তোমাতেই আসক্ত পর্ব ৩৩

তোমাতেই আসক্ত পর্ব ৩৩
তানিশা সুলতানা

প্রেম এমন একটি অনুভুতি, যা শব্দের চেয়েও গভীর; একে অনুভব করা যায়, কিন্তু পুরোপুরি প্রকাশ করা কঠিন। তুমি যখন পাশে থাকো, পৃথিবী যেন থেমে যায়, আর আমি শুধু তোমার দিকে তাকিয়ে থাকি। তোমার হাসি আমার পৃথিবী আলোকিত করে, আর তোমার হাতের স্পর্শ যেন আমার সারা জীবনটাই পূর্ণ করে দেয়।
তোমার চোখের মধ্যে একধরনের শান্তি আছে, যেন সময় থেমে যায়। তোমার সঙ্গে কাটানো প্রতিটি মুহূর্তই যেন এক জীবনের সবচেয়ে সুন্দর অধ্যায়। যখন তুমি পাশে থাকো, তখন মনে হয় পৃথিবীটা শুধুই আমাদের। তুমি শুধু আমার জন্য নয়, বরং আমার জীবনের সব কিছু। তোমার হাসি, তোমার স্পর্শ—এসব যেন আমার হৃদয়ের গভীরে কোনো চিরন্তন গান গাইছে।

বিয়ের পর থেকে আতিয়া এবং তার স্বামীর সম্পর্ক বিছানা ওবদিই সীমাবদ্ধ ছিলো। রফিকুল চৌধুরী কখনো ভালোবেসে আতিয়ার মন মানানোর চেষ্টা করে নি। আতিয়াও কখনো ভালোবাসার দাবি নিয়ে সামনে দাঁড়ায় নি। বরং মাঝেমধ্যে দুই একটা কথা বলতে আসলে হ্যাঁ হু বলে এড়িয়ে যেতো।
আবরারের যখন তিন বছর বয়স তখন রফিকুল এক গুচ্ছ লাল গোলাপ নিয়ে আতিয়ার সামনে দাঁড়িয়েছিলো। বলেছিলো প্রেম মূলক বাক্য। সেইদিন আতিয়া উপলব্ধি করে এই মানুষটা তার স্বামী। এই মানুষটাকে অবহেলা করা যাবে না৷ তার সন্তানের জন্য হলো তাদের হাসিখুশি থাকতে হবে।
তারপর থেকে তাদের সংসার সুন্দর হতে শুরু করে। আবরারের চার বছর বয়সে আরিফ বর্ষা আসে আতিয়ার শশুর বাড়িতে। তাদের তখন সবে সবে বিয়ে হয়েছে। পুরোনো প্রেমিককে দেখে আতিয়ার কলিজা কেঁপে উঠেছিলো। পুরোনো প্রেম মস্তিষ্কে ভয়ানক প্রীড়া দিচ্ছিলো। সর্বক্ষণ ভাবতে থাকতো “এই বুঝি তার সংসারটা ভাঙলো, এই বুঝি আরিফ সবাইকে সব বলে দিলো”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

কোনো রকমে পালিয়ে এসেছিলো ওনাদের সামনে থেকে। পরে জানতে পারলো আরিফ হচ্ছে আবরারের দাদার ঘনিষ্ঠ বন্ধুর ছেলে।
এবং তারপর থেকে ওনাদের আসা যাওয়া লেগেই থাকলো।
মাঝেমধ্যে আরিফের সাথে চোখাচোখি হয়ে যায় আতিয়ার। নিরবে দৃষ্টি ফিরিয়ে চলে আসে।
এভাবে আরও কিছু বছর চলে যায়। আবরারের আট বছর চলে। আর অহনার সবে জন্ম হলো।
ছোট্ট অহনাকে কোলে নিয়ে ড্রয়িং রুমে বসে ছিলো আতিয়া। তখনই আরিফ চলে আসে সেখানে। আশেপাশে কেউ ছিলো না বিধায় আরিফ আতিয়ার পাশে বসে। হাত এগিয়ে কোলে তুলে নেয় অহনাকে। মৃদু হেসে বলেছিলো

