অনুভবে তুমি সিজন ২ পর্ব ১৫
লিজা মনি
বিকেল প্রায় তিনটা থেকে চারটা।সূর্যের আলো নরম হয়ে এসেছে। চারদিকে হালকা সোনালি আভা।বিকেলের সময়টাতে রাস্তাঘাটে কোলাহল বেশি দেখা যায়।কেউ কর্মস্থল থেকে ফিরছে আবার কেউ হাটতে বের হয়েছে।
হল্লাপার্টি, ইয়ানা ও আহিয়া তারা ফুচকার দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ফুচকা খাচ্ছে। বিকেল টাইম তাই লোকজনের আনাগোনা ও একটু বেশি। বিশেষ করে প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেদের। তারা ও ভিবিন্ন চায়ের দোকান, খেলার রুম ইত্যাদি এইসবে বসে আড্ডা দিচ্ছে। হল্লা পার্টির সবাই আসে নি শুধু সুমু আর আরু এসেছে।
একেকজনের ঝালে পুরো মুখ ঝলসে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের এইসবে খেয়াল নেই। ইয়ানার অজান্তেই এক পাশ থেকে উড়না সরে যায়। অনেক ছেলে তাদের চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে।
কিন্তু হাজার ও ছেলের মধ্যে একজনের চোখ হিংস্র হায়েনার মত বিঁধে রয়েছে। রাগে পুরো শরীর জলে যাচ্ছে। রক্তাক্ত চোখ নিয়ে একবার ইয়ানার দিকে তাকায় আরেকবার আশেপাশের ছেলে গুলোর দিকে।
ইয়ানার দিকে তাকিয়ে বির বির করে বলে,,,,,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
” স্বাধীনতা কি আমি বেশি দিয়ে ফেলেছি? আমার অনুমতি ছাড়া এইভাবে জনসমাগমে ফুর্তি করছো। যেখানে তোমাকে দেখার অধিকার শুধু আমার সেখানে অনেক যুবক তোমাকে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে। শরীর থেকে উড়না সরে গিয়েছে সেই খেয়াল নেই। আমার অধিকার অন্য কাউকে দেওয়ার রাইট কে দিয়েছে তোমায়? তুমি হয়ত ভাবছো আমি ভালো। কিন্ত না প্রিয়তমা আমি অন্ধকারের এক প্রদীপ। তবে সেই অন্ধকারে তোমাকে নিতে চাই না। তোমার হাসি আমার শ্বাস রুখে দেয়। আর অন্য কারো চোখে তোমাকে দেখলে আমার রক্ত ফুটে উঠে। তুমি জানো না কতটা অন্ধকার আমি নিজের মধ্যে লুকিয়ে রেখে তোমার সাথে সহজভাবে চলাচল করি। এই অন্ধকারে আমি সবাইকে গিলে ফেলতে পারি শুধু তোমাকে না। তোমাকে আমি বন্ধী করে রাখি হৃদয়ে, দেহে আর আমার রক্তে।তুমি যদি কখনো কারোর দিকে তাকাও তাহলে সে ও তোমার থেকে কম ভালোবাসা পাবে না। তার অস্তিত্ব, তার দেহ ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দিব কিন্তু প্রিয়িতমা তোমাকে ঠিক আগের মতই জড়িয়ে ধরব। কারন আমার অনুভুতি সাধুদের মত না। এই অনুভুতি এক জলন্ত শিখা। তুমি আমার অনুভব, আমার! আর কারোর নয়।
