ইলেকট্রিক্যাল মন পর্ব ৩৭

ইলেকট্রিক্যাল মন পর্ব ৩৭
Arishan Nur

আয়নার মনে হচ্ছে মাথার উপর এক হাজার’ ভরের পাথর দিয়ে কেউ তাকে আ’ঘাত দিচ্ছে৷ অসহ্য রকম ব্যথায় সে চোখ বুজে ফেলে। অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে, যদিও সে চাচ্ছে কেউ আসুক, বাঁচাক তাকে, না তাকে না, তার বাচ্চাটাকে! সৃষ্টিকর্তার কাছে আকুল মিনতি করে সে। কেউ কী নেই পৃথিবীতে যে উছিলা হয়ে এসে তার বাচ্চাটাকে বাঁচাবে? সমুদ্র কোথায় তুমি?

এমন সময় বেল বাজার আওয়াজ ভেসে আসে। সে মনে মনে অনেক প্রার্থনা করে কেউ আসুক। বেল বাজার আওয়াজ কানে বাজতেই থাকে। মনে হচ্ছে অন্ততকাল ধরে কেউ বেল বাজিয়ে যাচ্ছে। সব অস্পষ্ট লাগে। এ যেন অস্পষ্টতার জগৎ। চারিদিকে ধুধু আন্ধার দেখে সে। এমন আঁধারে তলিয়ে যেতে চায় নাহ সে!
শায়লা চৌধুরী আজ একটু আগেই দুপুরে লাঞ্চ করতে বাসায় ফেরেন। একটানা বেল বাজিয়েও যখন আয়না দরজা খুলছিলো না, ফোন লাগায় সে। ফোনও যখন রিসিভ করে না, সে ভাবলো অফিস ফিরে যাবে। এক পা পিছিয়ে লিফট কল দিল। লিফট গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে পাঁচতলায় আসতে সেকেন্ড সময় নিচ্ছে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

তৎক্ষনাৎ স্মরণ হলো তার কাছে এক্সট্রা চাবি আছে। অফিস থেকে এসেই ফিরে যেতে মন চাইলো না। সে চাবি দিয়ে দরজার লক খুলে বাসার ভেতর প্রবেশ করে। অফিসের ফাইল আর ব্যাগটা টেবিলে রেখে এক গ্লাস পানি খেয়ে ভাবে আজ পাবদা মাছের ঝোল করবে৷ পরমুহূর্তেই মনে হলো, একবার আয়নার কাছ থেকে শুনে নিক ও কি খাবে। আয়নার রুমের দিকে এগিয়ে গিয়ে উনি দরজার নব ঘুরিয়ে দরজা খুলতেই যেন স্তম্ভিত হয়ে যান। গা থরথর করে কাঁপতে থাকে। চোখের সামনে এমন ভয়ংকর দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছিলো ওখানেই জ্ঞান হারাবেন।

আয়না ফ্লোরে উপর হয়ে শুয়ে আছে। রুমের সাদা ফ্লোরে যেন লালের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। ওনার সময় লাগে সবটা বুঝছে। ব্রেইন সময় নেয় এমন প্রস্তুতি মোকাবেলার আগে! তবে উনি ভয়ে চিৎকার দিয়ে উঠে। তার চিৎকারের মাত্রা এতো বিকট ছিলো সম্পূর্ণ বিল্ডিংয়ের মানুষ বোধহয় শুনে ফেলেছে। তার পা এগিয়ে সামনে অগ্রসর হলেন, আয়নার কাছে যায়। আয়নাকে তুলে উঠাতে চেষ্টা করে।
গালে হাত চাপড়িয়ে সেন্সে আনার চেষ্টা চালায়। আয়না একটু নড়ে উঠে অল্প চোখ খুলে, এরপর খুব আস্তে করে, ” আমার বাচ্চা!”

আর কিছু বলতে পারেনা মেয়েটা। চোখ বন্ধ করে ফেলে। পাশের বাসা থেকে লোকজন ও দারোয়ান এসে ভীড় জমায়। অন্যদের সহায়তায় দ্রুত আয়নাকে হসপিটালে নেওয়া হলো। শায়লা একবিন্দু সময় পায় না অন্য কাউকে কল করার। বাসার কাছে ভালো উন্নত মানের হাসপাতাল বলতে সমুদ্রের জব করা হসপিটালটাই ভালো। ক্যান্টনমেন্ট পাড় হলেই রাস্তার কাছেই পরে। সময় নষ্ট না করে গাড়িতে করে ছুটে চলে তারা। আজ রাস্তা যেন ফুরায় না। এক একটা পল যেন এক যুগের সমান। শায়লার জানা নেই সামনে কি অপেক্ষা করছে তাদের জন্য। আদৌ আয়না ও তার বাচ্চা সুস্থ থাকবে তো? গাড়ির সীট কভার অব্দি ভিজে উঠছে র ক্তে। ভয়ে তার গা ঠাণ্ডা হয়ে আসে।

