অনুভবে তুমি সিজন ২ পর্ব ৫৮
লিজা মনি
ইয়ানা মুখে কাপর বেঁধে পা টিপে টিপে প্রবেশ করতে থাকে। টর্চার সেলের বাহিরে দেখলে মনে হচ্ছে কোনো বিলাশবহুল বিশাল বাড়ি। সে খোলা দরজাটার কাছে এসে কাউকে দেখে আচকা পিছিয়ে যায়। দুই জন লোক দরজার দিকে এগিয়ে আসছে। ইয়ানা দরজার আড়ালে লুকিয়ে পড়ে। বুক ধুক ধুক করছে। আতঙ্কে হাত – পা কাঁপছে। লোক দুইটা চলে যেতেই ইয়ানা হালকা শস্থির নিশ্বাস ফেলে বুকে থু থু দেয়। নিবিড় অন্ধকার যেন কুয়াশার মতো পেঁচিয়ে ধরেছে গোটা পরিবেশকে। চতুর্দিকে নিরবতা যা শব্দের থেকেও অধিক প্রখর।
মাফিয়ার টর্চার সেল নামক প্রেতপুরীতে পা রাখার সাহস কেবল যে আত্মহত্যার সমতুল্য, সে জ্ঞান তার আছে। তবুও ইয়ানা এসেছে। না ভয় উপেক্ষা করে বরং ভয়কে হাত ধরে টেনে এনেছে সঙ্গী করে। ইয়ানা পা টিপে সামনে এগিয়ে যায়। প্রতিটি ধাপ তার মৃত্যুপুরীর দিকে অগ্রসর একেকটি ম্লান পদচিহ্ন। ধাতব জুতোর নিচে কংক্রিট মেঝে থেকে এক বিকৃত প্রতিধ্বনি উঠে আসে যা নিজেরই অস্তিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। দেয়ালের উপর ঝুলে থাকা মরচে ধরা শিকলগুলো হঠাৎ বাতাসে নড়ে উঠে কারো ঘুম ভাঙানো শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রতিফলন। ইয়ানা চোখ ঘুরিয়ে চারদিকে তাকায়। শক্ত এক খাম্বার পিছনে গিয়ে নিজেকে আড়াল করে। চারপাশে ছায়া কিন্তু সেগুলো স্থির নয়।মেঘের মতো গড়ায় । কখনো গা ছুঁয়ে যায় আবার কখনো পিছন থেকে নিঃশ্বাস ফেলতে শোনা যায়। পেছনে তাকাতে সাহস হয় না তার। মনে হচ্ছে কেউ হাঁ করে তাকিয়ে আছে অন্ধকারের ভেতর থেকে।না মুখ দেখা যায় আর না চোখ। তবুও উপস্থিতি অনুভবযোগ্য।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
ইয়ানার পা কাঁপছে। মনের অজান্তেই মস্তিষ্ক যেন সেই হৃদয়হীন পুরুষটাকে খুঁজছে। বুকের ভেতর মনে হচ্ছে বাঘ আটকে আছে। সে ছুটতে চায় তবুও সে চেপে ধরে। শ্বাস আটকে আসে। কণ্ঠ শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়। কিন্তু মুখে বিন্দুমাত্র কাঁপন নেই। একা, নিঃসঙ্গ, অথচ নির্ভীক। ইয়ানা জানে এই দেয়ালের পেছনে যেসব দৃশ্য লুকিয়ে আছে সেগুলো কেবল দুঃস্বপ্নে আসার উপযুক্ত যা বাস্তবে নয়।
হঠাৎ দূরের ঘরের ভেতর থেকে এক গুমরে ওঠা আর্তচিৎকার গলা চিরে বেরিয়ে আসা শব্দ পাঁজরের হাড় কাঁপিয়ে দেয়। ইয়ানা থমকে দাঁড়ায়। বাতাস যেন ভারী হয়ে আসে। ইয়ানা স্পষ্ট বুঝতে পারে এখানে আর মানুষ নেই কেবল জানোয়ারেরা টিকে আছে মানুষের মুখোশ পরে। ভিতরে কাউকে নৃশ্বংস ভাবে মারা হচ্ছে। ইয়ানার ভেতরটা ফুঁপিয়ে কেঁপে উঠে। যখন কাউকে মেরেই ফেলব তখন এত বর্বরতা কেনো? কেনো এত অপরাধ চক্রের গন্ধ চারদিকে? ইয়ানা সামনে এগিয়ে যেতে পারছে না। একটু এগিয়ে গেলেই তার উপস্থিতি সবাই টের পেয়ে যাবে। কি করবে এখন? কিভাবে ভিতরে ডুকব? রক্ষিতা! যদি রক্ষিতার রুপ নিয়ে ডুকি তাহলে কেমন হবে? এখানে তো প্রচুর রক্ষিতার আনাগোনা দেখতে পেয়েছি। রক্ষিতা হতে হলে সর্ব প্রথম ওদের পোশাক আমার চাই। কিন্তু এমন পেট দেখানো পোশাক আমি কিভাবে পড়ব? কেউ যদি বাজে নজর দেয় তখন?
