টেরিবেল পর্ব ৭
অনুপ্রভা মেহেরিন
অভ্রের আগমন ছিল আন্দ্রিয়ার কাছে মরুভূমিতে বৃষ্টির সমতুল্য।সে তো জানে এখাকে কেউ আসে না তাহলে উনি কে?অপরদিকে অভ্রের অনুভূতিও একই রকম এডউইন একটা মেয়েকে জড়িয়ে ধরছে!হোয়াট দ্যা…অভ্র মুখ ফুটে কিছু বলার আগে এডউইন কটমটে চাহনি নিক্ষেপ করে বলে,
” কি বললে?”
” তোয়ার লাং আইলো কোনানতুন?”
“হোয়াট দ্যা ফা*….
এডউইন এক প্রকার ঝাপিয়ে পড়ল অভ্রের উপর।ছেলেটা কলার টেনে ধরে গলা চেপে ধরল।
” এ..এডউইন ছাড়ো লাগছে আমার।”
আন্দ্রিয়া কি করবে ভেবে পেল না সবটা তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।কোন মতে দ্রুত বিছানা থেকে নামতে গিয়ে জামার সাথে পা লেগে ফ্লোরে উলটে পড়ল।এডউইন অভ্রকে ছেড়ে দ্রুত আন্দ্রিয়াকে কোলে তুলে নিল।আন্দ্রিয়া নিজের ব্যথাকে চেপে রেখে চুপচাপ দাঁতে দাঁত চেপে রইল কিন্তু এডউইন ঠিকি বুঝে ফেলল তার কুইনের কষ্ট।
” কোথায় ব্যথা লেগেছে কুইন?পায়ে?ইসস দেখি।”
এডউইন ব্যতিব্যস্ত হলো।আন্দ্রিয়ার পা টেনে এনে নিজের কোলে বসালো।
” কুইন কথা বলো কোথায় লেগেছে? ”
এডউইনের অতিশয় ব্যস্ততা আন্দ্রিয়াকে লজ্জায় ফেলে, অভ্র নিজেকে সামলে এডউইনের পাশে দাঁড়ায় এবং দ্বিধাবোধে প্রশ্ন করে,
” এডউইন হু ইজ শী?”
” শী ইজ মাই কুইন।”
” হোয়াট?সিরিয়াসলি?”
” ইয়েস।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
অভ্র চোখ মুখ কুচকে তাকিয়ে রইল কয়েক সেকেন্ড কি মনে করে এডউইনের কথাটা মজা ভেবে হাসতে হাসতে একটা চেয়ারে বসে পড়ল।তার হাসি দেখে আন্দ্রিয়া ড্যাব ড্যাব চোখে তাকিয়ে।
“তোঁয়ার মতোন বন মাইনষেরে কে বিয়া কইরবো?” ( তোমার মতো বন মানুষকে কে বিয়ে করবে?”
” অভ্র মুখ সামলে কথা বলো।”
” না না তোঁয়ারে বন মানুষ কওন যাইতো না তুমি মিয়া সে* ক্সি আছো। (না না তোমাকে বন মানুষ বলা যাবে না তুমি মিয়া সে *ক্সি আছো)”
এডউইন অভ্রের হাত টেনে রুমের বাইরে আনল।রাগে ক্ষোভে এডউইনের পায়ের ব্যথাটা কোথায় যেন উধাও হয়ে গেল।নিচে নেমেই অভ্রকে প্যালেস থেকে বের করতে চাইল এডউইন কিন্তু তা আর হলো না।অভ্র যে পরিমানে ত্যাদড় মানুষ তার সাথে কোন কালেই এডউইন পেরে উঠে না।অভ্র স্বাভাবিক হলো এবং এডউইনকে প্রশ্ন করল,
” মেয়েটা কে এডউইন?”
” আন্দ্রিয়া মেরি আমরা বিয়ে করব।”
” এই ছেলে নিজের বয়স ভুলে গেছো?মনে করিয়ে দেব?কি যেন নাম বললে ওহ আন্দ্রিয়া মেরি।আন্দ্রিয়া জানে তোমার বয়স?”
” কথাটা এমন ভাবে বলছো আমি যেন চল্লিশের বুড়ো।তুমি আর আমি একই বয়সী তাহলে তুমি বিয়েও করছো না আবার আমার পেছনে পড়েছো?”
