ডেনিম জ্যাকেট পর্ব ২২

ডেনিম জ্যাকেট পর্ব ২২
অবন্তিকা তৃপ্তি

মধ্যরাতে কাজীকে ঘুম থেকে টেনে তুলে অফিস খুলিয়েছে স্নিগ্ধ! কায়া পাশে আলুথালু ভঙ্গিতে ওড়না খামচে চুপচাপ স্নিগ্ধের পাশটায় দাঁড়িয়ে আছে চুপচাপ। হৃদপিন্ড নামক বস্তুটা যেন হেটার মুঠোয় নিয়ে একেকটা সেকেন্ড গুনছিল কায়া; ওপাশে আবার স্নিগ্ধ ভীষণ আমোদেই আছে।স্নিগ্ধ কাউকে কল দিচ্ছে একপাশে দাঁড়িয়ে! কায়ার ভীষণ অস্থির লাগছে; ওর ভয়ে ঘাম ছুটে যাচ্ছে একেবারে। ও একসময় পাশ কেটে সরতে সরতে একদম স্নিগ্ধের গায়ের সাথে মিশে ওর টি-শার্টটার কোণ খামচে ধরে জোরে জোরে শ্বাস ফেলে নিজেকে সামলাচ্ছিল।
স্নিগ্ধ ফোন দিচ্ছিলো কাউকে; কায়ার স্পর্শ পেয়ে ও কান থেকে ফোন সরিয়ে মাথাটা নিচু করে আলুথালু কায়াকে একবার দেখল; পরপর ঝুঁকে এসে দায়িত্বশীল প্রেমিকের ন্যায় ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করলো————‘ঠিক আছিস তুই? Any problem?’

কায়া আশপাশে দেখল, বারবার মনে হচ্ছে কেউ কায়াকে দেখে নিবে। জেনে যাবে পুরো ঢাকা শহর— কিভাবে কায়া সবাইকে লুকিয়ে-ঠকিয়ে ওর প্রেমিককে বিয়ে করে নিচ্ছে। কায়া এবার চোখ সরালো: লালা দিয়ে গলা ভিজিয়ে নিয়ে স্নিগ্ধের দিকে চেয়ে সামান্য নিচু গলায় বলল———‘ব.. বিয়েটা না করি স্নিগ্ধ? আমার ভয় হচ্ছে ভীষণ! এভাবে কাউকে না জানিয়ে…!’
কায়া পুরো কথা শেষ করার আগেই স্নিগ্ধের চোখের দিকে চেয়ে থেমে গেল , আলগোছে চোখ নামিয়ে নিয়ে চুপ হয়ে গেল। স্নিগ্ধ কড়া চোখে তাকিয়ে আছে কায়ার দিকে; কায়া হয়তবা ভড়কে যাচ্ছে, ও আলগোছে স্নিগ্ধের টি-শার্ট ছেড়ে দিয়ে সরে যাবে সাইন ওকে ধরে ফেলল তখুনি। স্নিগ্ধ হতাশ শ্বাস ফেলল এ যাত্রায়: তারপর কাউকে কল দিতে দিতে বলল————‘কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করছি এটা কে বলল? জানাচ্ছি একজনকে। তবে এটা এই জন্যে নয় যে আমি ভয় পাচ্ছি। এটা এই জন্যে যেন— তোর মনে না হয় প্রোপার সাক্ষী না থাকার দরুন আমি কখনো এই বিয়ে অস্বীকার করতেও পারি।’

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

কায়া এবার অবাক চোখে তাকাল———‘সাক্ষী? কে?’
স্নিগ্ধ উত্তর দিল না, শুধু চোখ টিপলো দুষ্টু ভঙ্গিতে। কায়া ভয়ার্ত গলায় হঠাৎ কি মনে করে বলে বসল———‘কাব্য ভা…!’
‘Yes babes! তোর মাথায় তো দারুণ বুদ্ধি!’ ——— স্নিগ্ধ হেসে হেসে ফোন কানে ধরেছে, তারপর ফোন কানে ধরাবস্থায় ওপাশে চলে গেল কাব্যের সাথে কথা বলার জন্যে।
কায়ার এবার নিজেকে পাগল পাগল বোধ হচ্ছে। কাব্য ভাই ওকে মেরেই ফেলবেন আজ। আর যদি উনি জিজ্ঞেস করেন—— এই মধ্যরাতে বিয়ে কেন করছে ওরা? কী জবাব দেবে কায়া? ও ঘনিষ্ঠ হয়ে গেছিল স্নিগ্ধের সাথে—— এটা বলবে? কী ভাববেন কাব্য ভাই? বা হয়তোযদি ভেবে বসেন—— বড়লোকের ছেলে পেয়ে কায়া তার ভাইকে ফাঁসিয়েছে?

