ধূসর রংধনু পর্ব ১৭

ধূসর রংধনু পর্ব ১৭
মাহিরা ইসলাম

ইতোমধ্যে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামতে শুরু করেছে।
বাসন্তী ব্যস্ত পায়ে দরজা খুলে দেখতে পেল মাহীনের হাস্যউজ্জ্বল মুখশ্রী খানা।
প্রথমেই দরজার সামনে বাসন্তীকে দেখে সে কিছুটা ভরকে গেল।এভাবে দরজার সামনেই সে আশা করে নি বাসন্তী কে।
বাসন্তী এই অসময়ে মাহীনকে দেখে অবাক হয়ে গেল।তার আশার কারণ বুঝতে পারলো না।নিস্তব্ধ ও তো বাড়িতে নেই।
বাসন্তী হাস্যউজ্জ্বল মুখে বলল,

– আরে মাহীন যে এসো এসো ভেতরে এসো।এই সময় হঠাৎ কারো বিপদ আপদ হলো না তো আবার।আন্টি ঠিক আছে তো?
মাহীন ভেতরে এসে সোফায় বসে তার সিল্কি চুলে হাত বুলিয়ে ইতস্তত করে বলল,
-” হ্যাঁ হ্যাঁ সবাই ঠিক আছে।আসলে নিস্তব্ধ সঙ্গে একটু দরকার ছিল আরকি।
মাহীন শুষ্ক ঢোক গিললো।একদম ডাহামিথ্যে কথা বলে বসলো সে।সে তো বাসন্তী কে দেখতেই এতটা পথ পারি জমালো।গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি মাথায় করে ওসমান ভিলায় এলো।প্রেয়সীর মুখখানা যাতে মাঝে মাঝেই অবলোকন করতে পারে তাইতো যশোর শহর ছাড়লো দুদিনের মাঝে।
বাসন্তী প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

-” ওও আচ্ছা আচ্ছা। তা তুমি না যশোর ছিলে এলে কবে।
মাহীন আমতা-আমতা করে বলল,”
আসলে আজই ঢাকায় সিফট করেছি। ওখানে একা একা ভালো লাগছিল না। মা বাবা, আপনি এখানে আর আমি ওখানে।
বসন্তী ভ্রু কুচকে বলল,
-” আমি মানে?”
মাহীন থতমত খেয়ে দ্রুত বলল
-” ওই আপনি মানে আপনারা নিস্তব্ধ আর বাকি বন্ধুরা ওরা সবাই সেটাই বললাম আরকি।
-” ওও তাই বলুন।”
মাহীন দ্রুত কথা ঘুরিয়ে বলল,

-“আপনি? আর কেউ নেই বাসায় বাসন্তী? কাউকে দেখছিন না যে?
মাহীনের হঠাৎ বাসন্তীর নাম ধরে ডাকায় সে কিছুটা
চমকে উঠলো। ঘাবড়ে গেলেও মেকি হেসে বলল,
-” ওইই না আসলে নিস্তব্ধ আর আয়েশা ভাবীরা তাসফিরদের বাড়িতে গেছে বেড়াতে।মা ঘরে বাবা তো বাহিরে।বাড়িতে শুধু দাদু, আছে? কোনো দরকার?
মাহীন এক দৃষ্টিতে পলক না ফেলে বাসন্তীর দিকে তাকিয়ে রইলো।সে দেখছে মেয়েটার অস্বস্তি মাঝেও মিছে হেঁসে কথা বলা, সঙ্গে একটু একটু ঠোঁট নাড়ানো।

মাহীন তাকিয়ে থেকেই মাথা নেড়ে জবাব দিলো, -“নিস্তব্ধ’কে একটু দরকার ছিল।আসার সময় ফোন করা হয়নি ওকে। বুঝতে পারিনি বাড়ি তে নেই।তবে এখন আর দরকার নেই বাসন্তী। যা দরকার ছিল পূরণ হয়ে গেছে, বরং তার চেয়েও বেশি কিছু।
মাহীনের কথা বুঝতে না পেরে তার দিকে প্রশ্ন সূচক দৃষ্টিতে চাইলো বাসন্তী।
তার বয়সে ছোট্ট একটা ছেলে তাকে বার বার নাম ধরে ডাকায় তার খুব অস্বস্তি হচ্ছে। সঙ্গে অদ্ভুত কথাবার্তায় সে আরো মিইয়ে যাচ্ছে।
মাহীন আর কিছু না বলে আসি বলে বেরিয়ে গেল।

