ডার্কসাইড পর্ব ২৯

ডার্কসাইড পর্ব ২৯
জাবিন ফোরকান

– চিত্র?
– হুম?
– এইযে আমার হাতটা ধরলে, অমানিশার অভিশাপ থেকে দীপ্তিময় স্বপ্নপুরীতে টেনে আনলে,আর কখনো যাবে না তো?
– ওমা।কেনো যাবো?কক্ষনো যাবো না।মাঝপথে ছেড়ে দেয়ার জন্য এই হাতটা ধরিনি।আমি তুমি একসাথে থাকবো, ইহজীবনের অন্তিম অধ্যায় পর্যন্ত।
– মাঝপথে তোমায় হারালে আমি দিশাহারা পথিক হয়ে যাবো চিত্র।যার কোনো ঠিকানা নেই,কোনো উদ্দেশ্য নেই।বেনামী এক খোলসমাত্র।
– হবেনা আসমান।কোনোদিন হবেনা।আমি তোমার পাশে থাকবো।আজীবন।
“ তুমি তোমার কথা রাখলে না চিত্র, রাখলে না।”—
হৃদয়ের বাণীর বিরোধিতা করলো মস্তিষ্ক।জমালো বিতর্কের আসর।

“ আবেগী হচ্ছিস কেনো আসমান?চিত্র তার কথা রাখেনি?নাকি তুই রাখতে দিস নি?তুই না ওর স্বামী?কোথায় ছিলি তুই যখন ওই কুলাঙ্গারগুলো তোর ভালোবাসাকে খুবলে খুবলে খাচ্ছিল?কোথায় ছিলি তুই যখন তোর নয়নের মণিকে পাষাণের দল বিনাশ করেছে? তুই না কি*লিং মেশিন?তোর প্রভাবে স্বয়ং কে বি অধিপতি যেখানে তটস্থ,সেখানে তুই সামান্যতম ক্ষমতার প্রদর্শনটুকু করতে পারলিনা?কথা দিয়েছিলি না সারাজীবন রক্ষা করবি?সকল ঝড় ঝাপটা থেকে পরিবারকে আগলে রাখবি?তলোয়ার হয়ে লড়বি, ঢাল হয়ে বাঁচাবি।তুই নিজে নিজের কথা রেখেছিস?আসল কুলাঙ্গার তো তুই আসমান!একটা কাপুরুষ!”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

চিন্তা এবং অনুভূতির দ্বৈরথে থরথর করে কাঁপতে থাকলো আসমানের সর্বাঙ্গ। সত্যিই তো।সব দোষ তো তারই।যা হয়েছে তার জন্য হয়েছে।সেই নিজের পরিবারকে এখানে নিয়ে এসেছে।বিশ্বাস করেছিল সে ওই পা*ষণ্ডগুলোকে….কিন্তু অমানুষ কখনো বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে পারেনা এই পাঠ জীবন তাকে আরো একবার নতুন করে পড়ালো।

কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই আসমান ঝট করে পিছনে ফিরলো।রীতিমত বিদ্যুৎ গতিতে অগ্রসর হয়ে একজন গার্ডের কন্ঠনালী চে*পে ধরে আছড়ে ফেললো মেঝেতে।তার অতর্কিত আক্রমণে হতবিহ্বল গার্ডরা মোকাবেলা করার প্রস্তুতি নেয়ার পূর্বেই হোলস্টার থেকে টেনে নিলো পি*স্ত*ল, সহসাই তাক করলো সোফার দিকে।উদ্দেশ্য, হায়েনার দল।কম্পন খেলে গেলো সকলের মাঝে।আসমান গু*লি ছুঁড়তেই যে যেভাবে পারলো ছিটকে গেলো দূরে।পাশে দাঁড়ানো রাফা দ্রুত প্রতিক্রিয়ায় নিজের হিল পরিহিত পায়ে জোর আ*ঘা*ত হেনে আসমানের হাত থেকে পি*স্তল ছিটকে ফেললো দূরে।ইশারায় সকলকে বেরিয়ে যেতে আহ্বান করলো।

আসমানকে চারিপাশ থেকে সকল গার্ড মিলে চেপে ধরলো।দুইজন হাত,দুইজন পিঠ এবং কোমর।যেন হিং*স্র জন্তুকে জোরপূর্বক বাঁধনে আবদ্ধ করার প্রচেষ্টা। হায়েনাগুলো একে একে ত্যাগ করলো কক্ষ, রয়ে গেলো শুধুমাত্র নাবিল।শার্টের বোতাম আটকে নিয়ে সে রাফার পাশে এগোলো।আসমান ততক্ষণে ঝটকা দিয়ে উঠেছে।তার অতিমানবীয় শক্তির সঙ্গে পেরে উঠছেনা কেউই।

