চেকমেট পর্ব ৬৯
সারিকা হোসাইন
ভীরু চোখে সারফরাজ এর পানে তাকিয়ে রয়েছে রূপকথা।মানুষটাকে কেমন নতুন নতুন ঠেকছে।অথচ মাস দুই আগেই চুপিসারে তার সাথে কেটেছে আনন্দঘন অন্তরঙ্গ মুহূর্ত।সেবারের কিছু শিহরণ জাগানো স্মৃতি মনে পড়তেই রূপকথা আরেকটু লাজুক লতার ন্যয় ঢলে পড়লো।সারফরাজ ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসির প্রলেপ লাগিয়ে এক কদম এগুলো। প্রেমিক পুরুষের এহেন সাংঘাতিক পদচ্ছাপে কেঁপে উঠলো রূপকথা।এরপর ধীর পায়ে দু কদম পিছালো সে।সারফরাজ সম্মোহনী হাসলো।কি ভয়ানক সেই হাসির রেশ।মনে হচ্ছে এক্ষুনি রূপকথাকে দুমড়ে মুচড়ে ধূলিকনায় রূপান্তর করে হাওয়ায় উড়িয়ে দেবে।পরনের শাড়ির কুচি দুই হাতে আগলে ধরে ধীরে ধীরে পালানোর চেষ্টা করলো রুপকথা।সারফরাজ পালাতে দিলো।কারন সে জানে আর কয়েক মুহূর্ত পর প্রেয়সী নিজেই এসে তার কারাগারে বন্দি হবে।
তিরতির করে রীতিমতো কাঁপছে রূপকথার উষ্ঠ যুগল সেই সাথে চোখের পাতা।ভারী নিঃশ্বাসে উঠা নামা করছে বুক।হাত পা বরফ সম হীম।পিছাতে পিছাতে কর্নার টেবিলের সাথে আটকে গেলো রূপকথা।সারফরাজ তেড়ে গিয়ে রূপকথার শাড়ির আঁচল গলিয়ে মেদ হীন কটিদেশ চেপে ধরে কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বললো
“পালানোর সকল পথ আর রুদ্ধ রানী সাহেবা।উপর মহল থেকে হুকুম এসেছে।তারা নাতি নাতনির মুখ দেখতে চায়।
সারফরাজ এর এহেন কথায় লজ্জায় মরন হলো রূপকথার।তার সফেদ গাল জোড়া রক্তিম গোলাপি হলো সেই সাথে ধড়াস ধড়াস করে বুকে দামামা বাজলো।সারফরাজ এর দুই বাহু শক্ত করে খামচে মাথা নত করে রূপকথা কম্পিত গলায় বলে উঠলো
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“তোমায় দেখে ভয় করছে।
সারফরাজ অল্প ঠোঁট এলিয়ে হাসলো।বড্ড মোহনীয় সেই হাসি।সে রূপকথার ঠোঁটের দিকে ঝুঁকে বলে উঠলো
“গত বার কোথায় ছিলো এই ভয়?জংলী বিড়ালের মতো কামড়েছিলে আমার সারা শরীরে।আর আজ!
রূপকথা সারফরাজ এর মুখ চেপে ধরলো নিজের তুলতুলে কোমল হাতের পিস্টনে।এরপর সারফরাজ এর বুকে মুখ লুকিয়ে বলে উঠলো
“বেশরম
এই শব্দে সারফরাজ এলোমেলো হলো।গায়ের শার্টের বাটন খুলতে খুলতে রূপকথাকে নিজের একদম কাছে এনে ঘোর লাগা গলায় বললো
“যতোটুকু নিজেকে সামলে রেখেছিলাম এই একটা শব্দেই তার আগল ভাঙলে তুমি।এবার আমাকে রুখার শক্তি কই বিবি জান?
সারফরাজ এর কলার চেপে রূপকথা চোখে চোখ রাখলো।এরপর গলা টিপে ধরে বলে উঠলো
‘দেখি কেমন হিম্মত!