এসব কাব্য ভাই যদি একবার মুখে উচ্চারণও করে ফেলেন—— কায়া শেষ হয়ে যাবে একদম। সহ্য করতে পারবে না একদম ওসব জঘন্য কথাগুলো। কাব্য ভাই যদি তারপরে আরো খারাপ কথা বলেন…!
অস্থির কায়া এবার কী মনে করে দ্রুত কুহুর ফোনে কল দিল। কুহু ঘুমে ছিলো। কারণ মাঝরাতে কায়ার মতো কুহুর জীবনে কেউ নেই কাজী অফিসের সামনে দাঁড়ানোর জন্যে। তাই বেচারি কুহু ঘুমাচ্ছে।
কায়ার ফোন পেয়ে কুহু ঘুমের ঘোরে কোনরকমে ফোনটা রিসিভ করে কানে লাগাল; ঘুমঘুম স্বরে ‘হ্যালো’ বলতেই ওপাশ থেকে প্রায় কাঁদো-কাঁদো গলায় কায়া বলে বসল————‘কুহুপু, আমি বি..বিয়ে করছি।’
কুহু শুনলো আদো-আদো চোখ খুলে, সেভাবেই পরপর ফোন একবার চোখের সামনে ধরে টাইম দেখে আবার কানে লাগিয়ে ভ্রু কুঁচকে বলল———‘এই মাঝরাতে? মস্করা করিস?’

‘না, সত্যি। প্লিজ দ্রুত মহাখালীর কাজী অফিসটায় আসো না!’———কায়া আর দুটো কথা বললেই এই যেন কেদেই ফেলবে ভাবটুকু এমন।
পুরো বিষয় কুহুর মস্থিস্ক হজম করা মাত্রই কুহু এবার লাফ দিয়ে বসল বিছানায়; সন্দেহ নিয়ে বলল———‘স্নিগ্ধ ভাই তোর সাথে?’
‘হু!’ —— কায়া স্নিগ্ধের দিকে চেয়ে আস্তে করে জবাব দিল।
কুহু কপাল চাপড়ায় অতিষ্ঠ ভঙ্গিতে ,ফের জিজ্ঞেস করল———‘মাঝরাতে বিয়ে না করে কালকে করা যেত না? রাতের মধ্যে তোদের এত তাড়া কীসের হয়ে গেল, বোঝা আমারে।’

‘বলা যাবে না। তুমি প্লিজ এসো কুহুপু! প্লিজ। নাহলে একা একা আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলব চিন্তায়।’ ——— কায়া জোরে জোরে শ্বাস নিতে নিতে বলল। ওর হাঁপানি হচ্ছে ভীষণ। একপ্রকার পায়েই যেন পরে যাচ্ছে কুহুর।
কুহু কায়ার এহেন দুরবস্থা দেখে দ্রুত ওড়না গায়ে জড়িয়ে নিলো; বাসার চাবি হাতে বেরোতে বেরোতে দ্রুতগতিতে বলল———‘আমি বেরিয়ে পড়েছি; আসছি। শান্ত হ তো তুই।স্নিগ্ধ ভাইয়া কই? উনার পাশে গিয়ে দাড়িয়ে থাক, আসছি আমি।’
কায়া এইবার স্বস্তির শ্বাস ফেলে ফোনটা রাখল। স্নিগ্ধ ততক্ষণে ফোন রেখে কায়ার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। কায়া তখন ফোনটা হাতে মুঠোয় ধরে চিন্তায় অস্থির; অন্যমনস্ক। স্নিগ্ধ ছোট শ্বাস ফেলে কায়ার কাঁধের একপাশে চেপে নিজের দিকে মিশিয়ে নীরবে কায়ার চোখের দিকে তাকাল। কায়াও তাকালো তখন, স্নিগ্ধও চোখে মেলালো; তারপর হালকা ঝুঁকে দুষ্টুমি নিয়ে বলল———-‘আর আধা ঘণ্টা পর তোর হাজবেন্ড হবো কায়া। হাজবেন্ডদের কিন্তু অবেক ধরনের হক থাকে; জানিস?’

‘ক..কি হক?’ —— কায়া বুঝেও অবুঝ সেজে জিজ্ঞেস করলো।
স্নিগ্ধ হেসে ওর নাক টেনে দিয়ে বলল———‘ভাবতে থাক: লাগলে গুগল কর। আমি হেল্প করবো?’
স্নিগ্ধ দুষ্টু হেসে তাকাতেই কায়া রেগে ওর বাহুতে একটা চিমটি কাটলো। হাসতে হাসতে স্নিগ্ধ আলগোছে কায়ার কপালে চুমু খেলো তারপর। কায়ার বুকটা ধ্বক করে উঠল হঠাৎ। ওর গুগল করার প্রয়োজন নেই, একদম নেই। ও জানে সব; কিন্তু ও এখন কী বলবে….! ওদের লুকিয়ে একা একা বিয়ে; এসবেও ওসব করার কথা ভাবে কী করে ওই লোক? কায়ার তো এক্ষুনি আত্মা শুকিয়ে যাচ্ছে পরবর্তীতে কি হবে সেটা ভেবেই—- আর একে দেখ; তার কী আগ্রহ; খুশি! কায়া রাগে-দুঃখে মুখ বাকালো।

