ধূসর রংধনু পর্ব ৪৪
মাহিরা ইসলাম
তাসফির উত্তর না পেয়ে নিস্তব্ধ মেজাজ হারিয়ে কামড় বসালো তাসফির মশ্রিণ গলায়।
ব্যাথায় চোখ খিঁচে নিলো তাসফি।
নিস্তব্ধ তাসফির দুহাত মুচড়ে ধরায় তাসফি পারলোনা ব্যাথা জায়গায় আঙুল ছোঁয়াতে।
তাসফি তার ডাক্তার সাহেবের দিকে চোখ পিটপিট করে চেয়ে হালকা স্বরে সুধালো,
-” ডাক্তার সাহেব আর ইউ জেলাস?”
নিস্তব্ধ অদ্ভুত চোখে চাইলো নিজ অর্ধাঙ্গিনীর পানে।
ফিসফিস করে বলল,
-” হলেই বা ক্ষতি কিসে বলুন? ”
তাসফি শিউরে উঠলো।
নিস্তব্ধ তাসফির গলায় কামড়কৃত স্থানে নিজ আঙুলের সাহায্যে আলতো স্পষ্ট করে স্লাইড করলো।
আরো খানিকটা চেপে ধরলো।মাদকীয় স্বরে বলল,
-” আপনি জানেন না? আপনি শুধু আমার।অন্যকারো কর্তৃত্ত আপনার উপর ফলতে দেখলে প্রথমে আপনাকে শাস্তি দেব।আই রিপিট,প্রথম শাস্তিটা আপনাকেই পেতে হবে। কারণ তাকে সুযোগটা আপনিই করে দেনেন।তবেই না সে সাহস পাবে। আপনি আমার আমানত।আমার জন্য আপনার নিজেকে কলুষ মুক্ত রাখা আপনার দ্বায়িত্ব। পরপুরুষের সঙ্গে মেলা মেশা আপনার জায়েজ নেই।আমি সেটা টলারেট ওও করবো না।বুঝাতে পেরেছি?”
তাসফি পিট পিট করে চেয়ে মাথা নাড়লো।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
-” ক্লাসে যান।সময় হয়ে এসেছে।গো।”
তাসফি মুখ কাচুমাচু করে বলল,
-” আমায় না ছাড়লে কি করে যাবো?”
নিস্তব্ধ ছাড়ার নাম করলেও আর ছাড়া হলো না। আরো পাঁচ মিনিট নিজের কার্য সাধন করলো।
যেন রাতের সুদ, পুরোটাই আসল সহ বুঝে নিতে তৎপর তাসফিট অসভ্য ডাক্তার সাহেব।
তাসফি শ্বাস নেওয়ার কুল কিনারা পেল না।
নিস্তব্ধ সেই সুযোগই দিল না, দিতে সে রাজি নয়।
নিস্তব্ধ’র চেম্বার থেকে হাঁপাতে হাঁপাতে বের হলো তাসফি।উফফ!
লোকটা টাকে যেভাবে চেপে ধরে ছিল তাসফির তো মনে হচ্ছিল এই না তার প্রাণটা খাঁচা ছাড়া হয়।
এমন রাক্ষসে, ঘাড় ত্যাড়া পুরুষ বোধহয় তার কপালেই পরার ছিল।
তাসফি মনে হচ্ছে এই বোধহয় লোকটা তাকে টুপ করে ট্যাবলেটের মতো পানি ছাড়াই গিলে ফেলবে।
পানি ছাড়াও একফোঁটাও সমস্যা হবে না লোকটার।বুকে যা দম তাতেই যথেষ্ট।
কি এমন হয়েছে এত রিয়েক্ট করার।ইশশ!
