চেকমেট পর্ব ৭

চেকমেট পর্ব ৭
সারিকা হোসাইন

সারা রাত সারফরাজ এর ঘুম হলো না।একই জায়গায় হাটু ভাঁজ করে বসে পুরোটা রাত কাভার করলো সে।গায়ে জড়ানো রক্ত ভেজা শার্ট শুকিয়ে খড়খড়ে হয়ে রয়েছে।গা থেকে রক্তের আষ্টে গন্ধ বের হচ্ছে।এক দিকে না খাওয়া তার মধ্যে মাথার উপর বিশাল দুশ্চিন্তা।সব মিলিয়ে কেমন পেটে গুড়গুড় করে উঠলো সারফরাজ এর।পেট গুলিয়ে বমি পাচ্ছে তার।একটু পানি খেতে পারলে ভালো হতো।

দুর্বল শরীরে চারপাশে পানি খুজলো।অবশেষে টেবিলের এক কোনে পানির সন্ধান মিললো।হাঁটুতে ভর দিয়ে পানির জগের কাছে যাবার জন্য উঠে দাঁড়াতে চাইলো সারফরাজ।কিন্তু ব্যাথায় কোকিয়ে বসে পড়লো।নিয়াজ মোর্শেদ আর কাবিরের আঘাত মিলে পা দুটো ফুলে টনটনে হয়ে আছে।সেগুলো যেনো আজ শক্তিহীন অসাড়।এদিকে খারপ লাগার মাত্রা ছাড়ালো।শেষ চেষ্টায় বেড ধরে খিচে উঠে দাঁড়ালো সারফরাজ।এরপর খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে পানির জগের কাছে এলো।কাটা দগদগে ঠোঁটে পানিটা লাগা মাত্র লালচে ঠোঁট জোড়া আগুনের মতো জ্বলে উঠলো।তবুও চোখ খিচে অল্প পানি পেটে চালান দিলো সারফরাজ।এরপর চারপাশের লাল রঙা সিমেন্টের দেয়ালে নজর বুলালো।আজ থেকে তার জীবনের গতি উদ্দেশ্য হীন।কমিশনার এর কথা বিন্দু মাত্র বিশ্বাস করেনি সারফরাজ।আজকাল নিজের স্বার্থের জন্য মানুষ নিখুঁত অভিনয় করতে পারে।একজন খুনী কে বাঁচিয়ে তার কি লাভ?নিজের বেঁচে থাকবার জন্য রূপকথাকে কমিশনার এর হাতে তুলে দেয়নি সারফরাজ।রূপকথার জন্য কমিশনার আর তার স্ত্রী দুজনের চোখে মুখেই তীব্র আকুতি দেখেছে সারফরাজ।মানুষের চোখ কখনো মিথ্যে বলে না।কথাটা সারফরাজ এর বাবা তাকে বলেছিলো।খুবই বিচক্ষণ আর বুদ্ধিমান ছিলেন কিনা।ছেলেকেও গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন নিজের মতো।কিন্তু বিধিবাম।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

কমিশনার এর টাকা পয়সা বিলাস বহুল জীবন যাপন কিচ্ছুটির অভাব নেই।সন্তান হারা এই দম্পতি নিজের সবটা দিয়েই যে রূপকথাকে আগলে রাখবে সারফরাজ বেশ বুঝতে পেরেছে তা।এই জন্যই সে বিনা সংকোচে রাজি হয়েছে।কিন্তু কোথাও একটা সূক্ষ ব্যাথা গুমরে কাঁদছে।ব্যাথাটা কিসের খুঁজে পায়না সারফরাজ।হয়তো একসাথে কিছুদিন ছিলো তাই মায়া বসে গেছে।এই মায়াটা আবার বড় অদ্ভুত জিনিস।কারো উপর একবার তা বসে গেলে দুনিয়া উলট পালট করে দিতে ইচ্ছে করে সেই মানুষটির সামান্য খুশির জন্য।তবুও মন বলে মানুষটা ভালো থাকুক।
“আচ্ছা রূপকথা কি কখনো আমায় মনে রাখবে?আমাদের কি আর কখনো দেখা হবে?বড় হয়ে রূপকথা চিনতে পারবে আমায়?নাকি অচিরেই ভুলে যাবে সারফরাজ নামক খুনীর কথা?

