তোকে ছুয়েছি আঁধারে পর্ব ২৫
ভূমিকা তালুকদার
গার্ডেনের এক কোণে দাঁড়িয়ে জায়ান হাতে সিগারেট ধরানো।পাশেই মার্কো। জায়ান সিগারেটে দুটো টান দিয়ে মার্কোকে দেয়, মার্কো অর্ধেক খাওয়া সিগারেট নিজের ঠোঁটে পুরে নেয়। এটা নতুন কিছু নয়, মার্কো তেমন একটা বিড়ি সিগারেট খায় না আর ওই খেলে জায়ানের খাওয়াটাই খাবে।কলিজার জিগরি দোস্তো বলে কথা, তবে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার দিকটা মোটেও সোজা পথে ছিল না, সাক্ষাতের প্রথম কয়েকদিন তুমুল মারপিট করে শেষে মার্কো হার মেনে জায়ানের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছিলো।আর জায়ান ছোটো থেকেই তেমন কারো সাথে মিশতো না, তার স্ট্যান্ডার্ড, তার মেন্টালিটির সাথে ম্যাচ না হলে তো আরো আগেই নয়, মার্কোকে নিজের লেভেলের মনে হলো, বেশ হয়ে গেলো বন্ধুত্ব, একজন যদি সিংহ হয় আরেকজন বাঘ। তবে জায়ান কিছু বলেছে মার্কো তা মানে নি বা জায়ানের সাথে একমত পোষণ করেনি তা আজ পর্যন্ত হয়নি। জায়ান যা বলবে মার্কো সেখানে এক পায়ে খাড়া
মার্কো জায়ানের কাঁধে হাত রাখে।
তুই কি সিরিয়াস? আমি সব ব্যবস্থা করে দিয়েছি, কিন্তু তুই তো একা না।তোর সঙ্গে লিয়ানাও যাবে, আর তুই তো জানিস ওখানে….
কথাটা শেষ হওয়ার আগেই জায়ান মার্কোকে থামিয়ে দেয়।
একবার যেহেতু বলেছি যাবো, মানে যাবো!
আমাদের যাওয়া লাগবে?
না!
ওকে ফাইন!তো যা।
হঠাৎ পিছন থেকে জোরে চিল্লানোর শব্দ আসে। জায়ান মার্কো একসাথে পিছনে ফিরে তাকায়, তখনই দেখে এলেনার হাত থেকে গরম কফির কাপ লিয়ানার ওপর পড়েছে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
জায়ান একদৌড়ে সোফার কাছে চলে আসে। ততক্ষণে নাদিয়া লিয়ানাকে ধরে ভেতরে নিয়ে যায়। জায়ান শুধু এলেনার দিকে দাঁত কটমট করে তাকিয়ে থাকে,তার মধ্যে সেই আগের ন্যায় পৈশাচিক রূপ জাগ্রত হয়।
চোখ জুড়া লাল রক্তিম বর্ণ, যেনো মুহূর্তের মধ্যে চোখ ভেদ করে বের হয়ে আসবে। জায়ানের এমন রূপ যেকোনো মানুষকে কুপিয়ে মারার চেয়ে ভয়ঙ্কর। যা প্রত্যেকের জানা।গরম কফি লিয়ানার শরীরে না, বরং মনে হচ্ছে সরাসরি জায়ানের ওপর পড়েছে।হাত মুষ্টিবদ্ধ করে টেবিলে থাকা ছুরি হাতে নিয়েই এলেনাকে ধরে সোফায় বসায়, তারপর এলেনার হাতের মধ্যে ছুরি পুরোটা ডুকিয়ে দেয়। ছুরি এলেনার হাত ভেদ করে সোফার মধ্যে ডুকে গিয়েছে।
এলেনা মুখ দিয়ে চিৎকার করার আগেই জায়ান,