ক্লাসে ঢুকে তাসফি অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো সামনের অবাঞ্ছিত দৃশ্য অবলোকন করে।
আশার সামনে সিনিয়র একজন বড় ভাই হাঁটু গেড়ে বসে আছে প্রপোজ করার ভঙ্গিতে।
তাসফি এগিয়ে গেল।প্রপোজ করার ভঙ্গিতে নয় ভরা ক্লাসরুমে আসলেই সে আশা কে প্রপোজ করছে।
আশা বেচারী কিছুটা থতমত খেয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
কি করবে না করবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না সে।
ছেলেটা হাতে গাঁধা ফুল। এগিয়ে দেওয়া আশার দিকে।লক্ষ আশার ফুলটা গ্রহন করে ছেলেটাকে উদ্ধার করা।
আশা যেন প্রতিজ্ঞা করেছে কিছুতেই হ্যাঁ বলবে না।ফুলও নিবে না। গাঁধা ফুল দিয়ে কে প্রপোজ করে আজব।
ছেলেটাও নাছর বান্দা মনে হচ্ছে সেও আশাকে না রাজি করিয়ে উঠে দাঁড়াবে না।
এদিকে ক্লাসে স্যার আসার সময় হয়ে গিয়েছে।
সবাই তটস্থ। স্যার এসে এসব দেখলে কেলেংকারী হয়ে যাবে।
তাসফি,আরাধ্য আর সর্নিধি সার্কাস দেখার মতো দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।মনে তাদের উৎকন্ঠা আশার মনোভাব বোঝার।
-” কি হচ্ছে এখানে।”
সার্কাস দেখতে থাকা সকলে নড়েচড়ে বসলো গম্ভীর পুরুষালী কন্ঠের ভারে।
যা ভয় করেছিল তাই বোধহয় হয়েছে।
সবাই পেছনে ঘুরে তাকালো।দেখতে পেল সুজন স্যার চোয়াল শক্ত করে হাত মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে তাদের পেছনে।
আশা শুষ্ক ঢোক গিললো।
-” কি হলো অ্যান্সার মি? কি হচ্ছে এখানে?”
সুজন স্যারের স্বর আগের থেকেও বোধহয় খানিকটা রাগী শোনালো।
সুজনের রাগী স্বর শুনে সবাই আরো তটস্থ হয়ে বসলো।
ছেলেটা এখনো ওভাবেই বসে রয়েছে।
সুজম ধমক মেরে বলল,
-” এই ছেলে এই।কি সমস্যা?কি হচ্ছে সার্কাস চলছে? এভাবে বসে আছো কেন।এটা তো তোমাদের ক্লাস রুম নয়। এখানে কেন তবে?”
তাসফি গাঢ় চোখে সুজনের দিকে চাইলো। বলল,
-” বুঝতে পারছেন না স্যার, ছেলেটা আমাদের আশাকে প্রপোজ করছে।সোজা বাংলা ভাসায় ভালোবাসা জানাচ্ছে। আর আমাদের আশাওও…”
আশা তাসফির হাতে চিমটি মারলো।
সুজন বলে উঠলো,
-” কি হলো থেমে গেলে কেন বলো?
-” থাক কিছুনা স্যার।”
সুজন ধমকে ধামকে ছেলেটাকে ঘাড় ধরে বের করলো।
-” এই ছেলে বের হও। মেডিকেল কলেজে বাপ মায়ের টাকা খরচ করে পড়াশোনা করতে এসেছো না প্রেম পিরিতি করতে এসেছ।থাপড়ে দাঁতের পাটি সব গুলো ভেঙে দেব। এটা কি তোমরা ভার্সিটি পেয়েছো? যে যা খুশি ইচ্ছা তাই করবে।যাও বের হও।অসভ্যের দল।”
আশার দিকে তাকিয়ে ধমক দিয়ে বলল,
-” কি হলো তুমি এখনো দাঁড়িয়ে আছো কেন? ছেলেটার সঙ্গে যেতে চাও?”