চোখ বুজে প্রশস্ত হাসলো সারফরাজ।এরপর এক ঝটকায় রূপকথাকে কোলে তুলে বিছানায় ফেলে লাইট নিভিয়ে ফিসফিস করে শুধালো
“আই থিংক লাইট অন করেই আমার হিম্মত দেখানো উচিত মিসেস সারফরাজ।অ্যাম আই রাইট?
ছোট বিড়ালের ন্যয় সারফরাজ এর গালে নাক ঘষে রূপকথা মিইয়ে আসা গলায় বললো
“বেহায়া পুরুষ।মুখে একরত্তি লাগাম নেই।
“লাগাম ধরার জন্য তুমি আছো না?
বলেই উন্মাদ হলো সারফরাজ।শিহরনে কুঁকড়ে সারফরাজ এর চুল খামচে ধরে রূপকথা বলে উঠলো
“তাড়াতাড়ি করে কোন ভুল হয়ে যাচ্চে না তো?
“আর দেরি করলে বাচ্চার মুখে বাপ ডাক শোনার আগেই ওপারের টিকিট কাটতে হবে।
বেবি সুইং বেডে মৃদু আর্তনাদে কাঁদছে অভিরূপ এর চারমাস বয়সী ছেলে নিনাদ।ছেলের কান্না কর্ণকুহরে পৌঁছাতেই ধড়ফড় করে ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠলো অভিরূপ।নেলি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।সারা রাত ঘুমুতে পারেনি।নেলির ঘুম যাতে না ভেঙে যায় সেই ভয়ে ছেলেকে ঝটপট কোলে তুলে বাইরে বেরিয়ে গেলো অভিরূপ।এরপর ডায়াপার চেক করে কান্নার হেতু উদঘাটন করলো।ছেলে পটি করেছে।কারো সাহায্য ছাড়াই ডায়াপার চেঞ্জ করে উষ্ণ জলে নিনাদের শরীর মুছিয়ে বোন অন্তুর কাছে নিনাদ কে রেখে গেলো ফর্মুলা বানাতে।ফিরলো মিনিট পাঁচেক পর।এরপর ছেলেকে পরম যত্নে ফিডার খাইয়ে ঢেকুর তুললো।অভিরূপ এর মা দূর থেকে এই দৃশ্য দেখে মুচকি হাসলেন।ছেলেটা ছোট থেকেই গোছালো পরিপাটি।কি সুন্দর বউয়ের কাজে সাহায্য করে সেই সাথে কাজের ফাঁকে ফাঁকে বাচ্চার যত্ন নেয়।অভি,নেলি অন্তু নিনাদ যেনো ভালো থাকে সুখে থাকে সেই দোয়া করে সৃষ্টি কর্তার উদ্দেশ্যে হাত উঠলেন ভদ্র মহিলা।এরপর রান্নার কাজে মন দিলেন।
নেলির ঘুম ভাঙলো সকাল দশ টার আরো অনেক পরে।বিছানায় অভি নিনাদ কেউ নেই।ঘড়িতে সময় বুলিয়ে দৌড়ে বাইরে এলো নেলি।ড্রয়িং রুমে ছেলেকে নিয়ে গান গাইছে আর আবোল তাবোল বকবক করছে অভিরূপ।মানুষ টার মায়াবী চেহারার পানে তাকিয়ে স্বস্তিতে চোখ বুঝলো নেলি।তাদের বিবাহিত জীবন বড্ড আনন্দের যাচ্ছে।এই এ বছরে বোরিং কি জিনিস নেলি কখনো উপলব্ধি করতে পারেনি।নেলি ভাবে ,সঠিক জীবন সঙ্গী ছাড়া মানুষ কখনোই সুখী হতে পারে না।জীবনে সুখী হতে দরকার একটা পারফেক্ট মানুষ,একটা ভরসা যোগ্য হাত,নিরাপদ বুক আর দিন শেষে ক্লান্তিতে মাথা হেলানোর মতো একটা কাঁধ।
নেলিকে দেখতে পেয়েই অভি বলে উঠলো
“আজ তোমার ক্লাস আছে না?
