তরঙ্গে তোমার ছোঁয়া পর্ব ২৪

তরঙ্গে তোমার ছোঁয়া পর্ব ২৪
ফারহানা নিঝুম

অনেকদিন ধরে আকাশ যেন আগুন ঝরাচ্ছে। সূর্যের তীব্র তাপে বাতাসও উষ্ণ হয়ে উঠেছে, যেন আ’গুনের লেলিহান শিখা ছুঁয়ে যাচ্ছে চারপাশ। গাছের পাতাগুলো বিবর্ণ হয়ে ঝিমিয়ে পড়েছে, রাস্তায় হাঁটতে গেলে মনে হয় পায়ের নিচে লোহার পাত বিছানো। সারা শহর জুড়ে একটা ক্লান্ত, নিস্তব্ধ আবহ।

তারপর দুপুরের দিকে হঠাৎ করেই বাতাস বদলে যেতে শুরু করেছে ‌।আকাশের কোণে কোণে কালো মেঘ জমতে শুরু করে। সেই গুমোট গরমের মাঝে হালকা একটা ঠান্ডা বাতাস বইতে শুরু করে, যেন প্রকৃতির নিঃশ্বাস। মুহূর্তের মধ্যে দিগন্ত জুড়ে কালো মেঘের রাজত্ব। গাছের ডালপালা দুলতে থাকে, ধুলো উড়ে উঠে রাস্তায় একধরনের অদ্ভুত সুর তোলে।আচমকাই শুরু হয় টিপটিপ বৃষ্টি! প্রথমে কয়েক ফোঁটা জল পড়ে ধুলোভরা মাটির গায়ে, সাথে সাথে মাটির বুক থেকে বেরিয়ে আসে একটুকরো স্নিগ্ধ গন্ধ। সেই গন্ধ যেন এক মুহূর্তে সমস্ত ক্লান্তি মুছে দেয়। এরপর ধীরে ধীরে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ে, যেন আকাশ থেকে এক মায়াবী ছন্দ নেমে আসছে। বন্ধ ঘরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে ফারাহ। উঁহু সে বাইরে যাবে না।ওই তো একটু আগেই জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখেছে সেই সফেদ গাড়িটা।সে ফিরেছে, ইশ্ ফারাহ কেন এত লজ্জা পাচ্ছে? উঁহু লজ্জার কিছু নেই।
সফেদ শার্ট এবং তার সঙ্গে গাঢ় নীল রঙা জিন্স প্যান্ট।গাড়ি থেকে নেমেই ছাতাটা মেলে ধরে। টুপ টুপ বৃষ্টি পড়ছে।ভেজা জুতো জোড়া আরো খানিকটা ভিজে গেল।পা বাড়িয়ে এগিয়ে চলল সামনে।সদর দরজার সামনেই দাঁড়িয়ে আছেন রুবেনা শেখ। ছেলে কে দেখে ওনার হাসি রীতিমতো উপছে পড়ছে! আলগোছে গিয়ে মা কে জড়িয়ে ধরেছে তাশফিন।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“মিস ইউ ডার্লিং।”
হেসে ফেলল রুবেনা শেখ। তৎক্ষণাৎ আগমন ঘটে রিজুয়ান শেখের।
“উহু আমার বউ কে ডার্লিং ডাকছো বেয়াদব।”
সহসা হেসে ফেলল তাশফিন।বাবা কে আলিঙ্গন করে খুবই সম্মানের সহিতে।
“তোমার বউ আমার কলিজা আব্বু তাই কথাবার্তা সাবধানে বলবে।”
চক্ষুদয় সুঁচালো করে তাকালো।
“তুমি সাবধান। নিজের বউয়ের কাছে যাও।”
“উফ্ আব্বু।”
চমৎকার হাসলো রিজুয়ান শেখ।
“এসো ভেতরে।”
“মিস্টার রিজুয়ান শেখ ফিলিং জেলাস?”
ছেলের কথায় টনক নড়ে ওঠে রিজুয়ান শেখের, চোখ পাকিয়ে তাকালেন তিনি। ওষ্ঠো বাঁকিয়ে হাসলো তাশফিন। দুজনের কান্ড দেখে হু হু করে হেসে উঠলেন রুবেনা শেখ।রাইমা শেখ এগিয়ে এসে ছেলেটাকে আদুরে জড়িয়ে নিলেন। সৌহার্দ্য মৃদু হেসে সবার সাথে ভাব বিনিময় করে রুমে চলে গেলো।
“কেমন আছো চাচী?”
মলিন হাসেন রাইমা শেখ, মৃদু স্বরে বলেন।
“আমি ঠিক আছি তাশফিন।তুই কেমন আছিস?”
“এই তো ভালো।চাচা কোথায়?”
“ও তো কাজে বেরিয়েছে।”
তাশফিন আর কিছু বললো না।

