তোমাতেই আসক্ত পর্ব ১৫

তোমাতেই আসক্ত পর্ব ১৫
তানিশা সুলতানা

আবরার তাসনিন এর ব্যক্তিত্ব কঠিন। ৩৩ বছরের জীবনে কখনোই নারীর সঙ্গ অনুভব করে নি। কখনোই কোনো নারীকে ছুঁয়ে দেখে নি। নারীতে যেনো তার এলার্জি। সুইজারল্যান্ড এ আসার পরপরই একটা ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলো আবরার।

জুরিখ নদীর পাশে বাসা নিয়েছিলো। বাংলাদেশী এক পরিবারের সাথে শেয়ার করে থাকতে হবে।
নতুন শহর, হাতে টাকা নেই, পরিচিত কেউ নেই। অগত্য আবরার রাজি হয়।
সেই পরিবারে সোনালী নামের একটা মেয়ে থাকতো। বয়সে আবরারের থেকে বড়ই হবে। প্রথম থেকেই মেয়েটি আবরারকে লক্ষ করতো।
একদিন প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিলো। অফিসে যেতে পারে নি আবরার। নিজ কক্ষে বসে ছিলো কফি পান করছিলো। দরজা লক করতে ভুলে গিয়েছিলো।
সেটারই সুযোগ নিয়ে কক্ষে ঢুকে পড়ে সোনালী।
আবরারকে সিডিউল করার জন্য পরনের কামিজ খুলে ফেলেছিলো মুহুর্তেই।
গোটা ঘটনায় হতদম্ভ হয়ে আবরার কিছু বোঝার বা বলার সুযোগ টুকুও পায় না। কফির মগ পড়ে যায় হাত ফসকে। শুকনো ঢোক গিলে নজর ফিরিয়ে নেয় সোনালীর থেকে। শুকনো ঢোক গিলে গম্ভীর স্বরে বলেছিলো

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“আপনি এখানে কেনো?
সোনালী আবরারের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। আবেদনময়ী ভঙ্গিমায় বলে
” কেউ জানতে পারবে না ট্রাস্ট মি। তুমি আর আমি। একটু ভালোবাসো আমায় প্লিজ।
সোনালী হাত বাড়িয়ে ছুঁতে যায় আবরারের গাল।

একটু হলেই ছুঁয়ে দিতে পারবে। পিছিয়ে যায় গম্ভীর মানব। রাগে চোয়াল শক্ত করে ফেলে। আশেপাশে তাকিয়ে কিছু খুঁজতে থাকে। অতঃপর ফুলদানির দেখা পায়। সেটা তুলে মুহুর্তেই সোনালীর মাথায় আ*ঘা*ত করেছিলো আবরার। সোনালী অবচেতন হয়ে পড়ে যায়। আবরার এক দলা থু থু ফেলে এক সেকেন্ডও সময় ব্যয় না করে প্রয়োজনীয় জিনিস গুছিয়ে বেরিয়ে এসেছিলো সেই বাড়ি থেকে। পেছন ফিরে তাকায় নি আর।
সেই আবরার তাসনিন এর বুক কাঁপছে। ইচ্ছে করছে ভুলভাল কিছু করে ফেলতে। আদ্রিতার আকর্ষণীয় উদর এর মধ্য মনিতে ওষ্ঠ ঠেকিয়ে গভীর চুম্বন এঁকে দিতে। বা কমলার কোয়ার ন্যায় ওষ্ঠ দুটো গভীর ভাবে ছুঁয়ে দিতে।
আজ ওবদি নিজের কোনো ইচ্ছেই অপূর্ণ রাখে নি আবরার তাসনিন। এখন অপূর্ণ রাখবে?

উহুু
একদমই না
নয়ন জোড়া বন্ধ করে নেয় আবরার। বা হাতে বড় বড় চুল গুলো পেছনে ঠেলে হাঁটুতে ভর দিয়ে মেরুদণ্ড সোজা করে।
একই হাত এগিয়ে দেয় আদ্রিতার পানে।
পিংক কালার টপস খানা দুই আঙুলে ওপরে তোলে গোটা উদর উন্মুক্ত করে। মধ্য মনির ঠিক ওপরে কুচকুচে কালো তিল রয়েছে।
আবরার বিরক্তির নিঃশ্বাস ফেলে। বিরবির করে বলে
“ফা**কিং তিল। বাল ছাল
এটাকে এখানে থাকতে কে বলেছে?