“তুমি কি পারলে আমায় ছেড়ে অন্য কাউকে বিয়ে করতে?
আতিয়া জবাব দিতে পারে না। মাথা নিচু করে বসে ছিলো। আরিফ পূণরায় বলে
” তুমি চাইলে এখনো আমি তোমায় গ্রহণ করতে রাজি। যাবে আমার সাথে?
এই কথা টুকু শুনে ফেলে রফিকুল। তার কোলে ছিলো আবরার।
ছোট ছোট দুটো বাচ্চা ছেড়ে আতিয়া চলে গেলে রফিকুল কি করবে? কিভাবে মানুষ করবে দুটো শিশুকে?
আর নিজেই বা কি করে থাকবে আতিয়াকে ছেড়ে? একটু বেশিই ভালোবাসে কি না?
আবরার তখন অতশত বোঝে না তবে এই টুকু বুঝতে পেরেছিলো “ওই আংকেলটা তার মাকে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। আর এটা শুনে বাবা কষ্ট পাচ্ছে”

পরের দিনই স্টক করে রফিকুল। ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার সময় পায় না। তার আগেই দুনিয়া ত্যাগ করে।
আবরার বুঝে যায় “মা এবং আংকেলের জন্যই বাবা চলে গেলো”
সেই থেকে মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ তার৷ ভীষণ খারাপ।
মাকে মা বলে ডাকতে ইচ্ছে করে না।
মায়ের মুখটা দেখলেই বাবার ঘুমন্ত মুখশ্রীর কথা মনে পড়ে।

বুকের পাশের ক্ষতটা বেশ গভীর। চা/কু ঢুকেছিলো বোধহয়। বা পাশে অবস্থির কয়লার এক ইঞ্চি ওপরে হয়েছে ক্ষত খানা।
আদ্রিতা কপাল কুঁচকায়। আলতো হাতে ক্ষত স্থানে তুলো ছুঁয়িয়ে আহত স্বরে বলে
“আপনি কি মাফিয়া?
না কি মাস্তান?
এভাবে মা/র/লো কেনো আপনাকে? ইসস মায়াদয়া কিচ্ছু নেই তাদের। অবশ্য আপনারও নেই।

আবরারের নজর ছিলো আদ্রিতার বক্ষদেশের পানে। সাদা রংয়ের টিশার্টের গলা খানা একটু বেশিই বড়। ঝুঁকে ঔষধ লাগিয়ে দেওয়ার ফলে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে অনেক কিছু। যা দেখতে বেশ ভালো লাগছে আবরারের। ইচ্ছে করছে গভীর ভাবে ছুঁয়ে দিতে। মুখ ডুবিয়ে চুমু খেতে। দিন দুনিয়া ভুলে আদ্রিতার মাঝে ডুবে যেতে। কিন্তু পারছে না। বেয়াদব দুষ্টু এ্যানি হা করে তাকিয়ে আছে। যেনো আদ্রিতাকে ছুঁলেই সে কামড়ে দিবে। দায়িত্ববান বডিগার্ড।
আবরারের থেকে জবাব না পেয়ে আদ্রিতা তার মুখ পানে তাকায়। মুহুর্তেই চমকে ওঠে। আবরারের নজর খেয়াল করে টেনে নেয় টিশার্টের গলা। এদিক ওদিক দৃষ্টি ফিরিয়ে শুকনো ঢোক গিলে।
আবরার বিরক্ত হয়। ডান হাতে কপাল চুলকে গম্ভীর স্বরে বলে

“কৈফিয়ত দিতে হবে তোমায়?
আদ্রিতা অনবরত মাথা নারায়। মানে ” জবাব দিতে হবে না”
পরপরই মাথা নিচু করে মুখ বাঁকায়। নিজ কাজে মনোযোগ দিয়ে বিরবির করে বলে
” শালা হনুমান। লুচ্চা
দৃষ্টি ঠিক করতে পারিস না? মেয়ে দেখলেই তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করবে? বেয়াদব?
আর কৈফিয়ত চাইছি তোর কাছে। শুধু জিজ্ঞেস করছি। জবাব দিলে দিবি না দিলে নাই। খাটাশের মতো ধমকাবি কেন?
গন্ডার কোথাকার। তোর কপাল

