তরঙ্গে তোমার ছোঁয়া পর্ব ২৫
ফারহানা নিঝুম
“কাছে আসতে বলছি!”
বেশ রাগ নিয়ে বলল তাশফিন,মিইয়ে গেল ফারাহ, কাঁপা স্বরে দূর থেকেই বলল।
“না আপনি কেমন জানো!”
ফিচলে হাসে তাশফিন,গা দুলিয়ে বললো।
“ইস্ ওমন করে না জান,এসো না।”
ফারাহ অকস্মাৎ ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলল,ফুঁপাতে ফুঁপাতে বলল।
“আপনি এমন করছেন কেন?”
পিটপিট চোখ করে তাকালো তাশফিন, মৃদু হেসে বলল, আচ্ছা কিছু করব না। বুকে এসো।”
ফারাহ ভয় পাচ্ছে, ফাঁকা ঢোক গিলে বলল।
“সত্যি তো?”
“একদম।”
ফারাহ কাছে আসতেই বুকে টেনে নিল তাশফিন। কপালে উষ্ণ ছোঁয়া এঁকে চোখ বুঁজে।মনে মনে নিজেকে শুধোয়।
“তুই এত ভালো হলি কবে তাশফিন?শেইম অন তাশফিন,বেচারি সুখ নিশ্চয়ই তাকে ভালো ভাবছে, ইশ্ কি হবে সামনে!”
নেভির লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তাশফিন শেখ গভীর রাতে অপারেশন চালিয়ে বঙ্গোপসাগরের মাঝখান থেকে একদল অ’স্ত্র পাচারকারীকে আটক করেছে। বাতাসে এখনো লবণাক্ত গন্ধ, জাহাজের ডেকের আলোয় ধরা পড়া পাচারকারীদের মুখ দৃঢ় কিন্তু উদ্বিগ্ন।
তাশফিন তাদের মধ্যে সবচেয়ে সন্দেহজনক লোকটিকে নিয়ে আসে জিজ্ঞাসাবাদের কক্ষে। রুমটি ছোট, শীতল, একপাশে একমুখী কাঁচের জানালা। আলোটা ইচ্ছা করেই কিছুটা কমিয়ে রাখা হয়েছে, যাতে অপরাধী মানসিক চাপে থাকে।
তাশফিন ধীর পায়ে সামনে এসে দাঁড়ালেন, তার চোখে কঠোর দৃষ্টি। তিনি চেয়ারে বসে কড়া গলায় বললেন, “তোমাদের দলনেতা কে? এই অ’স্ত্র কোথায় পাঠানো হচ্ছিল?”
পাচা’রকারী প্রথমে চুপ করে থাকল, তারপর ঠোঁট কামড়ে বলল, “আমি কিছু জানি না, স্যার। আমি শুধু মাঝি, আমাকে ভাড়া করা হয়েছে।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
তাশফিন এক ঝটকায় টেবিলের উপর রাখা কাগজপত্র তার সামনে ছুঁড়ে দিলেন।
“মিথ্যা বলার চেষ্টা করো না! আমাদের কাছে প্রমাণ আছে, তোমার মোবাইল ট্র্যাক করা হয়েছে। তোমাদের প্রতিটি কথোপকথন রেকর্ড আছে। এখন বলো, অস্ত্র কার কাছে যাওয়ার কথা ছিল?”
লোকটি ঘামতে শুরু করল, একবার পানির বোতলের দিকে তাকাল। তাশফিন ইশারায় বোতল এগিয়ে দিলেন, “পানি খাও, কিন্তু মনে রেখো, মিথ্যে বললে অবস্থা আরও খারাপ হবে।”
একটু থেমে পাচারকারী অস্পষ্ট গলায় বলল।
“আমরা শুধু ডেলিভারি দিই আসল বায়ার কারা, জানি না কিন্তু একজন মানুষ আছে, সবাই তাকে ‘বড় ভাই’ বলে ডাকে তিনি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন।”
তাশফিন শান্ত গলায় বললেন,
“ঠিক আছে, বড় ভাই সম্পর্কে যা জানো, সব বলো।”
তার কণ্ঠস্বরের দৃঢ়তা পাচারকারীকে বুঝিয়ে দিল, আজ মিথ্যে বলে পার পাবে না।”
লোকটা নিশ্চুপ।একটা কথাও বলল না। আকস্মিক সজোরে আ’ঘাত করল তাশফিন। কন্ট্রোল হারাচ্ছে সে, সৌহার্দ্য দ্রুত গতিতে এগিয়ে গেল।
“ভাই ভাই কি করছো?”