কুহু চোরের মতো ফ্ল্যাটের দরজা লক করে নিচে নামতেই দেখে কাব্য ওর বাইক স্টার্ট দিচ্ছে। কুহুকে দেখে কাব্য থামল। কুহু কাব্যের মুখের দিকে তাকাল; এই লোকও কি জানে ওদের বিয়ের কথা? কুহু কাব্যের মুখটা ভালো করে লক্ষ করল; আসলেই কি রেগে-টেগে আছে না কি? রাগবেই বা কেন? নিজে প্রেম করছে না? করছেই তো। অন্যের প্রেমে বাধা দিলে কুহু তার পেয়ারের ঊর্মির কথা সবাইকে জানিয়ে দিবে—-জঘন্য পুরুষ একটা!
কাব্যকে দেখেই কেন যেন কুহুর হঠাৎ আবার মেজাজ খারাপ হচ্ছে। কুহু পাশ কাটিয়ে চলে যাবে, পেছন থেকে ভীষণ গম্ভীর: ঠান্ডা এক অভিব্যক্তি নিয়েই কাব্য কুহুর দিকে চেয়ে বলল———‘বাইকে উঠ।’
কুহু ভ্রু বাকিয়ে ফেলল তৎক্ষণাৎ। তারপর মুখ বাকিয়ে দুপা হাঁটা শুরু করে বললো———‘দরকার নেই। আমি একাই যেতে পারি।’

কাব্য ইঞ্জিন স্টার্ট করছিল; ওটা করা থামিয়ে ভ্রু কুঁচকে বলল———‘এই মাঝরাতে একা হেঁটে যাবি?
‘তো?’ ——- কুহু থেমে ভ্রু বাকিয়ে পেছন ফিরে তাকাল কাব্যের দিকে।
তারপর একটু থেমে কাব্যের মুখের দিকে চেয়ে হঠাৎ ঠান্ডা: শীতল গলায় বলল—————‘পেছন থেকে ছুরি; ছোবল মারা তো মানুষের কাজ, কোনও হিংস্র প্রাণী বা ভূত প্রেত এতটাও খারাপ হবে না সম্ভবত।’
বলেই কুহু মেজাজ দেখিয়ে জোরে জোরে পা চালিয়ে হাঁটা শুরু করল। ওদিকে কুহুর কথা শুনে কাব্যের পূর্ব থেকেই খারাপ মেজাজ; আরো গরম হয়ে গেল। ও এবার বাইক থেকে নেমে হনহনিয়ে এগিয়ে হঠাৎ হাঁটতে থাকা কুহুকে আচমকা কাঁধের উপর শূন্যে তুলে নিয়ে সোজা সপাটে বাইকে ঠাস করিয়ে বসিয়ে দিল। কুহু তো চমকে উঠেছে রীতিমত; হা করে কিছুক্ষণ এসব দেখে পরপর চেঁচামিচি করতে যাবে; কাব্য ঠান্ডা গলায় স্রেফ শাসালো——-—-‘তোর এক চিৎকার আজ স্নিগ্ধের বিয়ে আটকানোর জন্যে যথেষ্ট। মাথায় এটা থেকে থাকলে চুপ করে বস।’
কুহু পরপরেই চুপ হয়ে গেল রোবটের ন্যায়। কাব্য কুহুকে বাইকে বসিয়ে জোর করে ওকে একটা হেলমেট পরিয়ে দিয়ে রাগী গলায় বলল———‘হেলমেট খুলবি না: আর চুপ করে বসে থাকবি; নাহলে তোকে আর ওই বিয়ে পাগলা দুটোকে মাথায় তুলে আজ শূন্যে আছাড় মারব।’

কুহু তবু জেদ দেখিয়ে; হাত-পা ছুড়াছোড়ি করে হেলমেট খোলার চেষ্টা করলো, ও বসবেই না কোনোমুল‍্যে এই লোকের বাইকে- কখনোই না: মরে গেলেও না।
কাব্য সেটা দেখে কুহুর মাথায় চাপা হেলমেট দুহাতে ওর মাথার উপরে চেপে ধরে থাকল: কুহু এইবার আর জোর দেখিয়েও হেলমেট খুলতে পারলো না; গরম চোখে কাব্যের দিকে তাকালো।
কাব্য আজ এসবের ধার ধারলো না একটুও; ও চোখ দিয়ে শাসিয়ে স্রেফ বললো———-‘ মেজাজ খারাপ করাবি না কুহু; আই সেইড নো মিনস নো!’

