তোর নেশা পর্ব ২
তুষার আহমেদ কাব্য
বাসায় ফিরে কাব্য শুয়ে পড়ে।নিরব এসে পাশে বসে
—- শোন না,রেস্টুরেন্টের মেয়েটা কিউট ছিলো।ভাল্লাগসে(নিরব)
—- পিংক কালার জামা (নিধি)টা?(কাব্য)
—- না রে,রাগী মেয়েটা
— স্ট্রোক করে মরে যা।
— পাশের মেয়েটাও কিন্তু সুন্দরী, তোর ভালো লাগেনি?
— নাহ,আমার এসবে মন নেই
—- মামা যদি আরেকবার দেখি তাহলে নাম্বার বা আইডি চাইবো।
— জুতা খুলে মারবে
—-কেন?
—ওই মেয়ে যেই রাগী
—- তো আমার জন্য তুই তো আছিস।রাগি মামা
—- what the….
—- 😄😄
অন্যদিকে
নিধি বসে বসে ফোন টিপছে,মাইশা একবার এদিক ওদিক করছে।
—-হয়েছে তো আর কতবার এদিকওদিক করবি?(নিধি)
— ওর সাহস কি করে হয় আমার মাথায় পানি ঢালার৷ কাল বুঝিয়ে দেবো মাইশা কি করতে পারে।
— আচ্ছা ঠিক আছে তো
— কাল ওর এমন অবস্থা করবো যে…
— তবে ওর হাসি টা কিউট
— কিউট না ছাই
— কেন? খারাপ কি
— ওর পাশের জন কে দেখেছিস,জোস
—- আমার তো ওকেই ভালো লেগেছে
— ছিঃ
— ধুর!
এই নিয়ে শুরু হয় এক চোট তর্ক।
পরেরদিন বিকেলে
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কফিশপে…
বালতির পানি তে বরফ ঢেলে নেয় মাইশা। তারপর সেটা লুকিয়ে রাখে।
— এই পানি দিয়ে কি হবে?(নিধি)
— দেখতে পারবি পরে এখন চুপ করে বসে থাক
— বল না
— না,বস!
নিধি মুখ বাকিয়ে বসে থাকে। চোখ বন্ধ করতেই ভেসে উঠে একটা দৃশ্য। সে নীল শাড়ী পড়ে একটা বাগানে দাঁড়িয়ে আছে, সামনে থেকে সেই ছেলেটা নীল পাঞ্জাবি পড়ে কাছে এসে হাটু গেড়ে বসে একটা চকলেট দিয়ে তাকে প্রপোজ করছে।
হঠাৎ মাইশার ধাক্কায় স্বপ্ন টা ভেঙে যায়
নিধি তাকিয়ে দেখে স্বপ্নের মতোই ছেলেটা পাঞ্জাবি পড়ে কফিশপে ঢুকে বসে আছে।
— কি খাবি আজ?(নিরব)
— আমার ভালো লাগছে না,শুধু কফি(কাব্য)
— সকালেও তো খেলিনা। এখন না খেলে কিন্তু আন্টি রাগ করবে
— আম্মু বিরিয়ানি রান্না করে পাঠিয়েছে একটু আগে। বাসায় গিয়ে সেটাই খাবো
— এই জন্য সারাদিন খাসনি?
— তুই ভালো ভাবেই জানিস,আম্মুর হাতের রান্না আমার পছন্দের। এক্ষেত্রে আমি কোনো রিস্ক নিচ্ছি না
— তুই সব দিক থেকে khadus
কাব্য তাকায় নিরবের দিকে
— না শুধু এই দিক টাই অনেক soft (নিরব)
কাব্য মুচকি হেসে ফোনের দিকে তাকায়।
তখনই এক বালতি পানি কাব্যের গায়ে পুরো ঢেলে দেয় মাইশা। নিরব লাফিয়ে উঠে। কাব্য চমকে উঠলেও বেশি না। কাব্য অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে, তারপরই রাগ ফুটে ওঠে মুখে।
মাইশা আর নিধি দাঁড়িয়ে। নিধি হাসছে।
—- এবার বুঝলেন মাইশা কে?এবার হয়েছে শোধবোধ (মাইশা)
— ওহ আপনার নাম মাইশা, nice(নিরব)
— জ্বি,আপনি?
— আমি নিরব
কাব্য দ্রুত উঠে বেরিয়ে যায়। নিরব ও উঠে যাবে তখনই
— আর ওনার নাম?(নিধি)
— কাব্য(নিরব)
— ফেসবুক?
