কালকুঠুরি পর্ব ৪২

কালকুঠুরি পর্ব ৪২
sumona khatun mollika

আদ্রিত সোজা মোড়ের ক্লাবে চলে গেছে। সাফিন চুপচাপ বক্স থেকে কয়েকটা প্যাকেট বের করে বলল,,
– আদ্রিত তোর কাজ শেষ । সামির কোথায় ?
– জানিনা ভাই আমারে বক্স ধরায় দিয়ে গেছে গা।

সাফিন আদ্রিত বাড়ি ফিরে যেতে বলে। রুবেল কালকুঠুরি সহ সম্পূর্ণ রাজশাহীর কোনাচেকানাচে জেনে নেয় কোথায় কি আছে কোথায় কি নেই সব। আগে থেকেই মোটামুটি ধারণা ছিল তাই পুরো পাড়া আয়ত্ত করতে তার বেশি সময় লাগেনি। কাশেম দাড়িয়ে আছে সিকান্দার বাড়ির পেছন সাইডে। সামির নিঃসন্দেহে এদিক দিয়ে আসবে। আসেনি।
সামির সোজা দড়জা দিয়ে ভেতরে ঢুকেছে। প্রথমে দু’কদম দাড়িয়ে থম মেরে দাড়িয়ে রইল । পেত্নীর মতোন ইনায়া আজ আর টেবিলে বসে অপেক্ষা করছেনা। টেবিলে আগে থেকেই একবাটি মুরগির মাংসের তরকারি রাখা । খেতে ইচ্ছে হচ্ছে না। নিজেই ঘরে চলে গেল। অভ্যাশবশত বলে ফেলল,,
” দিবা লুঙ্গি ডা ধুয়ে দিও তো “”
কিন্তু দিবা শুনলোনা। বললনা যে, সরে দাড়ান গন্ধ আসছে। জামাকাপড় বদলে ছাদে চলে গেল সামির।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

চারপাশে খা খা নিস্তব্ধতা। কাঁচের বোতলের মুখ খুলে ঢকঢক করে একদমে পুরো বোতল শেষ করে দম ফেলে।পেছন থেকে কাশেম বলে,,
– নিচে দাঁড়ায়ছিলাম, আইলেন কখন?
– সামনে দিয়া আইছি।
– এত গিইলেন না। টাল্লি খাইয়া পড়বেন গা।
– গন্ধ লাগলে সরে বস!

কাশেম হা করে তার দিকে তাকালো। সামির বুঝতে পারে কিছু কিছু কথাও তার পিছু ছাড়ছেনা । রাতেরবেলা ছাদে আসলেই হয় মাহা বোতল ছুড়ে ফেলে দিত,, নয় সামির বলত সরে বসো। কাশেম ছাদে রাখা গিটার তুলে টুং-টুং করতে করতে বলল,,

– আপনে অভ্যাসে টাল্লি খাইছেন গা ভাই,,
সামির গিটার টা টেনে নিয়ে টুংটাং করে বলল,,
-আমি টাল্লি খাইনা।
কাশেম বাম গাল টেনে হেসে বলে,,
– একটু হইলেও খাইছেন গা ভাই।
সামির খালি গলায় সজোরে গেয়ে ওঠে,,

Ishq ki saazishein
Ishq ki baaziyan
Haara main khel ke
Do dilon ka jua
Kyun tune meri fursat ki
Kyun dil mein itni harkat ki
Ishaq mein itni barkat ki
Ye tune kya kiya
Phiroon ab maara maara main
Chaand se bichda taara main
Dilse itna kyun hara may
Yea tune kiya kiaaa,,,,,,,,,,

সামির গিটারটা জড়িয়ে ধরে চিত হয়ে ছাদে শুয়ে পরে। কাশেম একিভাবে বসে রইল। তার চোখে কেমন অদ্ভুত একটা রহস্য খেলে যায় । যেন সামিরের কষ্ট তার মন পর্যন্ত পৌছায়নি। তবে কাশেম বেশ ভালোই বুঝতে পারছে সামির সিকান্দার বেশ বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে। কাশেম কথা না বাড়িয়ে উঠে চলে যায় । সামিরের চোখ আরো সূক্ষ্ম হয়ে ওঠে। বুকটা যেন বিষিয়ে যাচ্ছে । আকাশের দিকে তাকিয়ে গাল টেনে হেসে নিজে নিজেই বলতে থাকে,,,

