এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ৩৭

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ৩৭
Chadny islam

রাতের অতিরিক্ত ঠান্ডা আবহাওয়াই খুব করে জানান দিচ্ছে শীত অতি নিকটে!তবে দুপুরের এই কাট ফাটা রোদ যেনো বলছে সামনেই চৈএমাস! দীর্ঘ সময় নির্বাচন এর ভাষন দেয়ার ফলে অতিরিক্ত গরমে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছে আদিল!আদিল ওয়াশরুমে গিয়ে হালকা ফ্রেশ হয়ে নিলো!পাশের রুমে নির্বাচন এর কাজের জন্য অনেক লোক এসেছে! আশরাফ সিকদার তাদের কে সময় দিচ্ছেন কথা বলছেন।
সেই ফাকে আদিল কল করলো কলির নাম্বারে! কলি এক্সাম শেষ করে নিশ্চয় এই সময়ে বাড়িতে ফিরেছে।
আদিল সে দিন তো অতিরিক্ত রাগে ইরার ফোন টা ভেঙে গরিয়ে দিয়ে ছিলো। নতুন ফোন কিনে দিবে ঠিক আছে কিন্তু পুরাতন সেই সিম টা আর দিবে না ইরা কে! কলি কল রিসিভ করতেই আদিল বললো!

____কলি ফোনটা তোর ভাবীর কাছে দে।
কলি ফোনটা রিসিভ করে বললো!!
____আচ্ছা ভাইয়া! আমি ভাবীর কাছে ফোন টা নিয়ে যাচ্ছি ! তুমি একটু অপেক্ষা করো!
কলি অতিদ্রুত ফোন টা নিয়ে গেলো ইরার কাছে!রুমের দরজার খোলা থাকাই কলি রুমে ডুকে পরলো! ইরা কেবল সাওয়ার শেষ করে ওয়াশরুম থেকে বের হয়েছে।তখনি কলি ফোনটা ইরা কে দিয়ে জানায় ভাইয়া কথা বলতে চাই। বলেই কলি রুম থেকে বেরিয়ে গেলো! ইরা বেশ কিছু টা সংকোচ নিয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে কানে দরতেই! আদিল বলে উঠলো!!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

_____কি করছো বউ??
“””কিছু না! আপনি?
“””তোমাকে মিস করছিলাম,!
“”এই অসময়ে মিস কেনো করছেন?
“”””মিস করার জন্য কি সময়ের প্রয়োজন হয়!
“””জানি না!
ইরা কে লজ্জা পেতে দেখে! আদিল অল্প হেসে এক বুক ভালোবাসা নিয়ে বললো!!
___আই লাভ ইউ বউ!
ইরা লাজুক হেসে বলল!!

___চুপ করুন বেহায়া লোক! কেউ শুনলে কি মনে করবে!
“””আমার বউ কে আমি ১০০ বার লাভ ইউ বলবো ১৫০ বার মিস ইউ বলবো!তাতে কে কি মনে করলো আমার দেখার বিষয় না।আই লাভ ইউ বউ!
“”হুম!
“”এত বার লাভ ইউ বলার পর শুধু হুম! বউ অতিরিক্ত আনরোমান্টিক হলে যা হয় আর কি!
“””আপনি আনরোমান্টিক!
“”তুমি আনরোমান্টিক!
“””আপনার ১৪ গোষ্ঠী আনরোমান্টিক!
“”ওকে!
“””কি ওকে।

“””রাতে বাসায় আসি তারপর না হয় দেখবো কে বেশি আনরোমান্টিক!
“””না একদম না।
“””বাসায় আসবো না।
“””হুম! একটু আসবেন!
“”বাড়িতে কি আর একটু আসা যাই বউ!আসলে তো পুরো টাই আসতে হবে।
“”এখন রাখি!
“”এই এই প্রেত্নী বউ কল কাটবা না!
‘”আপনি প্রত্নী!
“””ছেলেরা প্রত্নী নয় না বউ!
“ছি!আপনি কি বাজে মহিলা দের মতোন ঝগড়া করেন!
“তার মানে তুমি কি বলতে চাইছো ঝগড়া শুধু মেয়ে রাই করে!
“হ্যা আপনি এইটাও জানেন না!
“”কি..??