এরপর অগ্নি গাড়ির স্টিয়ারিং এর উপর সজোড়ে ঘুসি মারে। চামরা ফেটে রক্ত পড়তে থাকে। কিন্তু অগ্নি তাকিয়ে আছে ইয়ানার সেই মুখের দিকে।
তাদের খাওয়ার মাঝেই কারোর কুরূচিপূর্ন কথা শুনে ইয়ানা থমকে যাই।
” ভাই মালটা দেখেছিস কি টাটকা। ইসস কিভাবে খাচ্ছে ইচ্ছে করছে এদেরকেই খেয়ে ফেলে। বিশেষ করে ওই ব্ল্যাক কালারের জামা পড়েছে যে মেয়েটা ওকে। একদম খাঁটি মাল মনে হচ্ছে।
ইয়ানা নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে সে কালো জামা পড়েছে। ঘৃনায় পুরো শরীর ঘিনঘিন করে উঠে। নিজেকে ভালোভাবে আবৃত করে নেই উড়না ধারা। বুঝতে পারে এখানে থাকাটা আর ঠিক হবে না। ফুচকার ভাড়া মিটিয়ে সামনে চলে যায়। সুমু আর আরুর বাড়ি অন্যদিকে যেতে হয়। তাই তারা সেদিকে চলে যায়। ইয়ানা ও বিদায় জানিয়ে একটু সামনে গিয়ে রিক্সা ডাকবে এমন সময় তাকিয়ে দেখে অগ্নি গাড়ি থেকে নেমে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। অগ্নিকে দেখেই ইয়ানা ভয় পেয়ে চোখ বড় বড় করে ফেলে। সে উত্তেজনার ফলে অগ্নিকে তো বলতেই ভুলে গেছে সে এখানে আসবে। ওই ছেলেগুলোর কথা উনি শুনে নি তো?নিশ্চয় শুনে নি নাহলে এতক্ষনে ছেলেগুলোর সাথে সাথে আমাকে মেরে ও চ্যাপ্টা করে ফেলত। চোখে সানগ্লাস পড়া বিধায় ইয়ানা অগ্নির রাগটা বুঝতে পারছে না। অগ্নি ধীর পায়ে এদিকে আসে। ইয়ানা তাকিয়ে একটা মেকি হাসি দেয়।
আহিয়া অগ্নিকে এতদিন পরে দেখে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বলে,,,,,,
” কোথায় ছিলে তুমি দাদাভাই সারাদিন? আমি সেই কখন এসেছি কিন্ত তোমাকে পাই নি।
অগ্নি আহিয়ার মাথায় হাত দিয়ে বলে,,,,,
” কাজে ছিলাম। আসতে কোনো অসুবিধে হয় নিতো? ”
আহিয়া হাসি দিয়ে বলে,,,,
” না কোনো অসুবিধে হয় নি।কিন্ত তুমি এখানে কি করছো?
অগ্নি ইয়ানার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,,
” বাড়িতে যাচ্ছিলাম তখন তদের দেখতেই পাই। গাড়িতে উঠ।”
আহিয়া গিয়ে গাড়িতে বসে পড়ে। অগ্নি ইয়ানাকে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ধমকে দাতে দাত চেপে বলে,,,,
” তোমাকে বসার জন্য নিশ্চয় ইনভাইটেশন কার্ড পাঠাতে হবে না। কোথাও যেতে হাসি তামাসা করতে তো আমার অনুমতি লাগে না এখন গাড়িতে উঠার জন্য অনুমতি লাগছে কেনো? ”
