আমার প্রেমিক ধ্রুব পর্ব ২৯

আমার প্রেমিক ধ্রুব পর্ব ২৯
অবন্তিকা তৃপ্তি

ধ্রুব এবার সরাসরি অদিতির দিকে তাকাল! কিছুক্ষণ অভিমানে তাকিয়ে থেকে; তারপর হঠাৎ করে বললো——-‘ওহ; সবকিছুর মূলেই তাহলে এক বিয়েই। বিয়ে হলেই তোমার ভরসা হবে ধ্রুব ক্যারেক্টারলেস নয়। ওকে দেন! লেটস গেট ম্যারিড। আজকেই; এই মুহূর্তেই।’

বোকা-সোকা অদিতি হায়াতের মাথায় যেন বাজ ছিটকে পরে! ধ্রুব চোখ ছোটছোট করে তাকিয়ে রয়েছে অদিতির ‘হা’—হয়ে থাকা মুখটার দিকে। অদিতিকে এই মুহূর্তে ভীষণ বাচ্চা-বাচ্চা লাগছিল! ২০ বছরের একটা বাচ্চা! ধ্রুবর হাসি এলেও; ও মুখ-চোখ ইচ্ছে করেই গম্ভীর করে রাখল।
অদিতি হতবুদ্ধি হয়ে ধ্রুবর দিকে চেয়ে আছে।ধ্রুব ওর এভাবে তাকানো দেখে নিজস্ব ভঙ্গিতে ডান ভ্রু-টা উঁচালো; অধরে দাঁত চেপে ঠান্ডা স্বরে বললো-——‘কি? তাকিয়ে আছো কেন এভাবে? অ্যানি প্রবলেম?’
কথাটা বলে; ধ্রুব এগিয়ে গিয়ে অদিতির হা হয়ে থাকা মুখটা থুতনি ঠেলে বন্ধ করে দিয়ে ভ্রু বাঁকিয়ে ভয় পাওয়ার ভান করে বললো——‘ই‍্যয়ুর রিয়েকশন ইজ স্ক্যারিং মি!’
ধ্রুব সরে বসলো; অদিতির হা হয়ে থাকা মুখটার বন্ধ আপাতত।অদিতি বিস্ময় চেপে রেখে; বললো ——‘মানে? বিয়ে….এইভাবে? এই অবস্থায়?’

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

ধ্রুব অবাক হওয়ান ভান ধরে নিজের দিকে তাকালো! এই মুহূর্তে ও ক্যাজুয়াল একটা টিশার্ট-ট্রাউজার পরে আছে! বাসার ড্রেস দেখে ধ্রুব ভ্রু বাঁকিয়ে অদিতিকে দেখলো! তারপর গা ছেড়ে দিয়ে; বললো——‘টিশার্ট পরে বিয়ে করা যায়না? পাঞ্জাবি পড়তে হবে?ফাইন! আজ তোমাকে নিয়ে গিয়ে শপিং করে দেব দুজনের। হবে?’
অদিতি বিরক্ত হয়ে গেল এবার। ধ্রুবর মজা করাটা ওর একটুও ভালো লাগলো না। ও হাতে থাকা খিচুড়ির প্লেট ঠাস করে টেবিলের উপর রেখে উঠে দাঁড়াল; চোখ-মুখ কুঁচকে বললো——‘আপনি পাগল হয়ে গেছেন জাস্ট। আমার মনে হয় জ্বরে আপনার মাথাটা সম্পূর্ণ গেছে।’
ধ্রুব বিছানায় বসে থাকা অবস্থায় দুর্বল হাতে অদিতির হাত টেনে ধরে ওকে আবার বসিয়ে দিল নিজের পাশে, বিছানায়। অদিতি ধ্রুবর পাশে বসে বিরক্ত হয়ে তাকাল; বললো ——‘ধ্রুব; ভালো হচ্ছে না কিন্তু। মজা বন্ধ করবেন আপনি?’

