নে আদরে জড়িয়ে মন পর্ব ৩৮

নে আদরে জড়িয়ে মন পর্ব ৩৮
সিনথিয়া

ভীষণ ত্রাসে যখন অন্তর-আত্মা নিভু নিভু তখন ওর শুকিয়ে আসা মুখটার দিকে ব্যগ্র দৃষ্টি ফেলে চেয়ে আছে শেহজাদ!
“প্রমিজ?”
নির্বাক কিশোরী ছটফটিয়ে উঠলো! বলিষ্ঠ পুরুষটির খাঁদে নামানো কন্ঠে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে ওর। ফাঁকফোকর গলিয়েও বেরোনোর সব রাস্তা বন্ধ!
তখনই শুভ্র দুপাটি দাঁতের মাঝবরাবর নিম্নাষ্ঠ ফেললো শেহজাদ। নিকোটিনের দাগহীন স্বচ্ছ ঠোঁটখানা পিষলো তাতে। নিঃশব্দে হেসেও নিলো আরশির দুঃখী দুঃখী মুখটা দেখে!
নিচু স্বরে আওড়ালো,

“সাইলেন্স গিভস্ কনস্যান্ট ম্যাডাম! তুমি যদি কিছু না বলো তাহলে আমি ধরে নেবো তোমার উত্তর পজিটিভ!”
আরশি এবারেও যেনো নীরব দর্শক। কুণ্ঠায় আড়ষ্ট গলাটা শতচেষ্টার পরেও শব্দ বের করতে নারাজ! শেহজাদের পজিটিভ উত্তর নেগেটিভ করতে জবরদস্ত একটা বুদ্ধি খুঁজতে চাইলো মস্তিষ্ক! কিন্তু বিধিবাম! জবরদস্ত বুদ্ধিটা খুঁজে পাওয়ার আগেই শেহজাদ বলে উঠলো,
“বেশি ভয় পেলে চোখ বন্ধ করে ফেলো!”
বিদ্যুতস্পৃষ্টের ন্যায় আঁতকে উঠলো আরশি! আতঙ্কিত চোখদুটো কোটর ছেড়ে রওনা হলো অভিমুখে! বুজে আসা গলাতেও এক নাগাড়ে বলে গেলো,
“চ-চোখ বন্ধ করবো মানে? কী কোরবেন আপনি? দেখুন! এসব ইয়ার্কি একদম ভালো লাগছে না এখন!”
“কে বললো আমি ইয়ার্কি করছি? আ’ম ড্যাম সিরিয়াস মিসেস শেহজাদ!”
আননজুড়ে ভয় আর বিরক্তি একই সঙ্গে হইহই করে উঠলো মেয়েটার! সেঞ্চুরি হাকালো রাগের মাত্রা! থমথমে স্বরে বললো,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“হুটহাট এমন সিরিয়াস কথা বলার জন্য আপনার বিরুদ্ধে আইন জারি করা উচিত!”
“কোরে ফেলো!”
শেহজাদ যতটা সহজভাবে বললো তারচাইতেও সহস্রাধিক বিস্ময়ে চোখ কপালে উঠালো আরশি! বিমুঢ় ঠোঁটজোড়া ফাঁক করে আওড়ালো,
“কি সাংঘাতিক আপনি!”
“যেমনই হোই! তোমারই তো!”
আরশির জায়গায় অন্যকেউ থাকলে নির্ঘাত এতক্ষণে ভিরমি খেতো! বা হয়তো
সদ্য ফোঁটা পলাশ হতো লাজে রাঙা গালদুটো? খেই হারানো কুন্ঠারা ছোটাছুটি করতো ঘন পল্লবজুড়ে!
সেখানে আরশি হাওয়া গিলছে বড় বড় ঢোকের সাথে! ঠেলে ঠুলে সরাতে চাইছে চওড়া সিনাটা। কিন্তু নাকাল হাতজোড়া অতশত কসরত করেও যখন বিফল তখন বড্ড অগোছালো ভাবে বলে উঠলো,
“ছি ছি ছি! আপনার বউ হয়ে দেখছি প্রেস্টিজ আমার আর রইলো না!”
আজ আর দফায় দফায় অবাক হলো না শেহজাদ! বরং চাপা হেসে কৌতূহল নিয়ে শুধোলো,
“তা শুনি কেনো প্রেস্টিজ রইলো না?”

