিক্ত ড্রিংকস করলে তর মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে যায় সহ্য করতে পারিস না। আর খাওয়ার প্রয়োজন নেই। এখন রুমে চল প্লিজ।
কিন্তু আহানের কোনো রেসপন্স নেই। সে চেয়ারে হেলান দিয়ে মাথার উপর হাত রেখে বসে আছে।
রায়ান এইবার একটু ঘাবড়ে গিয়ে আহানের শরীরে ধরে ঝাকুনি দেয়। ঝাকুনির ফলে সে এক সাইট দিয়ে হেলে পরে।
রায়ান : আহান কি হয়েছে তর? আহান, আহান, আহান এমন কয়েকবার ডাকার পরে ও আহানের রেসপন্স নেই।
রায়ান : ওহ নো ওতো সেন্সলেস হয়ে পরেছে। রায়ান এবার ইউভিকে ডাক দেয়। ইউভি ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে গিয়েছিল। রায়ানের চিৎকার শুনে তাড়াতাড়ি করে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসে।
ইউভি : কি হয়েছে ব্রো এভাবে চিৎকার করছিস কেনো?
রায়ান : সেন্সলেস হয়েছে আবার। ওকে ধর রুমে নিতে হবে।
ইউভি : হুম ধর। জানে অতিরিক্ত মানসিক চাপ নিলে ওর মাথা ব্যথা শুরু হয় নিজেকে ঠিক রাখতে পারেনা।তার উপর আবার ড্রিঙ্কস করেছে সেন্সলেস তো হবেই।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
রায়ান আর ইউভি মিলে আহানকে রুমে নিয়ে আসে ।
হঠাৎ আহানের হাতের দিকে নজর যাই। দেখে হাত কেটে গিয়ে রক্ত শুকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে কোনো কাচের বস্তু ধারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। আর এইটা যে সে নিজেই নিজেকে করেছে এতক্ষণে রায়ান আর ইউভি বুঝে গেছে।
ইউভি : মিসেস অঞ্জলিকে ফোন কর।
রায়ান : হুম।
কিছুক্ষণ পর তাদের পার্সোনাল ডক্টর মিসেস অঞ্জলি এসে আহানের হাত ড্রেসিং করে দেয়।
অঞ্জলি : চিন্তার কোনো কারন নেই। হাতের কাটা জায়গায় ড্রেসিং করে দিয়েছি। হাতের কাটা টা একটু গভীর বাট এইটা তো আর ওর জন্য নতুন নয়। আর অতিরিক্ত মানসিক চাপ আর দুর্বলতার কারণে সেন্সসলেস হয়ে পড়েছে। আমি স্যালাইন দিয়ে দিচ্ছি সকালে ঠিক হয়ে যাবে।
রায়ান মিসেস অঞ্জলিকে নিয়ে বাড়িতে দিয়ে আসে।
ইয়ানা বাড়িতে এসে ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। কারণ রাতে তার অনেক বড় একটা মিশন আছে। সে সেই আগন্তুকের জন্য অপেক্ষা করছে। সন্ধ্যা থেকে রাত হল রাত থেকে গভীর রাত কিন্তু সেই আগন্তুকের আসার কোন নাম
নেই।
ইয়ানা : তাহলে আজ কি আপনি আসবেন না। আজ না আসেন কালতো আসবেন। কাল না আসলে পরশু। কিন্তু আমি আপানাকে হাতেনাতে ধরবো।আমার সন্দেহ যদি সত্যি হয় তাহলে তো কোনো কথাই নেই। কিন্তু তার জন্য আগে আপনাকে দেখা প্রয়োজন।
ইয়ানা আর সারারাত ঘুমাইনি। তার ভাবনার মাঝে দেখতে দেখতে রাত ফুরিয়ে সূর্যিমামা ওকি দেয়।
ইয়ানা ফ্রেশ হয়ে গিয়ে নিচে নামে। দেখে তার দিকে সেলিনা হা করে তাকিয়ে আছে। ইয়ানা কপাল কুচকে মায়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করে,,,
-কি হয়েছে আম্মু এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো? আমাকে কি খারাপ দেখাচ্ছে?
