এলিজা পর্ব ১৫
Dayna
আজকের রাত টা যেন কাটছেই না।
বিভোর হয়ে আছে। নিজের অজান্তেই চোখের কোন থেকে গড়িয়ে পানি পড়ছে।,
৩ বছর আগে।যেদিন যখন শায়ান -প্রথমবার – এই কলেজে চাকরির জন্য পরিক্ষা দিতে আসে।, সেদিন থেকেই যে তাকে ভালো বেসে ফেলেছিলাম। তার অপরূপ দৃষ্টি তে যেন, ক্ষত বিক্ষত হয়ে গিয়েছিলাম।তাকে পাওয়ার আশায় যে,, কত জনকে প্রত্যাখান করলাম। তার কোন হিসাব নেই,।বাবা প্রতিবার ই ছেলে দেখলে কোন না কোন বাহানায় না করে দিতাম।
যার জন্য এত জনকে অবহেলা করলাম।,, সে কি কোনদিন আমাকে বুঝবে। ,,
নাকি অপ্রকাশিত, একতরফা ভালোবাসা নিয়ে ই সারাজীবন কাটাতে হবে।
এসব ভাবতেই মিরার চোখ দিয়ে অঝরে পানি গড়িয়ে পরে।
,
—তুলি মিরার বাড়ির কাজের লোক হঠাৎ বললো,আপা নিচে একজন আপনারে ডাকছে।
মিরা চোখের পানি মুছে ফেললো।
মিরা : এত রাতে কে।
তুলি : জানি না বলছে আপনাকে ডেকে দিতে ।
ছাদ থেকে নিচে দেখতেই শায়ান কে দেখতে পেলো। দৌড়াতে দৌড়াতে নিচে চলে আসে।
মিরা : স্যার আপনি এখানে,?
শায়ান :এত রাতে আপনাকে বিরক্ত করার জন্য মাফ চাইছি!
মিরা :ভেতরে আসুন!
শায়ান :না ,, বাড়ি ফিরবো !
মিরা :কি বলেন হঠাৎ বাড়িতে ফিরবেন ??
শায়ান বলল,হ্যা দু’দিন ধরে মনের ভেতর কুহ ডাকছে, ভাবলাম বাড়ি থেকে ঘুরে আসি।
একটা কাগজ টা মিরার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো,এটা আমার ছুটির আবেদন অ’ধ্যাক্ষকে দিয়ে দিবেন।
শায়ান দ্রুত পায়ে পদত্যাগ করতেই–
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
মিরা পেছন থেকে বললো,আমাদের আবার কবে দেখা হবে?? শায়ান থমকে গিয়ে বললো ভাগ্যে থাকলে,, শীঘ্রই,, না হয় কোনদিন নয়।
বলেই চলে যায়,,
শায়ান এর পথ শেষ না হওয়া পর্যন্ত মিরা অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ।শায়ান এর বাম হাতে বেলি ফুলের তোরাটা।, কি অদ্ভুত।কি হলো হঠাৎ,, এত রাতেই বা কেন ফিরছে ।হয়তো মা বাবার কিছু হয়েছে।তাই এত রাতে ফিরছে।
তিলকনগর————-
অপূর্ব :কথা বলছিস না কেন ? এখানে এত রাতে কি করছিস!
সূর্য বললো ,দেখতে পারছিস না কি করছি কথা বলছি তার সাথে।
অপূর্ব :তুই এনাকে চিনিস?
সূর্য :, না তবে সাদিকের কাছে আজ শুনলাম তুই নাকি মৌলবির জন্য হতাশায় পরছিস। তার জন্য তোর রাগ হলো । তুই কাউকে নিয়ে চিন্তায় থাকবি , আর আমি চুপচাপ দেখবো, তাই ছুটে চলে আসলাম তার কাছে।
অপূর্ব মৌলবির দিকে দৃষ্টি স্থাপন করে বললো,আপনি তখন স্বীকার করলেন না কেন যে, আপনি গতকাল ঢাকা ছিলেন ?
