কাজলরেখা পর্ব ১৩
তানজিনা ইসলাম
সকাল সকাল আঁধারের ফ্ল্যাটে তটিনী এসেছে।ও যখন বেল বাজিয়েছে তখন সকাল সাতটা। আঁধার দরজা খুলে অবাক হয়নি। ওর বন্ধুগুলো উল্টাপাল্টা সময়েই আসে। তার কারণও আছে বটে। সবাই নিজেদের জীবনে খুব ব্যস্ত।এতো ব্যস্ততা কাটিয়ে বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য একটা ফ্রি টাইম খুঁজতে হয়। কয়েকদিন ধরেই ভার্সিটির প্রজেক্ট নিয়ে সবাই খুব প্যারা খাচ্ছিলো। দেখা করার ফুসরতই পাচ্ছিলো না। আঁধার তটিনী কে দেখে ভেবেছিলাে সবাই, বোধহয় এসেছে ওর সাথে দেখা করতে। কিন্তু না তটিনী একাই এসেছে, আর কেও আসেনি।
তটিনী সোফার উপর বসে অপেক্ষা করছে আঁধারের। আঁধার কিচেন থেকে বেরিয়ে কফির মগ এগিয়ে দিলো তটিনীর দিকে। ওর সামনাসামনি নিজেও এককাপ কফি নিয়ে বসলো।
-“চিনির পরিমাণ ঠিক আছে কি-না বলিস তো! ঘুমঘুম চোখে বানিয়েছি।”
তটিনী হাসলো। কফির কাপে চুমুক দিয়ে বললো
-“পার্ফেক্ট!কিন্তু তুই এতো সকাল সকাল উঠে গেছিস যে?”
-” আমি পুরা রাত ঘুমাইনি। প্রজেক্ট বানাচ্ছিলাম।”
তটিনী বললো
-“ভালো আছিস অন্ধকার?”
-“না রে! দিন কাল ভালো যাচ্ছে না। তোর প্রজেক্ট বানানো শেষ?”
-“হুম! ফাইনালি,অনেক কষ্টে। যে প্যারা খাচ্ছিলাম এটা নিয়ে! তোর কী অবস্থা?”
-“আমার এখনো কমপ্লিট হয়নি।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
-“আমি তো এখন শাবিহার প্রজেক্টে হেল্প করতেছি, নয়তো তোকে হেল্প করতাম দোস্ত।”
-“আরে নাহ। তোরা মেয়েরা তো খুব ডিসিপ্লিনড। আমার হাঁদারাম বন্ধুগুলো এখনো প্রজেক্টে হাতও দেয়নি। অনেকে জানেই না প্রজেক্টের ব্যাপারে। বাদ দে এসব। তোর ব্যাপারে বল। আমার ফ্ল্যাটে পায়ের ধুলো পরলো কী করে?”
তটিনী কফি শেষ করে কাপ রাখলো টেবিলে। আঁধারের দিকে তাকিয়ে বললো
-“এমনিই৷ প্রজেক্টের কাজ শেষ হয়েছে ভাবলাম চাঁদনীর সাথে দেখা করতে আসি। তুই আবার নেক্সট মানথ থেকে ওরে পড়াতে বলেছিস। এমনিই একটু আলাপচারিতা করবো ওর সাথে সেই ভেবেই এসেছি।চাদনী কই?”
-“ঘুমাচ্ছে। এতো সকালে উঠবে না। ব্রেকফাস্ট করে এসেছিস?”
-“উহু।”
-“বুয়া উঠে একটু পর নাস্তা বানাবে।খেয়ে যাবি।”
-“তুই না বললেও খেয়েই যেতাম। বন্ধুর বাড়ি থেকে অভুক্ত পেটে যাওয়া যায় না-কি! বাট বুয়া রান্না করে,চাদনী রান্না করে না?”
আঁধার চোখ ছোট ছোট করে তাকলো ওর দিকে। বললো
-“ওর বয়সে তুই নিজের বাড়িতে এক গ্লাস পানিও ঢেলে খেতিস না। মানুষকে বলা খুব সহজ। ওরে দিয়া আমি রান্না করাবো? পড়াশোনা নাই ওর? ও পারবে এসব করতে?’
তটিনী উৎফুল্ল হয়ে বললো
-“ওয়াও দোস্ত। কিউট তো ব্যাপারটা তুই ওর জন্য আরগু করছিস। আমি তো তোর রিয়াকশন টা দেখতে চাচ্ছিলাম।”
আঁধার নাকমুখ কুঁচকে তাকিয়ে থাকলো ওর দিকে। তটিনী ভাবুক স্বরে বললো
-“তোদের মধ্যে কিছু হয়েছে?”