—- তুষার আহমেদ কাব্য
— ধন্যবাদ
নিরব বেরিয়ে যায়
— তুই ওই ছেলের ফেসবুক আইডি ও নিলি?(মাইশা)
— হ্যাঁ, আমার জন্য(নিধি)
— তুই আমার বন্ধু নাকি শত্রু?
নিধি হেসে বেরিয়ে যায়,মাইশা বিরক্ত হয়ে তাকিয়ে থাকে।
বাসায় ফিরে কাব্য চেঞ্জ করে বিরিয়ানি নিয়ে বসে।
—- আমার জন্য পাঠায়নি?(নিরব)
— ওইখামে আছে(কাব্য)
নিরব ও বিরিয়ানি নিয়ে বসে
—- মেয়েটা জোস মামা,চোখ,হাসি🥰
—- বিরিয়ানি খাবি নাকি মার?
— না ঠিক আছে
কাব্য আর নিরব খাবার শেষ করে। কাব্য বারান্দায় গিয়ে বই পড়ছে। নিরব কাব্যের ফোন এ গেম খেলছে,ওর ফোন চার্জে
তখনই ফেসবুকে রিকুয়েষ্ট আসে,এটা স্বাভাবিক। রোজই অনেক আসে।কিন্তু পিক টা দেখেই নিরব accept করে। এটা তো সেই মেয়েটা। নাম নিধি।
accept এর সাথে সাথে মেসেজ আসে।
—hello mr kabbo(নিধি)
— আসলে আমি নিরব, কাব্য বই পড়ছে (নিরব)
— ওও
—মাইশা কই
— মাইশা ও বই পড়ছে
— ওহ
— আচ্ছা কাব্যের পছন্দের রঙ কি?
নিরব চিন্তায় পড়ে। কাব্যের পছন্দের রঙ কি হতে পারে,এই নিয়ে কাব্য কিছু বলেনি
—- উম লাল
—- আমার ও🥰
—- আর মাইশার?
—- ওর কালো আর নিল আর সাদা
— ওহ,আজ থেকে আমার ও
—আচ্ছা উনি সিংগেল?
— জ্বি
—- কাউকে ভালোবাসে বা পছন্দ করে?
—- নাহ
—তাই🥰
—- আর মাইশা
— ওর ও তেমন ইচ্ছা
— আমার তো আছে
—- আপনি মাইশা কে পছন্দ করেন?
—- হ্যাঁ, আপনি কাব্য কে?
—- হ্যাঁ
— তাহলে আপনি আমাকে আর আমি আপনাকে সাহায্য করবো
—- done
—-আচ্ছা এখন bye.কাব্য আসছে
—-ok bye
ফোনের মেসেজ ডিলিট করে দেয়।
—কি করছিস ফোনে?((কাব্য)
—candy crush (নিরব)
—candy crash বাদ দিয়ে আলু crash কর।আলুর ভর্তা খাবো রাতে
— আচ্ছা
অন্যদিকে
— কিরে কি নিয়ে এতো হাসছিস?(মাইশা)
—- কাল আমরা শাড়ি পড়বো(নিধি)
— কেন?
