আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ৫১
ইশিকা ইসলাম ইশা
এদের টম জেরির মতো ঝগরা থামে কারো গম্ভীর কন্ঠে।
এখানে কি হচ্ছে?হোয়াট দ্যা হেল ইজ গোয়িং অন??
তীব্রর কথায় সবাই কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে তাকালো ওদের দিকে। কিন্তু তীব্র আর মিরকে দেখে তীরের ভাবভঙ্গি পরিবর্তন হলো তীর কটাক্ষ করে বলল,
আইছে আলাউদ্দিন শাহী মোল্লা ফকির হোসেন দরবেশ বাবার সালা!
তীব্র কোন উওর করল না।ঘার ঘুরিয়ে দেখল বৌ নামক আস্ত একটা মায়াজালকে।এই মায়াজালের উপর তার রাগ কেন টিকে না?এই যে সকালের ঘটনার পর বৌ সারাদিন তার আশেপাশেও ঘেসেনি এতে তার চরম রাগ হয়েছিল।তুলে আছার মারার মতো রাগ। কিন্তু এই মুহূর্তে এই বৌ টাকে দেখে রাগ হচ্ছে না।আধখোপা , শাড়ি, গয়না পরিহিত পূর্নাঙ্গ বিবাহিতা নার তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।এমন রুপে দেখে রাগ থাকে। এখনো সকালের সেই শাড়ি গায়ে জড়ানো।মুখটা স্নিগ্ধ লাগছে। স্নিগ্ধ মুখখানায় জ্বলজ্বল করছে তার আর্কষনীয় বিবাহিত চিহ্ন নাকফুল।
মির বিরক্ত হয়ে বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
থামবি!!
তীর ব্যাঙ্গ করে বলল,
আসল!!সালা মির জাফর আলাউদ্দিন শাহী মোহাম্মদ শাহজাহান সিরাজ এর নাতি।
রিদি এবার আর হাসি চেপে রাখতে না পেরে হো হো করে হেসে উঠলো।সাথে রুপ,রাইমাও হেসে দিল।নাফিস ছেলেকে কোলে নিয়ে দূরে দাঁড়িয়েছে।বলা তো যাই না এই সালাদের অত্যাচার তার মাসুম ছেলেটা না ভয় পেয়ে যায়।
মির তেড়ে তীরের দিকে আসতেই রিদির হাসির শব্দে থেমে যায়। তাকিয়ে দেখে না ঐ মারাত্মক হাসিটা। খিলখিল হাসির শব্দই শুধু শুনে গেল। এদিকে তীব্র রিদির হাসি দেখে বুকে হাত চেপে বিরবির করে বলল,
ছ্যা বালের একটা বৌ, বালের একটা হাসি।বরের স্পন্দন তো থামাই থামাই সাথে আবার……..
বলেই মিরের বন্ধ চোখজোড়ার দিকে তাকালো। তীব্র নিজের ভেতর চলা মিশ্রিত অনুভুতিতে বিরক্ত হয়ে গটগট পায়ে হেটে চলে গেল রুমে।যেতে যেতে বিরবির করে বলল,
বালের একটা বৌ নিয়েও শান্তি নাই।বালের মায়া নিয়ে জন্মাইছে।কে বলেছে এতো মায়াবতী হয়ে জন্মাইতে।আমি বলেছিলাম এভাবে জন্ম নে ছ্যা……
রিদি তীব্র কে চলে যেতে দেখে হাসি থামিয়ে তীব্রর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল।
রাত বাজে ১০টার কাছাকাছি। খাওয়ার পর্ব শেষ করে যে যার রুমে চলে গেছে।রিদি বেশ কিছুক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছে দরজার সামনে।আজ সারাদিন সে তীব্রর থেকে দূরে থেকেছে।সেটা অবশ্যই লজ্জায়।কারন তীব্রর করা তখনকার কান্ড মনে হতেই লজ্জায় সারা শরীরে অজানা এক উত্তেজনায় কেঁপে উঠছে বারবার।
তবে তীব্র যে রেগে আছে তা খাওয়ার সময় লক্ষ করেছে রিদি।তখন লজ্জা পেলেও এখন ভয় হচ্ছে।ভয়কে জয় করে রিদি দরজার নব মুচড়ে রুমে ঢুকতেই কারো চওড়া শক্ত পোক্ত বুকে বারি খায়।চমকে উঠে সামনে তাকাতেই তীব্র কে দেখে এক কদম পিছিয়ে যেতেই তীব্র টান মেরে রিদিকে ভেতরে টেনে দরজা আটকে দিয়ে রিদিকে দরজায় চেপে ধরে রাগে গজগজ করতে করতে বলল,
সমস্যা কি তোর? ভালো লাগছে না আমাকে আর?দুদিনে মন ভরে গেল?