নেলি মাথা ঝাকালো।
অভির মা প্লেটে খাবার সাজিয়ে টেবিলে দিয়ে বলে উঠলো
“তাড়াতাড়ি খাবার টা শেষ করে ক্লাসে যাও মা।দাদাভাই কে আমি অন্তু দেখে রাখবো।অভি তোমায় পৌঁছে দেবে।মন দিয়ে ক্লাস করবে।তোমার চিকিৎসা পেয়েই যেনো মরতে পারি এই দোয়া করি উপর ওয়ালার কাছে।
নিনাদ কে কোলে নিয়ে একটু আদর করে নেলি বলে উঠলো
“বাবা একবার যেতে বলেছেন আমাদের।আজ ক্লাস করে এসেই যাবো।সবাই রেডি থাকবে।
আজকাল নিজের বিজনেস নিয়ে বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকছে সারফরাজ।নিজের কোম্পানি দাঁড় করাতে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে।এদিকে রূপকথা নতুন জেদ শুরু করেছে।সে ক্যালিফোর্নিয়ার ফরেস্ট প্যালেস এ গিয়ে থাকবে ।ওই প্যালেস নাকি তাকে বড্ড আকৃষ্ট করে।এতেই ক্ষান্ত নয় মেয়েটি।করেছে সাংঘাতিক এক আবদার।সারফরাজ সাধু সামন্ত হলে সে সারফরাজ কে পরিত্যাগ করবে।কারন সে জেনে বুঝে এক ভয়ানক মানুষকে বিয়ে করেছিলো।মানুষটার জেন্টলম্যান রূপ তার মোটেও সহ্য হচ্ছে না।গল্পের নায়ক দের মতো খারাপ মানুষ কে সারফরাজ পেটাবে এটা রূপকথার কাছে উপভোগ্য।কোমরে পিস্তল হীন সারফরাজ কে কেমন যেনো লেডিস টাইপ লাগে তার কাছে।স্ত্রীর মনের এহেন লোমহর্ষক ভাবনায় সারফরাজ ভয়ে চমকে উঠে।এ কেমন মেয়ে মানুষ সে ভেবে পায়না।বেচারা ক্যাপ্টেন বেঁচে থাকলে সারফরাজ নিশ্চিত তাকে জিজ্ঞেস করতো
“এমন ডেঞ্জারাস পিস দুনিয়াতে আপলোড করলেন কি করে?
সন্ধ্যার একটু আগে আগে সারফরাজ ফিরলো বাড়িতে।ড্রয়িংরুমে আজ চঞ্চল মেয়েটাকে দেখা গেলো না।মায়া চৌধুরী কে সারফরাজ ব্যস্ত ক্লান্ত গলায় শুধালো
“আমার বউ কোথায়?
মায়া বিকেলের নাস্তা বানাতে বানাতে উত্তর করলেন
“দুপুরের পর থেকে পড়ে পরে ঘুমুচ্ছে।দু’বার ডেকেছি।চোখ তুলেই দেখতে পাচ্ছে না।ভাবলাম জ্বর টর হলো কি না।কিন্তু তাপমাত্রা স্বাভাবিক।
বাকি কথা শুনলো না সারফরাজ।দৌড়ে উপরে গিয়ে রূপকথার পাশে বসে মাথায় বিলি কেটে নরম গলায় ডাকলো
“রূপ খারাপ লাগছে সোনা?
সারফরাজ এর গলা পেয়ে অল্প চোখ খুললো রূপকথা।এরপর আবার ঘুমিয়ে গেলো।সারফরাজ আর বিরক্ত করলো না।নিজের পোশাক পাল্টে ফ্রেস হয়ে ল্যাপটপ নিয়ে বসলো।ক্যালিফোর্নিয়ার ডায়মন্ড বিজনেস টা এখনো রানিং।ড্যাভিন আর ব্রাউনি সামলায় সেটা।মাঝেমধ্যে অভিরূপ।অভিরূপ এর ইচ্ছে ওখানেই স্যাটেল হওয়া।নেলির পড়াশোনা আর ছোট বাচ্চার জন্য সম্ভব হচ্ছে না।কিন্তু তার মা বোন ক্যালিফোর্নিয়া তেই থাকেন বেশিরভাগ।
রূপকথা সন্ধ্যার আরো অনেক পরে উঠলো।তার মাথাটা কেমন ঘুরছে আজ।রূপকথাকে উঠতে দেখেই বিছানায় রূপকথার পাশে বসে সারফরাজ মাথায় হাত বুলিয়ে শুধালো
“কয়েকদিন ধরেই দেখছি এভাবে শুধু ঘুমাচ্ছ।কি হয়েছে তোমার?ডক্টর এর কাছে যাবে?শরীর কি বেশি খারাপ করলো?