অ’গ্নি দৃষ্টি নিবদ্ধ করল তাশফিন,সহসা চুপ করে গেল সৌহার্দ্য।
“স্যরি লেফটেন্যান্ট।”
লোকটাকে আকস্মিক আবারো লাথি বসায় তাশফিন। উল্টো পরে যায় লোকটা! কলার চেপে ধরে তাশফিন।
“বলবি কিনা কে সেই বড় ভাই?”
রীতিমত কাঁপছে লোকটা! কন্ঠনালিতে কথা গুলো আটকে আসছে।
“আমি কিছু জানি না স্যার সত্যি বলছি!”
আবারো আ’ঘাত করতে যায় তাশফিন,নাইম ইসলাম তাকে আটকালো। সৌহার্দ্য টেনে তুলে লোকটাকে,গলা চেপে ধরে তার।
কিয়ৎ সময় পার হতেই কেঁপে কেঁপে উঠে লোকটার পুরুষ্ট শরীর। আকস্মিক মাথা ঘুরিয়ে ফের পড়ে গেল সে।
মুখ থেকে সাদা সাদা ফেনা বেরিয়ে এলো। নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে। বি’ষক্রিয়া!
ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে নৌঘাঁটিতে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো ভেসে উঠছে মানসপটে।কী এসব?উহু সামথিং রং।তার শরীরে কিছুই ছিলো না শুধু হাতে ঈগল পাখির রিং টা ছাড়া। সেটাতে কোনো রকম বিষ পাওয়া যায়নি, অথচ পুরো শরীর নীল হয়ে গেছে।
ভোরের আলো ফুটতে শুরু করার মুহূর্তটি অপার্থিব সৌন্দর্যে ভরা। চারদিক তখন হালকা ধূসর, অন্ধকারের চাদর আস্তে আস্তে সরতে থাকে। পূর্ব দিগন্তে মৃদু কমলা আভা দেখা যাচ্ছে, যেন রঙের ক্যানভাসে সূর্য এক টুকরো উজ্জ্বলতা ছড়িয়ে দিচ্ছে।
পাখিরা ধীরে ধীরে ডাকে, শীতল বাতাস গায়ে শিহরণ জাগায়। গাছের পাতায় জমে থাকা শিশিরবিন্দু সূর্যের আলোয় মুক্তার মতো ঝলমল করে ওঠে। ঘাসের ওপর খালি পায়ে হাঁটলে শিশিরের শীতল স্পর্শ হৃদয়ে এক অনন্য প্রশান্তি এনে দেয়।
বেঘোরে ঘুমাচ্ছে ফারাহ, আকস্মিক হাতে টান পড়লো তার।
“সুখ উঠো।সুখ!এই সুখ উঠো বলছি।”
“হুঁ..
“সুখ উঠতে বলেছি।”
“সকাল হয়নি তো কমান্ডার।”
“উঠো তুমি।”
এক প্রকার ফারাহ কে টেনে ঘুম থেকে তুললো তাশফিন।
“কী হয়েছে আপনার? ভূত দেখেছেন নাকি সকাল সকাল?”
ডান ভ্রু কুঁচকে নিল তাশফিন।
“না আমার ড্রেস বের করো জগিংয়ের । জুতো গুলো রাখা আছে শপে।”
ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে ফারাহ।এত সকালে এই পঁচা লোকটা তাকে এটার জন্য ডেকে তুলেছে?
“সিরিয়াসলি? আপনি এটার জন্য আমাকে ডেকেছেন লেফটেন্যান্ট সাহেব?”
“তো? তুমি কি ভুলছো আমি সেদিন যাওয়ার সময় কি বলেছিলাম?”
“তার মানে এখন আমি আপনার এসব কাজ করব?”
