অনুরাগে তুই পর্ব ২০
সাদিয়া শওকত বাবলি
বুকে হাত দিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতেই তার কানে এসে বারি খেলো,
“অবশেষে বাড়িতে ফিরলেন তাহলে মহারাজ। আপনার প্রজা যে সেই কাল থেকে আপনার অপেক্ষা করছে।”
রবি চমকাল, ভরকালো। তৎক্ষণাৎ চোখ তুলে তাকালো অভিমুখে। ড্রীম লাইটের আলোয় চোখের সম্মুখে ভেসে উঠল রাশেদ আহমেদের কঠিন মুখশ্রী। অন্তরাত্মা কেঁপে উঠল রবির। একি! তার বাবা এত রাতে এখানে কি করছে? এখনো ঘুমায়নি? রবি ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকালো বাবার হাতের দিকে। সাথে সাথেই আঁতকে উঠল সে। রাশেদ আহমেদের হাতে বেশ বড়োসড় আকারের একটি রা’ম দা চকচক করছে। রবি ভয় পেল। এই রা’ম দায়ের একটা কো’প কোনোভাবে তার শরীরে পড়লে আর জীবিত থাকতে হবে না। এলোমেলো দৃষ্টি ফেলল বেচারা। শুকনো ঢোক বলল,
“ববববাবা…”
এই টুকু বলতেই তাকে থামিয়ে দিলেন রাশেদ আহমেদ। গুরুগম্ভীর কণ্ঠে বললেন,
“কে তোমার বাবা? ভাই বলো ভাই। কাল যেমন বলেছিলে।”
রবি খেই হারিয়ে বসলো। কাল যা সে করেছে এরপর বাবার সামনে কি বলবে, কিভাবে নিজেকে বাঁচাবে ঠিক বুঝে উঠতে পারল না বেচারা। এলোমেলো দৃষ্টি ফেলে কোনো রকমে বলল,
“আসলে কাল হয়েছে কি বাবা….”
“কি হয়েছে?”
“না মানে হয়েছে কি…”
রাশেদ আহমেদ তেতে উঠলেন। হাতের রা’ম দা টা নিয়ে তেড়ে এলেন রবির দিকে। দাঁতে দাঁত পিষে বললেন,
“কি হয়েছে কি তা কাল আমি তোর কথা শুনেই বুঝেছি। তোকে আমি এই শিক্ষা দিয়েছিলাম? হত’চ্ছা’ড়া, বদ’মাই’শ ছেলে কাল কোথায় গিয়ে কি গিলেছিলি তুই?”
রা’ম দা নিয়ে রাশেদ আহমেদকে এগিয়ে আসতে দেখেই বুকটা কেঁপে উঠল রবির। প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে তৎক্ষণাৎ সে দৌড় শুরু করল বসার কক্ষ জুড়ে। কণ্ঠ উঁচিয়ে ডাকল,
“মা, মা কোথায় তুমি? তাড়াতাড়ি এসো। নয়তো এই বাবা নামক ভয়ংকর লোকটা আমাকে আজ কু’পি’য়ে’ই মে’রে ফেলবে।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
রাশেদ আহমেদও ছেঁড়ে দেবার পাত্র নন। রা’ম দা হাতে সেও ছুটলো ছেলের পিছু পিছু। ছোট বেলা থেকে এত আদর যত্ন করে, এত শিক্ষা দিয়ে, এত বড়ো বড়ো স্কুল কলেজে পড়িয়ে শেষ পর্যন্ত কিনা এই বানিয়েছেন ছেলেকে যে কিনা এখন সেখানে গিয়ে মা’দ’ক দ্রব্য পর্যন্ত সেবন শুরু করেছে। আবার তাল হারিয়ে বাবাকে বলছে ভাই। রাশেদ আহমেদ কখনো নিজের দিকে তাকাননি। নিজে ছোট হয়ে সারাটা জীবন এই ছেলে মেয়েগুলোর জন্য খেটেছেন। এদের একটা ভালো জীবন দেওয়ার জন্য, সমাজের উঁচু পর্যায়ে স্থান দেওয়ার জন্য সারাজীবন পরিশ্রম করে গেছেন। অথচ সেই ছেলে মেয়ে কিনা এখন বিগড়ে যেতে শুরু করেছে? তাও এতদিন যা ছিল একটি পর্যায়ে ছিল। এখন তো ম’দে’র নেশায়ও পেয়েছে। কিছুদিন পর গা’জা, ই’য়া’বা, হি’রো’ই’নে’র নেশাতেও পাবে। না, এটাকে আজ একটা উচিত শিক্ষা দিতে হবে। নয়তো এর দেখাদেখি ছোট দুটোও বিগড়ে যাবে। রাশেদ আহমেদ গলা উঁচালেন। রা’ম দা নিয়ে ছেলের পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে বললেন,
“তোকে তো আজ আমি মে’রে’ই ফেলবো। তুই কোন সাহসে ঐসব ছাইপাশ মুখে তুলেছিস? এই জন্য তোকে আমি পড়াশোনা করিয়েছি? এই জন্য তোর পিছনে আমি এত টাকা খরচ করি? হ’ত’চ্ছা’ড়া, ব’দ’মা’ই’শ ছেলে কোথাকার।”
বসার কক্ষে মাঝরাতে চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে রবির মা তানজিলা বেগম, বোন রাইমা এবং রাকিবের ঘুম ভেঙে গেল। হন্তদন্ত হয়ে তারা ছুটে এলেন বসার কক্ষে। রাইমা তাড়াহুড়ো জ্বালিয়ে দিলো কক্ষের উজ্জ্বল আলোটা। সাথে সাথেই তাদের চোখের সম্মুখে ভেসে উঠল রাশেদ আহমেদ এবং রবির দৌড়। রাশেদ আহমেদের হাতে চকচকে রা’ম দা টা দেখেই আঁতকে উঠল সকলে। তানজিলা বেগম দৌড়ে গিয়ে স্বামীকে ধরলেন। তার হাত থেকে রা’ম দা টা কেড়ে নিয়ে বললেন,
“পাগল হয়েছেন আপনি? ছেলেটাকে মে’রে ফেলবেন নাকি?”
রাশেদ আহমেদ থামলেন। এতক্ষণ দৌড়াতে দৌড়াতে বেশ হাঁপিয়ে উঠেছেন লোকটা। নিঃশ্বাস নিতে গিয়েও বুকটা হাপড়ের ন্যায় ওঠানামা করছে। বয়স বেড়েছে তার, বুড়ো হয়েছেন। এখনো কি এমন দৌড় ঝাঁপ মানায় তাকে। তবুও এই ছেলে মেয়েদের জন্য দৌড়াদৌড়ি করতে হচ্ছে। জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে তিনি বললেন,
“হ্যা, ওকে আজ আমি মে’রে’ই ফেলব। যে ছেলে মেয়ে দিয়ে মান সম্মান থাকবে না তাদের বাঁচিয়ে রেখে কি করব?”
মাকে রবি যেন একটু স্বস্তি পেল। দৌড়ে এসে লুকিয়ে পড়লো তার পিছনে। ভয়ার্ত কণ্ঠে বলল,
“দেখো না মা। বাবা কেমন ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। আমাকে রা’ম দা দিয়ে কো’পা’তে চাইছে।”
সাথে সাথে তেতে উঠলেন রাশেদ আহমেদ। গলা চড়িয়ে বললেন,
“তাহলে কি করব? পুজো দেব তোকে?”
