আমার নিষ্ঠুর ভালবাসা পর্ব ১
সালমা খাতুন
“আমি তোমাকে কিনছি, পুরো এক মাসের জন্য, আজ থেকে পুরো একমাস তুমি শুধু আমার বিছানায় থাকবে, এই এক মাসে তোমাকে শুধু আমাকে খুশি করতে হবে, এই সময়ের মধ্যে অন্য কারো দিকে তাকাতেও পারবে না তুমি। তাই আমি যা বলবো চুপচাপ শুনবে” আরমান শাহরিয়ার, মায়ার কানের কাছে এসে খুব লোভনীয় কণ্ঠে কথা গুলো বললেন, যার কারণে মায়ার লোমকূপ দাঁড়িয়ে গেল।
কিছুক্ষণ আগে…
একটা বড় ঘরে একটা সিঙ্গেল সোফায় একজন হ্যান্ডসাম ব্যাক্তি বসে আছে, আর তার সামনে অনেক গুলো মেয়ে একটা লাইন করে দাঁড়িয়ে আছে, সব মেয়েই একে অপরের থেকে অনেক বেশি সুন্দরী, তাদের মুখে লেগে আছে খুব লোভনীয় হাসি।
এখানে তাদেরকে চোখের সামনে বসে থাকা একজন বিশেষ ব্যাক্তির সামনে হাজির করা হয়েছে, তিনি দেখতে খুবই সুদর্শন এবং শহরের একজন বড় ব্যবসায়ী।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
পুরো শহরে এই লোকটির অনেক মর্যাদা আছে, তার নাম আরমান শাহরিয়ার, 28 বছরের একজন খুব সুদর্শন যুবক, তার চেহারা এবং তার পেশীবহুল শরীর এমন ছিল যে সে যে কোনও মেয়েকে তার প্রেমে পড়তে বাধ্য করবে। কিন্তু আরমান শাহরিয়ার প্রেম শব্দটি পছন্দ করেন না। সে তার জীবনের প্রতিটি সম্পর্ককে কেবল নিজের মতলবের জন্য বানিয়েছে।
আর ভালবাসা?? ভালবাসা কি, কেমন তার অনুভূতি সে বিষয়ে তার কোনো ধারণা ছিল না,
আরমান শুধু মনে করে যে, আবেগ, অনুভূতি শুধুমাত্র একজন ব্যক্তিকে অসহায় করে তোলে।
তাই তার কাছে অনুভূতি, আবেগ এসবের কোনো মূল্য ছিল না, যদি কোনো কিছুর মূল্য থাকে তাহলে তা হলো সম্পদ, খ্যাতি, মর্যাদা এবং তার নিজস্ব মনোভাব।
আরমান শাহরিয়ার তার ঠান্ডা চোখে দূর থেকে মেয়েদের স্ক্যান করছিল, আর পাশে বসে তার নতুন ব্যবসায়িক অংশীদার আরমানকে বলছে, “এরা আমাদের ক্লাবের কিছু সুন্দরী নৃত্যশিল্পী, আপনি আজ রাতে বিনোদনের জন্য তাদের মধ্যে থেকে যেকোনো একজনকে বেছে নিতে পারেন। আমাদের নতুন ব্যবসায়িক চুক্তির জন্য এটি আমার পক্ষ থেকে একটি ছোট উপহার।”
লোকটির ঠোঁটে ছিল নির্লজ্জ হাসি, আরমান শাহরিয়ার হাতে ওয়াইনের গ্লাস ধরে ওই সব মেয়ের দিকে তাকায়, সব মেয়েই খুব ভালোভাবে তৈরি হয়ে এসেছিল, যখনই তারা জানতে পারল যে তারা মিস্টার আরমান শাহরিয়ারের সামনে হাজির হতে চলেছে, প্রত্যেক মেয়ের চোখেই একটা আলাদা উত্তেজনা আর নার্ভাসনেস ছিল, প্রতিটি মেয়েই চাই সে জেনো শুধু তাকে নিতে চায়।
এই সমস্ত মেয়েরা আরমান শাহরিয়ার এর জন্য পাগল ছিল, সবাই শুধু মনে মনে দোওয়া করছিল যে, আরমান শাহরিয়ার যেনো তাকে লক্ষ্য করে। প্রতিটি মেয়ে তার মুখে একটি প্রলোভনসঙ্কুল হাসি দিয়ে আরমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছিল।
আরমান সবার দিকে তাকায় কিন্তু তার মুখে কোন বিশেষ ভাব নেই। যেন এইসব মেয়ের প্রতি তার কোনো আগ্রহ নেই। সে তার ওয়াইনের গ্লাস থেকে একটা চুমুক নিয়ে বলে, “ননসেন্স, সবই ফালতু, যদি নতুন কিছু থাকে তাহলে দেখাও, এইরকম পুরানো এবং ইউস করা জিনিসগুলিতে আমার কোন আগ্রহ নেই।”