ইয়ানা নিজের মাথার কাপড়টা আরও ভালোভাবে চেপে ধরে। সুযোগ বুঝে এক খাম্বা থেকে সবচেয়ে বড় খাম্বার আড়ালে চলে যায়। এখান থেকে প্রতিটা কক্ষের দরজা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। একটা মেয়েকে ওয়াইনের ট্রে নিয়ে আসতে দেখে অবাক হয়ে যায়। মেয়েটার বয়স কত হবে? আঠারো অথবা বিশ বছর! এত ছোট একটা মেয়ে এত গুলো জানোয়ারদের মধ্যে থাকছে! মেয়েটা খাম্বা পেরিয়ে যেতে নিবে এমন সময় ইয়ানা নিজের শরীরের উড়নাটা খুলে মেয়েটার মুখ পেচিয়ে ধরে। মেয়েটা ছটফট করে উঠে চিৎকার দেওয়ার জন্য। ইয়ানা সুযোগ বুঝে মেয়েটাকে নিজের কাছে নিয়ে আসে চোখে চোখ রাখে। মেয়েটা ভয়ে কাঁপছে। ইয়ানা নরম সুরে বলে,
” এত কম বয়সে এখানে কি করছো?
মেয়েটা উম উম শব্দ করছে শুধু। ইয়ানা গম্ভীর নিশ্বাস ছেড়ে বলে,
” জানি তুমি একজন রক্ষিতা। আর তোমাকে কিনে আনা হয়েছে। যায় হোক আমি অগ্নি চৌধুরি স্ত্রী। উনার স্ত্রী হিসেবে আমি কিছু চাই না। শুধু চাইব তোমার এই জামাটা আমাকে দাও। ট্রাস্ট আমি কারোর কোনো রকম ক্ষতি করব না। বয়সের দিক দিয়ে আমার ছোট হবে। আমাকে বড় বোন ভেবে শুধু এইটুকু সাহায্য করো।
ইয়ানা মেয়েটার চোখের দিকে তাকায়। মেয়েটার চোখে এক অবিশ্বাসের প্রলেপ। মেয়েটা ইয়ানাকে এ্যাটাক করতে যায়। ইয়ানা মেয়েটার হাত ধরে নিশ্বাস ছেড়ে বলে,
” তোমাদের মন কষ্টে পাথরে গড়ে উঠেছে। কারোর মায়া, আবেগ , চোখের পানি তোমাদের হৃফয়কে জাগাতে পারে না। কিন্তু বিশ্বাস করো আমি শুধু টর্চার সেলটা দেখতে চাই। কি কি হয় এখানে?
মেয়েটার চোখে পানি চিকচিক করে উঠে। ইয়ানা অবাক হয় প্রচুর। মনে হচ্ছে মেয়েটা কিছু বলতে চাইছে।
— কথা দাও চেঁচাবে না?
মেয়েটা ইয়ানার হাতের উপর হাত রেখে আশ্বস্ত করে। ইয়ানা নির্ভয়ে বাঁধন খুলে দেয়। মেয়েটা ছাড়া পেয়ে ইয়ানার দিকে তাকিয়ে হেসে বলে,
” কথা দিয়ে কথা রাখা আমাদের রক্তে বা পেশায় নেই। ইচ্ছে হলে এখন ওই চেঁচিয়ে সবাইকে দেখিয়ে দিতে পারি। কিন্তু সেটা করব না। এখন অমানুষ হলেও আগে মানুষ ওই ছিলাম। কিন্তু তুই এইখানে আসলি কিভাবে? এত সিকিউরিটি , ক্যামেরা, লোহার গেইড সব উপেক্ষা করে ভিতরে ডুকলি কিভাবে? যদি কেউ তকে দেখে জানিস কি হবে তর? পুরাই পাচার হবি নাহলে মৃত্যুর দরজায় যাবি।
ইয়ানা কৃত্রিম হেসে বলে,
” এসেছি অনেক কষ্টে। সেটা না হয় থাক। আগে তোমার একটা জামা দিবে আমাকে ? সামান্য ছদ্দবেশ ধরে ভেতরে ডুকতে চাই। নিশ্চয় ওয়াইন নিয়ে যাচ্ছিলে ভিতরে? আমাকে এইটা দাও আমি নিয়ে যাচ্ছি।
মেয়েটা ইয়ানার দিকে তাকিয়ে কপাল কুচকে বলে,
” পাগল হয়েছিস তুই? একবার ছলনায় ধরা পড়লে গলা জবাই দিবে। তুই মরলে মর আমাকে টানিস না। তর ভাগ্য ভালো আমি এইটা। আমার জায়গায় অন্য রক্ষিতা থাকলে এতক্ষনে তর স্থান হত সেই জাহান্নাম রুপী অন্ধকোঠরীতে।
ইয়ানা — ভয় কেনো পাচ্ছো। সব জানার আগেই আমার কাজ শেষ হয়ে যাবে। তোমরা তো মুখ ঢেকেই সবার সামনে যাও তাহলে সমস্যা কোথায়? কেউ চিনবে না। আর সবচেয়ে বড় পরিচয় আমি মিসেস অগ্নি চৌধুরি!
