তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ২০ (৩)
তাবাস্সুম খাতুন
সূর্যের আলো জানলার ফাঁক গলে সিমির মুখে পড়তেই সিমির মুখ কুঁচকে গেলো। হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রাখার চেষ্টা করছে শান্তি পাচ্ছে না। না পেরে বালিশ মুখে দিয়ে শুয়ে পড়লো। ঠিক তখনি তীব্র শব্দে ফোনের এলার্ম বেজে উঠলো। রাগে ফোন টা ভাঙতে ইচ্ছে করছে কিন্তূ নতুন ফোন দেখে মায়া হচ্ছে। হাতড়িয়ে ফোন হাতে নিয়ে চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে দেখলো ফোন দিয়েছে এলার্ম না। সিমি নাম্বার টা চেনে না কার আনকোন নাম্বার। সিমি উঠে বসলো। রিসিভ করলো সিমি কিছু বলবে ওইপাস থেকে নিশান বললো,,,
“তৈরী থাকিস সন্ধ্যার পরে লং ড্রাইভ যাবো।”
বলে কল কেটে দিলো। সিমি কান থেকে ফোন নামিয়ে ফোনের দিকে চুপচাপ তাকিয়ে রইলো। মানে দিলো আর কাটলো রেডি থাকতে বলে। দূর। সিমি সময়ের দিকে তাকিয়ে দেখলো দুপুর ১২ টা বাজে। আল্লাহ ও এতক্ষন ঘুমাই সে ভাবতেই অবাক লাগছে। দ্রুত বেড থেকে নেমে ওয়াশরুমে গেলো। ফ্রেশ হয়ে চুলগুলো আছড়িয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে দেখলো রোজিনা, কিয়া আর মেহেরিমা ড্রইং রুমের সোফায় বসে গল্প করছে। সিমি গিয়ে তার মায়ের কোলে মাথা রেখে শুয়ে বললো,,,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“কি গল্প হচ্ছে তোমাদের?”
মেহেরিমা — “জিহান কে বিয়ে দেবো তাই মেয়ে খুঁজা নিয়ে কথা হচ্ছে।”
সিমি লাফ দিয়ে উঠে বসে সিরিয়াস ভাবে বললো,,,
“ফুফি মেয়ে তো আমাদের বাড়িতেই আছে।”
মেহেরিমা, রোজিনা, কিয়া ভ্রু কুঁচকে সিমির দিকে তাকালো মেহেরিমা বললো,,,
“বাড়িতে আছে মানে?”
সিমি ফিসফিস করে বললো,,,,
“আমাদের সামিয়া। সামিয়ার সাথে কিন্তূ জিহান ভাইয়া হেব্বি মানাবে।”
মেহেরিমা একটু ভেবে বললো,,,
“সামিয়া কে আমারো পছন্দ কিন্তূ কথা হচ্ছে ওরা রাজি হবে তো?”
সিমি ভাব নিয়ে বললো,,,
“শুধু তুমি রাজি হও বাকিটা আমি দেখে নেবো।”
মেহেরিমা হেসে বললো,,,
“আচ্ছা রাজি হলাম।”
সিমি — “হুম। আম্মু ক্ষুদা লাগছে।”
মেয়ের কথা শুনে রোজিনা কিচেন থেকে দুটো রুটি আর আলু ভাজা নিয়ে আসলো। নিজ হাতে সিমি কে খাইয়ে দিতে দিতে বললো,,,
“আম্মু তুমি ঠিক আছো তো?”
