তোমার নামে নীলচে তারা পর্ব ১
নওরিন মুনতাহা হিয়া
৭ বছর পর দেশে ফিরছে তালুকদার বাড়ির বড় সন্তান আদ্রিয়ান রেদোয়ান। বাবার বন্ধুর মেয়ের সাথে বিয়ে দেওয়ার কারণে কবুল বলার পর, রাগ করে বিদেশে চলে যায়। আজ এতো বছর পর বউকে ডিভোর্স দিতে বাড়ি ফিরছে সে।।
তালুকদার বাড়ি আজ জাঁকজমকপূর্ণ করে সাজানো হয়েছে। রঙিন মরিচা বাতি, আর সাজসজ্জায় পুরাতন জমিদার বাড়ি আজ নতুন রূপ ধারণ করেছে। তালুকদার বাড়ির বড় সন্তান পড়াশোনা শেষ করে, ডক্টর হয়ে বাড়ি ফিরছে। এইটুকু আয়োজন অবশ্যই করার প্রয়োজন ছিল। তবে বাড়ির বাহিরের আর ভিতরের পরিবেশ সম্পূর্ণ অন্যরকম। বর্তমানে বাড়ির সকলে নীরব আর শান্ত, তাদের মুখে হাসির ছিটেফোঁটা ও নেই। বাড়ির ড্রয়িং রুমে বসে টিভি দেখছে সৃষ্টি, তখনই তার ফোনে পরিচয় এক নাম্বার দেখে মেসেজ আসে। সৃষ্টি টিভির স্কিনের উপর থেকে দৃষ্টি সরিয়ে, ফোনের মেসেজ পড়তে থাকে। ম্যাসেজে সংক্ষিপ্ত ভাষায় লেখা ছিল _
” আমি ফ্লাইটে উঠে পড়েছি। ছয় ঘণ্টার মধ্য বাংলাদেশের বিমানবন্দরে পৌঁছে যাব __.
সংক্ষিপ্ত লেখাটা পড়ে সৃষ্টির মুখে হাসি ফুটে উঠে। সৃষ্টির ফোনে মেসেজ করা ব্যক্তি আর কেউ না, তার বড় ভাই। তালুকদার বাড়ির বড় সন্তান ডক্টর আদ্রিয়ান রোদায়ান। সৃষ্টি রিমোট দিয়ে টিভি বন্ধ করে দেয়, এরপর তার ফোন হাতে নিয়ে তাড়াতাড়ি করে ছুটে যায় রান্নাঘরে। রান্নাঘরে বিভিন্ন প্রকারের খাবার রান্না করে যাচ্ছেন শার্লিন বেগম। যিনি তালুকদার বাড়ির বড় গিন্নি, ওনি আদ্রিয়ান আর সৃষ্টির মা। রান্নাঘরের গ্যাসের চুলায় বিরিয়ানি রান্না করছেন শার্লিন বেগম, কারণ আদ্রিয়ান তার মায়ের হাতের বিরিয়ানি খেতে অনেক পছন্দ করে। যা তার সবচেয়ে প্রিয় খাবার। তার সম্পূর্ণ মনোযোগ এখন চুলায় থাকা বিরিয়ানির উপর। তখনই রান্নাঘরে প্রবেশ করে সৃষ্টি, সে শার্লিন বেগমের কাছে গিয়ে বলে __
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
“- আম্মু আদ্র ভাইয়া মেসেজ করেছিল আমায়। ভাইয়া ফ্লাইটে উঠে পড়েছে। ছয় ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশের বিমানবন্দরে পৌঁছে যাবে ___.
সৃষ্টির কথা শুনে শার্লিন বেগম খুশি হয়ে যায়। আজ সাত বছর পর তার সন্তান দেশে ফিরবে। তার সন্তানকে একবার দেখার জন্য, জড়িয়ে ধরার জন্য কত ছটফট করছে শার্লিন বেগম। আজ অবশেষে তার সকল অপেক্ষার সমাপ্তি হবে, তার ছেলে তার কোলে ফিরে আসবে। তবে শার্লিন বেগম একটু পর কিছু একটা ভেবে শান্ত হয়ে যায়, তার মুখের হাসি বিলুপ্ত হয়ে যায়। সৃষ্টি তার মায়ের মুখ এমন গম্ভীর হয়ে যাওয়া দেখে প্রশ্ন করে _
“- আম্মু হঠাৎ করে কি হলো তোমার? ভাইয়া আসছে শুনে, খুশি হওনি তুমি?
শার্লিন বেগম সৃষ্টির মুখের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে _
[ মেঘ নামটা শুনে আমৃত্যু ভালোবাসি তোকে গল্পটার কপি মনে করবেন না দয়া করে, এই দুইটা গল্প একদম আলাদা প্লটে তৈরি। একবার পড়ে দেখুন, বুঝতে পারবেন ]
“- মেঘ কোথায়?
শার্লিন বেগমের মুখে মেঘের নাম শুনে, সৃষ্টি শান্ত হয়ে যায়। মায়ের হঠাৎ করে গম্ভীর হয়ে যাওয়া কারণ, সে এখন বুঝতে পারে। সৃষ্টি অসহায় মুখ করে বলে ___
“- উপরে ওর রুমে। আচ্ছা আম্মু সত্যি কি মেঘ আমাদের সকলকে ছেড়ে চলে যাবে? আদ্র ভাইয়া আর মেঘের কি একসাথে সংসার করা এখনো হবে না?
সৃষ্টির কথার জবাব শার্লিন বেগম দিতে পারে না, সে শুধু ছোট করে বলে _
“- ভাগ্য যা লিখা আছে, তাই হবে __.
শার্লিন বেগম আর কোনো কথা বলে না, বিরিয়ানি রান্না শেষ করে রুমে ফিরে আসে। আয়নার সামনে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন জামান সাহেব, যিনি হলেন এই তালুকদার বংশের কর্তা [ আদ্রর বাবা ]। যার পোশাক আর চলাফেরায় আভিজাত্যর ছাপ স্পষ্ট ফুটে উঠে। শার্লিন বেগম রুমে এসে দেখেন,জামান সাহেব আয়নার সামনে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছেন। শার্লিন বেগম তার কাছে এগিয়ে যায়, জামান সাহেব শার্লিন বেগমের উপস্থিতি উপলব্ধি করতে পারেন। তার স্ত্রী এখন তাকে কি বলবে, তা ওনি আগে থেকেই যানেন। জামান সাহেব গম্ভীর কণ্ঠে বলে
“- মেঘকে বলো ব্যাগপএ গুছিয়ে নিচে আসতে। ওর জন্য ড্রয়িং রুমে অপেক্ষা করছি আমি __.
জামান সাহেব আর শার্লিন বেগমকে কথা বলার সুযোগ দেয় না। দ্রুত পা ফেলে রুম থেকে বের হয়ে যায়। শার্লিন বেগম দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে, এরপর সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে যায়।
বাড়ির সকল জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন বেলকনি থেকে তাকিয়ে দেখছে মেঘ। তার বিয়ের সময় বাড়িটা এমন সুন্দর করে সাজানো হয়েছিল, লাল রঙের মরিচা বাতি জ্বলালো ছিল। মেঘের মনে পড়ে যায়, তার এই বাড়িতে প্রথম আগমনের কথা।
পনেরো বছর বয়সী বাচ্চা মেঘের বিয়ে হয় তালুকদার বাড়ির বড় সন্তান আদ্রিয়ান রেদোয়ানের সাথে, তখন আদ্রর বয়স অনুমানিক আঠারো বছর হবে। মেঘের মা তার জন্মের পরই মারা যায়, মা মরা মেয়েকে তার বাবা বড় করে। সৎ মায়ের অত্যাচার যাতে সয্য করতে না হয়, এইজন্য তার বিয়ে করে নি তার বাবা। মা মরা মেঘকে সবসময় যত্ন আর ভালোবাসা গিয়ে আগলে রেখে ছিলেন। কিন্তু বাবার ভালোবাসা, আর যত্ন পাওয়ার ভাগ্য খুব বেশি দীর্ঘ হয়নি মেঘের। যখন মেঘের বয়স চৌদ্দ বছর, তখন তার বাবা হার্টঅ্যাটাক করে মারা যান।