-” আরে একটু বসো। চা বা নাস্তা পানি কিছু ট্রাই করো অন্তত।
মাহীন মুচকি হেঁসে ফিছু ফিরে বলল,
-” অন্য দিন হবে।চিন্তা করবেন না বাসন্তী। ”
বাসন্তী অদ্ভুত চোখে তার যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো।ছেলেটা কেমন যেন রহস্যময়।
কি অদ্ভুত তার চোখের ভাষা।বাসন্তী চোখ বন্ধ করে নিলো। মনের মাঝের এত অযাচিত ভাবনা কে ভীষণ করে শাঁসালো।

বেলকনির খোলা দরজা দিয়ে সূর্যের তীক্ষ্ণ রশ্মি তাসফির চোখে লাগতেই তীব্র ঘুম ছুটে গেল তার।
পিটপিট করে চোখ মেলে উঠে বসলো সে।
রাতে হাজারটা কথা ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পরেছে তার খেয়ালই নেই।
ওয়াশ রুম থেকে একবারে গোসল সেরে বের হলো তাসফি। কাল ভিজে যাওয়ায় গাঁটা কেমন ম্যাচ ম্যাচ করছিলো।এখন ভালো লাগছো। তাসফি সারারুমে চোখ বুলালো।তার অসহ্য ডাক্তার বর কে কোথাও দেখতে পেল না।
মুহুর্তেই তার কাল রাতের সেই অযাচিত ঘটনা স্মরণে এলো।
রুমের বাইরে বের হয়ে চাচির কাছে গেল।
মেজ চাচি তাকে দেখে বলল,
-” কি রে উঠে পড়েছিস? জামাই বাবা উঠেছে? খাবার তৈরি হয়ে গেছে।যা জামাই বাবাকে এবারে ডেকে ডায়নিংয়ে নিয়ে আয় দেখি।”
তাসফি ভ্রু কুঁচকে বলল,
-” উনি বাইরে বের হয়নি?”
মেজ চাঁচি বলল,

-” কার কথা বলছিস? জামাই বাবা? দেখ মেয়ে বলে কি তুই তো কেবল মাত্র ওও ঘর থেকে বের হলি।”
কিছু মনে পড়তেই তাসফি দৌঁড়ে রুমে এলো।
মেজ চাচি চিল্লিয়ে বলতে লাগলেন।
-” আরে করিস কি আস্তে ছোঁঠ পরে যাবি তো।মেয়েটা না কি যে করে।”
তাসফি রুমে এসে দ্রুত বেলকনি তে গিয়ে দেখে, ঠিক যা ভেবে ছিলো তাই।
নিস্তব্ধ বেলকনির ফ্লোরে বসেই ঘুমিয়ে আছে।
তাসফি হতবাক হয়ে চেয়ে রইলো।এই লোক এই ভিজে গায়ে সারারাত এমন ঠান্ডা ফ্লোরে বসে ছিল।ইয়া খোদা।ঠান্ডা লেগে যায় নি তো আবার। যদি জ্বর টর আছে।
নাহ তাসফি আর ভাবতে পারলো না।নিজের চোখ বন্ধ করে বড় করে শ্বাস নিলো।
দ্রুত নিস্তব্ধ’র চোখে মুখে হাত দিয়ে দেখতে লাগলো।
হ্যাঁ গা টাও তো কেমন গরম গরম লাগছে।
ইশশ লোকটাকে এভাবে শাস্তি দিতে গিয়ে কি একটু বেশিই করে ফেলল না তো।এখন যদি লোকটার জ্বর বাঁধিয়ে বসে কি হবে।