আরমানের এমন উদাসীন উত্তর শুনে, সমস্ত মেয়েরা একেবারে আঁতকে ওঠে, আরমান শাহরিয়ার সত্যিই একজন পাথর-হৃদয় ব্যক্তি। যে তিনি যা চান তা পেতে যে কোনও প্রান্তে যেতে পারেন। কিন্তু এত সহজে তার চোখে কোন কিছুই ভালো লাগেনা, তিনি খুব নির্বাচনী ব্যক্তি এবং তার পছন্দগুলিও খুব বিরল।
আরমানের কথা শুনে পাশে বসা লোকটি তৎক্ষণাৎ বলল, “আরে, তুমি চিন্তা করো না, আমরা আমাদের ক্লাবের সবচেয়ে তাজা, এবং অস্পর্শিত মেয়ে তোমার সামনে তুলে ধরছি।”
এই বলে লোকটি ঐ সব মেয়েগুলোকে ওখান থেকে চলে যাওয়ার ইশারা দেয়। সেই সব মেয়েরা হতাশা আর মুখে বিষাদ নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়, তখন লোকটি তার এক গার্ডকে বলে, “যে সব নতুন মেয়ে ক্লাবে প্রবেশ করেছে তাদের ৫ মিনিটের মধ্যে হাজির করো।”
ওই গার্ড মাথা নেড়ে সাথে সাথে সেখান থেকে চলে যায়।
একটা ঘরে অনেক মেয়ে রেডি হচ্ছিল, তখন ওখানে একজন গার্ড এসে বলে, “আরে, চলো, এবার তোমাদের পালা, আজ তোমরা যার সামনে যাচ্ছ সে এই শহরের একজন বড় ব্যবসায়ী, তাকে মুগ্ধ করলেই জীবন সেট হয়ে যাবে, তার নাম আরমান শাহরিয়ার, তবে মনে রাখবে তাকে মুগ্ধ করা এত সহজ নয়।”
আরমান শাহরিয়ার নামটা শুনে সব মেয়েদের চোখ জ্বলে উঠল, কিন্তু ওখানে থাকা একটা মেয়ের চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেল। সেই মেয়েটা বাকি সব মেয়েগুলোর থেকে এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে, মেয়েটা অবাক হয়ে গেল, এই নামটা সে কখনো আশা করেনি।
কিছুক্ষণ পর…. কিছু নতুন মেয়ে রুমে প্রবেশ করে, সেই নতুন মেয়েদের মধ্যে আরমানের চোখ পড়তেই তার চোখ যায় একটা বিশেষ মেয়ের দিকে।
লাল রঙের গাউন পরা একটি খুব সুন্দরী মেয়ে সেই মেয়েদের মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিল। তার মুখে শূন্য অভিব্যক্তি। মেয়েটিকে দেখে আরমান ভ্রু কুঁচকে নেয়, ওই মেয়েটি আর কেউ নয়। মায়া আক্তার।
মায়া হলো আরমান এর প্রাক্তন স্ত্রী। দুনিয়ার কেউ এ বিষয়ে জানে না, নির্দিষ্ট কিছু মানুষ ছাড়া। আরমান মায়াকে ডিভোর্স দিয়েছিল কারণ মায়ার সাথে তার বিয়ে হয়েছিল তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে।
আরমান মায়াকে ওখানে দেখে বেশ অবাক হয়ে যায়। আরমানের সামনে বসা লোকটি আরমানের উদ্দেশ্যে বলে, ” এরা আমাদের ক্লাবের একদম তাজা তাজা মাল। এরা আজকেই জয়েন করেছে এই কাজে। এটা ওদের সৌভাগ্য যে আপনার মতো একজন অসাধারণ ব্যক্তির দ্বারা তারা তাদের ক্যারিয়ার শুরু করতে চলেছে।”
এই কথার কোনো উত্তর আরমান দেয় না। কারণ তার চোখ তো এক জায়গাতেই আটকে আছে। সব মেয়েরা এসে আরমানের সামনে লাইন দিয়ে দাঁড়ায়, মায়া মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিল। আরমানের দিকে সে একবারও তাকায়নি। আরমান উঠে দাঁড়ায়, ওয়াইনের গ্লাস টেবিলে রেখে সেই মেয়েদের কাছে যায়।