– এমন মৃ*ত্যু রচিত হবে যে জাহান্নামও তোদের জায়গা দেবে না,এর নিশ্চায়ক হবো আমি।এটা আসমানের ওয়াদা।
না চাইতেও শিউরে উঠলো নাবিল।আসমান তার দিকে এগোতে চাইলেও একজন গার্ড হুট করে একটি টিজার বের করলো, চেপে ধরলো আসমানের ঘাড়ে। দৃশ্যমানভাবে কয়েকটি বৈদ্যুতিক ঝটকা খেলে গেলো শরীরে,অতঃপর মুষড়ে পড়লো আসমান।মেঝেতে লুটিয়ে পড়ল শরীর,তবুও জ্ঞান হারাতে নারাজ সে।উভয় হাতে মেঝে খামচে ধরেছে, দাঁত দিয়ে জিহ্বা কা*মড়ে র*ক্ত বের করে ফেলেছে যেন মস্তিষ্ক স্থবির হয়ে না পরে।যেকোনো মূল্যে তাকে সজাগ থাকতেই হবে।পারছেনা সে,হৃদয় নিংড়ে আসছে।অশ্রু ঠিকরে বেরোতে চাইছে।দমন করে রেখেছে সর্বশক্তি দিয়ে।দৃষ্টিতে ভাসছে প্রেয়সী এবং রাজকন্যার একান্ত মুহূর্তের প্রতিচ্ছবি।পিঠের উপর পা রেখে তাকে মেঝেতে ঠেসে ধরা হয়েছে।ছটফট করে ভাঙা কন্ঠে চিৎকার ছুড়লো,

– আমার নিস্পাপ বাচ্চাটা কি দোষ করেছিল?ওকে কেনো মা*রলি?
যদিও উত্তর করার প্রয়োজন নেই তবুও খানিক অস্বস্তি নিয়ে নিজেকে যথাযথ প্রমাণ করতেই নাবিল বলে বসলো,
– আমি নাকি?ওইটা ওই সাইফ সাইকোপ্যাথটা…
– শাট আপ!
রাফার ধমকে কাচুমাচু হয়ে পড়ল সদ্য আনন্দ উপভোগরত কায়সারপুত্র।এক মুহূর্তের নীরবতা ছেদ করলো ভারী পদশব্দ।সকলে ঘুরে চাইলো।ততক্ষণে লোহার শিকলের সাহায্যে আসমানের উভয় হাত বেঁধে ফেলা হয়েছে পিছমোড়া করে।ঝাপসা দৃষ্টিতে সে তাকালো।ভেতরে প্রবেশ করলেন,বাদশাহ কায়সার এবং আকাশ।নির্লিপ্ত তার দৃষ্টি।এক নজর সমস্ত রুমে চোখ বুলিয়ে একটিমাত্র দীর্ঘশ্বাস নির্গত হলো তার বক্ষ থেকে।

– এসব কী?
– ব…বাবা…
– আমি এসব নষ্টামি করতে পার্টি দেইনি নাবিল!
সবার সামনেই সজোরে নাবিলের গালে চড় বসালেন বাদশাহ।তাতে আকাশ ব্যাতিত উপস্থিত সকলেই হতবাক হয়ে পড়ল।নিজের গাল চেপে ধরে নিঃশব্দে মেঝের দিকে তাকিয়ে রইলো নাবিল।বাদশাহ আরো একবার দীর্ঘ প্রশ্বাস গ্রহণ করলেন,নিজের মেয়ের দিকে চাইলেন,অতঃপর দৃষ্টিপাত ঘটালেন মেঝেতে আবদ্ধ আসমানের উপর।এক মুহূর্তের জন্য আসমানের কৃষ্ণগহ্বর দৃষ্টিতে জ্বলজ্বলে আশার ক্ষীণ আভার প্রজ্জ্বলন ঘটলো।কাকে নির্বাচন করবেন বাদশাহ?

হায়রে মানুষ!জানে খড়ের টুকরো আঁকড়ে ধরলে ঢেউয়ের তোড় থেকে বাঁচবে না,তবুও ধরে, জীবনের আশায়।
ঈষৎ কম্পিত কন্ঠে বাদশাহ যেন রায় ঘোষণা করলেন।
– কে বি গ্রুপের সঙ্গে বেঈমানির পরিণাম কি হতে পারে সেটা সবাইকে বুঝিয়ে দেয়া হোক।কেউ রেহাই পাবে না,হোক সে র*ক্তের সম্পর্ক কিংবা ক্ষমতাধর কি*লিং মেশিন।
কৃষ্ণগহ্বরে গভীর অমানিশার প্রলেপ পড়লো।হিমালয়ের শীতলতা ছেয়ে গেলো সমস্ত অস্তিত্বকে।বাদশাহ দৃষ্টিপাত করলেন না,উল্টো ঘুরলেন।আকাশের অনুসরণে বেরিয়ে গেলেন রুম থেকে।উহু, রুম নয়,কবর!

