কোন গোপনে মন ভেসেছে পর্ব ৫
মিসরাতুল রহমান চৈতী
রাতুল চলে গেছে অনেকটা সময় কেটে গেছে। চারো দিকে মাগরিবের আজান ও হচ্ছে। চৈতী ঠিক করলো এখনি বের হতে হবে। রুমের দরজাটা লক করে সোজা ওয়াশরুমে চলে গেলো। ওয়াশরুমের জানালার কাছে গিয়ে চৈতী ধীরে ধীরে জানালার কাঁচ খুলতে শুরু করলো। প্রতিটা কাঁচ খুলতেই ঠান্ডা বাতাসের প্রবাহ তার গালে এসে লাগলো। বাইরের আকাশ তখন গোধূলির আলোয় মাখামাখি, একটু আগে সূর্য অস্ত গেছে, কিন্তু তার রঙিন আভা এখনও মিশে আছে দিগন্তজুড়ে। দূর থেকে মাগরিবের আজানের সুর ভেসে আসছে, পরিবেশটা আরও রহস্যময় হয়ে উঠেছে।
চৈতী জানালাটা পুরোপুরি খুলে নিচের দিকে তাকালো। তিনতলার এই জানালা থেকে বাইরের রাস্তা স্পষ্ট দেখা যায়। আশপাশে কেউ নেই, শুধু কিছু পথচারী দ্রুত হেঁটে যাচ্ছে। তার মন দুশ্চিন্তায় ভারী হয়ে আছে, মনে হচ্ছে যেন কেউ তাকে অনুসরণ করছে, কেউ তাকে নজরে রেখেছে।
সে দ্রুত জানালা দিয়ে নিচে নামার জন্য তৈরি হলো। হাতল শক্ত করে ধরে এক পা বাড়াতেই বুকের মধ্যে এক অজানা ভয় কেঁপে উঠলো। এতদূর এসে পিছু হটার উপায় নেই! শ্বাস গভীর করে টেনে নিয়ে চৈতী ধীরে ধীরে জানালার রড ধরে নামতে লাগলো। হাত কাঁপছিল, কিন্তু ভয়কে জয় করেই এগোতে হবে। এক পা, দুই পা করে নিচের দিকে নামছে, হঠাৎই পায়ের নিচের অংশটা পিছলে গেল!
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
— “আহ!” একটা চাপা চিৎকার বেরিয়ে এলো তার মুখ থেকে।
তবে সে দ্রুতই নিজেকে সামলে নিল। নিচে একটা ছাদ ছিল, সেখানেই ধপ করে নেমে এলো। কিছুক্ষণ শ্বাস নিলো, বুক ধড়ফড় করছে। উঠে দাঁড়িয়ে চারপাশে তাকালো— কোথাও কেউ নেই।
“এখনই বের হতে হবে!” নিজেকেই মনে করিয়ে দিলো চৈতী।
চৈতী আর কিছু ভাবতে পারল না, শুধু একটাই চিন্তা— এখান থেকে পালাতে হবে! সে দিকবিদিকশূন্য হয়ে দৌড় দিলো। পায়ের স্যান্ডেল ও নেই। তার পড়নে তখনও রাতুলের শার্ট আর থ্রি-কোর্য়াটার প্যান্ট। তার চোখ যতটুকু যাচ্ছে ততটুকু দৌড়াছে।
দৌড়াতে দৌড়াতে হঠাৎ পা হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল, সঙ্গে সঙ্গে হাত-পা ছড়ে গেলো। চৈতী ব্যথায় কুঁকড়ে গেল, কিন্তু দম ফেলারও সুযোগ নেই। সে দ্রুত উঠে দাঁড়াতে চেষ্টা করলো, কিন্তু হাতে পাথরের ছোট ছোট টুকরো বিঁধে গেছে, পা থেকেও গরম গরম রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।
তারপরও সে দাঁতে দাঁত চেপে উঠে দাঁড়ালো। শ্বাস অল্প অল্প কাঁপছে, চারপাশে তাকিয়ে সে আবার দৌড় লাগালো।
চৈতী দৌড়াতে দৌড়াতে একটা সরু গলির সামনে এসে দাঁড়াল। এক মুহূর্ত সময় নিলো না, গলিটার ভেতরে ঢুকে পড়লো। অন্ধকার আর স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে বুকের ধুকপুকানি আরও বেড়ে গেল। রাস্তার ধারের ভাঙাচোরা দেয়ালগুলো আরও ভয়ঙ্কর লাগছিল।
কথায় আছে, “যেইখানে বাঘের ভয়, সেইখানেই সন্ধ্যা হয়।”
চৈতীর ক্ষেত্রেও যেন তাই-ই হলো।
ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে রাতুল— সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি আর গায়ে কালো চাদর জড়ানো। এক হাত গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে নবাবী কায়দায় দাঁড়িয়ে আছে সে, ঠোঁটে বাঁকা হাসি। চোখে অদ্ভুত এক দৃষ্টি, যেন সে নিশ্চিত ছিল চৈতী এখানেই আসবে।
রাতুলকে দেখে চৈতী নদীর স্রোতের মতো উল্টো পথে দৌড় দিতে যাবে, ঠিক তখনই চারপাশ থেকে তার গার্ডেরা এসে ঘিরে ধরলো তাকে!
