ইলেকট্রিক্যাল মন পর্ব ৩

ইলেকট্রিক্যাল মন পর্ব ৩
Arishan Nur

পাত্রপক্ষের সামনে উপস্থিত হতেই কিংকর্তব্যবিমুঢ়, দিশেহারা হয়ে যায় আয়না। তার সামনে তার-ই অফিসের সবচেয়ে রাগী বস বসে আছেন। পাত্রপক্ষ হিসেবে নিজের অপছন্দের বদমেজাজি স্যারকে দেখবে এমন চিন্তা সে ঘুমের মধ্যকার স্বপ্নেও কল্পনা করেনি। কিন্তু এমনটাই বাস্তবে ঘটছে। সে বিচলিত বোধ করে। কপাল চুইয়ে একফোঁটা ঘাম ছুঁটে। খুব আস্তে আস্তে বুকের ধুকপুক আওয়াজ বৃদ্ধি পাচ্ছে তাল মিলিয়ে ছন্দ তুলে৷ আয়না একবার শুধু চোখ তুলে তাকায়। দৃশ্যপট খুবই সাধারণ। পাত্রপক্ষ এসেছে তাকে দেখতে।

বাঙ্গালী সংস্কৃতিতে খুব পরিচিত এক রীতি। পাত্রের সামনে দাঁড়াতেই আয়না হতবিহ্বল হয়ে পড়ে। সেও নিশ্চয়ই আয়নাকে এইভাবে দেখতে চায় নি! কে জানে? আয়না কিছু বুঝে উঠতে পারছে না৷ দ্বিতীয়বার যখন চোখ তুলে তাকালো, আয়নার ভ্রান্ত ধারণা হলো, উনি বোধহয় একদমই আয়নাকে এ পরিস্থিতিতে দেখায় উদ্বিগ্ন নয়। বরং আয়নাকে দেখবে এটাই পূর্ব নির্ধারিত ছিল৷

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আয়না হতবুদ্ধির ন্যায় দাঁড়িয়ে থাকলে, তাকে মিসেস রোদেলা নিজ ইচ্ছায় সামান্য আদুরে ভঙ্গিমায় নিজের এসে টেনে এনে বসালো। আয়না বাধ্য হয়ে বসে পরে ঠিক সমুদ্রের বিপরীতে। বরাবর বসায় মাথা নিচু করেও চাইলেই ওনাকে পরখ করে দেখে নেওয়া যায়। কিন্তু আয়না একবিন্দুও দৃষ্টিপাত করে না৷ আজকের আয়োজনের সবচেয়ে বিশেষ ও প্রধান আকর্ষণ বুঝি সে। সবাই মিলে তাকে আয়োজনের কেন্দ্রবিন্দু বানিয়ে রেখেছে। আয়নার অস্বস্তি হচ্ছে। আরোও ভ্রষ্ট অনুভূতি ঘুরপাক খাচ্ছে এটা ভাবে যে উনি কি ভাবছেন? আয়নাকে দেখে রেগে গেছেন? তাদের এমন সাক্ষাৎকার কি আদৌ হওয়ার ছিল? এ দর্শনের পরিনতি কী? বেশি ভাবতে পারছে না সে। সবকিছুই বেশ অগোছালো লাগলো। কেমন তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে সবকিছু।

নীরবতা ভেঙে পাত্রের পিতা ইশরাক রহমান বলে উঠে, ” মেয়ে তো আমাদের আগে থেকেই খুব পছন্দের। আসলে এমন লক্ষ্মী একটা মেয়েকে তো অপছন্দ করার কোনো কারণই নাই।”
আয়না তখন শাড়ির আঁচল এর শেষের কোণার অংশ দিয়ে আঙুল প্যাঁচাচ্ছিল। অভিভাবকদের মুখে নিজের
আসলে অতিরিক্ত চিন্তা বা অস্থিরতা কাজ করলে সে আঙুল দিয়ে ওড়না প্যাঁচায়৷ কালকে সারারাত টেনশনে তার ঘুম হয় নি। পাত্রপক্ষ জীবনে প্রথম তাকে দেখতে আসবে এটা ভেবেই সে অস্থিরতায় নুইয়ে পড়ছিল। একটা মেয়ের জীবনে এসব অনুভূতি খুব অদ্ভুত। এরকম সময়ে আয়না মাকে ভীষণ ভীষণ মিস করছিলো। কে-ড্রামা দেখেও তার জড়তা, চিন্তা একবিন্দুও কমে নি৷ সে হাত দিয়ে আঁচল দিয়ে ঢাকা মাথার ঘোমটা ঠিক করে নেয়৷