রিদি ভয়ে শুকনো ঢোক গিলছে বারবার। তীব্রর মুখটা রাগে লাল হয়ে আছে। ফর্সা চেহারায় রক্তিম কৃষ্ণচূড়ার ন্যায় লাল হয়ে আছে।যদিও কৃষ্ণচূড়াকে মেয়েদের প্রতিক হিসেবে ব্যবহার করে কবিরা তবে বর্তমানে রিদির মনে হচ্ছে তার বর রাগলে লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়ার ন্যায় লাল হয়ে যায়।এই যে নিলাভ আর্কষনীয় চোখজোড়া রাগে লালচে হয়ে আছে। আচ্ছা বরটা কি বেশিই রেগে আছে। কিন্তু রাগলে তো বেশ লাগে দেখতে তার বরটাকে।একদম কিউট এর ডিব্বা।
রিদিকে এভাবে ড্যাবড্যাব করে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে তীব্র কটমট করে বলল,
কিছু বলেছি আমি!!!
রিদি তীব্র কথায় ধ্যান না দিয়ে তাকালো তীব্রর ঠোঁটের দিকে।তীব্রর গোলাপি রঙের পুরুষালী ঠোঁট জোড়াই তো আকরে ধরেছিল তার লালচে ঠোঁটজোড়া।ইসস!!কি যে লজ্জা! আচ্ছা এই বরের ঠোঁট এতো গোলাপি কেন? ছেলেদের ঠোঁট এতো গোলাপি হবে কেন? ঠোঁট তো মেয়েদের গোলাপি হবে।এটা কি অন্যায় হচ্ছে না!
তীব্র বেশ কিছুক্ষণ ধরে রিদির কাযকালাপ দেখে যাচ্ছে।বৌয়ের মুখের রং ক্ষনে ক্ষনে পরিবর্তন হচ্ছে।তা দেখে নিজেও কিছু একটা ভেবে নিল মনে মনে।এরপর নিজেই নিজেকে বলল,এতো তাড়াতাড়ি সম্ভব নয়!
রিদি তীব্রর দিকে তাকিয়ে থেকে মন খারাপ করে বললো,
আপনার ঠোঁট এতো গোলাপি কেন?কি মাখেন ঠোঁটে?
রিদির কথায় তীব্র চোখ ছোট ছোট করে তাকালো ওর দিকে।রিদি তীব্র কে এভাবে তাকাতে দেখে বলল,
কি হলো বলুন?কি মাখেন ঠোঁটে? আমিও মাখব!!আমারো এমন গোলাপি রঙের ঠোঁট চায়!!
তীব্র ভু কুঁচকে গম্ভীর মুখে বলল,
কেন?কেন চাই গোলাপি ঠোঁট? কাহিনী কি?
রিদি ঠোঁট উল্টে বাচ্চাদের মতো করে বলল,
মেয়েদের ঠোঁট গোলাপি হওয়া উচিত। কিন্তু দেখেন আমার ঠোঁট কেমন লালচে গোলাপি না।তাই আমারও গোলাপি রঙের ঠোঁট চায়!