রাতুল ধীরেধীরে এগিয়ে এসে সিগারেটটা ঠোঁটে নিলো, তারপর চৈতীর একদম সামনে এসে দাঁড়িয়ে গেলো। মুহূর্তের মধ্যেই শক্ত হাতে ওর কোমর চেপে ধরে ফিসফিস করে বললো—
“ইউ আর নটি গার্ল! শুধু শুধু এত কষ্ট করলে, শেষমেশ ধরাই তো পড়লে! আমি কি বলিনি? আমার থেকে পালানোর চেষ্টা করলে আমি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করবো?”
চৈতী ক্ষোভে কেঁপে উঠলো, হাত দিয়ে রাতুলের ধাক্কা দিয়ে সরানোর চেষ্টা করলো।
“ছুঁবেন না আমায়! আপনার অপবিত্র ছোঁয়া আমার ঘৃণা লাগছে… বিষাক্ত লাগছে!”
রাতুল মুচকি হাসলো, ঠোঁটের কোনায় দুষ্টু এক খেলা।
“নো ম্যাটার, জান! আমি তোমাকে পবিত্রভাবেই ছোঁবো! চলো, আজই বিয়ে করবো আমরা গাড়িতে বসেই, আর বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবে মসজিদের ইমাম!”
চৈতী আতঙ্কিত গলায় চিৎকার করে উঠলো, “অসম্ভব!”
কিন্তু তার কথার তোয়াক্কা না করেই রাতুল চোখের পলকে ওকে তুলে কাঁধে নিয়ে নিলো।
চৈতী স্তব্ধ। ওর মুখের বুলিটাও যেনো হারিয়ে গেলো।
চৈতী কে কাঁধে করে নিয়ে ঠাস গাড়ির সিটে ফেলে তারপর ভালো করে সিট বেল্ট টা বেঁধে দিয়ে “…রাতুলের গা থেকে থাকা চাদরটা চৈতীর গায়ে আবৃত করে দিলো।” মুখে তার তখনো চির পরিচিত বাঁকা হাসি।
গাড়ির দরজা ঠাস করে বন্ধ করে দিল রাতুল। এক মুহূর্ত চৈতীর বিমূঢ় মুখের দিকে তাকিয়ে রিভার্স গিয়ারে হাত রাখলো, তারপর ধীরে ধীরে গাড়িটা রাস্তার দিকে এগিয়ে নিয়ে গেলো।
চৈতী সিটবেল্ট খোলার চেষ্টা করছিল, কিন্তু শক্ত করে বাঁধা। ওর নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছিল, মাথায় একটাই চিন্তা— এবার কি সত্যিই কিছু করার নেই? এখান থেকে কি আর বের হওয়া সম্ভব না?
রাতুল তখনো গাড়ি চালাচ্ছিল নির্বিকারভাবে, একহাতে স্টিয়ারিং ধরে আরেক হাতে সিগারেট ধরিয়ে জানালার বাইরে ধোঁয়া ছেড়ে দিলো।
“কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে?” কাঁপা কাঁপা গলায় বললো চৈতী।
রাতুল হাসলো, চোখ সরিয়ে এক ঝলক চৈতীর দিকে তাকালো।
“সারপ্রাইজ, জান! তুমিই তো বললে, আমার ছোঁয়া বিষাক্ত লাগে। এবার সেটা পবিত্র করবো!”