আয়নার ফুপু পাত্রের বাবার মুখ এমন কথা শুনে ধনাত্মক ইশারা পেতেই কথা বলা শুরু করলেন। বলে উঠেন, , ” আলহামদুলিল্লাহ। ভাইজান, ছেলে তো আমাদের তো খুবই পছন্দ হয়েছে৷ মাশাল্লাহ আপনার ছেলে তো রাজপুত্রের মতো। তেমনি জ্ঞানী। ”
ওনাকে নিয়ে বলা অতিরিক্ত প্রশংসা গুলো আয়নার একদম পছন্দ হয় না। তার চিন্তার স্কেল কাঠি আরো একটু বৃদ্ধি পায়৷
এরপর ওর ফুপু তাকে ইঙ্গিত করে বলে, ” আয়ু মামনি, ওনাদেরকে শরবতের গ্লাস গুলো সার্ভ করে দেও।”
আয়না ভীষণ জড়তা নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে শরবতের ট্রে থেকে গ্লাস হাতে তুলে নিল। একজন ভদ্রমহিলা ভদ্রভাবে বলে উঠে, ” মা আমাদের দিতে হবে না৷ আমরা নিজে থেকে নিয়ে নিব। তুমি ওকে দেও বরং। ”

আয়না বুঝে উঠতে পারলো না কাকে শরবত দিতে বলছেন উনি? সে এক এক করে পাত্রের সঙ্গে আসা বাকি সবার হাতে গ্লাস ধরিয়ে দিল। চার-পাঁচজন এসেছে সাথে। একদম শেষে সে ট্রে থেকে শরবতের গ্লাস তুলে নিয়ে পাত্রের সামনে গিয়ে হাজির হয়। সমুদ্রের সামনে দাঁড়াতেই সে নার্ভাসনেজে সামান্য কেঁপে উঠে। হৃদস্পন্দনের গতি বেশ তীব্রতর হলো। সে কাঁপা হাতে গ্লাস এগিয়ে দিতে ধরলেই, অতিরিক্ত উদ্বিগ্নতায় শরবতে পরিপূর্ণ গ্লাস থেকে কিছু পরিমান পানীয় সমুদ্রের পায়ে এসে গড়িয়ে পরে। আয়না বেশ ভয় পেয়ে যায়। এটা কি হলো? সে মোটেও ইচ্ছা করে ফেলে নি৷ কেউ কেউ হয়তোবা এই দৃশ্য দেখেছে। তবে সমুদ্রের মধ্যে ভাবান্তর নেই বললেই চলে। আজ ও ভীষণ শান্ত। রাগের ছিটেফোঁটা ও নেই ওর মধ্যে।

উনি হাত বাড়িয়ে গ্লাস নিতে ধরলে আলতো ছোঁয়া লাগলো আয়নার হাতের সাথে। ওই সময় দুজনেই হাল্কা চমকে উঠে। আয়নার চমকে উঠার মাত্রা একটু বেশি ছিল বুঝি, হুট করে নড়েচড়ে ওঠায় ওর শাড়ির আঁচল তিরতির করে ঝরা পাতার ন্যায় কাঁধে এসে ঝুলে পরে, ফ্লোরে গড়াগড়ি খায়। তবে সমুদ্রের চমকের মাত্রা গনণায় গণিতশাস্ত্রের সাহায্য নিলে মান দাঁড়াবে একশ ভাগের একভাগের এক দশমাংশ।
সমুদ্র ভদ্রতাসূচক বলে উঠে, ” থ্যাংক ইউ।”