মাথা নষ্ট হওয়ার মতো অবস্থা আবরারে। জিভ দ্বারা ঠোঁট ভিজিয়ে মুহুর্তেই মুখ এগিয়ে নেয় উদরের পানে। এবং পরপরই মধ্যমনিতে ওষ্ঠ ঠেকিয়ে গভীর চুমুতে লিপ্ত হয়।
ঘুমের ঘোরেই কেঁপে ওঠে আদ্রিতা। মৃদু স্বরে “উফফ” শব্দ করে ওঠে। যেনো বেজায় বিরক্ত সে।
আবরার কা*ম*ড়ে ধরে নরম মাংস স্থল। এবং তখুনি সরে আসে। হাতের উল্টো পিঠে ওষ্ঠ মুছতে মুছতে কিচেনের দিকে চলে যায়।
আদ্রিতা পিটপিট করে চোখ খুলে। উদরে জ্বলছে। হাত খানা সেখানে চলে যায়। ভেজা ভেজা অনুভব করতে কপাল কুঁচকে উঠে বসে। হাই তুলে টপস উঁচু করে তাকায়। মুহুর্তেই আদ্রিতার আঁখি পল্লব বড় বড় হয়ে যায়।

এটা কি হয়েছে?
কেউ কা*ম*ড়ে দিয়েছে।
মানুষের দাঁ*তে*র দাগ।
শুকনো ঢোক গিলে আদ্রিতা। এদিক ওদিক তাকিয়ে কিছু একটা খুঁজতে থাকে।
কিন্তু আশানুরূপ কিছুই খুঁজে পায় না।
ভয়ে কলিজা কেঁপে ওঠে।
কে তাকে কা*ম*ড়ে দিয়েছে? কেউ তো নেই বাড়িতে।
চিন্তিত আদ্রিতার হাত পায়ে মৃদু কম্পন অনুভব করে। গলা এবং হাত পা চেক করে নেয়। আরও কোথাও এমন দাগ রয়েছে কি না?

হঠাৎ আদ্রিতা খেয়াল করে কিচেন থেকে ঝন ঝন শব্দ আসছে। ভীতু আদ্রি ফ্লোর থেকে এ্যানিকে তুলে কোলে নেয়। ঘুমে ব্যাঘাত ঘটনায় বিরক্ত এ্যানি মিউ মিউ আওয়াজ তুলে। সেদিকে পাত্তা দেয় না আদ্রিতা বরং ওড়না খানা মাথায় জড়িয়ে কিচেনের দিকে পা বাড়ায় খুবই সাবধানে।
আবরার তাসনিনকে ব্যস্ত ভঙ্গিমায় কফি বানাতে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে আদ্রিতা। যাকক চোর ডাকাত ঢুকে নি।
“এখানে কি চাই?

আশ্চর্য লোকটা দেখলো কি করে? আদ্রিতা তো একটুও শব্দ করে নি। আর লোকটাও তো এদিকে তাকায় নি। বরং মনোযোগ দিয়ে কফির বোতলের মুখা খুলছিলো।
তাহলে দেখলো কি করে?
যেভাবেই দেখুক আদ্রিতার জানার দরকার নেই। তার প্রয়োজন হলো এটা জানা তাকে কে কা*ম*ড়ে ছে।
” ভাইয়া একটা কথা বলতে এসেছি। ধমক দিবেন না প্লিজ। আর্জেন্ট কথা।
ভীতু কন্ঠস্বর আদ্রিতার।
আবরার জবাব দেয় না।

আদ্রিতাও বুঝতে পারে খাটাশ হাতি জবাব দেবে না। তাই নিচু স্বরে বলে
“ক…. কেউ এসেছিলো বাড়িতে? দেখেছেন আপনি?
চা চামচে করে দুই চামচ কফি পাউডার মগে ঢেলে দেয় আবরার। দক্ষ হাতে পানির পাতিল হতেও গরম পানি ঢেলে নেয়।
আদ্রিতার প্রশ্নের কোনো জবাব দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করে না।
আদ্রিতা ফের বলে

” ভাইয়া কে জানি আমার পে
বলতে বলতে থেমে যায়। এবার আবরার তাকায় আদ্রিতার পানে। বরাবরের মতো দুই ভ্রু জোড়া আড়াআড়ি ভাবে কুঁচকে রেখেছে। আদ্রিতাও তাকায় এবং চোখাচোখি হয়ে যায়। লাল লালা চোখ দেখে মুহুর্তেই নজর সরিয়ে নেয় আদ্রিতা। আশ্চর্য এমন লাল হয়ে আছে কেনো?
যেনো গাঁজা খেয়েছে।
“আ… আমি মিথ্যে বলছি না।
কেউ ঢুকেছিলো বাড়িতে। আমার ইজ্জত হরণ করেছে। দেখে নিয়েছে সব কিছু।
বড়ই দুঃখী শোনালো আদ্রিতার কন্ঠস্বর। পাষাণ আবরারের মায়া হলো না মোটেও বরং বিরক্ত লাগলো। চামচ দিয়ে পানি এবং কফি মেশাতে মেশাতে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়। এবং মৃদু আওয়াজে দু লাইন গান আওড়ায়

তোমাতেই আসক্ত পর্ব ১৪

“আমি তোর ব্ল্যাক কফি
তুই আমার সুগার
আমি তোর কোলাকোলা
তুই আমার বার্গার
তোর ওই হটনেসে
জ্বলে আমি ছার খার
পারছি না আর বেবি
তোকে খুব দরকার

তোমাতেই আসক্ত পর্ব ১৬