মেয়েটা চোখ বড় বড় করে বলে।,
” ভুলভাল কথা বলছিস কেন? বস মেয়েদের সহ্য করতে পারে না। আর উনার বউ তর মত কোমল কেনো হতে যাবে? এই সর মিথ্যে নাটক করছিস!
ইয়ানার তাচ্ছিল্য হাসি,,
“মিথ্যে নয় সত্যি বলছি। কে বলেছে আমি কোমল? কোমল হলে কি অগ্নি চৌধুরির বউ হতাম! কোমল হলে কি কেউকে নির্দয়ভাবে খুন করে বাবা – মায়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে পারতাম! কোমল হলে কি অগ্নি চৌধুরিকে বার বার প্রশ্ন বিদ্ধ করতে পারতাম! কোমল হলে কি এমন এক ধ্বংসাত্বক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতাম! বলো? কোমলমতী ইয়ানা সেদিন ওই মরে গিয়েছিলো যেদিন নিজের স্বামীর ভয়ংকর রুপ জেনেছিলো। ভিতরের কোমলতা আর বিশ্বাস তো সেদিন ওই মরে গিয়েছিলো যাকে আমি জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসতাম। যাকে সবচেয়ে ভরসা আর বিশ্বাস করতাম সে বার বার আমার কলিজাকে ক্ষত – বিক্ষত করে রক্তাক্ত করেছে।
মেয়েটি — ফোর্স লাভ?
ইয়ানা মুচকি হেসে বলে,
” একদম না। ভালোবাসি! জীবনের চেয়ে ও বেশি ভালোবাসি। ভালোবাসি বলেই তো এত যুদ্ধ।
মেয়েটা অবাক হয় ইয়ানার কথায়। কেনো জানি সাহায্য করার জন্য ভিতরটা জেগে উঠে।
মেয়েটি — এত ভালোবাসার মধ্যেও ঘৃনা করিস? আমি তকে একটা জামা দিচ্ছি। তবে মনে রাখিস খুব দ্রুত এখানে চলে আসবি। আমি তর জন্য অপেক্ষা করব।
ইয়ানা আবেগে মেয়েটিকে জড়িয়ে ধরে বলেন,
” ঘৃনা আমার সাময়িক দৃষ্টি মাত্র। সাহায্যের জন্য ধন্যবাদ বোন।
মেয়েটি ইয়ানাকে নিয়ে নিজের রুমে চলে যায়। যেহেতু এইদিকটা রক্ষিতাদের যাতায়াত তাই গার্ড নেই। তবুও ভয়ে ইয়ানার ভিতরে ধুক ধুক করছে। মেয়েটা ইয়ানাকে নিজেদের স্টাইলে শাড়ি পড়িয়ে দেয়। ইয়ানা নিজেকে দেখে বলে,
” প্লিজ পেটটা আবৃত করে দাও। এমনভাবে আমি চলতে পারি না।
মেয়েটা — আমরা এইভাবেই চলি। পেট বের করা না থাকলে সর্দাররা রাগ করে। যখন তুই মদ নিয়ে ওইখানে যাবি তখন ভিবিন্ন ঢং করতে হবে। ওরা যা ইচ্ছে তাই করতে পারে।
ইয়ানা ভাঙ্গা গলায় বলে,
” মানে?
মেয়েটা — এই ধর একটু ছুঁয়ে দিলো অথবা চুমু খেলো এইটাই।
ইয়ানা দু পা পিছিয়ে যায়। কি বলছে এইসব!
ইয়ানা — ওইখানে কি অগ্নি চৌধুরি আছেন?