কাব্য শেষের কথাটা কিছুটা ধমকেই বলল। কুহুর বুকটা ধুক করে উঠল তেমন: আগের মতো। সেই পুরনো কাব্য ভাই; পুরনো তার ধমক: তার রাগ; তার চোখ রাঙ্গানো—- সব একই আজ। অথচ কুহু… ওর মনের অনুভূতি কাব্য ভাইয়ের প্রতি আর এক নেই; কেমন যেন বদলে গেছে এতদিনে। কুহু চুপচাপ হেলমেটের আড়ালে কাব্যের চোখের দিকে চেয়ে রইল কেন যেন, পরপর আলগোছে চোখ সরিয়ে নিলো। তাকানোর কি দরকার ওই পাষাণ লোকের দিকে; হৃদয় ভেঙ্গেছে ওর—- এখনো ওইসব কান্না; বিলাপের আর্তনাদ কুহুর কানে করুনসুরে বাজে।
কাব্য বাইকে উঠে বাইক চালু করলো। কিছুদূর যেতেই ব্রেক কাটতেই কুহু আচমকা সামলাতে না পেরে ঝুঁকে এসে দুহাতে কাব্যের কাঁধের শার্ট খামচে ধরল আতঙ্কে। বড়বড় শ্বাস ফেলে কাব্যের শার্ট মুঠোতে খামচে ধরলো।
একটা স্পর্শ কাব্যের বুক তাৎক্ষণিক কেমন যেন একটা করে উঠল তখন। ও থেমে গেল; ওর চোখ সহসা চলে গেল কাঁধের শার্ট খামচে ধরা কুহুর হাতের দিকে। কুহু আতঙ্কে কাব্য ভাইয়ের শার্ট খামচে ধরে চেঁচিয়ে বলে যাচ্ছে———‘আস্তে চালান বাইক; জানের মায়া আপনার না থাকলেও আমার আছে।’

কাব্য সেসব শুনছে না; ও আলগোছে কুহুর হাতের থেকে চোখ সরিয়ে আয়নায় তাকাল। হেলমেটের আড়ালে কুহু চোখ-মুখ কুঁচকে রেখেছে। ওই মুখের রাগী ভাবটুকু দেখে কাব্যের হুশ ফেরে। ও ছোট দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাইক চালানোতে মন দিল আবার। বুকের ভেতরে জমে উঠা উপচে পড়া দীর্ঘশ্বাস; না বলা কথাগুলো বুকেই চেপে রইল—- বলা হয়ে উঠল না আর।

বাইক থামল মহাখালীর কাজী অফিসের ঠিক সামনে। স্নিগ্ধ-কায়া আগে থেকেই সামনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে; পুরো রাস্তা অন্ধকার: একমাত্র কাজী অফিসের ভেতর বাতি জ্বলছে। কাব্য-কুহু নেমে দাঁড়াল বাইক থেকে। বাইক থেকে নেমেই কুহু চোখ-মুখ ভয়ঙ্কর কুঁচকে জেদ দেখিয়ে হেলমেট খুলে কাব্যের দিকে রাগী চোখে চেয়ে সেটা শব্দ করে বাইকের উপর রেখে দিল; তারপর দুবার না তাকিয়ে হনহনিয়ে পেছন ফিরে হাঁটা ধরল। কাব্য কিছুই বলল না;চুপচাপ সেটা দেখে তর্পে হেলমেট সুন্দর করে বাইকের হ্যান্ডেলে রাখল, তারপর এগিয়ে এলো স্নিগ্ধ-কায়ার দিকে।
স্নিগ্ধ কায়ার হাত চেপে ধরেছে। কাব্যকে দেখামাত্রই কায়া ভয় পেয়ে স্নিগ্ধের হাত ছাড়তে ব্যস্ত হয়ে গেল; জোর করছে বারবার। অথচ স্নিগ্ধ ছাড়লোই না: ও কাব্যের দিকে শক্ত চোখে চেয়ে কায়ার হাত আরও চেপে ধরে নিজের হাতে মুঠোয় নিল। হয়তবা কাব্যের সাথে টক্কর দিতে চাইছিল।
অসভ্য ছেলেটা হাত ধরেই আছে; কায়া এইবার প্রায় কাঁদো-কাঁদো হয়েই ফিসফিস করে বললোও——-‘ছাড়ুন; কাব্য ভাই আসছে।’

স্নিগ্ধ যেন শুনেওনি ওসব শাসানি। কাব্য ওদের ঠিক সামনে এসে দাঁড়াল। কুহু দাঁড়িয়েছে কায়ার পাশে: কায়ার ওপর হাতটা ধরে ও ভ্রু কুচকে কাব্যের দিকে তাকাল। কাব্যের চোখ সবার আগে ওদের হাতের দিকে গেলো—- স্নিগ্ধ তবুও ভীষণ স্বাভাবিক ভাবে তাকিয়ে আছে বড় ভাইয়ের দিকে।
কাব্য শীতল চোখে তাকাতেই: কায়া এবার জোর করে স্নিগ্ধের হাত থেকে ওর হাত ছাড়িয়ে নিয়ে কুহুর হাত ধরে ফেলল শক্ত করে; খামচে। কি ভাবছেন কাব্য ভাই কে জানে। এই স্নিগ্ধকে জানে মেরে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছে এইবার ওর; অসভ্য ছেলে একটা।
কাব্য এবার স্নিগ্ধের দিকে তাকাল; স্রেফ গম্ভীর গলায় আগেপিছে কিছু না বলে বলে উঠলো———‘সিরিয়াসলি স্নিগ্ধ: এই মাঝরাতে? ফার্স্ট উই ক্যান টক এবাউট দিস উইথ আওয়ার প্যারেন্টস; রাইট?’
স্নিগ্ধ থামল; তারপর ওদের ঘনিষ্ঠ হবার কথা লুকিয়ে বলল———-‘নো উই কান্ট। আমার বিয়েটা করা দরকার এক্ষুনি।’