– এই অন্তহীন অন্তরীক্ষে আমি এক নির্জন দ্বিপ্রহর, আমারে সবাই ঘৃণা আর অবহেলাই করলো। ভালো আর কেও বাসলোনা।
আবারো ভ্রম হয়ে মাহার দেখা,,
-আপনি কি নিজেকে নিঃসঙ্গ মনে করছেন সামির সিকান্দার?
– তুমি একটা বেইমান দিবা। এই দরিয়ায় সবচে ছলনাময়ী মিথ্যাবাদী আমার মা জননী । সে আমায় বলেছিল,, একশ পর্যন্ত গুনতে। আমি গুনলাম,, এক, দুই, তিন, চার, পাঁচ, ছয়… নিরানব্বই, একশ,,,, কিন্তু,, কিন্তু মা আর এলোনা। আমি বললাম চেষ্টা করা যায় স্বামী হওয়ার তুমি সেই সুযোগ দিলেনা।
– দোষ দিচ্ছেন?
– তুমি এমনভাবে ভাঙলে যে পুনরায় নিজেকে জোড়া লাগাতে শত জনম লেগে যাবে।

মাহা একটু গাল টেনে হাসলো। সামির কেমন ভেজা আর নরম রাশভারি কণ্ঠে আওড়ালো,
– আমি বাবা হতাম। বৈধ বাবা। আমার বৈধ রক্ত তুমি তারেও বাচালেনা দিবা। আমার হাল দেখে আমায় মোটেও অসহায় ভেবনা। আফসোস হচ্ছে কেনই যে এসবের মধ্যে জড়িয়ে গিয়েছিলাম! আমি সামির সিকান্দার ,, কুখ্যাত ফুটো মস্তান হিসেবেই ফিট এন্ড ফাইন। টাকা যেখানে আমি সেখানে। তোমায় ভুলে যাব দিবা।
– পারবেন?
– আমি পারিনা এমন কোনো কাজ নেই। আমি পারবো।
-ঠিকাছে। আমিও আর আপনাকে জ্বালাবনা। আপনি সুখী হন সামির সিকান্দার

কথাটা শেষেই আবার নিস্তব্ধতা ছেয়ে যায় । কে জানে কোন অন্তরীক্ষে হারিয়ে যায় । সামির চুপচাপ বসে রইল। আওয়াজ খাদে করে মাহার উদ্দেশ্যে বলে,,
~ আলোর নিচে আমি এক টুকরো ছায়া হয়ে রই,
কারো চোখে জল এলো না, আমি কেবল নিঃশেষ হই।

রাত পেরিয়ে যায় । নিয়ম মেনে আবারো সূচনা হয় নতুন দিনের। পরেরদিন ভার্সিটির গেটে সকলে দাড়িয়ে আছে, সামির সিকান্দার কে ওয়েলকাম ব্যাক করতো৷ সামির ঠিক সেই ১৪, ১৬ সালের দিকের মতো লাল শার্ট আর জিন্সের প্যান্ট পরে ভার্সিটিতে এন্ট্রি নিতেই ছাত্র জনতা হইহই শুরে দেয় । ছাত্র দলের অভ্যাস কথায় কথায় ডায়লগবাজি। সামির স্মৃতিস্তম্ভের কাছে দাড়াতেই ছেলেপেলে এমন ভাব করতে লাগলো যেন ভোটের সভা চলছে।

উত্তাল দলবল অতি উচ্ছাসে গা ভাসিয়ে স্লোগান দিতে লাগলো,,
“পদ্মা নদীর জল, আমরা সামির ভায়ের দল ”
” এসেছেরে এসেছে, শোক পদ্মায় ভেসেছে ”
” লোহার মতো শক্ত, সামির ভাইয়ের ভক্ত ”

সামির হাত উঁচু করে সবাইকে থামতে বললেও থামলোনা। জনগণের খুশি যেন একটু বেশিই হয়ে যাচ্ছে । সামিরের কেমন বিরক্ত লাগলে সে চেচিয়ে উঠলো,
– থাম বাঙ্গির দল।মাথা ফাইট্টা গেল বাল।

ব্যাস চারতরে পিনপতন নিরবতা। তারমধ্যে লেমন একটা প্লেট নিয়ে দৌড়ে এসে বলে,,
– লেন ভাই,,
– কি এডি?
– বাঙ্গি! একদম ফ্রেশ এন্ড টাটকা।

সবাই হাহা করে হাসতে লাগল। সামির বুঝে গেছে এরা কি কারণে আজ একটু মাত্রা ছাড়াই কেয়ার দেখাচ্ছে । যতই হোক না কেন সবার সাথে নরমাল থাকাটা আপাতত ইমারজেন্সি হয়ে গেল সামিরের কাছে। কাশেমকে বলে গিয়ে মিসিং আইডি ইনফরমেশন ঠিক করে আসতে। কাশেম এক আদেশেই চলে গেল।

