চেকমেট পর্ব ২৬
সারিকা হোসাইন
পুব আকাশে ঘন ঘন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে নিঃশব্দে।মেঘের ঘন কালো আস্তরণ ধীরে ধীরে জালের ন্যয় বিস্তৃতি লাভ করছে পুরো আকাশ জুড়ে।থোকা থোকা মেঘ রাশি ক্ষীণ ঝাপসা আলো বিলিয়ে দেয়া রুপোলি চাঁদ কে গভীর মমতায় ঢেকে নিলো।মুহূর্তেই গগন কাঁপিয়ে ঝরঝর শব্দে ঝরে গেল হীম ধারা।
সারফরাজ একটুও চমকালো না হঠাৎ জল স্পর্শে।সে এখনো কাতর দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে বেলকনির দিকে।রূপকথা সারফরাজ এর ঝাপসা নীল চোখ জোড়ায় দৃষ্টি রেখে অভিমানে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে রয়েছে।মনে কোনো দ্বিধা সংশয় কিচ্ছুটি নেই।শুধু অল্প পরিমাণ অভিযোগ আর অনুযোগ।
সারফরাজ এর উম্মুক্ত শক্ত বক্ষে বর্ষণ ধারা আছড়ে পড়ছে সমান তালে।সেগুলোর উপর রূপকথার সামান্য ঈর্ষা হলো বোধ হয়।বাঁকা চোখে সারফরাজ এর লোম হীন প্রশস্ত বুকে একবার নজর বুলিয়ে বিড়বিড় করে বলে উঠলো
‘ওই বুকে আমি আরো আগুন জ্বালিয়ে পুড়ে কয়লা বানিয়ে দেবো।বৃষ্টির জলের সাহস কতো।
ঘন বৃষ্টির ঝিরি ঝিরি ধারা ভেদ করে এবার আর রূপকথার মায়াবী মুখশ্রী দেখতে পেলো না সারফরাজ।নেশায় পুরো শরীর মাথা টলছে।ঝাপসা চোখে বৃষ্টির জলের পানে তাকিয়ে বুক চেপে ধরে সারফরাজ এলোমেলো গলায় বলে উঠলো
“শালার হৃদয়ের আগুন টা বৃষ্টির জলেও নিভে না।কি কঠিন দহন মাইরি।
টলতে টলতে ভেজা আঙিনার ঘাসের উপর হাটু মুড়ে বসে গেলো।এরই মাঝে বিকট শব্দে বাজ পড়লো।তাতে সারফরাজ তাচ্ছিল্য হেসে বললো
“বুকের ভেতরের হাহাকার এর আওয়াজ বাইরে পর্যন্ত তর্জন গর্জন করে শব্দ তুলছে।পাঁজরের নীচে এতোই জন্ত্রনা বুঝি?
সারফরাজ কে পরে যেতে দেখে আর অভিমান করে দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না রূপকথা।সদর দরজা খোলা বৃষ্টির জল ঠেলে দৌড়ে এলো সারফরাজ এর সামনে।এরপর মিহি স্বরে ডাকলো সারফরাজ!
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
সারফরাজ রূপকথার ডাক শুনে উপরে মাথা তুলে তাকালো।এরপর গাড়ির ফ্রন্ট বাম্পারে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ালো।বৃষ্টির জলে রূপকথার কাঁধ সম চুল গুলো লেপ্টে আছে।চোখ মুখ সদ্য প্রস্ফুটিত শিশির স্নানে ভেজা গোলাপের ন্যয় ঠেকলো সারফরাজ এর কাছে।রূপকথার স্বর্গীয় রুপে মন্ত্রমুগ্ধের ন্যয় রূপকথার দিকে ঝুঁকে দাঁড়ালো সারফরাজ ।এরপর দুই হাতের আজলায় রূপকথার কোমল মুখশ্রী ধরে কম্পিত গলায় বলল
“দ্যা রিয়েল প্রিন্সেস অফ ফেইরীটেইল।
রূপকথা সারফরাজ এর চোখের দিকে তাকিয়ে ভারী স্বরে শুধালো
“তুমি মদ খাও?
সারফরাজ মাথা ঝাঁকালো।এরপর ব্যাথাতুর মুখে বলে উঠলো
“বুকের এখানটায় অনেক অনেক যন্ত্রণা রূপকথা।সেই যন্ত্রণা কাউকে বলা যায় না।এই যে কোটি কোটি টাকার গাড়ি,এই যে গায়ের দামি পোশাক টাকা পয়সা রাজত্ব কোনো কিছুই বুকের এই যন্ত্রনা কমাতে পারে না।দগদগে হৃদয় খালি ছটফট করে।কেউ খোঁজ রাখে না।
রূপকথার মায়া হলো সারফরাজ এর জন্য।সে আলগোছে সারফরাজ এর বুকে মাথা ছুঁইয়ে শুধালো
“এবার?