রূপকথা দুই হাত মেলে সারফরাজ কে জড়িয়ে ঠোঁট উল্টে চোখ বুজে রইলো কিছুক্ষন।এরপর বাচ্চাদের মতো করে বললো
“এ মাসে আমার পিরিয়ড মিস হয়েছে।এর পর থেকে এমন লাগছে।
কথাটা সারফরাজ এর মাথায় তাৎক্ষণিক ক্যাচ করলো।সে অবিশ্বাস্য চোখে রূপকথার পানে তাকীয়ে উচ্ছসিত গলায় শুধালো
“রিয়েলি₹
রূপকথা মাথা ঝাঁকালো।
সারফরাজ রূপকথাকে কোলে তুলে বলে উঠলো
“এক্ষুনি হসপিটালে যাবো চলো।
রূপকথা না যাবার জন্য কিছুক্ষণ আইঢাই করলো।কিন্তু বিশেষ ফল হলো না।এক প্রকার জোর করেই নিয়ে চললো হসপিটালে।
সারফরাজ দের বাড়িতে আজ চাঁদের হাট বসেছে।রূপকথা অন্তঃসত্ত্বা।কথাটা জানার পর সুফিয়ান চৌধুরী আর রেখা তাৎক্ষণিক চলে এসেছেন।মায়া চৌধুরীর আনন্দ যেনো আর ধরছে না।নকশি কাঁথা ক’টা সেলাই করবেন তাঁর হিসেব জুড়েছেন তিনি।এদিকে লজ্জায় লাল হয়ে ঘরে দুয়ার টেনেছে রূপকথা।সারফরাজ কেও এলাও করছে না তার ঘরে।সুফিয়ান চৌধুরীর চোখে মুখে পূর্ণতার ছাপ।তিনি গোপনে সারফরাজ কে বাইরে ডাকলেন।ডেকে দ্রুত পদে বাইরে বেরিয়ে গেলেন।পিছু পিছু সারফরাজ এলো।সারফরাজ কে পেয়েই শক্ত করে বুকে জড়িয়ে হাউমাউ করে কাঁদলেন সুফিয়ান।সারফরাজ বিনা বাক্য ব্যায়ে সুফিয়ান চৌধুরীর পিঠে হাত বুলালো।
নিজেকে দীর্ঘ সময় বাদে সামলে সুফিয়ান চৌধুরী টিস্যু দিয়ে নাক মুছে ভগ্ন কন্ঠে বললেন
“শুধু দিয়েই গেলি রে সারফরাজ, শুধু দিয়েই গেলি।এতো ঋণ কি করে শোধ করবো?জীবনে দ্বিতীয় বার আশা রাখিনি বাবা ডাক শুনবো।তুই সবটা উজাড় করে সেই কাঙ্খিত শব্দটা শুনালি।আজ নানা।আমার কেমন আনন্দ হচ্ছে তা তোকে বোঝানোর ভাষা নেই আমার।বুকটা ফেঁড়ে যদি হৃদপিণ্ডের সমস্ত উচ্ছাস তোকে দেখাতে পারতাম তাহলে তুই বুঝতি আমার চেয়ে খুশি এই পৃথিবীতে আর কেউ নেই।ওই উপর ওয়ালার কাছে আমি প্রাণ ভরে দোয়া করি।দ্বিতীয় সারফরাজ আসুক তোর ঘরে।সেও তোর মত উদার হোক আর অন্যায়কারীর জন্য যম হোক।নানা হবার আনন্দ তুই বুঝবি না।আসলের চাইতে সুদের পোড়ানি বেশি।আজ থেকে তোরা কেউ নস আমার।যে মেহমান হয়ে আসছে ওই আমার সব।সে আমার কলিজা।আমার হার্ট,কিডনি সব।জীবনে সব সুখ তুই আমাকে দিয়েছিস।তুই যে আমার বাপ রে সারফরাজ।আমার বাপ।
সুফিয়ান চৌধুরীর কান্নায় আবেগী হয়ে হাসতে হাসতে কেঁদে ফেললো সারফরাজ।এরপর চোখের জল আড়াল করে বলে উঠলো
“এতো ভালো বাসলে আমি কিন্তু এখন কেঁদে ফেলবো শশুড় আব্বা।আপনি আমাকে কাঁদানোর পায়তারা করছেন তাই না?