সাফিন ডেকেছে লালগলিতে। সামির সেখান দিয়ে পার হওয়ার সময় মনে হলো যেন একদল প্রেতাত্মা তার পিছু করেছে। ছুটে চলে গেল রাস্তা এড়িয়ে । কালকুঠুরি ২ এর নাম পরিবর্তন করে লালকুঠি রাখা হলো। রুবেল জোর করেই নামটা বদলে দিয়েছে। ১,২,৩ এসব মনে রাখা বড্ড ঝামেলার। তাছাড়া নামটা বেশ মানিয়েছে। লালগালিচার লালকুঠি। বাড়িটার দেয়ালো লাল সাদা দিয়ে রাঙানো। বেশ মানিয়েছে। সেখানে গিয়ে এতএত মেয়েদের ভিড়ের মধ্যে সামিরের বেশ বিরক্ত লাগছিল ।
তাদেরি মধ্যে সুন্দরী একটা মেয়ে তার হাত ধরে দাড়িয়ে আছে একটা শিশু বাচ্চা। তারা মাহার ১ দিনের পরিচিত লামু আর রুমাশা। পিছু ডেকে আওড়াল ,
– সামির ভাইজান??

সামির ফিরে তাকাতেই রুমাশা দৌড়ে এসে তার হাত টেনে জিজ্ঞেস করল,,
– ভাইজান? মাহাদিবা আপু আসেনি?
সে সিভানের মতো কম বয়সে ম্যাচুউর নয়। অবুঝ বাচ্চার প্রশ্নে সামিরের মেজাজটা চটে গেল ,, লামু তাকে টেনে সরিয়ে এনে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে বলল,,,
– ক্ষমা করবেন ভাইজান, ছোট বাচ্চা বোঝেনি।
– পিছু ডেকেছিস কেন?
– ভাইজান, আমাদের একজন বৈদ্য প্রয়োজন। আপনাদের ব্যবসার জন্য হলেও আমাদের সুস্থ থাকা দরকার। যে ডাক্তার এখানে আছে সে চিকিৎসা ঠিকমতো করেতো না -ই সঙ্গে ওষুধের বদলে রাত কাটাতে চায়।
– অরে কি টাকা ভরা হয়না?
– হয়। কিন্তু যত কঠিন রোগই হোক না কেন সে বিনা পরিশ্রমিকে ওষুধ দেয় না..
– কোথায় অয়?
– বাইরে পেছন দিকে ।
– যা, নিজের কাজ কর।

লামু আর রুমাশা সেখান থেকে চলে যায়। সামির কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থাকে। রুবেল দেওয়ান সহ নতুন কমিশনার আর ওসিরা চলে গেছে। সামির নিজেই সেখানে মদন নামের এক ডাক্তারকে দরকারি- অদরকারি ঔষধ সরবরাহ করতে বলেছিল। বদলে মাসে তাকে চল্লিশ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তারপরেও সে ঠিক মতো নিজের কাজ করেনা।

সামির সকলের মধ্যে থেকে মদনের কলার টেনে এনে দুইপা দড়ি দিয়ে বাঁধে । বাইকের সাথে লাগিয়ে দেয় দড়ির অপরপ্রান্ত। চোখে সানগ্লাস তুলতে তুলতে বলে,,,
– মদন It’s time to digest চোদন!

মদন হাতপা ছড়িয়ে চেচামেচি করতে থাকে কি ভুল করেছি,, ছেড়ে দেন!
সামির দুই আঙুল দিয়ে লালকুঠির ছাদে দাড়ানো মেয়েদের দিকে ইশারা করে বলে,
– কেমন?
– একদম বাঙ্গিমারা! সামির সিকান্দার স্টাইল!!

ছোট ছোট মেয়ে বাচ্চাগুলো পেছনে পেছনে দৌড়াতে শুরু করে। সামির বাইক স্টার্ট দিয়ে পুরো পাড়া ওভাবেই ঘুরতে থাকে। বাচ্চা মেয়েগুলো দৌড়ে তার পেছনে পেছনে ঘুরে বেরায় পুরো পাড়া।
কাশেম এলে তা দেখে হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে থাকে। লামু কাশেমের দিকে তাকিয়ে বলে,,
– ভাইজান যা করছে করতে দেন। আমরা বলিনাই। খালি বিচার দিছি। সে নিজে থেকেই যা করার করছে।

কাশেম সামির কে না ডেকে একা একাই চলে যায়। সেদিন লালকুঠি তে মেয়েরা পুরো বাড়ি সুন্দর করে সাজায়। বছরে দুইবার তারা নিজেদের ব্যাক্তিগত অনুষ্ঠান পালন করে। সেদিন বাহিরের অনেক মানুষ আসে। তাদের যদি কাওকে পছন্দ হয় তবে তারা সেই নারীকে কিনে নিয়ে যায়। লামু যখন নিজের মতো করে সাজছিল,, পেছন থেকে নিতা নামের একজন মেয়ে বলে,,