রোদ্দুর ছাড়াই চৌচির হলো গলা! তবুও বেশখানিকটা সাহস জুগিয়ে সেই খড়খড়ে গলাতেই আরশি আওড়ে গেলো,
“এমন রোম্যান্টিক ডায়লগ উপন্যাসের নায়কদের মুখে শুনতে ভালো লাগে! কিংবা কোনো রোডসাইড রোমিওর! গোমড়ামুখো প্রফেসরের মুখে এসব একদম মানায়? তাহলে তার বউ হিসেবে আমার প্রেস্টিজটা রইলো কি করে? ”
ছোট করে শ্বাস ঝাড়লো শেহজাদ!
সহসাই হাত উঠিয়ে হুডির টুপিটা মাথার উপর থেকে ফেলে দিলো আরশির।
কনকনে ঠান্ডা বাতাস কানে ঘাড়ে এসে হুমড়ি খেয়ে পড়তেই লোম দাঁড়িয়ে গেলো শীতকাতুরে গতরের!
কপালের উপর অযত্নে পড়ে থাকা চুল গুলোয় অতিযত্নে আঙুল চালালো মানুষটা! তুলে এনে গুঁজে দিলো কানের ঠিক পাশে!
মেঘমন্দ্র স্বরে থেমে থেমে বললো,

“প্রেমে পড়লে রাগী, গম্ভীর, গোমড়ামুখো প্রফেসরটাও রোডসাইড রোমিও হতে পারে!
উপন্যাসের হিমু কিংবা শুভ্র হতে পারে!
হার্টবিট তারও মিস হয়! সময় অসময় ভুলে প্রেম পায়! কাঠখোট্টা সত্তাটারও বেখেয়ালে হাসতে ইচ্ছে করে!”
শেহজাদ কম কথা বলে! কিন্তু যখন বলে ভীষণ গুছিয়ে গুটিকয়েক! এমন গুছিয়ে গুটিকয়েক কথাবলা মানুষগুলো যখন প্রেম নিবেদন করে, তখন আরশিরা হা হয়ে শুনতে বাধ্য হয়!
আরশিও শুনলো! নির্ঘাত ভিরমি খাওয়া মেয়েগুলোর মতো ঈষৎ গোলাপী গালজোড়া লুকোতে ব্যস্ত হলো মস্তিষ্ক! হিমু শুভ্রতে না গিয়ে সোজা বলে বসলো,

“একে তো জেনারেটর চলছে না! হিটার বন্ধ। তারউপর আপনি দিলেন আমার টুপিটা ফেলে! বলি, যদি টাইটানিক সিনেমার জ্যাকের মতো ঠান্ডায় মরে শক্ত হয়ে যাই তখন ভালো লাগবে আপনার মিস্টার শেহজাদ?”
“কথা ঘুরিয়েও খুব একটা লাভের লাভ হবে না মিসেস শেহজাদ!”
মেয়েটা থতমত খেলো, আমতাআমতা করলো! তারপর একচোট রাগ দেখিয়ে বললো,
“আমি মোটেই কথা ঘুরোইনি!”
“ঘুরিয়েছো!”
“ঘুরোইনি!”
শেহজাদের নির্বিকার আনন যেনো ভিতরে ভিতরে বদ্ধ পরিকর আরশিকে রাগিয়ে দেয়ার জন্য! তাই ও যতবার ঘুরোইনি বললো ততবার জবাবে শেহজাদ বলে উঠলো,
“ঘুরিয়েছো!”
সটান মুখ তুলে চাইলো আরশি! চোখে চোখ রাখলো! বাকি মানসম্মানটুকুর হাতে হাড়ি ভাঙতে উদ্যত হলো মানসপট!
চিবিয়ে চিবিয়ে বললো,

