প্রণয়ের প্রিয়কাহন পর্ব ১২
শার্লিন হাসান
রাহেলা খান জাইমাদের বাসায় ফিরবেন আজকে। দিনটা শুক্রবার। মর্ম সহ যাবে সে বাসায়। আগেই কল দিয়ে জামিলাকে জানানো হয়েছে। সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে দাদী-নাতি মিলে রওনা হয়েছে সে বাড়ির উদ্দেশ্য।
সুনশান নিরিবিলি রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলছে নিজ গতিতে। বিয়ে,জাইমা সবকিছু নিয়ে দাদী নাতির মাঝে কথাবার্তা হয়েছে।
মর্ম আসতে সাজ্জাদ খান খুশি হয়ে যান। ভাইপো কে আগলে ভেতরে নিয়ে আসেন। রাহেলা খান এসেই জাইমাকে ডাকাডাকি শুরু করে দেয়। শুক্রবার দিনে জাইমা দেরিতে ঘুম থেকে উঠে। আজকেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বারোটা বাজার কিছুক্ষণ আগেই উঠেছে। আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে তার ডাক পড়ে যায়। দাদীর কন্ঠে ডাক শুনে জাইমার ঘুম চলে যায়। এলোমেলো ভাবেই রুম থেকে দৌড়ে আসতে,আসতে বলে, “দাদী চলে এসেছিইইই…
এতো জোরে দৌড় দিয়েছে যে থামতে,থামতে সামনের দেওয়ালে বারি খেয়েছে। ইশরাক জাইমার কাজে হতভম্ব হয়ে যায়। জাইমা কপালে হাত দিয়ে ঢলতে,ঢলতে বলে, ” ওই আরকী, লেগে গেছে।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কথাটা বলে ফিরে একটা হাসি দেয়। ইশরাককে দেখে তার হাসি পুরোটাই থেমে গেছে। রাহেলা খান এগিয়ে এসো জাইমার খোলা,এলোমেলো চুলগুলো মৃদু টেনে ধরে বলে, “কাকের বাসা এমন কেন? তুমি মাত্র ঘুৃম থেকে উঠেছ?”
জাইমা নিজের চুলগুলো গুছানোর বৃথা চেষ্টা চালায়। মেকি হাসি টেনে নিজের রুমে যেতে,যেতে বলে, “সব দোষ তোমার। এভাবে কেউ ডাক দেয়?”
রুমে ঢুকেই দরজা লাগিয়ে দেয় জাইমা। ইশরাক গম্ভীর হয়ে দাদীকে দেখছে। এরকম উড়নচণ্ডী মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তাব নিয়ে এসেছে সে! সাজ্জাদ খান জাইমার কান্ডে খানি বিব্রত বোধ করলেও পরক্ষণে ইশরাকের দিকে তাকিয়ে বলেন, “মৈশানী এরকমই। শুনেছে দাদী এসেছে সেজন্য এভাবে দৌড় দিয়েছে। ওর আম্মু দেখলে এতোক্ষণ দুই চারটা খেতো।”
“ইট’স ওকে। আরেকটু বয়স হলে ম্যাচিউরিটি চলে আসবে।”
“না, না এই মেয়ে ম্যাচিউর হবে না। আস্ত গাধী একটা। কী করে,কী করবে আল্লাহ ভালো জানে। ছুটির দিন তো অঘটন দুই চারটা ঘটাবেই।”
“অঘটনঘটন পটিয়সী মিস মৈশানী।”
জামিলা এসে ইশরাকের সাথে কথা বলে। তখন হুট করে ইশরাকের মনে পড়ে যায়, ‘ইনি তাহলে সেদিন কল দিয়ে বলেছিলেন, জাইমা অসুস্থ।’ কিন্তু উনাকে দেখলে মনে হয়না মেয়ের কাজকর্ম সায় দিবেন। ইশরাক জানে, তার চাচ্চি একজন টিচার। চাচ্চু, বিজনেস করে। কিন্তু তাঁদের মেয়ে এরকম হলো কী করে?
