তোমাতেই আসক্ত পর্ব ৮০

তোমাতেই আসক্ত পর্ব ৮০
তানিশা সুলতানা

ইশারা টিশাদের বাসার সামনে এসে দাঁড়িয়ে আছে। ভেতরে ঢোকার সাহস হচ্ছে না তার। যদিও তাকে এখনো টিশাদের পরিবারের কেউ দেখেনি। টিশাও দেখে নি। চিনতে পারবে না। কনফিডেন্সের সাথে ভেতরে ঢুকে যাওয়া উচিত তার। কিন্তু তবুও ভয় করছে। বাই এনি চান্স কোনভাবে ধরা পড়ে গেলে রক্ষে থাকবে না। কি যে করবে তার সাথে আল্লাহ জানে। জা/নেও মেরে দিতে পারে।

সিয়াম আমান আহাদ ইভান খানিকটা দূরে বিশাল ঝাউ গাছের পেছনে লুকিয়ে আছে।
মূলত তারা চারজন ইশারাকে প্রটেক্ট করতে এসেছে। কোনভাবে যদি ধরা পড়ে যায় তাহলে তারা ইশারা কি নিয়ে পালাবে। বন্দুক চা/কু সহ সব ধরণের যন্ত্র এনেছে সাথে।
সিয়াম বড়ই চিন্তিত। দশটা না পাঁচটা না একটা মাত্র বউ তার। তাও আবার মাত্র একবার বাসর হয়েছে।
আহারে অকালে বউ হারালে আর কি বউ পাবে সে? একটা জীবন বউ হীনা কেটে যাবে। আর কোনদিনও চুমুর শ্বাদ গ্রহন করতে পারবে না। মেশিন এর পাওয়ার দেখাতে পারবে না। এসব ভাবতেই কান্না পায় সিয়াম এর।।
সে নাক টেনে বলে ওঠে

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“ভাই আব্বা আমার বউটাকেই পেলো?
বিশ্বাস কর টনির টুনটুনি পাওয়ার ফুল হয়ে গেলেও মানতে পারবো। কিন্তু আমার বউয়ের কিছু হলে তারায় তারায় আগুন জ্বালিয়ে দিবো। তোরা লিখে রাখ
আমান বড়ই সরল গলায় বলে
“পয়েন্ট ওয়ান তুই তারার কাছে যাবি কিভাবে? পয়েন্ট 2 দেশলাই পাবি কোথায়?
পয়েন্ট নাম্বার থ্রি এতগুলো তারা জ্বালাতে কতটা কেরোসিন লাগবে? এত কেরোসিনই বা পাবি কোথায়?
বিরক্ত সিয়াম চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে। আহাদ বলে ওঠে
“পাপীর দল তোদের জন্যই ভাবি ধরা খেয়ে যাবে। মুখ বন্ধ রাখ।
সিয়াম বলে

“ভাই আমার মুখটা বন্ধ হতে চায় না? কি করা যায় বলতো। ট্রেনের মতো দুঃখ গুলো মুখ ফুটে বেরিয়ে আসছে।
তখনই ইভান বায়ু ত্যাগ করে । বিকট শব্দের সে বায়ুতে গন্ধের পরিমাণও ঢের বেশি। মনে হচ্ছে বায়ুর সঙ্গে পটিও বেরিয়ে গেছে। সকলেই নাক মুখ বন্ধ করে ফেলে।
আমান নিজের শার্ট খুলে বাতাস নেয় মুখের কাছে। যাতে হাওয়ায় দুর্গন্ধ দূরে চলে যায়।
সিয়াম বলে
“ভাই তোর প্যান্ট মাখিয়ে গেছে না?
কয়দিন যাবত পেট পরিষ্কার করিস না? বল তো?
সরল ইভান কেবলা হেসে বলে
“তোদের মুখ বন্ধ করার জন্য হালকা করে বায়ু বের করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু শালার বায়ু বেইমানি করে পুরোটাই বেরিয়ে গেছে। আমার কি দোষ বল?

