কালকুঠুরি পর্ব ৪৩
sumona khatun mollika
দুপুরের দিকে গিয়ে ডাইনিং টেবিলে বসতেই সামনে খাবার থালা এগিয়ে দেয় নুসরাত। সিভান চুপচাপ খাচ্ছে। নুসরাত কে দেখে সামির চোখ কচলে আবারো তাকায় ।
– হয়েছে , নাটকের প্রয়োজন নাই। আমিই।
– কখন এসেছেন?
– কাল রাতে এসে পৌঁছেছি।
– ও,,
– জিজ্ঞেস করবেনা কেন চলে এসেছি?
– না।
– কেন?
– ইচ্ছে নেই। ভাই কোথায়?
– সকালে বড়ভাইয়ের সাথে বেরিয়েছে। এমপি পদের জন্য মনোনয়ন পাবে খুব সম্ভব।
– দাড়াবে বলেছে?
– হুমমম
– হয়ে গেছে এমপি। এটাতো পদোন্নতি ফ্যামিলি, পরবর্তী মেয়ের কে হবে সিয়াম সিকান্দার?
– না। তোমার ভাই মেয়র পদে দাড়াবেনা। তাহলে,,,
নুসরাত, সিভান, সাথি, ইতি আর রাহা সবাই সামিরের দিকে তাকিয়ে রইল। সামির এক লোকমা ভাত মুখে তুলে মাথা তুলে বলল,,
– অসম্ভব! আমি কোনোভাবেই ভোটে দাড়াবোনা। হোক মেয়র , এমপি, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী! কোনো বাঙ্গিই হবনা আমি।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
– বড় ভাই……
– কাওরে মারানির টাইম নাই। আমি বললাম আমার দিক না তাকাতে। ব্যাস।
সামির চলে গেলে রাহা বলল,
– এ এরকম ত্যাড়া কেন? সাফিন শুনলে রেগে বোম হয়ে যাবে।
সিভান প্লেটের দিকে মনযোগ রেখেই ব্যাকা স্বরে আওড়ালো,,
– ব্যাকা জন্যই ওটা সামির সিকান্দার ! বাবা কিচ্ছু বলবেনা।
– তুমি মনে হয় বেশি জানো,?
– বাবাকে না চিনলেও, কাকাকে ঠিকি চিনি। যদি তার থেকে দূরে সরে থাক সেটাই ভালো। ভালোর জন্য বলছি।
সিভান স্কুলে চলে যায়। নুসরাত টুকটাক করে হাঁটতে হাঁটতে সামিরের ঘরে চলে যায়। ঘরটা বদলে গেছে। মাহা সব গুছিয়ে রাখতো এখন সব উল্টোপাল্টা। তবে সামির মাহার জামাকাপড় গুলো ফেলেনি। যেযে যার যার স্হানে আছে। নুসরাতের বুক ফেটে কান্না চলে আসে মাহার সাথে তার বেশ ভাব হয়েছিল। সবার সাথে খুব কাছের আচরণ করা মেয়ে টা শুধু সামিরের জন্যই ছিল কঠোর তবে বাকি সবাইকে সে নিজের করে নিয়েছিল।
নুসরাত আর সিয়াম বিদেশে যাওয়ার আরেকটা কারণ হলো নুসরাত অন্তঃসত্ত্বা ছিল। তার স্বাস্থ্যের বিবেচনায় জবরদস্তি সিয়ামকে রাজি করিয়েছিল সে। সাথে করে ফুটফুটে এক কন্যা সন্তান বাড়ি এসেছে। সামিরকে দেখাতে চেয়েছিল সামির তার কথা গ্রাহ্য করলনা।
নুসরাত ভেবেছিল সিয়াম শুধু তার কথায় বিদেশ যেতে রাজি ছিল কিন্তু তার সবচে বড় কারণ ছিল ব্যাবসা ঘিরে।
সাফিন তাকে কি এক কাজেই পাঠিয়েছিল৷ ওখানের একজনের সাথে ড্রাগস ডিল করার জন্য।