ইশরাকের ভাবনার সুতো ছিঁড়ে যায়, যখন জামিলা ডাকে, “রুপা, জাইমাকে গিয়ে বলো এখানে আসার জন্য। লান্সের সময় হয়ে গেছে।”
রুপা কিচেন থেকে দৌড়ে আসে। ইশরাককে দেখে হা হয়ে যায়। এই তো জাইমার সেই গোলামেরপুত প্রফেসর। যার সম্পর্কে এত্তোগুলো বদনাম করেছে জাইমা। সাথে তার ছবি সবই দেখিয়েছে। সে অনুযায়ী রুপার তাকে চিনতে ভুল হয়নি। বরং ভাবছে, সেদিন কেন যে জাইমার কথায় এতোবড় মিথ্যে বললো। লোকটাকে দেখে সত্যি ভদ্র মনে হয়। জাইমার শত্রু হওয়ার পেছনের কারণটা, জাইমার মতো মেয়ে অতিরিক্ত নম্র ভদ্র মানুষ সহ্য করতে পারেনা। সেজন্য হয়ত ইশরাকের সাথে তার মিলেনা।
রুপা সোজা জাইমার রুমে যায়। দেখে জাইমা সবে শাওয়ার নিয়ে এসেছে। রুপাকে দেখে জাইমা ভ্রু নাচিয়ে বলে, “দেখলে ওই প্রফেসর আমার বাসায়ও চলে এসেছে। শুনেছি, সে নাকী আমার কাজিন। আবার আমাদের বিবাহের আলাপ চলছে।”
শেষের কথাটা বলার সময় জাইমা লজ্জা পাওয়ার ভঙ্গি করে। রুপা জাইমার দিকে তাকিয়ে বলে, “লোকটার জীবন তুমি নষ্ট করে দিবে?”
“না। আমি একে বিয়ে করব না। আমাকে পুরো ক্লাস দাঁড় করিয়ে রেখেছে। ইনডিরেক্টলি পাগল বলেছে। ওনার গার্লফ্রেন্ড আমার নামে অপবাদ দিয়েছে। সে অপবাদ তিনি মেনে নিয়ে আমাকে বকাঝকা করে ধমকেছেন। তুমি বলো এরকম লোককে আমি বিয়ে করব?”
এক নাগারে কথাগুলো বলে থামে জাইমা। রুপা জবাব দেয়না। শুধু বলে, “তোমাকে ডাকছে, লান্সের সময় হয়েছে।”
“একটা বাজেনি এখনো।”
“বেজে গেছে প্রায়।”
জাইমা মাথা নাড়ায়। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হেয়ার ড্রয়ার দিয়ে চুল শুকিয়ে সেগুলো ব্যান্ড দিয়ে উঁচু করে বেঁধে নেয়। হালকা পারফিউম মাখে। টুকটাক রেডি হয়ে ওরনাটা মাথায় ঘোমটার মতো দিয়ে বাইরে আসে। এসেই দেখে সবাই মিলে বসে কথা বলছে। জাইমা দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়। কী বলে শোনার জন্য।
জাইমা দাঁড়িয়ে থাকতে,থাকতে রুপা আবার মিষ্টিও নিয়ে এসেছে। জাইমা ভ্রু কুঁচকে নেয়। কী এমন কথা হলো যে মিষ্টি অব্দি খেয়ে নিলো সবাই। আর অপেক্ষা করতে পারেনি সে। এসেই দাদীকে বলে, “মিষ্টি কিসের?”
জাইমার কথায় ইশরাক তাকায় তার দিকে। থ্রি-পিস পরে মাথায় ঘোমটা দেওয়া। ভীষণ নম্র ভদ্র দোখাচ্ছে জাইমাকে। বেশ সুন্দর লাগছে। তখন জামিলা ইশরাককে জিজ্ঞেস করে, “ভার্সিটিতে জাইমার এক্টিভিটিস কেমন? তোমার চাচ্চু তো সেদিন গিয়েও কোন খোঁজ দিতে পারলো না। তোমাকেই জিজ্ঞেস করি।”
জামিলার কথায় ইশরাকের মনে পড়ে যায়, জাইমার এ টু জেদ কার্যকলাপ। তখন জাইমা ইশরাকের চোখের দিকে তাকিয়ে না, না করছে। মানে কিছু যাতে না বলে। ইশরাক সে ইশারা বুঝে। জাইমার কাছে ইশরাকের মতিগতি ভালো লাগছেনা। সেজন্য বলে, “দাদী বলোনি কেন? মিষ্টি কিসের?”