ইয়ানা ভেবেছে সারারাত সজাগ থাকার জন্য হয়তো অন্যরকম লাগছে।
সেলিনা হোসেন ইয়ানার কাছে এসে চিন্তিত হয়ে কপালে গলায় হাত দিয়ে বলে,,,,
“তুই ঠিক আছিস ইনু?কিছু হয়নি তো তোর?”
– না মা আমার কিছু হয় নি আমি ঠিক আছি। কিন্তু তোমার এমন কেনো মনে হচ্ছে আমি ঠিক নেই। আমাকে কি আজ অন্যরকম লাগছে।
ঠিক তখনই রুয়ানা পিছন থেকে ডাক দিয়ে বলে,,,
– আপুওওওওওওওওওওওওওওও এইটা কি তুই। তুই এত সকালে ঘুম থেকে উঠেছিস। ওহ মাই গড আপু তুইতো ইতিহাস পালটে দিয়েছিস।আম্মু এইটা তোমার মেয়েতো?
ইয়ানা এতক্ষণে বুঝতে পেরেছে আসল কাহিনী। ইয়ানা এইবার কিছুটা বিরক্ত হয় কেনো সে কি কোনোদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নি। সবাই এমন ভাব করছে যেনো আজ প্রথম উঠেছে।
ইয়ানা : কেনোরে আমি কি কোনোদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেনি।
সেলিনা হোসেন : হুম ঝাড়ুর বারি খেয়ে।
রুয়ানা এইবার ফিক করে হেসে দেয়।
ইয়ানা এইবার কিছুটা রেগে বলে,,,,
– ঠিক আছে তোমরা দুইজন থাকো আমি গেলাম। কিছু পড়া আছে।
এই বলে ইয়ানা উপরে চলে যায়।
সেলিনা হোসেন: তুই এখনো এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো প্রাইভেটে যাবি না?
রুয়ানা : হুম আম্মু নাস্তা করেই চলে যাবো। কিন্তু আম্মু আপু আজ তোমার ঝাড়ুর মুখ দর্শন না করেই উঠে গেল।বলেই রুয়ানা হাসা শুরু করে 😆😆।
সেলিনা হোসেন : হয়েছে তোমাকে ও আর হাসতে হবে না। হয়তো ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিল তাই উঠে গেছে। তুইও তাড়াতাড়ি নাস্তা করে প্রাইভেটে যা। রুয়ানা নাস্তা শেষ করে প্রাইভেটে চলে যায়।
ইয়ানা তারা সবাই বিরক্তি নিয়ে ক্লাস রুমে বসে আছে।
আরু : ধুর বাল কি ক্লাস করতো এই টাকলুর। কি পড়ায় ও মনে হয় নিজে ও জানে না।
আকাশ: হুম ঠিক বলেছিস শুধু শুধু সময় নষ্ট। এইটুকু সময় অবনীর সাথে কাটালে ও ভালো হতো।
রুহান : আমাদের এত সিঙ্গেলদের মধ্যে তুই একজন মিঙ্গেল কি করিস বলতো। আমাদের সামনে বারবার গার্লফ্রেন্ডের নাম নিচ্ছিস আমার কি কষ্ট লাগে না। বন্ধু হয়ে বন্ধুর কষ্টটা তো ভাবতে পারিস।
সুমু : হুম হুম আকাশ তুই রায়ানের সামনে এইভাবে বলতে পারিস না। ও ভাই জীবনে তো মেয়ে পাবে না তাই কষ্ট পাবে।
আয়াত : সব ওই বুঝলাম কিন্তু তোদের মনে হচ্ছে না আমাদের ইনু বেবি আজ চুপচাপ হয়ে গেছে। কাল বিকাল থেকে অন্যমনস্ক দেখছি।
রুহান : হুম সেটা তো আমি ও খেয়াল করেছি। ভেবেছি হয়তো এমনি তাই আর জিজ্ঞাসা করি নি।
ঠিক তখনি তাদের ক্লাসের আইসিটির জাফর স্যার চেচিয়ে বলে,,,,, কথা বলছে কে? দাড়াও বলছি সেচ্ছায়। পরে আমি দাড়া করালে দিগুন শাস্তি দিবো।
হল্লা পার্টির সবাই এক এক করে দাঁড়িয়ে পড়ে। জাফর স্যার চশমাটা নিচে নামিয়ে বলে,,,,, বের হও ক্লাস রুম থেকে তোমরা।ক্লাসের মধ্যে কথা বলা আমি পছন্দ করি না জানো না?