ইরা যেনো কথাটা মুখ ফসকে বলে দিলো! কি বললো মনে পরতেই ইরা ধপাস করে ফোন টা কেটে দিলো। আদিল মনের অজান্তেই এক রাশ প্রান উজ্জ্বল হাসি হেসে নিলো। হাতে ফোনে টাইপিং করে লিখলো!!
____তুমি আছো বলেই জীবনটা এত রঙিনময়! তোমাকে ছোঁয়ার প্রতিটি মূহুর্তেই হোক আনন্দময়।
ইকবাল খান সহ রোশান বড় এক গাড়ি করে চলে আসে সমাবেশে। আশে পাশে বডিগার্ড রা থাকায় সিকদার বাড়ির লোকে দের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বডিগার্ড রা কাউকে ভেতরে ডুকতে এ্যালাউ করে না। যে পর্যন্ত ভেতর থেকে কোনো রকম পারমিশন না আসে। রোশান গাড়ি রেখে বের হয়ে আসলো! সামনে বড় রুমের দিকে যাবে বলে! সামনে থাকা বডিগার্ড রা রোশান কে আটকাতে চাইলে রোশান এক ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে বলে!!

___হাত টা নোংরা করতে চাইছি না বলে ছেড়ে দিলাম!
বলেই রোশান ভেতরের দিকে এগিয়ে যেতে চাইলে আশেপাশের সমস্ত বডিগার্ড রা এগিয়ে আসে রোশান কে আটকাতে। রোশান এর শান্ত মস্তিষ্ক টা নিমিষেই রক্তীম বর্ণের অগ্নি মূর্তি ধারন করে পকেট গুজে রাখা রিবোলবার টা বের করবে তার আগেই ইকবাল খান বলে উঠেলেন!!
____বেডা রিলাক্স হও! আমার এখন হাজার হাজার জনগণের সম্মুখে দাড়িয়ে আছি!
রোশান এর ভয়ংকর রাগি ভাব টা ইকবাল খান এর একটি কথায় থপাস করে থেমে গেলো। ইকবাল খান রোশান কে বললো!!

_____আমি আমাদের ভেতরে যাওয়ার ব্যবস্থা করছি বেডা ওয়েট করো একটু।
ইকবাল খান হাতে ফোন টা নিয়ে কল করলো পুলিশ কমিশনার কে। সাথে সাথে আবদুল মামুন এসে হাজির হলো রোশান এর সামনে। ইকবাল খান আবদুল মামুন কে উদ্দেশ্য করে বললো!!
_____ভেতরে যাওয়ার ব্যবস্থা করো!
আবদুল মামুন সম্মতি জানিয়ে বললো! ___আমি বিষয় টা দেখছি! আমাকে একটু সময় দেন।
আবদুল মামুন সাথে সাথে কল করলো আদিল কে! দুই একবার রিং হওয়ার পর আদিল কল টা রিসিভ করতেই আবদুল মামুন বড় করে সালাম জানিয়ে বললো!!
_____স্যার আপনাদের বিরোধী দলের সবাই চলে এসেছে। এখন ভেতরে প্রবেশ করতে চাইছে কিন্তু আপনার চামচা মার্কা বডিগার্ড রা ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না! এখন কি করবো!
আদিল খিপ্ত মেজাজ দেখিয়ে বললো!!

____হাউ ডেয়ার ইউ! তুমি কাকে চেমচা বলছো! মাইন্ড ইউ লাঙ্গগোয়োজ! সি ইস মাই বডিগার্ড!
আবদুল মামুন বলল!!
____স্যার বাংলা ভাষায় তাদের কে চামচাই বলে!ভেতরে আসতে বলবো নাকি??
“”হুম আসতে বলো! নেক্সট টাইম তুমি যদি আমাকে একবার কল করো তাহলে তোমার চাকরি আমি নট করে দিবো ফাজিল!
আবদুল মামুন কিছু বলবে তার আগেই আদিল মুখের উপর ফোন টা কেটে দিলো। মামুন বডিগার্ড দের উদ্দেশ্য বললো!!