– মাহা আপা যদি বেঁচে থাকতো তবে হয়ত সামির ভাইকে বদলানো যাইতো তাইনা লামু?
– হয়ত।
– তবে মাহা আপা মরে নিশ্চিত শান্তি তেই আছে। ওই বাড়ির বউ হইয়া বাচার চাইতি মইরা যাওয়া অনেক শান্তির। তোমার কি মনে হয় মাহা কোনোদিনও সামিররে ভালোবাসছিল বা সামির ভাইজানি কি কোনোদিন ওরে ভালোবাসছিল বলে মনে হয়?
– ওদের ব্যাপারে আমি কি কইরা জানমু?
– তা-ই ইতো। তোমারে আজ অনেক সুন্দর লাগতেছে। আজ তোমারে নিতে আইবো কেউনা কেউ।

লামু আর কোনো কথা বললনা। পুরো লালকুঠি ভরে উঠলো আলোয় আলোয়। আনাগোনা হলো চেনা অচেনা অনেক লোকের। তারা নিঃসন্দেহে সবাই ধনী।
সামির নিজের জায়গায় চুপচাপ বসে রইল। এসব নিয়ে তার মাথা ব্যাথা কোনোদিনও ছিলো না। আজো নেই। লামুর দু একটা আবদার রাখতো কারণ, লামুটা দেখতে কিছুটা সামিরের মতো। বাহ্যিকভাবে চোখদুটোর মিল আছে। পার্থক্য লামু ফর্সা সামির শ্যামলা।

বড় কমলা পর্দা সরে গেলে একদল নারীর প্রবেশ হয়। তাদের সবার পড়নে একি রকমের পোশাক। গান শুরু হতেই দলবদ্ধ হয়ে তারা নাচতে শুরু করল। লামু তাদের সবার মধ্যবর্তী স্হানে।
তাদের দেখে মনে হচ্ছে যেন একটা ফুলের বাগান! তবে কেও তাদের সেই নজরে দেখেনা।
গন বাজতে শুরু করেছে সশব্দে,,,
~ phir akhiyan mein
Deed ke teri deep jala jana
Moohe chod ke jaane ke khatir hi
Laut ke ajaanaaa
Haaa
Gairr kee hamnava ho gayee
Kiun khafaa ho gayye
Ki tumse judaa hoke hum tabah ho gayee
…………..
সামির বসে বসে নিজের ফোন ঘাটাঘাটি করছিল। সাফিন তাকে জানায় তার এখানে কাজ নেই সে চাইলে যেতে পারে । তবে সামির যায়না। লালকুঠির ছাদে গিয়ে বসে থাকে।

লামু নিজের সাজ পরিবর্তন না করেই ছাদে যায় । গিয়ে সামির সিকান্দার এর পাশে বসে বলে,,,
– ভাইজান,, আমি চলে যাচ্ছি।
– কতোতে?
– দুই লাখ।
– কোথাকার?
– রাজশাহীর-ই। খুব একটা দূরেনা।
– তুই একা?
-হুমম। আর অনিন্দিতা কে চট্টগ্রামের এক লোক নিতে এসেছে।
– হুমমম।
– আসছি ভাইজান । ভালো থাকবেন।
-হুমমম।

লামু উঠে চলে যেতে লাগলে সামির তাকে অদ্ভুত ভাবে পিছু ডেকে বলে,,
– লামু ??? মন না চাইলে যাস না।
– আপনাকে ধন্যবাদ দেওযার মতো ভারী শব্দ আমার কাছে নাই ভাইজান। যখন সমস্যার কথা বলেছি আপনি শুনেছেন। অনেকবার সুযোগ দিয়েছেন, লামু ভালো না লাগলে যাস না। তবে এবার যাওয়া টা জরুরি ভাইজান। খোদা নাসিব রাখলে আবারো দেখা হবে। আসি।

কালকুঠুরি পর্ব ৪১

সেদিন রাতে লামু বিদায় নিয়ে চলে যায় । সামির নিজের ঘরে ফিরে ড্রয়ার খুলে আবারো প্যাকেটের ওপর প্যাকেট ড্রাগস সাজিয়ে রাখে।
সামনের দিনগুলো তার কেমন যাবে তা তার ঠিক জানা নেই। ঘুমের ঘোরে সামির আবারো সেই পুরোনো স্বপ্নের দেখা পায়,,
এক উত্তপ্ত মরুভূমির বুকে পিপাসার্ত সে একাই দাড়িয়ে । কোথাও কেও নেই। গলা ফাটিয়ে চিৎকার করছে,, মুখ দিয়ে রক্ত ছুটে বেরিয়ে আসছে কিন্তু কেও নেইই। কেওকি শুনতে পাচ্ছে না তার ডাক!

কালকুঠুরি পর্ব ৪৩

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here