আয়াত একটু মুখ ভেংচি দিয়ে বলে,,,,
– শালা টাকলু ক্লাসতো করাস না ঠিক মতো। আবার কথা বললে সমস্যা।
তারা সবাই এমনিতে খুশি হয়েছে বের হয়ে যাওয়ার কথা বলার জন্য।
সবাই একে একে ক্লাস রুম থেকে বের হয়ে আসে।
আরু : বের হয়ে তো আসলাম। আজ আর ক্লাস করবো না।
আয়াত: এখন বাসা যেতে পারবো না আম্মু নানান প্রশ্ন করবে।
ইয়ানা : হুম ঠিক বলছিস এখন বাড়ি যাওয়া যাবে না।
এক কাজ করি ওই মুরের চায়ের দোকানে যাওয়া যাক।
অনেক দিন ধরে যাওয়া হয় না।
আকাশ : হুম ঠিক বলেছিস চল।
তারা সবাই চায়ের দোকানে যাই।
রেনু কাকু কেমন আছো?
– আরে তোমরা অনেক দিন পরে আসলে।
রুহান : আসলে কাকু ব্যস্ত থাকি ইদানিং তাই আসা হয় না। কাকি কেমন আছে?
রেনু : আলহামদুলিল্লাহ। তোমাদের দোয়ায় ভালো আছে।
—হুম এখন চা দেও। আমাদের পছন্দের চায়ের কথা মনে আছে নিশ্চই।
রেনু কাকু : হ হ বাবা আমার মনে আছে। তোমরা বও আমি এহনি দিতাছি।
চা ওয়ালা সবাইকে চা দেয়।
রুহান : আহ চাচা তোমার হাতের চা খেলে মনে হয় বউ আমার ভালোবেসে চাওয়া বানিয়ে দিয়েছে।
সুমু রুহানের পিঠে থাপ্পড় মেরে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,,,
– কোন জায়গায় কোন কথা বলতে হয় এটা কি তুই জানিস না। উনি আমাদের মুরুব্বী কি ভাববে বলতো।
রুহান : চুপ থাক বাদর।বউ ছাড়া কষ্ট তুই কি বুঝবি।
সুমু : বাদর না বাদরনি হবে। মেইল ফিমেইল ঠিক রাখিস অন্ততো।আর আমার না অনেকগুলো জামাই আছে যে তর কষ্ট বুঝব না।
ঠিক তখনি তাদের সামনে একটা গাড়ি এসে থামে। গাড়িটি দেখে একেকজনের অন্তর আত্মা কেঁপে উঠে।
কারণ গাড়ির মালিক সম্পর্কে তারা অবগত।
গাড়ি থেকে নেমে আসে একজন সুদর্শন পুরুষ। যার রন্ধ্রে,শরীরে রয়েছে অন্ধকারের ছোঁয়া।
ইয়ানা : রা… রা… রা.. রায়হান এ.. এ.. খানে কেনো। আর ও কবে দেশে আসলো। ওর না আর ও কয়েকদিন পরে আসার কথা। তাহলে এখন এখানে কি করছে।
রায়হান গাড়ি থেকে নেমে তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