আহাদ ইভান এর পেছনে ছিলো। গোটা গন্ধটা সে অনুভব করেছে। এবং শেষ মুহূর্তে চোখ মুখ উল্টে পড়ে যায়। টানটান হয়ে শুয়ে পড়ে ঘাসের উপর। নিশ্বাসটা বন্ধ হয়ে আসছে।
জীবনে অনেক কিছু দেখেছে। অনেক গন্ধ হজম করেছে। কিন্তু ইভানের বায়ুর গন্ধ সে হজম করে নিতে পারেনা। সেন্সলেস হয়ে যায়।
আমান সিয়াম দুজন একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করে। তারপর তাকায় ইভানের পানে৷ যেনো এখুনি তাকপ চিবিয়ে খাবে। ইভান একবার নিজের প্যান্ট চেক করে। আসলেই কি মাখিয়ে ফেললো? এতো দুর্গন্ধ কেনো?
“ভাই তোরা আমার বকিস না। আমি যদি জানতাম আমার পাদের গন্ধে আহাদ জ্ঞান হারাবে তাহলে আমি পাদ দিতাম না। যেভাবেই হোক পাদ আটকে বসে থাকতাম।
সিয়াম ঠাসস করে একটা থা/প্প/ড় মারে ইভানের মাথায়।

” শালা গরু মরা খেয়েছিস?
“মারিস না ভাই। আমি আর জীবনেও পাদ দিমু না। ভাবির কসম। তোরা শান্ত হ।
আমান বলে
” যে গন্ধ খাওয়াইছিস তাতে শান্ত হতে পারছি না। শালা দুই প্রতিদিন তিনবার টয়লেট করবি। সিয়াম ওকে রুটিন বানিয়ে দিস তো।
“কিন্তু আমি তো এমনিতেউ চার বার করি।।
আর কিছু বলার ভাষা খুঁজে পায় না ওরা। আহাদ নরেচরে পিটপিট করে চোখ খুলে। মাথার ওপরে নীল আসমান দেখতে পায়। সেই ভয়ংকর দুর্গন্ধের সন্ধানে নাক টানে। কিন্তু নাহহহ নেই। পরিবেশ স্বাভাবিক। মনে মনে খুশি হলো যেনো। ঠোঁটের কোণে হাসি ঝুলিয়ে বলে ওঠে

” ভাই আমি বেঁচে আছি না কি মরে গেছি?
সিয়াম টেনে বসায় আহাদকে। বলে
“বেঁচে আছিস।।
” ভাইরে ভাই গন্ধে মনে হচ্ছিলো জানডা বেরিয়ে যাবে।
“পাদের গন্ধে জ্ঞান হারালে বিয়ে করবি কেমনে?
” কেনো ভাই?
বউয়ের পাদের গন্ধ কি ইভানের পাদের মতো হয় না কি?
হইলে মাপ চাই
জীবনেও বিয়া করবো না।

সিয়াম প্রতিবাদের স্বরে কিছু বলতে চাচ্ছিলো তখনই আমান বলে
“ইশারা ভেতরে ঢুকে পড়েছে। তোরা তোদের সরগোল বন্ধ করে ওর দিকে মনোযোগ দে।
দেখ মেয়েটা সব ঠিকঠাক ম্যানেজ করতে পারে কি না?
সবাই আবারও ঝাউ গাছের আড়ালে যায়। সিয়াম দূরবীক্ষণ যন্ত্র তাক করায়। বউটাকে নজরে নজরে রাখতে হবে।
” তোদের বলে রাখলাম। আমার বউয়ের কিছু হলে টনির টুনটুনি আস্ত থাকবে না৷ এবার গোড়া থেকে কাটবো।।
“কাটিস শালা
আগে দেখ কি হয়?

চিন্তিত আদ্রিতা এদিক ওদিক পায়চারি করছে। ছোট্ট আহিল বিছানায় ফোন দিয়ে খেলছে। আর আবরার ল্যাপটপে কিছু করছে।
আদ্রিতার বিরক্ত লাগে।
একটা মানুষ পাঁচটা মানুষকে বিপদের মধ্যে ফেলে এমন রিলাক্স এ কিভাবে থাকতে পারে?
এর মধ্যে কি মন নেই? চিন্তা নামক শব্দটা কি তাকে ছেড়ে পালিয়েছে?
নির্দয় পাষাণ হার্টলেট মানুষ একটা।
আবরারকে যখন মনে মনে গালি দিচ্ছিলো আদ্রিতা। তখনই তার ফোন বেজে ওঠে। আহিল এর হাতে ছিলো ফোন৷ আদ্রিতা সেটা হাতে নেয়। স্কিনে বাংলাদেশী একটা নাম্বার দেখাচ্ছে।
আবরার আড় চোখে এক পলক তাকায় তার দিকে। আদ্রিতা ভেংচি কেটে কল রিসিভ করে।।