বাদশাহ বেরিয়ে যেতেই এক ঝটকায় উঠে পড়লো আসমান।হাত বাঁধা থাকা সত্ত্বেও তার সঙ্গে পেরে উঠতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সকলকে।দুইজন গার্ড পাশে ছিটকে পড়লো।নিজের পা দিয়ে একজনের পায়ে সজোরে লা*থি হেঁকে উঠতে গেলেই বুকে জোর ধাক্কায় চিৎ হয়ে মেঝেতে পড়লো।দৃষ্টি মেলে চাইতেই রাফার মুখখানি নজরে এলো।গাঢ় লাল লিপস্টিকে রাঙানো ঠোঁটে লেগে রয়েছে তীর্যক হাসি। কিছু বুঝতে পারলোনা আসমান।এর আগেই একটি লোহার দণ্ড দিয়ে আঘা*ত হা*না হলো তার বুকে।কুকড়ে গেলো সমস্ত শরীর, শিরা উপশিরায় যন্ত্রণার প্রবাহ ছড়িয়ে পড়লো,নিঃশ্বাস অবরুদ্ধ হয়ে এলো সম্পূর্ণ।

আসমানের চার হাত পা আবদ্ধ করা হলো। আরো একদল গার্ড যোগ দিলো পূর্ববর্তীদের সাথে।একপাশের দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে নাটক দেখতে থাকলো নাবিল।অন্যদিকে কার্যক্রমের নেতৃত্ব নিজের হাতে তুলে নিলো রাফা।আসমানের নড়াচড়া সম্পূর্ণ রুদ্ধ হয়েছে নিশ্চিত করে ঝুকলো।একটানে খুলে ফেললো শার্টের বোতামগুলো।উন্মুক্ত শুভ্র প্রশস্ত বক্ষে দৃষ্টিপাত করলো লোভাতুর হয়ে।তার হাত বয়ে চললো বুকে,কোমল ত্বকের উপর ধারালো নখে আঁকিবুঁকি কেটে চললো সন্তুষ্ট হয়ে।ঘৃণায় গা গুলিয়ে উঠলো আসমানের,বারবার ঝটকা দিয়ে উঠল কিন্তু নড়াচড়ার কোনো সুযোগ অবশিষ্ট নেই।

শরীর ছেড়ে আসছে ধীরে ধীরে।কেমন অবশ শীতলতা ছড়িয়ে পড়ছে প্রত্যেকটি দেহকোষে। বেঁচে থেকে লাভ কি?কাদের জন্য বাঁচবে?কি করবে?মস্তিষ্কের সাথে সাথে হৃদয়ও ম্রিয়মাণ হয়ে পড়লো।
একজন গার্ড হাতে পি*স্ত*ল তুললেও ইশারায় মানা করলো রাফা।ঠকঠক শব্দ তুলে হেঁটে গেলো আসমানের মাথার কাছে।হাত বুলিয়ে আনলো মসৃণ চুলে,স্পর্শ করলো চোখের পাতা, নাক,ঠোঁট… তৃপ্তিভরে।
– আগেই বলেছিলাম।আমার কথা শুনলে না। পরনারীতে আসক্ত হলে।
ভ্রু কুঁচকে ফেললো আসমান।কিন্তু কিছু বলার সুযোগ পেলোনা।ঠোঁটে আঙুল চেপে বসেছে রাফার।সর্বশক্তি দিয়ে ঠেকাতে হলো শারীরিক আগ্রাসন।

– যে জিনিস আমি পাইনি, তা এই ব্রহ্মাণ্ডের আর কারো লাভ করার অধিকার নেই।
অতঃপর?উপস্থিত পিশাচগুলোকে পর্যন্ত নাড়িয়ে দিলো রাফার কার্যক্রম।তার চার ইঞ্চি হিল ঢুকে পড়লো আসমানের মুখের ভেতর।একেবারে কন্ঠনালী পর্যন্ত ঠেকলো তা।ছটফট করে উঠলো শরীর,ছাড়াতে চাইলেও সম্ভব হলোনা।রাফার টকটকে ঠোঁটের কুটিল হাসি এবং দৃষ্টির পাশবিকতা যন্ত্রণাকে চরম সীমায় নিয়ে ঠেকালো।
– হোয়াট আ প্রিটি লিটল ফেইস ইউ হ্যাভ…..

