টেরিবেল পর্ব ১৩
অনুপ্রভা মেহেরিন
এতটা কাছে থেকেও আন্দ্রিয়া বুঝতে পারল না সে যার বুকে মাথা ঠেকিয়েছে সেই মানুষটা তার উপর কতটা ক্ষিপ্ত রাগান্বিত।অভ্র ঢোক গিলল এডউইনের চোখে মুখে এখনো রাগের আভাস অভ্র চায় না আন্দ্রিয়া এডউইনের রাগে ভয় পেয়ে যাক।দাম্পত্য জীবন শুরু হওয়ার আগেই যদি বিরূপ প্রভাব পড়ে তবে এই সম্পর্কের শুরুটা মোটেও সুখকর হবে না।অভ্র অতি কৌশলে আন্দ্রিয়াকে ডেকে আনল,
” আন্দ্রিয়া সব তোমার জিনিসপত্র খুলে দেখো এখানে কি কি আছে।”
গিফট শপিং এই ব্যাপারগুলো মেয়েদের কাছে একটু বেশি চমকপ্রদ।শত মন খারাপেও একবার শুনলেই আনন্দের জোয়ারে ভাসতে থাকে।আন্দ্রিয়ার কাছেও ব্যতিক্রম নয় মেয়েটা এডউইনকে ছেড়ে ব্যাগগুলোর সামনে মেঝেতে বসে পরে তার কাণ্ডকারখানা দেখে অভ্র বলে,
” আরেহ উঠে বসো নিচে কেন বসলে?”
” কিছু হবে না।”
আন্দ্রিয়া একে একে ব্যাগ থেকে সব জিনিস পত্র নামাতে শুরু করল।সব জিনিস পত্র দেখে নিশ্চিন্ত এসব তার একবছরের বেশি সময় যাবে।জামা কাপড় কসমেটিক্স স্কিন কেয়ার কোন কিছু কিনতেই এডউইন আলসেমি করেনি।সবচেয়ে স্পেশাল ব্যাগটা খুলতেই দেখতে পেল এডউইনের বিয়ের স্যুট।কালো এই স্যুটটা পরলে এডউইনকে যে কতটা সুদর্শন লাগবে তা আর বলার অপেক্ষা থাকে না।আরেকটা ব্যাগ খুলতেই বেরিয়ে এলো আন্দ্রিয়ার বিয়ের ফ্লাপি গাউন।ধবধবে সাদা গাউনটা টেনে খুলতেই মেয়েটা হয়রান হয়ে যায়।যেমন সুন্দর তেমন ভারি আন্দ্রিয়া গায়ের সাথে জড়িয়ে আহ্লাদী হয়ে বলে,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
” এডউইন আজকে এটা পড়ে বিয়ে করলে আমাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।তবে মজার ব্যাপার কি জানেন?এমন একটা গাউন পরেই বিয়ে করতে চেয়েছি ফাইনালি আমার সব স্বপ্ন পূর্নতা পাচ্ছে।ইসস কখন বিয়েটা হবে এডউইন?কখন জামাটা পরব?আমার আর ধৈর্য ধরছে না।”
আন্দ্রিয়ার হাস্যোজ্জ্বল কথায় অভ্রের মাথা ভনভন করে ঘুরছে।একটু আগে না এই মেয়ে বলল বিয়ে করবে না
বিয়ের তারিখ পিছিয়ে দিতে তাহলে এখন কেন বলছে ধৈর্য ধরছে না?যেমন এডউইন তেমন তার বউ দুইটাই বদ্ধ উন্মাদ পাগল তার ছেঁড়া সস্তা গাজাখোর।অভ্রে বিড়বিড় করে কথাগুলো বলেই এগিয়ে গেল সামনে।কিচেনের পাশেই এডউইনের বার সেকশন
সেখান থেকে দুই তিন প্যাগ না মারলে শান্তি হবে না।
এডউইন চুপচাপ আন্দ্রিয়ার কার্যক্রম দেখছে এই মেয়ে এখন বিয়ে বিয়ে বলে নাচানাচি করছে আচ্ছা যদি বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর আফসোসের ভান্ডার নিয়ে বসে?কেন বিয়ে হলো?কেন বিয়ে করলো?এমন অহেতুক আফসোস নিয়ে আন্দ্রিয়া জ্বালাযন্ত্রণা করতেই পারে।এডউইন দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ল।অভ্র মদের গ্লাস হাতে এগিয়ে এসে বসলো এডউইনের পাশে,
” আমি কি চলে যাব?”