উড়োজাহাজের ছোট্ট জানালা ভেদ করে একটুখানি রোদের লুকোচুরি খেলা চলছিলো তখন। সফেদ, ধবধবে সাদা, নরম-শুভ্র মেঘগুলো যেন আয়েশ করে ঘুরছে। ওগুলো ভেদ করে উড়োজাহাজ আরোও উপরে অবতরণ করে। জানালা বেয়ে কেবল সাদা আকাশের রাজ্য। চোখ জুড়িয়ে যায় দৃশ্য দেখলে। ফ্লাইটে সার্ভ করা স্যান্ডউইচ খেয়ে নিলো সমুদ্র। আর মাত্র একঘণ্টা বাকি পৌঁছাতে। সীটের সামনে সেট করে রাখা স্ক্রীনে লোকেশন সো করছে। রুট ওয়াইজ ম্যাপ দেওয়া আছে। ওখানেই দেখা যাচ্ছে আর মাত্র এক ঘণ্টার পথ বাকি। উফ এই প্লেন জার্নি আর ভালো লাগছে না। অনেক বেগে দৌড়ানো প্লেনের স্পীডকেও তার স্লো লাগছে! ডিস্টেন্স তো আর বদলাতে পারবে না তবে বেগ বাড়িয়ে দিক না।

জীবনে চলার পথে কখনো কারো সাথে দূরত্ব বেড়ে গেলে ইফোর্ট দেওয়ার বেগ বাড়াতে হয় তাহলে তৈরিকৃত দূরত্ব পেড়িয়ে কম সময়ে সেই ব্যক্তির মনে পৌঁছানো যায়। আয়নার সাথে তৈরিকৃত ডিস্টেন্স মিটাতে চাইলে স্পীড তো বাড়াতেই হবে।
প্লেন ল্যান্ড করার পর, সে এয়ারপোর্ট থেকে নিজের লাগেজ কালেক্ট করে সীম এক্টিভেট করে নেয়। অফিসের ড্রাইভারকে জানিয়ে রেখেছে। গাড়িতে বসেই আদেশ দিলো মিরপুরের দিকে যাওয়ার।
ড্রাইভার ঘাড় ঘুরিয়ে জিজ্ঞেস করে, স্যার কী বিদেশ থেকে আইসা-ই শ্বশুরবাড়ি যাইতেছেন?”
ড্রাইভারকে আয়নার বাসার এড্রেস চিনিয়ে দেওয়া হয়েছে, জানে মিরপুর যাওয়া মানে স্যারের শ্বশুরবাড়ি৷
ও মুচকি হেসে বলে উঠে, ” হ্যাঁ।”

সমুদ্র বেলা চার’টার দিকে আয়নার বাসায় গেলো। ড্রাইভার কে লাগেজ নিজের বাসায় রেখে আসতে বলে লিফটে করে পাঁচতলা চলে যায়। একবার, দু’বার কলিং বেল বাজিয়েও যখন কেউ দরজা খুললো না সে অবাকই হলো সামান্য। পকেটে থেকে মোবাইল ফোন বের করতেই মা আর শায়লা আন্টির নাম্বার থেকে কল মিসড কল আসার নোটিফিকেশন আসে। ফোন সাইলেন্টে ছিলো জন্য রিসিভ করতে পারেনি৷ এদিকে বেল বাজিয়ে গেলেও, কেউ গেইট না খুললে, সে মাকে কল দিলো সরাসরি। আম্মু জানে সে বাংলাদেশে ফেরত আসছে।
ও’পাশ থেকে সঙ্গে সঙ্গে মিসেস রোদেলা কল রিসিভ করলেন যেন তার ফোন কলের অপেক্ষায় ছিলো। আম্মুর গলার স্বর শুনেই সমুদ্রের কেমন জানি খটকা লাগে৷
ও কল রিসিভ করে বলে, ” আম্মু, আমি একটু আগেই ল্যান্ড করলাম। আয়নার বাসায় এসেছি৷ কেউ গেইট খুলছে না।”
মিসেস রোদেলা বলে, ” ওরা কেউ বাসায় নেই।”

–” তুমি জানলে কীভাবে?”
–” ফাহাদ সাহেব আমার সাথেই আছেন।”
–” তোমরা কোথায় আম্মু? আমাদের বাসায়! আমি আসছি।”
মিসেস রোদেলা কাঠকাঠ গলায় বলে, ” সমুদ্র বাবা, তুই হসপিটালে আয়। যতো দ্রুত পারিস। সময় নষ্ট করিস নাহ। আয় বাবা।”