তখন সাজ্জাদ খান বলেন, “পাশে বসো।”
জাইমা বাবার পাশে বসে। রাহেলা খান বলেন, “তোমার আর ইশরাকের বিয়ের ডেট পড়েছে। তোমাদের বিয়ের মিষ্টি।”
জাইমা হা হয়ে যায়। এই টুকু সময়ের মাঝে সব ঠিকও হয়ে গেলো? কীভাবে? জাইমা বিরক্তি নিয়ে জবাব দেয়, “আমি বিয়ে করব না।”
“কেন?”
সাজ্জাদ খানের কথায় জাইমা ইনিয়েবিনিয়ে ইশরাককে উপরনিচ পরখ করে বলে, “উনার গার্লফ্রেন্ড আছে। সেদিন আমাকে শাসিয়ে বলেছে, ‘মর্মকে বিয়ে করার স্বপ্ন দেখো না।’ আরো অনেক কিছু বলেছে।”
সাজ্জাদ খান ইশরাকের দিকে তাকায়। রাহেলা খানও অবাক হোন। ইশরাক নিজেকে স্বাভাবিক রেখে বলে, “আপনাকে এসব কে বলেছে?”
“লোহা।
স্যরি,না পোহা বলেছে।”
“পোহা আমার কাজিন হয়। আপনি যা ভাবছেন এরকম কিছুই না। আপনার ভুল হচ্ছে কোথাও।”
তখন জামিলা জাইমাকে ধমকে বলে, “উল্টাপাল্টা বলো কেন? তুমি বিয়েতে কেন রাজী না সেটা বলো?”
জাইমা উঠে দাঁড়ায়। ইশরাকের দিকে তাকিয়ে বলে, “মর্ম ছাড়া অন্য যে কাউকে আমি বিয়ে করতে রাজী। শুধু মর্ম ছাড়া।”
“কারণ টা কী?”
জাইমা জবাব দেয়না। সে বাবা মায়ের সামনে আসল কারণ বলতে পারবেনা। ইশরাক তাকে তাড়িয়ে দিয়েছিল, সেখানে সে কীভাবে আবার যাবে? প্রশ্নই উঠে না। জাইমা জবাব না দিয়ে রুমে চলে যায়। ইশরাক মুখটা থমথমে করে নেয়। তখন রাহেলা খান বলেন, “এতোদিন তো রাজী ছিলো। এখন কী হলো?”
তখন ইশরাক বলে, “আমাকে দশ মিনিট সময় দিবেন? কারণ টা জানতে চাই।”
“জাইমা তো পাগল। তুমি ওর সাথে কথা বলবে?”
জামিলার কথায় ইশরাক মাথা নাড়ায়। সে জানে দু’টো ধমক দিলেই জাইমা সব সত্যি বলে দিবে। রাহেলা খান ইশরাককে নিয়ে জাইমার রুমে যায়। দরজা মেলে ভেতরে যেতে দেখে জাইমা বসে ফোন স্ক্রোল করছে। রাহেলা খান ইশরাককে চোখ দিয়ে ইশারা করে। তিনি প্রস্থান করতে ইশরাক জাইমার রুমে চোখ বুলিয়ে চোখ মুখ কুঁচকে নেয়। বিছান অগোছালো, ড্রেসিং টেবিল অগোছালো, পড়ার টেবিলে কিছু বই, খাটের উপর কিছু বই। যা তা অবস্থা! ইশরাক জায়গায় দাঁড়িয়ে ডাকে, “মিস মৈশানী খানম।”
জাইমা ফোন রেখে দাঁড়ায়। ইশরাককে দেখে বিরক্তিতে নাক মুখ কুঁচকে নেয়। জবাব দেয়, “আপনি এখানে কেন?”
ইশরাক দুকদম এগিয়ে এসে গুরুগম্ভীর স্বরে বলে, “আমাকে অপমান করার জন্য বসেছিলেন? এক্সাক্ট প্রব্লেম কী আপনার?”