— হুম পরে বলবো
নিধি হেসে শুয়ে পড়ে
পরেরদিন বিকেলে,
নিধি লাল শাড়ি পড়ে আর মাইশা কালো শাড়ি।
আগে এদিকওদিক গিয়ে পিক তুলে কফিশপে যায়
কাব্য আর নিরব সেখানে বসে গল্প করছিলো।তখনই মাইশা আর নিধি প্রবেশ করে। নিরবের চোখ পড়ে সেদিকে, এক মুহুর্তের জন্য যেন তার হ্রদস্পন্দন থেমে যায়। এতো টা সুন্দর কেউ হতে পারে,মাশা-আল্লাহ।
নিরব তাকিয়েই আছে। কাব্য নিরবের তাকানো ফলো করে পেছনে ঘুরে তাকায়। প্রথমে নিধির দিকে তাকিয়ে তেমন রেসপন্স করে না কাব্য। কিন্তু তখনই চোখ পড়ে মাইশার দিকে, কালো শাড়িতে যেন একটা পরী।যদিও।দুজনে একই রকম সুন্দরী কিন্তু লাল শাড়ি থেকে কালো শাড়ি টা ফুটে উঠেছে। তারপর কাব্যের পছন্দের রঙ কালো সাদা নীল।
কাব্য এক মুহুর্ত তাকিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নেয়।
নিধি আর মাইশা পাশ দিয়ে এসে ঠিক পাশের টেবিলে বসে।মাইশা কাব্যকে দেখে একটু বিরক্ত হয়।
— এখানেই আসতে হলো?(মাইশা)
— চুপ তো(নিধি)
।
— কাব্য তুই আজ কালো শার্ট পড়লি কেন?(নিরব)
— কি সমস্যা?(কাব্য)
— ভাবলাম আমি পড়বো,এখন আমরা দুজনই কালো শার্ট
—-তো
—- তুই বুঝবি না ভাই।
নিরব মাইশার দিকে তাকায়, মাইশা নিরবের দিকে তাকিয়ে হালকা হাসি দিয়ে ফোনের দিকে তাকায়। নিধি এক ভাবে কাব্যের দিকে তাকিয়ে আছে। কাব্য কফি হাতে নিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে।
কিছুক্ষন কাটার পর নিরব সাহস করে সেই টেবিলে যায়।
— hi(নিরব)
—hello (মাইশা)
— আমার নাম নিরব
—- মাইশা
—- আসলে..
—কিছু বলবেন?
— বাবা বলেছিলো সুন্দরী বউ না নিয়ে গেলে বাসায় ঢুকতে দেবেনা,আর আপনার থেকে সুন্দরী কাউকে পেলাম না😄
মাইশা হেসে উঠে। এভাবে তাদের মধ্যে কথা চলতে থাকে। নিরব কে বেশ ভালো লাগে মাইশার।
অন্যদিকে নিধি কাব্যের টেবিলে বসে।
—hi(নিধি)
কাব্য কিছু বলছে না
— আপু ওর কানে হেডফোন (নিরব)
নিধি বোকা হয়ে বসে আছে। একদিকে দুজন কথা বলছে,আর অন্যদিকে এই ছেলে কানে হেডফোন গুজে বসে আছে এতো সুন্দরী মেয়ে রেখে।
কাব্যের কফি শেষ হতেই নিরবের দিকে একটা চাবি ছুড়ে দিয়ে বেরিয়ে যায়
— উনার এতো ভাব কেন?(মাইশা)
—- ও এমনই(নিরব)
— একদিন এই ভাব ছুটিয়ে দেবো
—আপনার বান্ধবী ছুটিয়ে দেবে,উনি কাব্যকে পছন্দ করেন
—ওহ এই জন্য আজ শাড়ি পড়তে বলল
কিছুক্ষন গল্প করে নিধি আর মাইশা কে বিদায় দিয়ে নিরব বাসায় ফিরে আসে
এসে দেখে কাব্য শুয়ে আছে
— হলো তোর প্রেমালাপ? (কাব্য)
—-হুম🔥
— যা রান্না কর,আজ তোর পালা
—- কাল আলু ভর্তা আমি করেছি,আজ তুই কর
— আচ্ছা
কাব্য উঠে যায়।
।
—- নিরব খুব মিস্টি,আর কাব্য একটা ষ্টুপিড (মাইশা)
—- ভালোবাসা একটা তীরের মতো, সেটা লক্ষভেদ করবে কিনা তা কে চালাচ্ছে তার উপর নির্ভর করে। (ফোনের দিকে তাকিয়ে নিধি বলল)
— হুম।কিন্তু আজ হঠাৎ এতো সুন্দর কথা বললি?।।
— বললাম না,পড়ছি
— কি
— Status
—কার
— কাব্যের🥰
মাইশা ভ্রু কুচকে তাকায়।
নিধি চোখ বন্ধ করে ..
স্বপ্ন দেখে” ফুলে ভরা বাগান,সে আর কাব্য মাঝে দাঁড়িয়ে আছে ”
পরেরদিন বিকেলে
নিরব কফিশপে বসে আছে, কিছুক্ষনের মধ্যেই মাইশা আর নিধি আসে
তোর নেশা পর্ব ১
—কি ব্যাপার আজ একা যে? উনি কোথায়?(নিধি)
— আসলে ওইদিন ঠান্ডা পানি গায়ে মারার ফলে ওর জ্বর আসছিলো। কাল বেশি ছিলো না।কিন্তু রাতে হুট করেই অনেক জ্বর চলে আসে (নিরব)
— কিহ?এখন উনি কোথায়?(মাইশা)