উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ২৫
আফিয়া আফরোজ আহি
❝রৌদ্রময়ীময় এমন সকাল প্রতিটা দিন আসুক আমার জীবনে। স্বপ্নের ঘোরে মোহের ভিড়ে আমি হাতড়ে খুঁজে বেড়াবো আমার রৌদ্রময়ীকে❞
আদ্র ভাইয়ের বুকে হেলান দিয়ে বসে আছি। উনি দুহাতের উষ্ণ আলিঙ্গনে জড়িয়ে রেখেছে আমায়। বেচারা এখনো বিশ্বাস করতে পারছে না আমি তার সামনে বউ রূপে বসে আছি। এখনো উনি ঘোরের মাঝেই আছেন। অবাক নয়নে তাকিয়ে আছেন। খানিক ক্ষন আগের কথা,
আদ্র ভাই ঘুমের ঘোরে বিড়বিড় করে বলে উঠলো,
“উহু আমি চোখ মেলবো না। তুই আবার ধোয়াশায় মিলিয়ে যাবি। আমায় এই দহনে পুড়িয়ে কি শান্তি পাস বল তো রৌদ্রময়ী?
কোমরে হাত গুঁজে নাকের পাটা ফুলিয়ে সাপের মতো ফোঁস ফোঁস করছি। উনার সাহস তো কম না! উনি আমার নামে উল্টোপাল্টা বলছে। আমি ওনাকে জ্বালাই? রাগী কণ্ঠে শুধালাম,
“আমি তোমাকে জ্বালাই?”
“তা নয়তো কি? সারাদিন জ্বালিয়ে শান্তি হয়না এখন রাতে স্বপ্নে এসেও জ্বালাচ্ছিস”
মনে মনে বললাম,
“দাড়াও আমি দেখাচ্ছি মজা। জ্বালানোর নমুনা হারে হারে টের পাওয়াবো”
কি করবো! কি করবো! আশেপাশে তেমন কিছুই খুঁজে পাচ্ছি না। পাশে টেবিলের ওপর কফির কাপ দেখে মাথায় দুস্টু বুদ্ধি নাড়া দিলো। আলতো করে আদ্র ভাইয়ের হাত নিয়ে চুবিয়ে দিলাম কফির কাপে। আদ্র ভাই মুহূর্তের মধ্যে লাফিয়ে উঠলো।
“ওমাগো জ্বলে গেল, জ্বলে গেল”
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
জিভে কামড় দিলাম। ইসস আমি যে কি করি না! এখন কি করবো? হন্ত দন্ত হয় উনার হাত নিজের হাতের মাঝে নিয়ে দেখতে লাগলাম। জায়গাটা খানিকটা লাল হয়ে গেছে। দৌড়ে ওয়াশরুমে যেয়ে ঠান্ডা পানি এনে হাত চুবিয়ে দিলাম পানিতে। কড়া কণ্ঠে শাসিয়ে বলে উঠলাম,
“হাত উঠাবে না। দাড়াও আমি আসছি”
ছুট লাগলাম নিচে। বরফ দেওয়া লাগবে। নাহয় ফোস্কা পরে যাবে। চট করে নেমে বাটিতে করে বরফ নিয়ে আসতে নিলাম। এমন সময় পিছন থেকে ফুপ্পি ডেকে উঠলো,
“কিরে কি হয়েছে? এভাবেই ছুটছিস কেন? বরফ নিয়ে কোথায় যাচ্ছিস?”
“এখন সময় নেই। এসে বলছি ওয়েট”
দৌড়ে রুমে এলাম। পানি থেকে হাত বের করে বরফ লাগাতে শুরু করলাম। ব্যাকুল কণ্ঠে শুধালাম,
“বেশি জ্বালা করছে?”
আদ্র ভাই কোনো জবাবই দিলোনা। ব্যাক্কেলের মতো চেয়ে আছে আমার দিকে। চোখের পলক ফেলতেও ভুলে গেছে যেন।
“কি হলো কিছু বলছো না কেন? বেশি জ্বালা করছে?”