বোকার মতো অল্প হাসলো সারফরাজ।এরপর ধরা গলায় বলল
“আরাম লাগছে।
রূপকথা সারফরাজ কে শক্ত হাতে জড়িয়ে অভিমানী গলায় বলল
“কাল কষ্ট দিয়েছিলে কেনো?
“আমি খারাপ মানুষ তাই।
“তুমি খারাপ?
“হু।আমি মনস্টার,দৈত্য, দানব উশৃঙ্খল পশু।
রূপকথা সারফরাজ এর ঠোঁট এ সরু আঙ্গুলি চেপে ধরে বলে উঠলো
“হুশ পঁচা কথা বলে না।
ঠোঁটে রূপকথার আঙুলের শীতল স্পর্শ পেয়ে কেঁপে উঠলো সারফরাজ।হৃদ গতি তেজ হলো তিন গুণ হারে।বুকের খাঁচা ভেঙে এই বুঝি হৃদপিণ্ড বাইরে বেরিয়ে আসে।রূপকথার হাতের কব্জিতে চেপে ধরে সারফরাজ নেশাক্ত গলায় বলল
“আমি পাপী।আমি আর মানুষ নেই রূপকথা।আমার কাছে এসো না।পাপের তাপে তুমিও পুড়ে যাবে।জানো না ?কেউ মরে পাপে কেউ তাপে?
রূপকথা শক্ত ঠোঁটে বললো
“তুমি এসেছো সারফরাজ।
রূপকথার চট করে করা উত্তরে অল্প বাঁকা হাসলো সারফরাজ।এরপর বললো
“বেশ বড় হয়ে গেছো তাই না?বড়দের মুখে মুখে কথা বলো।
রূপকথা সারফরাজ এর বুক থেকে মাথা তুলতে চাইলো।সারফরাজ ঠেসে ধরে বলে উঠলো
“আগুন নিভে অঙ্গার থেকে ধোয়া উড়ছে ।আর কিছু সময় পর ধোয়া থেমে যাবে।
রূপকথা সারফরাজ এর পুরুষালি গন্ধ আর নিকোটিন এর গন্ধে চোখ বুজে বলে উঠলো
“সিগারেট ফুকেছো?
“অনেক।
“কেনো?
“মাঝে মাঝে নিজেকে পোড়াতে শান্তি লাগে।কিন্তু আমার সেই শান্তি বিনষ্ট করছো তুমি।ঠিক পস্তাবে।
“পস্তাতে চাই আমি।
“বোকা মেয়ে।নিস্তার পাবে না আমার হাত থেকে।
“আমি নিস্তার চাই না”
“রিয়েলি?
“হ্যা।
সারফরাজ অবাক চোখে রূপকথাকে দেখলো।এরপর বললো
“সময় নাও।
রূপকথা চোখ বুজেই প্রত্যুত্তর করলো
“বারোটা বছর সময় নয় কি?নাকি তোমার নাগাল পেতে আরো যুগযুগ এর প্রতীক্ষা প্রয়োজন?
সারফরাজ জবাব দিলো না।শুধু বললো
“আমি সত্যিই পাপী।
“পাপ ধুয়ে দেবার দায়িত্ব আমি নিতে চাই।
সারফরাজ বুক থেকে সরিয়ে দুই কাঁধে চেপে ধরে রূপকথার চোখে চোখ রাখলো।এরপর বলে উঠলো
“ভালোবাসা আমি বুঝিনা।আমার কাছে হিংস্রতা ছাড়া আর কিছুই নেই রূপকথা।আবেগে গা ভাসিয়ে ভুল করছো তুমি।পরে কাঁদবে।
রূপকথা ধীর লয়ে বললো
“সেই কান্নার জল যদি তোমার বুকের আগুন নেভাতে পারে তবে আমি আজীবন কাঁদতে রাজি।
শীতল বাতাস আর বৃষ্টির ভারী ধারা রূপকথার শরীরে কাপন তুললো সেই সাথে তিরতির করে কেঁপে উঠলো গোলাপি ঠোঁট জোড়া।সারফরাজ অবাক চোখে এহেন মোহনীয় দৃশ্য উপভোগ করলো।এরপর বুক চেপে ধরে বলল
“আমাকে যেতে হবে রূপকথা।বুকের কন্ডিশন শোচনীয়।
রূপকথা উদ্বিগ্ন চোখে বললো
“ব্যথা হচ্ছে?