____ভেতরে যাওয়ার পারমিশন উপর মহল থেকে আনা হয়েছে। এখন কি নাটক সিনেমা দেখবা নাকি ভেতরে প্রবেশ করতে দিবা।
আবদুল মামুন এর বলা প্রতিটি কথা গায়ে লাগার মতোন ছিলো। পরে সব বডিগার্ড রা মিলে সরে গিয়ে রাস্তা করে দিলো ইকবাল খান এবং তার ছেলে রোশান কে!!
ইকবাল খান রুমের ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখতে পেলো ঈশান কে। তিনি কোনো রকম ইশান কে ইগনোর করে গিয়ে বসলেন চেয়ারে রোশান বিষয় টা ইগনোর করতে পারলো না। বরং হাত মিলালো ঈশান এর সাথে। রোশান অল্প হেসে বললো!!
____দিস ইস নট্ ফেয়ার বয়!তুমি কি করে খান বাড়িতে ছক্কা মারলে। পুরোই এক ডিলে তিন পাখি মেরে দিলে।ওপস পুরাই জোস!
ঈশান বেশ কিছু টা অবাক হয়ে বললো!!!

____বোনের সৎ ভাই হয়েও এত সুন্দর করে ক্রেডিট দেয়ার জন্য ধন্যবাদ বড় ভাই!!
__অবশ্যই! ক্রেডিট তো দেয়াই লাগতো। আরও আগে দেখা হলে তখনি দিয়ে দিতাম। বাই দ্যা ওয়ে আমার নাম টা তোমাকে মনে করিয়ে দিতে আসলাম! মাফিয়া কিং ইয়ান রোশান নাম টা আন্ডার লাইন করে রাখো কাজে লাগবে।
___অবশ্যই! কেনো নয়। বড় ভাই বলে কথা নাম টা তো মনে রাখতেই হবে। যাই হোক পরিচিত হয়ে ভালো লাগলো! আপনি ও আপনার ছোট বোন জামাই এর নাম টা ভালো করে মনে রাখবেন বড় ভাই! আমার নাম ঈশান শেখ।শেখ পরিবারের এক মাএ ছেলে।শেখ ইন্ডাস্ট্রির এক মাএ মালিক। ছক্কা মনে হয় আমি না ভাই জান আপনার বোন মেরেছে।
রোশান অল্প হেসে গিয়ে বসলো চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে! ইকবাল খান এবং আশরাফ সিকদার বেশ অনেক আগে থেকেই পূর্ব পরিচিত। ইকবাল খান এবং আশরাফ সিকদার নিজেদের মাঝে কথা বলতে বিজি তখন রোশান অল্প হেসে আদিল কে বলল!!!

_____আজ বাদে কাল! কাল বাদে পরশু নির্বাচন তাই শুভেচ্ছা জানাতে সোজা চলে আসলাম!
আদিল কিনচিত হেসে বললো ‌‌!!
____শএু যখন বন্ধুত্ব করতে আসে! তখন বিষয় টা খুবি ইন্টারেস্টিং লাগে।
“””আমি বন্ধুত্ব করতে নয়! বরং শুভেচ্ছা জানাতে এসেছি।ইয়ান রোশান এর এত টাও বাজে দিন আসে নি যে শএুর সাথে বন্ধুত্ব করতে হবে।
“””বাজে দিন এর থেকে ও বেশি বাজে দিন সামনে অপেক্ষা করছে আপনার জন্য রোশান খান। জাষ্ট ওয়েট আনন্ড ওয়াচ!
রোশান অল্প হেসে ভয়ংকর আওয়াজ তুলে বললো!!
____আমার বাজে দিন দেখতে হলে তো আপনাকে ও নিজের আসল রুপে ফিরতে হবে কিং ওফ মাফিয়া আদিল সিকদার!