তানজিলা বেগম চিন্তিত হলেন। স্বামীকে ধরে নিয়ে সোফায় বসাতে বসাতে বললেন,
“আপনি এভাবে উত্তেজিত হবেন না। এমনিই হাই প্রেশার আপনার।”
“উত্তেজিত হবো না তো কি করব? এত আদরের ছেলে মেয়ে আমার। কত কষ্ট করে, কত পরিশ্রম করে বড়ো করেছি এদের আমি। অথচ সেই ছেলে মেয়ে কিনা এখন বখে যেতে শুরু করেছে। তাও যেইসেই বখে যাওয়া না। বাড়ির বাহিরে গিয়ে ম’দ গিলতে শুরু করেছে এরা। কয়দিন পর অর্থাৎ আমি ম’রে যাওয়ার পর দেখা যাবে আমার বাড়িটাই এরা ম’দে’র আখড়া করে তুলেছে।”
এই টুকু বলে থামলেন রাশেদ আহমেদ। রুক্ষ কণ্ঠে ফের বললেন,
“ওকে আমার বাড়ি থেকে চলে যেতে বলো তানজিলা। ওর মতো নে’শা’খো’রে’র আমার বাড়িতে কোনো জায়গা নেই। কাল ম’দ গিলে সারারাত কোথায় ছিল আবার যেন সেখানে চলে যায়।”
রবি শুকনো ঢোক গিললো। বাবাকে সে ভয় পায় ঠিক আছে সাথে শ্রদ্ধাও করে ভীষণ। সে জানে তার বাবা কখনো তার খারাপ চাইবে না। এই যে এখন ম’দে’র জন্য তার উপর চোটপাট দেখাচ্ছে এটাও তো তার ভালোর জন্যই। কিন্তু সেও তো ইচ্ছে করে ওসব খায়নি। ভুলবশত হয়ে গেছে। রবি মাথা মস্তক নুইয়ে নিল। মিনমিনিয়ে বলল,
“আমি ইচ্ছে করে ওসব খাইনি বাবা। ভুলবশত হয়ে গেছে। কাল একটা পার্টিতে গিয়েছিলাম। সেখানেই কোমল পানীয় ভেবে একটা পানীয় খেয়ে ফেলেছিলাম। কে জানতো ওটা ম’দ। তারপর আর আমার কিছু মনে নেই।”
রাশেদ আহমেদ এবার যেন দ্বিগুণ বেগে জ্বলে উঠলেন। দাঁতে দাঁত পিষে বললেন,
“ওহ তুই শুধু ঐ ছাইপাশ গেলা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ নেই। ঐসব পার্টি ফার্টিতেও যাতায়াত শুরু করেছিস?”
রবি নিজের বোকামিতে নিজেই ফেঁসে গেল ফের। সে তো ভুলেই বসেছিল তার বাবা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা সেকেলে মানুষ। নিজ পরিশ্রমের জোরে এখন একটু অর্থ সম্পদ অর্জন করলেও মানসিকতাটা পরিবর্তন হয়নি একটুও। এই অতি আধুনিক সভ্যতার ভিতরে ঢুকতে পারেননি তিনি। তাদের ধারণা মতে এসব পার্টি ফার্টি খারাপ জিনিস। এখানে বড়ো লোকের বিগড়ে যাওয়া সন্তানরা নাচ, গান, আমোদ ফুর্তি করে। সাথে মা’দ’ক বিষয়টাকেও সহজ করে। অবশ্য তাদের এই ধারণা খুব একটা ভুলও নয়। আজকাল পার্টিগুলো বেশিরভাগ এমনই হয়। ম’দ, গাঁ’জা’র আড্ডা থাকে সেখানে। আর সাথে নারী-পুরুষের চিপকা চিপকি তো রয়েছেই। রবি এলোমেলো দৃষ্টি ফেললো। কিছুটা ইতস্তত করে বলল,
“আমি যেতে চাইনি। তবুও একটা জরুরি কাজের জন্য যেতে হয়েছে।”
“পার্টিতে আবার কি জরুরি কাজ? আমাকে বোকা পেয়েছিস তুই যে যা বুঝাবি তাই বুঝে বসে থাকবো?”
“না, আসলে হয়েছে কি….”