সে তো চেয়েছিলো লোকটাকে একটু শায়েস্তা করতে।তাকে এতদিন করা অপমানের জবাব দিতে।লোকটার কোনো শারীরিক ক্ষতি তো সে করতে চায় নি।
নিস্তব্ধ’র গলায় হাত দিয়ে বসা অবস্থায়ই নিস্তব্ধ চোখ পিট পিট করে চাইলো।
তাসফি ও পিট পিট করে নিস্তব্ধ সুদর্শন মুখখানায় চোখ বুলিয়ে শুষ্ক ঢোক গিললো।
নিস্তব্ধ নিজের সামনে তাসফির অবয়ব অবলোকন করে সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো।
নিস্তব্ধ’র চিৎকারে ভয় পেয়ে তাসফিও চিৎকার করে উঠলো।
ওদিকে দুজনের হঠাৎ এমন চিৎকার শুনে তাসফির বাবা, চাচি আয়েশা সবাই ভয় পেয়ে এগিয়ে এলো।কি হলো আবার কোনো বিপদ আপদ হলো না তো।
মোস্তফা সাহেব আতঙ্ক গ্রস্থ স্বরে দরজায় টোকা দিয়ে ডাকলো।

-” তাসফি মামনি কি হয়েছে? দরজা খোলো মামনি।”
বাইরের তাদের ডাকার চেচামেচি তে যেন দুজনের হুশ ফিরলো।
তাসফি নিজের ভুল বুঝতে পেরে দ্রুত দরজা খুলতে গেল।
নিস্তব্ধ তবুও ভাবলেনহীন।চিৎকার শেষে যেন সে একদম নিরব হয়ে গেছে।
নিস্তব্ধ টলতে টলতে ওয়াশরুম ঢুকে ঠাস করে দরজা বন্ধ করে দিলো।
তাসফি আবারো তাতে কেঁপে উঠলো।
কাঁপা কাঁপা হাতে দরজা খুলে বোকার মতো দা্ঁত বের করে হাসি দিলো।
মোস্তফা সাহেব চিন্তিত ভঙ্গিতে বলল,

-“কি হয়েছল মা? কোনো সমস্যা? চিৎকার করলে কেন?”
তাসফি মাথা চুলকে আমতাআমতা করে বলল,
-” তেলাপোকা, তেলাপোকা বাবা।ভয় পেয়েছিলাম হঠাৎ দেখে।”
মোস্তফা সাহেব ভ্রু কুঁচকে বলল,
-” সে কি তুমি তেলাপোকা ভয় পাওয়া শুরু করলে কবে থেকে মাননি।”
এই রে সে ভুল বলে বসেছে এবার কি করবে।ফট করে সে বলে বসলো,
-” আমি না,আমি না বাবা, ওই যে উনি! উনি তেলাপোকা দেখে ভয় পায় আরকি। উনিও চিৎকার দিলো।ওনার চিৎকারে আমিও ভয় পেয়ে চিৎকার দিলাম আসলে।”
বলেই তাসফি বোকা হেঁসে মাথা চুলকালো।
-” তাই বলো মামনি আমরা তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। যাইহোক জামাই বাবাজি কে নিয়ে নাস্তা করতে এসো। নিস্তব্ধ কই? ”

-” উনি তো ওয়াশরুমে বাবা, ওয়াশ রুমে।”
আয়েশা মিট মিট করে হাসছে।কি হয়েছে সেটা বুঝতে না পারলেও সে স্পষ্ট বুঝতে পারছে তাসফি একদম ডাহা মিথ্যা কথা বলে দিল।কারণ নিস্তব্ধ কোনোদিন তেলাপোকায় ভয় পায় না। পান্না একবার তেলাপোকা দেখে ভয় পেয়ে চিৎকার করে উঠলে,নিস্তব্ধ সেই তেলাপোকা টাকে নিজ হাত দিয়ে ধরে দেখিয়ে পান্নার ভয় ভাঙিয়ে ছিল। সেখানে আজ নিজে ভয় পেয়ে চিৎকার করার প্রশ্নই উঠে না।
বাসর রাতে পাবেল কে দেখে তো সে চিৎকার করে উঠে ছিল।বয়স কম হওয়ায় আয়েশা তখন এতবড় একজন মানুষের সাথে একা ঘরে ভয়ই পেয়েছিলো।

