টেরিবেল পর্ব ১১

টেরিবেল পর্ব ১১
অনুপ্রভা মেহেরিন

ঝুটি বাঁধা ধবধবে সাদা পাখিটির নাম কাকাতুয়া।ধবধবে সাদা গায়ের রঙ,পায়ের পাতা কালো আর মাথায় হলদে রঙের বড়ো ঝুঁটি।কথা বলতে পারা পাখিদের মধ্যে অন্যতম হলো কাকাতুয়া।আন্দ্রিয়া নীল সাদা মিশেলে একটি ফ্রক পরেছে।ফ্রকটা তার হাটুর নিচ পর্যন্ত।মেয়েটা যখন হাটছিল তার ফর্সা পা জোড়া দৃশ্যমান।সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে উঠতে আন্দ্রিয়া কথা বলছে তার নতুন বন্ধু কাকাতুয়া আর ককাটিয়েলের সহিত।আন্দ্রিয়ার ডান কাধে কাকাতুয়া আর বাম কাঁধ দখল করেছে ককাটিয়েল।তাদের ঘিরে আছে একঝাঁক বিদেশি পাখি যার নাম স্কারলেট মিনিভেট।স্কারলেট মিনিভেট পাখির গায়ের রঙ কমলা আর কালো রঙ মিশে দৃষ্টি কাড়া সুন্দর।এই পাখিটির দেহ গড়ন দেখতে কিছুটা চড়ুই পাখির মতো মনে হয়।
আন্দ্রিয়ার মনে হয় সে কোন অচেনা রাজ্যে হারিয়ে গেছে এমন সুদিন যে তার আসবে কখনো ভেবেছিল?আচ্ছা কয়জনের এমন ভাগ্য হয় পাখিদের সাথে বসবাস করা পরিবার গড়ে তোলা।নিজেকে এই রাজ্যের রানি ভাবতে পেরে আন্দ্রিয়া সত্যি পুলকিত।

” আন্দ্রিয়া তুমি খুব মিষ্টি।মিষ্টি-মিষ্টি।”
কাকাতুয়ার কথায় আন্দ্রিয়া খিলখিলিয়ে হেসে উঠল।
” কাকাতুয়া আমি একটা গান শোনাব তোমায়?”
” বলো বলো।শুনতে চাই।শুনতে চাই।”
” লাল ঝুঁটি কাকাতুয়া ধরেছে যে বায়না চাই তার লাল ফিতে চিরুনি আর আয়না।”
” খুব ভালো,খুব ভালো।”
কাকাতুয়া সুর বেঁধে এক কথা দুইবার বলে।তার কথা শুনতে আন্দ্রিয়ার বেশ ভালো লাগে।
ককাটিয়েল আন্দ্রিয়ার গালে খোঁচা দিল।আন্দ্রিয়া বুঝতে পারে পাখিটা তাকে আদর করতে চায়।
আন্দ্রিয়া পাখিদের নিয়ে প্যালেস ঘুরে দেখছিল এই প্যালেসে কক্ষের অভাব নেই কিন্তু সব কক্ষে আন্দ্রিয়ার ঘুরে দেখা হয়নি।একটা বদ্ধ কক্ষে আন্দ্রিয়া প্রবেশ করে বেশ অবাক হয়।সাজানো গোছানো বেশ সুন্দর কক্ষ এখানে যা যা আছে সবি গানের উপাদান।যেমন,কয়েকটা নতুন পুরাতন, গিটার,ভালোলিন,পিয়ানো এইছাড়াও অনেক কিছু সেসবের নাম আন্দ্রিয়ার জানা নেই।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আন্দ্রিয়া সবচেয়ে বেশি খুশি হলো ভায়োলিন পেয়ে।এই বদ্ধ কক্ষটাতে ধুলোবালির ছিটে ফোঁটাও নেই।বেশ ভালো ভাবেই বোঝা যাচ্ছে এডউইন বেশ যত্ন নিয়ে পরিষ্কার করে রাখে সবকিছু।
আন্দ্রিয়া ভায়োলিন হাতে তুলে বাজাতে চাইল।প্রথম বার হাতটা ফসকে গেলেও দ্বিতীয় বার বেশ ভালোভাবেই বাজাতে পারল।তবে বেশিক্ষণ নয় মেয়েটা অল্প কয়েকমাস হলো ভায়োলিন শিখছে যে টুকু রপ্ত করেছে তা দিয়েই চেষ্টা চালাল।নিস্তব্ধ প্যালেসে হঠাৎ ভায়োলিনের মায়াবী সুর চারিদিকে আচ্ছন্ন করল পাখিরাও স্থির হয়ে এক পাশে বসল।

ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত এডউইন।কম্পিউটার থেকে তার চোখ কিছুতেই সরছে না।তার তীক্ষ্ণ চাহনি এবং মন ধ্যান সব যখন কাজে ব্যস্ত তখনি কানে ভেসে এলো ভায়োলিনের মায়াবী সুর।ধ্যান ভাঙলো এডউইনের। কাজ ফেলে দাঁড়িয়ে পড়ল সে এই প্যালেসে কে বাজাবে ভায়োলিন?এডউইন দ্রুত পায়ে এগিয়ে গেল কক্ষের সামনে যেতেই থেমে গেল তার দুচরণ।আন্দ্রিয়া একটি টুলে বসে ভায়োলিন বাজাতে ব্যস্ত যদিও এডউইন তাকে পেছন থেকেই দেখছে।মেয়েটার লম্বা চুল সেই সাথে ফ্রক বসার ভাবভঙ্গিমায় তাকে অন্যরকম সুন্দর লাগছে।এডউইনের আগমনেও পাখিদের কোন নড়চড় হলো না তারা এখনো আন্দ্রিয়ার দিকে মনোযোগ ধরে রেখেছে।এডউইন নিঃশব্দে কক্ষে প্রবেশ করে আন্দ্রিয়াকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরল।মুহূর্তে থেমে গেল আন্দ্রিয়ার হাত ভায়োলিনের সুর থামতেই পাখিরা ধ্যান ভেঙে উড়াউড়ি শুরু করল।
এডউইন বেশ অবাক কণ্ঠে শুধায়,

” আন্দ্রিয়া তুমি ভায়োলিন বাজাতে পারো!”
” এইতো একটু আধটু পারি, দেখছেন না খুব বেশি সুর উঠাতে পারি না।”
” কে শেখালো?”
” মার্ভেলাসের অনলাইন যে কোর্স হয় সেখান থেকেই।”
” মার্ভেলাস!”
এডউইন অবাক হয়। আন্দ্রিয়া ভ্রু কুচকে বলে,
” এত বড় প্রতিষ্ঠানের নাম আপনি শুনেননি?”
” না।”
” ওও এসব বাদ্যযন্ত্র কার এডউইন?”
“আমার।”
এডউইন আন্দ্রিয়ার হাত থেকে ভায়োলিন নিয়ে নিজেই বাজাতে শুরু করল।আন্দ্রিয়ার অপটু হাতের সুরের চেয়েও এডউইনের পটু হাতের সুর ভীষণ সুন্দর।শুধু সুন্দর বললে বোধহয় ভুল হবে এককথায় মন্ত্রমুগ্ধকর।এডউইনকে টুলে বসতে দিয়ে আন্দ্রিয়া আরেকটি টুলে বসল এই সুরটা তার চেনা লাগছে কোথায় শুনেছে সে?কোথায়? কোথায়?উফফ মাথাটা যেন এক্ষুনি খারাপ হয়ে যাবে যখন যা মনে করা দরকার তাই মাথায় আসে না।আন্দ্রিয়ার হাঁশফাঁশ দেখে এডউইন থামলো,

” আন্দ্রিয়া কোন সমস্যা?”
” ভায়োলিনের এই সুরটা আমি কোথায় শুনেছি?
” একটা হিন্দি গানের সুর।”
” একটু গেয়ে শুনাবেন।”
” সরি মাই কুইন আমার কণ্ঠে গান শুনলে তুমি আজকে এই মুহূর্তে প্যালেস ছেড়ে পালাবে।”
আন্দ্রিয়া খিলখিলিয়ে হেসে উঠল।মেয়েটা বেশ উৎসাহ নিয়ে পিয়ানো বাজাতে চাইল তবে খুব বেশি পারল না।এই ব্যাপারে সে একে বারেই অজ্ঞ।
” এডউইন আপনি পিয়ানো বাজাতে পারেন?”
” পারি।”
“আপনি এতটা ব্রিলিয়ান্ট!”
” আমরা সবাই ব্রিলিয়ান্ট আন্দ্রিয়া, শুধু আগ্রহ এবং মনোযোগ নিয়ে শিখলেই পারা যায়।”