এসবকিছু ভেবে সামিরের খাতাটা তুলে দেখে সামির পুরো খাতাজুড়ে শুধু চোখের ছবি অংকন করেছে৷ সামান্য জোড়া ভুরুর অসম্ভব সুন্দর দুই চোখ। মাঝখানে একটা ছবি দেখে নুসরাত একটু গাল টেনে হাসলো,,,
সামির মাহার শাড়ি পরা ছবিটাও আকিয়েছে। সিভানের থেকে রং পেন্সিল নিয়েছে খুব সম্ভব,, কারণ সামির বেশিরভাগ সময় শুধু স্কেচ অংকন করে। রঙের ব্যাবহার করেনা খুব একটা৷
সবুজ রঙের শাড়ি পরা মাহার চেহারা টা খুব সুস্পষ্ট ভাবে এঁকেছে সামির৷ দেখে মনে হচ্ছে ছবি তুলে প্রিন্ট করিয়ে আনা। নুসরাত সারাটা ঘর চোখ ঘুরিয়ে দেখল,, সামিরের জীবনটা পুরোই এলোমেলো হয়ে গেছে। মাঝখানে যখন মাহা এসেছিল ,, তার ঘরের পর্দা, বিছানার চাদর, মশারি সব বদলে দিয়েছিল । কারণ মাহার সবুজ রঙ খুব একটা পছন্দ ছিলনা৷
সামির আবারো চারপাশে সবুজ রঙে ভরে তুলেছে,, বিছানার চাদর, বালিশের কভার, জানালার পর্দা, ঘরের দেয়ালের রঙ পর্যন্ত সবুজ! নুসরাত সামিরের ঘরটা গোছায়না। বদলায়না কিছুই।
নিজের ঘরে চলে যায় ।
সামির ভার্সিটি গিয়ে জানতে পারে একদল ছেলে – মেয়ে টিচারদের সাথে মারপিট পর্যন্ত করতে গিয়েছিল । ভীরের মধ্যে অনেকে মুখগুলো বাংলার পাঁচের মতো করে আছে,, সামির যেতেই সবাই তাকে ঘিরে ধরে।
– কি হয়েছে?? কাইশসা? এদের এই অবস্থা কেন?
কাশেম আর লেমন এগিয়ে গিয়ে বলে,,
– সাগর স্যারের ছেলেরে পয়েন্ট না থাকার পরেও , সিজিপিএ কম থাকার পরেও সে ইন্জিনিয়ারিং এ জব পাইলো কিন্তু এই ছুড়ার পয়েন্ট বেশি থাইকেও এরে দিলনা। ।
– কেন?
– কেমনে দিবে ভাই, অরতো কোটার জোড় আছে। এই ছুড়ার তো নাই।
সামির এগিয়ে গেল ছেলেটা কান্নাকাটি করছে দেখে খুবই বিরক্ত হলো। মুখের ঘাম মুছে সামির বুকে হাত গুজে দাড়ালো। চোখের ইশারা দিতেই ছেলেটা নিজেই বলতে শুরু করল,,
– আমার নাম তৈমুর । জবটা আসলেই খুবই দরকার ছিল । বাবা মরেছে ৩ মাস ছোট একটা বোন আছে, মা আছে,, টেনশনে কম ছিলাম যে পড়াশোনা তো শেষের দিকে । ইন্টারভিউ দিলে টিকে যাব। পুরো বাসার মানুষের দায়িত্ব এখন আমার ঘাড়ে। আমি টিকলাম পয়েন্টও ঠিকঠাক কিন্তু আমাকে সরিয়ে আমার চেয়ে অনেক কম পাওয়া ছাত্র কে জবটা দিয়ে দেওয়া হলো।
– সেটা তোর বাপ দাদাদের দোষ । অর বাপের শিক্ষক কোটা আছে । তর কিছু নাই। চ্যাগায়া লাভ নাই। এডিতো নতুন কিছু না। এত গোলযোগ এর কি হইলো? বোজা যদি না বইতে পারিস কালকুঠুরি তে গিয়ে মরে যা। পুরুষ মানুষের জীবন হয়ই বোঝা বহনের লাইগা ।