বাবার মৃত্যুর পর মেঘের আশ্রয়স্থল তার চাচার বাসায়। কিন্তু চাচা আর চাচি তার বাবার সম্পত্তির লোভে তাকে তাদের বাসায় স্থান দিয়েছিল। মেঘ বাবা তার সকল সম্পত্তি তার একমাত্র মেয়ের নামে লিখে দিয়ে যায়। চাচার বাসায় প্রতিনিয়ত অত্যাচার, আর নিয়ার্যতেন শিকার হয়েছে মেঘ। এমন কি সারাদিন না খেয়ে ও থাকতে হয়েছে তার। মেঘের বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন জামান সাহেব। মেঘের বাবা পেশায় একজন ডক্টর ছিলেন, বিয়ে করার পর ওনি পিএইচডি করার জন্য বিদেশে চলে যান। যার কারণে অনেকদিন ধরে মেঘের বাবা আর জামান সাহেবের মধ্যে দেখা হয় নি।
প্রায় অনেক বছর পর জামান সাহেবের দেখা হয় তার এক পুরাতন বন্ধুর সাথে। যিনি তাকে মেঘের বাবার মৃত্যুর কথা বলেন, আর মেঘের বর্তমান অবস্থার কথা। জামান সাহেব মেঘের কথা ভেবে কষ্ট পায়, এরপর ওনি তার বন্ধুর সহয়তায় মেঘের চাচার বাসার ঠিকানা খুঁজে বের করে। মেঘকে তার সাথে নিয়ে আসতে চান ওনি, কিন্তু তার লোভী চাচা চাচি তাকে দিতে চাই না। কিন্তু জামান সাহেব তার ক্ষমতা ব্যবহার করে, মেঘকে তাদের কাছ থেকে নিয়ে আসে। তবে মেঘের চাচা চাচি থেমে থাকে না, তারা থানায় মামলা করে জামান সাহেবের বিরুদ্ধে।
যেহেতু জামান সাহেব মেঘের রক্তের সম্পর্কের কেউ ছিল না। তাই পুলিশ মেঘকে তার চাচা চাচির কাছে ফিরত দিতে বলে। যার কারণে বাধ্য হয়ে জামান সাহেব মেঘের সাথে তার বড় ছেলে আদ্রিয়ানের বিয়ে দেয়। কিন্তু আদ্রিয়ান এই বিয়ে করতে চাই নি, তবে বাবার সিদ্ধান্তের বিপক্ষে যাওয়া তার দ্বারা সম্ভব ছিল না। যার ফলে বিয়ে দিন কবুল বলে আদ্রিয়ান পড়াশোনার অযুহাত দিয়ে বিদেশে চলে যায়। আজ সাত বছর পর আদ্র বাড়ি ফিরে আসছে, তবে তার একটাই শর্ত মেঘ এই বাড়িতে থাকবে না। সে বাড়ি ফিরার পর যেনো মেঘকে না দেখে।
বেলকনিতে দাঁড়িয়ে অতীতের সৃতি চারণ করছিল মেঘ। অল্প কিছু সময় পর রুমে ফিরে আসে, এইটা তার রুম নয় বরং আদ্রর রুম। আদ্র বিদেশ যাওয়ার পর থেকে, সে এই রুমেই থাকে। আদ্রকে কখনো সরাসরি দেখে নাই মেঘ, সাতবছর আগে বিয়ের আসরে কবুল বলার সময় দূর থেকে একবার দেখেছিল। ওই শেষ বার, আর দেখে নি। তবে আদ্রর রুমে বড় ফ্রেমে বাঁধা তার একটা ছবি আছে। মেঘ সেই ছবির কাছে যায়, কয়েক মূহুর্ত অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। এরপর চোখ সরিয়ে নেয়, শান্ত স্বরে বলে _
“- মিস্টার আদ্রিয়ান রেদোয়ান চলে যাচ্ছি আমি। তবে যাওয়ার আগে শুধু একটাই চাওয়া, আপনার সাথে এই জীবনে আমার আর দেখা না হোক। কিছু মানুষ ভাগ্য থাকে, তবে জীবনে না। আজ থেকে বিয়ের সকল বন্ধন থেকে মুক্তি দিলাম আপনাকে, কথা দিলাম স্ত্রী অধিকার নিয়ে আর কখন ফিরে আসব না আপনার কাছে। বিদায় আমার অপ্রিয় স্বামী ___.