রবিকে বাকিটুকু আর বলতে দিলেন না রাশেদ আহমেদ। সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন তিনি। দৃঢ় কণ্ঠে বললেন,
“আজ থেকে তোর এই বাড়িতে ভাত বন্ধ। তোর মতো একটা বে’য়া’রা ছেলের পিছনে আমি আর এক টাকাও খরচ করতে পারব না। কাড়ি কাড়ি টাকা নষ্ট করে তোকে আমি অনার্স, মাস্টার্স করিয়েছি। তারপরও এখনো অব্দি একটা চাকরি জোটাতে পারিসনি। আমি তবুও চুপ ছিলাম। কিছুই বলিনি তোকে। কিন্তু আজ যেটা তুই করলি তা আমার ভাবনার বাহিরে ছিল।”
এই টুকু বলে থামলেন রাশেদ আহমেদ। ফের রুক্ষ কণ্ঠে বললেন,
“যাইহোক দয়া ধরে তোকে বাড়ি থেকে বের করে দিচ্ছি না। কিন্তু তোর পিছনে আমি আর এক টাকাও নষ্ট করব না। চাকরি খোঁজ, নিজে উপার্জন কর, নিজের টাকায় চল।”
স্বামীর কণ্ঠে এমন কথা শুনে দিশেহারা হয়ে উঠলেন তানজিলা বেগম। ব্যগ্র কণ্ঠে বলছেন,
“কিসব বলছেন আপনি? ছেলেটা এত তাড়াতাড়ি চাকরি কোথায় পাবে?”
“তা আমি কি জানি? এতদিন বাপের হোটেলে বসে খেয়েছে, ঘুরেছে তাই এ দুনিয়ার কাঠিন্যতা সম্পর্কে টের পায়নি। যদি পেত তবে বিপথে যেতে পারতো না।”
“কিন্তু …”
“কোনো কিন্তু না। আমি যা বলেছি ওটাই শেষ কথা। ওর পিছনে আমি আর এক পয়সাও নষ্ট করতে পারব না। ওর নিজের ব্যবস্থা নিজেকেই করতে বলো।”
নিজের কণ্ঠে তোলা বাক্যগুলোর সমাপ্তি ঘটিয়ে আর এক মুহূর্তও দাঁড়ালেন না রাশেদ আহমেদ। হনহন করে চলে গেলেন নিজ কক্ষে। রবি আহত পাখির ন্যায় চেয়ে রইল বাবার গমনপথের দিকে। তার বাবা তাকে আজ এতগুলো শক্ত শক্ত কথা বলতে পারল? মানছে সে ভুল করেছে কিন্তু ইচ্ছে করে তো করেনি। ভুলবশত হয়ে গেছে। তাই বলে তার বাবা তাকে বেকারত্বের খোঁটা দিবে? মাথার উপরে এই বেকারত্ব যে কত বড়ো একটি বোঝা তা জানে রবি। এভাবে চাকরি বাকরি না করে বৃদ্ধ বাবার মাথার উপরে বসে বসে খেতে তারও তো খারাপ লাগে। বন্ধু বান্ধবদের যখন তৈরি হয়ে অফিসে যেতে দেখে তখন নিজের জীবন নিয়ে একরাশ হতাশা এসে ঘিরে ধরে তাকে। কিন্তু সেও বা কি করবে? চাকরির জন্য কম পরীক্ষা তো দিলো না। কিন্তু ভাগ্য তার সহায় হচ্ছে না। ভালো পরীক্ষা দিয়েও শেষ পর্যন্ত চাকরিটা হচ্ছে না।
মধ্য দুপুর। অম্বরে স্থান করে নেওয়া সূর্যটা জ্বলে যাচ্ছে প্রবল তেজ নিয়ে। সেই সাথে নিজের উষ্ণতা ছড়িয়ে দিচ্ছে চারপাশে। ত্রয়ী দাঁড়িয়ে রয়েছে কলেজের সম্মুখে। তাদের বাড়ির গাড়িটা দেখা যাচ্ছে না আশেপাশের কোথাও। কলেজে আসার সময় তো বাড়ির গাড়িতেই এসেছিল সে। আর কলেজ শেষ হওয়ার পর আবার তাকে আর রিমাকে নিয়ে যাওয়ার কথাও ছিল। রিমাকেও তো দেখা যাচ্ছে না আশেপাশে। সে কি তবে আগে