-“কী হবে?” ভ্রু কুচকে বললো আঁধার।
তটিনী মিটমিট করে হেঁসে বললো
-“স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যা হয়।”
আঁধার বিমূঢ় দৃষ্টিতে তাকালো ওর দিকে। পরক্ষনে ধরফরিয়ে বললো
-“পাগল হয়েছিস? কী বলছিস এসব? শি ইজ জাস্ট সিক্সটিন। শিশু নির্যাতন করতে বলছিস তুই আমাকে?”
-“বাট তোদের বিয়ে হয়ে গেছে দোস্ত। এভাবে কতোদিন চলবে? তোদের মধ্যকার সম্পর্কটার একটা নাম আছে, সে সম্পর্কের পূর্ণতা দেওয়া দরকার।”
আঁধার বাঁধ সেধে বললো
-“তটিনী এসব বলিস না প্লিজ। ও এসে শুনতে পাবে। এমনিতেই আমার সাথে কথা বলে না। এসব কানে গেলে আমার সামনেই আসবে না আর। ওর আর আমার মধ্যে তেমন কিছু হওয়া সম্ভব না কোনোদিন। চাদনী মানতে পারবে না। ওরে চিনিস না তুই। ও খুবব সেনসিটিভ। তারউপর ওর সাথে আমার মারামারির সম্পর্ক।”
-” আচ্ছা মানলাম ও এখনো ছোট! তাই এসব মানতে পারবে না। বা তোর পক্ষেও এখন আগানো সম্ভব না। চাদনী এখনো টিনএজ, ওর আবেগের বয়স তাই তোর সাথে থাকতে ফ্রাস্টেটেড হয়ে যায়।বাট ও একদিন বড়ো হবে। অনেক কিছু পরিবর্তন আসবে ওর মধ্যে। তখন ও কী এ সম্পর্ক এভাবেই চলবে? তখন সংসার হবে না তোদের?চাদনী বড় হলে সংসার হওয়ার চান্স আছে?”
আঁধার মুখ কালো করে বসলো। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো
-“কি জানি! ও বড় হতে হতে এই নাম মাত্র বিয়ের সম্পর্কটাই না ভেঙে যায়।”
তটিনী আঁতকে উঠে বললো
-“মানে? ডিভোর্স দিয়ে দিবি ওঁকে?”
-“জানি না!”
-“আঁধার, এমনটা করতে পারিস না তুই। ডিভোর্সি ট্যাগ লেগে যাবে ওর গায়ে। বুঝতে পারছিস, ডিভোর্সের পরবর্তী জীবনটা ওর জন্য কেমন হবে? ওই ছোট্ট মেয়েটা সমাজের মানুষের কটাক্ষগুলো সইতে পারবে না।”
-“এ জন্যই তো পারতেছিনা, তটিনী।ডিভোর্স পরবর্তী চাঁদনীর জীবনটা কেমন হবে এই ভেবে ভেবেই তো ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছি আমি। না ওরে ছাড়তে পারতেছি, না ওরে ধরতে পারতেছি, না ওরে বউ হিসেবে মানতে পারতেছি। ডিভোর্স দিলে তো অনেক আগেই দিয়ে দিতাম।কষ্ট যে নিজে কম দিচ্ছি এমনও না। কিন্তু ডিভোর্সের পর ওকে সবাই পিঞ্চ মেরে মেরে কথা বলবে, খোঁটা দেবে। আমার দেওয়া কষ্টগুলো ও মেনে নেয়, কিন্তু ও যদি অন্যদের কথায় কষ্ট পায় সেটা আমি মানতে পারবো না।”
আঁধারের কন্ঠে অসহায়ত্ব। তটিনী উদগ্রীব স্বরে বললো
-“এতোই যখন ভাবছিস ওকে নিয়ে, ও যেমন ওঁকে তেমনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না? ভালোবাসা তো রূপ গুণ দেখে হয় না। অতো নিয়মকানুন মেনেও হয় না। ভালোবাসা শুধু ভালোবাসতে জানে।”
-“আমি চাঁদ কে অনেক ভালোবাসি রে তটিনী! বিশ্বাস কর, আমি ওরে অনেক ভালোবাসি। আমি চাই ও সারাটাক্ষন হাসুক। হাসি খুশি থাকুক সবসময়। আমি ওর ভালো থাকাটা চাই, কিন্তু আমি ওরে বউ হিসেবে চাই না। কেন যেন মানতেই পারি না ওরে বউ হিসেবে।”
-“কেন মানতে পারিস না, অন্ধকার? ও শ্যামলা তাই? আর কী কমতি আছে ওর মাঝে? চাদনী ভালো মেয়ে! ছোট্ট, কিন্তু খুব বুঝদার। তোর সাথে খুব মানায় ওঁকে!”