“ঝগড়ুটে জাম্বুবান! আজ এই মূহুর্তে আমি আপনাকে স্নোবলের বাবা হিসেবে ডিক্লাইন করলাম!”
ঠোঁটে ঠোঁট দাবিয়ে হাসলো শেহজাদ! নীলাম্বরে নিখাঁদ প্রহসনের জাল বিছিয়ে ঝুঁকে এলো আরশির গালের পাশে!
“শুধু স্নোবলের বাবা কেনো , তোমার বাচ্চার বাবা হিসেবেও ডিরেক্ট উপর থেকে এপ্রুভড হয়ে এসেছি! আমিও দেখি তুমি কিভাবে ডিক্লাইন করো আমাকে!”
বাচ্চাকাচ্চার কথা শুনেই খালি গলায় বিষম
খেলো মেয়েটা। তারউপর তাড়াহুড়ো করে পিছনে সরতেই বাঁধলো বিপত্তি! অসতর্কায় অধরজোড়া ছুঁয়ে গেলো শেহজাদের গাল!
সেকেন্ডের আলতো স্পর্শ! দৈবাৎ একে অপরের দিকে বড় বড় চোখে চাইলো দুজনে!
খানিকটা সময় চোখাচোখি হতেই
ইতস্তত মুখটা ঝড়ের গতিতে নামিয়ে ফেললো আরশি!
সংযমের প্রাচীরে ফাটল আগেও ধরেছে। কিন্তু এতোটাও ধৈর্য্যহারা শেহজাদ হয়নি কখনো!
প্রহর গুনেছে! অপেক্ষা করেছে কোনো এক আদুরে সন্ধ্যের। কল্পনার অপরাহ্নে নরম আলো মেখে সামনে এসে দাঁড়ানো তার প্রিয়দর্শিনীর!

তবে আজ যেনো সেই প্রাচীরে ধ্বস নামলো! ভারী নিশ্বাস লুটপাট চালালো সম্মুখে। অজস্র লজ্জায় মাটির সাথে মিশে যাওয়া আরশির চিবুক তুললো ব্যান্ডেজে মোড়া হাতটা!
তখনই তাবৎ সাফাইয়ের স্বরে কিশোরীর কম্পিত গলাটা আওড়ালো,
“আ-আমি কিন্তু ইচ্ছে করে–!”
কিন্তু শেষটুকু আর বলা হলো না!
তার আগেই শেহজাদ বিলম্বহীন অধর ছোঁয়ালো ঐ শীর্ণ ঠোঁটে। গাঢ় এক চুমুতে থামিয়ে দিলো আরশির শত অজুহাতের আস্ত এক দুনিয়া!
অন্যহাতে ধরে রাখা মোমবাতিটা গলতে শুরু করেছে ততক্ষনে। তপ্ত প্যারাফিন বৃদ্ধাঙ্গুলি ও তর্জনীর মাঝে এসে লাগলেও হুশে নেই শেহজাদ।
চিবুক থেকে হাতটা ক্রমশ উঠে এলো আরশির গালে! শ্বাস ফেলতে সময় নিয়ে কপালে কপাল ঠেকালো মানুষটা!
হাস্কি স্বরে শুধোলো,

“আরশি! আই লাভ ইউ! আই লাভ ইউ সো ড্যাম মাচ!”
স্তব্ধ হয়ে রইলো মেয়েটা! ভীষণ বুদ্ধি করে যদি এই সুযোগে বলে ফেলতো “আমিও আপানকে ভালোবাসি! আপনার থেকেও বেশি ভালোবাসি?”
কিন্তু আরশি সেই ভীষণ বুদ্ধিটা করতে পারলো না! সুযোগটুকু হাতছাড়া করে দু’পাশে ঘনঘন মাথা নাড়লো! উত্তর দিতে নারাজ গলবিলে অভিমান মিশিয়ে আওড়ালো,
“আপনি ভুলে যাবেন। এই তো একটু পরেই ভুলে যাবেন! আজকের মতো আমাকে ছেড়ে চলে যেতে দুবারও ভাববেন না!”
“ইভেন ইন মাই লাস্ট ব্রিথ; আই উইল সে আই লাভ মাই ওয়াইফ! তাকে ভুলে কি করে বাঁচবো আমি?”
থমকালো আরশি! চোখ ভিজে একাকার! খেয়াল হতেই শাসালো নিজের মনকে! “কি আশ্চর্য! ভালোবাসিই তো বলেছে! কাঁদছিস কেনো তুই?”