ধ্রুব অদিতির হাতটা টেনে নিজের হাতে রাখলো! আঙ্গুলের ভাজে আঙুল রেখে অদিতির চোখের দিকে তাকাল; মৃদু কণ্ঠে বলে গেলো ——‘আ’ম ফাইন। তুমি শোনো আগে! আমাদের বিয়ে হয়ে গেলে; তোমার বাবা ও আমাদের কোনোদিন আলাদা করতে পারবেন না। আর বিয়ে করা তো তোমার বাবাও সাপোর্ট করেন; রাইট? মনে করিয়ে দিচ্ছি তোমার গ্রামের একজনের বিয়ে হওয়াতে তাদের আলাদা করা হয়নি। তোমার বাবা উল্টো খুশি ছিলেন তাদের উপর।’

আজকেই সবে বাড়ি থেকে পাওয়া এই খবর-গুলো স্বয়ং ধ্রুবর মুখে হুবুহু শুনে অবাক হয়ে গেল অদিতি। ও ভ্রু কুঁচকে ফেললো; ——‘আপনি? আপনি এই খবর কোত্থেকে পেলেন? আমার বাড়িতে এখনো নজর রাখছেন আপনি?’
ধ্রুব ভ্রু বাকিয়ে তাকাল; হেঁয়ালি করে বলল ——‘তুমি জানতে না এসব? আমার শালা বলেনি তোমাকে?’
‘শালা?’ —-অদিতি ধ্রুবর কথার অর্থ কিছুই বুঝতে পারছে না।
ধ্রুব এবার গলা কেশে; মাথা তুলে তাকাল অবাক হয়ে বসে থাকা অদিতির দিকে। তারপর গলা খাকারি দিয়ে, সুর টেনেটেনে বলে গেলো——‘ই..ইফাজ। ইফাজ হায়াত! দ্য ব্রাদার অফ অদিতি হায়াত।’
অদিতির মুখ আবার হা হয়ে গেল! ও অবাক হয়ে বললো——‘ওর সঙ্গে আপনার কথা হয়? ইয়া আল্লাহ! আব্বা জানলে ওরে মেরে ফেলবে।’
ধ্রুব সঙ্গেসঙ্গে ভ্রু বাঁকালো,—‘কেউ আমার শালাবাবুকে ধরতে পারলে তো! ওর দুলাভাই আছে না? হি উইল প্রটেক্ট হিম!’
অদিতি হাল ছাড়লো! ধ্রুব যা নাছোড়বান্দা, যা বলে তাই করবে!

ও ছোট করে শ্বাস ফেলে বলল ——‘ধ্রুব, আমার যেতে হবে। রাত হচ্ছে। আপনি শুয়ে পড়ুন। আমি রান্না করে রেখে যাচ্ছি। সময়মতো খেয়ে নিবেন। মেডিসিন নিবেন। আমি কিন্তু কল করে খোঁজ নেব।’
অদিতি কথাটা বলে ধ্রুবর হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে, উঠে দাড়ালো। টেবিলের উপর থেকে ব্যাগটা কাঁধে ঝুলালো! ধ্রুবর ‍মুখটা মুহূর্তেই অন্ধকার হয়ে গেল। আবার সেই একাকী দিন; অন্ধকার রুম!
ছোট থেকে একা থেকে থেকে এতকাল অভ্যাস হলেও; এখন অদিতি ওর জীবনে আসার পর মনে হয়— কেউ একটা থাকুক পাশে। হাতে হাত রেখে, চোখে চোখ রেখে, মনে মন ছুয়ে রয়ে যাক সারাটাজীবন। ঘরটা অন্ধকার না হয়ে মোমবাতির আলোয় ঝিলমিলাক, কাবার্ড জুড়ে শাড়ি-গুলো সাজুক যত্নে!
এতক্ষণ ফুরফুরে মেজাজে থাকলেও,মুহূর্তেই ধ্রুব কেশে উঠে! কাশতে কাশতে বহু কষ্টে বলার চেষ্টা করলো ——

‘আ..আমি সিক! আমাকে এভাবে রেখে চলে যাবে?’
অদিতি স্বাভাবিক চোখে দেখতে লাগল ধ্রুবর কাশি! এতক্ষণ যে লোক এত কথা বলে ফেলেছে; সে অদিতি চলে যাবার কথা শুনে আবার সিক হয়ে গেল! যত্তসব ধান্দাবাজি! অদিতি কোমরে হাত দিয়ে; বলল ——‘ধ্রুব! এক্টিং ভীষণ বাজে হচ্ছে কিন্তু।’
ধ্রুব কথাটা শোনামাত্রই কাশি থামিয়ে ভ্রু কুঁচকে তাকালো! অদিতির কঠিন-নির্দয় চোখ-দুটো দেখে ও পরপর চোখ উল্টে শ্বাস ফেলে বললো——‘ফাইন, এক্টিং করছি না।’

