প্রিয়তে তুমি প্রাণ পর্ব ১৪

প্রিয়তে তুমি প্রাণ পর্ব ১৪
মিমি মুসকান

অনুষ্ঠান শেষ! এবার বাড়ি ফিরবার পালা। প্রিয়তা একটু ওয়াশ রুমে গেছে। প্রান্তিক দাঁড়িয়ে তার ফিরবার অপেক্ষা করছে। হঠাৎ ইজান শিকদারের আগমন তাকে ভাবিয়ে তুলল। সেও এসেছে অনুষ্ঠানে। প্রান্তিকের জানা ছিলো না তারা আসবে। তাহলে কি আরিনাও এসেছে?
জীবনে বহু মেয়ের সাথে প্রেম নিবেদন হয়েছে প্রান্তিকের। কাউকে মন না দিতে পারলেও তাদের মন নিয়ে অনেক ছিনিমিনি খেলেছে সে। সম্পর্ক ভাঙার পর সেসব কেউ মনে রাখেনি। মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সকলে। এতে প্রান্তিকের কিছু যায় আসে না। এরা কেবলই খেলনা ছিল। খেলেছে,‌ মন ভরেছে ব্যস। এরপর কাউকে কি ভাবার সময় কি তার আছে আদৌও?

নিত্য নতুন জামাকাপড়ের মতো তার সম্পর্ক বদলাতো। এক মাস, দুই সপ্তাহ এরকমই চলতো সম্পর্ক গুলো। সঙ্গৎ দেবার জন্য কেবল একজন মানুষ। এরা সাথে থাকবে, সঙ্গ দিবে আর টাকা উড়াবে। মূলত এই কারণেই আসত। এসব সম্পর্ক কখনো গভীর অবধি যায়নি। যেতোও না। তার বিছানায় কোনো মেয়ে এসে হামাগুড়ি খাবে প্রান্তিকের এটা ভালো লাগত না। মেয়েরা কেবলই খেলনা। বাইরের জিনিস! ঘরে আনতে নেই। এই দম্ভ নিয়ে কি করে আরিনার সাথে তার সম্পর্ক জুড়লো তার জানা নেই। তবে আরিনার আকর্ষণ থেকে নিজেকে রক্ষা করার কথা সে ভুলে গেল। কেমন ভ্রম হয়ে দাঁড়াচ্ছে এখন সবকিছু! কিভাবে এতোবড় ভুলটা সে করল। আরিনা সুন্দরী! কেবল সুন্দরী নয়, খুব সুন্দরী! কোনো পুরুষ তাকে কাছে পেয়ে ছাড় দিয়েছে এসব কথা শুনলে সকলে সেই পুরুষের পুরুত্ব নিয়েই প্রশ্ন করত। এই যুগে মহাপুরুষ খুঁজে পাওয়া খুব মুশকিল। প্রান্তিক যে কোন লেভেলের মহাপুরুষ তা সকলেরই জানা আছে!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আরিনা সুন্দরী, চালাক চতুর মেয়ে। তার মায়াবী দৃষ্টি থেকে মুখ লুকানো মুশকিল। নজরকাড়া সেই চাহনি উপেক্ষা করতে পারছে না প্রিয়তাও। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হাত ধুতে গিয়ে কেবল নজর পড়ছে পাশে দাঁড়ানো মেয়েটার দিকে। মুখ দিয়ে কেবল একটা কথাই বের হচ্ছে, “মেয়েটা ভারী সুন্দরী!” তার ঠোঁট রাঙানো টকটকে লাল রঙ যেন তাকে আরো আবেদনময়ী করে তুলল। প্রিয়তা বেশ কয়েকবার আড়চোখে তাকাল। এমন ভারী সুন্দরী মেয়ে খুব কমই দেখেছে সে।