আন্দ্রিয়ার বাড়ি অর্থাৎ তার চাচার বাড়িতে আজ সবাই হতভম্ব হয়ে বসে আছে।কয়েক ঘন্টা আগে পুলিশ ফোন করে জানিয়েছে একটি খালে আন্দ্রিয়ার লাশ পাওয়া গেছে।যদিও পুলিশ পরিপূর্ণ নিশ্চিত নয় তবে যে মেয়েটাকে পাওয়া গেছে তার গলায় ঝুলানো খ্রিস্টান ক্রস লকেট।মেয়েটার শরীর ইতোমধ্যে পঁচে গলে একাকার অবস্থা মুখ বোঝার অবস্থা নেই।গলার লকেটটা দেখে আন্দ্রিয়ার বড় চাচা নিশ্চিন্ত হন এই মেয়েটি আন্দ্রিয়া কেননা আন্দ্রিয়ার এই লকেটটি তার বাবা মা তাকে ছোট বেলায় উপহার দিয়েছিল।সব লকেটের চেয়েও অন্যরকম সুন্দর এই লকেট।চিরপরিচিত লকেট চিনতে কি তার ভুল হবে?মেয়েটার পরনে ফ্রক আন্দ্রিয়াও সবসময় ফ্রক পর‍তে পছন্দ করে।মোটামুটি এইটুকুতেই তারা নিশ্চিত এই মেয়েটাই আন্দ্রিয়া মেরি।

যেহেতু তারা নিশ্চিত এটাই আন্দ্রিয়া পুলিশ আর আগ্রহ দিল না তদন্ত করার।
বিশেষ করে আন্দ্রিয়ার ছোট চাচা সিমন তার বড়ো ভাইকে অর্থাৎ আন্দ্রিয়ার বড়ো চাচাকে বলে, এসব নিয়ে আর না ঘাটাঘাটি করাই ভালো হবে।আন্দ্রিয়া সেচ্ছায় বাড়ি থেকে পালিয়ে নিজের বিপদ নিজে ডেকেছে এতগুলো মানুষকে পেরেশানি করানোর কি দরকার ছিল?মানুষের জেদ যে মানুষকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ আন্দ্রিয়া।আন্দ্রিয়ার বড় চাচি লিরা ভীষণ ঠান্ডা মেজাজের মহিলা।তিনি যে আন্দ্রিয়াকে খুব বেশি ভালোবাসতেন তা কিন্তু নয় আবার খুব বেশি যে অবহেলা করতেন তাও নয়।মোদ্দা কথা আদর শাসনে রেখেছেন আন্দ্রিয়াকে।যখন শুনলেন আন্দ্রিয়া মারা গেছে তখন আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না তার কান্নায় ভারি হয়ে উঠল পরিবেশ।লিরা কাঁদতে কাঁদতে জড়িয়ে ধরলেন তার ছোট জা হিয়াকে।