‘কেন?’ —— কাব্য ভ্রু কুচকে ফেলল।
স্কায়া চোখ নামিয়ে ফেলেছে ততক্ষনে। খোদা রহম কর; কাব্য ভাই যেন জেরা না করে বসেন। ওদের এসব ঘনিষ্টতার কথা জেনে গেলে লজ্জায় মরে যাবে কায়া। স্নিগ্ধ স্বাভাবিক গলায় বলল———-‘দরকার ভাইয়া, শুধু এটা জেনে রাখো। নাহলে আব্বু-আম্মুকে না জানিয়ে আমি এত বড় স্টেপ একা নিতাম না।’
‘আব্বু-আম্মু যদি জেনে ফেলে?’ ————-কাব্য ভ্রু বাকিয়ে জিজ্ঞেস করে।
স্নিগ্ধ বোঝায়———-‘জানবে না কখনো। কায়া পড়াশোনা শেষ হলে ওদের সামনে আমি আবার ওর কথা বলে ওর হাত চাইব। বিয়ে আবার হবে; আগের বিয়ে ওরা জানবেও না। প্রমিজ ভাইয়া।’
কাব্য এবার কায়ার দিকে চেয়ে কায়াকে দেখল। কায়া ছোট একটা মেয়ে; দু’বছর ধরে রিলেশনে আছে। নিজের ভাইকে এত ছোট একটা মেয়েকে ভালোবাসার জন্যে পেটাতে মন চাইছে কাব্যের।
কাব্য এবার কিছুটা বিরক্তি নিয়েই স্নিগ্ধকে বললো——-‘কায়া ছোট বাচ্চা একটা মেয়ে; মাত্র টেনে পড়া মেয়ের সাথে রিলেশন ক্লারে কোন ছাগলে? অপেক্ষা করা যেতো না ওর বড় হওয়া অব্দি?’
স্নিগ্ধ এবার হেসে-হেসেই মজা পেয়ে বলল———‘ও ছোট? কে বলল তোমাকে? তুমি তো জানো না আমি কাছে এলে

সঙ্গেসঙ্গে কায়া চিমটি কাটতেই স্নিগ্ধ হঠাৎ থেমে গেল। কথাগুলো গিলে কোনরকম কাশতে কাশতে বলল——-‘উহুম; উহুম। আসলে, আসলে…. চোখের সামনে লাভবার্ড ঘুরলে কন্ট্রোল করা যায় না ভাইয়া। তাই আরকি…’
‘শাট আপ বেয়াদব!’ —— বাকি কথা শোনার আগেই কাব্য অশ্লীল কথা শুনে ধমকে উঠল তাৎক্ষণিক! স্নিগ্ধ পরপর চুপ হয়ে গেল।
কাব্য এইবার কায়ার দিকে চেয়ে শীতল গলায় বলল———‘কায়া তুই এই গাধাকে বিয়ে করতে চাস? তোর মত কি? ও তোকে ফোর্স করছে কোনোভাবে? আমাকে বল; বিয়ে হয়ে গেলে এটা নিয়ে কান্নাকাটি করে লাভ হবে না; থিঙ্ক টুওয়াইস।’

কায়া চোখ নামিয়ে নিলো; মাথা নেড়ে নিচু গলায় বলল———‘ও জোর করেনি আমাকে।’
‘ও?’ সম্বোধন শুনে কাব্য ভ্রু কুঁচকালো। কি প্রেমময় সম্বোধন! এত ছোট একটা মেয়ে প্রেম করে বিয়ে করে ফেলছে; বাহ! আজকাল জামানাটাই অনেক ফাস্ট!
কাব্য তারপর স্নিগ্ধের দিকে চেয়ে শীতল স্বরে বলল———‘নিজের রাজি তো আমার কি কাজ এইখানে। যা বিয়ে করে আয়; আমি বাইরে আছি।’
কায়া অবাক হয়ে তাকালো; কুহু ভ্রু কুঁচকেছে। স্নিগ্ধ এ কথা শুনেই খুশিতে বাক-বাকুক হয়ে কাব্যের হাত চেপে টেনে কাজী অফিসের দিকে যেতে যেতে বলল———‘তুমি না হলে শুধু কবুল হবে ভাইয়া; বিয়ে তো হবে না আর। চলো প্লিজ।’