তারপরই সেই কলঙ্কের আখ্যান।জোর দিয়ে একবার এদিক আবার ওদিক নড়লো জুতা।কোমল ত্বক খুব বেশি টান সহ্য করতে সক্ষম হলোনা।কয়েকবার প্রচেষ্টাতেই চিরচির করে ফেঁ*ড়ে এলো র*ক্তে*র বন্যা তুলে।মাত্রাতিরিক্ত বেদনা রূপান্তরিত হয়েছে অনুভূতিহীনতায়।মুখে নিজ র*ক্তে*র স্বাদ টের পেলো আসমান,কন্ঠনালী বেয়ে উষ্ণ তরল নেমে গেলো পাকস্থলীতে।ছুঁড়ে ফেলার কোনো উপায় নেই।শুধু গোঙানি।এ কি তীব্র আক্রোশ!কি মহৎ বেদনা!
দশ মিনিট সময় নিলো বি*কৃত মস্তিষ্কের অধিকারিণী।আসমানের দৈহিক অবয়বের সর্বনাশ করে ছেড়েছে সে।প্রিয় পুতুলটি সে পায়নি,আরেকজনকে ভোগ করতে দেবে কেনো?
খুব ক্ষীণভাবে উঠানামা করছে আসমানের বুক।র*ক্তা*ক্ত সর্বাঙ্গ।ক্ষ*ত বিক্ষ*ত চেহারা,বুক, পিঠ।রেহাই দেয়নি তাকে একবিন্দু।জ্ঞান হারিয়েছে কিছুক্ষণ পূর্বেই।তবুও যেন সজাগ তার শ্রবণ ইন্দ্রিয়।গমগম করছে।নাবিলের মৃদু কন্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে।গার্ডদের সঙ্গে কথা বলছে।

– ম*রেছে?
– এখনো না।
– শালা কই মাছের প্রাণ দেখছি।
– যে অবস্থা,তাতে টিকবেনা।
– সবগুলোকে বস্তায় ভরে নর্দমায় ফেলে আয়।
– কবর দেবো না?

– এত কষ্ট করার দরকার কি?আমার এত ঠেকা পড়েনি, মাথা ধরেছে, রেস্ট করবো।যা বলেছি তোরা তাই কর। যাহ।
নাবিলের কথায় সম্মতি জানালো সকলে।বস্তায় ভরা হলো গোটা পরিবারকে।গাড়িতে করে কনভেনশন হল থেকে বেরিয়ে চলে গেলো সড়ক বেয়ে।বিশাল সুয়ারেজের ঢাকনা খুলে ধপাস করে ফেলে দিয়ে ঢাকনা চাপিয়ে নিজেদের মিশন সমাপ্ত করলো তারা।এখনো বিশ্বাস করতে পারছেনা স্বয়ং আসমানের কাহিনীর সমাপ্তি ঘটেছে!
কিন্তু তারা কি আর বিন্দুমাত্র ধারণা করেছিলো অদূরে আঁধারে আড়ালকৃত একটি গাড়িতে এক রমণী এবং তার তিনজন বডিগার্ড অপেক্ষারত?শকুনের দৃষ্টি নিক্ষেপ করে রেখেছে তাদের কার্যক্রমে।প্রস্থান করতেই সেই গাড়ির দরজা খুলে বেরিয়ে এলো চারুলতা।নির্দেশ দেয়ার আগেই বডিগার্ড তিনজন লেগে পড়লো কাজে।ঢাকনা তুলে ফেললো।কোমরে সেফটি রোপ বেঁধে দুইজন নেমে পড়লো নিচে।বহু সাধনার পর বস্তাটা উদ্ধার করে উপরে ঠেলে দিলো।
বাদামী বর্ণের পাটের গুচ্ছ বেয়ে চুঁইয়ে পড়া র*ক্তধারা লক্ষ্য করে নিজেকে সামলে রাখতে ব্যর্থ হলো চারুলতা।হাঁটু ভেঙে বসে পড়ল সড়কেই,নয়ন বেয়ে বইতে আরম্ভ করলো অশ্রুধারা।

এক সপ্তাহ পর।
ধপাস করে ফ্লোরে আছড়ে পড়লো কাচের শোপিসগুলো।ঝরঝর করে ভেঙে কাঁচ ছড়িয়ে পড়ল চারিপাশে।তবুও নির্বিকার বাদশাহ কায়সার।একমনে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে চলেছেন তিনি।পাশের টেবিলে হাঁটু তুলে বসে নিজের লম্বাটে নখসমূহ সযত্নে রঙিন নেইলপলিশে সাজিয়ে তুলছে রাফা।বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই তাদের চলমান তাণ্ডবে।
– আসমান ভাই ম*রতে পারেনা!আমি বিশ্বাস করিনা!
নিহাদের শক্তিশালী কন্ঠস্বর প্রতিধ্বনিত হলো দেয়ালে দেয়ালে।আবারো কাঁচ ভাঙার শব্দ।এবার হাত দিয়েছে ফুলদানিতে।স্টাফ দুইজন জোরপূর্বক তাকে ঠেকালো। নিজের মাথা দুহাতে চেপে ধরে ঝাঁকি দিয়ে নিহাদ বিড়বিড় করলো,