“বলেছি, আপনার গার্লফ্রেন্ড আছে। সেটাই।”
“পোহা আমার কাজিন। আমি বুঝতে পারছিনা, এক কথা বার বার কেন বলতে হচ্ছে আমাকে।”
“আমি আপনাকে বিয়ে করব না।”
জাইমার কথায় ইশরাক কিছুক্ষণ চুপ থাকে। প্রতিত্ত্যুরে বলে,
“সেটা আপনার সামান্য মত। যা উপেক্ষা করার সাধ্য আমার আছে। আপনাকে বিয়ে করাটা আমার উদ্দেশ্যে না, উদ্দেশ্য দু’টো পরিবারকে মিলিয়ে দেওয়া।”
“যা খুশি করুন। বিয়েতে রাজী না আমি।”
“ঠিক আছে। আপনার রাজী হতে হবেনা।”
“এই আপনি আমায় জোর করে বিয়ে করবেন? একদম মাথা ফাটিয়ে দেব।”
ইশরাক রাগ দেখিয়ে বলে, “বেয়াদব মেয়ে।”
“আরে কী ভদ্র ছেলে। যান তো আমার রুম থেকে বেরোন। কী একটা খবর নিয়ে এসেছে।”
“মিস মৈশানী…
কঠোর ভাবে বলে ইশরাক। জাইমা চুপসে যায়। ইশরাক চোখ রাঙিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য এগোয়। জাইমা চিৎকার করে বলে, ” এই জন্যই বিয়ে করব না আপনাকে। আমার হার্ট তিন ইঞ্চির আপনার ধমক বারো ফুটের। আমার এতোটুকু হার্ট আপনার এতো বড় ধমক কীভাবে সহ্য করবে?”
ইশরাক দাঁড়ায়। জাইমার দিকে তাকিয়ে কাটকাট গলায় বলে, “বাইরে গিয়ে সুন্দর করে মত দিবেন। আপনি বিয়েতে রাজী। নাহলে আপনি ভার্সিটিতে গিয়ে কাকে মেরেছেন,কাকে হসপিটালে এডমিট করিয়েছেন কার সাথে কথা বলেছেন এ টু জেড মেমোরি আপনার প্যারেন্টসের কাছে চলে যাবে।”
“আপনি আমায় থ্রেট দিচ্ছেন?”
“ওই একটু আধটু।”
“আপনার বিচার খোদা করবে।”
“জ্বী,দোয়া করবেন।”
“অসভ্য লোক।”
“মৈশানীইই….
কথাটা বলে ইশরাক এক মূহুর্তও দাড়ায়না।
ইশরাক যাওয়ার পেছন দিয়ে জাইমাও দৌড়ে আসে। ইশরাক সোফায় বসছিল। এমতবস্থায় জাইমা আঙুল নাচিয়ে ইশরাককে বলে, “আপনি আমায় ধমকেছেন কেন?”
“আপনার ব্যবহার এতো বাজে কেন?”
ইশরাকের কথায় জামিলা চোখ রাঙিয়ে তাকায় জাইমার দিকে। জাইমা থতমত খেয়ে বলে, “ক কই খারাপ?”
সাজ্জাদ খান মেয়ের উদ্দেশ্যে বলেন, “তুমি কী রাজী নও এই বিয়েতে?”