” না থাকো।রাতে একসাথে বের হব।”
” দিনে বিয়ে করলে কি সমস্যা এডউইন?”
” আন্দ্রিয়ার উপর হামলা হতে পারে।”
” রাতে যে হবে না তার নিশ্চিয়তা কি?”
” নেই। কোন নিশ্চয়তা নেই।তবুও আমি চাই নিরিবিলি ভাবে বিয়েটা হয়ে যাক।”
” এডউইন আন্দ্রিয়া ঘোরে পড়ে এসব করছে না তো?পরবর্তীতে যদি ঝামেলা হয়?”
” করবে না।করলেও করতে পারে আমি মানিয়ে ছাড়ব।”
অভ্র গ্লাসটা খালি করে পাশের টেবিলে রাখল।এডউইনের দৃষ্টি আবদ্ধ আন্দ্রিয়ার মাঝে তা অবশ্য অভ্রের অলক্ষ্যে গেল না।এডউইন আন্দ্রিয়ার মাঝে যত বেশি দূর্বল হবে আন্দ্রিয়া ততই বন্দি হয়ে পড়বে।এডউইন ভীষণ টক্সিক সেটা অন্তত অভ্র জানে।
” এডউইন একটা কথা বলব?”
” বল।”
” প্লিজ আন্দ্রিয়াকে তোমার বীভৎস রাগ একদম দেখাবে না।বেচারি সহ্য করতে পারবে না।তোমাকে আমি ছোট থেকেই চিনি তুমি যে কতটা ত্যাদড় স্বভাবের তা আমি জানি।”
” আমার সাথে থাকতে থাকতে সেও নিজেকে মানিয়ে নেবে।”
” শুধু আন্দ্রিয়া মানিয়ে নেবে?তোমাকেও মানিয়ে নিতে হবে অন্তত এইটুকু বুঝেছি আন্দ্রিয়ার ক্ষনে ক্ষনে মতিভ্রম হয় এই যে দেখলে না বিয়ে করবে না আবার এখন বিয়ের জন্য তাড়া দিচ্ছে।তুমি ওর কথায় ওর উলটা পালটা সিদ্ধান্তে হুটহাট রাগ দেখিয়ে পস্তাবে।তুমি যে খুব ভালো ম্যানিউপুলেইট করতে পারো তা আমি জানি।”
অভ্রের কথায় এডউইন না হেসে পারে না।এডউইন মাঝে মাঝে নিজের ভাগ্যের উপর আশ্চর্য না হয়ে পারে না এই যে বন্ধু নামক কালসাপ যাদের পায়োরিটি দিয়েছে তারাই তার জীবনটা ধ্বংস করেছে অথচ এই অভ্র ছিল তার চোখের বিষ।
অজ্ঞাত কারণে সে অভ্রকে একটুও পছন্দ করে না কিন্তু অভ্র বেহায়াপনা করে এডউইনের সাথে আলাপচারিতায় মত্ত থাকত।এডউইন যখন তার জীবনের কালো ছাঁয়ায় আচ্ছান্ন ছিল
একদিন নিজের প্রতি বিরক্তি হয়ে গলায় ফাঁসির দড়ি ঝুলিয়েছিল। ভাগ্যক্রমে অভ্র ঠিকি দেখে ফেলল তাকে পাশাপাশি বিল্ডিং হওয়ায় এডউইনের জানলা দিয়ে তাকে দেখে ফেলল।অবশ্য এডউইনের জানলা বন্ধ ছিল তবে পর্দা দেওয়া ছিল না রাতে জানলার গ্লাসে বাইরে থেকে ভেতরের সব সাদৃশ্যমান তাই অভ্র এডউইনকে দেখা অস্বাভাবিক কিছু ছিল না।সেবারে অভ্র চিৎকার চেচামেচিতে সবাই জড়ো হয়ে যায় সেই যাত্রায় আর এডউইনের ফাঁস দেওয়া হলো না।এতে কি এডউইন অভ্রের উপর সন্তুষ্ট ছিল?মোটেও না বরং ক্ষ্যাপা ষাড় হয়ে যখনি সুযোগ পেয়েছে অভ্রকে তেড়ে গেছে।
রাত একটা বাজতে চলল আন্দ্রিয়া রেডি হয়ে বসে আছে।সাদা গাউন খোলা চুল সেই সাথে ছোট্ট একটা ওড়না। মেয়েটাকে সাদা পরী মনে হচ্ছে।শালোমী আজ আন্দ্রিয়ার পাশ থেকে সরছেই না অবাক চোখে দেখছে সব।
” আন্দ্রিয়া মেরি আপনাকে এবার সত্যি সত্যি কুইন লাগছে।”
” সত্যি?”