সোফায় বসা লোকটি খুশি হয়ে ভাবছিল যে আরমান এই মেয়েদের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে। আরমান সেই মেয়েদের চারদিক থেকে দেখেছিল। কিন্তু বাস্তবে তার চোখ ছিল কেবল মায়ার দিকে, প্রতিটি মেয়ে তাদের স্টাইল, কাতিলআনা হাসি, এবং আবেদনময়ী শরীর দিয়ে আরমানকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছিল। তাকে ছুঁয়ে তাকে প্ররোচিত করছিল। কিন্তু আরমানের ওখান কার কোনো মেয়ের প্রতিই আগ্রহ ছিল না।
সে শুধু মায়ার দিকে মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে ছিল। ওকে দেখেই মনে হচ্ছে অন্য মেয়েদের থেকে একদম আলাদা। খুব স্বাভাবিক ভাবে একজায়গায় দাঁড়িয়ে ছিল। এখনো পর্যন্ত একবারো চোখ তুলে তাকায়নি। যেন সে তার প্রতি মোটেই আগ্রহ দেখাচ্ছে না, মায়া আরমানকে গুরুত্ব দিচ্ছে না, তার দিকেও তাকাচ্ছে না, এই বিষয়টা আরমানকে আরো রাগিয়ে দিচ্ছিল।
আরমান মায়ার সামনে গিয়ে ওর হাত ধরে লাইন থেকে টেনে নেয়। এবং তার অন্য হাত দিয়ে মায়ার কোমর শক্ত করে ধরে রাখে। মায়া আরমানের বুকের উপড় হুমরি খেয়ে পড়ে এবং শক্ত করে আরমানের শার্ট আঁকড়ে ধরে। কিন্তু তখনও আরমানের দিকে তাকাচ্ছিল না, আরমান মুখে বাঁকা হাসি নিয়ে বলে, “আমি শুধু একে চাই…।”
আরমানের উত্তর শুনে লোকটা খুশি হয়ে যায়, কিন্তু অন্য সব মেয়েরা হতবাক হয়ে যায়, এই সাধারণ মেয়েটির মধ্যে এমন কী ছিল যে আরমান তার জন্য সেই সব সেক্সি হট মেয়েদের উপেক্ষা করল।
আরমানের শেষ পর্যন্ত কাউকে পছন্দ হয়েছে দেখে লোকটি খুব খুশি হয়ে যায়। ওনি বলেন, “অবশ্যই মিস্টার আরমান, আপনার পছন্দের দাম আছে বলতে হবে। ও সাধারণ হলেও সব মেয়েদের থেকে সুন্দরী। ও এইমাত্র যোগ দিয়েছে এই কাজে, আপনি যে মেয়েটির গায়ে হাত দিয়েছেন, এই মেয়েটি আপনার সেবায় উপস্থিত থাকবে, ও আজ রাতে আপনাকে বিনোদন দেবে।”
আরামান খুব মনোযোগ দিয়ে মায়ার দিকে তাকায়, এক বছরের দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে এই প্রথম সে মায়াকে এত কাছ থেকে সামনাসামনি দেখেছে, নইলে বিয়ের পর সে, না মায়াকে তার বাড়িতে থাকতে দিয়েছে আর না কখনো তার সামনে আসার অধিকার দিয়েছে।
বিয়ের পরও মায়া তার বাবার বাড়িতে থাকত, আরমান এবং মায়ার পরিবার ছাড়া পৃথিবীর আর কেউ তাদের বিয়ের কথা জানত না। আরমান মায়াকে খুব ঘৃণা করত। সে কখনো মায়ার মুখও দেখেতে চাইনি নিজে থেকে, মায়া বিয়ের পর 1 বছর তার বাবার বাড়িতে থাকে এবং একদিন আরমান তার বাড়িতে ডিভোর্সের কাগজও পাঠায়। কখন তাদের সম্পর্ক শুরু হয়েছিল এবং কখন শেষ হয়েছিল, কেউ সে সম্পর্কে কোনও খবর পায়নি।
আরমান তাদের সবাইকে রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়, কারণ তার এখন আর কাউকে সহ্য হচ্ছিল না। তার চোখ তখনও নিচু হয়ে থাকা মায়ার মুখের দিকে, সে চোখের পাপড়ি তুলেও আরমানের দিকে তাকাচ্ছে না।
আরমান ইশারা করার সাথে সাথে লোকটি, সব মেয়ে এবং গার্ডগুলোকে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।
ওরা সবাই চলে যেতেই আরমানের অভিব্যক্তি আরও কঠোর হয়ে উঠল। আরমান মায়ার কোমরটা আরো একটু শক্ত করে ধরল যাতে মায়ার ব্যাথা করতে শুরু হল,
আরমান:- “তাহলে এই ব্যবসা কবে থেকে শুরু করলে?”