” হ্যালো আদ্রিতা?
আদ্রিতা সঙ্গে সঙ্গে ফোন খানা বিছানায় ফেলে দেয়। আবরারের মুখ পানে তাকিয়ে বলে
“আসিফ আদনান কল করেছে জানলে আমি জীবনেও রিসিভ করতাম না।
আবরার বাঁকা হাসে। আহিলকে ডিঙিয়ে ফোন খানা হাতে নেয়।।
তারপর কানে ঠেকিয়ে শান্ত স্বরে বলে
” বলো আসিফ।
“আমার বোন আপনার কাছে?
” হ্যাঁ।
সে সিয়ামকে ভালোবাসে। তার সঙ্গে থাকতে চায়।।

“আমাদের একবারও জানানো যেতো না?
” নিজের বোনকে কল করে জিজ্ঞেস করো। আমি নাম্বার হোয়াটসঅ্যাপ করছি। আমার বউয়ের ফোনে নেক্সট টাইম কল করবে না। ওকেহহহ?
আসিফ বোধহয় কিছু বলতে চাচ্ছিলো কিন্তু সেটা শোনার সময় নেই আবরারের। সে কল কাটে। এবং তখুনি ডাকে অহনাকে।
“আহনা
তোর বেবি নিয়ে যাহহ। কান্না করছে।
আদ্রিতা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে

” কখন কাঁদলো ও?
শান্ত বাচ্চাদের মতোই তো খেলা করছে।
অহনা চলে আসে। মাকে দেখে সত্যিই কেঁদে ওঠে বাচ্চাটি।।আবরার চোখের ইশারায় আদ্রিতাকে দেখায়। বলছে “দেখো কাঁদছে”
অহনা ছেলেকে কোলে নিয়ে কলামনা করতে করতে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
আবরার ল্যাপটপে মনোযোগ দিয়ে বলে
“পাখি ডোর লক করে আসো।।
একটা জিনিস দেখাবো।
” এমনিতে দেখানো যাবে না?
আবরার জবাব দেয় না। আদ্রিতা গিয়ে দরজা বন্ধ করে আসে।
“লাইটও অফ করে দাও।।
আদ্রিতা ভ্রু কুচকে লাইটও অফ করে আবরারের পাশে এসে বসে।।
বলে
” দেখান কি দেখাবেন?
আবরার আওয়ার ফল্ট মুভির একটা দৃশ্য প্লে করে ল্যাপটপে। আদ্রিতা চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে “ছিহহহহ” বলে ওঠে।
আবরার যেনো শুনলো না।।
সে আদ্রিতার কোমর জড়িয়ে ধরে বলে

“লেটস ট্রাই
আদ্রিতা শুকনো ঢোক গিলে বলে
” টেনশন হচ্ছে না আপনার?
“তোমার হচ্ছে তো?
” হ্যাঁ।
খুব টেনশনে হচ্ছে। ইশারা কি ঠিকঠাক করতে পারলো?
“ওকেহহহ তোমার টেনশন কমিয়ে দিচ্ছি। ট্রাস্ট মি সব ভুলে যাবে।
” নাহহহ প্লিজজজ

তোমাতেই আসক্ত পর্ব ৭৯

“ডিস্টার্ব করলে বাংলাদেশে ছুঁড়ে ফেলে আসবো। আর জীবনেও আনবো না।
ব্যাসস আর কোনো কথা বলার সাহস হয় না আদ্রিতার।
বেপরোয়া আবরার ব্যস্ত ভঙ্গিমায় প্রেয়সীর শাড়ি খুলতে উদ্ধত হয়। চুমুতে ভরিয়ে দিতে থাকে গোটা মুখশ্রী।

তোমাতেই আসক্ত পর্ব ৮১

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here