মৌলভি বললো,তোমাদের কোথাও ভুল হচ্ছে।আমি এই তিলকনগর ছাইরা কোথাও যাইনা।
অপূর্ব: উনি দেখতে হুবহু আপনার মত । আর আপনি বলছেন ওটা আপনি ছিলেন না।
মৌলভি:ও আচ্ছা, মনে পরছে তাহলে তোমাদের আমার জমজ ভাইয়ের সাথে দেখা হইছে।
অপূর্ব,অবাক হয়ে যায়,
জমজ ভাই মানে?
হ,, ওর নাম গুন্জন ,,
গুন্জন???
সূর্য: উনি এটাই বলছে. এতক্ষণ থেকে।
অপূর্ব :তুই আজকে সারাদিন কোথায় ছিলিস??
সূর্য কপাল চুলকাতে চুলকাতে বললো, ফ্যাক্টরিতে কাজের চাপ অনেক সেখানে ছিলাম।তোর সাথে মৌলবির তর্ক বিতর্ক হয় সেটা শুনেই এখানে চলে আসি।
অপূর্ব:এই নদীর পারে কেন ?
সূর্য অস্থির হয়ে বললো,
তুই প্রশ্ন করা বন্ধ করবি,, ওদিকে এলিজা অপেক্ষা করছে,। তুই ওর কাছে যা আমি এনার সাথে কথা বলে আসছি।
,, অপূর্ব:তুই কি করবি আমাদের সাথে চল একা কোথাও যাওয়ার দরকার নেই। মৌলবি সাহেব আপনার জমজ ভাইকে নিয়ে আমার সাথে দেখা করবেন আগামীকাল নয়তো……..
বলেই অপূর্ব সূর্য কে নিয়ে সামনে এগোতে থাকে ।
কিন্তু মনের মধ্যে কোন শান্তি নেই,, সবকিছু যেন গুলিয়ে যাচ্ছে। কি হচ্ছে এসব। ভাবতে থাকে অপূর্ব ।
মৌলবীর বাড়ি যেদিক, সেদিন থেকেই। তিলকনগরে আসার রাস্তা ।
মৌলবী ,, ইউনুস দোয়া পরছে,, আয়াতুল কুরসি পরছে,, দৌড়াতে দৌড়াতে একবার মাটিতে পরে যায়,, চারদিকে তাকায়। কারো পথ চেয়ে যেন সাহায্য চাইছে। খুব ছটফট করছে মৌলবী।
রাত ঠিক শেষ অংশ,,
মৌলভি দৌড়াতে দৌড়াতে সামনে পরে শায়ান।থমকে দাড়ায় শায়ান।
গাড়ি ভারা করে শায়ান ঢাকা থেকে এসেছে।
শায়ান হঠাৎ মৌলভী সাহেব কে দেখে ভয়ে কাতর হয়ে যায়।শায়ানের হাতেও সময় কম বাড়ি ফেরার তারা।
শায়ান বললো,চাচা আপনি এত রাতে কি হয়েছে হাপাচ্ছেন কেন ,?
মৌলভি কাপা কন্ঠে বললো, শায়ান বাবা তোরে কিছু কইবার চাই,! যা সবার জানা দরকার।
শায়ান :, চাচা আপনি বাড়ি চলেন ,, আমার হাতে সময় কম।
মৌলভি বললো,না ওদিকে যাওন যাইবো না।
আমার হাতে সময় নেই কাল কথা হবে।,শায়ান এর মন মেজাজ এমনিতেই ভাল না মৌলবী কে এড়িয়ে চলে যায়। শায়ান।
এলিজা পর্ব ১৪
—- সকাল ৬ টা ,,,
জয়তুন নামাজ পরে তবে বিনা আজানে ।,, আজ আজান কেন দিলোনা মৌলবী সাহেব জানি না।
হঠাৎ ই শুনতে পায়,চারদিকে লোকজনের আহা,জারি।
কান্নার জোয়ার বইছে।
আয় হায়য় ,একি হইলো ,, একি হইলো,, বলেই মহিলারা মাথা থাপরাচ্ছে,, আর দৌড়ে কোথায় যাচ্ছে।
একজনকে দাড় করিয়ে জয়তুন জিজ্ঞেস করলো, কি হইছে সবাই কইজান??
একজন মহিলা বলে উঠলো,
সর্বনাশ হয়ে গেছে সর্বনাশ, মৌলভী সাহেব রে কারা যেন খু,,ন করছে-