আপনাতেই আমি পর্ব ৩৭

আপনাতেই আমি পর্ব ৩৭
ইশিকা ইসলাম ইশা

আয়ান মেঘ কে রিং পড়ানোর সাথে সাথে ই সবাই চেঁচিয়ে উঠলো লাইট গিয়ে পড়ল ওদের দিকে স্টেজ এ।।রিদি ও সবার সাথে হৈচৈই করছে।দূর থেকে তা দেখে একটু হাসল তীব্র।তার এসব হৈচৈই পছন্দ না তাই দূরে দাঁড়িয়ে শুধু তার বেগমজানকে দেখছে।তবে ভীর হওয়াই রিদিকে ঘিরে ফেলেছে যেন হালকা আলোয় কাউকে এখন বোঝাও যাচ্ছে না।তীব্র বিরক্ত হল।নিজের ভিআইপি সিট ছেড়ে উঠে এলো ভীরের মাঝে তবে তীব্র কে কেউ খেয়াল করল না।চারদিকে তখন ড্রিম লাইট জ্বলছে আর ফুল লাইট ফোকাস করেছে আয়ান আর মেঘের দিকে স্টেজ এ।সবাই এবার মেঘ আর আয়ান কে ডান্স করার জন্য বলছে। মিউজিক বাজতেই পায়ে পা মিলিয়ে ডান্স করতে লাগে দুইজন।
এদিকে ভীরের মাঝে রিদিকে দেখে এগিয়ে আসে তীব্র।পেছন থেকে শাড়ি ভেদ করে কোমর ছুয়ে পেটে হাত রাখতেই ঘুরে ঠাস করে থাপ্পর মারে রিদি।এক ঝটকায় দূরে সরাতে চাইলে তীব্র কোমর টেনে নিয়ে জরিয়ে ধরলো।রিদি ফট করে তাকালো তীব্রর দিকে।আবছা আলোয় তীব্র কে দেখে ভয়টা কেটে গেল।তীব্র রিদির কানের কাছে মুখ এনে বলে,

এভাবে থাপ্পর মেরেছিলেন তখনকার ছেলেটাকে?
রিদি অসহায় ফেস করে বলে,
সরি!!আমি বুঝতে পারি নি।জোরে লেগেছে?
তীব্র আবারো বলে,
এভাবে থাপ্পর মেরেছিলেন তখনকার ছেলেটাকে?
হু!!
বাহ ভেরি গুড!দম আছে বলতে হয়!
এএএ??
যাই বলেন থাপ্পর কিন্তু জোরেই লেগেছে।তবে আমি সুদে আসলে ফেরত ও দিব বাসায় গিয়ে!
রিদি ফ্যাল ফ্যাল করে তাকালো তীব্রর দিকে।তীব্র রিদির চাহনি দেখে হাসতে লাগলো।সাথে শাস্তি ও যোগ হবে ম্যাডাম!আজকে এতো সুন্দর সাজবেন কেন আপনি!সবাইকে দেখাবেনই বা কেন?
রিদি অবাক হয়ে বলল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সুন্দর লাগছে!!
তীব্র হাসল।কানের কাছে মুখ আরো এগিয়ে এনে বলল,
বাসায় গিয়ে বলব বেগমজান!!
রিদি তীব্রর কথা বুঝতে পেরে অসস্তি টের পেল শরীর জুড়ে। আশেপাশে তাকিয়ে তীব্র কে ছাড়তে চাইলে শক্ত করে ধরল তীব্র।
বুঝেন ম্যাডাম!আমি ধরলে কিন্তু ছাড়ানো মুশকিল ই নেহি না মুমকিন হে।
ছাড়ুন!সবাই আশেপাশে আছে।
বৌ কে ধরলে আর ছাড়তে ইচ্ছে করে না।
এখুনি লাইট জ্বলে উঠবে তীব্র।রিদির কথায় তীব্র বাঁকা হাসল নিচু হয়ে মুখ গুজল রিদির গলায়।রিদি শিহরিত হল।তীব্র রিদির গলায় মুখ গুঁজে জোরে শ্বাস টেনে নিল নিজের মাঝে। গলায় ছোট ছোট কয়েকটা চুমু খেয়ে মুখ তুলে রিদির দিকে তাকিয়ে কপালে ঠৌট চেপে ধরে রাখল।