তীব্র কিছুক্ষণ আগের রাগ ভুলে গেল রিদির কথায়।রিদিকে এমন বাচ্চামি করতে দেখে তার উচ্চস্বরে হাসি পেলেও তা চেপে গম্ভীর মুখে বলল,
এই ঠোঁট দুটোই আমাকে অলরেডি পাগল বানিয়েছে।আর……
একমিনিট! একমিনিট!ডু ইউ লাইক মাই লিপস??
রিদি হচকচিয়ে লজ্জায় মাথা নিচু করে নিল।কি বলতে কি বলছে ভাবতেই লজ্জায় মাটির ভেতর ঢুকে যেতে ইচ্ছে করছে। তীব্র রিদির কোমর জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল।রিদির লাজে রাঙা মুখটা তুলে বলল,
লুক এট মি!
রিদি খিচে বন্ধ করে রাখা চোখজোড়া পিটপিট করে খুলে তীব্রর দিকে তাকালো। তীব্রর চোখজোড়া শান্ত এখন।তবে চোখে অদ্ভুত এক মাদকতা।রিদি তীব্রর চাহনিতে ঘায়েল হলো।নীলাভ চোখজোড়া বরাবরই রিদিকে টানে এখন তো সেই চোখে তার জন্য মায়া দেখতে পায়, ভরসা দেখতে পায়, ভালোবাসা দেখতে পায়।এই মায়া,ভালবাসা আর ভরসা টুকুই সে এতো দিনে কারো কাছে পায়নি। আল্লাহ কি তাকে দুনিয়ার সব সুখ ঢেলে দিয়েছে।এমন সুন্দর, সুদর্শন পুরুষ তার জন্য রেখেছিল বুঝি।
এই যে মিসেস রিদিতা তীব্র চৌধুরী!!
রিদি আনমনেই বলল,
আপনি এতো সুদর্শন কেন?
তীব্র আবারো ভু কুঁচকে বলল,
তাতে আপনার সমস্যা কোথায়?
রিদি আবেশে তীব্রর বুকে মাথা এলিয়ে দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।তীব্রর খোলা শার্ট ভেদ করে নাক মুখ ঘসল বুকে।বিরবির করে বলল,
টুপ করে গিলে ফেলতে ইচ্ছে করে যে!!
তীব্র বাঁকা হাসল।রিদিকে কোলে তুলে নিতে নিতে বলল,
তো গিলে ফেলুন!আম অলওয়েজ রেডি বৌ!!
তীব্র রিদিকে কোলে তুলতেই রিদির হুস ফিরল যেন। লজ্জায় এবার মরিমরি অবস্থা।নামার জন্য হাত পা লাফাতেই তীব্র শক্ত করে ধরে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে নিজের ভার রিদির উপর ছেড়ে দিয়ে কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল,
আমি সবসময় প্রস্তুত আমার ব্ল্যাক রোজ,আমার সুখপাখি,আমার শ্যামাপাখি,আমার মায়াবতী,আমার জানবৌ,আমার,আমার,আমার শুধু আমার,আপনি একান্তই আমার,আর #আপনাতেই_আমি আমার রোজের আম্মু……….