নীরব রাত। চারপাশ নিস্তব্ধ, যেন বাতাসও নিঃশব্দে বইছে। একাকী এক আগুন্তক ধীর পায়ে এগিয়ে যাচ্ছে অন্ধকার গোডাউনের দিকে। তার জুতোর ঠকঠক শব্দ নীরবতা ভেঙে দেয়, প্রতিধ্বনি তোলে দেয়ালের গায়ে।
গোডাউনের বিশাল লোহার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে মুহূর্তকাল থামে সে, যেন কিছুর অপেক্ষায়। তারপর দরজাটা ধীরে ধীরে ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করে।
অন্ধকারে মিশে থাকা নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা যায়। ভেতরে আরেকজন আছে। ছায়ার গভীরে লুকিয়ে থাকা সেই অচেনা সত্তা প্রতীক্ষা করছিল তার নাকি সে-ও অজানার আত’ঙ্কে জমে আছে? লোকটি ভেতরে ঢুকতেই দরজার কপাট ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়, যেন বাতাসও নিশ্বাস আটকে রেখেছে। ঘরটা স্যাঁতসেঁতে, দেয়ালের গায়ে ছোপ ছোপ দাগ, কোণ ঘেঁষে পড়ে থাকা কাঠের বাক্সগুলো কালের সাক্ষী হয়ে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছে।হঠাৎ, কোথাও যেন একটা সামান্য নড়াচড়ার শব্দ হয় শ্বাস টেনে নেওয়ার মতো ক্ষীণ, অথচ স্পষ্ট। লোকটি থমকে দাঁড়ায়।

“কে?”
তার কণ্ঠস্বর গভীর কিন্তু শান্ত।
অন্ধকারের ভেতর থেকে আরেকজন ধীরে ধীরে সামনে আসে। ম্লান আলোয় মুখটা স্পষ্ট হয় চোখ দুটো সতর্ক, মুখের রেখাগুলো কঠোর।
“তুমি এসেছো?”
প্রশ্নটা বাতাসে ভেসে থাকে। উত্তরের অপেক্ষায় যেন চারপাশের নীরবতা আরও ঘনীভূত হয়ে ওঠে।
“তুমি ডেকেছো এখানে?”
বন্ধ ঘরে থাকা দ্বিতীয় লোকটি হাসলো,তার হাসি ভারি খাচ্ছে দেয়ালের পিঠে।
“আমার জিনিস গুলো কোথায়?”
আতংকে কপালে ঘাম জ’মে’ছে প্রথম লোকটির।
“তুমি তো জানোই কি হয়েছে? আমি চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু…
“কিন্তু তা সম্ভব হয়নি তাই তো!আর সেটা কার জন্য?ওই নেভিদের জন্য। হাহ্!”
“দেখো তুমি টেনশন করো না, আমি সবটা সামনে নেব।জাস্ট কিছু দিন সময় লাগবে।”
তর্জনী আঙ্গুলের ইশারায় তাকে যেতে বলল। ইজি চেয়ারে বসে আছে দ্বিতীয় লোকটি। মস্তিষ্ক ডু’বে আছে নিছক ভাবনায়। অ’স্ত্র চাই সেগুলো দিলেই টাকা আসবে,আর তা মোটেও হতে দিচ্ছে না ওই অফিসার গুলো। কিন্তু সে তো সহজে ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়,খুব শীঘ্রই হেস্তনেস্ত করেই ছাড়বে।আর যাকে দায়িত্ব দিয়েছে সে যদি না পারে তাহলে তাকেও শেষ করে দেবে আগুন্তক।