আরমানের কথাগুলো খুবই কড়া ছিল যা মায়ার হৃদয়কে ব্যথিত করছিল। এই বিয়ে তাদের দুজনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে হলেও মায়া আরমানকে অনেক পছন্দ করতে শুরু করেছিল।
যে মুহুর্তে সে আরমানকে প্রথমবার দেখেছিল, তার হৃদয় আরমানের উপর পড়েছিল। আরমান বিয়েতে খুশি ছিল না। কিন্তু মায়া সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে আজ না হলে কাল সে আরমানের হৃদয়ে ঠিকই জায়গা করে নেবে। কিন্তু আরমান তাকে এই সুযোগ কখনো দেয়নি। মায়া বিয়ে টা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আরমানের কাছ থেকে সে যা পেয়েছে তা ছিল শুধুই অবজ্ঞা আর অবহেলা।
হঠাৎ একদিন যখন ডিভোর্স পেপার তার বাড়িতে আসে, তখন মায়ার সব আশা ও স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়। ও খুব খারাপ ভাবে ভেঙ্গে পড়ে। আরমান তাকে ডিভোর্স পেপার সহ কিছু টাকা পাঠিয়েছিল ভরণপোষণ হিসাবে। যা মায়া স্পষ্টতই নিতে অস্বীকার করেছিল এবং ডিভোর্স পেপারে সই করেছিল। এবং সেই টাকা ফেরত পাঠিয়েছিল।
বিবাহ বিচ্ছেদের পর দুজনেই আর কখনো একে অপরের মুখোমুখি হয়নি। কিন্তু মায়া স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি যে তাদের এমন ভাবে দেখা হবে। মায়া সাহস সঞ্চয় করে আরমানের চোখের দিকে তাকিয়ে খুব ঠাণ্ডা গলায় বলল, “দারিদ্র্যের মধ্যে দিয়ে বাঁচার কোনো ইচ্ছে নেই, আমার কিছু শখ আছে যা পূরণ করার জন্য আমার টাকার প্রয়োজন। এখন আমার স্বামী আমাকে ছেড়ে চলে গেছে, আমাকে কোথাও না কোথাও থেকে তো আমার শখ পূরণের উপায় খুঁজে বের করতে হবে। আমার অনেক টাকার দরকার।”
মায়ার কথা শুনে আরমানের গম্ভীর মুখটা আরো গম্ভীর হয়ে যাই। গম্ভীর গলাতেই বলে ওঠে আরমান, “ওহ, তাহলে আমার প্রাক্তন স্ত্রীরও শখ আছে বুঝি? টাকার জন্য শরীর বিক্রি করার জন্য এই বাজারে নেমেছো? বাহ, শখ মানুষকে কত কি কিনা করতে শিখাই। আমি তোমায় ডিভোর্স দিয়ে একদম ভালো করেছি, তোমার মতো মেয়েদের দিয়ে শুধু শরীরের আগুন নিভানো যাই, বউ করে সংসার করা যাই না। তোমার মতো মেয়ের কোনো যোগ্যতাই নেই আমার বউ হওয়ার।”
আরমান দাঁত কিড়মিড় করে কথা গুলো বলল। কেন জানে না, কিন্তু হঠাৎ করেই খুব রাগ লাগছে তার।
যদিও আরমানের কথাগুলো মায়াকে অনেক কষ্ট দিচ্ছিল। কিন্তু সে তার সমস্যাগুলো আরমানকে দেখাতে চায়না। আর কেনই বা সে দেখাবে, যে ব্যক্তি বিয়ের আগেও চিন্তাও করেনি, ডিভোর্স দেওয়ার আগেও ভাবেনি, তার মুখের দিকেও তাকায়নি, তার ফিলিংস নিয়েও ভাবেনি, তাকে কেন তার সমস্যা গুলো দেখাবে?