চৈতীর বুক ধড়ফড় করে উঠলো। চৈতী দৃষ্টি ঘুরিয়ে গাড়ির দরজার লক খোলার চেষ্টা করলো, কিন্তু ব্যর্থ হলো। রাতুল একঝলক ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।
“বেহুদা চেষ্টা কোরো না, জান! আমার গাড়ি থেকে পালানো এত সহজ না।”
চৈতী ক্ষোভে ঠোঁট কামড়ে নিলো।
“আপনি যা করছেন, সেটা ভুল!”
রাতুল এবার সত্যিই হেসে ফেললো, চোখে উপহাসের ছাপ।
“ভুল? আমার কাছে তুমি পাওয়া মানেই সঠিক।”
চৈতী শ্বাস টেনে নিয়ে একদম স্পষ্ট গলায় বললো—
“আমি কখনোই আপনাকে ভালোবাসবো না, রাতুল!”
এই প্রথম রাতুলের চোখে সেই বাঁকা হাসি মিলিয়ে গেলো। সে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে, তার চোখের তীব্রতা যেন আরও বাড়লো। তারপর একটু মুচকি হাসি দিয়ে, ঠোঁটে আসল সেই অমায়িক সুরে বললো—
“সময় বলে দিবে, জান! তুমি কী চাও, আর আমি কী চাই…”
ওদের কথার মাঝে গাড়িটা এসে থামলো একটি মসজিদের সামনে। রাতুলের লোকেরা একে একে গাড়ি থেকে নেমে, মসজিদের দিকে পা বাড়ালো। মসজিদের ভিতরে ঢুকে তারা কিছুক্ষণ পরেই ইমাম সাহেবকে নিয়ে ফিরে এলো। ইমাম সাহেবের মুখে কোনো অভিব্যক্তি ছিল না, যেন তিনি পুরো পরিস্থিতি জানতেন এবং নিরুপেক্ষভাবে এগিয়ে আসছিলেন।
চৈতী একটুও সাড়া দিল না, কেবল নীরবে সব কিছু দেখছিল। তার মধ্যে এক অজানা শূন্যতা, এক ধরনের ভীতি তৈরি হচ্ছিল।
ইমাম সাহেব গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালেন। রাতুল জানালার কাঁচটি নামিয়ে দিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বললো—
“আমাদের বিয়ে দ্রুত পড়িয়ে দিন।”
ইমাম সাহেব কিছুক্ষণ চুপ থেকে, তার চোখে এক ধরনের দৃষ্টি ছিল। তারপর তিনি ধীরে ধীরে মাথা নেড়ে বললেন
“ঠিক আছে।”
তারপর তিনি গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে, নির্লিপ্তভাবে বিয়ের কাজ শুরু করলেন। চৈতী গাঢ় চুপচাপ হয়ে তার কথাগুলো শুনছিল, তার মধ্যে এক ধরনের ভয় আর অস্বস্তি তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছিল।
ইমাম সাহেব বললেন কত টাকা কাবিন লিখবো?