চিৎকার শুনে তার শ্বশুর শ্বাশুড়ি সহ সবাই উপস্থিত হয়েছিল।সবাই যা নয় তা বলেছিল পাবেলকে।
বেচারা তো লজ্জায় মূর্ছা যাওয়ার অবস্থা। বেচারা বউকে সমান্য স্পর্শ ও করলো না অথচ অধৈর্য্যের তকমা লাগিয়ে দিল সবাই তাকে এর পর থেকে একমাস তো সবাই তাকে উঠত বসতে এই খোটাই শুনালো। আয়েশা ও সে সময় চিৎকার দিয়ে বিপাকে পড়েছিল। তারই বা দোষ কি। সে তো আর ইচ্ছে করে দেয় নি। মনের ভয় থেকেই তো দিয়েছিল।
সবাই যেতেই তাসফি ঠাস করে দরজাটা লাগিয়ে এসে ধপাস করে ঝিম ধরে কতক্ষণ বিছানায় বসে রইলো।
তখনি নিস্তব্ধ ওয়াশরুম থেকে মাথা অর্ধেক বের করে।তাসফি কে ডাকলো।
তাসফি বিরক্তি নিয়ে বলল,

-” কি হয়েছে এমন সাপের মতো মাথা অর্ধেক নের করে ফনা তুলে ফস ফস কেন করছেন? যা বলার সোজাসুজি বলুন না।”
নিস্তব্ধ কটমট করে তাকিয়ে বলল,
-” কখন থেকে ডেকে যাচ্ছি কথা কানে যায় না তোমার।কার ধ্যানে থাকো ইদানিং কোনো কথাই তোমার কানে যায় না।”
-” উফফ এত প্যাচাল না পেড়ে বেরিয়ে আসতে পারেন তো।”
নিস্তব্ধ চোখ বড় বড় করে বলল,

-” এই মেয়ে তুমি তো ভারী অসভ্য। এই অবস্থায় তুমি আমায় বাইরে বেরিয়ে আসতে বলছো।নির্লজ্জ মেয়ে মানুষ। ”
তাসফি ভ্রু কুঁচকে বলল,
-” তো বেরিয়ে আসলে কি সমস্যা ”
নিস্তব্ধ কটমট করে তার দিকে তাকিয়ে বলল,
-” তোমার মতো তো আমি নির্লজ্জ নই মেয়ে যে রুমে এসে অর্ধনগ্ন হয়ে ঘুরে বেরাবো। ”
-” এই এই আপনি আমায় নির্লজ্জ বললেন কোন সাহসে।আপনার কোনো ধারণা আছে…”
নিস্তব্ধ তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল,

-” আল্লাহ ওয়াস্তে আমার তোয়ালে, টিশার্ট আর টাওজার টা দিয়ে আপনি সাফাই গান ম্যাডাম। আমি কি এখন নগ্ন গায়ে আপনার সামনে বের হবো?”
তাসফি মেজাজ দেখিয়ে বলল,
-” কেন নগ্ন গায়ে কেন বের হবেন।নির্লজ্জ পুরুষ মানুষ। ওয়াশরুমে কাপড় নিয়ে যান না। এতক্ষণ এত প্যাচাল পেরে সময় নষ্ট না করে শুরুতে জামা কাপড় দিতে বললেই তো ঝামেলা শেষ।এমনি এমনি তো আর আপনায় অসহ্য বলি না।”
তাসফি নিস্তব্ধ’র মুখের উপরে জামা কাপড় গুলো ছুঁড়ে মারলো।
নিস্তব্ধ বিরবির করে বলল,

-” মেয়ে তো নয় যেন ধানিলংকা। দিন দিন এর ঝাঁঝ, ঝাল দুটোই যেন বেড়ে যাচ্ছে।
কবে না দেখা গেল নিস্তব্ধ তার ঝাঁঝ আর ঝালে ছটফট করেই না মরে গেল।
নিস্তব্ধ ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসতেই তাসফি তাকে চেপে ধরলো।
-“এই আপনি তখন এভাবে চিৎকার করলেন কেন।চিৎকার করে কি প্রমাণ করতে চাইলেন আপনি? কাল যখন আপনি আমায় চেপে ধরেছিলেন আমি কি চিৎকার করে ছিলাম বলুন?”
নিস্তব্ধ ব্যাঙ্গ করে হাসতে লাগলো।
তাসফি ফুসে উঠলো,
-” এই এই আপনি এমন সয়তানের মতো হাসছেন কেন?
– “তো হাসবোনা। তোমার ওই কুৎসিত চেহারা দেখেই তো আমার সকাল সকাল প্রাণ পাখি উড়ে যাবার যোগাড় হলো।