মায়া মুখে একটা প্রলোভনসঙ্কুল হাসি দিয়ে আরমানের গলায় হাত রেখে বলল,”যদি এমনই হয় তাহলে চলুন, আমি আপনার ইচ্ছা পূরণ করব আর আপনি আমার ইচ্ছা পূরণ করবে। যাই হোক, গত কয়েকদিন ধরে আমার ইনকাম টা একটু ধীরগতিতে চলছে, আপনার মতো কোনো ধনী লোক পায়নি না, তার জন্য। আজ যখন আপনার মতো ধনী কাউকে পেয়েছি তখন আমি কোনো কমতি রাখতে চাই না। আপনি যেমন চাইবেন আপনাকে আমি তেমন সার্ভিস দেবো। আর আমাকে বিশ্বাস করুন, আমি আপনাকে একটুও অভিযোগ করার সুযোগ দেব না, আজ পর্যন্ত আমি আমার গ্রাহকদের কাউকে খুশি না করে যেতে দেইনি।
আরমান অবাক হয়ে বলল, “গ্রাহকদের? কতজন গ্রাহক আছে তোমার?”
আরমানের মুখে বিস্ময়ের ছাপ। আর গলার আওয়াজে রাগের আভাস স্পষ্ট। আরমানকে অবাক হতে দেখে মায়া বাঁকা হেসে বললো, “আমার কতজন গ্রাহক আছে এতে আপনার কি যায় আসে মিস্টার আরমান শাহরিয়ার? এটা তো আমাদের নিত্যদিনের কাজ, এত লোকের কথা কিভাবে মনে রাখি বলুন।”
মায়ার এমন নির্লজ্জ কথা শুনে আরমানের মুখ রাগে লাল হয়ে গেলো, চোখ দিয়ে যেনো আগুন ঝরছে। রাগে আরমান তার হাত দিয়ে মায়ার চিবুক শক্ত করে ধরলো। মায়া প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করছিল কিন্তু ও ওর ব্যাথা আরমানকে দেখাতে চাইছিল না। মুখে ঝুলিয়ে রেখেছিল গা জ্বালানো হাসি।
আরমান:- “আমি ভেবেছিলাম তুমি ভালো মেয়ে, তাই তোমাকে ডিভোর্সের সাথে কিছু টাকাও পাঠিয়েছিলাম। তুমি যখন টাকাটা আমাকে ফেরত দিয়েছিলে, তখন আমি ভেবেছিলাম তুমি হয়তো একজন আত্মসম্মানী মেয়ে, কোথাও না কোথাও আমার একটু অপরাধবোধ কাজ করেছিল। যে আমি কারো জীবন নষ্ট করেছি, কিন্তু আজ তোমাকে এইভাবে দেখার পর আমার সেই মায়া এবং সেই অপরাধবোধটাও চলে গেল। এখন মনে হচ্ছে যা করেছি একদম ঠিক করেছি। যাই হোক, তা তুমি আজ পর্যন্ত কত মানুষের বিছানা গরম করেছ? হ্যাঁ? কত মানুষ এই শরীর ছুঁয়েছ? কত মানুষের তৃষ্ণা নিবারণ করেছ তুমি? কি হলো বলো? উত্তর দাও।
আরমান উত্তেজিত হয়ে মায়াকে কথা গুলো জিজ্ঞাসা করল। আরমানের কথা শুনে মায়া হাল্কা হেসে বলল, “বললাম না, আমার মনে হয় না এগুলো জেনে আপনার কোনো লাভ হবে। আমি অনেকের সাথে খেলেছি। বিশ্বাস করুন, আমার অনেক অভিজ্ঞতা আছে, আমি আপনাকে খুব খুশি করতে পারবো, একবার শুরু করে তো দেখুন, আপনার পুরো টাকা উসুল হয়ে যাবে।”
মায়ার কথাগুলো আরমানের রক্তকে আরও গরম করে দিচ্ছিল, ও মায়াকে বিছানার কাছে নিয়ে যায় এবং জোর করে তাকে বিছানায় ছুড়ে ফেলে দেয়, তখনো প্রলোভনসঙ্কুল হাসি মায়ার মুখে রয়ে যায়, আরমান রেগে গিয়ে নিজের সমস্ত পোশাক খুলতে শুরু করে। মায়াও আস্তে আস্তে তার শরীর থেকে জামাকাপড় সরিয়ে নেয়, আরমানের চোখের সামনে মায়া বিবস্ত্র অবস্থায় ছিল। মায়ার কাছাকাছি এসে আরমান বলল, “তোমার কতটা অভিজ্ঞতা আছে দেখাও আমায়, আমি চাই তুমি আমাকে সন্তুষ্ট করো।”
মায়া তার মুখে একটি ধূর্ত হাসি দিয়ে আরমানকে কাছে টেনে নেয় এবং আবেগের সাথে কিস করতে শুরু করে।