মেয়েটি — হয়ত।
ইয়ানা শুকনো ঢোক গিলে ওয়াইনের ট্রে টা হাতে নিয়ে নেয়।
মেয়েটি — গিয়ে বলবি , আমি কি ভিতরে আসব। যদি ওদের মন খারাপ দেখিস তাহলে চুপচাপ থাকবি।
ইয়ানা সম্মতি জানিয়ে মাথায় বড় ঘোমটা টেনে নেয়। গুঁটি- শুঁটি পায়ে এগিয়ে যায়। প্রথমে যায় একটা বিশাল কক্ষের সামনে। যেখানে অসংখ্য গার্ড রয়েছে। উপরে লেখা মৃত্যুপুরী, এর পাশে অন্ধকার কুঠোরী। ভেতর থেকে ভেসে আসছে গুন গুন আর গোঙ্গানির শব্দ। ইয়ানার প্রতিটি কোষ কেঁপে উঠছে। রক্ত হীম শীতল হয়ে যেন জমে যাওয়ার উপক্রম। ইয়ানার চোখ দিয়ে বিষাদের পানি গড়িয়ে পড়ে। মস্তিষ্ক খুজছে সেই রুম যেখানে বাচ্চা আর মেয়েগুলোকে রাখা হয়। ইয়ানা হাটছে আর প্রতিটি কক্ষ পরখ করছে। সিঁড়ির কাছে যেতেই মেয়েদের গলার আওয়াজ পেয়ে স্তব্দ হয়ে যায়। দরজায় উকি দিতেই গার্ড কর্কশ গলায় ধমকে উঠে,
” এখানে কি করছো? যাও নিজের কাজে।
ইয়ানা শান্ত হয়ে সরে যায়। কিন্তু যাওয়ার আগে এক পলক তাকায় ভিতরের দিকে। শুধু কিছু পা দেখতে পেয়েছে আর কিছু নয়। ইয়ানার ঘৃনায় গা গুলিয়ে উঠে। ইচ্ছে করছে প্রতিটি মানুষকে কুপিয়ে হত্যা করতে। ইয়ানা কাঁপা পায়ে সে জায়গায় যায় যেখানে লোকদের দেহ ছিন্ন- বিচ্ছন্ন করা হয়। রুমের প্রতিটা জায়গা দেখে চোখ বন্ধ করে নেয়। কি জঘন্য আর বিশ্রি পরিবেশ! ইয়ানাকে একটা গার্ড পুনরায় ধমকে বলে,
” এই মেয়ে এইসব জায়গায় কেনো যাচ্ছো? বসদের জন্য দ্রুত মদ নিয়ে যাও।
ইয়ানা সম্মতি জানিয়ে সেদিকে এগিয়ে যায়। ইচ্ছে করছে এখানে বিষ মিশিয়ে দিতে। নরপশু! সে দরজার সামনে গিয়ে আৎকে উঠে। অগ্নির হাতে এক ধারালো অস্ত্র। আর তার পায়ের কাছে এক বিধ্বস্ত লাশ। লাশটার বুক বরাবর দুই ভাগ হয়ে আছে। ভিতরে নাড়িভুড়ি সব দেখা যাচ্ছে। অগ্নি রক্তাক্ত হাত নিয়ে চলে যায় বিশাল বেসিনের কাছে। কক্ষে রয়েছে আরও বিশাল দেহের কিছু লোক। দেখেই বুঝা যাচ্ছে তারা ওই আসল জানোয়ার। ইয়ানার হাত কাঁপছে। ভিতরে কিভাবে যাবে? উনি যদি বুঝে যায়! ওদেরকে চিন্তিত মনে হচ্ছে। মেয়েটা বলেছিলো চিন্তিত থাকলে যাতে দুরত্ব বজায় রাখি। ইয়ানা নিজের শাড়িটা দিয়ে শরীর ভালোভাবে ঢেকে ভিতরে অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করে। ঘোমটার আড়ালে পুরোটা রুম পর্যবেক্ষন করে। এইটাই তাহলে মেইন টর্চার খানা! ইয়ানা কাঁপা হাতে ওয়াইনের গ্লাসগুলো এগিয়ে দেয়। লোকগুলোর ঝাঁঝালো সুর,
” এত দেরী কেনো হয়েছে আসতে?
ইয়ানা একটুর জন্য কেঁপে উঠে। ওয়াইনের গ্লাস এগিয়ে দিতে গেলেই কোমর থেকে বার বার শাড়ীর কিছু অংশ সরে যাচ্ছে। হাঁপিয়ে উঠছে এমন পরিস্থিতিতে। যে কাজের জন্য এসেছে সেটা তো পুরন হলো ওই না উল্টো জানোয়ারগুলোকে ভোজন পরিবেশন করছি। অসহ্য!
অগ্নি গম্ভীর হয়ে চেয়ারে বসে। তীর্যক চোখে ইয়ানার দিকে তাকায়। সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে নিশ্বাস টানে। ছটফট করে উঠে পুরো সর্বাঙ্গ।গম্ভীর হয়ে প্রতিটি লোকের লালসার দৃষ্টির দিকে তাকায়। ইয়ানা শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কখন অনুমতি দিবে আর কখন বের হবে। নিজের ভাবনার মাঝে হঠাৎ কারোর ভয়ংকর আওয়াজে পুনরায় কেঁপে উঠে,
” ডোন্ট টাচ মি, রিজন!