অগ্নির এমন কর্কশ ধমক খারাপ লাগলে ও ইয়ানা বুঝতে পারে তার উপর প্রচন্ড ভাবে রেগে আছে। ইয়ানা কোনো বাক্য ব্যয় না করে আহিয়ার সাথে ব্যাক সিটে বসে পড়ে।
চৌধুরি ভিলার সামনে এসে আহিয়া গাড়ি থেকে নেমে নিজের রুমে চলে যায়। শিখা চৌধুরি অফিসে গেছেন আর দাদুমনি নিজের রুমে ঘুমাচ্ছে তাই আপাযত পুরো বাড়ি ফাকা। অগ্নি ইয়ানাকে রেখেই রুমে চলে যায়। ইয়ানা বুঝতে পারছে অগ্নি আজ তার উপর ভিষন রেগে আছে। ইয়ানা কিছু একটা ভেবে রুমে যায়। রুমে যেতেই সে হতভাগ। মেঝেতে তার পছন্দের ফ্লাওয়ার টবটা ভেঙ্গে গড়াগড়ি খাচ্ছে। পুরো মেঝেতে কাচ ভাঙ্গার ছড়াছড়ি। কিছু সময়ের ভিতরে এত বড় ঘূর্নিঝড় দেখে ইয়ানা হতবুদ্ধির ন্যায় অগ্নির দিকে তাকায়। অগ্নি টেবিলে থাকা গ্লাসটা ফেলে দেই। ইয়ানা ভয়ে কেঁপে উঠে। আজকের অগ্নি চৌধুরির সাথে আগের অগ্নি চৌধুরির কোনো মিল নেই। হ্যা সে রাগী কিন্ত এত ভয়ানক নয়। অগ্নি মিনি টেবিলে রাখা জগটা ফেলতে যাবে এমনি ইয়ানা হাত দিয়ে আটকে দেই। অগ্নির থেকে জগটা ছাড়াতে ছাড়াতে বলে,,,,,,
” এইভাবে রেগে আছেন কেনো? হাজার বার সরি বলছি আর কোনোদিন আপনার অনুমতি ছাড়া যাব না।এইবার একটু শান্ত হোন। আপনার এই রাগ দেখে আমার ভয় হচ্ছে।
ইয়ানার কথা শেষ হওয়ার আগেই অগ্নি ইয়ানাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে বলে,,,,,
” আমি আমার রাগ কন্ট্রোল করতে চাচ্ছি ইয়ানা কিন্তু পারছি না। বার বার ভেসে উঠছে তোমার দিকে ছেলেরা বাজেভাবে তাকিয়ে ছিলো। আমাকে কোনো উপাই বলো আমি নিজের সীমা পেরিয়ে যাচ্ছি। যেকোনো সময় তোমাকে আঘাত করে বসব। আমি আমার হিংস্রতার সাথে তোমাকে পরিচয় করাতে চাই না।
ইয়ানা অগ্নির এত রাগ আগে কখনো দেখিনি। এতটা ডেম্পারেট হয়ে পড়তে সে এই প্রথম দেখেছে। ইয়ানা ভয়ে শুকনো ঢুক গিলে বলে,,,,,,,
” কিসের হিংস্রতা, কিসের পরিচয়? একটু শান্ত হন না প্লিজ।
ইয়ানার কথা শুনে অগ্নি দেয়ালে ঘুসি দেয়।ফলে কাটা জায়গা থেকে পুনরায় রক্ত গড়িয়ে পড়তে থকে। রক্ত দেখে ইয়ানা আৎকে উঠে। ইয়ানা অগ্নির হাত ধরতে গেলে অগ্নি হাত ঝারা মেরে বলে,,,,,,,,,
“” বালের শান্ত হব আমি। নিজের বিয়ে করা বউকে নিজেই ভালো করে দেখি নি সেখানে বাহিরের লোক চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছিলো।
অগ্নি এমন পাগলামো দেখে শান্ত কন্ঠে বলে ,,,,,,,,
” আপনি শুনেছেন সব কিছু? রাগ কমানোর চেষ্টা করু….