বাকি টুকু শেষ করার আগেই আবরার দুই হাতে জাপ্টে জড়িয়ে ধরে আদ্রিতাকে। ফেলে দেয় বিছানায়। এক হাত টিশার্টে ফাঁকে ঢুকিয়ে দেয়। এবং আদ্রিতার ওষ্ঠদ্বয়ে ভাজে নিজের ওষ্ঠদ্বয় মিলিয়ে নেয়। শক্তপোক্ত হাতের বিচরণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে ওষ্ঠের সংঘর্ষণ। হতদম্ভ আদ্রিতা বক্ষদেশের প্রীড়ায় মৃদু স্বরে গুঙিয়ে ওঠে। এটাই বুঝি বেসামাল আবরারের বেপরোয়া হৃদয়ে ঝড় তুললো।
এক মুহুর্তের জন্য ছেড়ে দেয় আদ্রিতার ওষ্ঠ। মাথা তুলে তাকায় গোলগাল মায়াবী মুখ পানে। জোরে জোরে শ্বাস টানছে রমনী। যেনো এতোক্ষণ চাপা পড়েছিলো বালিশের তলায়। শ্বাস নিতে পারে নি।
আবরার ঠোঁট কামড়ে ভ্রু কুঁচকায়। ছেড়ে দেয় আদ্রিতার হাত।
পাশ ফিরে তাকায় এ্যানির পানে। সে গোল গোল নয়নে তাকিয়ে আছে। যেনো বোঝার চেষ্টা চালাচ্ছে “এরা দুজন ঠিক কি করছে?”

আবরার উঠে বসে। অপর হাত খানা এখনো রয়েছে আদ্রিতার টিশার্টের ফাঁকে। সেটা সরানো চেষ্টা চালাচ্ছে আদ্রিতা। তবে ব্যর্থ।
“এ্যানি পাপা মাম্মাম রোমাঞ্চ করবো। চাচ্চুর কাছে যাও।
এ্যানি কি বুঝলো কে জানে?
মিউ মিউ আওয়াজ তুলে লেজ গুটিয়ে চলে যায়। আদ্রিতা আশ্চর্য নয়নে তাকিয়ে থাকে। ভালোবাসা দিয়ে বড় করলো আদ্রিতা আর এখন কথা শুনে আবরারের?
এটা কি অন্যায় নয়?
এ্যানি চোখের আড়াল হতেই আবরার পূণরায় দৃষ্টি দেয় আদ্রিতার পানে।

” তুমি ভীষণ হট এন্ড সফট
ধরলে ছাড়তেই ইচ্ছে করে না। কামড়ে খেয়ে নিতে মন চায়।
আদ্রিতা শুকনো ঢোক গিলে। আবরারের লাল লাল নয়ন জোড়ার পানে তাকিয়ে মিনমিন স্বরে বলে
” প্লিজজ ছেড়ে দিন।
আমি এসবের জন্য প্রস্তুত নই। পিরিয়
বাকিটুকু আবরার শোনে না। বরং টিশার্ট টেনে ওপরে তুলে নাক ডুবিয়ে দেয় আদ্রিতার নরম তুলতুলে উদরে। পূণরায় দুই হাতের বিচরণ ঘটায় বক্ষদেশে। এবং বেপরোয়া ভঙ্গিমায় চুমু খেতে থাকে।
দিশেহারা আদ্রিতা আবরারের এরূপ দেখে কেঁদে ওঠে উচ্চস্বরে।
থমকায় আবরার। মাথা তুলে তাকায় আদ্রিতার মুখ পানে। বিরক্ত ভঙ্গিমায় কপাল কুঁচকায় এবং ধমকের স্বরে বলে

“স্টপ ইউওর ফাকিং ক্রাইং।
কিন্তু আবরারের ধমকে কাজ হয় না। আদ্রিতা তার কান্না থামায় না। বরং একটুখানি বেড়ে যায়।
অধৈর্য আবরারের কান্না দেখার সময় নেই। তাই টেনে টেনে টিশার্ট আবার ওপরে তোলে।
স্পর্শকাতর জায়গায় মুখ ডুবিয়ে হাঙ্কি স্বরে বলে
“আই ক্যান ন’ট কন্ট্রোল মাইসেল্ফ।
প্লিজ সহ্য করে নাও
মরে যাচ্ছি আমি।

তোমাতেই আসক্ত পর্ব ৩২

আদ্রিতার কান্না থামে। কিছু একটা ভেবে শান্ত হয়ে আবরারের চুল গুলো মুঠো করে ধরে। সময় গড়ায় অদ্ভুত শব্দ বেরিয়ে আছে আদ্রিতার ঠোঁটের ফাঁকা দিয়ে।
আবরার পূণরায় বলে
“উমমম ডিস্টার্ব করে না জান
আদ্রিতা ডিস্টার্ব করে না তবে তখনই ভেসে আসে সিয়ামের কন্ঠস্বর

তোমাতেই আসক্ত পর্ব ৩৪