আশা সঙ্গে সঙ্গে দুপাশে মাথা নাড়লো।
-” তাহলে দাঁড়িয়ে আছো কেন? বসো।রাবিশ।”
সুজন গজগজ করতে করতে পড়াতে শুরু করলো।
আশাকে প্রপোজ করতে দেখে তার কেন এত রাগ লাগছে সে জানেনা।শুধু জানে আশার পাশে সে ছেলেটাকে একমুহূর্তের জন্যও সহ্য করতে পারছিলো না।
আজ আর কোনো ফাজলামো না করে সবাই ভদ্র বাচ্চার মতো ক্লাস করতে লাগলো।
কারণ তারা জানে সুজন স্যার এমনিতে হাসিখুশি ফানি ক্যাটাগরির মানুষ। কিন্তু হঠাৎ রেগে গেলে কেলেংকারী অবস্থা।
এই তো সেদিন তাদের ক্লাসের একটা মেয়েকে যাচ্ছে তাই ভাবে অপমান করলো। অপমান করার যথেষ্ট কারণ ওও ছিল।মেয়েটা ক্লাসের মাঝে বারবার ডিস্টার্ব করতো।
ভাবতো সুজন স্যার তো আর কিছু বলে না।
কিন্তু মেয়েটাকে অপমান সঙ্গে ঝাড়ি দেওয়ায় তাদের সবার শিক্ষা হয়েছে।
সেই থেকে সবার মনেই নিস্তব্ধ স্যারের মতো সুজনের জন্য ও ভয় তৈরি হয়েছিল।
আগে হাসি ঠাট্টা করলেও এখন এতটা করতে সাহস পায় না।
ক্লাস শেষে সুজন বেরিয়ে গেল।
তাসফি আশার কানে কানে ফিসফিস করে বলল,
-” পাখির বাসা সত্যি করে বলতো, আমার দেওয়র কে পছন্দ করিস? কদিন যাবত তোর মতিগতি লক্ষ করছি।ভালো ঠেকছে না। দেখ সত্যি বলবি।”
আশা আমতাআমতা করলো।
-” আরে ওরকম কিছুনা।কি যে বলিস তুই।কোথায় আমি আর কোথায় স্যার।পাগল। ”
-“হ্যাঁ হ্যাঁ লুকাও দেখি কতদিন লুকাতে পারো। আমিও দেখে নেব।”
আশা করুণ চোখে তাকিয়ে রইলো তাসফির পানে।
-” আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে লাভ নেই।”
-“তুমি বরং এবার নিস্তব্ধ কে ডিভোর্স টা দিয়েই দাও কেমন।”
তাসফি মুচকি হেঁসে নড়েচড়ে বসলো। কফির কাপে চুমুক দিয়ে তা পুনরায় টেবিলে রাখলো।সুধালো,
-” হ্যাঁ তা দিতেই পারি। তবে তৃপ্তি ম্যাডাম আপনি নাহয় আপনার বন্ধুকে গিয়ে বলুন সে যেন তার বউকে ডিভোর্স টা দিয়ে দেয়। নিস্তব্ধ ইয়াসার যদি তার বউকে ডিভোর্স না দেয় তবে আমার আর কি করার বলুন?
আপনি বরং কথাটা গিয়ে আপনার বন্ধুকে বলুন কেমন।”
তৃপ্তি গাঢ় চোখ তাকিয়ে রইলো তাসফির পানে।
তাসফি কফির মগে শেষ চুমুক টুকু দিয়ে বলল,
” শুধুমাত্র এই অছিলায় আপনি আমায় ডেকে থাকলে আমি আসছি তবে।ওসমান ভিলায় অনেক কাজ পরে আছে।”
ওও হ্যাঁ থ্যাংঙ্কস ফর দ্যা কফি ট্রিট।বাইই।
তাসফি ক্যাফের দরজা দিয়ে দ্রুত কদম ফেলে বেরিয়ে গেল।
তৃপ্তি নিরব দৃষ্টিতে রমণীর স্থান ত্যাগ করা দেখলো। অতঃপর একা একাই মুচকি হাঁসলো। তার কাজ শেষ।এবারে সে নিঃচিন্তে থাকতে পারবে।শেষ নিঃশ্বাস টুকুও বোধহয় সে নিঃচিন্তে ফেলতে পারবে।থাকবেনা আর কোনো পিছুটান।
বাড়ি ফিরে তাসফি আজ আর সাহস পেল না নিস্তব্ধ’র রুমে যেতে।
কাল জেদ ধরে যায়নি।আর আজ নিজেই সাহস পাচ্ছে না।
তাসফিকে ঘাঁমতে দেখে বাসন্তী ভ্রুকুঁচকে বলল,
-” কি ব্যাপার এত ঘামছিস কেন তাসফি?”