ইয়ানা ঘোমটার আড়ালে তাকায়। অগ্নি একজন ব্যক্তির দিকে রক্তচক্ষু নজরে তাকিয়ে আছে। ব্যক্তিটা ইয়ানার থেকে নিজের হাত সরিয়ে কপাল কুচকে ঠাট্টা সুরে বলে,
” মি, চৌধুরি আপনার মেয়ে প্রবলেম বাট আমাদের না। ওরাই তো জীবনের আসল মজা।
লোকগুলোর কি বিকৃত হাসি।
— আউট!
ইয়ানা শুকনো ঢোক গিলে।অগ্নির আদেশ পাওয়া মাত্র ওই দ্রুত বেরিয়ে আসে রুম থেকে। তবে এইটুকু ভেবে শান্তি লাগছে তাকে অগ্নি চৌধুরি চিনতে পারে নি। চিনলে এতক্ষনে কবর খুঁরে ফেলত। ইয়ানা লম্বা শ্বাস টেনে মেয়েকক্ষের সামনে গিয়ে বলে,
” সর্দার বলেছে মেয়েগুলোকে দেখে যেতে ?
একটু আগে ধমক দেওয়া ব্যক্তিটা সর্দার আদেশ দিয়েছে শোনা মাত্র ওই দরজাটা পুরো- পুরিভাবে খুলে দেয়। ইয়ানা প্রচুর অবাক হয়ে এদের কর্মকান্ডে। কতটা পোষ মানিয়েছে এদেরকে। ইয়ানা ভিতরে পা রাখে। এক কোণে রক্ত লেগে আছে দেওয়ালে যা শুকিয়ে কালচে লাল হয়ে গেছে। ঠিক যেন কারো যন্ত্রণার স্মৃতি জমে বসে আছে সেই দেওয়ালে। আরেক কোণে ধুলোমাখা চেয়ারে বসে আছে এক পাহারাদার যার চোখ খুলে কিন্তু প্রাণ নেইমানুষ নাকি মূর্তি বোঝা যায় না।
ইয়ানা মেয়ে আর বাচ্চাগুলোকে দেখতে যাবে তার আগেই কেউ তার হাত দুটি শক্ত ভাবে চেপে ধরে। ইয়ানা সাথে সাথে ব্যাথায় চেঁচিয়ে উঠে। ব্যাথায় পুরো শরীর জিম দিয়ে উঠে। ইয়ানা কাঁপা দৃষ্টি পিছনে নিতে যাবে তার আগেই কেউ তাকে শূন্যে ভাসিয়ে নেয়। ইয়ানার ভেতরটা কেঁপে উঠে। এই পারফিউমের ঘ্রাণ তার অতি পরিচিত। শুকনো ঢোক গিলে তাকায় সেই ভয়ংকর ব্যক্তিটার দিকে। লোকটার দৃষ্ট কেমন হিংস্র হয়ে আছে। তার প্রতিটি পদ চারনে প্রতিটি গার্ড মাথা নিচু করে রেখেছে। ইয়ানা নিজেকে শক্ত করে নেয়। নির্দয় ব্যক্তিটা নিজের গাড়ির কাছে এনে দাড়া করায়। ইয়ানা ঠোঁট ভিজিয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই এক শক্ত থাপ্পরের সম্মুখীন হয়। তাল সামলাতে পারে নি। ছিটকে গিয়ে পড়ে গাড়ির উপর। ইয়ানা গালে হাত দিয়ে সোজা হতে যাবে তার আগেই পুরো দুনিয়া যেন ঘুরে উঠে। এক পলক তাকায় ভয়ংকর ব্যক্তিটার দিকে। চোখ থেকে যেন আগুন বের হচ্ছে। পুরো মুখ লাল হয়ে গিয়েছে। ঠোঁটের ভাঁজে সিগারেট নিয়ে লাইটার দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে ইয়ানার দিকে এগিয়ে আসে। ইয়ানা ভয়ে সামান্য পিছিয়ে যায়। বর্তমানে অগ্নিকে তার মানুষ মনে হচ্ছে না। যেন উন্মাদ এক জানোয়ার! ইয়ানা শুকনো ঢোক গিলে। অগ্নি সিগারেটের সবটুকু ধোঁয়া ইয়ানার মুখের উপর এসে ছাড়ে। ইয়ানা কেঁশে উঠে সাথে সাথে। অস্ফুর্ত আওয়াজে বলে,
” আমি মেয়েগুলোকে দেখতে চাই।
অগ্নি শান্ত চোখে ইয়ানার দিকে এক পলক তাকায়। এরপর সিগারেটটা হাতের নিয়ে সাথে সাথে ইয়ানার উন্মুক্ত কোমরে চেপে ধরে। ইয়ানা চিৎকার দিয়ে উঠে কিন্তু তার আগেই অগ্নি ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে আওয়াজ বন্ধ করে দেয়। ইয়ানা হাত দিয়ে ধাক্কা দিতে থাকে। অগ্নি সেখানে চেপে ধরে সিগারেটটা সেই অবস্থাতেই নিচে ফেলে দিয়ে বলে,
” অগ্নি চৌধুরির বউয়ের শরীরে রক্ষীতা বস্ত্র! তাকে লালসার দৃষ্টি দিয়েছে অনেক পুরুষ! উন্মুক্ত পেট বের করে গিয়েছেলে মনরঞ্জন করতে হ্যা? হাউ ডিয়ার ইউ ফাকিং গার্ল!