যদি তোর মুখ দিয়ে একটা শব্দও আসে, ছুরিটা সোজা তোর গলায় ডুকে নিচের দিকে নামবে। আমি ছাড় দেই,ছেড়ে দি না।
এলেনা চিৎকার করলো না, কাঁদলোও না। নিজের হাত দিয়েই ছুরি টান দিয়ে বের করলো। হাত থেকে রক্ত ছিটকে সোফায় লেপটে গিয়েছে। তার মধ্যে ছুরি আঘাতের কোনো ব্যথা নেই বরং লিয়ানার জন্য যে জায়ান আর কি কি করতে পারে তা ভেবে কলিজা কেঁপে উঠেছে।
যদি জায়ান কোনোদিনও একবার তার দিকে মুখ ফিরায়, সে তো নিজেই কলিজাটাও জায়ানের হাতে দিয়ে দিতে রাজি আছে। শুধু এক পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে জায়ানের পানে,যার চোখে থাকা যন্ত্রণা দেখলো কেমন পাগলের মতো ছুটে ভিতরে যাচ্ছে যেনো সে বাহিরে কিন্তুু তার আত্মা ভিতরে। জায়ান বাড়ির ভিতরে ঢুকেই লিয়ানাকে ডাকতে থাকে এ দিক ওদিক। চোখ ফিরাতেই দেখে লিয়ানা বেসিনের পাশে দাড়িয়ে জামা ঠিক করছে, পাশে নাদিয়া দাঁড়ানো, জায়ান এক মুহূর্ত দেরি না করেই লিয়ানাকে জড়িয়ে ধরে ফেলে,
হাত পা ধরে ধরে সব দেখছে কিছু হয়েছে কিনা।
বউ দেখি তো কোথায় লেগেছে, দেখা আমাকে!বেশি লেগেছে প্লিজ দেখা।কোথায় বল।তোর দেহে অন্যে কারোর আঘাত সহ্য করার ক্ষমতা আমায় খোদা দেয়নি।কোথায় কষ্ট হচ্ছে বল।তোর সব যন্ত্রণার ভার আমি নিজের করে নিয়ে নিবো।তাও বউ তোকে কষ্ট পেতে দিবো না।(লিয়ানার গাল চেপে ধরে)
আ আরে, লাগেনি আমার শু….
লিয়ানা বলার আগেই জায়ান লিয়ানাকে কোলে তুলে নিয়ে ডাইনিং স্পেসের সোফায় বসিয়ে দেয়। জায়ান ফ্লোরে বসে পড়ে, লিয়ানার হাত দুটো ধরে এপাশ ওপাশ দেখছে কতটা লেগেছে। জায়ানের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে লিয়ানা, এমন করছেন কেন তিনি। তার তো কিছুই হয়নি,জায়ানের হাত কাঁপছে, কেমন করে যেনো জুড়ে জুড়ে শ্বাস টানছে।
দেখুন, কিছু হয়নি আমার! একটু শান্ত হোন। দোষ আসলে আমার, আমি লাফিয়ে সোফা থেকে উঠতে নিয়ে ছিলাম, তখনই ভুলবশত ধাক্কা লেগে কফি এসে হালকা আমার জামায় পড়েছে, পুরো গ্লাস তো মেঝেতে পড়েছে,বেঁচে গিয়েছি আমি,আর কফিটা তেমন গরমও ছিলো না। আমার কিছুই হয়নি, দেখুন।
লিয়ানার কথাটা মুখে থাকতেই জায়ান উঠে লিয়ানার গাল চেপে ধরে চুমু খেতে থাকে, কপালে, দু’গালায়। লিয়ানা জায়ানের বুকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতে চায়।
কি করছেন,সবাই দেখছে!
প্লিজ! স্লিপিং বিউটি, ইমিডিয়েটলি, আই নিড অক্সিজেন। খুব কষ্ট হচ্ছে, শ্বাস নিতে পারছিনা।একটা চুমু খেতে দে।মরে যাবো তা না হলে।Try to understand!