-“সেটা তোর মনে হয়! কিন্তু আমি ওরে আমার পাশে মানতে পারি না। জানিস, ছোটবেলা থেকেই আমার একটা স্বপ্ন ছিলো। আমার বউ খুব ফর্সা হবে, দুধে-আলতা গায়ের রং হবে তার। মানুষ আমাদেরকে দেখলেই বলবে, আমাদের জুটি একদম পার্ফেক্ট। রাবনে বানাদি জোড়ি টাইপ। আমার বন্ধুরা আমার বউকে দেখলেই বলবে, ভাবী তো খুব সুন্দরী!
কিন্তু আমার বাবা আমার সে স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দিয়েছে৷ চাদনী আমার স্বপ্নের সে নারী না। আমি কারো সামনে চাঁদনীর পরিচয়ও দিতে পারি না। লজ্জা লাগে আমার। জানি এতে ওর কোনো দোষ নেই। কালো হওয়াটা তো ওর অপরাধ না। তবুও কোথাও যেন একটা আফসোস থেকেই যায়।”
তটিনীর এবার ভীষণ রাগ লাগছে। এমনিতেই ও নারীবাদী। মেয়েদের প্রতি কোনো অন্যায় সহ্য করতে পারে না।তার উপর আঁধার কন্টিনিউয়াসলি চাঁদনীর গাঁয়ের রং নিয়ে রেসিসম করে যাচ্ছে। তটিনী গুমোট স্বরে বললো
-“তোর মনটা তোর নামের মতোই অন্ধকার রে!উফ! কি জঘন্য তোর চিন্তা ভাবনা! তোর মতো যে ভালোবাসতে পারে, তার কোনো মানুষকে ঘৃণা করার দরকার নাই।তোর ভালোবাসা ঘৃণার চেয়ে বেশি টক্সিক,মরণব্যাধি! আমি আসলেই বুঝতে পারছি না এটা কেমন ভালোবাসা তোর!”
আঁধার কিছু বললো না। মুখ কালো করে চেয়ে থাকলো ওর দিকে। একটু পর চাদনী নামলো উপর থেকে। দু’জন ওঁকে দেখে নিজেদের কথার ইস্তফা ঘটায়। চাঁদনীর সাথে অনেক গল্প করলো তটিনী। তবে তা বেশিরভাগই চাঁদনীর একাডেমিক লাইফ নিয়ে। তটিনী একবারো ওর মুখে হাসি দেখেনি।ও কিছু বললেও ভদ্রতার খাতিরে জোরপূর্বক হাসছিলো।তটিণী-র খালি মনে হচ্ছে চাদনী ওঁদের কথোপকথন শুনেছে। ওর খুব খারাপ লাগছিলো মেয়েটার জন্য।
বুয়া খাবার রেডি করার পর ওরা তিনজন একসাথেই খেতেই বসলো।
তটিনী খেয়াল করছিলো চাদনী তেমন খাচ্ছিলো না। পাখির আহার করছিলো মেয়েটা। মুখটা মলিন। কেমন যেন অঢেল বিরহ চাহনি তে। ওর চিন্তা হয় চাঁদনীর কথা ভেবে। মেয়েটা সবদিক দিয়েই অসহায়।মেয়েটার বাবা কী দেখে যে এমন রেসিস্টের সাথে ওর বিয়ে দিলো তটিনী বুঝে উঠতে পারে না।
তটিনী বিদায় নেওয়ার পর আঁধার আর চাদনীর মাঝে তেমন কোনো কথা হয়নি। আঁধার সোফায় বসে ল্যাপটপে কিছু একটা করছিলো। চাদনী বসলো ওর পাশে একটু জায়গা করে। আঁধার অবাক দৃষ্টিতে তাকালো ওর দিকে। চাদনী এই প্রথমবার নিজ থেকে এসে ওর পাশে বসলো।
-“আঁধার ভাই!”
-“কিছু বলবি চাঁদ?”
-“আমি অনেক ভেবে একটা ডিসিশন নিয়েছি। এটা আমার আর তোমার দু’জনের জন্যই ভালো হবে।”
আধার ভ্রু কুঁচকে বললো
-“কী?”
-“ভাবছি, ফার্স্ট ইয়ার শেষ করে কলেজ থেকে ট্রান্সফার হয়ে যাবো। চট্টগ্রামের কোনো একটা কলেজে সেকেন্ড ইয়ারে এডমিশন নিয়ে নিবো।”
-“কেন? এখানে পড়লে সমস্যা কী? তোর বয়স কতো যে তুই এসব ডিসিশন নিচ্ছিস? আমি তোর গার্ডিয়ান আছি না! আমি থাকতে তুই ঠিক করবি, কী করবি না করবি?”