অসুস্থ থাকায় ধ্রুব রীতিমত বাচ্চাদের মতো হয়ে গেছে! নিজের গম্ভীর-রাগী-জেদী স্বভাবের বাইরে গিয়ে ধ্রুব ইয়ামিনের এই ছেলেমানুষী আচরণ-গুলো অবাক ঠেকলো অদিতির কাছে।
অদিতি ধ্রুবর দিকে চেয়ে বললো——‘আপনার কথা বলার ধরন শুনে মনে হচ্ছে না আপনি আর সিক আছেন। ব্রেইন ঠিকই ফাংশন করছে! ঘুমান এখন। আমি আসি! ফোনে যেন শুনতে না পাই; আপনি মেডিসিন নিচ্ছেন না।’
‘এত সন্দেহ থাকলে থেকে যাও তুমি! থেকে টেক কেয়ার করো।’—- ধ্রুবর কণ্ঠে বিরক্তি! এত দরদ ওর সহ‍্য হচ্ছে না!

অদিতি টেবিল থেকে মোবাইল ফোন নিতে নিতে বলল ——‘জি না। যেদিন বউ হয়ে আসব; সেইদিন থেকে এক্সট্রা টেক কেয়ার চলবে।’
ধ্রুব এবার অসভ্য চিন্তায় মাথার পেছনটা চুলকালো; বাঁকা হেসে বলল ——‘রাতভর?’
অদিতি সঙ্গেসঙ্গে ভ্রু কুঁচকালো, ফোন হাতে নিয়ে ধ্রুবর দিকে তাকালো——-‘কি?’
ধ্রুব সঙ্গে সঙ্গেই ভদ্র ভাব-টুকু মুখে ফুটিয়ে তুলে বললো——‘আই মিন কেয়ার; টেক কেয়ার চলবে। অন্য কিছু ভাবছো নাকি?’

ধ্রুব ভ্রু বাকাল! ওর চোখে দুষ্টু ইঙ্গিত! অদিতি মুহূর্তেই লজ্জায় পরে গেল; মুখ লুকিয়ে অন্যপাশে সরিয়ে ফেলল! নিজেই নিজের এমন উদ্ভট চিন্তায় বিরক্ত; লজ্জিত! ধ্রুব তো এখন পেয়ে বস্নে আরো!
অদিতির লাজুক মুখটার দিকে ধ্রুব তাকিয়ে অবাক হওয়ার ভান করল; চোখ বড়বড় করে, অদিতিকে ইচ্ছে করে টিজ করতে বলল——‘কি তোফাজ্জল হায়াতের ভদ্র মেয়ে। এই অবস্থা তোমার? কি চিন্তা করছো আজকাল? আরে, এখনো আন্ডার এইজ তুমি! এখনই এসব? ছি-ছি!’
অদিতি লজ্জায় যেন মারা যাচ্ছে! ও লজ্জায় মুখ সরিয়ে ফেলল; ধ্রুবর দিকে না তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল ——‘আমি আসছি।’

অদিতি চলে যাবে; তার আগেই ধ্রুব মজা থামিয়ে পেছন থেকে ডাকলো —-‘দাঁড়াও!’
অদিতি দাঁড়ালো, পেছন ফিরে তাকালো! ধ্রুব শরীর থেকে কম্বল এক ঝটকায় সরিয়ে কোনো রকমে উঠে দাঁড়াল বিছানা থেকে। ঠান্ডা লাগছে বিধায় টিশার্ট এর উপরে গ্রে কালারের হুডি পরে নিলো! টেবিলের উপর থেকে বাইকের চাবি হাতে নিতে নিতে বলল ——‘পৌছে দেই, চলো ।’
একটু আগেই ধ্রুব জ্বরে কথা অব্দি বলতে পারেনি। এখনও নিজের স্বভাবের মধ্যেও আসেনি। আর এখন এতদূর বাইক চালাবে? অদিতি সঙ্গেসঙ্গে মানা করে বলল ——‘না না, লাগবে না। আপনি সিক! বিশ্রাম নিন।’
ধ্রুব বাইকের চাবি পকেটে ঢুকাতে ঢুকাতে এগিয়ে এলো! অদিতির পাশে দাঁড়াতেই ছোট-মোটে অদিতিকে মাথা তুলে তাকাতে হলো ধ্রুবর দিকে। ধ্রুব মৃদু হেসে অদিতির নাকে আঙুল দিয়ে হালকা করে টোকা দিয়ে বলল ——‘ধ্রুব সিক হতে পারে; কিন্তু নিজের রেসপন্সিবিলিটি জানে! পাকামো না করে চলো এখন।’