” জানিস হিয়া আন্দ্রিয়া তখন ছোট ছিল ওর মা বাবা যখন মারা যায় তখনি মেয়েটা কেমন জেদি বদমেজাজী হয়ে যায়।ওর বাবা মা ওঁকে ভীষণ আদরে রেখেছেন একমাত্র মেয়ে কি না।আদরের মেয়েটা নিঃসঙ্গতা মেনে নিতে পারেনি বলেই হয়তো এমন হয়ে যায়।প্রথম প্রথম ওঁকে বুঝতাম আগলে রাখতাম কিন্তু তার ত্যাড়ামোর কারণে আমি নিজেই বিরক্ত হয়ে গেছিলাম।সব শেষে মেয়েটা যখন পালিয়ে গেলে এত কষ্ট পেয়েছি মনে মনে ভেবেই রেখেছি এবার ফিরুক বাড়িতে হাত পা ভেঙে ফেলব অথচ….”
লিরা কেঁদে উঠলেন।আন্দ্রিয়ার মৃত্যুতে কারো কোন ক্ষতি না হলেও এতদিন মেয়েটা যে মায়া লাগিয়ে এই পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিল তার শূন্যতা সবাইকে পোড়াচ্ছে।
.
রাতের রান্নার উদ্দেশ্যে এডউইন কিচেনে প্রবেশ করেছে।আন্দ্রিয়া তার পিছু পিছু এসে দাঁড়াল এডউইন যখন রান্না করে তখন তাকে অবলোকন করতে আন্দ্রিয়ার ভীষণ ভালোলাগে।
“কুইন কী খাবে?”
” খিদে নেই হালকা কিছু তৈরি করুন।”
” এক গ্লাস দুধ, একটা ডিম, পাউরুটি, কয়েক টুকরো ফল।চলবে?”
” একদম না।আপনার এসব রোগী টাইপ খাবার দাবার আমার একদম পছন্দ না এডউইন।আপনার খাদ্যভাস একদম বাজে।”
” ওহ রিয়েলি?হেলদি খাবার তো খাও না যত্ত সব…”
” তর্ক না করে একটু কাবাব আর পরোটা করুন।”
” উহ আনহেলদি।”
” এসব হেলদি ফেলদি খেয়ে কি হবে?রাখুন আপনার হেলদি যা বলছি তাই করুন।”
এডউইন ভ্রু নাচিয়ে আন্দ্রিয়ার সম্মুখে এসে দাড়াল এবং কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে,
” হানি হেলদি খাবার যে কতটা দরকার তা বিয়ের পরেই বুঝতে পারবে।”
আন্দ্রিয়া এডউইনকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল,

” মা..মানে কি বলতে চাইছেন?”
” দেহ গড়নে এমনিতেও আমার সাথে যাও না তুমি।আমাদের বয়সের গ্যাপ কত জানো?”
” কত?”
” নাহ ডিপ্রেশনে পড়ে যাবে বলা যাবে না।”
আন্দ্রিয়া সত্যি ডিপ্রেশনে ছিটকে পড়ল আচ্ছা এডউইনের বয়স কতো?আটত্রিশ নাকি চল্লিশ!দূর বাবা এসব ভেবে কি হবে?এডউইন হাজারে একজন এমন ছেলেকে নিয়ে রাস্তায় বের হওয়া মুশকিল।মেয়েরা চোখ দিয়ে গিলে খাবে।যে ছেলে দেখতে সুন্দর সেই ছেলে বয়স বেশি হলেও আন্দ্রিয়ার সমস্যা নেই।টপিক পাল্টাতে আন্দ্রিয়া বলে,
” এডউইন আপনার বিয়ে নিয়ে কোন শখ আছে?”
বিয়ে নিয়ে শখ!এডউইন ঘোরে পড়ল।তার মতো একটা ছেলে কি না বিয়ের স্বপ্ন দেখবে!যার জীবনের চাকা অদ্ভুতের দুয়ারে এসে পৌঁছে গেছে তার কপালে যে বিয়ে থাকতে পারে তা এডউইন কখনোই ভাবে না।

” কি হলো কি ভাবছেন?”
” কিছু না।কাছে আসো।”
আন্দ্রিয়া কাছে এলো এডউইন তার কোমড় জড়িয়ে বসিয়ে দিল উপরে।
” আরেহ এখানে বসালেন কেন?”
এডউইন প্রত্যুত্তর করল না।মুহূর্তে মিশিয়ে দিল আন্দ্রিয়ার ঠোঁটে তার ঠোঁট এসবে আন্দ্রিয়ার বাঁধা নেই যদি বাঁধা থাকতো এডউইন নিশ্চয়ই এসব করার সাহস পেত না।আন্দ্রিয়া জড়িয়ে ধরল এডউইনের গলা। খরা ঠোঁট যুগলে ভালোবাসার পরশে যেন প্রাণ ফিরল।এডউইন আজ অবশ্য মাত্রা ছাড়াল না অল্পতে হাঁপিয়ে উঠল আন্দ্রিয়া।এডউইন মেয়েটার কপালে কপাল ঘষে বলে,
” লাভ ইউ আন্দ্রিয়া মেরি মাই কুইন।”
আন্দ্রিয়া প্রত্যুত্তর করে না সে চুপচাপ অনুভব করে এডউইনের শ্বাসপ্রশ্বাসের আন্দোলন।