“””আস্তে কথা বলোন রোশান খান দেয়ালের ও কান আছে! নয়তো আপনি ও ফেঁসে যেতে পারেন!
আর কত দিন এইভাবে সবার চোখে দুলো দিয়ে পালাবেন! দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে কিন্তু পেছন ফিরে তাকানোর সুযোগ টাও আপনি পাবেন না।
আদিল সিকদার ওত কাঁচা কাজ করে না রোশান খান। এমপি হওয়ার খুশিতে দয়া করে স্ট্রং করবেন না। তাহলে এক বুক হতাশা নিয়ে মরে যেতে চাইবেন। আমি আবার এত আগে আপনার জানাজা পরতে পারবো না।
“””চিন্তা করবেন না! এক সাথে বাঁচতে পারলে মরতেও পারবো! আমাদের বন্ধুত্ব না হোক শএুতা হোক অনন্ত দেখার মতোন হোক।
“””অবশ্যই কেনো নয়।আদিল সিকদার আবার কাউকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেয় না।
রোশান হাত বাড়িয়ে হাত মিলিয়ে বললো!!

____এমপি আদিল সিকদার হওয়ার অপেক্ষায় রইলাম! শুভ কামনা!
কথা শেষ করে ইকবাল খান এবং রোশান বেরিয়ে গেলো রুম থেকে। বাইরে বেরিয়ে দেখলো আবদুল মামুন নিজে দের কাজ করছে! জন সমাবেশের এর চারপাশে পুলিশ প্রশাসন প্রখরতার সাথে নিজেদের কাজ করছেন। ইকবাল খান আবদুল মামুন কে ডেকে বললেন!!
_____ধন্যবাদ তোমাকে বাবা! আমাদের কে সাহায্য করার জন্য!
আবদুল মামুন অল্প হেসে প্রতিউওর করে বললো!!
____আপনাদের কে সাহায্য করা তো আমাদের দায়িত্ব! আপনাদের মতোন প্রভাবশালী লোক যেখানে এক সেকেন্ড টাইম নিবে না অন্যের গায়ে হাত তুলতে সেখানে তো অন্যদের কে বাঁচাতে ঝামেলা মুক্ত রাখতে আপনাদের সাহায্য করতেই হতো!
“””নতুন কমিশনার হয়েও তোমার চিন্তা ভাবনা সুন্দর!
“””ধন্যবাদ!

রাত ৮ টা…..
ইরার পড়ার টেবিলে পড়তে বসেছে!পড়তে পড়তে বইরের পাতা উল্টে গিয়ে দেখলো সাজিদ জুথী এবং ইরার নাম। একটা সময় সবথেকে ভালো বন্ধুত্ব ছিলো তাদের! কিন্তু হালকা সময়ের ব্যাবধানে বন্ধুত্বের খুঁটি টা নরবরে হয়ে গেছে।জুথীর সাথে মাঝে মাঝে দেখা হলেও সাজিদ এর সাথে দেখা হয় না বেশ অনেক দিন দরে।ইরা স্কুল কলেজের প্রতিটি মূহুর্ত কে বেশ মিস করে! এখন তো তার মনে হয় বিয়ে মানেই বন্দী জীবন! নিজের না আছে কোনো স্বাধীনতা আর না আছে কোনো ভালোবাসা!ইরার নিজের ভাবনার মাঝেই সবাই কে বড্ড মিস করে ঝরঝর করে কেঁদে ওঠে।হয়তো সামনে ইন্টার ফাইনাল এক্সামে সবার সাথে দেখা হবে।

তখনি দরজায় কড়া পরতেই ইরা বাইরে দিকে তাকাই! তাকাতেই দেখে কলি এবং অহনা সিকদার তার রুমে প্রবেশ করছে!ইরা তাদের কে থেকে বইটা বন্ধ করে টেবিল ছেড়ে ওঠে গেলো৷ অহনা সিকদার ইরা কে নিয়ে বিছানায় বসলো!অহনা সিকদার এর হাতে বেশ কয়েক টা প্যাকেট। অহনা সিকদার প্যাকট খুলে বের করলো স্বর্ণের চুরি আর পায়েল! তিনি বেশ কয়েক বার লখ্য করে দেখেছেন ইরার হাত পা খালি। তাই অহনা সিকদার কলি কে সাথে নিয়ে শপিংমলে গিয়ে ছিলেন। অহনা সিকদার ইরার হাতে চুরি দুটো পরিয়ে দিয়ে বললেন!!