” হ্যাঁ।ইসস চোখ ফেরাতে পারছি না এত সুন্দর কেন আপনি?”
আন্দ্রিয়া লজ্জায় হাসে।শুধু কি আজ শালোমী আন্দ্রিয়ার পাশে?না একদম না।আজ পরীদের ভীড় লেগেছে সবাই উড়ছে ঘুরছে আন্দ্রিয়ার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হচ্ছে।আজ তাদের আনন্দ তাদের কুইন কিং পেতে চলেছে।তাদের রাজ্যের কুইন আজ সত্যিকারের কুইন হতে চলেছে।হঠাৎ দরজা খট করে উঠল এডউইন এসেছে তার গায়ে কালো স্যুট হাতে ওয়াচ।এডউইনকে বরাবরি আকর্ষনীয় লাগলেও আজ একটু বেশি লাগছে।
” আন্দ্রিয়া!”
এডউইন হতভম্ব চোখে তাকিয়ে।আন্দ্রিয়াকে এতটা সুন্দর লাগবে সে ভাবতেও পারেনি।সাদা রঙটায় বেশ ফুটে উঠেছে আন্দ্রিয়ার সৌন্দর্য।আন্দ্রিয়া লজ্জা পেল মাথা নুইয়ে তাকাল এডউইনের পানে।
” এডউইন আপনাকে একটু বেশি হ্যান্ডসাম লাগছে।”
” সত্যি?তবে তাকাও না কেন?তোমার জন্যই সাজলাম।শুধু মাত্র তোমার জন্য।”
কথাটা কেমন যেন লাগল আন্দ্রিয়ার এডউইনের কথায় ঘোরে পড়ল।অনুভূতিরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শিরায় উপশিরায় ধোঁয়াশায় মিলিয়ে আসছে সব।ভালোবাসা পাগল আন্দ্রিয়া তবে সত্যিকারের ভালোবাসা পেয়ে চলেছে?পেতে চলেছে তার মনের মানুষ!ইসস এই অনুভূতি প্রকাশ করা যায়?মোটেও না।পরীরা ইশারা ইঙ্গিতে আন্দ্রিয়াকে লজ্জায় ফেলে।এডউইন হাত বাড়িয়ে দিল,
“তুমি কি রাজি আমার রাজ্যের কুইন হতে?”
” আমি রাজি।”
আন্দ্রিয়া এডউইনের হাত জড়িয়ে ধরল।ভারি গাউনটা ঠেলে হাটতে পায়ে লাগছে তা আবার এডউইনের চোখ এড়ালো না।এডউইন গাউনটা যত্ন নিয়ে টেনে ধরেছে যেন তার কুইনের হাটতে কোন সমস্যা না হয়।
.
গির্জায় পৌঁছাতে সৌভাগ্যক্রমে কোন হামলার শিকার হয়নি তারা।আন্দ্রিয়া গাড়ি থেকে নেমেই দেখা পেল তার হবু শ্বশুর শাশুড়ীর।তারা বিয়ে করছে অথচ কেউ নেই, কেউ না।আন্দ্রিয়ার অন্তঃকরণ থেকে বেরিয়ে এলো দীর্ঘশ্বাস ভেবেছিল বন্ধুদের সাথে হইচই করে বিয়ে করবে অবশ্য একদিক দিয়ে মন খারাপেরা উড়াল দেয় যদি এতসব ইচ্ছার মাঝে এডউইনকে হারিয়ে ফেলত তবে?এডউইনকে হারিয়ে ফেললে আন্দ্রিয়া হারিয়ে ফেলবে তার স্বপ্নের সংসার।
এডউইনের সৎ বাবা জিসান তিনি চমৎকার এবং দারুণ ব্যক্তিত্বের মানুষ।এডউইনকে তিনি ভীষণ স্নেহ করেন তবে ছেলেটা কেন জানি দূরত্ব রেখেই চলে।এডউইন হয়তো তার বাবার স্থানটা উনাকে দিতে পারছেন না।জিসান আন্দ্রিয়াকে দেখেই মিষ্টি হাসলেন নাওমি তার কাছে ভীষণ প্রশংসা করেছে আন্দ্রিয়ার।জিসান আন্দ্রিয়ার পানে তাকিয়ে বলেন,
” আন্দ্রিয়া মেরি ছোট্ট পরি কেমন আছো?”