বলে কাব্যকে টেনে নিয়ে গেল কাজী অফিসের দিকে। কাব্যও অনিচ্ছাসত্ত্বেও এগোল। কুহুকে এইবার; এ যাত্রায় ভীষণ খুশি দেখাচ্ছে। ও আসার সময় একটা শাড়ি এনেছে লুকিয়ে; আর ওর মায়ের বিয়ের ওড়নাও নিয়ে এসেছে।
স্নিগ্ধের কাছ থেকে সময় নিয়ে কুহু কায়াকে সাজিয়ে নিয়ে এলো কিছুক্ষণের মধ্যেই; মেকআপ বলতে শুধু একটু রেড লিপস্টিক, কাজল— এটাও কুহু এনেছিল সাথে।
কায়াকে বসানো হলো স্নিগ্ধের পাশে। কাজী কাগজ-পত্র রেডি করে ফেলেছে ততক্ষণে। কাজী ঘুমের চোটে তখনো বারবার হাই তুলছে; বেচারাকে স্নিগ্ধ মাঝরাতে দরজা রীতিমতো বলা যায় ভেঙেই তুলে নিয়ে এসে বসিয়ে দিয়েছে অফিসে।
কাজী ঘুমঘুম স্বরে কাগজের লেখা পড়ে এবার বললেন কায়ার দিকে চেয়ে বললেন———‘দশ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য করিয়া…!’

বাকিটা বলার আগেই কাব্য উনাকে আটকে দিল; কাজী থেমে ঘুমঘুম চোখটাতে বিরক্ত চোখে তাকালেন কাব্যের দিকে———-‘আবার কি বাবা?’
কাব্য জবাবে স্নিগ্ধের দিকে চেয়ে বলল———‘এত কম দেনমোহর কেন?’
স্নিগ্ধ বলে———‘আমার জমানো আপাতত এই টাকাই আছে; টিউশনের টাকা তো আসেনি। আর মাসেরও শেষ: আব্বু এখনো টাকা দেননি।’
কাব্য শুনে সাথেসাথেই বললো———‘আমার জমানো দুই লাখ আছে; একাউন্টে ট্রান্সফার করছি তোর; দিয়ে দিস দেনমোহর হিসেবে।’
স্নিগ্ধ সঙ্গেসঙ্গে আটকাল: বাঁধ সেধে বললো——‘কিন্তু ভাইয়া; আমি আমার টাকা দিতে চাইছি ওকে; তোমাদের কারোর টাকা না।’

কাব্য এসব ধার ধারলোই না: স্বাভাবিক ভঙ্গিতে টাকা ট্রান্সফার করতে করতে জবাব দিল———‘ধার দিচ্ছি; টাকা পেলে ফেরত দিবি। দুনিয়ার কোনও কিছুই ফ্রিতে মিলে না: তাই এত রিঅ্যাক্ট করার কিছু নেই।’
স্নিগ্ধ কাব্যের কথার ধরন শুনেই হেসে ফেলল। কাব্য ভাইয়া খুশিতে ওর বিয়ের সব কাজ করছে; অথচ মুখটাকে এমন একটা করে রেখেছে—— যেন কেউ তিতা করলা জোর করে খাইয়ে এনেছে।
কাব্য টাকা ট্রান্সফার করার পর কাজী আবার আরেকটা হামি তুলে বলা শুরু করলেন—————‘দুই লাখ দশ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য করিয়া আনোয়ার সিদ্দিক এর ছোট পুত্র শাহবীর সিদ্দিক স্নিগ্ধকে বিয়ে করিয়ে চাইলে বলুন মা কবুল।’

কায়ার বুক ভীষণ রকম ধরফর করছে। ওর গলা কাঁপছে ভীষণ। বারবার চোখের পাতায় বাবা-মায়ের মুখ ভেসে আসছে— যাদের ও এই বিয়ের মাধ্যমে ঠকাচ্ছে। আসলেই কি ঠকাচ্ছে? নাকি নিজের ভালো থাকাকে স্বার্থপরের মতো বেচে নিয়ে নিজের জীবনকে সুখী করছে?
কায়া কবুল বলছে না: ওর চোখ জলে টলমল——— কাব্য সেটা দেখে ভেবেছে, বোধহয় ও রাজি না বিয়েতে। কাব্য এবার জলদগম্ভীর স্বরে বলল———‘কায়া? এখনো সময় আছে।’
কায়া কথাটা শুনে কাব্যের দিকে তাকাল। স্নিগ্ধও থেমে গেছে। কায়া যদি কবুল না বলে? ভাইয়ের সামনে মাথাটা কতটা নিচে চলে যাবে স্নিগ্ধের। স্নিগ্ধ কায়ার দিকে অসহায় ভঙ্গিতে তাকিয়ে রইল। কায়ার হাতটা এইবার কুহু চেপে ধরে মৃদু চাপে কায়ার কানের কাছে ফিসফিস করে হঠাৎ বলল———‘কবুল বল কায়া। ভালোবাসা হারিয়ে গেলে যে যন্ত্রণা, সেটা তুই সইতে পারবি না কোনোদিন। এগুলো সইবার শক্তি আল্লাহ খুব লিমিটেড মানুষদেরই দেন; আর আমি জানি তুই ওদের মধ্যেই নস।’