ভাগ্যিস কাল বর্জ্যপাত টা হলো।নাহলে তুমি তো অসভ্য মেয়ে আমার ইজ্জত নিয়ে টানাটানি করছিলে। কাল বড় বাঁচা বেঁচে গেছি বুঝলে মেয়ে। নাহলে কাল তো আমি ওখানেই অর্ধেক মতে ভুত হয়ে যেতাম।
বলতে বলতেই নিস্তব্ধ হাছি দিয়ে ফেলল”হাউচ্চু,হাউচ্চু ”
তাসফি চোখ ছোট ছোট করে তাকালো,
-” ইউ! আমি আপনার ইজ্জত নিয়ে টানাটানি করছিলাম?”
–” অবশ্যই। তো তোমার কি মনে হয় আমার মতো একটা সভ্য শান্ত পুরুষ তোমাকে এমনি এমনি টাছ করতে যাবে।হাহ কখনোই না।”

— “ওও তাই নাকি আপনি সভ্য শান্ত?”
–” অবশ্যই। ”
তাসফির চোখ বড় বড় করে বলল,
-” তার মানে আপনি বলতে চাইছেন কাল আমি আপনাকে সিডিউস করেছিলাম?
-” জ্বী আজ্ঞে। ”
বলেই নিস্তব্ধ সয়তানি হাঁসি দিলো।
তাসফি নিস্তব্ধ দিকে তেড়ে গিয়ে বলল,
— “আপনি না, আপনি না এক নম্বরের অসভ্য, অভদ্র, বর্বর, বদমাশ ডাক্তার। সঙ্গে কর্তব্যহীন হাসবেন্ড। উফফ অসহ্য। ”
বলেই তাসফি গটগট করে হেঁটে রুম ছেড়ে বেরিয়ে যেতে লাগলো।
পেছন থেকে নিস্তব্ধ চেঁচিয়ে বলল,

” আর তুমি কি হ্যাঁ?আরে আরে এই যে ম্যাডাম শুনে যান তো।”
বলেই নিস্তব্ধ হাসতে লাগলো। তার হাসার মাঝে সে আবারো হাঁছি দিলো।উফফ এই হাছিতে তো তার জান নড়ে যাবার যোগাড়। শেষে কিনা কুৎসিত মেয়ের যাতনায় সারাক্ষণ বেলকনিতে বসে বৃষ্টিতে ভিজে হাসি কাশি বাঁধিয়ে ফেলল।আশ্চর্য। শুধুই কি কুৎসিত মেয়ের জন্য?
তাসফির সারা শরীর রাগে ফেটে পড়ছে।যেখানে তার কিনা এই লোককে নির্লজ্জ, অসভ্য উপাধি দেওয়ার কথা।সেখানে এই লোক কিনা আজ উল্টো তাকে মাত দিয়ে দিচ্ছে।

কি রকম কথায় কথায় তার সঙ্গে ঝগড়া লাগিয়ে দিচ্ছে। তার চেয়ে বরং এই লোকটাই হাজার টা প্যাচাল পারছে। আর যেই লোক হাসতো না। সে কিনা এখন কেমন নির্লজ্জের মতো হেঁসেই যাচ্ছে হেঁসেই যাচ্ছে।
এই এক মিনিট এক মিনিট,এই লোক কাল সারারাত বৃষ্টিতে ভিজে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলে নিতো আবার।যে কাল পর্যন্ত গম্ভীর হয়ে থেকেছে।সেই লোক সকাল থেকেই একদম ভিন্ন অদ্ভুত আচরণ করছে।তাসফি যেন এই নিস্তব্ধ ইয়াসার কে চিনতেই পারছে না।

ধূসর রংধনু পর্ব ১৬

মনে হচ্ছে একদম নিস্তব্ধ’রই ভিন্ন একটি সত্তা।
এই নিস্তব্ধ’র আবার জমজ কোনো ভাইটাই নেই তো।শ্বশুর বাড়ি গিয়েই শ্বাশুড়ি কে আগে জিজ্ঞেস করে ব্যাপারটা সিওর হতে হবে তো।

ধূসর রংধনু পর্ব ১৮