সিমি — “হুম একদম।”
রোজিনা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,,,
“কিছু কথা তোমাকে বলি? আমি আগে মনে করতাম নিশান তোমার উপযোগী না। জোর করে তোমাকে বিয়ে করেছে। তাকে আমি আমার নিজের ছেলে হিসাবেই মানি। এই না যে তাকে আমি ঘৃণা করি। ভালোবাসি নিজের ছেলের মতোই। পছন্দ না কারণ ও তোমাকে অনেক অত্যাচার করতো। তোমার কষ্ট সয্য হতো না আমাদের তাই তোমার উপযোগী মনে করতাম না। কিন্তূ সময়ের সাথে সাথে মানুষের ভাবনার ও পরিবর্তন হয়। আমি বলি নিশান তোমাকে ওর নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসে আম্মু। তুমি নিশান কে কোন সময় কষ্ট দেবে না। ও তোমার জন্য তার বাপ মায়ের সাথেও ঝামেলা করে। মানে পুরো পৃথিবী একদিকে তো তুমি একদিকে। তুমি ভাবছো এইগুলো কেন বলছি? কারণ এইগুলো তোমার জানা উচিত তাই আমি তোমাকে বলছি যেন পরবর্তী তে কোন ঝামেলা না হয়। যেই সিদ্ধান্ত নেবে ভেবে চিন্তেই নেবে।”
রোজিনার প্রতিটা কথা সিমি মন দিয়ে শুনলো এইগুলো সে কালকেই বুজতে পেরেছিলো। সিমি বললো,,,
“হুম।”
রোজিনা সিমি কে সব খাবার খাইয়ে দিয়ে ওষুধ খাইয়ে দিলো। সিমি সোফায় বসে ফোন স্ক্রল করতে লাগলো। কিয়া কে উদ্দেশ্য করে বললো,,,
“ছোট আম্মু, জারা রা কোথায়?”
কিয়া — “ওরা লাইব্রেরি তে গেছে। তোকেও নিয়ে যেত কিন্তূ তুই তো ঘুমিয়ে ছিলিস।”
সিমি ভ্রু কুঁচকে বললো,,,
“ভণ্ডামি বাদ দিয়ে এখন লাইব্রেরি তে বই পড়তে গেসে?”
কিয়া হেসে বললো,,,
“হয়তো, আচ্ছা তুই থাক দুপুরের খাবারের আয়োজন করতে হবে।”
বলে কিয়া উঠে কিচেন এর দিকে এগিয়ে গেলো। সিমি ঐখানে শুয়ে শুয়ে ফোন স্ক্রল করতে লাগলো। তার মধ্যে লক্ষ্য করলো বাড়ির সবাই আছে নেই বড়ো আম্মু, আর মিষ্টি। সিমি সেইদিকে তেমন পাত্তা দিলো না নিজের মতো ফোন স্ক্রল করতে লাগলো। ঠিক সেই সময় মিষ্টি নিচে নামলো রেডি হয়ে নামছে হয়তো কোথাও যাচ্ছে সিমি আরচোখে তাকালো। মিষ্টি মুখ গম্ভীর করে বেড়িয়ে গেলো যাওয়ার সময় সিমি কে ক্রস করতে হয়েছে। সিমি লক্ষ্য করলো মিষ্টির গাল লাল। ব্লাস করছে নাকি দিয়েছে? মাথা ঘামালো না বেশি। যে যা পারে করুক তাতে তার কি সমস্যা?
সন্ধ্যা সাত টা বেজে চল্লিশ মিনিট। সিমি রেডি হয়ে নিজের রুমে বসে আছে। সে একটা লং কালো গ্রাউন পড়েছে চুলগুলো পাঞ্চ কিলিপ দিয়ে আটকিয়ে নিয়েছে। মুখে হাল্কা প্রসাধন ঠোঁটে হাল্কা লাল লিপিস্টিক। চোখে গাঢ় কাজল। জারা সিমি কে দেখে বললো,,,,
“ভাবিজান কোথাও যাবেন আপনি?”
সিমি ঠোঁট ফুলিয়ে বললো,,,
“তোর ওই ভাই বিদেশি কুত্তা বলছে রেডি হয়ে থাকতে আবার না থাকলে যদি আগের বারের মতো না না থাক আসছে না কেন?”
সামিয়া মুচকি হেসে বললো,,,
“ইয়ে মানে বিদেশি কুত্তার প্রতি কি মন গোলেছে আমাদের সিমির?”
সিমি লজ্জায় মাথা নুয়ে নিলো রাত্রি হাসতে হাসতে বললো,,,
“লজ্জা পাচ্ছে তার মানে গোলেছে? আইহাই কি শুনলি রে সিমি?”