মান্ধাতা আমলের ব্রেইনের নিউরনগুলো মাইক নিয়ে যেনো জানান দিলো, “এবার তো তোর পালা! এখনো সুযোগ আছে! প্রফেসরকে বলে ফেল নিজের মনের কথা! আর কতকাল গুমড়ে গুমড়ে মরবি এভাবে?”
সংবিৎ ফিরলো আরশির! তবে সাহস জুগিয়ে ফের কিছু একটা বলে ওঠার আগেই একজোড়া তপ্ত ঠোঁটের উষ্ণতা এসে ভিড়লো গলায়! শুনলো শেহজাদের চিরাচরিত ভারিক্কি স্বরের আস্ত এক পরিবর্তন,
“আই কান্ট ওয়েট এনিমোর আরশি!”
তবে প্রফেসর বোধহয় জানতো না; অপেক্ষার প্রহর সবে শুরু!
কারন ঠিক সেই সময় ওর ট্রাউজারের পায়ের কাছে এসে দাঁড়ালো কিছু একটা! সূচালো সাদা দাঁত বের করেই দিলো কামড় বসিয়ে!
থমকালো শেহজাদ! ঘাড় হতে মুখ তুলতেই বাতি জ্বলে উঠলো ঘরের!
“দ-দেখলেন! কারেন্ট চলে এসেছে!”
অন্যদিকে ফিরে অপ্রস্তুতে আওড়ালো আরশি! এক ফাঁকে চোখটা মুছে নিলো হাতের পিঠ দিয়ে! কিন্তু শেহজাদের দিকে ফিরে তাকাতেই চমকে উঠলো ও!

কেমন সাদা ফ্যাকাসে হওয়া চেহারা নিয়ে মেঝের দিকে চেয়ে আছে মানুষটা!
দৃষ্টি অনুসরণ করে নিজেও সেদিকে তাকালো আরশি! তখনই চোখে পড়লো স্নোবলকে!
কামড়ে ধরে রেখেছে শেহজাদের পরনের ট্রাউজারের পায়ের অংশ!
ভড়কে গেলো মেয়েটা! তড়িঘড়ি নুয়ে কোলে তুলে নিতেই নাখোশ হলো স্নোবল! ও আরো কামড়াবে! ওকে তোলা হলো কেনো?
বাচ্চাদেরকে বোঝানোর মতো করে আরশি বলে উঠলো,
“মন খারাপ করে না সোনা! তোমাকেও ট্রাউজার কিনে দিবো ঠিকাছে? বাবারটা পঁচা! ওটা কামড়ালে বাবা স্কেল নিয়ে এসে পাছুতে পিট্টি দিয়ে দিবে!”
মানুষ কি করে পাছুতে পিট্টি দেয় সেসব হয়তো স্নোবল বুঝলো না! তবে তার আদরে যে শেহজাদের ভাগ বসাতে পারেনি এতেই আপতত তার শান্তি!
কিন্তু ছেলেকে এসব বুঝিয়ে সুঝিয়ে সামনে তাকাতেই আরেকদফা হোঁচট খেলো আরশি! রুদ্ধ শ্বাসে দেখলো চোখের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটার আর দাঁড়িয়ে নেই! এদিক ওদিক চেয়ে নিচে তাকাতেই বিস্ফোরিত নেত্রদ্বয় আবিষ্কার করলো শেহজাদ
জ্ঞান হারিয়ে পড়ে আছে ফ্লোরে!

“প্রফেসর স্নোবলের কামড় খেয়ে সেন্সলেস হয়ে গেছে?”
জারার প্রশ্নে ওপর-নিচে মাথা নাড়লো আরশি! কোলের উপর থাকা
অচেতন মুখটা দেখেই আরেকদফা হুহু করে উঠলো বুকের ভিতর!
আয়ান সমানে পানি ছিটিয়ে যাচ্ছে শেহজাদের চোখেমুখে! তবুও কোনোভাবেই
জ্ঞান ফিরছে না দেখে শেষমেশ বিরক্ত হয়ে বললো,
“বাটারফ্লাই! গ্লাসের পানিতে হবে না! তুমি দেখো তো কোথাও বালতি পাও কি না!”
আঁতকে উঠলো আরশি! জারার সাথে মুখ চাওয়াচাওয়ি করতেই জারা বলে উঠলো,
“সেকি! এই ঠান্ডার মধ্যে আপনি বালতি দিয়ে কি করবেন?
আয়ান কি আর সাধে বালতি চেয়েছে? এই এক বন্ধুর যন্ত্রনায় চুমুটা খেতে গিয়েও মুখটা ঘুরিয়ে ফেলতে হয়েছে ওকে! ঘড়িতে এতো সময় থাকতে ওর চুমু খাওয়ার সময়ই এই বেটাকে অজ্ঞান হতে হলো?
সেই দুঃখে কষ্টে বিড়বিড় করে বললো,
“নিজের রোম্যান্সের নৌকা তো ভাসাতে পারলোই না! উল্টে আমারটা সহ ডুবলো! ওর কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত! এইজন্যই বালতি চেয়েছি! তুমি বালতি নিয়ে এসো!”