বলেই জায়ান লিয়ানার গাল চেপে ধরে ধীরে ধীরে ঠোঁট মিলাতে শুরু করে। প্রথমে হালকা, পরীক্ষা নিরীক্ষার মতো চুম্বন, যেনো সময়টা থেমে গেছে।জায়ান নিজের ওষ্ঠ অঁধর দিয়ে লিয়ানার অঁধর আকড়ে ধরতেই লিয়ানার পুরো শরীর কেঁপে উঠে। জায়ানকে উন্মাদের মতো তাকে আঁকড়ে ধরে রাখতে দেখে,জায়ানের চুল শক্ত করে চেপে ধরে ফেলে।জায়ানের চুম্বনের গতি ধীরে ধীরে বেড়ে যায়। তার প্রতিটি চুম্বন যেনো লিয়ানার রক্তের সঙ্গে মিলিয়ে হৃদয়কে দ্রুত স্পন্দিত করছে।
জায়ান ঠোঁট ছেড়ে ধীরে ধীরে ঘাড়ের পাশ দিয়ে চুমু খেতে যাবে তখনি লিয়ানা তার হাত দিয়ে জায়ানকে ঠেলে সরিয়ে দেয়। লজ্জা আর অস্বস্তিতে নিয়ে বলে,
হয়েছে অক্সিজেন নেওয়া।-(তারপর বড় বড় পা ফেলে উপরে চলে যায়।)
জায়ান হেসে ওঠে, একটা দুষ্টুমি মিশানো হাসি। হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে ঠোঁট জোড়া মুছে নেয়। মনে মনে বিড়বিড় করে,
❝আমায় ছেড়ে প্রাণসজনি যাইবা কোন খানে।বান্ধিয়া রাখিবো তোমায় প্রেমের বাধনেঁ।❞
পুরো ডাইনিং স্পেস খালি। নাদিয়া এই রোমিও জুলিয়েট এর রোমান্সে কাবাব মে হাড্ডি না হয়ে সেই কখন কেটে পরেছে।
দুপাশে জঙ্গল মাঝে সরু পথ।রাতের অন্ধকারে জঙ্গল থেকে ভেসে আসে বনো শিয়াল কুকুরের গর্জন।একটা জিপ গাড়ি সেই অন্ধকার সরু রাস্তা বেয়ে ছুটে চলছে।গাড়ির চালকের সিটে সেই লম্বা ব্লেক মাস্ক পড়া লোক যাকে,বলা হয় ব্লেক মাস্ক ম্যান।লম্বা দেহে লম্বা ওভারকোট জড়ানো।শা শা শব্দে গাড়ি এসে থামে গ্রেভইয়ার্ডে(খ্রিস্টানদের কবরস্থান)। কবরস্থানটা একেবারেই পুরোনো,ভিতরে থাকা প্রত্যেকটা কবরের সাদা পাথরের ক্রস চিহ্ন তাতে নাম জন্ম মৃত্যু খুদাই করে লিখা,কিছু কিছু কবর গুলো অনেক পুরোনো যাতে পাথরগুলোতে ফাটল ধরে গিয়েছে।রাতের অন্ধকারে পেঁচা গুলো এদিক ওদিক ছুটে বেরাচ্ছে।আশেপাশে মাটি ভেদ করে মৃত দেহের কঙ্কালগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।কোনো সাধারণ মানুষ কখনোই দিনের বেলাতেও এই পুরোনো কবরস্থান এ আসার সাহস করবে না রাতে তো দূরের কথা।পাশের জঙ্গল থেকে শুধু জন্তুু জানোয়ারের ডাক ছাড়া কিছু শোনা যায় না।
ব্লেক মাস্ক ম্যান জিপ গাড়ি থেকে নেমে একটা ব্যাগ নামায়।তারপর পিছনের লবি থেকে দুটো লা*শ নিজের দু কাধেঁ নিয়ে নামিয়ে সেগুলোর দু হাতে চুল শক্ত করে ধরে টানতে টানতে গ্রেভইয়ার্ডে ডুকাতে থাকে,লোহার ঝং ধরা গেট ঠেলতেই ঝনঝন শব্দ হয়ে তা খুলে যায়।মাস্ক ম্যান মৃ*ত দেহ দুটোকে রেখে ব্যাগ থেকে একটা কুড়াল বের করে মাটি খুঁড়তে শুরু করে।পুরনো শ্যাতঁ শ্যাতেঁ মাটি হওয়ার ফলে তিব্র ঝাঁঝালো গন্ধ নাকে আসে।মাস্ক ম্যান সেদিকে মন না দিয়ে মাটি খুঁড়ে পাশে বসে পড়ে।তারপর একটা ধারালো অস্ত্রের সাহায্য মৃত দেহ দুটো নিখুঁত ভাবে কা*টতে থাকে,হাত পা থেকে মাথাটা আলাদা করে ছুরে ফেলে দেয় গর্তে।কুড়াল দিয়ে শরীর থেকে পা আলাদা করতে থাকে, যখনি খুড়াল এর আঘাত হাড়ে এসে পড়ে হাড়গুলো কটমট হয়ে ভেঙে যাওয়ার শব্দ কানে ভেসে আসে।পা শেষে হাতের র*গ গুলো টেনে ছিরতে থাকে, হাতের আঙুলগুলো কা*টে আস্তে ধীরে। যেনো কোনো কসাই তার নিপুণ হাতে মাং*স কাটায় ব্যাস্ত।তারপর লাথি মেরে মেরে দেহাংশ গুলোকে গর্তে ফেলে মাটি চাপা দিয়ে দেয়।
নিজের বুকে নিজে জোরে জোরে আঘাত করতে থাকে যেনো প্রত্যেকটা খু*ন করার পর নিজর মধ্যে শান্তি এক তৃপ্তি খুজে পায়।তারপর বড়বড় অক্ষরে মাটিতে র*ক্ত দিয়ে লিখে যায়।
❝আই এম অ্যা মন্সটার ❞
“চল!”