এরপরে কেঁদে দিলেন উনি। সমুদ্রের যেন মাথা ভোভো করে উঠে। হসপিটালে কেন যেতে বলছে মা? বাসার কারো কোনো কিছু হলো নাকি? বাবা? বাবা ঠিক আছে তো? সে ভাবতে পারে না। লিফটের অপেক্ষায় না থেকে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে যায়। গাড়ি নিয়ে সোজা হসপিটাল পৌঁছে। লবিতে অপেক্ষা করছে মা। সে লবিতে পৌঁছে চোখ গেলো বাসার সবাই ওয়েটিংরুমে বসে আছে। শুধুমাত্র ফাহাদ সাহেব নেই।
সমুদ্র একপা, দু’পা করে এগিয়ে নিজের মায়ের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো। রোদেলা ওকে টেনে বসিয়ে বলতে থাকে, ” আয়না….. ”

সমুদ্র উত্তেজিত হয়ে বলে, ” কি হয়েছে আয়নার? মা, বল? আয়না ঠিক আছে তো? মা প্লিজ বলো কিছু! ”
রোদেলা একপ্রকার কেঁদে ফেলেন, কীভাবে ওতোবড় দুঃখ সংবাদ দিবেন ছেলেকে? ও সহ্য করতে পারবে!
সে নাক টেনে গলা খাকিয়ে বলে, ” আয়নার মিসক্যারেজ হয়ে গেছে। গতকাল ওকে ইমার্জেন্সিতে নেওয়া হয়।তারপর গতকাল সন্ধ্যায় ওকে এইচডিইউ শিফট করেন ডক্টররা। তখন ও ঘুমাচ্ছিলো। জ্ঞান ছিলো না।”
সমুদ্র আর শুনতে পারে না৷ কেবল কানে বেজেই চলে, মিসক্যারেজ শব্দটা। তার আয়না প্রেগন্যান্ট ছিলো? আয়না মা হতে যাচ্ছিলো? সে বাবা হতে যাচ্ছিলো? সমুদ্রের পা আসাড় হয়ে আসে। দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনা। সোফায় ধপ করে বসে পরে। দু’চোখে পানি আপনা-আপনি চলে আসে তার। তার বাচ্চার এই সুন্দর পৃথিবীতে আসার কথা ছিলো অথচ সে কিছুই জানতো না! তার বাবু এখন কোথায়?

শায়লা ওর কাঁধে হাত রেখে বললো, ” ট্রাস্ট মি, সমুদ্র, আয়না নিজেও দুইদিন আগেই টেস্ট করে কনফার্ম হয়েছিলো ও প্রেগন্যান্ট। আমাকে জানাতে বারং করছিল। আমি ওর কথা শুনে কাউকে জানাই নি। আই নেভার থিংক একদিনের ব্যবধানে এতোবড় ক্ষতি হয়ে যাবে।”

সমুদ্রর কাছে সবটা ঝাপসা লাগে তবে সে শায়লা চৌধুরীর উপর চরাও হয়ে বলে, ” ও বারং করেছে বলে আপনি ওর কথা শুনবেন কেন? ও বললেই এতোবড় সেনসিটিভ ইস্যু চেপে যাবেন? কেন আন্টি আগে জানালেন না?”
শায়লা এক প্রকার ক্লান্ত সুরে বলেন, ” আমি সত্যি বুঝতে পারিনি এমন পরিস্থিতি আসবে। সমুদ্র, আমি সত্যি কল্পনাও করিনি এমন কিছু হবে। আমাকে ভুল বুঝো না প্লিজ।”

সমুদ্র ভেজা চোখ জোড়া বন্ধ করে ফেলে। তার বাবা হওয়ার সুখের সংবাদ কানে আসার আগে কেন সেটা দুঃখ সংবাদ হয়ে গেল? কেনো বিধাতা এতোবড় শাস্তি দিলো। তার ছোট্ট ছোট্ট নরম একটা বাচ্চা হওয়ার কথা ছিলো? এতোবড় ট্রমা কীভাবে সহ্য করবে আয়না? ও এমনিতেই নাজুক। নিতে পারবে তো এই কষ্ট? নিজেকে কেমন শূন্য শূন্য লাগে তার। কী জানি খালি খালি লাগে। চোখের পানিও স্তদ্ধ যেনো!
সমুদ্র তার মাকে ঝাঁকিয়ে বলে, ” আয়না কোথায় আম্মু? এতোক্ষণে সেন্স আসার কথা। আমি ওকে এক্ষুনি দেখতে যাচ্ছি। সি নিডস মাই সাপোর্ট রাইট নাও।”

সমুদ্র উঠে দাঁড়ালো এবং যাওয়ার তাড়া করলে রোদেলা ওর হাত ধরে ফেলে বলে, ” ওর অবস্থা দেখলে তুই সহ্য করতে পারবি না। ও ভালো নেই।”
সমুদ্রর কলিজা কেঁপে উঠে। আয়নার কন্ডিশন খুব বাজে? রক্তক্ষরণ বেশি হয়েছে? তাহলে এইচডিইউ তে কেন নিলো? কেমন আছে আয়না এখন?
সমুদ্র বলে, ” কি হয়েছে ওর?”