আয়না সঙ্গে সঙ্গে সরে গিয়ে সোফার সামনে যেতে থাকে৷ আয়না বেখেয়ালি হেঁটে গেলে তার আঁচল সমুদ্রের পায়ে গড়াগড়ি খেতে খেতে এসে আটকে গিয়ে বাড়ি খায়। সমুদ্র এবারে বেশ ভালো রকম চমকে উঠে আয়নার শাড়ির আঁচল নিজের পা থেকে সরিয়ে দিয়ে সামনে এগিয়ে দেয় যেন আয়নার হাঁটতে সমস্যা নাহয় তবে অগোচরে। আয়না গিয়ে সোফায় বসে৷ সমুদ্র একদৃষ্টিতে তার দিকে দৃষ্টিপাত করছে তা দিব্যি টের পাচ্ছে আয়না, এতে আরোও বেশি অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। হুট করে কেমন জানি দুর্বল লাগা শুরু হচ্ছে৷ মাথায় ঝিমঝিম ভাব তৈরি হলো৷ কিছুটা ঘামছেও৷ সবধরনের শব্দ গুলো মনে হচ্ছে অনেক দূর থেকে সঞ্চারিত হচ্ছে৷

সমুদ্র সবে এক চুমুক শরবতের গ্লাসে মুখ দিয়েছে। গরমকালে এমন ঠাণ্ডা শরবত বেশ আরামদায়ক। কিন্তু আয়নার দিকে তাকিয়ে দ্বিতীয়বার আর মুখ দিলো না বরং সরাসরি হাতের গ্লাস আয়নার দিকে এগিয়ে বললো, ” শরবত খাও৷ তোমার মনে হয় বিপি ফল করেছে। ইউ নিড দিজ।”

আয়না ওনার স্পষ্ট উচ্চারণে বলা কথাগুলোতে আরোও বিপাকে পরে যায়৷ সবচেয়ে বেশি অবাক হলো সমুদ্র তাকে তুমি করে ডাকছে। কি করবে, কি করবে না বুঝে পায় না। সমুদ্রর কথায় সবাই আবারো আয়নার দিকে তাকায়। আয়না গ্লাসটা হাতে তুলে নিয়ে সামান্য পানীয় পান করে। চিনিযুক্ত শরবত খেয়ে আসলেই তার স্বস্তি অনুভূত হয়।
আয়নার বাবা ফাহাদ সাহেব এগিয়ে এসে অভিযোগের সুরে বলেন, ” বিপি ফল কেন করবে না ওর? কাল থেকে চিন্তায় মেয়েটা ঠিকঠাক খাচ্ছে না। সারারাত জেগে ছিল।”
আয়নার মনে হচ্ছিল উঠে গিয়ে বাবার মুখে হাত দিয়ে, মুখ বন্ধ করে দিতে যেন সমুদ্রের সামনে এসব প্রাইভেট কথা না বলে, এসব শুনলে ওকে লজ্জায় পড়তে হবে! উনি নিশ্চয়ই এসব শুনে হাসছেন! ভাবছেন মেয়েটা কতো বিয়ে পাগল!

কিন্তু সে আস্তে করে বলে, ” এখন ভালো লাগছে৷”
মিসেস রোদেলা বলে উঠে, ” আয়না একটু নিরিবিলি থাকুক। এতো মানুষের হৈচৈয়ের মধ্যে মেয়েটার কষ্ট হচ্ছে বুঝি! এছাড়া, সমুদ্রের সাথে কথা বলতে চাইলে ওরা একাকী কথা বলুক।”
মূলত সবাই চাচ্ছে ওরা দুজন একাকী কথা বলুক যেন আজ এই আসর থেকে যেকোনো সুখবর প্রচার হয়৷ সমুদ্র ভেবে পেল, সামান্য মেয়েকে দেখতে আসায় পাত্রীর বাবা এতো তুলকালাম আয়োজন কেন করেছেন? ওদের নিজেদেরই অনেক মেহমান এসেছে। মনে হচ্ছে আজকেই শুভ বিবাহ অথচ আজ কেবল প্রথম সাক্ষাৎকার, চাইলেই আজকে সে এই বিয়েতে দ্বিমত পোষণ করতে পারে। সে একবার তার বাবা-মায়ের দিকে তাকিয়ে আয়নার সঙ্গে আয়নার রুমে এসে দাঁড়ালো।সবাই ভীষণ জোড়াজুড়ি করছিল দুইজনকে।

কালকেই এই রুমটাকে সে ফোনের স্ক্রিনে দেখছিল। আয়না এসি অন করে দিলো। দুইদিন ধরে ঢাকা শহরে তাপমাত্রা বেড়েই চলছে। যেকোনো সময় হীটওয়েভ এলার্ট জারি হতে পারে। তবে ওরা রুমের দরজা লাগালো না। আয়না নিজের চেয়ারে বসে পড়ে। সমুদ্র দাঁড়িয়ে থাকলো। কেউই কথা বাড়ালো না৷
সমুদ্র বলে, ” কেমন আছো এখন?”