“তো কে করবে ?উঠো।”
রাগে দুঃখে কষ্টে উঠে দাঁড়ালো ফারাহ।ঘুমটা হয়নি তার, মাথাটা ঝিমঝিম করছে। গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে গেল ওয়াশ রুমে। ওখানে আলাদা আলাদা কেবিনেট রয়েছে, রয়েছে অনেক গুলো তাক। সুন্দর করে আয়রন করা শার্ট প্যান্ট অন্য তাকে জুতো গুলো রাখা। ফারাহ জগিং স্যুট বের করে জুতো নিয়ে বেরিয়ে এলো।মুখ গোমড়া করে বলল।
“এই নিন আপনার জগিং স্যুট।”
বাঁকা হাসলো তাশফিন।রেডি হয়ে দ্রুত বেরিয়ে গেল, এটা তার রোজকার কাজ। একজন সৈনিক সে, নিজেকে ফিট রাখতে হবে তবেই তো ল’ড়াই করতে পারবে।তাশফিন বেড়িয়ে যেতেই বিছানায় গা এলিয়ে দিলো ফারাহ। হঠাৎ করে চিৎকার শুনতে পেলো। আঁতকে উঠে সে , দৌড়ে গেল ব্যালকনিতে। নিচে দাঁড়িয়ে আছে তাশফিন, তর্জনী আঙ্গুল তুলে শাসানোর সহিতে আওড়ালো।
“এসে ঘুমোতে দেখলে একের পর এক চুমু খাবো।”
কথাটা বলেই ছুট লাগালো তাশফিন। ঠোঁট উল্টে কেঁদে ফেলল ফারাহ।কি ফাজিল লেফটেন্যান্ট সাহেব!
সূর্যের সোনালি আলো গাছের পাতায় ঝিকিমিকি করছে, শিশিরবিন্দুদের মুক্তার মতো ঝলমল করে তুলছে। হালকা মেঘের টুকরো নীল আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে, আর বাতাসে ভেসে আসছে তাজা ফুলের মিষ্টি গন্ধ। পাখিরা আপন মনে কিচিরমিচির করছে, যেন এক স্বর্গীয় সংগীতের সুর তুলেছে। চারদিকে এক অদ্ভুত শান্তি, সতেজতা আর উজ্জ্বলতার ছোঁয়া একটি নতুন দিনের আশায় পরিপূর্ণ এক ঝলমলে সকাল!
ব্যাগ গুছিয়ে একদম রেডি স্নেহা। মনে আনন্দের বন্যা বইছে রীতিমতো। এত আনন্দ হবেই বা না কেন?এত গুলো দিন পর ফারাহ কে দেখতে পাবে।এই তো আজকে নবীন সহ স্নেহা দু’জনেই ঢাকা যাচ্ছে ফারাহর কাছে।অবশ্য নবীন বলছে স্নেহা কে কিছুদিনের জন্য রেখে ফের চলে আসবে। এখন দেখা যাক কি হয়?
নাচতে নাচতে ড্রয়িং রুমে এলো স্নেহা। ইতিমধ্যেই জয়নাল আহমেদ খেতে বসেছেন সঙ্গে আছেন সাজ্জাদুল আহমেদ। দুজনেই কেনা কা’টা নিয়ে আলোচনা করছে। ছেলের বাড়িতে কি পাঠাবে না পাঠাবে এসব নিয়েই তাদের আলাপ আলোচনা।
“ভাইয়া নবীন তো বলল জামা কাপড় থেকে শুরু করে ফল মিষ্টি সব কেনা হয়ে গেছে। এখন শুধু তোমার দেখার পালা।”
জয়নাল আহমেদ খাবারের টুকরো মুখে পুরে বললেন।
“হ্যা তা তো ঠিক আছে কিন্তু আমি ভাবছিলাম যে আমাদের গোয়ালে তো অনেক গুলো গরু আছে, সেখান থেকে যদি তরতাজা গরুর গোশত দেওয়া হয় তাহলে কেমন হবে ব্যাপারটা?”
সাজ্জাদুল আহমেদ আনন্দের সহিত বললেন।
“এটা তুমি একদম ঠিক করেছো ভাইয়া, ইদানিং গরুর গোশতের দামটা চওড়া খুব।”
জয়নাল আহমেদ তৎক্ষণাৎ বললেন।
“তাহলে এক কাজ করি নবীন কে বলে ব্যবস্থা করে ফেলি।”
“ঠিক আছে।”
খাবার শেষ করে উঠে দাড়ালো জয়নাল আহমেদ,আরিফা আহমেদ নিজ দায়িত্বে সাজ্জাদুল আহমেদ কে ঘরে নিয়ে গেলেন।হাফ ছেড়ে বাঁচল স্নেহা।গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গিয়ে খেতে বসেছে।আগমন ঘটে শায়লা আহমেদের।
“শুনো বোনের শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছো ভালো কথা। কিন্তু ওখানে গিয়ে নাচানাচি, লাফালাফি করবে আর সেগুলো আমার কানে আসবে তখন কিন্তু খবর আছে!যাবে ঘুরবে কিছুদিন তারপর ফিরে আসবে। যদি বাঁদরামি করো তাহলে ফল খুব খারাপ হবে।এই আমি আগে থেকেই বলে দিলাম।”
রুটির টুকরো মুখে নেওয়ার পূর্বেই হাত থেমে গেল স্নেহার। এইটা কোনো কথা?সে যাবে অথচ মজা করতে পারবে না?হায় রে কপাল!