____বিয়ের পর হাত ফাঁকা করে রাখতে নেই! মেয়েদের সৌন্দর্য প্রকাশ পাই হাতে চুরি আর গলার চেনে।
ইরার কপালে আলতো করে একটা চুমু খেয়ে অহনা সিকদার বললেন!!
____আমার কোনো মেয়ে নেই!তুমি আমার ছেলের বউ মানে আমার মেয়ে! যদি কখনো কোনো সমস্যা হয় তাহলে তুমি সবার প্রথমে আমাকে জানানোর চেষ্টা করবা।
আচ্ছা আম্মু!
অহনা সিকদার দীর্ঘ শ্বাস টেনে বললেন!!

___আমি অনেক চেয়েও আদিল কে রাজনীতি থেকে এক বিন্দু পরিমান ও সরাতে পারে নি। হয়তো আর কোনো দিন পারবো ও না। আমি একজন রাজনীতি বিদ এর সাথে সংসার করছি। তাই আমি জানি জীবন ঠিক কতটা কঠিন। সামনে অনেক কিছু পরিষ্কার দোয়াশা হয়ে যাবে।তখন তুমি চাইলেও কোনো দিক বেদিক খুঁজে পাবে না।
ইরা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অহনা সিকদার এর দিকে। ইরা তো জানতো অহনা সিকদার খুবি কঠোর মনের মানুষ! কিন্তু আজ একদম তাকে কঠিন মনে হচ্ছে না। তার মাঝেও একটা নরম মন আছে। হয়তো তিনি প্রকাশে অনেক কঠিন কিন্তু তার ভেতর টা বেশ নরম। অহনা সিকদার এর গম্ভীরতার হয়তো কোনো কারন আছে। এই বাড়ীর প্রতিটি মানুষ এর মাঝেই কোনো না কোনো রহস্য! ইরা শ্বাস টেনে বললো!

____চিন্তা করবেন না আম্মু! আমি ঠিক শিখে যাবো সময়ের সাথে সাথে সব! আপনার মতোন হয়তো অনেক টাই স্ট্রং হয়ে যাবো। তখন কেউ চাইলেও আমাকে ভাঙ্গতে পারবে না।
অহনা সিকদার অল্প হেসে ইরার গালে আলতো ছুঁয়ে বললেন!
____সিকদার মহলের প্রতিটি মানুষি স্ট্রং। তাদের দেখা দুয়াশার রুপ যখন তুমি দেখবে শুধুই অবাক হয়ে যাবে।প্রতিটি মানুষি এক একটা অভিনেতা অভিনেত্রী !
ইরা অহনা সিকদার এর শেষের কথা টা কোনো ভাবেই বুঝতে পারলো না! হয়তো কোনো কিছুর ইঙ্গিত করে বোঝালো অহনা সিকদার ইরা কে। ইরা ফের প্রশ্ন করার আগেই অহনা সিকদার বলে উঠলেন!
____আজকে আদিল এর ফিরতে বেশ লেট হবে! চলো রাতের ডিনার টা করে নাও তারপর সুয়ে পরো!
অহনা সিকদার আর কলি বেরিয়ে গেলো ইরার রুম থেকে। ইরা পায়েল টা পরে তারপর নিচে চলে গেলো খাবার টেবিলে!

