ধূসর রংধনু পর্ব ৫৬

ধূসর রংধনু পর্ব ৫৬
মাহিরা ইসলাম

গগনে আজ মিলেছে তাঁরার মেলা।
বাসন্তী সেঁজে আছে নববধূ।
বধূ সাজে সে বসে আছে মাহীনের রুমে।
তার জীবনে এত ঝড়-তুফানের পরেও যে এত সুখকর একটি রাত্রী তার জন্য অপেক্ষা করেছিল কে জানতো।
সবই নিয়তি।শুধু প্রয়োজন একটুখানি চেষ্টা এবং ধৈর্য্য।
পারুল তাকে রুমে বসিয়ে দিয়ে ফিসফিস করে তার কানে কানে বলে গেল,

” ভাবী বেস্ট অফ লাক। ”
পিচ্চি মেয়েটাও তাকে লজ্জা দিতে পিছুপা হচ্ছে না।
মাহীন রুমে ঢুকে দরজা লাগালো।
এগিয়ে গেল বিছানায় বসে থাকা তার নব বধূর নিকট।
গোমটা তুলে সে বাসন্তীর লজ্জামিশ্রিত মুখের পানে অনেকটা সময় চেয়ে রইলো।
এই রমণীকে সে যতবার দেখে ততবার নেশা ধরে তার চোখে।
মাহীন দীর্ঘ চুম্বন করলো প্রেয়সীর ললাটে।
বাসন্তী আবেশে চোখ বুঁজে নিলো।
বাসন্তীর নিকট আজ দ্বিতীয় বারের মত বাসর হলেও অনুভূতি সম্পূর্ণ নতুন।
মাহীন সাজাবে তার বধূকে নতুন করে।নিজের আলোয় সিক্ত করে।পুরাতনের কোনো ছাপ সে থাকতে দেবে না বাসন্তীর জীবনে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সব হবে রঙিন, নতুনত্বে ভরপুর।
মাহীন বাসন্তীকে বুকে চেঁপে শক্ত করে জরিয়ে ধরে ফিসফিস করে বলে,
” আমার প্রথম ভালোবাসা আপনি বাসন্তী। আজীবন ভালোবেসে যেতে চাই।শত বিরহের পরেও আপনাকে যে নতুন করে পেয়েছি।তার জন্য সৃষ্টিকর্তার নিকট হাজারো শুকরিয়া। পছন্দের, ভালোলাগার জিনিস যতই পুরনো হোক না কেন, পছন্দ-ভালোলাগা তো কখনো পুরনো হয় না। জিনিস যত পুরনোই হোক পছন্দ তো পছন্দই সই।
এভাবেই হয়তো কপোত-কপোতীর মিলন রাত্রীতে শুরু হবে তাদের পরবর্তী নতুন দিবাকরের সূচনা।
বাসন্তী মাহীনের বিদায়ের পরে সকলেই যার যার বাড়িতে পারি জমিয়েছে।
কয়েকদিন পরেই তাদের আবার উপস্থিত থাকতে হবে ওসমান ভিলায়।কারণ কয়েকদিন পরেই নিস্তব্ধ আর তাসফির রিসিপশন।

তাসফি ডেসিংটেবিলের সামনে বসে আজকের সাজসজ্জা পরিষ্কারের চেষ্টায়, কতটা সফল হবে কে জানে।
নিস্তব্ধ খাটে বসে বসে দুষ্টু হেঁসে বলল,
” আহাঃ এগুলো তোমার খোলাখুলির কি দরকার বলোতো।ওগুলো তো আমিই খুদে দিতাম। তোমার এত কষ্ট করতে হবে না।”
তাসফির নিস্তব্ধ’র দিকে চোখ গরম করে চাইলো।
” হ্যাঁ তাইতো আপনি খুলতে গেলে আমার সারা অঙ্গ আর চুলগুলো একটাও আস্ত থাকবে না।”
নিস্তব্ধ তীর্যক কন্ঠে বলল,
“না মানে পরিষ্কার করেও লাভ আছে।অন্তত ওসব ছাইপাঁশ আমার পেটে গিয়ে পেট খারাপ তো অন্তত করবে না। ”
তাসফি দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
” আপনি আর একটা কথা ও বলবেন না।”
নিস্তব্ধ উঠে এসে তাসফিকে কোলে তুলে নিলো।
” কি করছেন কি।”
নিস্তব্ধ ফিসফিস করে সুধালো,