অদিতি নাকে হাত দিয়ে দাড়িয়ে রয়েছে! ধ্রুব ওকে ফেলেই আগে আগে হাঁটা ধরেছে ততক্ষণে! অদিতি কি করবে আর! এই ছেলেকে যা বোঝাবে তার উল্টোটাই বুঝবেন! তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও পা বাড়াল ধ্রুবর সঙ্গে।
বাইকের কাছে গিয়েই অদিতি আবার ধ্রুবর দুর্বল দেহ দেখে, কাতর গলায় মানা করে বললো ——‘ধ্রুব! আপনি এই অবস্থায় বাইক চালাবেন? কেন পাগলামো করছেন? জ্বর আপনার এখনো কমেনি।’

ধ্রুব এবার বিরক্ত হলো ভীষণ। এই মেয়েকে নিয়ে কই যাবে? ও অদিতির কথা এক ফোঁটা পাত্তা না দিয়ে সোজা ওর মাথায় কালো রঙের হেলমেট পরিয়ে দিয়ে সেটার উইন্ডো বন্ধ করতে করতে বলল ——‘আর কথা বললে বাইক কাজী অফিসের সামনে নিয়ে থামাবো! ধ্রুব জ্বর নিয়েই অনেককিছু করতে পারে; ই‍্যয়ু কান্ট ইমাজিন দ্যাট!’
অদিতি ভ্রু কুচকে ফেলল! ধ্রুব বাইকে উঠে বসে, হেলমেট মাথায় চরিয়েছে। অদিতি সেভাবেই দাড়িয়ে ধ্রুবকে দেখতে লাগল! ধ্রুব বাইকের ইঞ্জিন চালু করে, হেলমেটের উইন্ডোর ফাকে অদিতির দিকে তাকালো! ওর এমন তাকানো দেখেই অদিতির সুরসুর করে উঠে বসলো বাইকে। বাইকের হ্যান্ডেলে হাত দিতেই ধ্রুব সামনে চেয়ে গম্ভীর গলায় বলল——‘ওটা ধরলে পরে যাবে; আমাকে ধরে বসো।’

অদিতি জানে; হ্যান্ডেল ধরলে ও পরে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তোফাজ্জলের সঙ্গেই ও জীবনে বাইকে উঠেছে! যতবার বাবার সঙ্গে বাইকে উঠেছে, ঝাপটে ধরেছে! ধ্রুবকে কিভাবে ধরবে? অদিতি ভয় পেয়ে, না চাইতেই ধ্রুবর পেটের দুপাশের হুডি আঙ্গুলের ফাকে হালকা ভাবে খামচে ধরে রাখলো; লজ্জায় আয়নার দিকে আর তাকালো না! মুখ সরিয়ে অন্যপাশে তাকাল। ওর ভীষন অস্বস্তি হচ্ছিল! এভাবে…এভাবে কোনো ছেলের বাইকে ও! অদিতি কুণ্ঠিত!’
ধ্রুব আয়নায় এতক্ষণ ধরে অদিতির একেকটা কাজ দেখছিল! অদিতি ধরে বসতেই, ও নিশ্চিন্ত হয়ে বাইক চালু করলো!
হোস্টেলের সামনে আসতেই, অদিতি তাড়াহুড়ো করে নেমে দাঁড়াল। এতক্ষণ ধ্রুবর সঙ্গে বাইকে ছিলো; জমে আছে যেন অদিতির সারা গা!

ধ্রুব চাবি ঘুরিয়ে মাথা থেকে নিজে হেলমেট খুললো! ধ্রুবর এলোমেলো; ব্রাশ-ছাড়া ঝাকরা চুল-গুলো সঙ্গেসঙ্গে কপালের উপর ছড়িয়ে পরলো! অদিতি তাকিয়ে রইলো ধ্রুবর দিকে। অসুস্থ ধ্রুবকে মলিন চেহারায়ও খারাপ দেখাচ্ছে না! বরং হুডি গায়ে, ঝাকরা চুলে ধ্রুবকে দেখতে মারাত্মক লাগছিল! অদিতি লাজুক নাহলে; ধ্রুবকে বলে, ধ্রুবর গায়ের ওই গ্রে রঙের হুডিটা চেয়ে নিত!
ধ্রুব হেলমেট বাইকের হ্যান্ডেলে ঝুলিয়ে; অদিতির দিকে তাকাল! অদিতি তখনো ধ্রুবর হুডির দিকে চেয়ে আছে। ধ্রুব অদিতির চোখ লক্ষ করে ভ্রু কুঁচকে নিজের পরনের হুডির দিকে তাকাল। পরপর মাথা তুলে অদিতির দিকে তাকিয়ে; ভ্রু বাকিয়ে হঠাৎ বললো——-‘লাগবে এটা?’
অদিতি চমকে উঠল; দ্রুত চোখ সরিয়ে বলল——‘কি?’
ধ্রুব স্বাভাবিক গলায় বললো——‘ হুডি ভালো লেগেছে? নিবে?’
অদিতি লজ্জায় আই-ঢাই করে উঠে——‘ন…না, না! আমি এমনিতেই—-‘