রাত গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে, চারপাশ নিস্তব্ধতার চাদরে ঢাকা। দূর অন্ধকারের গহ্বরে ঘুমিয়ে আছে শহর, কেবল বৃষ্টির একটানা ঝরঝর শব্দ বেজে চলেছে, যেন ক্লান্তিহীন এক সুর। গাছের পাতায়, জানালার কাঁচে, ছাদের কার্নিশে জলকণারা ঝরে পড়ছে অনবরত। পথঘাট ভিজে চকচক করছে, স্ট্রিটলাইটের আলোয় জলে প্রতিফলিত হচ্ছে এক রূপকথার মায়াবী আভা। দূরে কোথাও বাজ পড়লে মুহূর্তের জন্য বিদ্যুতের ঝলকানিতে উদ্ভাসিত হয় চারদিক, তারপর আবার গভীর অন্ধকার গ্রাস করে সবকিছু।

খট করে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করলো তাশফিন। বিছানায় বসে ছিল ফারাহ। চোখাচোখি হয় দু’জনের।
বাইরে তখনও বৃষ্টি ঝরছে, একটানা, থেমে থেমে, কখনো প্রবল, কখনো মৃদু। রাত গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে, অথচ বন্ধ ঘরের ভেতর দু’জন মানুষ, নীরব অথচ স্পষ্ট অনুভূতিতে বাঁধা। একটা ছোট্ট বাতি জ্বলছে কোণের টেবিলে, তার ক্ষীণ আলোয় মানুষের ছায়ারা লম্বা হয়ে পড়েছে দেয়ালে। জানালার কাঁচে বৃষ্টির ফোঁটা লেগে এক অদ্ভুত সঙ্গীত বেঁধেছে, যেন বাইরে প্রকৃতি কথা বলছে আর ভেতরে দু’টি হৃদয় চুপচাপ শুনছে সেই ভাষাহীন সুর।
তাদের চোখে কোনো তাড়াহুড়ো নেই, ঠোঁটের কোণে অজানা এক নীরবতা, হয়তো কিছু বলার আছে, হয়তো কিছুই বলার নেই। সময়ের হিসাব মুছে গেছে এ যেন এক স্থির মুহূর্ত, যেখানে কেবল তাদের শ্বাস প্রশ্বাসের শব্দ আর বৃষ্টির একঘেয়ে ছন্দ।

“কী ম্যাডাম লুকিয়ে লুকিয়ে আছেন কেন?”
হাস্কি টুনে বলা কথাটা তীব্র ভাবে কর্ণ স্পর্শ করলো।
কন্ঠনালি কাঁপছে ফারাহর।তার কি করা উচিত?পাশ কাটিয়ে ব্যালকনিতে এগিয়ে গেল ফারাহ,সফেদ পর্দা গুলো দুলছে। বৃষ্টির ঝপটা এসে বার বার ছুঁয়ে দিচ্ছে তাকে। ভুল করে ফেলল ইশ্ এই ফারাহ তুই এত গাধা কেন বল তো?
“ওই ম্যাডাম শুনেন তো।”
“ডাকবেন না একদম। আমি কিন্তু আপনাকে আজকে মে’রেও দিতে পারি!”
ফিচলে হাসে তাশফিন, শার্টের স্লিভ গোটায় ধীরে ধীরে।টান টান হয়ে দাঁড়ালো।গলা খাঁকা’রি দিয়ে এগুতে এগুতে বলল।
“আমাকে মা’রার সাহস আছে তো? অবশ্য থাকার কথা যেহেতু একজন লেফটেন্যান্ট কমান্ডারের ওয়াইফ তুমি।”
মুখ বাঁকালো ফারাহ। খুঁজে পেলো না কি করবে না কি বলবে? অহেতুক ব্যালকনিতে থাকা টব গুলো উপরে তুলতে লাগলো।

