প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে পর্ব ২

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে পর্ব ২
আদ্রিতা নিশি

প্রিয় সারহান,
আপনাকে আমি প্রথম দেখেছিলাম আমাদের কলেজের একটা প্রোগ্রামে।প্রথম দেখাতেই ক্রাশ খেয়েছিলাম।কতো সুন্দর হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে ভাষণ দিয়েছিলেন।তখন আমি আপনার দিকে অপলক ভাবে তাকিয়ে ছিলাম।আপনার গাম্ভীর্য ভাব,সুদর্শন চেহারা,আপনার ডেম কেয়ার ভাব, আপনার কঠোর ভাব-ভঙ্গি আমায় মুগ্ধ করেছে।আপনার কথা ভাবতে ভাবতে কত-শত রাত নির্ঘুম কাটিয়েছি তার ঠিক নেই।আচ্ছা বলুন তো আপনি এতো হট কেনো?মন চায় টুপ করে গিলে ফেলি। আর একটা কথা আমি আপনাকে ভীষণ ভালোবাসি।
ইতি
আপনার অজানা প্রেমিকা

সারহান পুরো চিঠিটা কিছুটা উঁচু স্বরেই পড়লো।তার মুখশ্রী অস্বাভাবিক গম্ভীর।চিঠির এমন ধরন দেখে রা গে চোয়াল শক্ত হয়ে এলো তার।সারহানের সামনেই কাচুমাচু ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে অরিত্রিকা।তার মুখশ্রী নিচু।চিঠির লেখনি শুনেই তার কেমন ল জ্জা আর অস্বস্তিবোধে অতলে ডুবে গেছে। ধরা পড়া চোরের মতো মুখ লুকিয়ে আছে সে। চিঠিটা কেনো যে সে সারহানের রুমে রাখতে এসেছিলো? নিজের প্রতিই রা গ হচ্ছে।সে চোরা চোখে রুমের বাহিরে তাকালো। দরজার বাহিরে লুকিয়ে থাকা দুজনের পা দেখা যাচ্ছে।এদের জন্যই তো ফেঁসে গেছে সে। ওই দুজনের প্রতি বেজায় বিরক্ত সে। এখন কি যে হবে ভাবতেই হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে অরিত্রিকার। মনে হচ্ছে সারহান ভাই তাকে ফা সি তে ঝুলাবেন।
সারহান সরু চোখেঅরিত্রিকার দিকে তাকালো।দেখলো ভীতু মুখশ্রীতে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছে।সে চিঠিটা অরিত্রিকার সামনে ধরে গাম্ভীর্য ভাব নিয়েই বলল;
”এটা কোথায় পেয়েছিস তুই?”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

অরিত্রিকা একটু চমকালো।সে ভীতু ভীতু চোখে তাকালো সারহানের দিকে। ঢোক গিলে মিনমিন করে বলল ;
“আপনাকে চিঠিটা একজন দিতে বলেছিলো।তাই তো নিয়ে এসেছি আপনাকে দেওয়ার জন্য।”
সারহানের মুখশ্রী কঠিন বর্ণ ধারণ করলো।সে শক্ত গলায় বলল;
”পড়াশোনা না করে এসব চিঠি আদান প্রদান করা হচ্ছে? তো আর ক’জনের চিঠি আদান প্রদানের বাহক হয়েছিস?”
অরিত্রিকার এহেন কথা শুনে চোয়াল ঝুলে গেলো।চোখ বড় বড় হয়ে গেলো তার।সে তো এই প্রথম চিঠি আদান প্রদানের বাহক হয়েছে। তাও প্রথমবারেই এমন একটা বি দঘুটে পরিস্থিতে পরতে হবে তার অজানা ছিলো। ভেবেছিলো সারহানের রুমে চিঠিটা রেখেই পগারপার হয়ে যাবে! কিন্তু তা আর হলো কই? চিঠি রাখতে এসেই তো আগেই ধরাটা খেলো। এখন যদি তার বাবাকে সারহান ভাই চিঠির কথা বলে দেয় তাহলে তো তাকে বাড়ি থেকেই বের করে দিবে।ভাবতেই ভ য়ে গলা শুকিয়ে আসছে ।কি যে বিপ দে পরলো সে?
অরিত্রিকাকে অন্য ভাবনায় মত্ত থাকতে দেখে সারহান রণমুর্তি ধারন করলো।দাঁতে দাঁত চেপে বলল;