“দাড়ান, আর একটু।”
জায়ান লিয়ানার পাশে এসে দাঁড়িয়ে আয়নার দিকে তাকালো,
“লিপস্টিক দিয়ে কি হবে? একটু পরেই তো আমি লিপস্টিক গায়েব করে দিবো।”
“গায়েব করলে পেট যেনো খারাপ হয় আপনার তাই দিতেছি।”
“এত দাম দিয়ে তোকে huda beauty এর লিপস্টিক এনে দিলাম, যেন কখনো খেলেও আমার পেট খারাপ না হয়।”
“লিপস্টিক হুদা বিউটির হোক বা গুলিস্তান এর পেট খারাপ হবেই আর বাথরুমেও দৌড়াবেন।”
লিয়ানা মুখ বাঁকিয়ে আয়নায় ঠোঁট দেখছিলো, তখনই জায়ান চোখ সরু করে লিয়ানাকে টেনে ঘুরিয়ে নিলো নিজের দিকে।তারওর লিয়ানাকে কাঁধে তুলে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিলো, নিজের হাতে সিটবেল্ট বেঁধে দিয়ে ঘুরে গিয়ে ড্রাইভিং সিটে গিয়ে বসলো।
“এভাবেই যখন তখন আমাকে কোলে নিবেন না,কেমন যেনো লাগে।”
“কেমন লাগে? হরমোন ইমব্যালেন্স হয়ে যায় নাকি, বেবিগার্ল?”
ইসসসস!(লিয়ানা দুই কান চেপে ধরল।)
“আপনার সাথে কথা বলতে গেলেই ইজ্জতের হালুয়া হয়ে যায়,চুপচাপ গাড়ি চালান তো!”
আর, একটা গান লাগান।
গান লাগানোর কথা শোনার কথা শেষ হতেই জায়ান হঠাৎ ছোট করে ব্রেক কষে গাড়ি থামিয়ে দিলো।
“কি হলো? গাড়ি থামালেন কেন?”
জায়ান গম্ভীর গলায়,
“কোলে এসে বস।”
“আপনি বসুন আপনার কোলে”
কোনো উত্তর না দিয়ে জায়ান প্রথমে নিজের সিটবেল্ট খুললো, তারপর লিয়ানার সিটবেল্ট খুলে নিয়ে একটানে তাকে নিজের কোলের ওপর বসিয়ে দিলো। দুজনকে একসাথে সিটবেল্ট এ বেঁধে নিলো,এখন লিয়ানা জায়ানের কোলে।জায়ানের এত কাছাকাছি আসতেই লিয়ানার বুক ধড়ফড় করতে লাগল, শরীর জুড়ে অদ্ভুত বিদ্যুতের ঝাঁকুনি ছড়িয়ে পড়লো,যেন শ্বাস নিতে ভুলে গেছে।উফফ!কীভাবে বুঝাবে সে এভাবে জায়ানের উপর বসে থাকতে তার শরীরে কারেন্ট এর ঝটকা লাগছে।
জায়ান ঠোঁটের কোণে রহস্যময় হাসি টেনে ফিসফিস করে,
“কেমন ফিল হচ্ছে, বেবিগার্ল?”
“খুব খারাপ!”