” চাইছিলাম আজ একটু স্বইচ্ছায় নিজের পেট খারাপ করাতে।”
“আমি এখন গোসলে যাবো।সারাদিনের ঘামে গাঁ টা কেমন ম্যাচম্যাচ করছে। ছাড়ুন নিচে নামান।”
” উহু তা তো সম্ভব নয়।আপনার হাসবেন্ড এন্ড এই মুহুর্তে মুডে আছে তার কাজে বাঁধা দেওয়া আপনার জন্য দণ্ডনীয় অপরাধ।
আর গোসল দুবারের কি প্রয়োজন বলোতো।একবারেই কাজ সেরে ফেলবে সমস্যা কোথায়।”
তাসফি হতভম্ব হয়ে চাইলো।
লোকটা দিনদিন বড্ড লাগামহীন হচ্ছে। উফস।
ভালোবাসা ময় প্রেমিকযুগল লিপ্ত হলো তাদের প্রম আদান প্রদানের কার্যে।খুঁজে নিতে ব্যস্ত তারা অমৃতসুখ।
অন্ধকার রাত্রী কেটে গগনে ফুঁটে উঠেছেন নতুন ভোর।
পরদিন বিকাল বেলা।

নিস্তব্ধ সোফায় বসে ল্যাপটপে হিসাব কষতে ব্যস্ত।
তাসফি ছাঁদ থেকে কাপড় তুলে এনে গোছাতে ব্যস্ত।
হঠাৎ তার চোখ গেল গতকাল কুরিয়ার থেকে দিয়ে যাওয়া বক্সদুটোর পানে।
গতকাল সময় সুযোগ না হয়ে উঠলেও এই মুহুর্তে তার
বক্সের ভেতরে কি আছে দেখার জন্য তার মনের মাঝে হাঁসফাঁস করছে।
কৌতূহলে তার চিত্ত হলো ভার।
তাসফি এগিয়ে গিয়ে টেবিল থেকে বক্স দুটো তুলে নিলো।
নিস্তব্ধ’র দিকে তার লেখা বক্সটা এগিয়ে দিয়ে বলল,

” শুনছেন দেখুন না । কাল আপনার নামে একটা কুরিয়ার এসেছিল।কি আছে বক্সটায় দেখুন তো। ”
কি আছে তা দেখার জন্য তার আর তর সইছে না।
বক্সটা খুলে তাসফি অবাক হয়ে চেয়ে রইলো।
তার বক্সটার মাঝে কতগুলো চকলেটের সঙ্গে একটি চিরকুটের মতো কিছু।
সে অবাক হয়ে নিস্তব্ধ’র পানে চাইলো।
তার বক্সেও একই রকমভাবে কিছু চকলেটের সঙ্গে লালাখামে মোড়ানো একটি চিরকুট।
তাসফি কৌতুহল বশত সেটা খুলে পড়তে শুরু করলো।
তাসফি,