“র রাজী রাজী।”
কথাটা বলে ইশরাকের দিকে মুখ বেঁকে তাকায় জাইমা। মনে পড়ে নিজের করা কীর্তি কাহিনীর কথা। একবার যদি তার আম্মু এসব শুনে সত্যি খবর করে দিবে। অবশ্য এবার বিয়েই দিবে। কিন্তু সেটা ইশরাকের সাথেই হয়ত বা। জাইমা ভাবে বাঁশ খেলেও ইশরাককে বিয়ে করতে হবে, না খেলেও। তার চেয়ে ইনোসেন্ট থেকে বিয়েটা করে নেওয়াই ভালো না? কয়দিন ইশরাককে টাইট দিবে। এরপর লোহা,পোহাকে। সমস্যা কোথায়? এমনিতেও বেটা ইশরাককে তার মনে ধরেছে। এরকম একটা জামাই পেলে আর কী লাগে? জাইমা ভাবছে তার বিয়ে হবে।
রাহেলা খানের হাতে কফির ট্রে। জাইমা তর্জনী কামড়ে খুশিতে রাহেলা খানের সামনে যায়। লজ্জা পাওয়া হাসি দিয়ে কফির ট্রে নিজের হাতে নেয়। আবারো হাসি দিয়ে দ্রুত সামনে এগোয়। জামিলা এবং সাজ্জাদ খান জাইমাকে ট্রে নিতে দেখে চিন্তায় পড়ে যায়। জাইমা ট্রে হাতে নিয়ে বুঝে এটার ওজন বেশ। কয়েক কদম এগিয়ে গেলে সে আর এগুতে পারেনা। ট্রে হাত থেকে ফেলে দিতে নিবে, ইশরাক সেটা নিজের হাতে নিয়ে নেয়। টেবিলের উপর ট্রে টা রেখে জাইমার দিকে তাকায়। জাইমা কৃত্রিম হাসি টেনে বলে, “বেশি ওজন ছিলো, বুঝতে পারিনি।”
জামিলা জাইমাকে ধমকে বলে, “এখন যদি গরম কফি ইশরাক বা তোমার গায়ে পরত তখন?’
” ভালো হতো। তাই না?”
জামিলা বিরক্ত হয়। জাইমা পিছু হাঁটতে গেলে রাহেলা খান এসে জামিলার হাত ধরে। নিজের সাথে এগিয়ে নিয়ে সোফায় বসায়। জাইমা আবারো লজ্জা পাওয়ার ভাণ ধরে। ইশরাক শুধু জাইমার কাহিনী দেখছে। একটা মেয়ে কী পরিমাণ ড্রামা করতে পারে সেটা জাইমাকে না দেখলে সে বুঝতই না।
জাইমার লজ্জা পাওয়ার মাঝে ইশরাক বলে, “তাহলে আগামী শুক্রবার বিয়েটা হচ্ছে। ফাইনাল।”
জাইমা মুখ ফসকে বলে, “সত্যিইই? আল্লাহ আমার বিশ্বাস হচ্ছেনা।”
ইশরাক সবার মুখের দিকে তাকিয়ে নিজের হাসি কন্ট্রোল করে নেয়। জাইমা লজ্জায় মাথা নুইয়ে ফেলে। জামিলা, সাজ্জাদ খানের দিকে তাকায়। দু’জন হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে।
ইশরাক কফিতে চুমুক দিয়ে সেটা শেষ করে। সাড়ে তিনটা নাগাদ সবার থেকে বিদায় নেয় সে। জাইমা দাঁড়িয়ে উসখুস করছে, ইশরাককে কিছু বলার জন্য। ইশরাক কথার মাঝে কয়েকবার জাইমাকে পরখ করেছিল। কিন্তু পাত্তা দিলো না।
মেইন ডোর পেরিয়ে নিজের কারের কাছে আসে। জাইমাও পেছন দিয়ে আসে। ইশরাক গাড়ির দরজা খুলতে জাইমা বলে, “ওয়ান মিনিট।”
প্রণয়ের প্রিয়কাহন পর্ব ১১
ইশরাক থামে। জবাব দেয়, “বলুন?”
“শাদী মোবারক।”
ইশরাক মুচকি হেঁসে বলে, “ধন্যবাদ ড্রামা ফ্যাক্টরী।”
“এহহহ?”
ইশরাক গাড়িতে বসে দরজা লাগিয়ে দেয়। জাইমা তেড়ে আসে ইশরাকের গাড়ির দিকে। ততক্ষণে সেটা সামনে এগিয়ে গেছে। যার দরুন জাইমা পরতে পরতে বেঁচে গেছে।
জাইমা চেঁচিয়ে বলে, “গোলামেরপুত, হবু বউয়ের থেকে শাদী মোবারক শুনে বিনিময়ে ধন্যবাদ দেয় কেউ? আবার বলে ড্রামা ফ্যাক্টরী। তোর বউ ড্রামা ফ্যাক্টরী আমি না।”