রাতুল ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো,, এমপি রাতুলের বিয়ে হচ্ছে কাবিন নামা হবে ১ কোটি টাকা।
সবাই চকিত নজরে তাকলো কিন্তু সেই তাকানো সেই উপেক্ষা করে বসে রইলো।
ইমাম সাহেব কবুল বলতে বললে,,, রাতুল এক নিঃশ্বাসে পাঁচ বার কবুল বলে ফেলে।
চৈতীর দিকে তাকিয়ে যখন বললো কবুল বলতে। চৈতী তখস চুপ ছিলো সে যেনো অন্য জগৎ এ হারিয়ে গেলো। বেশ কয়েকবার বলেও কবুল শব্দ টা বের করতে পারলো না।
যখন রাতুল দেখলো চৈতী কিছুই বলছে না, তখন তার মুখে এক করুণ হাসি ফুটে উঠলো। সে আর কোনো সময় নষ্ট না করে, চৈতীর সিট বেল্ট খুলে এক ঝটকায় তাকে কোলে তুলে নিলো। চৈতী অবাক চোখে তাকিয়ে থাকলো, তার সারা শরীর কাঁপছিল, অথচ কোনো শব্দ বের হচ্ছিল না। তার পুরো দেহ যেন ভয়ে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল।
রাতুল ধীরে ধীরে চৈতীর পেটের চারপাশে হাত বুলাতে লাগলো, তার চোখে এক অদ্ভুত জিদ। তারপর তার কণ্ঠে স্পষ্ট হুমকি, “বেবী, কবুল বলো, নয়তো কিন্তু একটা অঘটন ঘটিয়ে ফেলবো।”
চৈতীর চোখে অশ্রু জমে উঠেছিল, বুকের মধ্যে একটা চাপ অনুভব করছিল। সে নিজেকে মুক্ত করতে চাইল, কিন্তু কীভাবে তা বুঝতে পারছিল না। তার ঠোঁটে আসা কথাগুলো যেন আটকে গিয়েছিল, সে কেবল এক কঠিন বাস্তবতার মধ্যে আটকা পড়ে ছিল।
চৈতী অনেক কষ্টে কাঁপা কাঁপা গলায় ধীরে কন্ঠে কবুল বললো তিনবার।
ইমাম সাহেব ধীর কণ্ঠে বললেন, “বিয়ে সম্পন্ন হলো, আলহামদুলিল্লাহ।”
এই শব্দগুলোর পর চৈতী কিছুটা শ্বাস নিলো, কিন্তু তার মনে কোনো শান্তি ছিল না, শুধু একটা চাপ অনুভব হচ্ছিল।
গাড়ি চলতে থাকল, রাতুলও তার পাশেই বসে ছিল, সিগারেটের ধোঁয়া ধীরে ধীরে বাইরে বের হয়ে যাচ্ছিল। চৈতী চোখে অশ্রু জমিয়ে, হতাশার মাঝে তাকিয়ে ছিল।
সে মাথা তুলে রাতুলকে এক নজর দেখে বললো, “আপনি আমাকে শিকল দিয়ে বাঁধতে পারবেন না, রাতুল।”
রাতুল কিছুটা চমকে গেল, কিন্তু তার মুখে সেই বেয়াড়া হাসি আরেকবার ফুটে উঠল। “ভালো, চেষ্টা করো, জান!”
রাস্তা ঘাট পেড়িয়ে গাড়িটি গেট দিয়ে ঢুকে থামলো বাড়ির বাগানে।
গাড়িটা এসে থামতেই রাতুল দরজা খুলে নামলো। তারপর ধীর পায়ে গাড়ির পাশ ঘুরে এসে চৈতীর দরজাটা খুললো। চৈতী একদম নড়ল না, তার মুখ শক্ত, চোখে ঘৃণা আর অভিমান গাঢ় হয়ে জমেছে।
“নামো,” রাতুল গম্ভীর কণ্ঠে বললো।
চৈতী তাকিয়ে রইলো তার দিকে, যেন প্রতিটা সেকেন্ডের জন্যই যুদ্ধ চলছে তাদের মাঝে।
রাতুল এবার আর অপেক্ষা করল না, হাত বাড়িয়ে চৈতীর কব্জিটা ধরে টান দিয়ে নামিয়ে আনলো। চৈতী হোঁচট খেয়ে সামনের দিকে এগিয়ে এলো, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে সামলে নিলো।
“এখানে নিয়ে এসেছেন কেন?” তার কণ্ঠ ধরা ধরা, কিন্তু দৃঢ়।
“আমার বউকে তো আমার বাড়িতেই আনবো, তাই না?” ঠোঁটের কোণে সেই বাঁকা হাসি, চোখে চিরচেনা দৃষ্টি।
“আমি আপনার বউ নই!” চৈতী দাঁতে দাঁত চেপে বললো।
রাতুল এবার সরাসরি তার চোখে চোখ রাখলো। “বিয়েটা হয়েছে, কাবিননামা সাক্ষী। তুমি স্বীকার করো আর না করো, তুমি এখন আমারই!”
চৈতীর শরীর জ্বলে উঠলো রাগে। সে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে পেছনে সরে গেলো।
রাতুল চৈতীকে কোলে তুলে নিয়ে ছুটল বাড়ির অন্দরমহলের ভিতরে।
চৈতী চিৎকার করে উঠল, “আমাকে নামান!