ধ্রুব অদিতির কথা পুরোটা আর শুনেইনি! নিজের মতো করে গা থেকে হুডিটা খোলা শুরু করলো! অদিতি চুড়ান্ত অপ্রস্তুত হয়ে গেল যেন! এভাবে কেন হ্যাবলার মতো হুডির দিকে তাকিয়েছিল; রাগে নিজেকেই থাপ্পড় দিতে মন চাইল ওর! অদিতি দুহাতে মানা করলো——‘লাগবে না আমার। আমি ছেলেদের এটা নিয়ে কি করব?’
ধ্রুব হুডিটা শরীর থেকে খুলে অদিতির হাতে জোর করে গছিয়ে দিয়ে স্বাভাবিক গলায় বললো——-‘এটা ছেলেদের না। ধ্রুবর, তোমার ধ্রুবর। নিতেই পারো তুমি; ইউ হ্যাভ নাও লিগ‍্যাল রাইট ফর দিস!’
অদিতি নিজের হাতে ধ্রুবর জোর করে দেওয়া হুডির দিকে তাকিয়ে আবার ধ্রুবর দিকে তাকাল! ধ্রুব হালকা করে হেসে; অদিতির নাকে আঙুল দিয়ে আলতো করে টোকা দিয়ে বললো—-‘নাকটা লাল হচ্ছে,চেরি টমেটো লাগছে দেখতে, ইয়াম্মি টমেটো।’

‘জী!’—- অদিতি তাড়াহুড়ো নাকে হাত দিল! ধ্রুব এক ভ্রু উঁচাতেই,অদিতি লজ্জায় নাক থেকে হাত সরিয়ে নিল; লাজুক গলায় হালকা হেসে বলল ——‘আসি!’
ধ্রুব নরম গলায় বললো-——‘বাই!’
অদিতি ধ্রুবর হুডি হাতে চলে যাচ্ছে। ধ্রুব তাকিয়ে রইলো ওর যাওয়ার দিকে! বড় শাল অদিতির গায়ে জড়ানো; তবুও শালের ফাঁকে উকি দিচ্ছে ওর লম্বা বেনুনি! ভালো লাগছে দেখতে! অদিতি হোস্টেলের গেইটের সামনে যেতেই, ধ্রুব চোখ সরিয়ে নিল! হেলমেট হাতে নিয়ে, মাথায় দিবে; তখন হোস্টেলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে অদিতি পেছন ফিরে ডাকল ——‘ধ্রুব?’

ধ্রুব হেলমেট হাতে মাথা ঘুরিয়ে তাকালো! অদিতি লম্বা শ্বাস ফেলল; তারপর ধ্রুবর প্রশ্নবোধক দৃষ্টির দিকে চেয়ে মৃদু কণ্ঠে বলে বললো——-‘আপনার বউ হলে এই হুডি-গুলো কি সব আমার হয়ে যাবে?’
ধ্রুব অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল অদিতির দিকে। ওর অবাক চোখ-মুখ তারপর ধীরেধীরে হেসে উঠল, ধ্রুব মৃদু হেসে মাথা নাড়াল—-‘এভসুলেটলি!’
অদিতি লাজুক হাসল; হাতের হুডিটা একহাতে নিজের সঙ্গে শক্ত করে চেপে, হেসে বাম হাত নেড়ে আবার ফিসফিস করে বললো——‘বাই।’

আমার প্রেমিক ধ্রুব পর্ব ২৮

ধ্রুব উত্তরে মৃদু হেসে, বাই বলে হাত নাড়াল! অদিতি উত্তর পেয়ে লাজুক হেসে ভেতরে ঢুকে গেল।
অদিতি যেতেই ধ্রুব ডান হাতের আঙ্গুলের ডগায় কপাল চেপে; হেসে ফেলল শব্দ করে! কপাল চুলকে বিড়বিড় করলো——‘বাচ্চা একটা।’

আমার প্রেমিক ধ্রুব পর্ব ৩০