রায়হান : সারপ্রাইজ বেবি। ভেবেছিলাম কয়েকদিন পরে আসবো কিন্তু তোমাকে না দেখে থাকতেই পারলাম না।
ইয়ানা রায়হানকে কিছু না বলে হল্লাপার্টি সকলের উদ্দেশ্য বলে,,,,
– চল এখান থেকে, মনে হয় না এখানে থাকার কোনো দরকার আছে। রাস্তায় যে কারো সাথে কথা বলা ঠিক না। আর এইসব গুন্ডা মাস্তান থেকে দুরে থাকায় ভালো।
ইয়ানা এইখান থেকে প্রস্থান করবে ঠিক তখনি রায়হান পিছন থেকে ওর হাত চেপে ধরে রাগি কন্ঠে বলে,,,,
– আমার সাথেই তোমাকে থাকতে হবে। রায়হান যা চায় তা পেয়ে তারপর শান্ত হয়। আমার নজর এখন তোমার উপর পরেছে সোনা তাই তোমাকে আমার চাই। সেটা এক রাতের জন্য হলেও।
বলেই রায়হান এইখান থেকে চলে গেলো।
আর ইয়ানা রায়হানের টাচ করা জায়গায় বার বার করে ঘসতে থাকে।
রাগে দুঃখে ওর কান্না চলে আসে।
হুল্লা পার্টির সকলের মুখে চিন্তার ছাপ।
সুমু: কি করবো এখন আমরা। ও কি বলে গেলো এইসব এক রাতের জন্য হলেও চাই মানে?
ইয়ানা : চিন্তার কোনো কারন নেই ও আমার কিছু করতে পারবে না।
আয়াত : এতটা কনফিডেন্স হয়ে কিভাবে বলছিস?তুই ওকে চিনিস খুব খারাপ একটা ছেলে।
ইয়ানা একটা রহস্যময় হাসি দিয়ে বলে,,,,,আমাকে তো আর ছুতেই পারবে না আর এক রাতের জন্য চাওয়া সেটা বিলাসিতা মাত্র।
সবাই ইয়ানার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। কয়েকদিন আগে পর্যন্ত যে মেয়ে ভয় পেতো আজ তার মুখে কোনো ভয়ের ছাপ নেই। কারন একটা মেয়ে যতই সাহসী হোক না কেনো তার কাছে তার ইজ্জত সবার উর্ধে। সেটা রক্ষা করার জন্য সবকিছু সেক্রিফাইস করতে পারে আবার সবকিছুর বিরুদ্ধে লড়তেও পারে।
আহান নিজের রাগ নিয়ন্ত্রন করার জন্য বৃথা প্রয়াস চালাচ্ছে। জোরে জোরে শ্বাস টানছে। হাত দিয়ে গরগর করে রক্ত ঝরছে। কালকের কাটা স্থানে পুনরায় আঘাত পাওয়ায় জায়গাটা আরও গভীরভাবে আহত হয়েছে। চোখ দুইটি সানগ্লাসের আড়ালে রক্ত বর্ণ ধারন করে,,,, মনে হচ্ছে যে কোনো সময় টুপ করে রক্ত পরে যাবে। হাতের রগগুলো ফুলে উঠেছে।
( এখন জানা যাক আহানের রাগের কারন?)