তাসফি আঙুলের সাহায্য কপালের ঘামটুকু বিথা মোছার চেষ্টা করে বলল,
-” কই কই, গরম লাগছে বোধহয় ভীষণ বুঝলেতো।”
তাসফির পাশে থাকা বাসন্তীর ফোনে তখন মাহীন দিয়ে সেভ করা নম্বর থেকে কল এলো।
তাসফি ভ্রু উঁচিয়ে চাইলো সে দিলে।
বাসন্তী খপ করে ফোনটা নিয়ে কল কেটে দিয়ে মেকি হাসার চেষ্টা করলো।
আবারো কল বেজে উঠলো।
বাসন্তী ওখান থেকে উঠে বেলকনিতে চলে গেল ফোন নিয়ে।
তাসফি আর ওত ঘাটালো না।
সে আছে অন্য চিন্তায়।
তার একবার নিস্তব্ধ’র অবস্থান পরিক্ষা করে আসা উচিত? নাকি এভাবেই থাকবে?
তাসফি গুটিগুটি পায়ে নিস্তব্ধ’র রুমে সামনে এলো।
উঁকি মেরে দেখার চেষ্টা করলো নিস্তব্ধ কি করছে।
কিন্তু রুমের মাঝে মানুষের উপস্থিতি টের পেল না। তাসফি ঠোঁট উল্টালো। গেল কোথায় লোকটা।
-” কি করছেন ম্যাডাম?”
কানের পুরুষালী কন্ঠস্বরের ভারে তাসফি চমকে উঠলো। চোখ খিচে বন্ধ করে নিলো।
যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যে হয়।
তাসফি মেকি হাঁসার চেষ্টা করে পিছু ঘুরে দাঁড়ালো।
নিস্তব্ধ ভ্রু নাচাল।
-” আমার রুমের সামনে ম্যাডামের উঁকি মারা হচ্ছিল কেন শুনি। কারণটা জানতে পারি।”
তাসফি পালানোর পথ খুঁজছে।
নিস্তব্ধ সামনে দাঁড়িয়ে থাকায় দৌঁড় ওও দিতে পারছে না।নয়লে নির্ঘাত এখন সে দৌঁড় মারতো।
নিস্তব্ধ তার দিকে আর একটু ঝুঁকে আসতেই তাসফি মুখের কাছে দুহাত জড় করে সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলো,
-” বাসন্তী আপা, বাসন্তী আপা আমায় আপনার টি-শার্ট নিতে পাঠিয়েছিলো।”
নিস্তব্ধ ভ্রু উঁচিয়ে চাইলো।
কৌতুক করে বলল,
-” মানে সিরিয়াসলি? আপা তোমায় আমার টি-শার্ট নিতে পাঠিয়েছে?”
তাসফি ডানে বামে মাথা নাড়লো। আবার উপর নিচ মাথা নাড়লো। দুর কি করছে সে।
-” ওহ তাই বুঝি আপা আমার টি-শার্ট দিয়ে কি করবে শুনি? পরবে বুঝি?৷ আপার জামা কাপড়ের বোধহয় আপনার মতো অভাব পরেছে?আমার সাইজ তো আপনার ও হবে না না আপা তো দূরের কথা।”
তাসফির বুকের ধুকপুকানি ক্রমশই বাড়তে লাগলো।
লোকটা কাছে আসলেই সে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।
নিস্তব্ধ আরো একটু ঝুঁকে তাসফির ঠোঁট ছুঁই ছুঁই অবস্থায় ফিসফিস করে বলল,
-” অবশ্য আপনি পড়তে চাইলে দিতেই পারি।এর আগেও তো পড়েছেন। আশা করি প্রবলেম হবে না।”
তাসফি চোখ খিচে বন্ধ করে নিলো।ছিঃ লোকটা কি করে জানলো।এই কথা।
-” ছোট ভাইজান আপনারা ওখানে কি করছেন।”
রুম্পার কন্ঠ পেয়ে নিস্তব্ধ ঝট করে সরে পড়লো।
তাসফি এই সুযোগে একছুটে বাসন্তীর রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দিলো।
নিস্তব্ধ চেয়েও আটকাতে পারলো না।