সারফরাজ এর ভাবনার সুতো ছিঁড়লো পুলিশের বুটের খটখট শব্দে।ধ্যান ছেড়ে দরজার পানে শকুনি নজর বুলালো সে।আজ তাকে কোর্টে চালান করা হবে।কমিশনার কথা রাখলে জীবনে বেঁচে থাকার দ্বিতীয় সুযোগ পাবে সারফরাজ।আর সাজা হলে জীবনের সমাপ্তি এখানেই।বন্দি জীবন কখনো জীবন হয় নাকি?সে তো চিড়িয়াখানার জন্তুর ন্যয়।তবে কি মায়ের সাথে আর দেখা হবে না?ভাগ্য বুঝি এতোটাই নিষ্ঠুর তার প্রতি?
নিয়াজ মোর্শেদ আর দুজন হাবিলদার প্রবেশ করলো ভেতরে।কর্কশ কন্ঠে সারফরাজ কে উদ্দেশ্যে নিয়াজ বলে উঠলো
“এমন বয়ান দেবো তোর নামে আজীবন জেলে পচে মরবি তবুও ছাড়া পাবি না।বাস্টার্ড একটা
কথাটি বলেই নিষ্ঠুর এর মত সারফরাজ এর কাটা হাত চেপে ধরে হ্যান্ডকাফ লাগালেন।এরপর আবারো বলে উঠলেন
“ওই কমিশনার নিজে তোকে কোর্ট অব্দি নিয়ে যাবে।নয়তো অর্ধেক রাস্তাতেই তোর খেল খতম করতাম আমি।
নিয়াজ মোর্শেদ এর অগ্নিবর্ণ হিংস্র চেহারার পানে তাকিয়ে খিক করে হেসে উঠলো সারফরাজ।এরপর টিপ্পনি কেটে বললো

“এতো রাগ কেনো আমার উপর অফিসার?সুবহান মরাতে পকেট খালি হয়েছে এজন্য?
নিয়াজ মোর্শেদ ঘুষি উঁচিয়ে বললো
“কালকের কথা ভুলে গেছিস বে*-শ্যার ছেলে?
কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালো না এমন গলিতে সারফরাজ।শুধু অগ্নি চোখে তাকিয়ে শীতল কন্ঠে বললো
“আমার পঞ্চাশ বছরের জেল হলেও তোকে দুনিয়া থেকে টপকে দেবো আমি।এরপর আরো পঞ্চাশ বছর সাজা কাটাবো।কতো নৃশংস মৃত্যু তোর জন্য পরিকল্পনা করে রেখেছি আমি তা তুই ভাবতেও পারবি না ।এই যে হুমকি ধামকি দিচ্ছিস সময় মতো এগুলো তোর স্যাটা দিয়ে ভরে দেবো।বুঝেছিস?
সরফরাজ এর কথায় হাবিলদার দুজন মাথা নিচু করে ফেললো।কিন্তু সাপের মতো ফসফস করে নিয়াজ গর্জে উঠলো
“তোর মুখের ভাষাতেই প্রমান পাওয়া যাচ্ছে তোর জন্ম কোনো পতিতালয়ে।
“আর তোর কথায় স্পষ্ট প্রমাণিত তুই সেই পতিতালয়ের সরদার।
কথাটি বলেই হাঁটা ধরলো সারফরাজ।রাগে ক্রোধে নিয়াজ মোর্শেদ দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে রক্ত বের করে ফেললো।মনে হচ্ছে সুযোগ পেলে সে নিজেই সারফরাজ কে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেবে।