“নাহ।বাসনার তাড়না হাতুড়ি পেটাচ্ছে।ওসব তুমি বুঝবে না।
বলেই রূপকথাকে ফেলে গাড়িতে উঠে বসলো সারফরাজ।এরপর গাড়ি স্টার্ট দিয়ে জানালার কাচ নামিয়ে উঁচু আওয়াজে বললো
“আমি মরে গেলে আমার ছায়াও কিন্তু তোমার পিছু ছাড়বে না।ভেবে চিন্তে ডিসিশন নিও ।পরে কিন্তু মুক্তি পাবে না।
বলেই গাড়ি হাঁকালো সারফরাজ।রূপকথা ঠোঁট টিপে হেসে বলে উঠলো
“পাগল একটা।
সারাফরাজ এর গাড়ি দৃষ্টি সীমানা থেকে মিলিয়ে যেতেই ভেজা শরীরে পা টিপে ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দিলো রূপকথা।এরপর পা টিপে টিপে সিঁড়ি বেয়ে নিজ কক্ষে ঢুকলো।কক্ষে বিছানার উপর নেলিকে দেখে কিছুটা অপ্রস্তুত হলো রূপকথা।বোকা নেলি কেমন চতুর চোখে রূপকথার পানে তাকিয়ে আছে।রূপকথা নেলিকে দেখে ভয়ার্ত মুখে শুধালো
“ঘুমাস নি?
নেলি মাথা দুলিয়ে বললো
“সারফরাজ এসেছিলো?
রূপকথা অল্প করে উত্তর দিলো
“হু।
“প্রেমে পরলি?
“জানিনা।
“বালিশের তলায় বন্দুক রাখে ওই ছেলে।নিশ্চয় সাধারণ মানুষ বালিশের তলায় বন্দুক রেখে ঘুমাবে না।তাই না?
“নেলি ও খারাপ মানুষ সেটা স্বীকারোক্তি দিয়েছে আমার কাছে।কিন্তু আমি ওকে ফেরাবো তুই দেখিস।
নেলি তপ্ত শ্বাস ছেড়ে বলে উঠলো
“মামা মামী কষ্ট পাবে রূপকথা।তুই ভুল পথে হাঁটতে চাইছিস।
রূপকথা কোনো উত্তর না দিয়ে শুকনো কাপড় নিয়ে ওয়াশ রুমে চলে গেলো।ঝটপট কাপড় পাল্টে বেরিয়ে নেলিকে আগের জায়গাতেই পেলো।হয়তো উত্তর শোনার আশায় অপেক্ষা করছে নেলি।নেলির ভাব ভঙ্গি বুঝতে পেরে রূপকথা নিচু গলায় বললো
“সারফরাজ এর সাথে আমার বন্ধন একদিন দুদিনের নয় নেলি।ও আমার কোনো ক্ষতি করবে না এবং হতেও দেবে না।ওকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করি আমি।
নেলি আর কথা বাড়ালো না।শুধু অবিশ্বাসের গলায় বলল
“বেস্ট অফ লাক।
নেলি চলে যেতেই দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো রূপকথা।এরপর শীতল শরীর উষ্ণ করার উদ্দেশ্যে কাঁথা গায়ে জড়িয়ে বিড়বিড় করে বলে উঠলো
“তুই কি করে বুঝবি নেলি সারফরাজ এর বুকে আমি কতোটা শান্তি পাই?ওটা যে আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।বাবা মা হারানোর পর ওখানেই তো আমার বাস ছিলো।সে যে আমাকে আগলে নিতে জানে।
সকালে বেশ দেরিতে ঘুম ভাঙলো সারফরাজ এর।ঘুম থেকে উঠেই ফোন হাতে নিলো সারফরাজ।এরপর স্ক্রিনে সময় দেখে নিলো।বেলা প্রায় মধ্য দুপুর ।এরপর একবার আজকের তারিখটা পরখ করলো।আলগোছে হাতের ফোনটা বালিশের পাশে রেখে চোখ বুজে সটান শুয়ে রইলো কিছু সময়।এরপর পুনরায় ফোন হাতে নিয়ে অভিরূপ কে মেসেজ পাঠালো
“দুপুর দেড়টার ফ্লাইটে লুইস আর ইয়ং ল্যান্ড করবে।প্লিজ রিসিভ করে নিস ওদের।
ছোট বার্তখানা পাঠিয়ে উপুড় হয়ে বালিশে মুখ গুঁজলো।ঝাপসা এলোমেলো স্মৃতি পটে গত রাতের মুহূর্ত ধরা দিলো।অনন্য ভালো লাগায় পাশ বালিশ চেপে ধরলো সারফরাজ।এরপর ঘুম জড়ানো গলায় নিজেকে নিজেই শুধালো
“সিরিয়াসলি?