নিস্তব্ধ মৃদু কেশে রুম্পার উদ্দেশ্যে বলল,
-” বলছিলাম আমার জন্য এককাপ চা পাঠিয়ে দিস তো। বুঝলি গলাটানা কেমন জানো খুশখুশ করছে।
রুম্পা মুচকি মুচকি হাঁসতে হাঁসতে চলে গেল।
ভাইজানের অযুহাত সে ঠিক বুঝতে পেরেছে।
হিহিহি।
পরদিন সকাল বেলা।
তাসফির কেন জানিনা আজ উঠতে একটু লেট হয়ে গেল।
আকাশের অবস্থাও আজ ততটা ভালো নয় কেমন একটা মেঘলা মেঘলা ভাব বিধ্যমান।ঠাহর করা যাচ্ছে বৃষ্টি হবে বোধহয়।
নিচে গিয়ে আজ তাসফি নিস্তব্ধ’র ওও দেখা পেল না।
হয়তো চলে গিয়েছে হসপিটালে।
কলেজের পরিবেশ আজ কিছুটা গরম গরম।
কলেজে প্রবেশের পর তাসফির এমনটাই মনে হলো।
চারিদিকে কেমন ফিসফাসে রমরমা। মৃদু ভৎসনার গুঞ্জন।
তাসফি বুঝতে পারছে না হঠাৎ সবার কি হলো।
এর মাঝেই কতগুলো মেয়ে এসে তার পাশে ভীর জমিয়ে বলল,
-” এই দেখ দেখ।এই মেয়েটা না।”
-” আরে হ্যাঁ হ্যাঁ এই মেয়েটাই তো।”
-” হ্যাঁ দেখ কেমন নির্লজ্জ স্যারের সঙ্গে ফষ্টিনষ্টি করে কেমন ড্যাংড্যাং করতে করতে কলেজে চলে এসেছে।
-” আরে এসব মেয়েেদের এক ফোঁটাও লজ্জা বোধ আছে নাকি। ”
-” আরে এই জন্যই নিস্তব্ধ স্যার বোধহয় সেদিন মেয়েটার নিখোঁজ হওয়ায় এতটা উতলা হয়ে ছিল।বুঝিস নি।”
তাসফি শুধু হতভম্ব হয়ে সবটা সবটা শুনছিলো।
মুহুর্তের মাঝে ঘটনা ঘটায় তাদের কথার আগামাথা সে কিছুই বুঝছেনা।
ভীরের মাঝ থেকে আশা আর সর্নিধি তাসফিকে টেনে বের করে আনলো।একটা ফাঁকা ক্লাস রুমে এনে তাকে বসালো।
তাসফি অবাক স্বরে বলল,
-” কি হয়েছে আশা। বাইরে সবাই কি বলাবলি করছে?”
আশা তাসফিকে মৃদু ধমকে বলল,
-” তার আগে তুই বল, তোর ফোন কোথায় রেখেছিস? কতবার কল দিয়েছি দেখিস নি।মেসেঞ্জারে ভিডিও’র লিংক পাঠিয়েছি তাও দেখিস নি?”
তাসফি মাথা নাড়লো।
ব্যাগ থেকে ফোন বের করে দেখলো তা সাইলেন্ট করা।
আশা তাসফির হাত থেকে ফোন নিয়ে একটা ভিডিও ওপেন করে তাসফির হাতে ধরিয়ে দিল।
তাসফি বিস্ফোরিত দৃষ্টিতে সে দিকে তাকিয়ে রইলো।
এলোমেলো চোখে সে একবার আশা আর সর্নিধির দিকে চাইলো।কাঁপা কন্ঠে বলল,
ধূসর রংধনু পর্ব ৪৩
-” কিন্তু আমরা তো…..?
আশা ওকে থামিয়ে বলল,
-” আমরা জানলে কি হবে তাসফি সবাই তো জানে না। ”
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে নিস্তব্ধ তাসফিকে দেওয়ালের সঙ্গে চেপে ধরে আছে।
নিস্তব্ধ কেবলি নিচু হচ্ছে তাসফির মুখের দিকে।এরপরই ভিডিও কাট।যে ভিডিওটা করেছে বাকিটুকু করার বোধহয় সে আর সুযোগ পায় নি।
ক্যাপশনে স্পষ্ট করে লেখা,,,
-” এই হচ্ছে প্যাশন মেডিকেল কলেজের একজন আদর্শ শিক্ষকের অবস্থা। ছাত্রীর সঙ্গে ফষ্টি নষ্টি। ছিঃ,ছিঃ ছিঃ।”