কায়া চমকে কুহুর দিকে তাকাল। কুহু ভীষণ স্বাভাবিক ভঙ্গিতে কথাগুলি বলেছে। কুহু ভীষণ নিচু গলায় কথাটা বললেও, কিভাবে যেন কাব্যও সেটা শুনে ফেলেছে। ও চুপ করে কুহুর দিকে চেয়ে রয়েছে। কুহু মনে এত কষ্ট জমিয়ে রেখেছে; অথচ কাব্য কিছুই করতে পারছে না ওর জন্য— ভিতরে কেমন যেন একটা পুড়তে লাগলো কাব্যের। ও চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল নিজের জায়গায়: কুহুর দিকে চেয়ে অপলক।
কায়া কুহুর থেকে চোখ সরিয়ে কাজীর দিকে তাকাল; কুহুর একেকটা কষ্টের দৃশ্য, ছয় বছরের দীর্ঘ সংগ্রাম দেখা কায়ার নিজের চোখে। ওসব কায়া আসলেই সইতে পারবে না; সহ্য করতেও পারবে না ভালোবাসা হারানোর যন্ত্রণা। হয়তো সেই ভয় থেকেই কায়া দ্রুত বলে উঠল———‘কবুল, কবুল, কবুল।’
কায়ার এভাবে এক শ্বাসে বলা দেখে কাজী কিছুটা কেশে উঠে বললেন———‘একসাথে এভাবে বলে না মা। আচ্ছা তবুও বলে ফেলেছো ভালোই করেছো; আমাকে কষ্ট করতে হলো না আর। আসলে ঘুম পাচ্ছে তো; তোমরা যত দ্রুত করবে আমার ততই লাভ।’

এটা শুনে কায়া লজ্জায় লাল হয়ে মাথা নামিয়ে ফেলল। স্নিগ্ধ তো শুনে হো হো করে হেসে উঠেছে। কাব্য ওর মাথায় গুাট্টা দিয়েই স্নিগ্ধের হাসি থামালো তখন। স্নিগ্ধের বেলায় একই ব্যাপার: ও কায়ার ঠিক মুখের দিকে পুরো সময় চেয়ে তিনবার কবুল বলেছে।
কাজী সাক্ষর নিলেন তারপর। সাক্ষর করামাত্র স্নিগ্ধ ভীষণ আগ্রহ নিয়ে কাজীকে জিজ্ঞেস করল————‘ব্যস এটুকুই কাজী হুজুর? আমি তো ওর হাজবেন্ড এখন থেকে? সম্পূর্ণ হালাল তো?’
কাব্য তখন কাগজটার ছবি তুলে রাখছিল: প্রুভ হিসেবে। স্নিগ্ধের কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে তাকাল। এই ছেলে এতটাই অসভ্য, বেয়াদব? বড় ভাই অব্দি আশেপাশে মানছে না। ইতর একটা।
কুহু তো এই কথা শুনে শব্দ করেই হেসে উঠেছে। টিপ্পনি কেটে বলেছেও—-——‘হ্যাঁ স্নিগ্ধ ভাইয়া। আপনি হালাল; একদম তাজা তাজা হালাল হাজবেন্ড আমার কায়া বেবির।’
‘বাঁচা গেল!’ —— স্নিগ্ধ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল যেন।

স্নিগ্ধ-কায়া পেছনে একসাথে গল্প করে করে আসছে। কুহু কাব্যের সামনে এসে হঠাৎ দাঁড়িয়ে গেল। কাব্য কুহুকে সামনে দেখে হাঁটা থামিয়ে দাঁড়িয়ে গেল; কুহুর দিকে তাকালো। কুহু ইচ্ছা না থাকলেও শেষমেশ না পেরে ভীষণ অনাগ্রহ নিয়ে; এদিক-ওদিক চেয়ে চেয়ে বলল———‘আপনার সাথে কথা আছে।’
কাব্য ভ্রু বাঁকাল———‘সূর্য কোণ দিক থেকে উঠল আজ? তুই কথা বলবি আমার সাথে?’
কুহু নাক-মুখ কুঁচকে বলল———‘রাত এখন; সূর্য রাতে উঠে?’
কাব্য বুঝতে পারল——— ওর মজাকে কুহু দু পয়সার দামও দিবে না। তাই কথা না বাড়িয়ে জিজ্ঞেস স্বাভাবিক গলায় জিজ্ঞেস করল———‘কি কথা?’
‘ওদের বাসর ঘর সাজানো লাগবে।’ ———— কুহু এবার ভীষন স্বাভাবিক ভাবে লাজ-লজ্জাহীন মুখ অভিব্যক্ত নিয়ে সরাসরি বলে বসলো।