দেখতে দেখতে সময় তখন ৫ মাস পেরিয়েছে।এই ৫টা মাস কানাডার টরেন্টো শহরেই সংসার করছে রিদি।এখানকার মেডিকেল কলেজ এ ভর্তি করিয়েছে তীব্র তাকে। একদিন এই হসপিটালেই পেসেন্ট হয়ে এসেছিল সে আর বর্তমানে ছাত্রী হিসেবে।দেখতে দেখতে কতোদিন চলে গেল। বাংলাদেশে থেকে আসা ৫টা মাস হয়েছে। যদিও রিদি বাংলাদেশে যেতে চেয়েছে অনেকবার কিন্তু তীব্র যাবে না বলেছে।তার মতে বাংলাদেশে তার কোন পিছুটান নেই।যে ছিল সে বর্তমান আর ভবিষ্যতে তার সাথেই আছে আর থাকবে।
চৌধুরী বাড়ির কারো সাথেই তেমন কথা বলে না তীব্র।সবাই যা বলে রিদির সাথেই বলে। বিশেষ করে নাজমা চৌধুরী। যদিও তিরা চৌধুরী ছেলের খবর নিতে মাঝে মাঝে কথা বলেন তার সাথে। কিন্তু তীব্র কখনোই কারো সাথে কথা বলে না।রিদি তীব্রর মায়ের সাথে এমন ব্যবহারের কারন আজো জানে না।তিরা চৌধুরী যদি তীব্রর মা হয় তবে তিশা চৌধুরী কে?আর তিশা চৌধুরী কেন তাকে তীব্রর সাথে বেঁধে দিয়ে গেছেন।তিশা চৌধুরীর সাথে তার কি সম্পর্ক??আর তার মায়ের সাথেই বা চৌধুরী বাড়ির কি সম্পর্ক?
এতো প্রশ্ন মনে কিন্তু কোন উওর নেই।রিদি দীর্ঘশ্বাস ফেলে সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে চোখ জোড়া বন্ধ করল। ক্লান্ত থাকায় চোখ জোড়া বন্ধ করতেই ঘুম এসে ভর করল চোখের পাতায়।
ঘুমের মধ্যে মৃদু ব্যাথায় ঘুম ভেঙ্গে যায় রিদির। পিটপিট করে চোখ খুলে হাতটা তীব্রর পিঠের কাপড় শক্ত করে চেপে ধরলো। গলায় মুখ গুঁজে সেখানে ঠোঁট ছোঁয়াতে ব্যাস্ত তীব্র।জোড়ে জোড়ে শ্বাস টেনে বলল,
শরীরে কি মাখেন জান?এতো সুঘ্রাণ কিভাবে হয়??
রিদির শরীর মৃদু কাপছে তীব্রর স্পর্শে।দুহাতে শক্ত করে জড়িয়ে আছে তীব্রর পিঠের কাপড়। তীব্রর কথায় রিদি অবাক হলো না মৃদু হেসে বলল,
কখন আসলেন??
তীব্র সে কথার উত্তর না দিয়ে পরপর কয়েকটা চুমু দিয়ে বুকে মাথা রেখে চেপে ধরে বলল,
ইউ আর মাই ড্রাগ বৌ!!নেশা নেশা লাগে আপনার কাছে আসলে।এতো নেশাক্ত কেন আপনি?
রিদি তীব্রর স্পর্শ শিউরে উঠল। তীব্র রিদির কম্পিত শরীর নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে শান্ত হয়ে চুপচাপ শুয়ে রইল।রিদি একটু পর বলল,
খাবেন না?
তীব্র ফট করে মাথা তুলে বলল,
খেতে দিবেন??
রিদি তীব্রর কথায় আশ্চর্য হয়ে বলল,
কেন দিব না? আশ্চর্য!!সরুন আমাকে উঠতে দিন।খাবার গরম করতে হবে।
তীব্র রিদির ঠোঁট জোড়ার দিকে তাকিয়ে বলল,
খাবার তো এখানেই আছে?
রিদি তীব্রর দিকে চেয়ে বুঝার চেষ্টা করতেই তীব্রর কথা বুঝতেই নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে করতে বলল,
অসভ্য বদ লোক!সারাদিন মাথায় শুধু বদ চিন্তা! ছাড়ুন আমা…….উম উম…
রিদি তীব্রর কান্ডে হতাশ হয়ে শরীর ছেড়ে দিল।এই লোক ত্যারামির চুড়ান্ত,সাইকো একটা। অদ্ভুত!!