“কী রে খাচ্ছিস না কেন?”
মায়ের ধমকে হুশে ফিরল ফারাহ। ফাঁকা ঢোক গিলে বলল।
“বলছিলাম কি মা তুমিই খাও আমি ফারাহর বাড়িতে গিয়েই খাবো।”
চুপচাপ টেবিল ছেড়ে উঠে গেল স্নেহা,সুঁচালো চোখে তাকিয়ে আছেন শায়লা আহমেদ।
কিচেন থেকে কফি কাপ হাতে বেরিয়ে এলো ফারাহ। সোফায় বসে কাজ করছিল সাইফুল।
“ভাইয়া আপনার কফি।”
সৌজন্য মূলক হাসলো সাইফুল,হাত বাড়িয়ে কফি কাপ নিয়ে বলল।
“থ্যাংকস ফারাহ।”
ফারাহ স্বভাব সুলভ মিষ্টি হাসি উপহার দিয়ে ফের কিচেনে গেল।কিয়ৎ সময় পরেই উপর থেকে চিৎকার শুনতে পেলো।
“ফারাহ? ফারাহ কোথায় তুমি? ইমিডিয়েটলি রুমে এসো।”
হঠাৎ তাশফিনের চিৎকার শুনে বাড়ি শুদ্ধ লোক অবাক হলো।কিচেনে থাকা রুবেনা শেখ ভ্রু কুঁচকে শুধোয়।
“কী হলো এটা? সকাল সকাল চেঁচাচ্ছে কেন তাশফিন?”
ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে ফারাহ।এখন আবার কি হলো? লোকটা এভাবে ডাকছে কেন?
নূপুর ত্রস্ত পায়ে ছুটে এলো। ফারাহর উদ্দেশ্যে বলে।
“ফারাহ তোমাকে তাশফিন ভাইয়া ডাকছে যাও তো দেখো কি হয়েছে?”
ফারাহ অপেক্ষা করলো না ত্রস্তবেগে ছুটে গেল।
মহারাজ ভঙিতে রুমের এক্সট্রা কাউচের উপর পা তুলে বসে আছে তাশফিন। ইস্পাত কঠিন চোয়াল।
“আপনি ডাকছিলেন?”
ব্যস্ত পায়ে ভেতরে প্রবেশ করলো ফারাহ।চোখ তুলে তাকালো তাশফিন, দৃষ্টি কঠিন। ভারী স্বরে বলল।
“বাইরে যাও।”
“হু?”
কথার অর্থ বুঝতে পারছে না ফারাহ।
“বাইরে যেতে বলেছি।”
“এই মাত্র তো ডাকলেন। তাহলে এখন…
“যেতে বলছি বাইরে, দরজার কাছে।”
ফারাহ চুপচাপ বাইরে গিয়ে দরজার কাছে দাঁড়ালো।
“এবার পারমিশন নিয়ে ভেতরে এসো।”
ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে ফারাহ। এটা কোনো কথা?গাল ফুলিয়ে ফেলে সে। রাগে দাঁত কটমট করে শুধোয়।
“আসবো?”
“ইয়েস।”
রাগে ফুঁসছে রিতিমত ফারাহ, ভেতরে এলো সে। উঠে দাঁড়ালো তাশফিন বুকে হাত গুজে বলল।
“আমার ড্রেস কোথায়? চেঞ্জ করব কখন?কফি কোথায়?”
“আপনার সব তো ওয়াশরুমে আছে, কফিটা তো কিচেনে।”
“ঝটপট গিয়ে ড্রেস বের করো ফার্স্ট।গো গো হ্যারিআপ।”
দ্রুত গতিতে দৌড়ে গেল ফারাহ। হাঁপিয়ে যাচ্ছে মেয়েটা।
“পাঁচ মিনিট আছে হাতে!”