ইয়ানা থাপ্পরের আঘাত সহ্য করতে পারে নি। সিগারেটের ছেকায় জ্ঞান হারিয়ে অগ্নির বাহুতে ঢলে পড়ে। অগ্নি দাঁত চিবিয়ে বলে,
” মাটির নিচে তোমার উত্তম স্থান হবে জান। আমার বউ হয়ে এমন নিষিদ্ধ জায়িগায় পা রাখার শাস্তি তো পেতেই হবে।
সকালের ঠান্ডা পরিবেশে শিখা চৌধুরি আর সাজিদ চৌধুরি বসে চা খাচ্ছিলেন।
— আলিয়ার কথা খুব মনে পড়ে। মেয়েটাকে নিজের ভেবে নিয়েছিলাম।
সাজিদ চৌধুরি — আলিয়া তো আর রক্তের কেউ না। মেয়েটার আত্নীয় এসে নিয়ে গিয়েছে। এখানে আমাদের তো কিছু করার নেই শিখা।
শিখা চৌধুরি — সম্পর্কগুলো কেমন বিচ্ছেদ হয়ে যায়। অগ্নিকে দত্তক নিয়েছিলাম যেদিন সেদিন নিজের সন্তান হিসেবে পুরো জগতের সামনে স্বীকৃতি দিয়েছিলাম। ওকে দিয়েই প্রথম মা হয়ে উঠেছিলাম। নিজের মৃত সন্তানকে ভুলে ওকে আকড়ে ধরে বেঁচে উঠেছি। কিন্তু দেখো সেই আজ বহু দুর।। বড় সন্তানের অভাব কেউ পুরন করতে পারে না সাজিদ।
শিখা চৌধুরি চোখের পানি মুছে শান্ত হয়ে বসে। অরিদকে চিনে নামতে দেখে স্বাভাবিক হয়ে বলে,
” কোথায় যাচ্ছো?
অরিদ — বাহিরে।
শিখা চৌধুরি — মিরাকে নিয়ে যাও।
অরিদ — আরে কি আশ্চর্য আম্মু। যেখানে যাচ্ছি সেখানেই বলছো মিরাকে নিয়ে যেতে।
শিখা চৌধুরি — বলছি কিন্তু তুমি কি কোথাও নিয়ে গিয়েছো। কবে শপিং এর কথা বলেছি। এখনও নিয়ে গিয়েছো তুমি?
অরিদ — কেনো তোমার বউমা ড্রাইভারের সাথে যায় নি?
শিখা চৌধুরি — ছেলে থাকতে ছেলের বউ ড্রাইভারের কাছে কেনো যাবে? বউ তোমার নাকি জনগনের?
অরিদ গম্ভীর হয়ে দাঁড়ায় । কখনো সে মায়ের সাথে পেরে উঠে না। মিরাকে রেডি হয়ে নিচে নামতে দেখে অরিদ ভ্রুঁ কুচকে তাকায়। তার মানে আগে থেকেই এই মেয়ে সব জানত! অরিদ গলা খাঁকারি দিয়ে বলে,
” আমি কাউকে নিয়ে যেতে পারব না আম্মু।
মিরা ছোট ছোট চোখে অরিদের দিকে তাকায়। এরপর সাজিদ চৌধুরির উদ্দেশ্যে বলে,
” আব্বু আমি একা যেতে পারব চিন্তা করবেন না।
সাজিদ চৌধুরি মিরাকে যথেষ্ট ভালোবাসে। ইয়ানা আর মিরার কোমলতা তাকে বার বার মুগ্ধ করে। তিনি অরিদের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বলে,
” মেয়েটা একা গিয়ে রাস্তায় যদি কিছু হয় তাহলে তোমাকে আমি ঘর ছাড়া করব অরিদ।
অরিদ অবাক হয়ে বলে,
” আমি তো যাচ্ছি না। তাহলে আমার উপর কেনো দোষ চাপাবে? এইটা কি ধরনের হ্যারেস আব্বু?
