এমপি তামিম সরকার পর্ব ৪০

এমপি তামিম সরকার পর্ব ৪০
কাফাতুন নেছা কবিতা

” আআআআআ… ছাল তুলে ফেলবি না-কি বেডি?”
হঠাৎ তামিমের চিংকার শুনে সুবহার বুক কেঁপে উঠে! তারপর জ্বোড়ে নিঃশ্বাস নিয়ে নিচু স্বরে তামিমকে সরি বলে! কিন্তু প্রচন্ড মেজাজ গরম হয় সুবহা! তামিম যে এতো ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করে সেটা সালওয়ারের নিচে না দাড়ালে টেরই পেতো না সুবহা! রীতিমতো শরীরে কাপনী শুরু হয়ে যায় সুবহার!
সুবহা খুব রাগ নিয়েই তামিমের পিঠ ঘোষতে থাকে!সুবহার যে হাত কাপছে সেটা তামিম ঠিই টের পায়! এক পর্যায়ে তামিম সুবহার হাত ধরে তাকে সামনের দিকে ঘুরিয়ে নেই, তার পর শক্ত করে সুবহার কোমর জাপ্টে ধরে!

” আমার ও তো বেহেশতে যাওয়ার ইচ্ছা আছে, আয় তোর সেবা করি!”
” মানে..?”
” চল তোর পিঠ ঘসে দেই!”
” নাহহহহ!”
” মানে তুই চাস না আমি বেহেশতে যায়! ”
” নামাজ – কালাম পড়ুন, ইমানদার হন, আমার পিঠ ঘসতে হবে না!”
” আমার মতো খাঁটি মুসলিম আছে কেউ? প্রতি শুক্রবারে নামাজ পড়ি!”
” শুক্কুরআলী!”
” কিছু কইলি? ”
” নাহ! বলিনি, ছাড়ুন প্লিজ!”
” তোকে তো ধরতেই পারলাম না, ছাড়বো কীভাবে? ”
সুবহা নিজের চোখ নিচু করে ফেলে! তামিম এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সুবহার দিকে! পুরো ভিজে একাকার হয়ে গেছে তামিম সুবহা! এভাবে প্রায় ৫-৬ মিনিট তাদের মধ্যে নীরবতা চলে! তামিম সুবহার কানের কাছে নিজের মুখ নিয়ে যায়!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

” নির্বাচনে জয়ি হলে, গিফট হিসেবে তোকে চায় আমার!”
তামিম সুবহার গলায় কি’স করে চুপচাপ চলে যায়! তারপর আবার পিছনে ফিরে বলে!
” You have only 8 days subha! ৮ দিন পর আমাকে আটকানো মুশকিল হয়ে যাবে তোর জন্য! ”
সুবহা নিজের চোখ বন্ধ করে ফেলে! তামিমকে আটকানো যে সহজ না সেটা সুবহা জানে! শুধু জানে না, খুব ভালো করেই জানে! তার প্রমাণ নিজের বুকের উপরিভাগে দুটো গু’লি! ব্যাথা আর ক্ষত মোটামুটি চলে গেলে ও দাগ গুলো স্পষ্ট!
নির্বাচন হবে আর তামিম জয়ি হবে না এটা অসম্ভব! তাও সুবহার একটু আশ্বাস রয়েছে! এমপি নির্বাচনের পরই মন্ত্রী নির্বাচন, আর তামিম যে নিজের আব্বাকে জিতানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবে, সেটা ও সুবহা জানে! তার মানে এর মাঝে সময় আছে তার কাছে!

সুবহা ফ্রেশ হয়ে লাল শাড়ি পড়ে ভেজা চুল মুছতে মুছতে আসে! ভালোভাবে চারপাশে দেখে নেই, তামিম কোথাও নেই! সুবহা সুন্দর মতো বের হয়ে নিজের চুল মুছতে থাকে!
এক পর্যায়ে সুবহা অনুভব করে তার পিঠের ফিতা কেউ একজন বেঁধে দিচ্ছে! তামিমের ঘরে তামিম ছাড়া যে কেউ থাকবে না এটা ও তার জানা! সুবহা চুপচাপ দাড়িয়ে থাকে!
” সুহবা, তুই কী ম’দ?তোকে দেখলেই আমি মাতাল হয়ে যায় কেন?”
তামিম ভালোভাবে সুবহার দিকে তাকায়, শাড়িটা ঠিক মতো কুঁচি উঠেনি!
” শাড়ি পড়তে পারিস না!”
” হালকা!”