রাত বাজে তখন ১০ টার কাছাকাছি,
রিদির লম্বা ভেজা চুল হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে ভালোভাবে শুকাচ্ছে তীব্র।আর রিদি মুখ ফুলিয়ে চুপচাপ বসে আছে।এই সন্ধ্যা রাতেও তাকে সাওয়ার নিতে হয়েছে একমাত্র এই লোকটার জন্য। অসভ্য, অসহ্য, ধৈর্য্যহীন একটা মানুষ। তীব্র রিদির চুল শুকিয়ে চুল গুলো সুন্দর করে আচড়িয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ আগে রেখে যাওয়া খাবার নিয়ে রিদির সামনে বসল।ভাত মাখতে মাখতে একবার রিদির ফুলে থাকা মুখখানা দেখে মৃদু হাসল।রিদি তীব্রকে হাসতে দেখে রেগে বলল,
আপনি অসভ্য!!এভাবে হাসছেন কেন??
তীব্র এবার জোরেই হেসে উঠলো।রিদি তীব্রর হাসির দিকে তাকিয়ে রাগ ভুলে ড্যাবড্যাব করে দেখল শুধু। তীব্র কে হাসলে বেশ লাগে।এমনিতেই তীব্র কোরিয়ান হিরোদের মতো দেখতে তার উপর হাসি!!এক কথায় মারাত্বক!!রিদি তীব্রর দিকে তাকানোর মাঝেই তীব্র এক লোকমা খাবার তুলে দিল মুখে।রিদি খাবার চাবাতে চাবাতে তীব্র কে দেখলো শুধু।
রাত বাজে ১১টা তীব্র স্টাডি রুমে বসে ল্যাপটপে কিছু কাজ করছে।আর রিদি রুমে বসে তার পড়াশোনা করছে।একটু পর রিদি কাঁদতে কাঁদতে স্টাডি রুমে ঢুকতেই তীব্র ভু কুঁচকে বলল,
কি হয়েছে বৌ??
রিদি ফ্যাচফ্যাচ করে কেঁদে সোজা গিয়ে বসল তীব্রর কোলে। তীব্রর বুকে মাথা রেখে কাঁদতে কাঁদতে বলল,
আমি পারছি না!
তীব্র ল্যাপটপের দিকে একবার তাকিয়ে রিদিকে একহাতে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
কি পারছেন না??কি হয়েছে?
রিদি কান্নাভেজা মুখটা তুলে তীব্রর দিকে তাকিয়ে বলল,
আমি পড়া পারছি না। সার্জারির ক্লাস সেদিন মিস হওয়ায় ওটা আমি বুঝতে পারছি না। দেখুন দেখুন কি জটিল বিষয়।
তীব্র ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ফেলে দুহাতে ছোট্ট মুখখানা ধরে চোখের পানি মুছে দিয়ে একবার তাকালো বইয়ের দিকে।
এটা তো খুব সহজ আ..…
আপনি কিভাবে জানলেন!!এটা সোজা?সোজা হলে আমার মাথায় ঢুকছে না কেন?আপনি ডাক্তারি না পড়ে কিভাবে জানলেন এটা সোজা হ্যাঁ??
তীব্র কিছু বলার আগেই ল্যাপটপ থেকে তীর বলল,
হ্যাঁ তো তীব্র!!তুই ডাক্তারির কি বুঝিস??
রিদি ফট করে চোখ তুলে দেখল ল্যাপটপে ভিডিও কলে তীর, লাবিব আছে।রিদি ওদের দেখে লজ্জায় তীব্রর কোলে থেকে নামতে চাইলে তীব্র শক্ত করে রিদির কোমর জড়িয়ে ধরল।রিদি অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো তীব্রর দিকে। কিন্তু সেদিকে তোয়াক্কা নেই তার।সে একহাতে রিদিকে ধরে অন্যহাতে ল্যাপটপে কিছু টাইপিং করে বলল,
এখন ব্যস্ত আছি!মেইল চেক কর।বলেই ফট করে ল্যাপটপ বন্ধ করে দিতেই ওপাশ থেকে তীর কিছু বলছে হয়তো তা আর শুনল কোথায়!