সবাই একে অপরের দিকে তাকাতাকি করল। সামিরের মুখের ওপর কিছু বলার সাহস হচ্ছে না । বহুদিন যাবত এমনটা হয়ে আসছে। সামিরতো ভুল কিছু বলেনি। সেদিনকার মতো পরিবেশ ঠান্ডা হয়।
ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে সামির পদ্মার পাড়ে চলে যায়। নদীতে আজ তেমন ঢেউ নেই। শান্ত জলের তরঙ্গ । সামির একদৃষ্টে কিছুক্ষণ চেয়ে রইল। কাশেমকে বাড়ি ফিরে যেতে বলল।
সিকান্দার বাড়িতে কোনো জনমানবের সাড়া নেই। সাথি ইতিকে নিয়ে পার্কে গেছে খুব সম্ভব। সিভান এখনো ফিরেনি। রান্নাঘরে টুকটাক করছে জরিনা আর সুফি বেগম । সামির সোজা সিঁড়ি ডিঙিয়ে নিজের ঘরে চলে গেল। জামাকাপড় বদলে বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই মনে হলো কোথাও থেকে অদ্ভুত বেড়ালের মতো আওয়াজ আসছে৷ আওয়াজ ধরে টুকটুক করে সিয়ামের ঘর পর্যন্ত পৌছে যায়।
বাহাতে ধাক্কা দিয়ে ঘরে ঢুকতেই অজানা এক বাতাসে পুরো দেহ শিউরে ওঠে। সিয়ামের বিছানার ওপরে দুই ফুটফুটে কন্যা শিশু। যথাসম্ভব নবজাতক। সামির ধির পায়ে এগিয়ে যায় । বুকের বাপাশটা কেমন চিনচিন করছে।
এগিয়ে গিয়ে দেখে দুটো বাচ্চার মধ্যে তুলনামূলক তফাত। একজন চরম ফর্সা আর একজন একটু শ্যামলা। একজনের চোখের নিচে একটা কুচকুচে তিল আছে। সামিরের বামগালেও একি জায়গায় তিল আছে। খোচাখোচা দাড়ির জন্য বোঝা যায় না।
ফর্সা বাচ্চাটা ঘুমিয়ে আছে। আর শ্যামলাটা একাই হাত পা নাড়িয়ে খেলাধুলা করছে। সামির ধির পায়ে এগিয়ে গিয়ে শ্যামলা বাচ্চাটার গালে আস্তে করে টোকা দেয় । বুঝতে পারে এরা হয়ত নুসরাত আর সিয়াম এর বাচ্চা হবে। হয়ত জমজ, কিন্তু শ্যামলা জন একটু ছোট দেখাচ্ছে । ওর বয়স হয়ত ১ মাস মতো হবে।
সামির তার গালে হাত লাগাতেই যেন সে চরম রাগান্বিত হলো,, চোখমুখ কুচকে তার রাগ প্রকাশ করল। সামির ভ্রু উচিয়ে বলল,,
– এহ কি রাগ! নাম কি রে তোর? বয়স কত? কথা বল, বেড়ালের মতো ম্যাও ম্যাও করছিস কেন? কথা বল নয়ত এরম চ্যাগাইস না।
– তুমি কি মদ গিলে এসেছ?
নুসরাতের কথায় সামির পেছন ঘুরে তাকায় । মাথা ঝোকায় যার অর্থ হ্যা।
– বাহ কি সুন্দর দৃশ্য,, মদ গিলে টাল হয়ে এসে ১, দেড় মাসের বাচ্চাকে কথা বলতে বলছে। যা কিনা সামির সিকান্দার এর পক্ষেই সম্ভব ।
সামির বাকা করে হাসলো। এখন আর আগের মতো নুসরাতের সাথে ঝগড়া করতে ইচ্ছে হয় না। সামির আঙুল দিয়ে ইশারা করে বলল,,
– এরা কারা?