আরিনা শেষবারের মতো লিপস্টিক লাগিয়ে নিল। হাত দিয়ে আবারো ঠোঁট দুটো চেপে দেখল ঠিক আছে তো আদৌও। আড়চোখে চেয়ে দেখছে প্রিয়তা কে। এই মেয়েটা! প্রান্তিক এই মেয়েটার প্রেমে পড়ে তাকে ছেড়েছে। এই মেয়েটাকে ভালোবেসে তার কথা ভুলে গেছে। মেয়েটার মধ্যে তাহলে বিশেষ কিছু তো আছে। কি তবে সেটা?
প্রিয়তা টিস্যু দিয়ে হাত মুছে চুলগুলো ঠিক করে নিল। এবার বের হতে হয়। তার বর মশাই নিশ্চিত অনেকক্ষণ ধরেই বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। পা বাড়াতেই কারো চিকন কণ্ঠ তার কানে এসে বাঁধল। বোধহয় ওই মেয়েটার! সে ছাড়া আর তো কেউ ছিলো না। আন্দাজ ঠিক ছিল। পিছন ফিরতেই আরিনা কে মুখোমুখি পেলো প্রিয়তা। মেয়েটার কণ্ঠস্বর শুনে দু সেকেন্ডর জন্য স্তব্ধা খেয়ে গেল প্রিয়তা। এতো সুন্দর কণ্ঠও হয় কারো।
আরিনা যথেষ্ট চেষ্টা করল স্বাভাবিক ভাবে জিজ্ঞেস করতে। পারল না। তার গলায় যেন কাটা বেঁধে যাচ্ছিল। কম্পিত স্বরে শুধায়,

“প্রান্তিকের বউ তুমি?”
প্রিয়তা জবাব দেয় না। কেবল মাথা নাড়ে। আরিনার মনে হলো মেয়েটা মায়াবী! তার দৃষ্টি দুটিতে কেবল মায়া ভরা। অথচ এসব কিছুই তাকে কাবু করতে পারছে না। মেয়েটার মাথা নাড়ানো দেখে তার শরীর পিত্তি সব জ্ব’লে গেল। হাসার চেষ্টা করল। বুকের ভেতরে চিনচিনে ব্যাথা। চারদিকের নিরবতা কাটিয়ে প্রিয়তা বলে,
“কিছু বলবেন আমায়?”
“কিছু! হ্যাঁ, বলবো তো। সংসার কেমন করছো?”
প্রিয়তার অদ্ভুত লাগলো। মেয়েটার কথা বলার ধরণ কেমন জানি। প্রথম দেখাতেই একটা অচেনা মেয়ে এসব কি জিজ্ঞেস করছে? তিনি কি প্রান্তিকের পরিচিত। তাই হবে! এখানে উপস্থিত সকলেই তো প্রান্তিকের চেনাজানা।
একটু অস্বস্তি নিয়েই জবাব দিল, “ভালো আপু!”

“ভালো! তুমি কিভাবে ভালো থাকতে পারো? অন্যকে কষ্ট দিয়ে নিজে ভালো থাকা যায় শুনেছ কখনো?”
প্রিয়তার এবার যেন একটু খটকাই লাগলো। আসন্ন বিপদ টের পাচ্ছে সে। চোখ মুখ সব শুকিয়ে যাচ্ছে তার। শাড়ির আঁচল খামচে ধরে দাঁড়িয়ে রইল প্রিয়তা। আরিনা বোধহয় কিছু টের পেলো। হেসে উঠল। খানিক আগেও যেই মেয়ের প্রশংসায় প্রিয়তা পঞ্চমুখ ছিল এখন তাকেই তার ভীষণ অ’সহ্য বলে মনে হলো। মনে হচ্ছে মেয়েটার হাসার ধরণ ও এক প্রকার কু’ৎসিত!
“চিনো আমায়?”
“না!”
“আমি আরিনা। তোমার বরের প্রাক্তন!”