” জি ভালো আঙ্কেল।”
” আঙ্কেল? পাপা বলবে না?”
“পাপা!”
আন্দ্রিয়া ঘোরে পড়ে যায়।তার তো বাবা নেই বাবার স্থানে কাউকে বসায়নি সে হঠাৎ কেউ যখন দাবি করে বসল বাবা হতে তখন আন্দ্রিয়া বেশ হকচকালো।এডউইন এগিয়ে এলো জিসানের সাথে হ্যান্ডশেক করে আন্দ্রিয়ার পাশে দাঁড়াল।
” আন্দ্রিয়া আঙ্কেল আন্টি বলেই ডাকবে পাপা মম এসব বলার দরকার নেই।”
এডউইন যেন অধিকার খাটিয়ে কথাটা বলল।মুহূর্তে থমথমে হলো নাওমি আর জিসানের মুখখানা তারা ইতস্ততবোধ করা স্বত্তেও হাসতে চাইল।কিন্তু এডউইনের সিদ্ধান্তকে উড়িয়ে দিয়ে আন্দ্রিয়া বলে,
” আমি উনাদের মম পাপা বলেই ডাকতে চাই এডউইন।আমার মম পাপা নেই উনারাই এখন আমার মম পাপা।”
এডউই ন ভ্রু কুচকালো প্রত্যুত্তর করার আগে অভ্র এডউইনকে ইশারা করল চুপ থাকতে।
” বেশ, আন্দ্রিয়া যখন চাইছে ডাকতেই পারে।”
জিসান বেশ খুশি হলেন।তবে খুশি দেখা গেল না এডউইনের মামা নেহালকে তিনি এই বিয়েতে আসতেও চাননি নেহাত বোন জোর করেছে বলে আসতেই হলো।অভ্র পকেটে হাত পুরে গির্জার ভেতরে প্রবেশ করল ছেলেটা আজ পরেছে ব্লাক স্যুট প্রতিবারের মতো তাকে হিরোর চেয়ে কম লাগছে না অভ্রের ভাষ্যমতে এখানে আজ যদি সুন্দর সুন্দর রমনীরা থাকত নির্ঘাত তাকে দেখেই জ্ঞান হারাত।
আর অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই যাদের দরকার তারা তো গির্জায় উপস্থিত।গির্জায় প্রবেশ করে।
এডউইনের সাথে আন্দ্রিয়া সম্মুখে এগিয়ে যায় এবং মাথায় ওড়না টেনে নেয়।লহমায় সম্পূর্ণ মুখ ঢেকে যায়।
এডউইন কালো স্যুট পরে দাঁড়িয়ে আছে হাতে একগুচ্ছ লাল গোলাপ।এডউইনের বাদামী চুলগুলো পরিপাটি করে একপাশে আঁচড়ানো।এডউইনের হাস্যোজ্জ্বল মুখ আর চোখ জুড়ে ব্যাকুলতা প্রকাশ পাচ্ছে কাউকে বলে বোঝানো সম্ভব না ছেলেটা আজ কতটা খুশি!
যাদের থাকা কথা তারা প্রত্যেকে গির্জায় উপস্থিত তাই আর দেরি নয় বিয়ে পড়ানোর কার্যক্রম শুরু হতে লাগলো।কিছুটা সময় বাদে বিয়ে পড়ানো শুরু হলো।
” এডউইন উইলসন এবং আন্দ্রিয়া মেরি
তোমরা কোন ভাবে কারো বাধ্যতায় নয় বরং সেচ্ছায় স্বাধীনভাবে ও পূর্ণভাবে এই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে এসেছো?”
এডউইন প্রত্যুত্তরে বলে,
” হ্যাঁ এসেছি।”
আন্দ্রিয়া তার মতামত জানাতে বলে,
” হ্যা এসেছি।”
বিবাহিত জীবনে তোমরা কি পরস্পরকে আজীবন ভালোবাসতে ও সম্মান করে চলতে সম্মত আছো?