জারা চিল্লিয়ে সিমি কে জড়িয়ে ধরে বললো,,,
“কন্ফার্ম আমার ভাবি হয়েই গেলি।”
সিমি জারা কে সরিয়ে দিয়ে বললো,,,
“সর বেডি তোর ভাই কে আমি বিদেশি কুত্তা হিসাবেই মানি স্বামী ওয়াক মানবো না।”
সামিয়া ভাব নিয়ে বললো,,,
“হ্যা সে দেখা যাবে। কত কি যে দেখবো শুনবো শুধু সময়ের অপেক্ষা।”
সিমি চোখ ছোট ছোট করে সামিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,,,
“তোর মাথা আর মুন্ডু বেয়াদব মাইয়া।”
সিমির কথা শেষ হতেই ভেসে এলো পুরুষ নালীর কণ্ঠ,,,
“ইশু দ্রুত বাহির হো।”
সিমি ওদের তিনজনের দিকে তাকিয়ে বললো,,,
“দোয়া করিস যেন বেঁচে ফিরি সিংহের সাথে যাচ্ছি।”
বলে সিমি বেড়িয়ে গেলো। নিশান সিমির ডান হাত চেপে ধরে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেলো। ড্রইং রুমে থাকা কেউ কোন প্রশ্ন করলো না।নিশান সিমি কে বাইকের সামনে আনলো নিজে বাইকের উপরে বসলো। সিমি বললো,,,
“আমরা বাইকে করে যাবো?”
নিশান কোন জবাব দিলো না উল্টে সিমি কে বাইকের সামনে তুলে নিলো। সিমি ভয়ে নিশান কে জড়িয়ে ধরলো নিশান কিছু না বলেই সিমি কে ঐভাবে নিয়েই রওনা দিলো অজানা গন্তব্যর দিকে। সিমি নিশান কে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে আছে তার ভয় করছে যদি পরে যাই। নিশান একদম শহরের বাইরে নির্জন এলাকায় চলে আসলো। সিমি প্রশ্ন করলো,,,
“আচ্ছা আমরা যাচ্ছি কোথায়?”
নিশান স্লো ভয়েসে সিমির কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বললো,,,
“য্খন মনে হবে থামা লাগবে তখন থেমে যাবো।”
নিশানের গরম নিঃশাস সিমির কানে গলায় পড়াই সিমি কেঁপে উঠলো। বুকের ভিতরে যেন কেউ হাতুড়ি পিটাচ্ছে। সিমির মাথায় শয়তানি বুদ্ধি রা খেলা করছে সিমি এক হাত দিয়ে নিশান কে জড়িয়ে ধরে আরেক হাত দিয়ে নিশানের খালি বুকে আকুবাঁকু করতে লাগলো। নিশান কিছু বললো না চুপচাপ বাইক চালাচ্ছে। সিমি এইবার একটু বেশি করলো নিশানের উঁচু হয়ে থাকা Adam’s apple শব্দ করে চুমু দিলো। যেইটাতে নিশান একদম শকড হয়ে গেলো। তাও নিজেকে সামলে নিলো। সিমি নিশানের গলায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো,,
“আপনার এই Adam’s apple টা না আমার খুব সুন্দর লাগে।”
নিশান ঢোক গিললো সিমি ভ্রু কুঁচকে বললো,,,
“ঢোক গিলছেন কেন? পানি খাবেন?”
নিশান ঠান্ডা কন্ঠে বললো,,,
“চুপ থাকো মেয়ে বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্চে।”
সিমি এইবার নিশানের মুখে হাত দিয়ে নিশানের ঠোঁটে শব্দ করে চুমু খেয়ে বললো,,,
“এইটা কে বলে বেশি বাড়াবাড়ি।”
নিশান গাড়ি চালানোর পর্যায়ে নেই এই মেয়ে আজকে তাকে শেষ করে দেবে। নিশান বললো,,,
“দেখ ইশু জ্বালাতন করছিস সয়ে নিচ্ছি পরে আমি জ্বালাতন করলে না সইতে পারলে সোজা উপরে পাঠিয়ে দিবো চুপ করে বস।”