থানার সামনে দাঁড়িয়ে ছটফট করছে রূপকথা।সারফরাজ এখনো বের হচ্ছে না কেনো এটা ভেবেই তার কান্না পাচ্ছে মুহূর্তে মুহূর্তে।কমিশনার এর বাসায় যেতে না যেতেই তার ঘুম ভেঙে গিয়েছে।সারা রাত কেঁদেকেটে সে কমিশনার আর তার স্ত্রীকে বসিয়ে রেখেছে।তবুও মানুষ দুটি উজাড় করা ভালোবাসা দিয়ে আগলে ধরতে চেয়েছে রূপকথাকে।কিন্তু রূপকথা কোন ভাবেই তাদের গ্রহণ করতে রাজি নয়।সারফরাজ এর কাছে যাবে এটাই তার শেষ কথা।কাঁদতে কাঁদতে ভোর রাতের দিকে ক্লান্ত হয়ে সুফিয়ান এর কোলে ঘুমিয়ে গিয়েছে সে।ঘন্টা দুই না পার হতেই আবারো উঠে সেই একই বায়না।শেষমেশ ধৈয্যে কুলাতে না পেরে রূপকথা কে থানায় নিয়ে এসেছে সুফিয়ান চৌধুরী।সাথে এসেছে মেইড আর রেখা।

আধ ঘন্টার মতো সময় পেরুতেই সারফরাজ এর দেখা মিললো।দুই হাতে শক্ত হাতকড়া আর কোমরে সাটিয়ে বাধা দড়ি।যার ওপর প্রান্ত ধরে রেখেছে হাবিলদার।সারফরাজ কে দেখতে পেয়েই দৌড়ে গেলো রূপকথা।সে হাবিলদার এর থেকে দড়ি কেড়ে নেবার চেষ্টা করতে করতে বললো
“ওকে বেঁধেছ কেনো?ওর পেট ছিড়ে যাবে।দড়ি খুলে দাও।
মেয়েটির এসব কথাবার্তা নিয়াজ মোর্শেদ এর কাছে নাটক মনে হলো।বাচ্চাটি তার দুই চোখের বিষ।মনে হচ্ছে এখনই বুট দিয়ে পিষে মুখের সব গুলো দাঁত ফেলে দিতে।একদম খুনিটার ন্যওটা।
রূপকথার পাগলামি তে সারফরাজ ধীর গলায় ডাকলো
“রূপকথা!

শান্ত হয়ে সারফরাজ এর সামনে গেলো রূপকথা।সারফরাজ তার মাথায় হাত বুলিয়ে স্বাভাবিক গলায় বলল
“আমার ব্যথা লাগছে না রূপকথা।আমি নিজেই বাঁধতে বলেছি ওদের।
রূপকথার কাছে বিশ্বাস হলো না এই কথা।সে কমিশনার এর কাছে দৌড়ে গিয়ে বলল
“আংকেল সারফরাজ এর কষ্ট হচ্ছে।ওর পেট থেকে দড়ি খুলে দাও।সারফরাজ এর পেট কেটে যাবে।
কমিশনার হাবিলদার কে চোখের ইশারা দিতেই দড়ি খুলে দেয়া হলো।
কমিশনার হাত ঘড়ির দিকে নজর দিলেন।সময় সকাল আটটার কাছাকাছি।এখনই কোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হবে।বেশি দেরি করলেই সব ঘেঁটে যাবে।আর সময় অপচয় করতে চাইলেন না তিনি।এদিকে নিয়াজ মোর্শেদ আরেকবার অনুরোধ এর স্বরে সুফিয়ান চৌধুরীর উদ্দেশ্যে বললেন

“স্যার আমি নিয়ে যাই একে?
তাচ্ছিল্য হেসে নিয়াজ মোর্শেদ এর পানে গভীর দৃষ্টি দিলেন সুফিয়ান।এরপর ফিসফিস করে বললেন
‘ছেলেটার ব্যপারে আপনার আগ্রহ দেখে বেশ অবাক হচ্ছি আমি।এতো আগ্রহ কেনো নিয়াজ সাহেব?
এবার থতমত খেলো নিয়াজ।কিছু প্রত্যুত্তর করবার আগেই কমিশনার আদেশ দিলেন
“পুলিশ ভ্যান রেডি করুন।আমাদের বেরুতে হবে।
নিয়াজ চলে যেতেই সারফরাজ রূপকথার সামনে হাটু মুড়ে বসলো
এরপর দুই কাঁধ ধরে আদুরে স্বরে বললো
“আমি অনেক দূরে ঘুরতে যাচ্ছি রূপকথা।আমি না ফেরা পর্যন্ত এই লোকটার বাড়িতে তুমি থাকবে।উনারা খুবই ভালো মানুষ।তোমাকে চকলেটস দেবে,ভালো খাবার দেবে ।নতুন জামা দেবে কার্টুন ও দেখতে দিবে।এরপর স্কুলে ভর্তি করে দেবে তোমাকে।সেখানে আমার মতো অনেক বন্ধু পাবে।তুমি শুধু আমি না ফেরা পর্যন্ত লক্ষী মেয়ে হয়ে থাকবে ঠিক আছে?নইলে কিন্তু আমি আর ফিরবো না।
নিজের ছোট হাতের আজলায় সারফরাজ এর রক্তাক্ত মুখ ধরে রূপকথা কান্না যুক্ত কন্ঠে বললো

