এক বিন্দু ভালোবাসা দাও পর্ব ২০

এক বিন্দু ভালোবাসা দাও পর্ব ২০
আদ্রিতা জান্নাত অরিন

বাড়ির দরজার সামনের দিকে তাকিয়ে হাসতে থাকে আর পুরানো সৃতি মনে করে শরীরের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে। মামা মানে জাফর সাহেব এসেছে দেখে বাড়ির প্রতৈকে তার সাথে দেখা করতে যায়। নাবিলা বেগম খুশিতে তার ভাইকে জড়িয়ে ধরে আর বলে –
“- জাফর ভাই তুমি এসেছো? এতোদিন পর তোমার আসার সময় হয়েছে।
জাফর সাহেব এতোখন চৌধুরী বাড়ির দেখতে বিজি ছিলো কারণ অনেক দিন পর সে এই বাড়ি আবার দেখছে। তবে নাবিলা বেগমের জড়িয়ে ধরা দেখে সে হাসি মুখে নিজের ছোট বোনকে জড়িয়ে ধরে আর বলে –

“- কি করবো বল নাবিলা একটা জরুরি কাজে বিদেশে বেশ অনেক দিন অবস্থান করতে হয়েছে। তবে এখন যখন চলে এসেছি তখন কোনো সমস্যা নাই তোর ভাই সব ঠিক করে দিবে।
সবার সাথে জাফর সাহেব বেশ ভালো করে কথা বলতে থাকে এরপর তার চোখ যায় সিঁড়ির কিনারে দাঁড়িয়ে থাকা নোটনের দিকে। নোটন বেশ হাসি মুখে তাকে দেখছে তার উপস্থিতিতে নোটনের মনে কোনো ভয় বা চিন্তার ছাপ নাই। নোটনকে দেখে জাফর সাহেব একটা সয়তানি হাসি দিয়ে এগিয়ে যায় আর বলে –
“- আরে নোটন সমুদ্রের বউ আর এই সম্পত্তির বর্তমান মালিক যে। কি অবস্থা তোমার নোটন? নিজের স্বামীর মামা এসেছে তার সাথে কি পরিচয় হবে না। বাড়িতে বয়স্ক লোক আসলে বা আত্মীয় আসলে তাকে সালাম করতে হয় সেটা কি তুমি যানো না নোটন?

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

জাফর সাহেবের কথা শুনে নোটন নিজের হাত বন্ধ করে রাগ নিয়ন্ত্রণ করে এরপর নিচে ঝুঁকে তার পায়ে সালাম করে। জাফর সাহেব একটা হাসি দেয় সেটা তার বিজয়ের হাসি কারণ সে নোটনকে তার সামনে নিচে ঝুঁকতে বাধ্য করেছে। তবে নোটন এখনো সাধারণ ব্যবহার করছে সে সালাম করে হাসি মুখে বলে –
“- অবশ্যই মামা বাড়ির সব হিসাবে মামা শশুড়কে সম্মান করা কর্তব্য আমার। আচ্ছা মামা বলেন কি খাবেন আপনি? এই নোটনের রান্নার হাত কিন্তু খুব ভালো একদম দারুণ.
নোটনের এমন সাধারণ ব্যবহার যদি ও জাফর চৌধুরী আশা করে নাই তবুও সে হাসি মুখে বলে –
“- না নোটন তার দরকার নাই। দেখা যাবে তুমি আমাকে খাবারের জায়গায় বিষ মিশিয়ে দিবে। বলা যায় সা যে চুরি করে সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিতে পারে সে বিষ ও মিশাতে পারে.
“- মামা এই নোটন কখনো পিছন থেকে কারো পিঠে ছুরি বসায় না। যদি তার কাউকে খুন করার ইচ্ছা থাকে তাহলে তার সামনে দাঁড়িয়ে খুন করার সাহস নোটনের আছে। সো এতো ভয় করবেন না আমাকে আপনি বসুন আমি কফি করে নিয়ে আসছি “।