” এতোটা অবাধ্য হয়েছিস? কি জিজ্ঞেস করেছি উত্তর দিচ্ছিসনা কেনো?”
অরিত্রিকা সারহানের রা গী কন্ঠস্বর শ্রবণ হতেই ভড়কে গেলো।নিজেকে ধাতস্ত করে মিনমিনে কন্ঠে উত্তর দিলো;
”এই প্রথম আপনার জন্য চিঠি এনেছি।এমন কাজ আমি আগে করিনি।আমি সত্যি বলছি। আর কখনো এমন হবেনা।”
সারহান রুদ্ধ স্বরে বলল;
” তোকে কে বলেছে মানবতার দেয়াল হতে? আর একদিন যদি এমন কোনো কিছু করেছিস আমার থেকে খা রাপ কেউ হবে না। আমার রুম থেকে এখনই বেরিয়ে যা এখুনি।আমার রুমের আশে পাশেও যেনো তোকে আর দেখতে না পাই।”
অরিত্রিকাকে আর পায় কে? সে শঙ্কিত হয়ে তটস্থ ভঙ্গিতে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে নিলেও থেমে পেছনে ফিরে সারহানের দিকে তাকালো। সারহান অরিত্রিকাকে দাঁড়াতে দেখে ভ্রু কুঁচকে গেলো। বিগড়ানো মেজাজে জানতে চাইলো

“ আবার কি?”
অরিত্রিকা আমতা আমতা করে বলল;
“ না মানে ইয়ে চিঠিটা আপনি রাখবেন সারহান ভাই?যদি না রাখেন তাহলে আমায় দিন।আপনাকে যে চিঠিটা দিয়েছে তাকে ফেরত দিয়ে দিবো।”
সারহানের মেজাজ পুনরায় বিগড়ে গেলো অরিত্রিকার কথা শুনে।সে ধমকে বলে উঠল;
“তুই এখান থেকে যাবি? নাকি থা প্পড় খাওয়ার প্রহর গুনছিস?”
অরিত্রিকাকে আর পায় কে? সে সারহানের রুম থেকে জান বাঁচিয়ে কোনো রকমে পালালো।এই বাঘের মুখের সামনে থাকা মানেই নিশ্চিত চিবিয়ে খেয়ে নেবে। এতোক্ষণ তো জান হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো।আর একটু হলেই অক্কা পেতো সে। অরিত্রিকাকে দৌড়ে বেরোতে দেখে সাদাত আর ইশরাও পিছু পিছু দৌড়ে গেলো।
সারহান চিঠিটা তালুদ্বারা পিষ্ট করে জানালা দিয়ে বাহিরে ছুঁড়ে মার লো।রা গে মাথা দপদপ করে জ্বলছে যেনো? অরিত্রিকার এমন কান্ডে বিরক্ত সে।মেয়েটার সব দিকেই কেমন খাম খেয়ালী ভাব।শরীর এলিয়ে সোফায় বসলো সে।এখন রাত আটটা বাজে।সেই বিকেলে পার্টি অফিসে গিয়েছে কাজ সেরে এখন ফিরলো সে। আবার আরেকটা ঝামেলা নির্মুল করতে হয়েছে।প্রচন্ড ক্লান্তি অনুভব করছে।ফ্রেশ হওয়া দরকার। সারহান সোফা থেকে উঠে আলমারী থেকে নিজের জামা কাপড় নিয়ে ওয়াশ রুমে চলে গেলো।

অরিত্রিকা রুমে এসেই তার পরিচিত একজনকে কল করেই যাচ্ছে।অথচ কল তুলছে না।এমনি মেজাজ গরম তার ওপর ফোন না তোলায় আরও গরম হয়ে গেছে।ভেতরে ভেতরে ফুঁসছে সে।ইশরা আর সাদাত চুপচাপ অরিত্রিকার কান্ড দেখছে।এখন চুপ থাকাই ভালো না হলে ঝড় উঠবে।
অপর পাশ হতে কল রিসিভ হতেই অরিত্রিকা রে/গে বলে উঠলো;
“এই শয় তান মাইয়া তোর জন্য আজ আমি মর তে মর তে বেঁচেছি। আর কোনোদিন তোর কথা শুনে বা ঘের খাঁচায় যাবোনা।”
তিশা অরিত্রির রাগী কন্ঠস্বর শুনে চমকে গেলো।সে বলল;
“আরে এভাবে চেঁচাচ্ছিস কেন? কি হয়েছে সোনা?”
অরিত্রিকা রে গেই বলল;