–” ভালো।”
–” মনে তো হচ্ছে না ভালো লাগছে। রেস্ট দরকার। ”
সমুদ্র আর কথা খুঁজে পায় না। তাও ইনিয়েবিনিয়ে বলে উঠে, ” জানতে আমি আজ আসব? ”
–” নাহ৷”
সে ভ্রু কুচকে বলে, ” না কেন? তোমাকে আংকেল কিছু বলেন নি?”
–” বলেছিলো তো।”
–” ওহ হ্যাঁ এইজন্য তো এখন থেকেই ঘুম উবে গেছে অথচ জানতাম বিয়ের পর মেয়েদের ঘুম ঠিকঠাক হয় না, তুমি দেখি এক ধাপ এগিয়ে, বিয়ের আগে থেকে ঘুম বাদ ।”
আয়নার লজ্জায় মুখ লাল হয়ে আসে। সে জানত এই বজ্জাত লোক এসব বলেই তাকে লজ্জা দিবে৷ সুযোগ খুঁজছিলো এইজন্য একাকী কথা বলার এতো তাড়া ছিলো ওনার? এতোক্ষণ সবার সামনে ভদ্র সেজে থাকলো।
সমুদ্র আশেপাশে তাকিয়ে বলে, ” আংকেল আর কিছু বলেন নি?”

–” বলেছিল তার ভার্সিটির ফ্রেন্ড হয় ছেলের বাবা৷”
–” ছেলে সম্পর্কে কি বলেছিলেন?”
আয়না এবারে মাথা নুইয়ে আস্তে করে জবাব দেয়,” ছেলে অস্ট্রেলিয়া থেকে মেডিকেল সাইন্স পড়ে দেশে ফিরেছে৷”
সমুদ্র বলে, ” ছবি দেখায় নি আমার? তাহলে এতো শকড হওয়ার লাগত না৷ আমার তো মনে হচ্ছে তোমার বিপি ফল আমাকে দেখেই হলো!”
ওনার ঠেস মা–রা কথায় এবারে সে দমলো না, বলে উঠে,
–” উহু দেখি নি। বাবা বলেছিল ছবি দেখতে চাই কিনা আমি ই বলেছি দরকার নেই। আপনাদের তো বাসায় দাওয়াত দেওয়া হবে তখন মিট হবে এই ভেবে আর ছবি চাই নি।”

–” আমি এক মাস আগেই তোমার বায়োডাটা সহ ছবি দেখেছি।”
আয়নার একথাটা শুনে কেমন আজব আর অদ্ভুত– দুটির সংমিশ্রণে এক অজানা অনুভূতি অনুভূত হলো। উনি তাহলে একমাস ধরেই তাকে বিশেষ নজরে দেখে আসছেন?
তখন সমুদ্রের বোন পিউ রুমে এসে উকি মেরে বললো,” ভাবী আসবো?”
সমুদ্র-আয়না দুইজনেই এমন কিছু শোনার জন্য প্রস্তুত ছিলো না। ভাবী ডাক শুনার সঙ্গে সঙ্গে একদম ডিফারেন্ট একটা ইমোশন কাজ করে তার৷ আয়না শুধু একবার সমুদ্রের দিকে তাকালো।
সমুদ্র বলে, ” আয়।”

পিউ হাসিমুখে রুমে ঢুকে বললো,” এই যে জামাই-বউ তোমাদের সবাই ড্রয়িংরুমে ডাকছে। এসো জলদি৷”
আয়না সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে পিউয়ের সঙ্গে রওয়ানা হলো। সমুদ্র তাদের অনুসরণ করে আগায়। ড্রয়িংরুমে বিশাল ডিসকাশন চলছিলো৷ তাদের দেখে সবাই থেমে যায়৷
মিসেস রোদেলা এসে ওদের দুইজনকে একসঙ্গে পাশাপাশি বসিয়ে সমুদ্রের হাতে একটা রিং ধরিয়ে দিয়ে বলে, ” তাড়াতাড়ি বউমার হাতে আংটি পড়িয়ে দে।”