‘হোয়াট?’——— কাব্য কেশে উঠল।
কুহু চোখ-মুখ কুঁচকে বলে উঠপ———‘হোয়াট কি? বিয়ে করেছে বাসর ঘর দেখবে না?’
কাব্য ভীষণ অপ্রস্তুত হচ্ছে। নিজের হাতে ছোট ভাইয়ের বাসর সাজাবে? ওহ গড!
কাব্য অযথাই ওর হাতঘড়ি অযথাই ঠিক করার বাহানায় বলল————‘নিজে নিজে যা ইচ্ছে কর: আমি নেই এসবে।’
‘কিন্তু হেল্পটা আপনারই লাগবে। করলে করুন; নাহলে আমি ব্লান্ডার করে দেব।’ ———— কুহু জেদ দেখিয়ে ত্যাড়া গলায় বললে উঠলো।

কাব্য ভ্রু কুচকাল——-‘কি ব্লান্ডার করবি তুই?’
‘আমি বলে দিব— আপনি আপনার বাবা-মাকে লুকিয়ে ওদের বিয়ে দিয়েছেন নিজে দাঁড়িয়ে থেকে।তারপর বড় আব্বু নিশ্চয়ই স্নিগ্ধ ভাইয়া- কায়াকে বকার আগে আপনাকে ডিটারজেন্ট ছাড়াই ধুয়ে দেবেন। ভেবে দেখুন।’ —— বলে কুহু স্বাভাবিক ভাবেই থ্রেটটা ছুড়লো।
কাব্য হাঁ করে তাকিয়ে রইল। এটুকু মেয়ে ওকে হুমকি দিচ্ছে? ওহ গড! এত খারাপ দিন চলছে কাব্যের? কি আর করার। কাব্য হতাশ গলায় বলল———‘আমি ওর বড় ভাই হই: আমি কিভাবে ওর বাসর সাজাব? ব্রেইনটা আছে তোর জায়গায়মতো?’

কুহু বলল———‘আপনাকে তো সাজাতে বলিনি: আপনি আমাকে হেল্প করবেন সেটা বলেছি।’
‘কি হেল্প?’ —— কাব্য ভ্রু বাঁকাল সন্দেহ নিয়ে।
‘ওদের বাসর সাকসেসফুল করার প্ল্যান আছে আমার কাছে। আপনি জাস্ট আমাকে প্ল্যান অনুযায়ী হেল্প করুন; ব্যাস!’ ——— কুহু বলেই স্নিগ্ধের দিকে তাকাল। স্নিগ্ধ দূর থেকে কুহুর দিকে ভীষণ অনুনয় নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে। পারবে তো ও ভাইয়াকে রাজি করাতে; খোদা জানে।
কাব্য এবার দীর্ঘশ্বাস ফেলে হাল ছেড়ে বলেই দিল———‘ফাইন, হেল্প করব আমি। প্ল্যান কি?’
কুহু গম্ভীর হয়ে তাকাল; একহাতে অবশ্য কাব্যের আড়ালে স্নিগ্ধের দিকে চেয়ে থাম্বস’আপ দেখাল। স্নিগ্ধ খুশিতে কায়ার দিকে চেয়ে চোখ টিপে বলল———‘আমার বোন আসলেই জিনিয়াস। শুধু তুই একটা ঢ্যাঁড়স কায়া। কবুল বলতে এত টাইম নিলি; আমার ভয় করছিল ভীষণ।’
‘আসলে প্ল্যানটা হ——-‘ কুহু কথা বলা শেষ করার আগেই ওর ফোনে কল এলো।
কলের স্ক্রিনে নাম হিসেবে দেওয়া —- ‘He’

ডেনিম জ্যাকেট পর্ব ২১

কাব্য নামটা দেখামাত্রই সঙ্গেসঙ্গে ভ্রু কুচকে তাকালো কুহুর দিকে; একইসময় কুহুও তাকাল। কাব্যের চেহারায় রাগ ফুটে উঠতেই: কুহুর কি হলো। ও দ্রুত কলটা রিসিভ করে ফেলল কাব্যের সামনেই— ইচ্ছে করেই। তারপর হেসে হেসে হ্যালো বলে ওপাশে চলে গেল কথা বলতে।
কাব্য দূর থেকে শুধু দেখল—- কুহু একটা ছেলের সাধে হেসেখেলে এই মাঝরাতে কথা বলছে। আবার কোন ট্র্যাপে পা দিয়েছে কে জানে। জানতে হবে কে এই ছেলে? সিয়াম? এটা যদি সিয়াম হয়—- কাব্য ওকে আধমরা করে দিবে কালকে ভার্সিটিতে! ব্লাডি বিচ!

ডেনিম জ্যাকেট পর্ব ২৩

1 COMMENT

Comments are closed.