পেরিয়ে গেছে নয়টি মাস।এই নয়মাসে সকলের জীবনে শুধু আনন্দের ধারাই বয়ে গিয়েছে।দুপুরের পর পর রূপকথার লেবার পেইন উঠেছে।তৎক্ষণাৎ তাকে হাসপাতালে আনা হয়েছে।নিজের জরুরি কাজ ফেলে সারফরাজ ছুটে এসেছে হসপিটালে।
সুফিয়ান চৌধুরী আর সারফরাজ এর চপল পদচারে ভারী হয়ে উঠলো হাসপাতালের করিডোর।সময় যেনো আর কাটে না।রেখা মায়া চুপিসারে দোয়া পাঠ করছেন।সারফরাজ ভয়ে ঘেমে নেয়ে উঠলো।রূপকথা ঠিক আছে তো?এই চিন্তায় তার প্রেসার বেড়ে গেলো।সমস্ত অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে কেঁদে উঠলো নবজাতকের কন্ঠ।সুফিয়ান হো হো করে হেসে উঠলেন।বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেলেন মায়া রেখা।সময় গড়াতেই নীল তোয়ালেতে পেঁচিয়ে আনা হলো তুষার তুল্য সফেদ এক তুলার ন্যয় শিশু।নার্সকে পেয়েই ব্যাকুল গলায় সারফরাজ শুধালো
“রূপকথা ঠিক আছে?
নার্স মিষ্টি হেসে বাচ্চা এগিয়ে বললো
“কনগ্রাচুলেশন মিস্টার সারফরাজ।আপনি ছেলে সন্তানের বাবা হয়েছেন।মা ঠিক আছে।নিন বেবিকে কোলে নিন।আমরা একটু পর বেবিকে এসে আবার নিয়ে যাবো।
সারফরাজ কোলে নিলো বাচ্চাকে।এরপর ছুটলো ভেতরে।রূপকথাকে আগে দেখা চাই।
ক্লান্ত শরীরে নেতিয়ে বেডে শুয়ে আছে রূপকথা।সারফরাজ রূপকথার পাশের চেয়ারটায় বসে রূপকথার কপালে চুমু আকলো।এরপর চোখের জল মুছে এক হাতে বাচ্চাকে জড়িয়ে অন্য হাতে রূপকথার হাত চেপে বললো
“আমাদের সন্তান রূপকথা।ও তোমার আর আমার অংশ।
রূপকথা প্রশস্ত হেসে সন্তানকে হাত বাড়িয়ে কাছে নিলো।এরপর বুকে জড়িয়ে বলে উঠলো
“বাবার মতো সাহসী আর বুদ্ধিদীপ্ত হও।
সারফরাজ রূপকথার হাতে চুমু আকলো।এরপর নিজের হাতের মুঠোয় ভরে বুকের কাছে চেপে ধরে রাখল হাত খানা।
রূপকথা শুধালো
চেকমেট পর্ব ৬৮
“কি নাম ঠিক করলে ছেলের জন্য?
বুক উঁচু করে সারফরাজ শ্বাস ফেললো।এরপর ভারী গলায় বললো
“শাহরান শাহজাইন,আমার পুত্র,আমার চাঁদ।আমার অজস্র ভালোবাসার খনি,আমাকে আটকানোর একমাত্র শিকল।আমার জান।