সাজিদ চৌধুরি — স্বামী হিসেবে তোমার কর্তব্য বউকে প্রটেক্ট করা, সব দায়িত্ব পালন করা। যখন সব কিছু থেকে এড়িয়ে যাচ্ছো হ্যারেস তো তুমি’ই হবে অরিদ।
অরিদ কিছুক্ষনের জন্য শান্ত হয়ে যায়। স্বামী – স্ত্রী কথাটা যেন প্রতিটি নিউরনকে কাঁপিয়ে তুলছে। কোথায় আগে তো এমন হত না। আগে তো কেউ স্বামী – স্ত্রী বললে রেগে যেতাম। কিন্তু এখন ভালো লাগা কাজ করে কেনো? কেনো এমন ফিল আসে ভিতরে?
অরিদ কিছু না বলে বেরিয়ে যেতে যেতে বলে,
” তোমাদের মেয়েকে আসতে বলো। যদি এক্সিডেন্ট হয় তাহলে এইটাকে খাদে ফেলে নিজে চলে আসব আগেই বলে যাচ্ছি।
শিখা চৌধুরি ছেলের কথায় তপ্ত শ্বাস ছাড়ে। এদের সম্পর্ক ঠিক হবে কবে? মিরা মুচকি হেসে অরিদের পিছু পিছু যায়। অরিদ গাড়িতে বসে ড্রাইভিং সিটে বসে বিরক্তি নিয়ে বলে,
” সং এর মত দাঁড়িয়ে না থেকে দ্রুত উঠে আসো।
অরিদের ধমকে মিরা দাঁত কটমট করে তাকায় সেদিকে। এরপর জেদ নিয়ে গিয়ে গাড়িতে উঠে বসে। অরিদ স্টিয়ারিং ঘুরাতে ঘুরাতে বলে,
” ঠোঁটের কাটাস্তানে মেডিসিন লাগিয়েছিলে?
অরিদের কথা বুঝতে পেরে মিরা সিটিয়ে যায়। মনে পড়ে যায় মুহূর্তগুলো। কিভাবে ক্ষ্যাপা বাঘের মত রক্তাক্ত করে দিয়েছিলো।
— লাগিয়েছিলাম বলেই সবার সামনে বের হতে পেরেছি। আপনার লজ্জা করলো না এমন একটা কাজ করতে? যাকে বউ মানেন না, ভালোবাসেন না তাকে ডাইরেক্ট… ছিহহহহ!
অরিদ ঠোঁট চেপে হেসে সামনের দিকে তাকিয়েই বলে,
” স্বামীর অধিকার তো প্রয়োগ করি নি যে বউ মানতে হবে।
মিরা নাক ছিটকিয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে থাকে।।দুইজনের মধ্যে পিন – পিন নিরবতা। প্রায় অনেকক্ষন পর হুট করে মিরা চেঁচিয়ে উঠে,
” কাঁচের চুড়ি! অরিদ চৌধুরি প্লিজ গাড়িটা একটু থামিয়ে দিন।
অরিদ মিরার উৎসুক মুখটার দিকে এক পলক তাকিয়ে বাহিরে উকি দেয়। নানা রকমের মেয়েলি জিনিস নিয়ে লোকজন বসে আছে। অরিদ বিরক্তি নিয়ে বলে,
” ফুটপাতের জিনিস কেনার জন্য তুমি এইভাবে চেঁচাচ্ছিলে? লাইক সিরিয়াসলি মিরা। এখান থেকে কিছু কিনতে হবে না আমি শপিং মলে নিয়ে যাচ্ছি।
মিরা অরিদকে থামিয়ে দিয়ে বলে,
” কোটি টাকার ব্রেন্ড পড়ুয়া ব্যক্তিরা ফুটপাতের জিনিসের মর্ম বুঝবে না। আমার দামী জিনিসের প্রয়োজন নেই। শুধু কিছু কাঁচের চুঁড়ি হলেই হবে।
মিরার বাচ্চামো দেখে অরিদ তপ্ত শ্বাস ছেড়ে গাড়ি থেকে নামে। এরপর কপালের রেখা ভাঁজ করে মিরার উদ্দেশ্যে বলে,
” দ্রুত কিনো সবকিছু। বাহিরে খুব গরম।
— আপনি গাড়ির ভিতরে গিয়ে বসুন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকাটা আপনাকে ঠিক মানায়। চৌধুরি বংশের ছেলে বলে কথা!
মিরার খুঁচা মারা কথায় অরিদ দাঁত কটমট করে তাকায়। মিরা সেদিকে পাত্তা নিয়ে দোকানদারকে বলে,
” মামা লাল চুড়ি গুলো দিন তো?