- এরা বাচ্চা ।
– লে মারা,, আমিতো দেখতেই পাচ্ছি বাচ্চা,, পরিচয় কি?
– ওটা আমার আর এটা বান্ধবীর।
– তোমার??
– সকালে যদি জিজ্ঞেস করতে,, কেন বিদেশে যাওয়া,, তবে তখনি জানতে পারতে।
– ওহ। আচ্ছা। এর মা বাপ কোথায়?
– আছে। বাইরে আছে। দেখা করবে, ডাকবো?
– শখ নাই।
– হুমম
– নাম কি রেখেছ,, আলু আর মূলা?
– আমার মেয়ের নাম সিয়েরা। আর তোমার,, ওর নাম সামহা । ।
– সামহা,, সুন্দর নাম।
– আর সিয়েরা?
– সিয়েরা বাঙ্গিমারা সুন্দর । যতই হোক সিকান্দার তো।
সামির উঠে চলে যেতে লাগলে ডানহাতের ঘড়ির সাথে সামহা বাচ্চাটার জামা আটকে যায় । সামির প্রথমে একটু বিরক্ত হয়ে জোরে করে টান মেরে খোলার জন্য কিন্তু পরক্ষণেই আলতো করে জামার থেকে ঘড়িটা ছাড়িয়ে নেয় । তারপর নিজেই বলে,,
– আমি মানুষ টা ভালো নইরে বিল্লি,, আমার স্পর্শে সবাই ভষ্ম হয়ে যায়।
বলে সামির নুসরাতের ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। যাওয়ার সময় আবারো একবার উকি দিয়ে বাচ্চাদুটোকে দেখে চলে যায় । নুসরাত যেন এতখন বড্ড কষ্টে মুখে হাসি ধরে রেখেছিল। এগিয়ে গিয়ে সামহা কে কোলে তুলে তার দিকে তাকিয়েই চোখের জল ফেলে বলল,,
– দেখেছ কি বলে গেল?? সামহা,, সুন্দর ।
অতপর বারান্দায় দাড়িয়ে থাকা ওড়নায় চেহারা ঢাকা এক মেয়ে বেরিয়ে এলো। মেয়ে টা নুসরাত কে বলল,,,
– এবারে নিয়ে যাই আপা। অনেক সময় তো হইলো। আপাজান টেনশন করবে।
– যাও। আর শোনো,, সামহার খুব ভালো করে যত্ন নেবে। খেয়াল রাখবে কেমন?
– জ্বে আপা। বলছিলাম আপা,,, আপনে যে ওইখানে গেছিলেন, কাওকে যেন বলবেন না।
– বলব না। সাবধানে যেও।
-জ্বি।
মেয়েটা সামহাকে কোলে তুলে বেরিয়ে যায় । সামির নিজের ঘর থেকে পিছু ডাকলে মেয়েটার কলিজা প্রায় খরা হয়ে যায়। ধিরে ধিরে তার দিকে এগিয়ে যায় সামির,,
– শোনো? তুমি ওর মা?
-জ্ব,, জ্বি।।
-ভয় পাচ্ছ কেন? একবার আমাকে দেবে?
-ক.. কেন?
– না, মানে, এমনি। ।।
পেছন থেকে নুসরাতের ইশারায় মেয়ে টা সামহাকে সামিরের কোলে দেয় । সামির প্রথমে দুদন্ড চোখ ভরে দেখে। বেড়ালছানার মতো পুচকি মানব সন্তান টি তার দিকে কেমন অদ্ভুত মায়ারী দৃষ্টে চেয়ে আছে। হাত পা ছুড়াছুড়ি করে সামিরের বুকে বেশ জোড়ে একটা লাত্থি কষে দিল মেয়ে টা। সামির তার দিকে চেয়ে একটা বাকা হাসি দিয়ে বলে,,,
-জানো, আমারো হয়ত তোমার মতো একটা মেয়ে থাকতো। হয়ত,, । ভালো থেক।
বলেই বাচ্চাটাকে সামির তার মাকে দিয়ে দেয় । মেয়ে টা যতখনে সামহাকে নিয়ে বেরিয়ে যায় সামির একদৃষ্টে চেয়ে থাকে। কেন যেন বুকের চাপা পাথরটা নড়াচড়া শুরু করেছে,, ভার কেন বেরে যাচ্ছে । সামির সেখান থেকে সোজা নিজের ঘরে চলে গেল৷ নুসরাত নিজের ঘরে গিয়ে বসে সিয়েরার পাশে শুয়ে একজনকে কল লাগালো। ওপাশ থেকে এক মেয়েলী কণ্ঠ ভেসে এলো,,
– সিয়েরা ভালো আছেতো?