মেঘ আদ্রিয়ানের ছবির সাথে আরো কিছু কথা বলে, এরপর ছবির নিচে থাকা ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দেয়। তার হাত কিছু কেঁপে উঠে, চোখ গড়িয়ে অশ্রু কণা প্রবাহিত হয়। আদ্রিয়ানের সাথে তার কখনো দেখা হয় নি, সরাসরি কথা ও বলে তার সাথে। তবুও এক অদ্ভুত মায়া কাজ করত, এই অপরিচিত মানুষটার উপর। কিন্তু ওই মানুষটা তাকে ভালোবাসে না, ঘৃণা করে। শুধু মাএ তার জন্য এতোদিন পরিবার, আর মা – বাবার সাথে যোগাযোগ করে নি। আদ্রিয়ান চলে যাওয়ার পর শার্লিন বেগম প্রতিদিন কান্না করত, তার সন্তানকে দেখার জন্য ছটফট করত। যা মেঘ দেখেছে, একজন মায়ের থেকে তার সন্তানকে কেড়ে নেওয়ার অপরাধ বোধ তার মধ্যে কাজ করত। কিন্তু সে কিছু করতে পারত না।
গত তিনদিন আগে মেঘের এডমিশন টেষ্টের রেজাল্ট দিয়েছে, তার ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে চান্স হয়েছে। জামান সাহেব তাকে সেখানে ভর্তি করেছেন। আর তিনদিন আগেই আদ্রিয়ান হঠাৎ করে সৃষ্টির ফোনে মেসেজ করে জানায়। সে দেশে ফিরবে, কিন্তু শর্ত একটাই মেঘকে ডিভোর্স দিবে। আর মেঘ যেনো এই বাড়িতে থাকতে না পারে, যা মেঘ শুনে।
যদি মেঘ আদ্রিয়ানকে ডিভোর্স না দেয়, আর সে এই বাড়ি ছেড়ে চলে না যায়। তবে আদ্রিয়ান আর কখনো বাড়ি ফিরবে না। এরজন্য মেঘ সিদ্ধান্ত নেয়, সে আদ্রিয়ানকে ডিভোর্স দিবে। আর তার পড়াশোনার জন্য ময়মনসিংহে চলে যেতেই হবে, সেখানে তাকে থাকতে হবে। তাই আজ মেঘ তালুকদার বাড়ি ছেড়ে ময়মনসিংহ চলে যাচ্ছে। আদ্রিয়ান আর তার ডিভোর্সের কথা পরিবারের সকলে যানে, জামিন সাহেব উঁকিলের সাথে কথা বলে সম্পূর্ণা ঠিক করেছে। জামিন সাহেব আপত্তি করেন নি, কারণ ওনি যানেন আদ্র কখনো মেঘকে তার বউ হিসাবে মেনে নিবে না।
আর মেঘই বা কতদিন আদ্রিয়ানের জন্য অপেক্ষা করবে। মেঘের একটা ভবিষ্যতে রয়েছে, তাই ওনি তাদের ডিভোর্স করিয়ে দেয়। তবে শুধু মেঘই ডিভোর্স পেপারে সাইন করেছে, আদ্রিয়ান করে নি সে দেশে ফিরে তারপর সাইন করবে। বাড়ির অন্য সদস্যরা জামির সাহেবের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে, কারণ তারা ও যানে আদ্র মেঘকে ঘৃণা করে। যদিও শার্লিন বেগম প্রথমে আপত্তি করেছিলেন, তবে জামান সাহেবের সিদ্ধান্তের উপর কথা বলতে পারে নাই।
আদ্রিয়ানের উপর দিকে একবার ফিরে তাকায়, এরপর একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে। মেঘের ভাবনার মাঝে শার্লিন বেগম দরজায় কড়া নাড়েন, শার্লিন বেগম বলে ___
“- মেঘ ড্রয়িং রুমে তোমার বড় আব্বু অপেক্ষা করছে, তোমার জন্য ___.