দোকানদার চুঁড়ি এগিয়ে দেয়। মিরা হাসি মুখে চুঁড়িগুলো হাতে ডুকাতে যাবে এমন সময় দোকানদার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। দোকানদার স্পর্শ করার আগেই অরিদ মিরার হত নিজের হাতের মুঠোঁই নিয়ে আসে। এরপর একজন দক্ষ স্বামীর মত সবগুলো চুঁড়ি হাতে পড়িয়ে দেয়। দোকানদার হাসি দিয়ে তাকিয়ে থাকে।আর মিরা দুই চোখ ভর্তি বিস্ময়। চুঁড়ি পড়ানো শেষ হলে অরিদ দোকানদারকে টাকা দিতে যাবে এমন সময় চোখ আটকে যায় একজোড়া পায়েলের দিকে। মিরার দিকে এক পলক তাকিয়ে নিজের মনের সাথে এক প্রকার যুদ্ধ করে দোকানদারকে বলে,
” মামা এই পায়েল জোড়া গুলো দিন তো?
— কার জন্য কিনছেন?
অরিদ মিরার প্রশ্নে সামান্য হাসে। কার জন্য কিনেছে জানা নেই। শুধু মন বলছে কারোর পায়ে পায়েলগুলো সুন্দরভাবে মানাবে।
আহিয়া কফিশপে কারোর জন্য অপেক্ষা করছে। বুকে একরাশ সপ্ন আর আবেগ। কিশোরি মনটা কারোর জন্য দৈনিক ছটফট করে। বার বার তাকে বলতে ইচ্ছে করে আমি আপনাকে খুব ভালোবাসি। কিন্তু লজ্জা আর ভয়ের কারনে বলা হয় না। কিন্তু আজ সে সবকিছুর অবসান ঘটাবে। আহিয়া টেবিলে বসে চারদিকে এক পলক তাকায়। টেবিলে একটা সুন্দর গোলাপ রাখা। আর ভালোবাসাময় ডেজার্ট রাখা। আহিয়া অপেক্ষার প্রহর গনছে ক্ষনে ক্ষনে।
—- হাই। কেমন আছো আহিয়া? হুট করে এখানে ডাকার কারন ?.
যার অপেক্ষায় বসে ছিলো তার কন্ঠ পেয়ে আহিয়া জমে যায়। কাঁপা দৃষ্টিতে হাস্যরত যুবকটির দিকে তাকিয়ে বলে,
” এইতো আলহামদুলিল্লাহ। বসুন না রুহান ভাইয়া।
রুহান সামনে চেয়ার টেনে বসে। আহিয়ার অস্বাভাবিক অবস্থা দেখে রুহান কপাল কুচকে বলে,
” আর ইউ ওকে আহিয়া?
আহিয়া মাথা নাড়ায়। কোনো কিছুর পড়ুয়া না করে একটা ছোট গোলাপ রুহানের সামনে ধরে। রুহান ভ্রুঁ ভাঁজ করে ফেলে।
— আই লাভ ইউ ভাইয়া! সত্যি বলছি ভালোবেসে ফেলেছি আপনাকে। ভুলতে চেয়েছিলাম বার বার কিন্তু সম্ভব হয় নি। জানি আমি আপনার থেকে অনেক ছোট কিন্তু আপনাকে নালিশ করার সুযোগ দিব না কথা দিলাম।
হুট করে রুহান হেসে উঠে। আহিয়া তাকায় রুহানের দিকে। রুহান হাসি থামিয়ে বলে,
” কোরিয়ান ড্রামা তোমার মাথা নিয়ে গিয়েছে আহিয়া। এখনও ছোট তুমি। আবেগে গা ভাসানো একদম উচিত না। পড়াশুনা করো, এইসব পাগলামো বাদ দিয়ে হুম।
আহিয়া — আমি আপনাকে সত্যি ভালোবেসে ফেলেছি।
রুহান — এইটা তোমার মনের ভুল। তেমন কিছুই নয়। ওকে বাদ দাও এইসব। চকলেট খাবে?
আহিয়ার চোখে পানি টলমল করে উঠে। সে ভালোবাসার কথা বলছে আর এখানে উনি হাসির পাত্র বানিয়ে দিয়েছে। মনটা বিষিয়ে উঠে। যেন এর চেয়ে কষ্ট পৃথীবিতে দ্বীতিয়টা হয় না। চোখের পানি আড়াল করে চেয়ার থেকে উঠে কৃত্রিস হাসি দিয়ে বলে,
অনুভবে তুমি সিজন ২ পর্ব ৫৭
” লাগবে না ভাইয়া। তবে সরি আপনার সময় নষ্ট করার। মনের ভুলে একটু বেশিই হাস্যকর কথা বলে ফেলেছিলাম।। আবার ও সরি।
আহিয়া আর এক মুহূর্তেও দাঁড়ায় না। খুব দ্রুত রুহানের দৃষ্টিসীমানার বাহিরে চলে যায়। রুহান স্তব্দ হয়ে বসে থাকে।মনের গভীরতা থেকে বেরিয়ে আসে,
” নিজের ভালোবাসাটা হয়ত প্রকাশ করে দিলে। বাট আফসোস আমারটা প্রকাশ করতে পারলাম না।