জায়ান ঝুঁকে গিয়ে টুপ ককরে একটা চুমু খেয়ে নিলো লিয়ানার ঠোঁটে, এক সেকেন্ডেই ঠান্ডা হাওয়া কেটে লিয়ানার শরীর বেয়ে । তারপর গাড়ি আবার স্টার্ট দিয়ে দিলো জায়ান।
আমার কিন্তুু হরমোন একটিভ হয়ে গিয়েছে বেবিগার্ল ”
এভাবে বলবেন না প্লিজ,আমার শরীর এমনিতেই শিরশির করছে,-
বলেই লিয়ানা আকড়ে জড়িয়ে ধরে জায়ানকে,বুকের সাথে মাথা চেপে রাখলো শক্ত করে।
ঠিক তখনই গাড়ির ভেতরে বাজতে শুরু করে গানের সুর,
❝keya jaane tu mere irade❞
❝Le jaaunga saansein chura ke❞
❝Dil keh raha hai ki❞
জায়ানের ল্যাম্বরগিনি অন্ধকার রাস্তা ছিরে ছুটে চলেছে,গতি বাড়ছে আর রাতের গভীরতাও যেন তার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে। সামনে সেই জঙ্গল মাঝে সরু পথ। চারপাশে ঘন অন্ধকারে ঢেকে আছে রাস্তা। গাড়ি জঙ্গলে ঢুকে পড়তেই চারপাশ কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে গেল,কালো, ভয়ানক কুয়াশা।চারপাশ থেকে ভেসে আসছে নেকড়েদের হুংকার, কোথাও আবার বন শিয়ালদের ডাক,চারদিকের ভুতুড়ে নিস্তব্ধতায় এসব আওয়াজ যেনো কানে কেটে যাচ্ছে। লিয়ানা আঁকড়ে ধরে আছে জায়ানকে, বুকের ভেতর ভয়ের সাথে অজানা শিরশিরানি কাজ করছে।গাড়ি ক্রমেই প্যারিস শহর থেকে দূরে চলে এসেছে, আরও দূরে অজানা পথে। অচেনা অন্ধকারে ঘেরা গভীর বনের ভেতর দিয়ে ছুটে এসে হঠাৎ থেমে গেলো গাড়ি।জায়ান দরজা খুলে নামতেই লিয়ানা অবাক হয়ে নিঃশ্বাস আটকে তাকিয়ে রইলো চারদিকে। গাড়ি থেকে নামতেই চারপাশ যেন আরও অদ্ভুত হয়ে উঠলো,গভীর বন, ভুতুড়ে নীরবতা, শুধু দূরে কোথাও হালকা বাতাসে পাতার খসখস শব্দ।জায়ান তাকে কোথায় নিয়ে এলো।একবার উপরে তাকাচ্ছে তো আরেকবার জায়ানের দিকে।এ কেমন চাঁদ আবার,এমন চাঁদতো সে বাপের জন্মেও দেখে নি।উপর আকাশে সাদা চাঁদ আর এইটাতো দেখি রাতের অন্ধকারে কালা চাঁদ।মনে হচ্ছে, কোনো বনমানুষকে বিয়ে করেছে লিয়ানা,না হলে কে এমন ভুতুড়ে অন্ধকার জঙ্গলে এত উঁচু পাহাড়ের নিচে স্ত্রীকে নিয়ে আসে?আর জায়ান শুধু দাঁড়িয়ে রইল, ঠোঁটের কোণে সেই রহস্যময় অদ্ভুত হাসি নিয়ে।
তোকে ছুয়েছি আঁধারে পর্ব ২৪
“আপনি না বললেন চাঁদে ঘুরতে নিয়ে যাবেন। এই নি আপনার চাঁদের নমুনা?? ”
“স্টুপিড।চাঁদ কি তোর বাপ দাদার সম্পত্তির নাকি,যে যখন খুশি চাঁদে গিয়ে চক্কর মেরে আসতে পারবি।আমি মানুষকে জেলে পাঠাই চাঁদে না। তুই চাইলে জেলের হাওয়া খেতে পারিস। ”
“আপনার জেলে আপনি ডুকে বসে থাকুন।এই বা*লের জায়গায় জিন ভূতের জায়গা থেকে তাড়াতাড়ি নিয়ে চলুন।চাঁদ মাদ দেখার শখ মিটে গেছে আমার।”
জায়ান লিয়ানার কাঁধে হাত রাখলো।
❝এইটা চাঁদই, চাঁদের পাহাড়। (Mont de Lune No)যাকে বলে অন্ধকার চাঁদের পাহাড়। ❞