– রাতে ঘুমের ইঞ্জেকশন পুশ করার করনে আহান সকালে অনেক দেরি করে ঘুম থেকে উঠে। ঘুম থেকে উঠে দেখে ওর হাতে স্যালাইন লাগানো। এমনি কাল থেকে মেজাজ বিঘরে রয়েছে এইসব দেখে আরো ও রেগে যায়। টান মেরে হাত থেকে স্যালাইন খুলে ফেলে ফলে কাটা যায়গায় হালকা ব্যথা পায়।
আহান নিজের কাটা জায়গার দিকে তাকিয়ে তাচ্চিল্য হাসি দিয়ে বলে,,,,
– ছেহ, অগ্নি চৌধুরির এইরকম সামান্য কাটায় কিছু হয় না। আর না প্রয়োজন কারোর সেবা যত্নের।
আহান রেডি হয়ে নিচে নামে দেখে ইউভি আর রায়ান বসে আছে। সে কাউকে কিছু না বলে সামনের দিকে পা বাড়ায়।
ইউভি কিছুটা চিন্তিত হয়ে বলে, ,,,,
– কিরে এখন কোথায় যাচ্ছিস? তোর শরীরতো এখনও ঠিক হয় নি।
আহান মুখে ‘ চ ‘ শব্দ উচ্চারন করে বলে,,,,,
– তোদের বলেছি আমাকে নিয়ে এত ভাবতে আর মেয়েদের মতো এমন আদিক্ষেতা করছিস কেনো?
বলেই সামনের দিকে পা বাড়ায়।
ইউভি আর রায়ানও আর কিছু বলেনি। ওরা জানে আর কিছু বলেও লাভ নেই।
আহান এমনই নিজে হাজারটা ধমক দিবে কিন্তু অন্যকেও নিজের বন্ধুদের কিছু বলতে ও পারবে না। কেউ কিছু বললে তাদের জান নিয়ে নিতে দুবার ও ভাব্বে না। আবার নিজের বন্ধুদের রক্ষা করতে নিজের জীবন হেসে হেসে দিয়ে দিবে। একজন আরেকজনের জন্য প্রান। অটুট থাকুক তাদের বন্ধুত্ব্ব আজীবন।
আহান অফিস থেকে কোনো একটা কাজে কলেজে যায়। কাজ শেষ করে যখন গাড়িতে উঠতে যাবে ঠিক তখনি দুর থেকে হল্লাপার্টি আর রায়হানকে দেখতে পায়।
যখন দেখে রায়হান ইয়ানার হাত ধরেছে নিজের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। রাগে হিতাহিত ঙ্গান হারিয়ে গাড়ির সামনের গ্লাসে সজোরে ঘুসি মারে।
রাগে দাতে দাত চেপে বিরবির করে বলে,,,,,
– এর ফল তোমাকে ভোগ করতে হবে সোনা পাখি। আমাকে ছাড়া অন্য পুরুষে ছোয়া গায়ে মাখানো তো অগ্নি চৌধুরি মানবে না। বড় হিংসুটে আমি নিজের জিনিস কারোর সাথে ভাগ করি না।
এই বলে আহানে এইখান থেকে প্রস্থান করে।
ইয়ানা কলেজ শেষ করে বাড়িতে গিয়ে কাউকে দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে,,,,,
– আব্বু কখন আসলে? কেমন আছো আসতে কোনো অসুবিধে হয় নিতো?তোমার তো সামনের মাসে আশার কথা ছিলো।
আসাদ হোসেন মেয়ের এতগুলো প্রশ্ন দেখে হেসে বলে,,,,
-আস্তেরে মা এত গুলো প্রশ্ন করে নিজের ছেলেকে ফেলতে চাইছিস নাকি।
ইয়ানা চিন্তিত হয়ে বলে,,,,, প্লিজ আব্বু মরার কথা আর কোনোদিন মখু আনবে না।
আসাদ সাহেব হেসে বলে,,,,, ঠিক আছে আমার মা জননী।
সেলিনা হোসেন রান্নাঘর থেকে চা নিয়ে আসতে আসতে বললেন, ,,,,,,, কি কথা হচ্ছে এখানে শুনি।
ইয়ানা একটু রসলো সুরে বলে,,,,,,,
– বাং লার রিনা খান নিয়ে কথা হচ্ছে আম্মু।
সেলিনা মেয়ের দিকে কপাল কুচকে বলে,,,,, বাপ মেয়ে রিনা খানের পিছনে লেগেছিস কেনো?