চোখ বন্ধ করে ঢোক গিলল প্রিয়তা। তার শান্ত মন অস্থির হয়ে উঠেছে এখান থেকে পালানোর জন্য। কিন্তু সে কেন পালাবে? কারণ এসব সে শুনতে পারবে না। তার বর অন্য একটা মেয়েকে ভালোবেসেছিলো, সেই মেয়ে এসেছে ভালোবাসার কথা শুনাতে। এসব কি সে শুনতে পারে? কখনো না!
“ভয় পাচ্ছো নাকি? আমার নাম কি শুনোনি? না শোনার কথা। প্রান্তিকের এতো প্রেমিকাদের লিস্টে আমার নামটা বোধহয় তোমার চোখে পড়েনি।”

“প্রেমিকাদের লিস্ট” চোখ কপালে তুলল প্রিয়তা। এই মেয়ে কি যা তা বলছে। আরিনা এবার শব্দ করে হেসে উঠল। এগিয়ে এসে তার গাল টেনে বলল, “আরে বাবা! খুকি নাকি তুমি? কিছুই জানো না দেখছি। বিয়ের আগে বরের খোঁজ নাও নি। কোথায় ছিল, কার সাথে ছিল, কার সাথে রাত কাটালো..
প্রিয়তার মাথা ঘুরছে! পায়ের কাছ থেকে বোধহয় মাটি সরে গেছে। কেমন নরম তুলতুলে জায়গা। সে কি দুলছে নাকি? নিজেকে সংযত করল। যতখানি শক্ত গলায় কথা বলা যায়। ততোটুকু ভাবেই বলে উঠলো,
“আমার বরের নামে এতো বাজে কথা কেন বলছেন? প্রাক্তন বলেই কি যা নয় তাই বলবেন?”
“তোমার বর! তোমার বর হবার আগেও সে আমার ভালোবাসার মানুষ, স্বপ্নের পুরুষ তা জানো!”
প্রিয়তা অবাক হলো। মেয়েটার কথাবার্তা শুনেই মনে হচ্ছে সে এখনো তাকে ভালোবাসে! আরিনা ফের বলে উঠলো, “এতো বোকা সেজো না। তোমাকে মানায় না।”
“আমি বোকা সাজছি না। আপনাদের সম্পর্ক ছিল, কিন্তু এখন আর নেই। তাই আপনি অযথা আমাদের মাঝে এসে দেয়াল হয়ে দাঁড়াবেন না। আর আমার বরকে নিয়েও বাজে কথা বলবেন না। আপনাকে আমি এতোখানি অধিকার দেয় নি।

স্পষ্ট ভাষায় জবাব দিল প্রিয়তা। আরিনার রাগ হচ্ছে ভীষণ। সামলে নিল।
“এতো আমার আমার করো না। কতোটুকুই বা জানো। বিয়েই হলো দেড় কি দুই মাস। এর মধ্যেই এতো অন্ধ বিশ্বাস করছো। তোমার মতো কতো মেয়ে এলো আর গেলো। প্রান্তিক চৌধুরী কে এখনো চিনতে পারোনি তুমি। ফুল শুকিয়ে মুড়িয়ে যাবার আগেই তার ভালোলাগা শেষ হয়ে যায়। এসব ভালোবাসা, ভালোলাগা, সংসারের কোনো দাম নেই তার কাছে। এতো মেয়েকে ছাড়তে পারলে তোমাকে ছাড়তে বাঁধবে কোথায়?”
মেয়েটা বলেই যাচ্ছে। যতখানি পারছে তার বরকে অপমান করছে। এর হিসাব বরের থেকে নেওয়া যাবে। কিন্তু একটা মেয়ের সামনে কখনোই তার বরের অপমান সহ্য করবে না সে। চটপট বলে উঠলো, “কারণ আমি বউ! বুঝো তো? বিয়ে করা বউ। এসব নামিক সম্পর্ক কখনো স্থায়ী না। বিয়ের মতো পবিত্র বন্ধনে মানুষ একবার বেঁধে পড়লে বের হওয়া মুশকিল!”