ইয়ানা আর কিছু বলতে পারলো না তার আগেই অগ্নি এমন বাক্যে সে থমকে যায়।
” জাস্ট গিভ মি এ কিস সুইটহার্ট।”
ইয়ানা চোখ বড় বড় করে তাকায়। ইয়ানাকে এইভাবে বোকার মত তাকিয়ে থাকতে দেখে অগ্নি ধমক দিয়ে বলে,,,,,,
“” কি হলো শুনতে পাও নি? তাড়াতাড়ি করো নাহলে জানি না আমি কি করব। নিজেকে সংযত করতে না পারলে তুমি ঠিক থাকবে না। ”
ইয়ানা অগ্নির কথায় ভড়কে যায়। তবে এখন পরিস্থিতি শান্ত করা দরকার। অগ্নি তো তার স্বামী একটা চুমু খেলে কি এমন হবে। চোখ বন্ধ করে না হয় খেয়ে নিব। ইয়ানা অগ্নির চোখের দিকে তাকায়। এই চোখে আজ কোনো কোমলতা নই এক হিংস্র পাগলামি দেখতে পাচ্ছে। ইয়ানা কোনোকিছু না ভেবে চুমু খেতে যায় কিন্ত পড়লো মহা বিপদে। অগ্নি টানটান হয়ে দাড়িয়ে আছে ফলে ওর জন্য ঠোঁট ছুতে পারছে না। এমন নয় সে খাটো তার উচ্চতা পাচ ফুট তিন। কিন্তু এই খুতখুতে দানবের কাছে সে চিনেপুটি।
অগ্নি ইয়ানার অবস্থা বুঝতে পেরে নিজেই ইয়ানাকে কোমড় চেপে ধরে জানালার কাউচের উপর বসিয়ে দেয়। ইয়ানা পড়ে যেতে নিলে শক্ত করে পর্দা আকড়ে ধরে। অগ্নি এইবার ইয়ানার মুখোমুখি হয়ে দাঁড়ায়। ইয়ানা অগ্নির ঠোঁট ছোয়াতে যাবে তার আগেই সে আকড়ে ধরে। মুহূর্তের মধ্যেই ইয়ানা ব্যাথায় নাক মুখ কুচকে ফেলে। এখানে ভালোবাসা নয় চলছে রাগ কমানোর এক হিংস্র অত্যাচার। এই চুমুতে না আছে ভালোবাসা আর না আছে কামনা। আছে শুধু রাগ আর জেদ। ইয়ানা সহ্য করতে না পেরে অগ্নিকে ধাক্কা দেই। কিন্তু অগ্নি ইয়ানাকে আর ও বাজেভাবে আকড়ে ধরে। শকুনের মত খুবলে খেতে থাকে তার ঠোঁট। ঠোঁট কেটে রক্ত গড়িয়ে পড়তে থাকে। ইয়ানা এইবার ডুকরে কেঁদে উঠে। কান্নার আওয়াজ অগ্নির কানে যেতেই নিজের হুসে ফিরে। ইয়ানার ঠোঁট আর গলায় তাকাতেই সে আৎকে উঠে।অগ্নি ব্যাথিত গলায় বলে,,,,,,
” ইসস কি অবস্থা হয়েছে। বেশি ব্যাথা পেয়েছো? কান্না করো না প্লিজ আমি এখন ওই মেডিসিন লাগিয়ে দিচ্ছি।
ইয়ানা অগ্নির কথা শুনে রেগে যায়। ব্যাথা দিয়ে বলে ব্যাথা পাচ্ছো এ কেমন প্রশ্ন? ইয়ানা অগ্নির দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,,,,
” নামান আমাকে হৃদয়িহীন লোক। ব্যাথা পাব কেনো? পুরো ঠোঁট রক্তাক্ত করে বলছে ব্যাথা পেয়েছি কি না?
অগ্নি ইয়ানার কথা শুনে ঠোঁট চেপে হাসে । এরপর ইয়ানার কাটাস্থানে আলতো চুমু খেয়ে বলে,,,,,,
“” i don’t love gently. আমি নরভাবে স্পর্শ করি না। আমার স্পর্শ যুদ্ধের মত জান। রক্তমাখা, বন্যা আর সেটা হবে শুধু মাত্র তোমার জন্য।
ইয়ানা অস্ফুর্ত ভাষায় বলে,,,,,,,,,,,
” খুব ভয়ংকর আপনি। আপনার চোখে মাঝে মাঝে রহস্যের এক বিস্তর আস্তরন দেখতে চাই। আমি যখন সেই আস্তরন তুলতে চাই তখন আমার মন বলে উঠে,, এমন ভুল করিস না। যেভাবে আছে সেভাবেই থাকতে দে। এর পরিবর্তন হলে তুই শেষ হয়ে যাবি। কি এমন আস্তরন বলোন তো যা আমাকে ভয় দেখাই। রাতে সপ্ন দেখি আমি এক অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছি। আমি অন্ধকার রুমে চিৎকার করে কান্না করছি কিন্ত আমার চিৎকার কারোর কানে যায় না। আপনি বলেছেন আমার বিপদে আপনি ঢাল হয়ে দাড়াবেন কিন্ত আমার চিৎকারে আপনাকে দেখতে পাই না কেনো? কেনো সপ্নে আপনি আমার কান্না থামিয়ে দিয়ে যান না। ভালোবাসেন আমাকে?