” আরেহ আমি তো আর এমন বাচ্চা মেয়ে বিয়ে করতে যাচ্ছি না।”
” সে বাচ্চা নয় বিয়ের বয়স হয়েছে।”
অভ্র আড় চোখে তাকিয়ে দেখে আন্দ্রিয়া আসছে অভ্র পুনরায় এডউইনকে খোঁচাতে বলে,
” তোঁয়ার মতো কটকইট্টা বুড়া যদি এইক্কা জোয়ান মাইয়া বিয়া করে তাইলে তো এই গান স্বার্থক।কি কও গান গাইতাম নি?”
” শাট আপ অভ্র।”
অভ্র কি এডউইনের কথা মানে?মোটেও না।সে বেশ জোরেই গেয়ে উঠল,
” কাশিতে কাশিতে বুইড়ার লুঙ্গি যায় খুলিয়া…
” অভ্র আই কিল ইউ।”
” বাকি লাইন বলতে দাও।”
এডউইন আন্দ্রিয়াকে দেখে অভ্রকে ইশারা করল চুপ থাকতে।আন্দ্রিয়া এসে বসলো এডউইনের পাশে।
” উনি কে এডউইন?”
আন্দ্রিয়ার প্রশ্নে এডউইন প্রত্যুত্তর না করলেও অভ্র ভীষণ আগ্রহী আন্দ্রিয়ার সাথে পরিচিত হতে।
” হ্যালো আমি অভ্র মাহমুদ।তুমি?”
” মুসলমান?”
” জি।”
” আমি আন্দ্রিয়া মেরি।”
” এখানে কি করে এলে?না মানে এডউইনের মতো বন মানুষের সাথে কি করে থাকছো?”
এডউইন কিছুটা বিরক্ত হলো আন্দ্রিয়ার সম্মুখে বাঁধা হয়ে বসে পড়ল সে।এডউইন চায় না অভ্র ভালোভাবে আন্দ্রিয়াকে দেখতে পায়।এডউইনের আবার হিংসাত্মক মনোভাব বেশি সে নিজের জিনিস নিয়ে একটু বেশিই হিংসায় ভুগে।এডউইন প্রচন্ড বিরক্ত কণ্ঠে শুধায়,
” অভ্র প্লিজ চুপ করো।”
আন্দ্রিয়া এতক্ষণ সন্দিহান দৃষ্টিতে অভ্রের পানে তাকাচ্ছিল সে কোথায় যেন অভ্রকে দেখেছে কিন্তু কোথায় দেখেছে?কোথায়? কোথায়? কোথায়?আন্দ্রিয়া যখন ভাবনায় মশগুল তখনি অভ্র পালটা প্রশ্ন করল,
” আন্দ্রিয়া কি ভাবছো?”
” আপনাকে কোথায় যেন দেখেছি মনে করতে পারছি না।”
” আমি মডেল অভ্র।তুমি আমাকে দেখবে অস্বাভাবিক কিছু নয়।আমার নিজস্ব ব্র্যান্ড আছে, আমার ব্র্যান্ডের আমিই মডেল।এছাড়াও আমার টুকটাক অন্য ব্র্যান্ডের সাথেও কাজ করা হয়।”
আন্দ্রিয়া এক প্রকার লাফিয়ে উঠল।সে এবার বুঝতে পারছে অভ্রকে সে কোথায় দেখেছে।আন্দ্রিয়ার চকচকে আগ্রহ ভরা চাহনি এডউইনের মোটেও সহ্য হলো না।জ্বলে উঠল তার দুচোখ।চিনচিনে ব্যথায় বুকটা কেমন ভারি হয়ে উঠছে।
” হ্যাঁ মনে পড়েছে আপনাকে আমি অনলাইনেই দেখেছি।”
“এডউইনকে বলেছি আমার ব্র্যান্ডের মডেল হতে।তাকে নিয়ে ফটোশুট করালে সবার নজরে আসবে তা আমি শিওর।”
” হ্যাঁ তাই তো।এডউইন আপনি রাজি হচ্ছেন না কেন?”