আদ্র ভাই বরফ, পানির মগ সব পাশের টেবিলে রাখলো। আমি অবাক হয়ে তার কাণ্ড দেখছি।
“কি করছো? এগুলো সরালে কেন? হাতে বরফ না ঘষলে ফোস্কা পরে যাবে তো। পড়ে আরো বেশি জ্বালা করবে”
আদ্র ভাই কোনো জবাব দিলো না। হুট্ করে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। ফিসফিস কণ্ঠে বলল,
“এতো আকুলতা আমার জন্য?”
কথার মানে বুঝতে না পেরে ভ্রু কুঁচকে এলো। উনি কি বোজাতে চাইছেন? শুধালাম,
“মানে?”
“আমার সামান্য কষ্টে তোর এতো আকুলতা? আমি তো ভেবেছিলাম আমার জন্য তোর মনে কোনো আকুলতাই নেই আর না আছে কোনো অনুভূতি”
“কে বলল তোমাকে? তুমি আমার দশটা না, পাঁচটা না একটা মাত্র বর। তোমার জন্য আকুলতা থাকবে না তো কার জন্য থাকবে?”
আদ্র ভাই ভাবুক কণ্ঠে বলল,
“তাও কথা”
“দেখি আঙুলের কি অবস্থা?”
আদ্র ভাই শব্দ করে হেসে দিলো,
“কিছু হয়নি পা*গলী? আঙ্গুল ঠিক আছে”
“তুমি পা*গল হয়েছো। গরম কফিতে হাত চুবিয়েছি আর তুমি বলছো কিছুই হয়নি?”
“কফি ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে। তাই লাগেনি”
“তাহলে আঙ্গুল লাল হয়ে গেল যে”
“হবে হয়তো কোনো কারণে”
“তাও আমি দেখবো”
উনার হাত টেনে নিয়ে সামনে ধরলাম। না ঠিকই আছে। আঙ্গুল লাল হতে দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। মুখ ভার করে জিজ্ঞেস করলাম,
“যদি কিছু নাই হয় তাহলে অমন করলে কেন?”
“তোর রিয়াকশন দেখতে চেয়েছিলাম”
“তুমি জানো আমি কতোটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম?”
“আমার জন্য তোর চোখে ভয় দেখতে পাওয়া আমার পরম সৌভাগ্যের ব্যাপার”
“এভাবে বলছো কেন?”
আদ্র ভাই কথা ঘুরাতে বলল,
“তুই বুঝবি না। বাদ দে”
মাথায় খেলে গেল সে সময়ের কথা। উনি বলছিলো আমি তাকে জ্বালাই।
“আমি তোমাকে জ্বালাই?”
“জ্বালাস না তো কি করিস?”
“ঠিক আছে আমি যেহেতু তোমাকে এতোই জ্বালাই তাহলে আজই বাড়ি চলে যাবো। থাকবো না এখানে। আর না তোমাকে জ্বালাবো”
আদ্র ভাই শব্দ করে হেসে দিলো। নাক টিপে বলল,
“বোকা মেয়ে আমি ইচ্ছে করেই বলছিলাম”
“সত্যি?”
“হ্যাঁ। তোর কি মনে হয় আমি ম*রার মতো পড়ে পড়ে ঘুমাই? তোর এক ডাকেই আমার ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিল। ইচ্ছে করুই তোকে জ্বালাতে এগুলো বলছিলাম। তোর রাগী চেহারা দেখতে ইচ্ছে করছিলো। রাগলে তোকে কেমন লাগে? আর দেখ কাজও হলো। রাগে গাল ফুলিয়ে বসে আছিস”
“যাও তোমার সাথে কথা নেই তুমি শুধু শুধু আমায় রাগও”
আদ্র ভাই হাসলো জবাব দিলো না। আমার মাথার সাথে গাল মিশিয়ে অন্য রকম কণ্ঠে বলল,
“আমায় জ্বালানোর জন্য হলেও সারাজীবন আমার হয়ে রয়ে যা রৌদ্রময়ী। তোকে ছাড়া যে আমি নিঃস্ব। তুই আমার অস্তিত্ব, আমার সত্ত্বা, আমার সব কিছুই তোকে ঘিরে”
আবেগী হয়ে গেলাম। এই আদ্র ভাই এমন এমন কথা বলে মনে হয় কতো জনম ধরে সে আমায় ভালোবাসে। আসলেই কি তাই! দুজন বসে বসে গল্প করছি এমন সময় আরু ডেকে উঠলো,
“ভাবি, ভাইয়া নাস্তা করতে এসো”
জিভে কামড় দিলাম। কফি দিতে এসে প্রেম করতে বসে গেছি। সব এই বজ্জাত আদ্র ভাইয়ের দোষ। আদ্র ভাই মাথায় গাট্টা মেরে বলল,
“সব তোর দোষ। তোর জন্য আমার এখনো ফ্রেশ হওয়াও হয়নি”
“সব আমার দোষ তাই না! ওয়েট”
এগিয়ে যাবো তার আগে উনি ওয়াশরুমে ঢুকে গেল। আর কি পরাজিত সৈনিকের ন্যায় ফিরে এলাম। নিচে নামতেই ফুপ্পি উৎকণ্ঠা হয়ে জিজ্ঞেস করলো
“সে সময় বরফ নিয়ে ছুটলি কার কি হয়েছে?”