রিদি চুপচাপ এই ভালবাসা টুকু উপভোগ করল।শরীর ছোয়া তখনি সুখের যখন মন ছুয়ার মতো ভালবাসা যায়।তীব্র কে জরিয়ে ধরল।তীব্র হাসল এখনি কেমন ছটফট করেছিল ছাড়া পাওয়ার জন্য।আর এখনি কেমন শান্ত হয়ে বুকে মিশে গেল।ইশশশ বৌ তার একটু বেশিই আদুরে। তীব্র রিদির কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,
বৌ আরো আদর চায়!চলেন বাসায় ফিরে যায় আমরা।
রিদি চোখ বড়বড় করে চাইল তীব্রর দিকে।তীব্রের মুখে দুষ্টু হাসি।
এদিকে মেঘ আর আয়ানের ডান্স সবাই মনোযোগ সহকারে দেখছে।ডান্স শেষ হতেই সবাই তালি বাজাতে লাগল।
আশেপাশে লাইট জ্বলে উঠতেই রিদি নিজেকে জোর করে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,
আজ আমি যাব না আপনার সাথে অসভ্য পুরুষ!বাই।বলেই স্টেজ এর দিকে দৌড় দিল।তীব্র আশেপাশে খেয়াল করে আর রিদিকে ধরার চেষ্টা করল না। হাসিমুখে গিয়ে নিজের জায়গায় বসল।আয়েশী ভঙ্গিতে বসে স্টেজ এ দিকে তাকাল।ওখানে রিদি বসে আছে তিনজনে মিলে পোজ দিয়ে ছবি তুলছে।কখনো হাসি ঠাট্টা করছে।বৌ কে হাসিখুশি দেখে তীব্রর মুখেও হাসি ফুটে উঠে।বৌ খুশি মানে সেও খুশি।

অনুষ্ঠান প্রায় শেষের দিকে।অনেক মেহমান চলে গেছে। রাত বাজে একটার কাছাকাছি। চৌধুরী পরিবার ও বিদায় নিয়ে গাড়ির কাছে এসে দাড়ালো।আশিক,মমতা বেগম,আয়ান ,মেঘ,মেঘের বাবা মা এসেছে চৌধুরী পরিবার কে এগিয়ে দিতে।তারও কিছুক্ষণে বেরিয়ে পড়বে বাসার উদ্দেশ্যে।রিদির কোলে ঘুমিয়ে আছে তৃপ্তি ।এতো মানুষের মাঝে থাকায় অভ্যস্ত না তৃপ্তি।কেদে কেদে শেষে রিদির কোলে শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে গেছে। বিদায় পর্ব শেষ করে গাড়িতে উঠে বসে সবাই।একটা গাড়িতে রিদি,তীব্র,আর তৃপ্তি।অন্য গাড়িতে আমির,তীর,আর রুপ বসেছে। পিছেন আরো ৩টা জিপ এ আছে গাড।মোট পাঁচটি গাড়ি একসাথে যাওয়া মানে নজর কারা বিষয়।
সারাদিনের ধকল এর পরে শরীর আর সায় দিচ্ছে না রিদির। তৃপ্তি কে কোলে নিয়ে বসে থেকেই ঘুমিয়ে পড়েছে।তীব্র ফোন থেকে মুখ তুলে রিদির দিকে তাকিয়ে দেখল দুইজনেই ঘুমিয়ে পড়েছে।তীব্র ফোন সাইডে রেখে দুইজনের দিকে এগিয়ে গেল। তৃপ্তি কে সাবধানে কোলে নিয়ে রিদিকে একহাতে জরিয়ে ধরলো।

আপনাতেই আমি পর্ব ৩৬

পর পর ৫ টা গাড়ি চৌধুরী বাড়িতে আসতেই সেখানে থেকে নেমে আসে তীর,রূপ,আমির,তীব্রর কোলে তৃপ্তি। তীব্র তৃপ্তি কে তীরের কোলে দিয়ে আবারো গাড়ির কাছে এসে রিদিকে কোলে তুলে নিল।আমির চৌধুরী ছেলেকে দেখে মুচকি হাসলেন।মনে মনে ভাবলেন ,নারী পারে না এমন কোন কাজ নেই।তার রাগী,জেদি,অংকারী,একরোখা ছেলেকে রিদির সাথে দেখলে তিনি খুশি হন।একজন নারী পুরুষের সবচেয়ে দূবল জায়গা।না হলে ফ্যামেলি পার্টিতে তীব্রর এতোক্ষণ থাকা তো দূর যেত না পর্যন্ত।তাইতো অনেকে আজ অবাক হয়েছে।কিছু মানুষ জিঙ্গেস ও করেছে।তবে তিনি তেমন উওর দেয়নি কাউকে।এখনি তিনি সবটা সবাইকে জানাতে চায় না।তবে ঝামেলা মিটলে তিনি ছেলের বিয়ে উপলক্ষে অনেক কিছুই ভেবে রেখেছেন।

আপনাতেই আমি পর্ব ৩৮