” আন্দ্রিয়া তুমি থামবে?উপরে যাও।”
এডউইন দাঁতে দাঁত চেপে বলল।আন্দ্রিয়া আর বসলো না সে এডউইনের কথায় বাধ্য মেয়ের মতো উঠে যেতেই অভ্র বলল,
” আন্দ্রিয়া তুমি মডেল হবে?বেশি না একবার চেষ্টা করো।”
আন্দ্রিয়া ঘুরে দাঁড়াল এত সুযোগ্য অফার!আয়নায় দাড়ালে মাঝে মাঝে সে ভাবে একবার শুধু একবার অডিশন দিলেই সে সিলেক্ট হয়ে যাবে।তাছাড়া শালোমী সবসময় বলে ‘আন্দ্রিয়া মেরি আপনি সিনেমায় গেলে বাকি নায়িকাদের কপাল পুড়বে।’ খুশিতে যখনি আন্দ্রিয়া হ্যাঁ বলতে যাবে ঠিক তখনি এডউইন করে বসলো এক অবিশ্বাস্য কাজ।
হল রুমে সাজানো একটি গাছে প্যাঁচিয়ে ছিল নির্বিষ লাউ ডগা সাপ।সাপটি দেখতে চকচকে সবুজ এবং তার দেহ গড়ন ফিনফিনে।এডউইন সাপটিকে হাতের মুঠোয় পুরলো এবং অভ্রের মুখে ঢুকিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে মুখ চেপে ধরল।একে তো অভ্র সাপ দেখলেই ভয় পায় তার উপর তার মুখের ভেতর সাপ!
আতঙ্কে চেচিয়ে উঠল আন্দ্রিয়া।অভ্রের চাহনি দেখে মনে হলো এক্ষুনি তার মুখের ভেতর বো* মা ব্লাস্ট হয়েছে।
” এডউইন উ..উনাকে ছেড়ে দিন।সাপটা কা ম ড়ে দেবে।”
” হবে মডেল?”
” ন..না না।আ..আমি মজা করছিলাম।”
এডউইন বাঁকা হাসলো অভ্রের মুখ থেকে টেনে বের করল চিকন লাউ ডগা সাপটা।অভ্র দ্রুত মুখে হাত চেপে ওয়াশরুমের দিকে দৌড় লাগাল।কি অদ্ভুত ছেলেরে বাবা!
এডউইন আন্দ্রিয়ার দিকে ঝুকে এলো মেয়েটার ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে বলে,
” মাই কুইন,আমি ছাড়া আর কিছু নিয়েই ভাববে না।নিজের রুমে যাও।”
আন্দ্রিয়া কি প্রতিক্রিয়া জানাবে ভেবে পেল না।মেয়েটা চুপচাপ হেটে চলে গেল উপরে পেছন থেকে অবশ্য একবার এডউইনকে দেখতে ভুললো না।
বৃষ্টি নেই বাইরে বইছে ঝড়।ঝড়ের তান্ডবে পরিবেশ পরিস্থিতি কেমন যেন হয়ে উঠেছে।বজ্রের শব্দে থেকে থেকে কেঁপে উঠছে সকলে তবে পাপেটের পাতালপুরীতে সেসব কিছুই শোনা যাচ্ছে। না।গভীর রাতে পাপেট পাতালে প্রবেশ করল পা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
সোডিয়ামের আলোতে মায়া পাপেটকে দেখেই কেঁপে উঠল।মেয়েটার আতঙ্কিত চাহনিতে পাপেট ভীষণ মজা পেল সে বসলো মায়ার পাশে।
” আমি সাধারণত একটা মেয়েকে দুই দিনের বেশি ভোগ করি না।আজ তোমার দ্বিতীয় দিন।”
মায়া মুখ ফুটে কিছু বলতে চাইল কিন্তু মুখ বাঁধার কারণে কিছুই বলতে পারছে না।পাপেট মায়ার মুখটা খুলে দিল এবং নিজের গায়ে থাকা শার্ট প্যান্ট খুলতে শুরু করল।মায়া লজ্জায় আহাজারিতে চোখ খিঁচে বন্ধ করতে পাপেট চাপা হেসে বলে,
” লুক এট মি।”
মায়া কিছুতেই তাকাল না পাপেটের পানে এতে পাপেটের রাগের মাত্রা বাড়ল।পাপেট নিজের রাগকে কিছুতেই সংবরণ করতে পারে না সে চেচিয়ে বলে,
” আই সেইড লুক এট মি।”
মায়া থরথরে কাপতে থাকে তবুও তাকায় না পাপেটের পানে।এ যেন নীরব যুদ্ধ চলছে দুজনের মাঝে।পাপেট কিছুতেই হেরে যাওয়ার লোক নয়।মনে মনে বিশ্রি হাসলো।
” তাকাবে না? যখন তাকাবে না ঠিক আছে এই চোখ থেকে কি লাভ?”