মধ্য রাতে এডউইনের চোখে ঘুম নেই।বিয়ে করবে বলে ঠিক করেছে অথচ বিয়েতে একটা মেয়ের কি কি প্রয়োজন সে জানে না।বিয়ে বাদ আন্দ্রিয়া এখন তার দায়িত্বে তাই আন্দ্রিয়ার ঠিক কি কি দরকার এসব নিয়ে সার্চ করতে বসেছে।
সবচেয়ে বড় কথা একটা মেয়ের কি কি দরকার এডউইন তাও জানে না এসব নিয়ে তার ধারণা শূন্য।জানবে কি করে?এডউইনকে যদি বলা হয় কোন পাখির কি খাবার পছন্দ কিংবা কোন সাপ কি পছন্দ করে এডউইন তা ফটাফট বলে দিবে অথচ একটা মেয়ের কি কি প্রয়োজন তা তার ধারণাতেও নেই।

এডউইন বসে আছে তার সিংহাসন সমতুল্য চেয়ারে কোলে জুড়ে বসে আছে একটি মোটা সাপ।সেই সাথে কোলে ল্যাপটপ।আন্দ্রিয়ার কি প্রয়োজন কোন প্রডাক্ট ভালো, জামা কাপড় থেকে শুরু করে সব সবকিছু সে লিস্ট সাজিয়েছে।না না লিস্ট করা এখনো শেষ হয়নি মাত্র নাম লিখে রাখছে কি কি দরকার।মাঝ পথেই ত্রিশটা জিনিসের নাম লেখা হয়েছে এডউইন শব্দ করে শ্বাস ছাড়ল এবং কপালে হাত ঠেকিয়ে বলে,
” হোয়াট দ্যা ফা….এত এত জিনিস!এত কষ্টের জমানো সব ডলার বোধহয় এই বিয়েতেই শেষ হবে।এডউইন উইলসন তুমি এতদিন ভেবেছো একাউন্টে যত ডলার জমেছে এসব দিয়ে তোমার আগামী দশ বছর অনায়াসে চলে যাবে কিন্তু না তোমার টাকা উড়িয়ে দিতে আন্দ্রিয়া মেরি হাজির।”

এডউইন পুনরায় লিস্টে মনোনিবেশ করল গুগল থেকে একে একে খুঁজে খুঁজে দেখছে আর নাম লিখছে।রাত পেরিয়ে ভোর হলো জঙ্গলের পাখিদের ডাকে ভারি হয়ে উঠল পরিবেশ।এডউইন সাপটাকে কোল থেকে সরিয়ে জানলা খুলে দাড়াল। ভোরের এই আকাশটা বড্ড বেশি সুন্দর।মনটা মুহূর্তে আনচান করে উঠল এই যে দিনটা পেরিয়ে রাত আসবে আর আন্দ্রিয়া পরিপূর্ণ তার হবে।হয়তো এডউইনের অভিশপ্ত একাকিত্ব জীবনের অবসান ঘটতে চলেছে।এডউইন স্বগোতক্তি স্বরে বলে,

টেরিবেল পর্ব ১০

” আন্দ্রিয়া মেরি মাই কুইন,কুইন যখন বলেছি তোমাকে আজীবন কুইন করেই রাখব।”
এডউইন নিজ কক্ষ ছাড়ল।একটুখানি পথ হাটলেই আন্দ্রিয়ার কক্ষ মেয়েটা ঘুমে কাবু।এডউইন আন্দ্রিয়ার পাশে বসল মেয়েটার মাথায় হাত বুলিয়ে কপালে চুমু খেয়ে বলে,
” আন্দ্রিয়া মেরি মাই কুইন, ইউ উইল অলয়েজ গোনা বি মাই লাভ।”

টেরিবেল পর্ব ১২