চাদনী স্বাভাবিক ভাবেই বললো
-“তুমি আমাকে নিয়ে ভীষণ লজ্জায় পরছো আঁধার ভাই! আমি তোমার লজ্জার কারণ আর হতে পারছি না। এর চেয়ে ভালো না, আমি বাবাকে বলে চট্টগ্রামে চলে যাই। তোমার মাথা থেকেও একটা বোঝা নামলো। আমাকেও আর চব্বিশ ঘন্টা নিজের পরিচয় নিয়ে সন্দিহান হতে হচ্ছে না। আমি তো মাঝে মাঝে বুঝতেই পারি না, আমি এখানে কী পরিচয়ে আছি। তোমার সাথে আমার সম্পর্ক টা কী? কেন আমি তোমার সাথে এসেছি, থাকছি? আমার দ্বারা আর সহ্য করা সম্ভব হচ্ছে না বিশ্বাস করো। তোমার আমাকে নিয়ে এই লজ্জা আমি আর নিতে পারছি না!”
আঁধার হা করে তাকিয়ে থাকলো চাঁদনীর দিকে। চাদনী নিষ্প্রাণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সে দৃষ্টির মানে ধরতে পারলো না আঁধার। উদ্বিগ্ন স্বরে বললো
-“কী হয়েছে চাঁদ? কিছু হয়েছে তোর? এমন করছিস কেন? কাল পর্যন্তও ঠিক ছিলি। কেন চলে যেতে চায়ছিস?”
চাদনী একটা প্রশ্নেরও উত্তর না দিয়ে বললো
-“আমাকে চট্টগ্রামে রেখে আসো প্লিজ। বিশ্বাস করো আমি এখানে থাকলে মরে যাবো। গ্রামে গিয়ে আমি বাবা, বড় বাবাকে বোঝাবো। যে সম্পর্কে কোনো প্রাণ নেই সে সম্পর্ক বয়ে বেড়ানো আমাদের পক্ষে সম্ভব না। সংসার তো আমরা করবো। ওরা না। কোনোকিছু চাপিয়ে দিলেই তো হয়ে যায় না। আমাদের ডিভোর্স টা হয়ে যাওয়ায় ভালো। তোমাকে টেনশন করতে হবে না আমাকে নিয়ে। এমনিতেই মানুষ আমাকে অনেক কথা শোনায়। ডিভোর্সি কথাটাও নাহয় শুনবো। ওরা আমার নিজের কেও না, ওঁদের কথা গায়ে মাখাবো না আমি৷ কিন্তু আমি তোমাকে নিজের কেও ভাবি আধার ভাই। আমার কিভাবে যে কষ্ট হয়,আমি তোমাকে বোঝাতে পারবো না। খুব জ্বলে এখানটায়!” নিজের বুকের উপর তর্জনী ঠেকিয়ে বললো চাঁদনী।
আঁধার অস্হির হয়ে ধরলো ওর হাত দু’টো। ওর সামনে মেঝেতে হাঁটু মুড়ে বসে বলল
-“আমরা বসে কথা বলি?এভাবে তো হুট করে তুই আমাকে ছেড়ে চলে যেতে পারিস না।”
চাদনী হাত সরিয়ে নিলো নিজের।আঁধারের চোখে চোখ রেখে বললো
-“জানো আঁধার ভাই,হুমায়ুন আহমেদ স্যার, নিজের উপন্যাসে কালো,শ্যামলা মেয়েদের প্রশংসা করে মায়াবতী বলে আখ্যায়িত করেছেন। কিন্তু কালোর প্রশংসা শুধু উপন্যাসেই মানায়। বাস্তবে লেখক নিজেও সুন্দরের প্রেমে পরেছেন। তোমার সুন্দর জীবনসঙ্গী চাওয়াটা পাপ না। আমাকে মানতে না পারাটাও অপরাধ না। আমার কালো হয়ে জন্মানোটাই পাপ। এ পাপের প্রায়শ্চিত্ত আমাকে সারাজীবন ধরে করতে হবে।
কাজলরেখা পর্ব ১২
আমি সাফার করার জন্যই জন্মেছি। কিন্তু তোমাকে আমার সাথে সাফার করতে হবে না আঁধার ভাই। তোমার দ্বায় নেই আমার এই ঘুনে খাওয়া, আধপোড়া জীবনটা বয়ে বেড়ানোর। তুমি আমাকে বোঝা মনে করো,আমার পরিচয় দিতে লজ্জা পাও আমি তাতে কিছু মনে করি না। নিয়তি মেনে নেওয়ায় সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। আমি তোমাকে মুক্তি দিতে চাই আঁধার ভাই। আমার কাজলরেখা থেকে চিরদিনের জন্য তোমাকে কলঙ্কমুক্ত করতে চাই!”