সিমি নিশানের কথা কে মুখ ভাঙিয়ে নিজের মতো দুষ্টামি করতে লাগলো একবার বুকে আকুবাকু করছে। গলায় চুমু খাচ্ছে হাত বুলাচ্ছে মুখে হাত বুলাচ্ছে চুমু খাচ্ছে। এমন করতে করতে হুট্ করে নিশান গাড়ি থামিয়ে দিলো একদম নির্জন জায়গায়। যার দুই পাশে জঙ্গল মাঝখানে রাস্তা আপাতত এইখানে কোন ঘর বাড়ি নেই। আর না আছে কোন গাড়ি। নিশান সিমির চোখের দিকে তাকিয়ে স্লো ভয়েসে বললো,,,,
“আমার অসহ্যকোর জ্বালাতন সহ্য কর এইবার।”
বলেই সিমির মুখে দুই হাত দিয়ে সিমির কোমল ঠোঁট জোড়া নিজের দখলে করে নিলো। সিমির দম বন্ধ হয়ে আসছে সে ছাড়া পেতে চাচ্ছে কিন্তূ নিশান ওকে শক্ত ভাবে ধরে রাখছে সিমি থেকে রেসপন্স পাওয়ার জন্য ঠোঁটে কামড় দিলো। সিমি চোখ খিচে বন্ধ করে নিলো। নিশান আবারো কামড় দিতে সিমি নিজেও রেসপন্স করতে লাগলো। সিমির রেসপন্স নিশান কে পাগল করে দিচ্ছে। এইভাবে টানা বিশ মিনিট পরে ওরা একে অপরকে ছেড়ে দিয়ে কপালে কপাল ঠেকিয়ে জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে লাগলো। নিশান সিমির গলায় মুখ ডুবালো কামড় বসালো। কানের লতিতে চুমু দিলো কামড় দিলো সিমি চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে রাখলো। নিশান সিমির মুখে চুমুতে ভরিয়ে দিলো। গলায় মুখ ডুবালো ঘাড়ের কাছে কামড় দিতে লাগলো। সিমি কে কোলে নিয়ে বাইক থেকে নামলো নেশাময় কন্ঠে বললো,,,,
“রাস্তার পরে কিসিং হয় ফরজ কাজ না।”
বলে নিশান সিমি কে কোলে নিয়ে জঙ্গলের ভিতরে ঢুকে পড়লো। শুকনো পরিষ্কার পাতার উপরে সিমি কে শুয়ে দিলো। নিশান সিমির কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে স্লো ভয়েসে বললো,,,,
“আমার হার্টবিট তুই,আমার বেঁচে থাকার একমাত্র অক্সিজেন তুই, আমার সর্ব সুখের অধিকারি একমাত্র তুই, আমার বেপারোয়া রাজ্যের রানি তুই, আমার সকল উন্মাদনার কারণ একমাত্র তুই, ইশু কে ছাড়া তার নিশানের অস্তিত্ব ও কল্পনা করা যাবে না। আমার অদ্ভুত ভালোবাসার সঙ্গী ও তুই। আমার সাইকো হওয়া তোর জন্য উন্মাদ হওয়া সবই তোর তোর জন্যই আমার এই উন্মাদনা। #তুই_শুধু_আমার_উন্মাদনা।”
বলে নিশান সিমির কানের লতিতে চুমু খেলো সিমির উড়না খুলে পাশে রেখে দিলো। সিমির লজ্জা লাগছে সে চোখ খিচে বন্ধ করে নিলো। নিশান সিমির জামার চেন এ হাত দিতেই সিমি বললো,,,
“ক.. কি… করে..চেন…?”
নিশান হাঁস্কি টোনে বললো,,,,
“আজকে একটু অবাধ্য হয় জানবাচ্চা প্রমিস করছি তোকে বেশি ব্যাথা দেবো না। সয়ে নে আমার পাগলামি গুলো আগলিয়ে নে আমাকে। আমি আজকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিনা নিজেকে আগলিয়ে নে আমাকে।”
তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ২০ (২)
বলে নিশান সিমির জামার চেন খুলে দিলো। সিমি লজ্জায় নিশানের বুকে মুখ লুকালো। নিশান সিমির ঠোঁটে শব্দ করে চুমু খেলো গলায় মুখ ডুবালো। ধীরে ধীরে আরো গভীর যেতে লাগলো তারা। রাত যত গভীর হচ্ছে তেমনি তারা দুই জন নিজেদের ঘনিষ্টতা গভীর করছে। ডুব দিচ্ছে অতল সমুদ্রের গহব্বরে যেই সাগরে ডুব দিলে মরার সম্ভবনা নেই। জঙ্গলের ভিতরে দূর থেকে শেয়ালের ডাক শোনা যাচ্চে। ঝিঁ ঝিঁ পোকার শব্দ।