“আর বলো না তোমার ছেলে আমাকে ভয় দেখিয়েছে। আমি ভেবেছি সত্যি সত্যি হাত পুড়ে গেছে এখন দেখি সব ঢং”
আমার বলার ধরনে ফুপ্পি, ফুফু, আরু তিনজনই হেসে দিলো। ফুপ্পি হাসতে হাসতে বলল,
“হয়েছে এখন তুই খেতে আয়”
ফুপ্পির কথায় সায় জানিয়ে টেবিলে বসে পড়লাম। একটু পড়ে আদ্র ভাই এসে খেতে বসে পড়লো। উনি বসেছে আমার সোজা সুজি চেয়ারে। খাওয়ার মাঝে পায়ে কারো স্পর্শ পেয়ে শিউরে উঠলাম। ভালো করে খেয়াল করে দেখি আদ্র সাহেব খাচ্ছে আর মুচকি মুচকি হাসছে। নিশ্চয়ই এই বজ্জাত টার কাজ। ইচ্ছে করে আমায় জ্বালাচ্ছে। উনি খাচ্ছে কম আমায় জ্বালাচ্ছে বেশি। পড়ে বলবে আমি সারাদিন তাকে জ্বালাই। যতো দোষ সব আমার! রক্তিম চোখে চেয়ে আছি আদ্র ভাইয়ের দিকে। উনার ভাব ভঙ্গি একদম স্বাভাবিক। পাত্তাও দিলো না আমার চোখ রাঙানোকে। হাহ করে উড়িয়ে দিলো। দাঁতে দাঁত চেপে খাওয়া শেষ করলাম। খাওয়া শেষ করে আদ্র ভাই চলে গেল রেডি হতে আমি ফুপ্পির সাথে কিচেনে। উনি কয়েকবার ডেকেছিল কিন্তু যাইনি। যাবোই বা কি করতে বজ্জাত লোকটার অত্যাচার সহ্য করতে? আগের আদ্র ভাই ভালো ছিল। ভদ্র, সভ্য। আর এখন? দিন দিন বেলাজের খাতায় নাম লিখাচ্ছে।
ফুপ্পির সাথে রান্না ঘরে আর আরুর সাথে গল্প করে কেটে গেল অর্ধেক বেলা। দুপুরের খাবার খেয়ে ফুপ্পি ঘুমিয়েছে। আরু গেছে পড়তে। একা একা কি করবো কিছুই ভালো লাগছে না। ফুপ্পিদের বাড়িতে এই এক জ্বালা কথা বলা বা গল্প করার জন্য কেউ নেই। কোনো কিছু খুঁজে না পেয়ে কতক্ষন ফোন ঘাটলাম। তাও সময় যেন কাটছেই না। ধীর গতিতে চলছে। ভাবলাম আদ্র ভাইয়ের রুম থেকে উপন্যাসের বই এনে পড়বো। ওনার কাছে বিভিন্ন রকমের বই থাকে। যেই ভাবা সেই কাজ। ঘরে ঢুকে এগিয়ে গেলাম টেবিলের দিকে। টেবিলের পাশেই বুক সেল্ফ। টেবিলটা কিছুটা এলোমেলো। মিনিট দুয়ের মাঝে টেবিল গুছিয়ে ফেললাম। ঘুরে ঘুরে বই দেখছি। হঠাৎ চোখ আটকালো রঙিন একটা ডায়েরিতে। হাত বাড়িয়ে ডায়েরি খানা নিলাম। খুলতেই চোখের সামনে ভেসে উঠলো গোটা গোটা অক্ষরে লেখা,
❝আমার রৌদ্রময়ী❞