“শাট আপ!”
গুরুগম্ভীর স্বর! স্বভাবসুলভ ধমক? তিনজোড়া চোখ ত্রস্ত চাইলো শেহজাদের মুখের দিকে!
“তোর জ্ঞান ফিরেছে? কি করে ফিরলো? হায় হায়!”
আয়ান প্রশ্ন করতেই ধীরে ধীরে উঠে বসলো প্রফেসর! কপাল কুঁচকে তাকালো ওর দিকে!
“তোর বকবক শুনে! সিরিয়াসলি আয়ান? তুই বালতির পানি ঢালতে চাইছিলি আমার গায়ে?”
আরশি চুপচাপ! বিনাবাক্যে উঠে গিয়ে দাঁড়ালো জারার পাশে! মনে মনে একরাশ দু্শ্চিন্তা। স্নোবলকে নিয়ে! এরপর যদি মানুষটা স্নোবলকে বের করে দিতে চায় তাকে কামড়েছে বলে! তখন?
ওদিকে দাঁত বের করলো অফিসার। মাড়ি শুদ্ধ হাসিতে উড়িয়ে দিলো একটু আগের দুঃখী দুঃখী ভাবটুকু! ভীষণ নিশ্চিন্ত হয়ে আওড়ালো,

“নাহ্! এবার আমি শিওর যে সত্যি সত্যি তোর জ্ঞান ফিরেছে! আয় ভাই বুকে আয়!”
শেহজাদ বুকে না এলেও ও ঠিকই এগিয়ে গেলো জড়িয়ে ধরতে! তৎক্ষনাৎ বিরক্ত চোখে পিছিয়ে গেলো শেহজাদ!
“এমন করছিস কেনো ভাই? খরগোশের কামড় খেয়ে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া পাবলিকের মধ্যে তুই-ই প্রথম! এমন লিজেন্ডারি মানুষের সাথে কোলাকুলি না করলে হয়?”
জারা হয়তো এবার বুঝলো আরশির উদ্বেগের কারণ! মেয়েটাকে আড়াল করে বলে উঠলো,
“কিন্তু স্নোবল তো আমাদের কামড়ায় না! প্রফেসর আপনি শিওর ও আপনাকে কামড়েছে?”
শেহজাদ কিছু বলার আগেই মুখ খুললো আয়ান! বন্ধুর দিকে তাকিয়ে খুব বিজ্ঞের ন্যায় বললো,
“সব দোষ তোর! আমাদের টিম লিডার কামড়েছে কামড়েছে! তুই বা কামড় খেয়ে উল্টে পড়বি কেনো? এই তোর সাত সকালে জগিং করার নমুনা?”
আরশিও নিচের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়লো! মুখে কিছু না বলতে পারলেও মনে মনে ডাবল সম্মতি জানালো আয়ানের সাথে!

নে আদরে জড়িয়ে মন পর্ব ৩৭

হঠাৎই পাশ থেকে ধাক্কা দিলো জারা! ফিসফিস করে বললো,
“আরশি! সামনে তাকা!”
দৈবাৎ মাথা নাড়ানো থামিয়ে সম্মুখে চাইলো আরশি! তখনই যেনো ভূত দেখার মতো চমকে উঠলো বিস্মিত চোখজোড়া!
শেহজাদ যে ওর দিকেই তাকিয়ে!
এখন কি স্নোবল সহ ওকেও বের করে দেবে বাড়ি থেকে? মাথা নেড়েছে বলে?

নে আদরে জড়িয়ে মন পর্ব ৩৯