“তোর ওই চিঠির জন্য আজ আমি আজ থা প্পড় খাইনি।একটুর জন্য বেঁচে গেছি। আমি আর কখনো তোর কোনো কাজ করে দিবো না।”
তিশা তখনই লাজুক স্বরে বলে উঠলো;
“ এই আমার চিঠি পড়ে সারহান ভাই কিছু বলেছে তোকে।নিশ্চয়ই জানতে চেয়েছে কে চিঠি দিয়েছে? আমার কথা বলেছিস তো?”
অরিত্রিকার আবারও মেজাজ চটে গেলো।সে নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলো।তারপর বলল;
“ তোকে সামনে পেলে থাপ্প ড় দিয়ে গাল লাল করে দিতো সাথে আমাকেও। তো এতো সাহস কই থেকে এলো হ্যা ?আর তুই উনাকে হট বলেছিস?সারহান ভাইকে তোর টুপ করে গিলে ফেলতে ইচ্ছে হয়? অস ভ্য মাইয়া।আমি যদি চিঠিটা আগে পড়তাম তাহলে কখনোই দিতে যেতাম না।”

”কেনো সারহান ভাই তোকে কিছু বলেছে?”
“থা প্পড় দিতে চেয়েছে।তুই জানিস চিঠিটা আমাকে পড়ে শুনিয়েছে।আমি তো লজ্জায় শেষ।পারছিলামনা মাটি ফাঁক করে ঢুকে যেতে।তুই এতো নির্লজ্জ কেন? এসব লিখতে লজ্জা করেনি?তোরে যদি এখন কাছে পাইতাম ঝাড়ু দিয়ে পিটাইতাম।”
“আহা সোনা রা গ করিস কেন? তোর ওই নাক উঁচু ভাই এতো হ্যান্ডসাম যে এগুলোই তাকে নিয়ে ভাবি।তাই চিঠিতেও লিখে দিয়েছি।”
“উনাকে নিয়ে দিবা স্বপ্ন দেখা বাদ দে।আর কোনোদিন এমন কথা তোর মুখে যেনো না শুনি।আমি রাখলাম।”
বলেই কল কাটলো অরিত্রিকা।তার মেজাজ খিটখিটে হয়ে আছে।

রাত দশটা পনেরো মিনিট।পরিবারের সদস্যরা সকলে এক সাথে খেতে বসেছে।আজমল আর আরশাদ সাহেব খাচ্ছেন আর নিজেদের মধ্যে কিছু আলোচনা করছেন।তানিয়া বেগম আর সাথী বেগম সবাইকে খেতে দিচ্ছেন।অরিত্রিকার ফুপি বিকেলে বাসায় চলে গেছে।অরিনও শশুর বাড়ি চলে গেছে।বিয়ে হয়নি তাই তারা তাদের গন্তব্যে প্রস্থান করেছে।ইশারা যায়নি।যায়নি বললে ভুল হবে অরিত্রিকা যেতে দেয়নি।সাদাত আর ইশরা এক মনে খেয়েই যাচ্ছে। এদিকে অরিত্রিকার টেনশনে খাওয়া আসছে না।খাবার মুখে নিলেও গলা অব্দি নামছেনা।সে বার বার চোখ ঘুরিয়ে সিঁড়ির দিকে তাকাচ্ছে।মুলত সারহান আসছে কিনা তা দেখার জন্য।যদি এসে তার বাবাকে চিঠির বিষয়টা বলে তাহলে তো আজ শেষ।