– ইউ আর লায়িং,আরেন্ট ইউ?
– হোয়াই শুড উই?
নেইলপলিশের প্রলেপে ফু দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়লো রাফা।একনজর তার দিকে চেয়ে ভ্রু কুচকে বাদশাহর পানে ফিরল নিহাদ।

– স্যার প্লীজ।বলুন যে সব মিথ্যা।আসমান ভাই….
– আসমান ভাইকে ছাড়া এগোতে শেখো বাচ্চা।তার জায়গাটা তো তোমাকেই নিতে হবে বলো?
ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকলো নিহাদ।সর্বাঙ্গজুড়ে কম্পন খেলে গেলো তার।বুকের ভেতর ছন্দ থেমেছে, বিষাদের শৃংখলে অবশ হয়ে আসছে শরীর।বাদশাহ কাপ রেখে উঠলেন।পরিধানের স্যুট ঠিকঠাক করে নিয়ে এক নজর দেখলেন নিহাদকে।
– বিলাপে অহেতুক সময় নষ্ট না করে রিপোর্টে মনোযোগ দাও।যা যাওয়ার গিয়েছে।মৃ*ত কখনো ফিরে আসেনা।
শেষ বাক্যটি গোত্তা খেলো কর্ণকুঠরে।বাদশাহ প্রস্থান করলেও তার কথার রেশ রয়ে গেলো বায়ুতে।
আসমান….মৃ*ত!

শব্দদুটো একত্রিত হতেই হাঁটুর জোর হারিয়ে ফেললো নিহাদ।মেঝেতে আছড়ে পড়লো,উভয় বাহু ঠেকলো শক্ত টাইলসে।টপটপ করে গড়াতে থাকলো অশ্রুকণা।একের পর এক। বিন্দু বিন্দু থেকে আরম্ভ হলো সিন্ধুর সূত্রপাত।তার জীবনের একমাত্র কাছের মানুষটি, পরিবার বলে সম্বোধন করার মতন মানুষটি,তাকে গড়ে তোলা মানুষটি আর নেই!কিভাবে মেনে নেবে সে?
ডুকরে কেঁদে উঠলো।এত বড় ধারী ছেলে বাচ্চাদের মতন শব্দ করে কাদঁছে—পরোয়া করলোনা এমন মন্তব্যের।এক নজর ক্রন্দনরত অবয়বে বিরক্ত দৃষ্টি ফেলে উঠে গেলো রাফা।দূরে চলে গেলেও নিহাদের আর্তনাদ থামলো না,বাজতে থাকলো তার কানে।কেঁদেই যাচ্ছে,চোখের পানি বুক ভেসেছে,তবুও বাঁধভাঙা এই বিরহের অশ্রু আজ থামবার নয়।ভবনের স্টাফরাও দুঃখী নয়নে চেয়ে থাকলো, কাদতে থাকা ছেলেটির ভেঙে পড়া অবয়বের দিকে।

তিন মাস পর।
রোম, ইতালি।
হাসপাতালের কেবিনটি সম্পূর্ণ শূণ্যতায় মোড়ানো।বায়ুতে মিশ্রিত ঔষধের ঘ্রাণ।জানালা দিয়ে বাইরের ঈষৎ শীতল প্রবাহ প্রবেশ করছে।হার্টবিট মনিটরের বিপবিপ শব্দ নৈঃশব্দ্য ছেদ করে রেখেছে।একপাশের সোফায় সোজা হয়ে বসে আছে চারুলতা।তার দৃষ্টি আপতিত বিছানায়।বালিশে হেলান দিয়ে বসে আছে আসমান।হাসপাতালের শুভ্র পোশাক শরীরে জড়ানো।ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে ব্যান্ডেজের বাঁধন।চেহারা আবৃত মাস্কে।যদিও দেখা যাচ্ছে না,কিন্তু চারুলতা অন্তরালে থাকা গাঢ় সেলাইয়ের দাগ সম্পর্কে অবগত।এক কলঙ্ক সহসাই ছেয়ে ফেলেছে চাঁদের টুকরোকে।জন্ম দিয়েছে এক অনুভূতিহীন পাথরের।