ইয়ানার দিকে অগ্নি তীক্ষ্ণ নজরে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে। কিন্ত শেষের প্রশ্নে সে থামকে যায়। অগ্নিকে চুপ থাকতে দেখে ইয়ানা পুনরায় জিজ্ঞাসা করে,,,,,,,
” কি হলো বলোন? ভালোবাসেন আমাকে?
অগ্নি কিছু না বলে বাহিরে যেতে নিবে তখন ইয়ানা তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে,,,,,,,
” এড়িয়ে যাচ্ছেন? পালাতে চাইছেন আমার প্রশ্ন থেকে মি,চৌধুরি?
অগ্নি থমকে যায়। হৃদস্পন্দন উঠানামা করতে থাকে। এই সামান্য প্রশ্নে অগ্নির শরীর এইভাবে কেঁপে উঠছে কেনো? জীবনে হাজারটা খুন করেছে, গলা কেটে পুরো শরীর টুকরো টুকরো করে কেটেছে তখন তো কোনোদিন সামান্য হাত ও কেঁপে উঠে নি। এখন কেনো এমন হচ্ছে? অগ্নি কোনো বাক্য ব্যয় না করে রুম ত্যাগ করে।
অগ্নির মৌনতা দেখে ইয়ানার অজান্তে চোখের পানি চলে আসে। এই সামান্য প্রশ্নের উত্তর দিতে এত প্রতিক্ষা। যদি ভালোই না বাসেন তাহলে এইভাবে আগলে রাখেন কেনো? শুধুই কি দায়িত্ববোধ। দায়িত্ব ও এত নিখুঁতভাবে নেওয়া যায়? যেদিন আপনি আমাকে চাইবেন আমাকে ভালোবাসবেন সেদিন আমাকে আপনার কাছে সম্পূর্ভাবে সপে দিব এর আগে নয়। কিন্তু আপনার চোখে আমাকে চাওয়ার কোনো কাতরতা নেই কেনো?
আবার ও সেই পরিত্যাক্ত টর্চার সেল। সেই বিষাক্ত জায়গা যেখানে হাজার ও লোকের আর্তনাদ লুকিয়ে আছে। ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে মেঝেতে হাত পা বাধা অবস্থায় পড়ে আছে দুই জন যুবক । পুরো রুম অন্ধকার। কোথা ও থেকে এক খন্ড আলোকরশ্মী আছড়ে পড়ছে। আর পাশে পড়ে আছে ছুড়ি আর রক্তাক্ত হাত। ছেলে দুইটার হাত কেটে ফেলা হয়েছে।
অগ্নি সিগেরেট জালিয়ে ঠান্ডা কন্ঠে বলে,,,,,,,,
” আমার বউ, আমার সম্পদ যার দিকে এখন ও আমি তাকানোর সাহস পাই না। সেখানে তরা এত সাহস কিভাবে দেখালি? কলিজা কেঁপে উঠে নাই অগ্নি চৌধুরির বউয়ের দিকে লালসার দৃষ্টি নিয়ে তাকাতে? যেখানে আজ পর্যন্ত আমিই ভালোভাবে ছুঁয়ে দেখিনি সেখানে তরা ওকে ছুঁয়ার সপ্ন দেখে ফেলেছিস?