-হ্যা। সামহাকে দেখে রেখ।
– জ্বি। সাবধানে থাকবেন। ফি আমানিল্লাহ ।
ফোন কাট হতেই নুসরাত সিয়েরার পাশে শুয়ে ঘুমিয়ে গেল। যে মেয়ে টা এসেছিল তার নাম সেতু। নিভ্রিতা সরদার সেতু। ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ছে। সঙ্গের বাচ্চাটার নাম সামহা ।
সামির বর্তমানে প্রায় দিনেই সারাদিন পড়ে পড়ে ঘুমায় । সারা রাত হুতুম পেঁচার মতো বাইরে বাইরে ঘোরে। আগের জীবনের মতোই ছন্নছাড়া, বেয়ারা, এলাকার বখাটে ফুটো মস্তান । তাকে সার্বক্ষণিক খাটানোর জন্য রাগিব দেওয়ান নেইতো কি হয়েছে রুবেল দেওয়ান তাকে ঠিকি টাইম টু টাইম খাটিয়ে নেয় । সিভান গিয়ে তার পাশে সটান হয়ে শুয়ে পরে।
জীবন সবার জন্য এক গতির হয়না। ফুল স্পিডে গাড়ি চালানোর জন্য সামির সিকান্দার এর জীবন এখন আচ্ছা মতো জীবনদুর্ঘটনায় আহত। সামির সিকান্দার নিজেই উল্টো ঘুরে একা একাই আওড়ায়,,,
– আচ্ছা আমার কি কষ্ট হয়? হয়না তো না? আমার কি করে কষ্ট হয়! আমি খারাপ । খারাপের কোনোদিন ও খারাপ লাগেনা।
সিভানও আনমনে জবাব দেয়,,
– না,, তোমার কষ্ট হয়। কারণ তুমি সামির সিকান্দার একজন কাঙাল।
– বলদের বাচ্চা, *৷ আমি কাঙাল? কি নেই আমার,, বাড়ি গাড়ি টাকা পয়সা পাওয়ার ট্যালেন্ট সব আছে সব।
– কিছুই নেই কাকা। তোমার জীবন একটা ফাঁকা কলসি। হয়ত সেটা সোনার তবুও ফাঁকা । তুমি কাঙাল আমিও কাঙাল । আমরা একটু সামান্য এক পিঞ্চ ভালোবাসার কাঙাল কাকা।
সামির কোনো জবাব দেয় না। কাশেমে কল করে জানায় সামির ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট মাস্টার্স কমপ্লিট করেছে। রেজাল্ট শুনে তার নিজেরি হাহাকার করে হাসতে ইচ্ছে করছে। ঠিক যেভাবে হাসলে মানুষ তার জন্য একটু সমবেদনা পোষণ করে।
কেও কি বোঝে সব থেকেও কিছুই না থাকার যন্ত্রণা! আঘাত যখন মন মস্তিষ্ক ফুড়ে হৃদয়ে হানা দেয়,, মানুষ তখন কাঁদেনা, হাসে পাগলের মতো হাসে, হাহাকার করে হাসে।
কালকুঠুরি পর্ব ৪২
সামির তার রহস্যময় চোখদুটো এলোমেলো করে সিভানকে বলে,,
~ এই আহত থেকে কি৷ নিহত হওয়া যায় না?
~বাইরে আলো, অন্তরে কিছুই নায়,
ভেতর পূর্ণ আন্তঃসারশূণ্যতায়।