তানিয়া বেগম অরিত্রিকাকে খাওয়া বাদ দিয়ে চুপ করে বসে থাকতে দেখে বলল;
“কিরে মা চুপচাপ খাওয়া বাদ দিয়ে বসে আছিস কেনো? ”
তানিয়া বেগমের কথা শুনে সকলে অরিত্রিকার দিকে তাকালো।অরিত্রিকা সিঁড়ির দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে বলল;
“বড় মা আমার খেতে ইচ্ছে হচ্ছেনা।”
”কেনো খাবার পছন্দ হয়নি?”
অরিত্রিকা উত্তর দিবে এমন সময় তার পাশের চেয়ারে ধপ করে কারো বসার আওয়াজ পেলো।অরিত্রিকার ছোট্ট সত্তা চমকিত হলো।সে পাশে তাকাতেই দেখতে পেলো সারহানকে। সারহান এখনো গম্ভীর হয়ে আছে।এদিকে অরিত্রিকার চিন্তা যেনো মাথায় চড়ে বসেছে।এই মানুষটা না সবার সামনে চিঠির কথা বলে বসে! সাথী বেগম সারহানকে খাবার তুলে দিতে লাগলো।
সারহানের আজ খেতে ইচ্ছে হচ্ছেনা তাই সাথী বেগমকে হাত থামিয়ে বলল;

“ আর দিয়ো না চাচি।”
সাথী বেগম একটু অবাক হয়ে বলল;
“এতো কম খাবার খাবি আজ?”
“আজ খেতে ইচ্ছে হচ্ছেনা।”
সাদাত খাওয়া থামিয়ে বলল;
“ভাই তোমার আর অরিত্রির আজ কি হয়েছে বলোতো দুজনেই খেতে চাইছোনা?”
কথাটা শুনে সারহানের কপাল কুঁচকে গেলো।সে সরাসরি দৃষ্টি ফেললো অরিত্রিকার পাণে।অরিত্রিকা এতোক্ষণ সারহানের দিকে তাকিয়ে ছিলো।সারহান তাকানোতে সে তখনি চোখ নামিয়ে ফেললো।
তানিয়া বেগম তরকারী দিতে দিতে বললেন;
“তোদের যে মাঝে মাঝে কি হয় বুঝিনা বাপু।একজন তে সে কখন থেকে ভাত নেড়েই যাচ্ছে মুখে তুলছে না আর আরেক জনও এসে বলছে অল্প খাবে।”
সাদাত ভাত চিবুতে চিবুতে বলল;
“ অরিত্রিকা তো তার বিয়ে না হওয়ার শোকে খাচ্ছেনা। তো ভাই তুমি কেন খাচ্ছোনা? তোমার কি গার্লফ্রেন্ড ভেগে গেছে?”

অরিত্রিকা কথাটা শুনতেই সাদাতের দিকে কটমটে দৃষ্টিতে তাকালো।রাগে নাকের পাটাতন ফুলছে।সাদাত দেখেও ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে খাওয়ায় মনোযোগী হলো।
সারহান সাদাতের দিকে তাকিয়ে ফিচেল হেসে বলল;
“ জবান বেশী চলছে তাই না? তো কয়েকদিন আগে যেনো তোকে কার সাথে বাইকে ঘুড়তে দেখলাম?”
সাদাত এই কথা শুনে বিষম খেলো।জোরে জোরে কাশতে লাগলো।তানিয়া বেগম দৌড়ে ছেলের কাছে গিয়ে পিঠ নেড়ে দিতে লাগলো। কয়েকদিন আগে সাদাত তার গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলো।সেটাই সারহান দেখেছে।এখন তার ভাই আস্ত রাখবেনা।কেনো যে সারহানকে খোঁচা দিতে গিয়েছিলো?
আরশাদ সাহেব বিরক্তি নিয়ে বললেন
“এসব কি শুরু করেছো তোমরা? ভুলে যেওনা আমরা তোমাদের গুরুজন।”