কিন্তু রাতুল কোনো কথা না বলে দৃঢ় হাতে ওকে শক্ত করে ধরে অন্দরমহলের দিকে এগিয়ে যেতে থাকল। বাড়ির কাজের লোকেরা অবাক চোখে তাকিয়ে রইল, কেউ কিছু বলতে পারল না।
রাতুল সোজা সিঁড়ি বেয়ে উপরের দিকে উঠতে থাকল, আর চৈতী ওর বুকের ওপর আঘাত করতে লাগল, হাত-পা ছোঁড়াছুঁড়ি করতে থাকল।
“ছাড়ুন আমাকে ! বলছি ছাড়ুন!”
রাতুল এবার গম্ভীর স্বরে বলল, “যত নড়াচড়া করবে, তত বেশি কষ্ট পাবে, চৈতী।”
চৈতীর হাত থেমে গেল, ওর শ্বাস দ্রুত উঠানামা করছিল। ও বুঝতে পারছিল, এই লোকটাকে জোর করে হারানো যাবে না।
রাতুল এক ধাক্কায় দরজা খুলে রুমে ভেতরে ঢুকে সোজা ওয়াশরুমে নিয়ে গিয়ে শাওয়ার টা ছেড়ে দিয়ে শাওয়ারের নিচে দাঁড় করিয়ে দিয়ে তার গা এ রাতুলের চাদর টা ছুঁড়ে ফেলে দেয় ওয়াশরুমের ফ্লোরে।
চৈতী হতভম্ব হয়ে গেল। ঠান্ডা পানির ধাক্কায় ওর পুরো শরীর কেঁপে উঠল। শাওয়ার থেকে টানা পানি ঝরছে, ভিজিয়ে দিচ্ছে ওর চুল, মুখ, শরীর।
“রাতুল, আপনি—”
চৈতী হতভম্ব হয়ে গেল। ঠান্ডা পানির ধাক্কায় ওর পুরো শরীর কেঁপে উঠল। শাওয়ার থেকে টানা পানি ঝরছে, ভিজিয়ে দিচ্ছে ওর চুল, মুখ, শরীর।
“রাতুল, তুমি—”
ওর কথা শেষ হওয়ার আগেই রাতুল সামনে এগিয়ে এলো, চোখে ভয়ঙ্কর এক দৃষ্টি।
“তোমার ঘৃণা, তোমার জেদ, সব ধুয়ে ফেলতে হবে, জান! আজ থেকে তুমি শুধু আমার!”
চৈতী চিৎকার করে উঠল, ” আমি আপনাকে কখনোই ভালোবাসব না!”
রাতুলের ঠোঁটের কোণে সেই চিরচেনা বাঁকা হাসি ফুটে উঠল। সে ধীরে ধীরে হাত বাড়িয়ে চৈতীর ভেজা চুল সরিয়ে দিল, ওর মুখের দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
“ভালোবাসা পরে দেখো, চৈতী। আপাতত আমার হওয়াটা স্বীকার করে নাও!”
–”রাতুল এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে চৈতীর মুখপানে ভেজা মুখটা যেনো দেখে মনে হচ্ছে কোন এক সরোবরে ফুটে উঠা কোন এক সদ্য পদ্ম ফুল।
যার পাপড়িগুলো এখনো শিশিরে ভেজা। চৈতী এক মুহূর্তের জন্য থমকে গেল। রাতুলের গভীর চোখের দৃষ্টি তার হৃদয়ের গভীরে গেঁথে যাচ্ছে।
চৈতীর থরথর করে কেঁপে উঠা ঠোঁটের দিকে নেশা ভরা চাহনি দিয়ে তাকিয়ে রইলো। তারপর হুট করে ঠোঁটের সাথে ঠোঁট মিলেয়ে গভীর আলিঙ্গনে চুম্বনে লিপ্ত হলো।
চৈতী কে এমন ভাবে ধরেছে চৈতী নাড়াচাড়া করতেও পারছে না। অতিরিক্ত ভয়ে-নির্ভীক হয়ে সে চেতনা হারিয়ে ফেলে।
কোন গোপনে মন ভেসেছে পর্ব ৪
রাতুল যখন দেখলো সে চেতনা হারিয়ে ফেলেছে তখন সে চৈতীর ভিজন্ত জামা-কাপড় খুলে একটা টাওয়েল টা শরীরে পেঁচিয়ে তারপর রুমে নিয়ে এসে বেডে শুইয়ে দিলো।