আরিনা থামল। এই মেয়েকে ঘুরানো এতো সহজ না। সে খুব করে চাইছে মেয়েটা প্রান্তিকের জীবন থেকে সরে যাক। যতটা খোলাখুলি ভাবে বলা যায় বলছে। কিন্তু মেয়েটা কি বুঝতে পারছে না। না চাইছে না! আরিনা এক পা এগিয়ে এলো। দুজন মুখোমুখি এবার। প্রিয়তার চোখ মুখ শক্ত হয়ে এসেছে।
“বুঝতে পেরেছি। তোমার বরের অন্ধ ভক্ত তুমি। অবশ্য এটা হবারই ছিল। যেই প্রান্তিকের কাছে গিয়েছে তারাই অন্ধ হয়ে তাকে ভালোবেসেছে। দেখো আমিও আছি তাদের দলে। একটা সিক্রেট বলি তোমায়, শোন!
এগিয়ে গিয়ে কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলল, “আমার পিঠে কোমরের কাছে একটা তিল আছে। তোমার বরের সেটা খুব পছন্দ ছিল। কখনো সেখানে চুমু খেতে ভুল করেনি সে!”
প্রিয়তার মুখটা মূহুর্তেই ফ্যাকাশে হয়ে গেল। তার রক্ত শুন্য মুখ থেকে আরিনার শান্তি লাগছে এবার। মুচকি হেসে বিদায় নিল সে। আরিনা কখন গেলো প্রিয়তা টের পেলো না। তবে তার আভাস এখনো আছে। এই যে প্রিয়তাকে জ্বা’লিয়ে দিয়ে গেল! প্রিয়তা জ্বল’ছে। দাউ দাউ করে জ্ব’লে পুড়ে যাচ্ছে। আশ্চর্য! অথচ কেউ খেয়াল করছে না, গন্ধ পাচ্ছে না! মেয়েটা তো জ্বলে’পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে। মন পুড়ে ছাই হয়ে গেলে কেউ কি খেয়াল করতে পারে আদৌও!

তবে প্রান্তিক পেরেছিলো। কিছু তো একটা হয়েছে। তার বউ সেই কখন থেকে চুপসে আছে। অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পর সেই রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। এতো দরজা ধাক্কানোর পরেও দরজা খুলেনি। সে এবার চিন্তিত। রাজশাহী থেকে দাদাজানের কল আসায় ব্যাপারটা তখন কিভাবে যেন চেপে গেল। দাদাজানের আসতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। তিনি মূলত কিসব ফাইল নিয়ে কথা বলছিলেন। এসব ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়েই দু ঘন্টা সময় চলে গেল। প্রান্তিক এখনো নিজের ঘরে চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে ফাইল ঘাটছে। জামাকাপড় বদলানোর সময়টুকু পায়নি। এখনো সেই সুই টাই। যদিও সুট বিছানার উপর। কিন্তু ভেতরের সাদা শার্ট এখনো ঘামে ভিজে একাকার। শার্টের হাতা ফোল্ট করে এলোমেলো চুল নিয়ে বসে আছে সে।
দরজার কাছে এসে দাঁড়ালো প্রিয়তা। প্রান্তিক বোধহয় খেয়াল করিনি। সবে ফাইলটা বন্ধ করে চোখ বন্ধ করল সে। বউয়ের রাগ ভাঙাতে হবে সেই খেয়াল তার আছে। প্রিয়তার অবস্থা অনেক খারাপ। তাকে বিধ্বস্ত লাগছে। গায়ের শাড়িটা এখনো চেঞ্জ করেনি সে। মুখটা শুকিয়ে এতোটুকুনি হয়ে গেছে। ঠোঁট ফ্যাকাশে। চোখের কাজল লেপ্টে আছে! সে কি কেঁদেছিলো এতোক্ষণ!

“আসবো!”
প্রান্তিক চোখ বন্ধ রেখেই বলল, “আসো আসো বউ! তুমি তো আর ঢুকতে দিবে না। কিন্তু আমার ঘরে ঢুকতে তোমার অনুমতি লাগবে না!”
চোখ মেলল। ফিরে তাকাল। তাকে দেখামাত্র সে চমকে উঠলাম। আকস্মিক ঘটনায় প্রান্তিক হতবাক! কিৎকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে চেয়ে রইল কেবল। এগিয়ে যে ছুটে যাবে সেই বার্তা মস্তিষ্ক পাঠাতে বড্ড দেরি করে ফেলল‌। তারা তো ভালো ভাবেই এলো। হ্যাঁ বউয়ের মন খারাপ ছিলো। কিন্তু এতোই কি খারাপ ছিলো?
প্রিয়তা নিজেই এগিয়ে এলো। প্রান্তিকের বোধ হলো। ছুটে গিয়ে তাকে আঁকড়ে ধরল।
“কি হয়েছে তোমার? এমন লাগছে কেন?” চিন্তার সুর ভেসে আসছে তার কণ্ঠ থেকে। প্রিয়তা আকুতির স্বরে বলে উঠল, “আমায় একটু জড়িয়ে ধরবেন!”
প্রান্তিক অবাক হলো বটে। তবুও তাকে জড়িয়ে ধরল। প্রিয়তা নরম কণ্ঠে শুধায়, “আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরুন!”