প্রায় আড়াই মাসের দীর্ঘ কোমায় ছিল আসমান।তার প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হবে স্বয়ং ইটালিয়ান ডাক্তাররাও কল্পনা করতে পারেননি।কিন্ত বেঁচে গিয়েছে আসমান।দুর্ভাগ্য নাকি সৌভাগ্য?সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ?কি ধরে নেয়া যায় ব্যাপারটিকে?প্রথমদিন নিজের চেহারা আয়নায় দেখে তৎক্ষণাৎ ভেঙে ফেলেছে আসমান।পরদিন… সম্পূর্ণ অনুভুতিশূণ্য।প্রজ্জ্বলিত কৃষ্ণগহ্বরযুক্ত দৃষ্টি হারিয়েছে দীপ্তি।তাতে ছেয়ে গিয়েছে হিমালয়ের শীতলতা।মানুষের শরীর নয়, যেন একটি ভাস্কর্যমাত্র।কথা বলেনি একটিও।গভীর কন্ঠস্বর মিলিয়েছে অজানায়। পুতুলমাত্র তার অস্তিত্ব।এভাবেই কেটেছে শেষ কয়েকদিন।চারুলতা নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেনা আর।এই যাতনা তার সহ্য হচ্ছেনা।চোখের সামনে নিজের আপুকে হারিয়েছে,ছোট্ট নিষ্পাপ শিশুটিও!দেখেছে নিজের না চাইতেও হয়ে যাওয়া ভালোবাসার মানুষটাকে পাথর হয়ে যেতে।এরপর?এই কি সমাপ্তি?নাকি এক নতুন সূচনা।

সামান্যতম নড়চড় নেই আসমানের মাঝে।একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে সম্মুখের দেয়ালের দিকে।কিছুই নেই সেখানে,তবুও তাতে নির্বিকার দৃষ্টিপাত।নিঃশ্বাস প্রশ্বাস ক্ষীণ।কব্জির ক্যানোলা বেয়ে পুষ্টির আদান প্রদান ঘটছে কিঞ্চিৎ।চারুলতা নিশ্চিত,এখানে বি*স্ফো*রণ ঘটলেও আসমান কখনো সামান্য মাথা কাত করেও তাকাবেনা।বাংলাদেশ থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে আনা হয়েছিল ইতালির রোমে।চলেছে দীর্ঘ চিকিৎসা।অতঃপর জন্ম নিয়েছে এক অনুভূতিহীন পাথর।
দীর্ঘক্ষণ ধরে জানালার নিকট দাঁড়িয়ে থাকা বিলাল রেমান পিছনে ফিরলেন।ঘুরে এলেন বিছানার কাছে।আসমানের কাঁধে একটি হাত রাখতে চাইলেও রাখলেন না।গুটিয়ে নিলেন।এক নজর চারুর সঙ্গে দৃষ্টি মিলিয়ে মৃদু কন্ঠে বিড়বিড় করলেন,

– আমি তোমাকে দত্তক নিচ্ছি।তোমার পরিচয় হবে নীলাদ্রি রেমান নীল।আমার বড় ছেলে।তোমার কোনো আপত্তি আছে?
নীরব আসমান।সামান্যতম নড়চড় নেই অবয়বে।তাতে একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিলাল অপেক্ষা করলেন।কন্ঠ ধরে এলো তার।অত্যন্ত আবেগিত কন্ঠে শুধালেন,
– কি চাও তুমি আসমান?
হুট করেই অবিশ্বাস্য ঘটনাটি ঘটলো।মাথা ঘুরিয়ে তাকালো আসমান,যন্ত্রের মতন।তার দৃষ্টির নিগূঢ়তা অন্তরকে নাড়িয়ে দিলো। শোষণীয় কৃষ্ণগহ্বর ঘূর্ণিপাক তুললো চাহনিতে।না চাইতেও শিরদাঁড়া বেয়ে শীতল শিহরণ বয়ে যেতে অনুভব করলো চারু।এ কোন আসমান?

– মহাপ্রলয়!
ওই কণ্ঠস্বরের অশরীরী প্রভাবে প্রকম্পন খেলে গেলো মানব ভিত্তিতে। অদ্ভুতভাবে রোমের প্রকৃতিও যেন অশান্ত ঝড়ের আগমন ঘোষণা করলো তৎক্ষণাৎ, বিকট বজ্রপাতের সঙ্গে।তার প্রজ্জ্বলিত চমকানি প্রতিফলিত হলো আসমানের অবয়বে।বি*স্ফা*রিত নয়নে চেয়ে রইলো চারুলতা এবং বিলাল।
এ কোনো মানব নয়,এক রুদ্রচিত্ত বিভীষিকা।