নোটন কথাটা বলে মুখে হাসি বজায় রাখে এরপর ভদ্র মেয়ের মতো রান্না ঘরে চলে যায়। নাবিলা বেগম নোটনের এমন ব্যবহার দেখে খুশি হয়ে যায় ফাইনালি নোটন তার ভাইয়ের কথায় উঠবে আর বসবে। তবে পাশে অবস্থান করা সমুদ্রের মুখে একটা চিন্তার ছাপ নোটনের এমন ব্যবহার সে আশা করে নাই। কারণ নোটন যখন চুপ থাকে তখন সে ভয়ংকর কোনো পরিকল্পনা করে রাখে মনে মনে। যেমন ঝড় আসার পূর্বে পরিবেশ শান্ত থাকে তেমন।
নোটন যখন রান্না ঘরে গিয়ে কফি করার জন্য গ্যাস অন করে তখন সমুদ্র সেখানে যায়। সমুদ্রেকে রান্না করে হঠাৎ করে আসতে দেখে নোটন জিজ্ঞেস করে –

“- আরে সমুদ্র আপনি এখানে? আপনার মামা এসেছে তার সাথে কথা বলুন গিয়ে কতো কতো পরিকল্পনা আছে সেইসব করতে হবে আপনার। না হলে আমার সাথে মিথ্যা ভালোবাসার নাটক কি করে করবেন?
নোটন কথাটা খোঁজা দিয়ে বলেছে সেটা সমুদ্র বেশ ভালো বুঝতে পারে তবে সে কোনো রিয়েকশন দেয় না। বরং নোটনকে অবাক করে তার হাত ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে আর বলে –
“- নোটন কি চলছে আপনার মনে? মামার সাথে আপনার শএুতা রয়েছে সেটা আমি জানি। তবুও মামার সাথে এতো সুন্দর অভিনয় কোনো করছেন আপনি নোটন?এতো সহজে নিজের প্রতিশোধ ভুলে যাওয়ার মতো মেয়ে আপনি না?
সমুদ্রের কথা শুনে নোটন বলে –

“- সমুদ্র আপনি ষড়যন্ত্র না বুঝতে পারলে ও নিজের বউয়ের মন বেশ সুন্দর বুঝতে শিখে গেছেন বেশ ভালো। তবে একটা কথা কি যানেন নোটনের মাথায় কি চলে সেটা নোটন ছাড়া আর কেউ যানে না। সো মাথায় এতো প্রেশার না দিয়ে যার মামার সাথে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলেন।
নোটন কথাটা বলে নিজের হাত ছাড়িয়ে রান্না করার উপর মনোযোগ দেয় সমুদ্র কিছুখন নোটনকে ভালো করে দেখে। তার মনের সন্দেহ আরো প্রবল হয় যে নোটনের মনের মধ্যে কিছু অবশ্যই চলছে। সমুদ্র রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে যায় সেটা দেখে নোটন বলে –
“- সমুদ্র আপনার সন্দেহ ভুল নয় মামার সাথে যা শএুতা আছে সেটা কখনো ভুলে যেতে পারব না আমি। নিজের মা আর বোনের সেই দিনের কান্না কোনো কিছু ভুলে যায় নাই আমি। সময় হলে সব ফিরিয়ে দিবো শুরু অপেক্ষা করুন “।

এক বিন্দু ভালোবাসা দাও পর্ব ১৯

নোটন কথাটা বলে কফি করে সবার জন্য নিয়ে যায় এরপর মামা কফি নিয়ে খেতে থাকে। সত্যি নোটনের হাতে জাদৃ আছে কফি দারুণ হয়েছে। মামা বলে –
‘- নোটন সত্যি তুমি দারুণ রাধুনিঁ। এতো মজার কফি আগে কখনো খায় নাই আমি “।
“- মামা কফি যেমন নোটন ভালো বানাতে পরে ঠিক তেমন মানুষকে ও পারে। আর নোটনের কফি কোনো নোটনকে ও আপনি আগে কখনো দেখেন নাই “।

এক বিন্দু ভালোবাসা দাও পর্ব ২১