“আমি তোমার সাথে যাবো সারফরাজ।এখানে ভালো লাগে না আমার।আমাকে ফেলে কোথায় ঘুরতে যাচ্ছ তুমি?আমি তো তোমাকে বিরক্ত করিনা।তবে আমাকে নিবে না কেনো?
মেয়েটির অবুঝ প্রশ্নে সারফরাজ এর হৃদয় ছুরিকাঘাত হলো।কেমন তীক্ষ্ণ সেই ব্যথা।তবুও নিজেকে সামলে সারফরাজ বললো
“আমি খুব শীঘ্রই ফিরে আসবো রূপকথা
“না আমি তোমাকে কোত্থাও যেতে দেবো না।
কথাটি বলেই সারফরাজ কে জাপ্টে ধরে জোরে কেঁদে উঠলো রূপকথা।এবার নিজেকে সামলাতে পারলো না সারফরাজ।রূপকথার কোমর জড়িয়ে ধরে সেও কেঁদে উঠলো।রূপকথার চোখের জলে সারফরাজ এর মাথার চুল ভিজে উঠলো।মেয়েটি কেমন বাঁধনে বেঁধেছে তাকে?এই বাধন ছিড়তে এতো কষ্ট কেনো হচ্ছে?দমটাও বন্ধ হতে চাইছে কেনো?
রেখা ছুটে এসে রূপকথা কে সরিয়ে নীতে চাইলো।কিন্তু সারফরাজ এর গলা ছাড়লো না রূপকথা।এদিকে সারফরাজ এর যাবার সময় হয়ে গেছে।সুফিয়ান কঠোর গলায় বললেন

“যেতে হবে সারফরাজ।
রূপকথার চোখের জল মুছে সারফরাজ বললো
“ভালো থেকো রূপকথা।আমাদের আবার দেখা হবে।আসছি।
কথাটি বলেই উঠে দাঁড়ালো সারফরাজ।কিন্তু রূপকথা ছাড়লো না সারফরাজ কে।সে ঝুলেই রইলো সারফরাজ এর গলা ধরে।এক প্রকার বাধ্য হয়েই রেখা আর মেইড মিলে সারফরাজ এর থেকে রূপকথাকে ছড়ানোর জন্য জোরাজোরি করতে লাগলো।এহেন দৃশ্যে অসহনীয় ব্যাথায় হৃদয় জর্জরিত হলো সারফরাজ এর।আহত পা দুটোও কেমন অসাড় হলো।রেখা আর মেইড এর শক্তির সাথে ছোট দেহের শক্তি কুলালো না।টেনে হিচড়ে সারফরাজ থেকে আলাদা করলো রূপকথাকে।বাঁচার তাগিদে সারফরাজ এর শার্ট খামচে ধরলো মেয়েটি।শেষ রক্ষাও হলো না।ধীরে ধীরে দূরত্ব বাড়তে লাগলো।সারফরাজ এর শার্ট চিড়ে বোতাম খুলে চলে এলো রূপকথার হাতের মুঠোয়।রেখার কোলে হাত পা ছোড়াছুড়ি করে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করছে রূপকথা।আহ কি হৃদয় বিদারক নিষ্ঠুর দৃশ্য!এহেন দৃশ্যে সুফিয়ান গোপনে চোখ মুছলেন।কেঁদে ফেললো থানায় উপস্থিত মানুষ জন।তবুও দায়িত্বের বোঝায় সারফরাজ কে পুলিশ ভ্যানে তুলে ভারী দরজা আটকে দেয়া হলো।বিদায় জানানোর জন্যও হাত নাড়ানোর সুযোগ টুকু দেয়া হলো না সারফরাজ কে।ছোট অবুঝ রূপকথা সারফরাজ কে আর দেখতে না পেয়ে চিৎকার করে ডেকে উঠলো
“সারফরাজ…..