প্রিয় সম্মেলনে প্রশ্ন আসছেনা কারণ তুমি কখনো আমার প্রিয় ছিলেনা। তবে বর্তমানে তোমায় আমি পছন্দ করতে শুরু করেছি। সবাইকেই পছন্দ করতে চাই। জীবনে আর চাই না ভুল পথে এগিয়ে কারো চোখের কাটা হতে।জীবন আমায় অনেক কিছু দিয়েছে।আবার অনেক কিছু কেড়েও নিয়েছে।চেষ্টা করেছি কখনো অসৎ পথ অবলম্বন করে নিজের কাছে নিজের পছন্দনীয় জিনিসটি হাসিল করে নিতে।কিন্তু পারিনি।
খারাপ কাজের ফলও কখনো ভালো হয় না।সেটা আমি কয়েকদিন যাবত ক্ষণে ক্ষণে উপলব্ধি করছি।
তাসফি তুমি সত্যিই খুবই লক্ষীমতি, সঙ্গে প্রতিবাদী একটি মেয়ে।মাঝেমাঝে তোমায় দেখে মনে হয় আমার থেকে ডজন খানে বছরের ছোট হয়েও যেন তুমি আমার থেকে বেশি পরিপক্ব বুদ্ধিমতি।
নিস্তব্ধকে ভীষণ পছন্দ করতাম। বুঝোই তো একজন মানুষকে কতটা ভালোবাসলে নিজের খারাপ অভ্যাস কে পরিবর্তন করার তাড়নায় লিপ্ত হতে পারে মন।কিন্তু সব ভালোবাসা যে পূর্নতা পাওয়ার যোগ্য নয়। আমি মানতে চাইনি তাই। ভেবেছিলাম আমি পূর্ণতা পাইয়েই ছাড়বো। কিন্তু তা যে হবার নয়।ভাগ্যের লিখন কে বা করতে পারে খন্ডন ওই একমাত্র ওপরওয়ালা ব্যতীত।

নিস্তব্ধ সেদিন যখন আমায় পার্কে থাপ্পড় মেরেছিলো।আর সুজনকে শত অবহেলার পরেও নির্লজ্জের মতন এসে আমার মাথায় ছাতা ধরেছিলো।সেদিনই বুঝেছিলাম, জীবনে নিজের চাওয়ার গন্ডির মাঝেই সবকিছু পাওয়াই আসল প্রাপ্তি নয়।
এর বাইরেও বিপরীত পন্থা অবলম্বন করেও নিজের জীবনের সুখ কে খুঁজে নেওয়া যায়।
যেমনটা সুজন করেছে। আমায় ভালোবেসেছে। কিন্তু আশার সঙ্গে ওও সুখে আছে।
জীবনে সবারই হেরে গিয়ে পুনরায় সেই একটার পিছে না ছুটে, তার দ্বারা যা সম্ভব পুনরায় নতুন কিছুর পিছে ছোটা উচিত, চেষ্টা করলে সফলতা জীবনে আসবেই।

ভাবলাম এবারে নিজের উপরও একটু কথাগুলো এক্সপেরিমেন্ট করে দেখি।
চাইলাম নিজের ভালোবাসার মানুষটা কতটুকু ভরসা যোগ্য তা দেখতে।তাই সেদিন তোমায় ক্যাফেতে ডেকে নিস্তব্ধ কে ডিভোর্স দেওয়ার কথাটা বলেছিলাম। তোমার জবাব শুনে বুঝে ছিলাম আসলেই নিস্তব্ধ তার জীবনের হীরে কেই খুঁজে পেয়েছে। আমার আর কি কাজ।
সুইজারল্যান্ডে যাচ্ছি।আগামীকাল সন্ধ্যা সাতটায় ফ্লাইট।
ভাবছি ওখানে গিয়েই এবারে নিজের অস্তিত্বটুকু গড়ে নেব।ভালো থেকো তাসফি।
তোমার আর নিস্তব্ধ’র নাহ আজ আর নাম ধরে নয়।চাইছি না কোনো পিছুটান ফেলে রাখতে।
তোমার আর আমায় ঘৃণা করা আমার ডাক্তার বন্ধুটার জীবন সুখে পরিপূর্ণ হোক এই কামনা।
তোমাদের একটা ফুটফুটে বেবি হোক।তোমার বর মহাশয়ের খেয়াল রেখ।তার যত্ন নিও কেমন।