” হ্যাঁ সম্মত আছি।”
” হ্যাঁ সম্মত আছি।”
ভবিষ্যতে তোমাদের সন্তান হলে তোমরা কি তাদেরকে ঈশ্বরের দান হতে গ্রহণ করতে ও মানুষের মতো মানুষ করতে সম্মত আছো?
“হ্যাঁ সম্মত আছি।”
” হ্যাঁ সম্মত আছি।”
সুতরাং তোমরা দুজনে পবিত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে দীর্ঘ সংকল্পে আছো বলে তোমরা পরস্পর পরস্পরের সম্মুখে দাঁড়িয়ে ডান হাতের উপর ডান হাত রেখে পরমেশ্বরকে সাক্ষী রেখে তোমাদের বিবাহ প্রতিজ্ঞা শপথ পাঠ করবে,
এডউইন আন্দ্রিয়ার পানে তাকাল এক ঝলক চমৎকার হেসে উড়িয়ে দিল তার নার্ভাস।বিয়ে নামক সম্পর্কে যে সে আদৌ আসতে পারবে তা গত কয়েক বছরের ঝড়ঝাপটায় আশা উড়িয়ে দিতে বাধ্য করেছে।তবে আন্দ্রিয়া এসে সেই আশার প্রদীপে আলো জ্বালিয়েছে পুনরায় ফিরিয়ে দিয়েছে এডউইনের সাহস।এডউইন আন্দ্রিয়ার চোখে চোখ রেখে শপথ পাঠে বলে,
” আন্দ্রিয়া মেরি, মাই কুইন তুমি আমার আরেক সত্তার অহংকার আরেক সত্তা জাগিয়ে তোলার কারিগর।তুমি আমার নশ্বর দেহের অবিনশ্বর অনুভূতি।তোমাকে আমি ততদিন পাশে চাই যতদিন না আমার মৃত্যু এসে ছুঁয়ে যায়।এর আগে যদি এই সম্পর্কের ভিত্তি নড়ে যায় তবে কথা দিচ্ছি এডউইন তার ভালোবাসার ক্ষমতার অপব্যবহার করে হলেও তার কুইনকে রুদ্ধ করবে।”
এডউইনের হাতে থাকা হীরের আংটি পরিয়ে দিল আন্দ্রিয়ার অনামিকা আঙুলে।মেয়েটা দু’চোখ অশ্রুতে টইটুম্বুর।
এডউইন যে কথাগুলো বলেছে এই কথাগুলোর অর্থটা আন্দ্রিয়া কি আদৌ বুঝতে পেরেছে?সে হয়তো বুঝতে পারেনি তবে জিসান,নাওমি,অভ্র তারা তিনজন ভীত চোখে তাকাল এডউইনের পানে।
এবার সময় এসেছে আন্দ্রিয়ার শপথ পাঠের।আন্দ্রিয়া এই পর্যায়ে এসে ভীষণ নার্ভাস হয়ে পড়ল।থরথর করে কাঁপছে তার হাত এডউইন তা অনুভব করল।আন্দ্রিয়া তার কম্পিত কণ্ঠে বলল,
“আমি – ভালোবাসা,আগ্রহ আর গুরুত্ব ছাড়া আর কিছুই চাই না।আমার ব্যথিত হৃদয়ে যে ভালোবাসার জোয়ার নেমেছে সেই জোয়ার আমৃত্যু চলুক।এডউইন উইলসন আমি আপনাকে ভালোবাসি ভালোবাসতে চাই জনম জনম।”
এডউইনের আঙুলে আংটি পরিয়ে দিল আন্দ্রিয়া।এডউইন দৃঢ় প্রত্যয়ে বলে,
“আমি এডউইন উইলসন গ্রহন করছি আন্দ্রিয়া মেরিকে আইনত আমার স্ত্রী রূপে। সে আছে এবং থাকবে সকল পরিস্থিতিতে।”
টেরিবেল পর্ব ১২
সম্পূর্ণ কথা এক নিমিষে বললো এডউইন।তার চোখে চোখ রেখে আন্দ্রিয়া বলে,
“আমি আন্দ্রিয়া মেরি, গ্রহন করছি এডউইন উইলসনকে আইনত আমার স্বামীরূপে। সে আছে এবং থাকবে সকল পরিস্থিতিতে।”