উপন্যাসের অন্তিম পাতা উল্টেছে।সমাপ্তি টানা হয়েছে এক বিভীষিকাময় উপাখ্যানের।বর্তমানে নিজেকেই নিজের মাঝে অনুভব করতে ব্যার্থ হলো রোযা।নিজের বুকটা শূন্যতায় পরিপূর্ণ। নয়নাশ্রু ফুরিয়েছে আরো আগেই।শুধুমাত্র বিষাদীয় এক আবেগ ঘিরে রেখেছে চারিপাশ।এক হিমশীতলতার শৃংখল আবদ্ধ করে ফেলেছে তাকে চারিদিক থেকে।
বিছানায় দুই ঘণ্টা যাবৎ এপাশ ওপাশ করেও নিদ্রা নামক সুখপাখির দেখা মিললোনা।মিলবেনা আজ।পাশে চারুলতা কিছুক্ষণ আগেই ঘুমিয়েছে।কতটা বেদনা চাপা দিয়ে রেখেছে মেয়েটা নিজের মাঝে?নিজের বোনকে হারানো,পরিবার হারানো, ভালোবাসার মানুষটার যন্ত্রণাদায়ক আখ্যান…. সেও কি কম সয়েছে জীবনে?

আস্তে করে বিছানা ছেড়ে উঠলো রোযা।নিঃশব্দে গুটিগুটি পায়ে এলো কিচেনে।ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা এক বোতল পানি নিলো,গ্লাসে ঢেলে তাতে ঠুসলো বরফকুচি। ঢকঢক করে এক নিঃশ্বাসে সাবার করলো সবটুকু।কন্ঠনালী শীতলতায় অবশ হয়ে এলো যেন।তবুও শান্তি মিললোনা।ঠাস করে গ্লাসটা কাউন্টারে রাখতেই কাপতে থাকলো দেহ।পারছেনা সে আর সহ্য করছে।একটু কাদলে ভালো হতো।কিন্তু চোখের পানিও যে ফুরিয়ে এসেছে।

কিভাবে এতটা নিষ্ঠুর হতে পারে কারো ভাগ্য?যখন কেড়ে নেবেই তখন সুখে থাকার স্বপ্নটুকু কেন দেখালো?বেশ তো ছিল আসমান।অনুভূতিহীন, পারিবারিক বন্ধনশূণ্য, একলা, আঁধারে আসক্ত নিশাচর হয়ে।অতর্কিতে সেই জীবনে ঘূর্ণিপাক হয়ে আগমন ঘটে চিত্রলেখার।বর্ণহীন অস্তিত্বে মাখিয়ে দেয় সে আপন অনুভূতির রং।এক নতুন পথচলা।অন্ধকার ছেড়ে সুখের রশ্মিতে বাঁচতে চাওয়া।কিছু না থাকা থেকে এক লহমায় গোটা এক পৃথিবী সমতুল্য সুখ পাওয়া।ভালোবাসার চিহ্নের আগমন,তাকে ঘিরে সজ্জিত সকল দায়িত্ব ভালোবাসার দেয়াল।তারপর… এক প্রলয়ংকরী ঝড়ে সব শেষ।এলোমেলো লণ্ডভণ্ড জীবন।নিঃস্ব অস্তিত্ব।রিক্ত পৃথিবী।খুব কি প্রয়োজন ছিল এমন খেল খেলার?

নিজের জীবনের যন্ত্রণার কথা রোযা কি স্মরণ করবে? দানবরূপী ভগ্ন মানবের আখ্যান তাকে আন্দোলিত করে তুলেছে বিষাদে।প্রথম দেখায় যাকে ন*রপিশাচ ভেবেছিল,যার নৃশং*সতায় ক্ষণে ক্ষণে বুক কেঁপে উঠেছিল… আজ মনে হচ্ছে বড্ড কম করে ফেলেছে সে!এটুকু নিষ্ঠুরতা যথেষ্ট নয়।মানুষের খোলসে আবৃত পশুগুলোকে এত সহজে নিস্তার দেয়া উচিৎ হয়নি।মৃ*ত্যু মানেই তো মুক্তি।জগতের সবথেকে যন্ত্রণাদায়ক মৃ*ত্যুও পশুগুলোর জন্য যথেষ্ট নয়। পশু কেনো বলছে তাদের? এতে তো পশুদেরও অপমান করা হচ্ছে।পশুরাও তো কখনো মানুষের মতন এতটা পাশবিক হয়না!নিজের প্রজাতিকে বিপদাপন্ন করেনা।আর এই মানুষই নাকি সৃষ্টির সেরা জীব!উহু, এরা আসলে মানুষ নয়। এরা জাগতিক কোনো প্রাণী, জড়বস্তু কিংবা বৈজ্ঞানিক উপাদানের কাতারেও পড়েনা। জাহান্নামও এদের দেখলে ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেবে!

মুখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিয়ে নিজেকে সামান্য শান্ত করলো রোযা।তারপর এগোল রুমের দিকে।কিন্তু ফিরতে ইচ্ছা হচ্ছে না।অবাধ্য এই হৃদয় অস্বস্তিতে ছেয়েছে।আনমনে তাকালো দুই তলায়।গাঢ় আঁধারে মোড়া পিশাচের আস্তানায়।
আদও কি পিশাচ সে?কোনোদিন নয়।
সিঁড়ি বেয়ে উঠতে লাগলো রোযা।জানে কিছুই করার নেই।তবুও তাকে টেনে নিচ্ছে এক অদ্ভুত আকর্ষণ।ধীরপায়ে আসমানের রুমের কাছে পৌঁছলো।ঠিক তখনি টের পেলো শূন্যতা নয়,বরং অস্তিত্ব রয়েছে মানুষের।আসমান?ফিরে এসেছে সে?

আসমানের রুমের সামনে থমকে পড়লো রোযা।হালকা চাপানো দরজার ওপাশ থেকে গিটারের মৃদু তরঙ্গ ভেসে আসছে।তাকের পাশে জিনিসটার অস্তিত্ব লক্ষ্য করেছিল সে আগেও,কিন্তু কখনো আসমানকে বাজাতে খেয়াল করেনি।হয়ত চিত্র তাকে শিখিয়েছিল, কিন্তু বর্তমানে তা পরিত্যাগ করেছে।তাই প্রবল আগ্রহ হওয়া সত্ত্বেও কোনোদিন বলা হয়ে উঠেনি সে আসমানের কন্ঠে গান শুনতে চায়।আজ না বললেও তার সেই ইচ্ছা পূরণ হয়ে গেলো।
মৃদু কর্ডের সুরের সঙ্গে এক গভীর কণ্ঠের উদগীরণ চারিপাশ এক লহমায় অজানা আবেশে পরিপূর্ণ করে তুললো।নিজের জায়গায় জমে গেলো রোযা সম্পূর্ণ।বিশ্বাস করে উঠতে পারলোনা।
আসমান গান গাইছে।

~ভায়লিনস প্লেয়িং, এন্ড দি এঞ্জেলস ক্রায়িং
হোয়েন দি স্টারস অ্যালাইন দ্যান
আ’ল বি দেয়ার~
উহু….গান নয়।যেন বিষাদের মহাকাব্য।এতটা যন্ত্রণাদায়ক কোনো কন্ঠ হতে পারে?এতটা বিভীষিকাময় আর্তনাদ শব্দের সুরেলা টানে লোকায়িত থাকতে পারে?
~নো আই ডোন্ট কেয়ার অ্যাবাউট দ্যাম অল
কজ অল আই ওয়ান্ট ইয টু বি লাভড
নাউ অল আই কেয়ার অ্যাবাউট ইয ইউ
ইউ আর স্টাক অন মি লাইক আ ট্যাটু~

নিজের বুক চেপে ধরলো রোযা, ওই কণ্ঠের হাহাকারের সঙ্গে সঙ্গে বিষাদতরঙ্গ খেলে যাচ্ছে তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গজুড়ে।দেয়াল ঘেঁষেই বসে পড়লো মেঝেতে পিঠ ঠেকিয়ে।অশ্রুর প্রবাহ হার মেনেছে গ্লানির সম্মুখে।কত কষ্ট!কত যাতনা!কত হাহাকার!কি চেয়েছিল জীবনে সে?শুধুমাত্র একটু ভালোবাসা ছাড়া?সেটাও এভাবে কেড়ে নিতে হলো অচিরেই?
~নো আই ডোন্ট কেয়ার অ্যাবাউট দা পেইন
আ’ল ওয়াক থ্রু ফায়ার অ্যান্ড থ্রু রেইন
জাস্ট টু গেট ক্লোসার টু ইউ
ইউ আর স্টাক অন মি লাইক আ ট্যাটু~

ডার্কসাইড পর্ব ২৮

ভেঙে ভেঙে আসছে কন্ঠ,মেশানো আদ্রতা।বোঝা যাচ্ছে মারাত্মক আ*ঘা*ত।রোযার ইচ্ছা হলো ছুটে যায় ভেতরে।শক্তভাবে মানুষটিকে নিজের মাঝে আলিঙ্গন করে কানে কানে বলে উঠে,সব ঠিক হয়ে যাবে,আমি আছি,তুমি একা নও।কিন্তু বলা সম্ভব না, করাও সম্ভব না।মিথ্যা আশ্বাস তা।আর কিছুই আসমানের জীবনে ঠিক হবেনা।
ভেতরে আসমান,এবং বাহিরে রোযা…. আপন জগতের যন্ত্রণাদায়ক ভাগ্যের দুই ভিন্ন ভিন্ন অভাগা, অজানা পথের পথিক। উভয়ে বিলীন আপন যাতনার যাঁতাকলে। বেঁচে থেকেও যেন আজ অভ্যন্তর হতে মৃ*ত তাদের অস্তিত্ব।

ডার্কসাইড পর্ব ৩০

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here