ছেলে দুইটির প্রায় মরন অবস্থা। তবুও কাতরতা নিয়ে বলে,,,,,,
” আমরা জানতাম না স্যার ওনি আপনার স্ত্রী। ক্ষমা করে দিন আর কখনো কোনো মেয়ের দিকে তাকাব না।
লোকগুলোর কথা শুনে অগ্নি শব্দ করে হালকা । এই হাসিতে কোনো দয়ামায়া নেই আছে একরাশ হিংস্রতা। অগ্নির হাসির আওয়াজ লোকগুলোর হৃদয় কাঁপিয়ে তুলে।
অগ্নি হাতের ছুঁরি ঘোরাতে ঘোরাতে বলে,,,,,,
” যেই চোখ আমার বউয়ের দিকে লালসা নিক্ষেপ করেছিলো সেই চোখ আমি বাঁচিয়ে রাখব? যেই জিহ্বা
দিয়ে ওকে নিয়ে অসভ্য কথা বলেছিস সেই জিহ্বা আমি অক্ষত রাখবি ভেবেছিস? এতটা ভালো মনে করিস আমাকে?
অগ্নি হুডির আড়ালে ক রহস্যময় হাসি দিয়ে বলে ছুরি দিয়ে দুইজনের জিহ্বা কেটে দেই। আকস্মিক এমন অত্যাচারে গার্ডরা ও ভড়কে যায়।দুইজন লোক ব্যাথায় চিৎকার করে উঠে। কিন্তু লোকগুলোর চিৎকার দেওয়ার শক্তি ও নেই।
অগ্নি বিরক্তি নিয়ে বলে,,,,,,,,,
” ধুর বাল চিৎকার ও করতে পারিস না। তর আর্তনাদেই আমার মানসিক শান্তি আসবে। আচ্ছা তদের কলিজা কত বড় একটু দেখতে দে।
অগ্নি ছুঁরি ঘোরাতে ঘোরাতে একজনের দিকে তাকায়। সে মাথা দিয়ে বার বার না করছে। অগ্নি লোকটার সামনে বসে পেটের মাঝ বরাবর ছুরি ডুকিয়ে দেয়। লোকটা চিৎকার করার আগেই অগ্নি তার মুখ চেপে ধরে। খুব যত্ন সহকারে লোকটার পেটে ছুরি চালিয়ে পেট ছিড়ে ফেলে। লোকটা কাতরাতে কাতরাতে এক বিষাক্ত অত্যাচার নিয়ে নিশ্বাস ত্যাগ করে। অগ্নি পেট থেকে কলিজা বের করে তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে,,,,,
” ছেহহ ব্যাঙ এর কলিজা নিয়ে এসেছে অগ্নি চৌধুরির বউয়ের দিকে তাকাতে। সেইমল্যাস!
এমন ভিবৎস মৃত্যু দেখে পাশে থকা লোকটি হাউমাউ করে কেঁদে উঠে। অগ্নি কারোর কান্নার আওয়াজ কানে না তুলে ঠিক একি অবস্থা দ্বীতিয় ব্যক্তিটির করে । এরপর চোখগুলো এক এক করে উগড়ে ফেলে।
লোকগুলোর দিকে তাকিয়ে একটা লাথি দিয়ে কলিজাগুলো টর্চার সেলের কুকুরকে দিয়ে দেই। কুকরগুলো এমন খাবার পেয়ে লুটিয়ে পরে। ছিড়ে খেতে থাকে লোক দুইটার কলিজা। অগ্নি কুকুরগুলোর মাথা হাত দিয়ে বলে,,,,,,
অনুভবে তুমি সিজন ২ পর্ব ১৪
” ভালোমত ছিড়ে খা। যাতে তদের অভুক্ত থাকতে না হয়।
অগ্নি হুডির আড়ালে এক বিকৃত হাসি দিয়ে বলে,,,
“এটাই আমার কাজ। একে একে এভাবে শেষ করা আমার শত্রুকে চিরতরে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া। তোমার ব্যবস্থা ও আমি করব জান। শুধু সময়টা আসতে দাও।