আগে বেরিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে গেছে? ত্রয়ীর মন খারাপ হলো। রিমা কেন তার সাথে এমনটা করছে? সে তো ঐ মেয়েটার সাথে খারাপ কিছু করেনি। তারপরেও সে কেন ত্রয়ীকে দেখতে পারে না? মেয়েটার ভাবনার মধ্যেই হঠাৎ একটি কালো রঙা গাড়ি এসে ব্রেক কষলো তার অতি নিকটে। হকচকিয়ে উঠল সে। হৃদযন্ত্রটা লাফিয়ে উঠল দ্রুত বেগে। সাথে সাথেই দুই কদম পিছিয়ে গেল ত্রয়ী। আর একটু হলেই প্রাণপাখিটা বুঝি উড়াল দিচ্ছিল তার। বুকে হাত দিয়ে মেয়েটা তাকালো সম্মুখ পানে। গাড়িটা দেখে কেমন চেনা চেনা লাগলো। মস্তিষ্কে চাপ প্রয়োগ করে গাড়ির মালিককে স্মরণ করার পূর্বেই গাড়ির জানালার কাঁচ নামিয়ে উঁকি দিলো শীর্ষ। আদেশের স্বরে বলল,
“গাড়িতে ওঠ।”
ত্রয়ী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। দ্বিরুক্তি না করেই উঠে বসলো গাড়িতে। শীর্ষও আর কোনো বাক্যব্যয় না করে গাড়ি চালনা শুরু করল। কিন্তু কিছুটা দূরে আসতেই হঠাৎ শীর্ষের ভ্রু যুগল কুঁচকে এলো। তাদের গাড়ির সামনে সামনেই একটা বাইক যাচ্ছে হেলেদুলে। বাইক চালকের মাথায় হেলমেট না থাকায় তাকে চিনে নিতে খুব একটা কষ্ট হলো না শীর্ষের। এ তো কায়সার। সেদিন ক্লাবে তাকে আঘাত করেছিল। যাক পাখিকে খোঁজার পূর্বেই পাখি নিজে এসে তবে ধরা দিলো। তার উপর আবার আজ একা আছে। আজই একে একটা শিক্ষা দিতে হবে। বাঁকা হাসি ফুটে উঠল শীর্ষর ওষ্ঠে। অল্প দূরত্ব নিয়ে সে অনুসারণ করতে শুরু করল কায়সারের বাইকটা। অনুসরণ করতে করতে যখনই শীর্ষ খেয়াল করল তারা একটি নির্জন স্থানে পৌঁছেছে তখনই সে গাড়ির গতি বাড়ালো। ছুটে গিয়ে পথ আগালালো কায়সারের। ঘটনার আকস্মিকতায় চমকাল কায়সার। দ্রুত সে ব্রেক কষলো বাইকে। শীর্ষ নিজের গাড়ির দরজা ঠেলে বেরিয়ে এলো বাইরে। শরীরে জড়ানো কালো শার্টটার হাতা গোটাতে গোছাতে এগিয়ে গিয়ে দাঁড়াল কায়সারের মুখোমুখি। বাঁকা হেসে বলল,
“কিরে বা’ল পাকনা ডিসের লাইন কেমন আছিস?”
কায়সার ঘাবড়ে গেল কিছুটা। এমনি সে যতটাই সাহসী হোক না কেন এই মুহূর্তে সে একা। আর শীর্ষ যে তাকে জামাই আদরের জন্য এভাবে পথ আগলে দাঁড় করাবে না তা সে ভালোভাবেই জানে। ঢোক গিললো বেচারা। আমতা আমতা করে বলল,
অনুরাগে তুই পর্ব ১৯
“কি চাই তোর? এভাবে পথ আগলে দাঁড়িয়েছিস কেন আমার?”
শীর্ষ ওষ্ঠের কোনে বক্র হাসি বজায় রেখেই কায়সারের বাইক থেকে চাবিটা খুলে নিল। শান্ত অথচ গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
“অনেক হিসাব নিকাশ বাকি আছে তোর সাথে। তোর সেদিনের পাকনামির একটা হেস্তনেস্ত করতে হবে না?”