ভেতর থেকে আসা উত্তরে লাজুক হাসলো সারফরাজ।এরপর বালিশে কয়েকটা পাঞ্চ মেরে ভাঙা গলায় বলে উঠলো
“কি সাংঘাতিক বিচ্ছু মেয়ে।আমাকে কুপোকাত করে তবেই ক্ষান্ত হলো।
ঘড়ির কাটা তরতর করে আরো খানিক সময় গড়ালো।আর শুয়ে থাকতে পারলো না সারফরাজ।আড়মোড়া ভেঙে উঠে দাঁড়ালো।এরপর চলে গেলো ফ্রেশ হতে।
মেডিকেল কলেজের ফার্স্ট ডে থাকায় সকাল বেলা ক্লাসে এটেন্ড করার জন্য না খেয়েই চলে এসেছে নেলি আর রূপকথা।দুপুরের আগে আগেই খিদেয় তালগোল পাকিয়ে গেলো নেলির।ক্যান্টিন থেকে দ্রুত অল্প কিছু খেয়ে ফিরে আসলো লাইব্রেরি তে।এরপর মেডিকেল সায়েন্স এর উপর লিখা একটা বই নিয়ে নাড়াচাড়া করলো রূপকথা।প্রথম দিন জন্য সব কিছুতেই কেমন এক্সাইটমেন্ট কাজ করলো তার ভেতর।
নেলি রুটিন চেক করে রূপকথার উদ্দেশ্য বলে উঠলো
“পরের ঘন্টায় ক্লাস আছে।
রূপকথা ভাবুক হয়ে শুধালো
“কি ক্লাস?
“ফিজিওলজি।
রূপকথা আর কিছু শুধালো না।কিন্তু নেলি মন মরা হয়ে রইলো।রূপকথা নেলির দিকে তাকিয়ে শুধালো
“মন খারাপ কেনো?
কলম কামরাতে কামড়াতে নেলি উত্তর করলো
“দুটো ক্লাস করলাম একটাতেও কোনো ইয়ং হ্যান্ডসাম ডক্টর দেখলাম না।যা দেখলাম সব ঘাটের মরা।অথচ গল্প উপন্যাস বা মুভিতে কি সুন্দর সুন্দর ডক্টর লেকচারার।ধ্যাত মোডটাই পানসে হয়ে গেলো।
রূপকথা নেলির ভাবনায় কপাল কুঁচকে শুধালো
“পড়তে এসেছিস নাকি জামাই খুঁজতে?
নেলি বোকা চোখে রূপকথার পানে তাকিয়ে বলে উঠলো
“নিজে তো একটা জুটিয়ে নিয়েছো এজন্য আমার মতো সিঙ্গেল মানুষের ব্যাথা বুঝতে পারছো না।
রূপকথা হাত ঘড়িতে একবার সময় বুলিয়ে বললো
“চল নেক্সট ক্লাসের সময় হয়ে যাচ্ছে।
নেলি ঠোঁট উল্টে মন খারাপের ভং করে উঠে রূপকথার পিছু পিছু ছুটলো।এরপর ক্লাসে ঢুকে মাঝ খানের আসনে বসলো।
ক্লাসে সবাই যখন এটা সেটা নিয়ে আলোচনা করছিলো ঠিক তখন হেলেদুলে একজন প্রফেসর এলেন।তাকে সম্মান প্রদর্শন করে নেলি কপাল চাপড়ে বললো
“এতো কবরে অলরেডি ঢুকে গেছে রে রূপকথা।
রূপকথা দাঁত পিষে চোখ গরম করে নেলির এহেন বেফায়েসে কথায়।
ফিজিওলজি লেকচারার নিজের নাম পরিচয় দিয়ে সকলের উদ্দেশ্যে বলে উঠলো
“আমি আজ আপনাদের ক্লাস নেবো না।একজন গেস্ট ডক্টর এসেছেন আমাদের হসপিটালে।তিনি আজ আপনাদের ক্লাস নেবেন।
চেকমেট পর্ব ২৫
বলেই বেরিয়ে গেলেন এনায়েত উল্লাহ।এনায়েত উল্লাহ চলে যেতেই ক্লাস জুড়ে শোরগোল সৃষ্টি হলো।সেই শোরগোল কে আরো দুই ধাপ বাড়াতে ভেতরে প্রবেশ করলো লম্বা চওড়া অত্যাধিক ফর্সা সুদর্শন এক যুবক।তাকে দেখে পুরো ক্লাসের মেয়েরা যেনো জ্ঞান হারানোর উপক্রম হলো।যুবক সকলের উদ্দেশ্যে গম্ভীর ভারী গলায় বলে উঠলো
“লেটস গেট ইন্ট্রোডিউসড ফার্স্ট।আম ডক্টর রুদ্র। ডক্টর রুদ্ররাজ চৌধুরী।