আল্লাহ হাফেজ।
ইতি
তোমাদের সকলের ঘাড়ে বসে রক্ত চুসে খাওয়া অতৃপ্ত আত্মা
নিস্তব্ধ নিজের চিরকুটটি খুলে পড়তে শুরু করলো,
আমার প্রিয় ডাক্তার বন্ধু,
প্রথম চিঠিটা লেখা তাসফিকে দিয়েই শুধু করেছি।তারপর ভাবলাম নাহ হয়তো তোদের সঙ্গে আর দেখা
হবে না তাই সকলের কাছে শেষ স্মৃতি হিসাবে একটুকরো চিঠিই নাহয় গচ্ছিত থাকুক।
তোর সঙ্গে যদি কখনো কোনো অন্যায় করে থাকি তবে আমায় মাফ করে দিস।জানি অনেক অন্যায় করেছি। তাই বন্ধু হিসাবে মাফ করে দিস। ধরে নে না। আমি তোদের সেই কলেজের প্রথম বছরের চুপচাপ থাকা বন্ধুটা। শেষ কয়েকবছরের তৃপ্তি হারিয়ে গিয়েছে।তার স্মৃতি টুকু মুছে গিয়েছে তোদের মস্তিষ্ক থেকে।

তাসফির আর তোর দুজনের বিবাহিত জীবন সুখের হোক এই কামনা।
ভালো থাকিস। পারলে আমায় মাফ করে দিস।পারতেই হবপ। অবশ্যই আমায় মাফ করতে হবে বন্ধু হিসাবে।আমি চাইনা কোনো পিছুটান রয়ে যাক এদেশের মাটিতে।
আগামীকাল সুইজারল্যান্ড যাচ্ছি। সাতটায় ফ্লাইট। তোকে শেষবার দেখার বড্ড ইচ্ছে ছিল। কিন্তু ভাবলাম নাহ, ক্ষত তে মলম লাগানোর চেষ্টা করে পুনরায় ক্ষত সৃষ্টি করলামই যখন তখন মলমের গুন তো অবশিষ্ট থাকলো না।
ইতি
তোদের সকলের ঘাড়ে বসে রক্ত চুসে খাওয়া অতৃপ্ত আত্মা
চিঠি শেষে নিস্তব্ধ-তাসফি একে অপরের দিকে কয়েকসেকেন্ড চোখ পিটপিট করে চাইলো।
অতঃপর শুরু করলো দৌড় প্রতিযোগিতার রেস।
ব্যস্ত হলো নিজেেদের কর্মে।

কাল বিয়ে বাড়ি থেকে আশার পর পুরো ঘর এলোমেলো ছিল।বসে বসে আশা তাই গুছাচ্ছিলো।
আর সুজন বিছানায় বসে বসে কলা খাচ্ছিলো।
গোছানোর এক ফাঁকে সে কাল রাহেলা বেগমের রেখে যাওয়া ফ্লোরে দুটো বক্স দেখতে পেল।
ভ্রু কুঁচকে সে সুজনের দিকে চাইলো,
” এগুলো এখানে কে রেখেছে?”
সুজন বক্স দুটোর দিকে একপলক চেয়ে সুধালো,
” এগুলোর কথা তো মনেই নেই। নিয়ে এসো তো এগুলো কে পাঠালো হঠাৎ। ”
” আপনি আনেন নি?”
” নাহ।”

আশা হাতের কাজ ফেলে কৌতূহলে আগে বক্স গবেষণায় নামলো।
একটা সুজনের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,
” এই যে এট আপনার নিন।”
অতঃপর নিজেরটা খুলতে চেষ্টা করলো সফলও হলো।
আশা,
তোমার নামের আগে প্রিয় সম্মোধন নেই।কারণটা খুবই সাধারণ। কারণ তোমার সঙ্গে আমার ততটা পরিচয় নেই।তবুও একটি বিশেষ কারণে চিঠিটা তোমার উদ্দেশ্যে লেখা।
সুজনের সঙ্গে তোমার বিয়ে হওয়াতে আমি খুশিই হয়েছি। তুমি আমার ব্যাপারে জানো কিনা তা নিয়েই হীনমন্যতায় ভূগছিলাম।