“আপনি সবসময় একই কাজ করেন লেফটেন্যান্ট সাহেব। প্রথম দিন যেটা করেছেন দ্বিতীয় বিয়ের দিনেও একই কাজ করেছেন। আপনি কি ভাবছেন আমি আপনাকে ক্ষমা করে দিয়েছি? উঁহু কখনো না। চলে যান আপনি!”
“ম্যাডাম রুমটা কিন্তু আমার,দখল করে বসে আছেন আপনি!”
থতমত খেয়ে গেল ফারাহ। ভুলেই বসেছে রুমটা এই পঁচা পুরুষের।
“ঠিক আছে আমিই চলে যাচ্ছি।হুউ।”
মুখ বাঁকিয়ে ব্যালকনি থেকে আসতে লাগল ফারাহ।
কোমল স্পর্শ পেয়ে চমকালো ফারাহ,নিজ হাত কারো বুকের বা পাশে অনুভব করতে পারছে সে। ধুকপুক ধুকপুক শব্দটি। ইশ্ শুনলেও বক্ষঃস্থল কম্পিত হচ্ছে তার। অস্থির চিত্তে সরতে চাইলো।
❝চোখ বন্ধ করো, বুকে মাথা রেখে আমার হৃদয় স্পন্দন শুনো সুখ।❞
নারী সত্তা ক্ষণে ক্ষণে কেঁপে উঠছে ফারাহর। পৃথিবীতে এই শব্দটি কি সবচেয়ে সুন্দর? আজ ফারাহর নিকটে এই পুরুষের হৃদয় স্পন্দন এত সুন্দর শুনতে লাগছে কেন?

নিজেকে পুরুষ্ট বক্ষে দেখে ছটপট করতে লাগলো।
“আপনার হৃদয় স্পন্দন খুব বাজে, মাংস পিন্ড লাফাচ্ছে কেন?”
বাচ্চাদের মতো কথা! দারুণ লাগলো তাশফিনের নিকটে। আলগোছে হাঁটুর নিচ দিয়ে পা গলিয়ে কোলে তুলে নিল তাকে।
“হৃদয় স্পন্দন খুব বাজে, লাফাচ্ছে আপনার সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য সুখ।”
লজ্জায় আঁতকে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে ফারাহ। নির্লজ্জ পুরুষ,তাই তো বেফাঁস কথাবার্তা বলে তাকে।সে কি বুঝে না তাতে নারী সত্তা কাঁপিয়ে তুলে অনায়াসে!

“শুনো ম্যাডাম আমাকে আটকালে ফলটা কিন্তু মোটেও ভালো হবে না।আর হ্যাঁ ভুলে গেলেন যাওয়ার সময় কি বলছিলাম? আমার সব সুখ আপনার মাঝে গচ্ছিত আছে। এবার ফেরত দেন শোধসমেদ।”
চঞ্চল কিশোরী আঁটকে দেওয়া হয়েছে শিকলে। উঁহু তাকে নয় তার মন কে।কথায় মেলারা আজ বিদায় নিয়েছে,অধর দুটিতে যেনো অদৃশ্য টেপ লাগিয়ে দিয়েছে কেউ। লজ্জায় নিমজ্জিত অন্তঃস্থল।এত লজ্জা রাখবে কোথায় সে?
“কী ম্যাডাম কথা বলেন।”
দুরুদুরু অনৈতিক হৃদয় স্পন্দন,এই হৃদপিন্ড টা আজ ধোঁকা দিচ্ছে। কেমন ধুকপুক করছে এটা যদি তাশফিন শুনতে পায় তাহলে কি হবে?
অন্ধকার স্বর্গ এক চিলতে আলো নেই কোথাও ‌বক্ষ মাঝে এক অষ্টাদশী কে আঁকড়ে ধরে আছে সুদেহী তাশফিন। বলিষ্ঠ হাতের বাঁধনে জড়ায় ফারাহ। টুকরো টুকরো চুমু এঁকে দিচ্ছে ললাটে। হৃদয়ে দোলা লেগেছে, তলপেটে থাকা প্রজাপতি গুলো উড়তে চাইছে। স্বামী আদর বুঝি এটাই? হয়তো! কম্ফোর্টার টেনে ঢেকে নিল নিজেদের। গুটিসুটি হয়ে শুয়ে রইলো ফারাহ ।