প্রিয়াশ এর দেখা শোনা করার জন্য ভালো ডক্টর সাজেস্ট করা হয়েছে।ডক্টর দিনে এক বার এসে শুধু প্রিয়াশ এর শরীরের কন্ডিশন চেক করে চলে যান।তবে দিন রাত নার্স রা ডিউটিতে থাকেন৷ এক জন না থাকলে তো আরেক জন থাকে। প্রিয়াশ এর মাথায় অতিরিক্ত আঘাত পাওয়ার কারনে সে কাউকে ঠিক মতোন চিন্তে পর্যন্ত পারছে না। শুধু চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে এদিক সেদিক! মাইমুনা সিকদার এখন দিনের অধিকাংশ সময় বসে থাকেন ছেলের কাছে।আর অঝরে কান্না করেন!

রাত এগারো টা নাগাদ! আদিল সহ আশরাফ সিকদার বড় গাড়ি করে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করলেন! সারা দিন এর ব্যাস্ততায় সবার মুখে ক্লান্তির ছাপ। তারা বাইরে থেকে রাতে ডিনার করে এসেছে।
আদিল গায়ের কালো কোর্ট হাতের নিয়ে ফোন চাপতে চাপতে রুমে প্রবেশ করলো। রুমের দরজা হালকা করে খোলায় ছিলো! রুমের লাইট টাও ওফ করে রাখা!আদিল ঘড়িতে সময়,টা দেখে নিলো একবার। বেশ রাত হয়েছে হয়তো ইরা ঘুমিয়ে গিয়েছে এতখনে।আদিল কোর্ট টা বিছানার এক পাশে রেখে রুমের লাইট টা ওন করে সোজা চলে গেলো ওয়াশরুমে৷ ওয়াশরুমে গিয়ে প্রথমেই সাওয়ার নিয়ে নিলো বেশ অনেক সময় নিয়ে। প্রায় বিশ মিনিট পর টাওয়াল পেচিয়ে রুমে প্রবেশ করে! ভেজা চুল বেয়ে বেয়ে টপটপ পানি পরছে চুলের পানি গাড় ঘড়িয়ে বুকে পিঠে পরছে।আদিল টাওয়াল দিয়ে ভেজা চুল গুলোকে মুচে নিল।

আদিল অল্প দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাকালো ইরার দিকে। এক নজর তাকাতেই বুকের ভেতরে তুলপার শুরু হয়ে গেলো! ইরা গভীর ঘুমে মগ্ন তবে ইরার কোমর পযর্ন্ত জড়ানো চুল গুলো যেনো ইরা মুখে এলোমেলো হয়ে পরে আছে৷ শরীরের উপর কম্ফোর্ট না থাকার শরীররের প্রতিটি জায়গায় স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। আদিল দেখলো ইরার হাতে স্বর্ণের চুরি ঝকঝক করছে। পায়ের অনুমুক্ত ফর্সা পায়ে পায়েল টা যেনো আরও বেশি ঝকঝক করছে।জামা বেশ কিছুটা উপরে উঠে গেছে। এতটকুই কি যথেষ্ট নয় একজন পুরুষ কে উন্মাদ করার জন্য।

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ৩৬

আদিল যেনো এই মূহুর্তেই গভীর নেশালো চোখে তাকালো ইরার দিকে। হাতের টাওয়াল টা ফেলে এগিয়ে গেলো ইরার দিকে। ঠিক এই মূহুর্তে নেশালো লাগলো সব কিছু! ইরার এক পাশে বিছানায় গিয়ে বসলো আদিল! ইরার কপালে মুখে উপরএলোমেলো চুল গুলো কে আলতো হাতে সরিয়ে দিয়ে কপালে শব্দ করে একটা চুমু খেয়ে নিলো।অপলক দৃষ্টিতে বেশ কিছু সময় নিয়ে তাকিয়ে দেখলো তার জানবাচ্চা প্রেত্নী বউ টাকে! আদিল গিয়ে সুয়ে পরলো বিছানার এক পাশে! ইরার খুব কাছে আদিল ইরার কোমর দরে টেনে বুকে জড়িয়ে নিলো! শব্দ করে বেশ কত গুলো চুমু খেয়ে নিলো!

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ৩৮

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here