শার্লিন বেগমের কথা শুনে, মেঘ তার দিকে ফিরে তাকায়। এরপর ব্যাগপএ গুছিয়ে নিচে চলে যায়। ড্রয়িং রুমে বসে আছেন জামান সাহেব, সিঁড়ি দিয়ে মেঘকে নিচে নামতে দেখে ওনি উঠে দাঁড়ান। মেঘ একবার তার বড় আব্বুর মুখের দিকে তাকায়, এরপর শার্লিন বেগমের কাছে যায়। মেঘ হাঁটু গেঁড়ে বসে যায় তার পায়ের কাছে, হাত দিয়ে মা ছুয়েঁ দেয় আর বলে ___
“- আমার জন্য দোয়া করো বড় আম্মু __ __.
শার্লিন বেগম তার মাথায় হাত রাখেন। শার্লিন বেগম সবসময় চেয়েছে, আদ্রিয়ান বাড়ি ফিরে আসুক। কিন্তু ওনি মেঘের সাথে ডিভোর্স হয়ে যাক তা চান নি? মেঘ এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাক তাও চান নি। মেঘ আর সৃষ্টিকে উভয়কে মেয়ের মতো ভালোবেসেছেন। মেঘের জন্য আদ্র বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে, যার জন্য ওনি মেঘকে অপছন্দ করতেন। তবে ঘৃণা নয়, কারো প্রতি স্নেহ, যত্ন, প্রকাশ না করলে কি তাকে ভালোবাসা যায় না। মায়ের কাছে তার সকল সন্তান তো একইরকম হয়।
তখনই ড্রয়িং রুমে উপস্থিত হয় সৃষ্টি, রুহুল আমিন, তার স্ত্রী নীলিমা বেগম আর তাদের সন্তান জুনাইদ । মেঘকে তাদের থেকে বিদায় নেয়, এরপর বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। বাড়ির সদর দরজা অতিক্রম করার আগে, একবার সম্পূর্ণ বাড়িটা পর্যবেক্ষণ করে। এইটা তার শশুড় বাড়ি, ছিল এখন আর নাই। মেঘ গাড়িতে উঠে বসে, জামান সাহেব তার পাশে ড্রাইভিং সিটে বসে। মেঘ একবার জামান সাহেবের দিকে তাকায়, ওনি খুব শান্ত হয়ে ড্রাইভ করছে। গাড়ি চলতে শুরু করে, উদ্দেশ্য এখন ময়মনসিংহ যাওয়া। আর কখনো এই শহরে তার ফিরা হবে, এই বাড়িতে সে আর আসবে না। স্বামী নামক মানুষটার সাথে তার দেখা হবে না, কখনো না।
ছয় ঘণ্টা পর বিমান বাংলাদেশ এসে পৌঁছায়। গাড়িতে থাকা সকল যাএী নেমে পড়ে, শুধু একজন ছাড়া। বিমানের এক সিটে , হাতে বই নিয়ে বসে আছেন এক ব্যক্তি। যার সম্পূর্ণ মনোযোগ এখন তার হাতে থাকা বইয়ের দিকে, আশেপাশের মানুষ যে নেমে পড়েছে তা সে বুঝতে পারে না।বিমানের একজন মহিলা এয়ারস্টার এগিয়ে আসে সিটের দিকে, ব্যক্তির হাতে থাকা পার্সপোটে তার নাম দেখে বিনয়ের সাথে বলে __
“- এক্সকিউজ মি। মিস্টার আদ্রিয়ান রেদোয়ান আপনি বাংলাদেশে এসে পড়েছেন। বিমান থেকে নামতে হবে এখন.