জেনে থাকো আর না জেনে থাকো তবুও তোমার সত্যিইটা জানিয়ে যাই।যদি জেনে থাকো তবে তোমার মনে কোনো রকম প্রতিহিংসা কিংবা অভিমানের সৃষ্টি না হোক।
সুজন আমাকে ভালোবাসতো। এখনও হয় তো বাসে।কিন্তু আমাকে ওও কোনোদিন নিজের করে চাইবেনা।
আর না আমি চাই।
তাই আমাকে আর সুজনকে নিয়ে যদি তোমার মনে কোনো সন্দেহ থাকে তবে প্লিজ সেটা দূর করে নিজেদের নতুন জীবনে সুখী হও।
আগামীকাল সন্ধ্যা সাতটায় ফ্লাইট। সুইজারল্যান্ড যাচ্ছি। আমার জন্য দোয়া করো যদি পারো।
তোমাদের নতুন জীবনের জন্য শুভকামনা রইলো।ভালো থেকো।

ইতি
তৃপ্তি আহসান
সুজন খুব ধীর গতিতে নিজের চিরকুটটি মেলে ধরলো চোখের সামনে।
চিরকুটের ভাঁজ খুলতেই তার চোখের সামনে ভেঁসে উঠলো অতি পরিচিত গোছানো গুটিগুটি অক্ষরে লেখা বাক্যাংশ।
প্রিয় বন্ধু সুজন,
ভেবে রেখে ছিলাম তোর চিঠিখানায় অনেক কিছু লিখবো।কিন্তু কেন যেন তা হচ্ছে না।লিখার মাঝে মাঝেই আমি বারবার আঁটকে যাচ্ছি। লেখাগুলো কেমন যেন খাপছাড়া লাগছে
তুই যে আমাকে ভালোবাসতিস আমি সেটা জানতাম না।আবার একটা সময় এসে জেনে বুঝেও অদেখার ভান ধরে থাকতাম।

তুই ও সেম কাজটাই করতিস।এমনকি আজ পর্যন্ত আমায় তুই মুখ ফুটে বলিস ওও নি ভালোবাসি।
হয়তো আমি তোর মুখ থেকে ভালোবাসার কথা শোনার অপেক্ষায় ছিলাম।আবার একটা সময় ছিলাম না। নিজের অতীতের জীবনটাই যেখানে অগোছালো সেখানে ভবিষ্যত কি করে গোছানো হবে বলতো।
তবুও চেষ্টা করছি সমান্য। যদি আমার এই অগোছালো জীবনটাকে প্রকৃতির মাঝে বিলীন করে একটু গোছালো করা যায় ক্ষতি কি তাতে।
আগামীকাল সুইজারল্যান্ড যাচ্ছি সন্ধ্যা সাতটায় ফ্লাইট। কোনো অপরাধ করে থাকলে অবশ্যই আমায় মাফ করে দিস।
তোদের নতুন জীবন সুখকর হোক।
বক্সের মাঝে একটা লকেট আছে আমার তরফ থেকে।যদি আমায় মন থেকে মাফ করিস তবে আশাকে লকেট টা পরিয়ে দিস।আমি চাই আমায় আর কেউ মনে না রাখলেও আজীবন তুই আমায় বন্ধু হিসাবে মনে রাখিস। আমি জানি তুই রাখবি।
ভালো থাকিস।
ইতি
তোর অতৃপ্ত আত্মা

সুজন এক দৃষ্টিতে খানিকক্ষণ চিঠির দিকে পলক না ফেলে তাকিয়ে রইলো। আসলেই প্রথম ভালোবাসা চাইলেও ভোলা যায় না।স্মৃতিগুলো জমা রয়ে যায় হৃদয়ের একটি কোণে।কেউ প্রকাশ করে তো কেউ করে না।
সুজন বক্স খুঁজে সত্যিই একটি লকেট পেল। খানিকক্ষণ সেটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখলো।
লকেটের মাঝে এস প্লাস এ লেখা।

ধূসর রংধনু পর্ব ৫৫

ধীর কদমে এগিয়ে গিয়ে সে আশার গলায় তা পরিয়ে দিলো। আশা চিরকুট পড়া শেষে থমকে দাঁড়িয়ে ছিল সুজনের দিকে ছলছল নয়নে চেয়ে।
অতঃপর আশাকে প্রথমবার নিজে থেকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো সুজন।
আশা ফ্রিজড হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। অথচ তার নয়ন ভেজা চক্ষুজলে।

ধূসর রংধনু পর্ব ৫৭