“সুখ।”
“জ্বি।”
“ঘুমাবো।”
চোখ দুটো ছোট হয়ে এলো ফারাহর।ঘুমাক কিন্তু ফারাহ কে বলছে কেন?সে কি করবে?
“ঘুমান।”
‘চ’ শব্দটি বিরক্তের ন্যায় উচ্চারণ করে তাশফিন। ছোটদের বিয়ে করা আরেকটা ঝামেলা।তাদের বুঝাতে বুঝাতে অর্ধেক জীবন শেষ। উফ্ তাল বউটা কবে বুঝবে তাকে? হাঁটুর বয়সী এই মেয়েটা তাকে সামলানোর ক্ষমতা রাখে না,অথচ নিজের সবটা তার উপর ছেড়ে দিয়েছে লেফটেন্যান্ট যে!
“বুকে ঘুমাবো তুমি শোও।”
আহাম্মক বনে গেল ফারাহ তাকিয়ে আছে ফ্যালফ্যাল করে। আকস্মিক লজ্জা অনুভব করলো,ওমা তাশফিন কি তার বুকে মাথা রেখে ঘুমাবে? ইশ্ কি লজ্জা, একদম সিনেমা হয়ে গেল।দম আটকে মা রা যাবে কি সে?

“কী হলো শোও।”
“নপ। আপনার লজ্জা করে না ছোটদের বুকে ঘুমাতে।”
“উফ্ বউ।”
“উফ্ স্বামী।”
থমকালো তাশফিন, বেফাঁস কথায় নিজেও থতমত খেয়ে গেল ফারাহ।হো হো করে হেসে উঠলো তাশফিন।
“ম্যাডাম কি বললেন আবার বলুন।”
থম মে রে গেল ফারাহ। ভুলবশত সেও স্বামী বলে ফেলেছে। ইশ্ কি লজ্জা!
“আমি কিছু বলিনি।”
“কিন্তু আমি তো স্পষ্টই শুনতে পেয়েছি।”
“স্যরি।”
“সে এগেইন।”
“আর বলব না।”
“আবার বলতে হবে।”
“উঁহু।”
“হুউ।”
“বলতে তো আপনাকে হবেই ম্যাডাম।”

হুট করেই ফারাহ কে সাপের মতো পেঁচিয়ে নিল তাশফিন। আঁতকে উঠে ফারাহ, অসহায় মুখ করে তাকালো তার দিকে।তাশফিন তো ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয় মোটেও। পরপর গোলাপী পাপড়ির ন্যায় ওষ্ঠো জোড়া টেনে নেয় নিজ পুরুষ্ট ওষ্ঠো ভাঁজে। শরীর টা অসাড় হয়ে আসছে তার। কাঁপুনি রোগীর মতো কাঁপছে সে। দীর্ঘ সময় নিয়ে ঠোঁটের ভাঁজে থাকা মিষ্টি সুধা পান করে নেয়। উন্মাদ তাশফিন। যাকে আটকানোর সাধ্যি নেই ফারাহর।
ঠোঁট ছেড়ে কপালে কপাল ঠেকিয়ে লম্বা লম্বা নিঃশ্বাস ফেলতে রাখলো দুজনেই।চোখ দুটো খিঁচিয়ে বুঁজে রেখেছে ফারাহ।ওই ফাজিল লেফটেন্যান্ট সাহেবের দিকে তাকানোর সাধ্য নেই তার।

তরঙ্গে তোমার ছোঁয়া পর্ব ২৩

“জান আরেকবার প্লিজ, প্লিজ প্লিজ
সহসা চোখ মেলে তাকাল ফারাহ, বুকের ভেতর দুরু দুরু কম্পন অনুভব করছে। দু’হাতে ঠেলে দিল অসভ্য কমান্ডার কে।
“না ফাজিল লেফটেন্যান্ট সাহেব সরে দাঁড়ান।”
“আই ওয়ান্ট।”

তরঙ্গে তোমার ছোঁয়া পর্ব ২৫