তামিম সুবহার কুঁচি গুলো বের করে সুন্দর মতো গুছিয়ে দেই! লজ্জায় মুখ লাল হয়ে যায় সুবহার! এটা কী করছে তামিম! তামিমের শুধু বাহানা লাগে সুবহার কাছে আসার জন্য!
” তোকে বিয়ে করার আগে অনেক কিছুই শিখে রেখে ছিলাম! অনেক শখের বউ তুই আমার!'”
সুবহা কুঁচি গুলো তামিমের হাত থেকে নিয়ে ফেলে।
” আমি করছি বাকিটা, আপনি যান!”
সুবহার মুখ লজ্জায় লাল হয়ে যেতে দেখে তামিম বেশ আনন্দ পায়!
” কিছু দিন পর তো সারা শরীরে আমার চিহ্ন নিয়ে ঘুরবি, প্রিপারেশন নিতে থাকে!”
তামিম ও সুন্দর মতো চলে যায়! এতো লজ্জা দেওয়া ও ঠিক না একদিনে। সুবহা ও তাড়াতাড়ি করে কুঁচি গুলো গুজে ফেলে!
তারপর ভাইয়ের রুমে চলে যায়! আজকে খুব দেরি হয়ে গেলো ভাইয়ের কাছে যেতে!
সুবহা যেয়ে দেখে তামিম নার্সদের এবং ডাক্তারদের সাথে খুব কড়া ভাষায় কথা বলছে! সুবহা আড়াল থেকে সবটাই শুনে! এক পর্যায়ে তামিমের ফোন আসে, সে ফোন রিসিভ করে নিচে চলে যায়! আর সুবহা ও তার ভাইয়ের রুমে প্রবেশ করে!

” ভাই আজকে বহুত দেরি করে আসতাছে কেন রে?”’
” বিবাহিত মানুষদের সকালে উঠতে দেরি হয়ই, তোরা বুঝবি না!”
সাকিব তামিমের কথা শুনে মাহিরের দিকে তাকায়! কারণ তার জন্যই সাকিবের প্রেম অসম্পূর্ণ!
” দেবে যখন রাস্তায় রাস্তায় চিল্লাইয়া, পরাণ যায় জ্বলিয়া রে, গান গাইছিলো, তখন বুঝি না কেন গাই ছিলো, আজকা বুঝলাম! ”
” তখন তো ঠিকই লুঙ্গি উঠাইয়া ডান্স করছোস, এখন আফসোস করোস কেন?”
তামিম কিছু না বলে চুপচাপ বাইরে চলে যেতে থাকে! তার সাথে তার পঞ্চ পান্ডব ও যায়! কিন্তু আজকে তামিম তার খোলা জীপে না বসে বাইরে চলে যায় সোজা!
” আসসালামু আলাইকুম স্যার?”
” দুলাভাই ডাকো! সুবহার একমাত্র স্বামী আমি!”
” আসসালামু আলাইকুম দুলাভাই! “”
” হুম! এই সাকিব, ওদের নিয়ে যা ভেতরে আমার বউয়ের কাছে!”
সাকিব আর কালা মানিক চুপচাপ দাড়িয়ে থাকে কলী আর কাকলীর দিকে তাকিয়ে!
তামিম একটু ভ্রূ কুঁচকায়! তারপর তূড়ি মারে সাকিবের মুখের দিকে! সাথে দু-জনের ধ্যান ফিরে!

” কলী!”
” কাকলি! ”
সাকিব এবং মানিক দু-জন দুজের দিকে তাকিয়ে দাঁত বের করে একটা ডেঞ্জারাস হাসি দেই! তারপর সুন্দর মতো নিয়ে যেতে থাকে তাদের!
” ভাই সাথে কালার বাচ্চা ও গেলো কেন?”
” মনে হয়তাছে বাড়িতে খুশির খবর আসতাছে! ”
মাহির তামিমের কথার আগা মাথা ও কিছু বুঝে না! কিন্তু দু-জনের মুধ্যে যে ঘোপলা আছে সেটা ঠিকই বুঝতে পারে!
সাকিব আর তামিম ভিতরে ঢুকতে দেখতে পায় সুবহা নিচে কিচেন এর দিকে যাচ্ছে!
” সুবহা! ”
সুবহা দেখা মাত্র কালী কাকলী তার দিকে ছুটে যায়!
” কলী, কাকলী! ! ”
সুবহা ও এসে তাদের জড়িয়ে ধরে! একটু হালকা করেই ধরে, কারণ সুবহার বুকের ক্ষতটা একটু হলে ও আছে,!

” তোরা এখানে!”
” তামিম দুলাভাই নিয়ে এসেছে ! ”
সুবহা বাইরে তাকিয়ে দেখে তামিম ফোনে কথা বলছে! সুবহা তখন তাদের বসায়, হল রুমে! সেখানে বেশ কিছু সার্ভেন্ট ও তামিমের আম্মা ও হাজির হয়!
এই প্রথম সরকার বাড়িতে প্রবেশ করলো কলী, কাকলী,এতো এলাহি আয়োজন তারা আগে কখনো দেখেনি! তারা তামিমের আম্মাকে ও সালাম দেই!
” তোমরা সুবহার ফ্রেন্ড? ”
” জ্বী মেডাম!””
” জ্বী মেডাম!’
” সুবহার মা-কে ও ম্যাডাম ডাকতা?”
দু-জনে একসাথে মাথা নাড়ায়!

এমপি তামিম সরকার পর্ব ৩৯

” আমাকে ও ডাকবা না, আন্টি ডাকবা! ”
দু-জনে আবার একসাথে মাথা নাড়ায়!
আয়েশা বেগম সুবহাকে নিয়ে কিচেনে যাওয়ার সময় দেখে সাকিব আর মানিক হেনলার মতো দাড়িয়ে থাকে!
” কী-রে জোড়া বলদ! তোরা এখানে কী করিস, মহিলাদের মধ্যে! ”
” প্রেরেম বড় আম্মা!”
” হ্যা?”

এমপি তামিম সরকার পর্ব ৪১