মিসেস রোদেলা এবারে কাঁদলেন তারপর থেমে থেমে বলে, ” ও মিসক্যারেজ ট্রমাটা নিতে পারিনি। মেন্টালি ট্রমায় ছিলো আগে থেকেই। মিসক্যারেজ এর ধকল সহ্য করতে পারেনি। জ্ঞান ফেরার পর থেকে মেন্টালি সিক হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে আপাতত কাউকে চিনতে পারছে না। নিজের বাবাকেও চিনছে না। খুব এবনর্মাল বিহেভিয়ার করছে৷ ডক্টর দেখছে। ট্রিটমেন্ট শুরু করছেন। ইনভেস্টিগেশন করবেন। তোমার অপেক্ষায় ছিলাম আমরা।”
সমুদ্রর মনে যেন বিশাল বড় কোনো ঝড় আছড়ে পড়ে। সে ঠায় দাঁড়িয়ে একদণ্ড সময় নিলো সবটা মানতে, বুঝতে! এরপর মাথায় হাত রেখে আস্তে করে বলে, ” আয়না…… ”

সে এক সেকেন্ডও অপচয় না করে দৌড়ে লাগায় কেবিনের দিকে। এ হাসপাতালের সব রাস্তা চেনা তার। তবুও ঝাপসা দেখার ফলে পুরা হাসপাতাল অচেনা লাগে। দুনিয়াদারি অপরিচিত লাগে। আচ্ছা খুব আপন কেউ অসুস্থ থাকলে কী দুনিয়া থেমে যায়? তার তো মনে হয় নিশ্বাস ও থমকে গেছে। চার’শ বারো নাম্বার কেবিনে ঢুকতে গিয়ে ভুলে এগারো তে ঢুকে ফের বারো নাম্বার কেবিনে এসে সে চমকে উঠে। চোখের পানি বাঁধ মানে না।
আয়না হসপিটাল বেডে বসে আছে, সাদা পেশেন্ট গাউন পড়া। তবে খুব চিল্লা-পাল্লা করছে। একজন নার্স ওর হাত ধরে আছে, আরেকজন ঔষধ খেতে বলছে৷ কিন্তু ও খাচ্ছে না। বারবার নড়াচড়া করছে৷ হাত দিয়ে সরাচ্ছে। চেচামেচি করছে। ওর চেহারার হাল দেখেই সমুদ্রের জুড়ে হুহু কান্না ভেসে আসে। বুক যখন কাঁদে তখন চোখ রিক্ত শূন্য রয়। চোখের নিচের কালি আর শারীরিক যন্ত্রণার ছাপে ওর চেহারার লাবন্য কোথায় জানি হারিয়ে গেছে। হাতে ক্যানোলার দাগের চিহ্ন।

সমুদ্র সামনে এসে দাড়াতেই ওর অস্থির হওয়ার মাত্রা বেড়ে যায়। আরোও হাইপার হয়ে উঠে। আরোও জোরে চিৎকার করে বলে, ” ও কে? কে এইটা? ওকে যাইতে বলো এখান থেকে।”
সমুদ্র ওর এলোমেলো সুরে বলা কথা শুনে শোকে যেন পাথর হয়ে যায়। আয়না হাত ছাড়িয়ে নিয়ে সমুদ্রের দিকে ঔষধ আনার বক্সটা ছুড়ে ফেলে। বক্সটা এসে সমুদ্রের গায় লাগে। আয়না এমন সিরিয়াস অবস্থাতেও জোরে জোরে নড়াচড়া করে বলে, ” ও যাইতে বলো। এক্ষুনি বের করে দেও।”

ইলেকট্রিক্যাল মন পর্ব ৩৬

নার্স এসে বলে, ” এক্সিউজ মি, আপনি প্লিজ কেবিনের বাইরে যান। পেশেন্ট পরিচিত মানুষ দেখলে বেশি হাইপার হচ্ছে। ওনাকে বেশি উত্তেজিত করলে সব আউট অফ কন্ট্রোল হয়ে পড়বে৷ আপনি যান।”
সমুদ্র আয়নার দিকে তাকালো ও এখনো চেচিয়েই যাচ্ছে৷ সমুদ্র আর সইতে পারলো নাহ!

ইলেকট্রিক্যাল মন পর্ব ৩৮