রৌদ্রময়ী নামটা দেখে ভ্রু কুঁচকে এলো। এই নামে তো সকাল বেলায় আদ্র ভাই আমায় সম্মোধন করলেন। কি লেখা আছে ডায়েরিতে? প্রথম পৃষ্ঠা খুলতেই নজরে এলো,
❝সব সময় মেয়েদের এরিয়া চলা আমিটার হুট্ করেই এক অসুখ হলো। যেন তেন অসুখ নয় ভয়ংকর রকমের অসুখ। কাউকে তীব্র ভাবে দেখার অসুখ। তাকে নিজের করে পাওয়ার অসুখ। তার মুখ খানা ভেসে ওঠে কল্পনার। তার অশ্রুসিক্ত আঁখি আমায় ঘুমাতে দেয় না। তার চোখের জল আমায় জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলে প্রতিনিয়ত। তার মায়া আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে রেখেছে আমায়। আমি পারছি না তার মায়া কাটিয়ে বেরিয়ে আসতে। সে যে শুভ্রপরী। এতোই কি সহজ তার ওই মায়াবী মুখ্ খানার ভয়ংকর মায়া কাটানো? এখন তাকে ছাড়া কিছুই ভালো লাগে না। ঘুমোতে গেলে তার মায়াবী মুখ খানা ভেসে ওঠে, খেতে বসলে তার খিল খিল হাসি ঝর্ণার ন্যায় কানে বাজে, পড়তে বসলে তার অদ্ভুত কাণ্ড সব মনে পড়ে। এ কি এক ভয়ানক অসুখ। না পারছি সইতে আর না পারছি কাউকে কিছু বলতে। এই অসুখের নাম কি দেব আমি?❞
পরের পাতায় লেখা,
❝এতো দিনে আমি বুঝে গেছি সকল রমণীদের ভিড়ে আমি আটকে গিয়েছি এক চঞ্চল কিশোরীতে। যাকে ছাড়া আমার চলবে না। সে আমায় প্ৰিয় অসুখ। অবশেষে অসুখের নাম দিয়েই দিলাম,
❝রৌদ্রময়ী❞
রৌদ্রময়ী নামক অসুখ আমায় কাবু করেছে। তাও আবার যেমন তেমন ভাবে না? একদম মরণ ফাঁদের ন্যায়। মরণ ছাড়া এই অসুখ আমার পিছু ছাড়বে না❞
❝তাকে দেখার বিরহে হৃদয় পোড়ে,
তার চোখে অশ্রু এলে হৃদয় জ্বলে,
তার খিল খিল হাসিতে হিয়ার মাঝে ঝর্ণা দোলে
সে যে অন্য কেউ নয় আমার রৌদ্রময়ী, আমার ভালোবাসা❞
❝তার চোখ ছিল গভীর সমুদ্র
যার অতলে আমি ডুব দিয়েছি,
তার চোখে ছিলো মধ্যাকর্ষণ
যা প্রতিনিয়ত আমায় চুম্বকের ন্যায় টেনে নিচ্ছে,
তার চোখে ছিল ভীষন মায়া
যেথায় আমি রোজ হারিয়ে যাচ্ছি,
পুরো একটা উপন্যাসও কম পরে যাবে
আমার রৌদ্রময়ীর চোখের বর্ণনায়❞
এমন আরো কতো শত লেখা। যতো পড়ছি ততই যেন আমি ঘোরের মাঝে ডুবে যাচ্ছি। আদ্র ভাই এতো ভালোবাসেন আমায়? তবে কেন বললেন না?