পাপেট টেবিল থেকে একটি কলম হাতের মুঠোয় পুরলো কালবিলম্ব না করে মায়ার দুচোখে একেরপর এক ঘাই দিতে থাকলো।পাপেট থামছে না তার হাতের সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করে মায়ার চোখে ঘাই দিচ্ছে।এদিকে মায়ার ছটফটে চিৎকার আহাজারিতে পাপেট তৃপ্তির হাসি দিচ্ছে।তার হাত এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তের ছিটা লেগে আছে।সে কি বীভৎস দৃশ্য অক্ষিকোটরে থাকা মায়ার দুটি চোখ ঘেটে আছে।
পাপেট বসলো চেয়ারে মায়ার অনাবৃত সারা দেহে হাত বুলিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করে নিল।আজকেও তার সাথে ব্যাতিক্রম হলো তার দেহ কিছুতেই সায় দিচ্ছে না।নিজের দুর্বলতার ব্যাপার টা কিছুতেই মানতে চায় না পাপেট তার জেদের বলি হলো মায়া।এক প্রকার নিজের দেহের সাথে জোর খাটিয়ে মেয়েটার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপণ করল পাপেট।
এভাবে পেরিয়ে গেল অনেকটা সময়।
মায়ার শরীরে সাড়া শব্দ নেই মেয়েটা কি ম*রে গেছে?মায়া ফুল বিক্রেতা সে যে নিখোঁজ তাতে কারো মাথা ব্যথা নেই পুলিশের কাছে জানানো হলেও পুলিশ তাতে খুব বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে না।একটা ফুল বিক্রেতা মেয়ে কি এই সমাজে খুব বড় কেউ হয়ে গেল?হুহ।মায়ার জন্য আহাজারি করছে শুধু তার মা আর কেউ না।কেউই না।পাপেট চেয়ার থেকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেটে সামনে গেল এবং ফিরে এসে বসল একটি তুলি এবং ক্যানভাস নিয়ে।চকিতে থাকা ধারালো চকচকে ছুরিটা হাতে তুলে নিয়ে মায়ার পেট কা *টতে শুরু করলো।যখনি রক্তের স্রোতে সবকিছু ভেসে যাচ্ছিল তখনি সেই রক্ত দিয়ে ক্যানভাসে একটি মেয়ের উলঙ্গ দৃশ্যের ছবি আঁকতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল পাপেট।
সে যখন ছবি আঁকছিল তখন তার চোখে মুখে ফুটে উঠল তৃপ্তির হাসি।ছবি আঁকা শেষ ক্যানভাসটা ঝুলিয়ে দিল দেয়ালে এবং চাপা সুরে বলল,
টেরিবেল পর্ব ৬
“দিস সোসাইটি মেড মি এ গোস্ট।”
পাপেট ফিরে এলো মায়ার কাছে।শেষ বারের মতো আরেকবার মায়ার সাথে দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হলো।একটা মৃত দেহের সাথে শারিরীক সম্পর্কে লিপ্ত হতে পাপেটের মোটেও ভয় লাগলো না।
নিজের পরিপূর্ণ খায়েশ মিটিয়ে চাপাতির সাহায্যে কেটে ফেলল মায়ার মা* থা।ইয়েস পাপেট আরেকটা ট্রফি জিতেছে সেই খুশিতে তার পোষা কুকুরদের দারুন ভোজন বিলাস করানোর সিদ্ধান্ত নিল।পাপেট শুরু করে তার কাজ ধারালো ছুরির সাহায্যে কুচিকুচি করতে থাকে মায়ার দেহে থাকা সমস্ত মাংস।