আপনি আমাকে বলেন নি কেন তীর আর লাবিব ভাইয়া ভিডিও কলে আছে?
তীব্র রিদিকে কোলে ভালোভাবে বসিয়ে বলল,
বললে কি হত?
রিদি ঠোঁট উল্টে বাচ্চাদের মতো করে বলল,
আমি লজ্জা পেলাম না!!
তীব্র রিদির কানের পিছনে চুল গুঁজে দিতে দিতে বলল,
ওহহ আচ্ছা!!
রিদি আবারো ঠোঁট উল্টে বলল,
কাল নাকি নতুন প্রফেসর আসবে!সে নাকি খুবই স্টিক!
তীব্র রিদির গলায় মুখ ডুবিয়ে বলল,
তাই নাকি!!!
হুম! জানেন সে নাকি খুবই সুদর্শন দেখতে!!
রিদির কথা শেষ হতেই তীব্র ফট করে রিদির গলা থেকে মুখ তুলে বললো,
ওহহ রিয়েলি!!আর কি কি জানেন আপনাদের প্রফেসর এর ব্যাপারে??
রিদি ভাবুক হয়ে বলল,
আমার ফ্রেন্ড আছে না এলি ও বলল। প্রফেসর নাকি ভীষণ সুন্দর দেখতে।যেমন স্টাইলিশ তেমনি আর্কষনীয় ।সে নাকি টপ ৫ সার্জনদের মধ্যে অন্যতম একজন।বয়সও নাকি বেশি না আবার।বছরে মাত্র ২-৩ ক্লাস নেন এই কলেজে।তবে মেয়েরা নাকি ওনার উপর ফিদাহ। শুধু সিনিয়র স্টুডেন্ট না বরং লেডি ডাক্তারদের মুখেও তার গুনগান চলছে।ক্লাসে তো হৈচৈ পড়ে গেছে।হাহ…….
বেশ ভালোই জানেন দেখছি প্রফেসর এর ব্যাপারে!
সুদর্শন, সুন্দর বাহ ভালোই তো!!
রিদি তখনো তীব্রর হিংসায় জ্বলে উঠা মনোভাব বুঝতে পারে নি।সে চঞ্চল কন্ঠে বলল,
তা নয়তো কি?না হলে কি তার আসা নিয়ে এতো হৈচৈ পড়ে!!
তীব্র দাঁতে দাঁত চেপে রাগ কন্ট্রোল করে বলল,
সরুন!! আমার কাজ আছে!!
রিদির টনক নড়ল।মুখ তুলে তীব্রর দিকে তাকাতেই শুকনো ঢোক গিলে বলল,
ইয়ে মানে আমিতো……
তীব্র ছোট ছোট চোখ করে বলল,
পুরানো হয়ে গেছি নাকি??
রিদি চটপট তীব্রর গলা জড়িয়ে ধরে বলল,
আপনি কি হিংসা করছেন??
না আমার হিংসা করার কোন কথা বুঝি!!
রিদি ফিক করে হেসে বলল,
আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ৫০
“”আমি আপনাকে ভীষণ ভালোবাসি প্রিয় রাক্ষস মশাই।আপনার মাঝে আমি সকল পূর্ণতা পেয়েছি। আল্লাহ দুহাতে সব সুখ ঢেলে দিয়েছেন আমাকে আপনার মাধ্যমে।আপনি ছাড়া আমার চলার কোন পথ নেই।যদিও থাকে সেই পথে আমার পা কখনো পড়বে না।আপনি শুরু আপনাতেই শেষ””