– কি কথা যে বলো না আম্মু শুধু আব্বুর সম্পর্কেই বলবো। তোমাকে নিয়ে কিছু বলবো না তা কি করে হয়।
সেলিনা হোসেন এতক্ষনে বুঝতে পারে আসল কাহীনি। তাকে নিয়েই বাপের কাছে এতক্ষন নালিশ করছিলো।
সেলিনা হোসেন হাতে থাকে চামচ নিয়ে ইয়ানার দিকে তেরে যায়, ,,,,,, তবেরে ফাজিল মেয়ে মাকে রিনা খান ডাকছিস।
ইয়ানা হাসতে হাসতে বলে,,,,,
তোমাকে রিনা খান ডেকেছি তা তো গর্ব করা উচিৎ আম্মু।উনি কত ভালো এক্টিং করে তুমি জানো। এই
বলে ইয়ানা হাসতে থাকে।
সেলিনা হোসেন: আসাদ তুমিও এই মেয়ের সাথে হাসছো।
-আসাদ ——আরে রাগ করছো কেনো সেলিনা ওতো মজা করছে।
সেলিনা হোসেন রেগে বলে,,,,,
হয়েছে অনেক মজা করা যা ফ্রেস হয়ে খেতে আয়।
ইয়ানা মায়ের গালে টুপ করে একটা চুমু দিয়ে বলে,,,,
——তুমি পৃথিবীর বেস্ট আম্মু। বলেই দৌড়ে উপরে চলে যায়।
আসাদ হোসেন এইবার সেলিনা হোসেনকে বলে,,,,,
– সেলিনা তোমার সাথে জরুরি কথা ছিলো।
সেলিনা হোসেন: হুম বলো কি বলবে।এই বলে আসাদ হোসেনের পাশে বসে।
আসাদ হোসেন কিছুটা সিরিয়াস হয়ে বলে,,,,,,
“”আমার এক কলেজ ফ্রেন্ড ইমতিয়াজ মির্জাকে তো চিনো। এক বছর আগে ওর ছেলে বিদেশ থেকে পড়ালেখা শেষ করে দেশে ফিরেছে। কোনো এক কারনে ওদের সাথে এখন আর যোগাযোগ নেই। কিন্তু পরশু আমাকে ইমতিয়াজ ফোন করে বললো ওর ছেলে নাকি আমাদের ইয়ানাকে দেখে পছন্দ করেছে। এখন সে তাকে বিয়ে করতে চাই। এইবার তোমার মতামত জানতে চাই।
সেলিনা হোসেন কিছুটা চিন্তিত হয়ে বললো,,,,,,
– উনার নামতো আমি তোমার থেকে শুনেছি। সামনাসামনি তো আর কখনো দেখেনি। তোমার যা ভালো মনে হয় তা করো। তবে ইয়ানার মতামত নেওয়া দরকার।
আসাদ : আমার মনে হয় না ইয়ানা আমাদের মতামতের বাহিরে যাবে।
অনুভবে তুমি পর্ব ৮
ইয়ানা খাওয়া দাওয়া শেষ করে ঘুমানোর জন্য রুমে যায়। গিয়ে দেখে রুয়ানা রুমে নেই। কিছু একটা ভেবে বেলকনিতে যায় গিয়ে দেখে কারোর সাথে হেসে হেসে কথা বলছে,,,,
রুয়ানা ইয়ানাকে দেখে ঘাবরে গিয়ে বলে,,,,
– আ… আ. পু তুই এখানে।
ইয়ানা : কার সাথে কথা বলছিস এত রাতে?
রুয়ানা: আ… আসলে আপু আমার ফ্রেন্ড জুই ফোন করেছিলো নোট নেওয়ার জন্য।
ইয়ানা কথাটা পুরুপুরিভাবে বিশ্বাস করেছে কিনা জানি না।
ইয়ানা : রুমে চল ঘুমাবি।
রুয়ানা আমতা আমতা করে বলে,,,,
– হুম চলো।
তারা দুইজনে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
তারপর……………………..