ফাঁকা রাস্তা মাড়িয়ে শো শো গতিতে চলছে পুলিশ ভ্যান।ভেতরে সারফরাজ ,কমিশনার আর সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত একজন সাব ইন্সপেক্টর।গাড়ি চালাচ্ছেন একজন কনস্টেবল ড্রাইভার।গাড়ি চলছে আপন গতিতে।সারফরাজ এর এসব বিষয়ে কোন ভ্রূক্ষেপ নেই।তার কানে শুধু রূপকথার শেষ চিৎকার এসে বাড়ি খাচ্ছে বারবার।জীবন নিয়ে কেমন আফসোস হচ্ছে।সারফরাজ হঠাৎ খেয়াল করলো গাড়ির স্পিড বাড়ছে।চোখ তুলে উপরে তাকাতেই সাব ইন্সপেক্টর এর রিভলবার কেড়ে নিলেন সুফিয়ান।সেটা সারফরাজ এর হাতে গুঁজে দিয়ে নিজের বুকের ডান পাশে চেপে ধরে বললেন
“আমাকে শুট কর।
আকস্মিক এহেন কান্ডে হতভম্ব হলো সারফরাজ।কিন্তু নির্বিকার সাব ইন্সপেক্টর আর কমিশনার।সারফরাজ সুফিয়ান চৌধুরীর চোখের পানে তাকিয়ে শুধালো

“পাগলামো কেনো করছেন স্যার?
“কারন তোকে ওয়াদা করেছি।
“আপনার লাইফ রিস্ক থেকে যাবে।
স্মিত হেসে সুফিয়ান বললেন
‘তবুও আমি রাজি।তুই আমাকে কি দিয়েছিস তুই নিজেও জানিস না।তোর জন্য এইটুকু করতে না পারলে আমি মরেও শান্তি পাবো না।দেরি করিস না।তাড়াতাড়ি শুট কর আমাকে।কুইক।
সারফরাজ কম্পিত গলায় বলল
“আপনি মারা যাবেন স্যার।
“তবুও আমার স্ত্রী হ্যাপি থাকবে।তুই আর বাজে বকিস না।
“আমি পারবো না স্যার।
কথাটি বলা মাত্র কমিশনার এক ঘুষি বসিয়ে দিলেন সারফরাজ এর গালে।এরপর ধমকে উঠলেন
“শুট মি।কুইক।
বলার সাথে সাথেই শুট করার আওয়াজ হলো।নিমিষেই থেমে গেলো গাড়ি।রক্তাক্ত বুক চেপে ধরে কমিশনার আওড়ালেন

“যেভাবে সব বলেছি সেভাবে ওকে পোর্টে নিয়ে জাহাজে তুলে দাও আবির।সময় হাতে খুব কম।
কথাটি বলেই জ্ঞান হারালেন কমিশনার।
সারফরাজ কে নিয়ে দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে হ্যান্ডকাফ খুলে সাব ইন্সপেক্টর আবির মাহতাব দৌড়ে ড্রাইভার এর কাছে এলেন ।এরপর বললেন
“স্যার কে হসপিটালে এডমিট করো কুইক।
এরপর সারফরাজ কে নিয়ে পিছে পিছে ফলো করা কালো রঙের গাড়িতে উঠে বসলো আবির।ড্রাইভার কে তাগাদা দিয়ে উত্তেজিত গলায় বলল
“সাড়ে ন’টার জাহাজ ধরতে হবে।স্পিড বাড়াও।

চেকমেট পর্ব ৬

এদিকে মুহূর্তেই খবর প্রচার হলো কমিশনার কে হত্যার চেষ্টা করে আসামি পালিয়েছে।মুমূর্ষু অবস্থায় হসপিটাল অভিমুখে নেয়া হয়েছে কমিশনার সুফিয়ান চৌধুরী কে।প্রতিটি থানায় ইনফর্ম করা হলো সারফরাজ এর দুধর্ষতার বিষয়ে।উপর মহল থেকে ওর্ডার এলো
“দেখা মাত্রই ক্রস ফায়ার করা হোক ।

চেকমেট পর্ব ৮