সমুদ্র বুঝে পাচ্ছে না, বিয়ের আগে ই আয়না তার বউ হয়ে গেলো? সবাই এতো ব্যস্ততা দেখাচ্ছে কেন? তার মা পারলে আজই কাজী ডেকে বিয়ের কাজ সেড়ে ফেলেন!
সে দুদণ্ড থেমে দম ফেলে আংটি এগিয়ে এনে আয়নার দিকে আহ্বান জানায়। আয়না হাত বাড়িয়ে দিলে বাম হাতের অনামিকা আঙুলে রিং পড়িয়ে দেয়। আয়নাকেও একটা রিং দেওয়া হলো। সেও সমুদ্রকে রিং পড়িয়ে দেয়৷ অফিসিয়ালি তারা আজ যেন এনগেজড হয়ে গেলো। ভাবতেই আয়নার পেটের মধ্যে ‘কেউ কাতুকুতু দিচ্ছে’ টাইপ অনুভূতি হয়৷

সমুদ্ররা জুম্মার পর এসেছিল, ফিরে গেল বিকেলে চা-নাস্তা খেয়ে। সন্ধ্যা থেকেই আয়নাদের বাসায় যেন উৎসব লেগে গেলো। কারণ আগামী সপ্তাহের শুক্রবার বিয়ের ডেইট পাকা করে গেছে পাত্রপক্ষ। সন্ধ্যায় আয়না চুল ছেড়ে দিয়ে নিজের রুমে বসে ছিল। ওর সব কাজিন তাকে নিয়ে গল্প করছে। সবাই ভীষণ এক্সাইটেড। তাদের ফ্যামিলিতে অনেকদিন পর কোনো বিয়ে লেগেছে৷
ওর ছোট বোন আলিয়া বলে উঠে, ” আপা, তোমরা তো একই অফিসে কাজ করছো, ভাইয়া কি তোমার সাথে এই একমাস প্রেম করেছে?”

আয়না এমন প্রশ্ন শুনেই মেজাজ খারাপ হলো। ব্যাটার মনে কি আদৌ প্রেমানুভাব আছে?
সে বলে উঠে, ” প্যারা দিয়েছে শুধু। ”
আলিয়া বলে, ” ভাইয়া তো অনেক সুইট! ”
আয়না মনে মনে বলে, সুইট না ছাই –উনি একদম ডার্ক তিতা চকলেট যেটা মুখে নিয়েই ফেলে দিতে মন চায় হুহ।
ওমনি সময় সমুদ্রের নাম্বার থেকে একটা ম্যাসেজ আসে। আয়না তখন ওর হাতের অনামিকা আঙুলে লেগে থাকা চিকচিক করতে থাকা রিংয়ের দিকে তাকিয়ে ছিল। এই সামান্য রিং দিয়ে ওনার অস্তিত্ব বহিঃপ্রকাশ পাচ্ছে তার জীবনে৷ সমুদ্রের নাম স্ক্রিনে ভেসে আসতেই সবাই মজা নেওয়া শুরু করলো৷ ওর কাজিন বলে উঠে, ” দেখ, আই লাভ ইউ ম্যাসেজ দিয়েছে মনে হয়।”

ইলেকট্রিক্যাল মন পর্ব ২

— উহু অফিসের কিছু সেন্ড করেছে হয়তোবা।”
আয়না ম্যাসেজ খুলতেই সবাই ঝাপিয়ে স্ক্রিনে চোখ দিল, তারা যা পড়লো তাতে প্রথম এ বোধগম্য হলো না কি পড়লো। পরে ব্রাকেটে ৫ এমজি (5 mg) লেখা দেখে খেয়াল হলো কোনো মেডিসিনের নাম ম্যাসেজ করে পাঠিয়েছেন।
ওর কাজিন বলে উঠে, ” আহা ডাক্তারের প্রেম করার ধরণ তো খুব সুন্দর! প্রেম-প্রেম ম্যাসেজেও ঔষধের নাম!”

ইলেকট্রিক্যাল মন পর্ব ৪