প্রান্তিক পুরোপুরি ভাবে তাকে আঁকড়ে ধরল। লেপ্টে নিল বুকের মধ্যে। কম্পিত স্বরে বলে উঠল, “কি হয়েছে তোমার?”
প্রিয়তা জবাব দিল না সাথে সাথে। সময় নিল! নিঃশ্বাসের শব্দ ছাড়া কেবল ঘড়ির টিকটিক শব্দ শোনা যাচ্ছে ঘর থেকে। প্রিয়তা এবার ধীর স্বরে বলে উঠল, “আপনি বলতে পারেন পার্থক্য কোথায় আমার আর আপনার গার্লফ্রেন্ডদের মাঝে?”
প্রান্তিকের মাথায় বা’জ পড়ল যেন। কেবল শব্দ হলো না। হতভম্ব হয়ে দ্রুত প্রিয়তার মুখের দিকে তাকাল সে। বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ল। এই ভয়েতেই তো ছিল সে।
প্রিয়তার কষ্ট হচ্ছে। খুব কষ্ট! কারণ প্রান্তিক তাকে ছেড়ে দিল। ছাড়িয়ে নিল তার থেকে। তাদের বাঁধন যে হালকা হয়ে গেল।
“ছেড়ে দিলেন! বাঁধন যে হালকা হয়ে গেল। আর একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে পারলেন না। বলতে পারলেন না এসব মিথ্যে!”

বলতে বলতে আবারো ডুকরে কেঁদে উঠল সে। প্রান্তিক অপ্রস্তুত হয়ে পড়ল। সে কি করবে বুঝতেই পারছে না।
অপ্রস্তুত কণ্ঠেই বলতে লাগল, “এমন কিছু নয় প্রিয়তা। আমি একটু বলি, শোন!”
আবারো বুকে আঁকড়ে নিতে চাইল। কিন্তু প্রিয়তা আর থাকবে না সেখানে। ওই বুকে আর সে মাথা পাতবে না। আর শুনবে না তার হৃৎপিণ্ডের শব্দ। তার অরুচি ধরে গেছে। ঘৃণায় জড়িয়ে যাচ্ছে পুরো দেহ। ওই দেহের ঘ্রাণ মাখায় এতোদিন উতলা ছিল সে। তবে আজ কেন এতো অস্বস্তি হচ্ছে। প্রান্তিক তাকে ধরে রাখতে পারছে না। তার চোখদুটো স্থির হয়ে গেছে। চোখের কার্নিশের ভেতর মনি দুটো স্থির কেবল। প্রিয়তার হাত সে ছাড়ছে না। এই ছাড়লেই বুঝি হারিয়ে যায়। বুঝানোর শতচেষ্টা চলছে পালাবদল করে। প্রিয়তা এবার চেঁচিয়ে বলেই উঠল,

প্রিয়তে তুমি প্রাণ পর্ব ১৩

“সব মিথ্যে! সব কি!” তার শার্টের কলার চেপে ধরল সে। চক্ষু স্থির করে দাঁতে দাঁত চেপে শুধাল, “তার পিঠের তিল কি আপনার পছন্দ ছিলো না। হাজারো বার চুমু খাননি আপনি সেখানে। এসব কি মিথ্যে!”
প্রান্তিক নিস্তব্ধ! তার উত্তর দেবার মতো কিছু নেই। কিছু বাকি নেই আর!

প্রিয়তে তুমি প্রাণ পর্ব ১৫