বাথরুম থেকে কান পেতে শুনলো ফারাহ।এটা ঠিক নয়,বদ লোক একটা। কান্নায় চিক্কুর দিতে মন চাচ্ছে ফারাহর। পাগলের মতো এদিক সেদিক ছুটে সব রেডি করে রাখলো ফারাহ।
“রেডি।”
টাওয়েল টেনে নিল তাশফিন, দরজার দিকে ইঙ্গিত করে বলল।
“গো।রেডি হতে হতে যেনো কফি নিয়ে এখানেই পাই।”
গাল ফুলিয়ে নিচে কিচেনে গেলো ফারাহ।কফি রেডি করাই ছিলো,সে তো ভেবেছিল তাশফিন নিচে এসে খাবে,অথচ জাঁদরেল লেফটেন্যান্ট সাহেব ইচ্ছে করে এমন করছে!চুপসে যাওয়া মুখখানি নিয়ে কফি হাতে উপরে দোতলায় গেলো ফারাহ। সেই আগের মতোই বসে আছে তাশফিন, তৈরি হয়নি। শুধু প্যান্ট ঠিকঠাক ভাবে পড়েছে, কিন্তু শার্টের সব গুলো বোতাম খোলা রয়েছে।
“আসবো?”
“হুঁ।”
ভেতরে এলো ফারাহ,কফি টেবিলের উপর রাখলো।
“আপনার কফি।”
“কাম ইন সাইড।”
ভালো বাচ্চার মতো এগিয়ে গেলো ফারাহ নত মস্তকে দাঁড়িয়ে আছে।হলুদ রঙা একটা গোল জামা পড়েছে সে।ওড়না দুধারে ক্রস করে পড়েছে। বুকের সামনে দু’টো ফিতের ডিজাইন করা জামাতে। আকস্মিক সেই ফিতে গুলো টেনে নিজের কাছে নিয়ে এলো ফারাহ কে। আঁতকে ডান হাত পিছন দিকে নিয়ে পিঠের দিকটা চেপে ধরে ফারাহ। সামনের দুটো ফিতে পিছনের ফিতের সাথে বাঁধা রয়েছে। সামনের ফিতে টা টানতেই পিছনের ফিতে খুলে আসে।জামা খষে পড়তে নেয় ফারাহর। চেপে ধরলো সে।
“ছাড়ুন ছাড়ুন খুলে যাচ্ছে!”
“যাক খুলে।”
“ছিহ আপনার লজ্জা করছে না আমাকে দেখতে।”
“খুলেনি তো দেখতেই পাচ্ছি না, খুলে দাও।”
লজ্জায় চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেল ফারাহর।কান দিয়ে রীতিমতো ধোঁয়া বের হচ্ছে।
“ছিহ! ছাড়ুন আমায়।”
প্রত্যুত্তরে কিছু বললো না তাশফিন,আরেক দফা ফারাহ কে অবাক করে দিয়ে জামাটা নিচে নামিয়ে ফেলল। বড্ড আশ্লেষে মুখ ডুবায় সেখানটায়।গগন কাঁপিয়ে কেঁপে উঠলো ফারাহ। অনাঙ্ক্ষিত ভাবতেই তাশফিন তার অনাবৃত বক্ষে পুরুষ্ট ওষ্ঠো ছোঁয়ায়। থেমে থাকেনি সে, ওষ্ঠো জোড়া অগ্রসর হয় নিচের দিকে। দু’হাতে তার গুছানো চুল গুলো খামচে ধরে ফারাহ।চোখ দুটো খিঁচিয়ে বুঁজে ফেলল সে।চোখ তুলে তাকালো তাশফিন, ফিসফিসিয়ে হাস্কিটুনে বললো।
তরঙ্গে তোমার ছোঁয়া পর্ব ২৪
“নট ব্যাড।”
সহসা সরতে চাইলো ফারাহ,কোমড় পেঁচিয়ে ধরে তাশফিন।
“আই ওয়ান্ট ইট এগেইন।”
ফারাহ ছটপট করলো, হৃদপিন্ড প্রবল বেগে ধুকপুক করছে।গলা শুকিয়ে এলো মূহুর্তের মাঝে।এখন তার কি হবে?