সারহান আর কিছু না বলেই চুপচাপ খাওয়া শুরু করলো।আজমল সাহেব সারহানকে উদ্দেশ্য করে বলল;
“ তুমি তো শুনেছো নিশাদকে কারা যেনো মেরে ছে?”
সারহান নির্লিপ্ত ভাবে উত্তর দিলো;
“শুনেছি বিকেলে।”
“তোমায় একটা কাজ করতে হবে।যারা মে রেছে তাদের খুঁজে বের করতে হবে।পুলিশ তো এখনো কিছুর সুরাহা করতে পারলোনা।”
“ঠিক আছে।আমি আমার লোকদের বলে খোঁজ নিতে বলছি।”
“ঠিক আছে।”
অরিত্রিকা সারহানের কথা শুনে চোখ বড় বড় করে সারহানের দিকে তাকালো।তার চোখে মুখে অবাকতার রেষ।এই মানুষ টাই তো নিশাদকে তার লোক দিয়ে মেরে ছে।অথচ ভাব করছে যেনো কিছুই জানেনা।এতো ধুরন্ধর মিথ্যাশ্রয়ী মানুষ কেমনে হয়?এই মানবকে না দেখলে সে জানতেই পারতোনা।দেখো কেমন করে খাচ্ছে যেনো ভাজা মাছটা উল্টে খেতে জানেনা।ভাবতেই মুখ বাকালো অরিত্রিকা।

“নাশিদকে আজ কেনো মেরে ছেন সারহান ভাই।উনার সাথে আপনার কিসের শত্রু/তা আমায় বলবেন?”
অরিত্রিকা উদ্বিগ্ন হয়ে জানতে চাইলো সামনে দন্ডায়মান গম্ভীর শ্যাম পুরুষটির থেকে।কৌতুহল বশত নিশাদকে কেনো মা রা হয়েছে জানতে এসেছে। এতটুকু বলতেই যেনো ভ য়ে কন্ঠ জড়িয়ে আসছে তার। তবুও মনে সাহস নিয়ে অসাধ্য কাজ সাধন করলো সে।সারহান পরিচিত মেয়েলী কন্ঠস্বর কর্ণকুহরে প্রবেশ করতেই কান থেকে ফোন সরিয়ে পেছনে ঘুরে কঠোর চোখে তাকালো। সামনে অরিত্রিকাকে ভীতু চাহনীতে তাকিয়ে থাকতে দেখলো।দেখা মাত্রই ভ্রু কুঁচকে গেলো সারহানের।
“সারহান আমার কথা শুনতে পাচ্ছো?কাল সকাল দশটায় পার্টির সকলের সাথে মিটিং আছে তোমার।” তুমি ঠিকানা অনুযায়ী চলে এসো সময় মতো।ফোনের অপর পাশ হতে ভেসে আসছে কারো কন্ঠস্বর।
সারহান আবারও ফোন কানের কাছে নিয়ে বলল; “সময়মতো পৌঁছে যাবো।এখন একটু ব্যস্ত আছি আপনার সাথে পরে কথা হবে আজাদ সাহেব।”

ফোনের অপর পাশ হতে কল কাটার ধ্বনি ভেসে এলো।সারহান। ফোনটি টাউজারের পকেটে ঢুকিয়ে নিজে সোফায় গা এলিয়ে বসে পরলো।
সারহান ভরাট কন্ঠে অরিত্রিকার দিকে তাকিয়ে বলল;
“তুই আমার অনুমতি ছাড়া আমার রুমে কেনো ঢুকেছিস?”
অরিত্রিকা দমে গেলেও সাহসিকতা দেখিয়ে উত্তর দিলো;
“ আপনি নিশাদকে কেনো মেরে ছেন জানতে এসেছি।”
সারহান মুখ বাকিয়ে হেসে বলল;
“ বাহ। বিয়ে না হতেই এতো দরদ?তাহলে বিকেলে বিয়ে ভা ঙ্গার কথা কেনো বললি?”
“আপনি আগে বলুন নিশাদকে কেনো মেরে ছেন?”

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে পর্ব ১

সারহানের মুখশ্রী ক ঠিন হলো।সে কঠোর স্বরেই বলল; “আমি আমার কাজের জবাবদিহি কাউকে দিতে পছন্দ করিনা না। আর তোর মুখ থেকে যদি নিশাদের নাম আর একবার শুনি তখন দেখিস আমি কি করি।”
সারহানের হঠাৎ ভাবাবেগের পরিবর্তন হওয়ায় অরিত্রিকা ভয় পেলো।আর নিশাদের কথা জানতে চাওয়াতে রে গে গেলো কেনো সারহান ভাই?অরিত্রিকা এর হিসাব মিলাতে ব্যর্থ হলো।

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে পর্ব ৩