শেষের দিকে কয়েক পৃষ্ঠায় লেখা,
❝কোটি মানুষের ভিড়ের মাঝে পেয়েছি তোমায় খুঁজে, এই অনুভূতি বোঝানোর নয়, হৃদয় দিয়ে নিও বুঝে! তবে যদি বা নাই বুঝো তবুও ক্ষতি নেই, ভালোবেসে যাবো একতরফা।
তুমিই ছিলে আমার জীবনের শেষ কবিতা। তোমার স্মৃতি বুকে নিয়ে আমার এ জীবন কাটিয়ে দেবো, তুমি হয়তো আমার একতরফা ভালোবাসা কখনো বুঝবে না❞
❝সে আজও জানে না যে তার মুখখানা সর্বক্ষণ আমার চোখের সামনে ভাসে। সে এখনও জানে না যে তাকে একটিবার দেখার জন্য আমার মন কতটা ছটফট করে, আমার একতরফা ভালোবাসা তার কাছে কখনো প্রকাশ করতে পারিনি, তাই সে এখনো আমার মনের অবস্থা থেকে অজ্ঞাত। সে হয়তো কখনোই জানবে না। কতোটা নিঃস্বার্থ ভাবে তাকে চাওয়া হয়েছিলো। তবুও সে আমার হবে না❞
❝ভেঙে-চুরে আত্মপ্রকাশে একটা ভয় থাকে, অজানা ভয়! ওই ভয়ের সাথে থাকে অনেকটা আবেগ মেশানো থাকে যে আবেগটা সবাই বোঝে না! ঝাঁঝালো ঝংকার মতো কিছু অব্যক্ত সুর থাকে যে সুরে বক্ষঃস্থলে ক্ষত সৃষ্টি হয়!
সেই ঝাঁঝালো সুরের ব্যাখ্যাটা কেউ বোঝে না!
মরীচিকার মত কিছু দুষেরতা থাকে অন্তর চোখে যা রঙিন গন্ধ ছড়ায়!
কিন্তু সত্যিকার অর্থে তা ধু ধু বহন করে!!
এটা ইচ্ছাই করা ভুল নাকি ওই কিঞ্চিৎ আবেগের সরলতা!!
তা আমি জানিনা,
শুধু জানি এমন বহু আতঙ্ক গ্রাসিত অসংখ্য অনুভূতি যা চাইলেও আর আগের জায়গায় ফিরিয়ে যেতে পারে না??
তবু দেখানো হাসিমুখে বেঁচে থাকতে হয় বোঝাতে হয় ভালো আছি❞
❝বুকের মধ্যে লুকানো অনুভূতি আর সৃষ্ট ভালোবাসাই জানে কতটা ভালবাসি আমি আমার শুভ্র পরীকে, তার হাসি ওই মায়াবি চেহারা দেখলে আমি এমন হাজারো কষ্ট সয়ে যেতে পারি নিমিষেই
তবুও দিনশেষে সে ভালো থাকুক❞
❝তোমার নাম আমি জলে ডুবিয়ে দিয়েছি বহু আগেই। কিন্তু তবুও হৃদয় গহীনে কোথাও না কোথাও একটুখানি তুমি রয়ে গিয়েছো আমার পুরোটা জুড়েই❞
❝যে যার মত করে বদলে যাচ্ছে শুধু দেখছি আর ভাবছি মানুষ চাইলে সব পারে। তাহলে আমি কেনো পারছি না আপনার মায়া কাটিয়ে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে আসতে?
বোধহয় আমার ধ্বংস আপনি আপনার নিজ হাতে করে নিয়ে এসেছেন এই ধরিণীতে
কতটা ভয়ঙ্কর আর সাংঘাতিক আপনার মায়া রৌদ্রময়ী❞
উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ২৪
শেষ পৃষ্ঠায় লেখা,
❝অবশেষে সে কখনোই জানতে পারবে না কতোটা আকুলতা, বিষন্নতা আর হাহাকার নিয়ে ছেড়ে এসেছি তার শহর❞
শেষ পৃষ্ঠা পরে কান্না পেল। সব কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে। আদ্র ভাই আমাকে এতটা ভালোবাসতেন? তাহলে কেন বলেননি? নিজের ভালোবাসার মানুষটার চোখে অন্য কারো জন্য আবেগ, অনুভূতি, ভালোবাসা দেখা যে কতোটা কষ্টকর তা আমার চেয়ে ভালো কেউ জানে না। নিজের ভালোবাসার মানুষের পাশে কাউকে দেখা বড্ড কষ্টের। আমি ভেবে পাচ্ছি না আদ্র ভাই কতোটা কষ্ট সহ্য করেছে। কতোটা আকুলতা, হাহাকার মিশানো একেকটা কথা। মানুষটা যে অনেক কষ্ট সহ্য করছে তা ভেবেই কান্না পাচ্ছে।