প্রিয় পূর্ণতা পর্ব ৫৮
তানিশা সুলতানা
আসমান মেঘে ঢেকে আছে। শো শো শব্দে বাতাস বইছে পাল্লা করে। গাছপালা এক পাশে হেলে পড়েছে। মনে হচ্ছে যে কোনো মুহুর্তেই ভেঙে পড়বে। রাস্তাঘাট জনমানব শূণ্য। যে যার আপন নীড়ে নিরাপদে ঘাপটি মেরে বসে আছে। আজকে আর কাজের সন্ধানে ছুটছে না। পাখি গুলোও কিচির মিচির শব্দ তুলে নিরাপদ আশ্রয় স্থলের খোঁজে ছুটছে। কক্সবাজারের বহরমপুর শহরটা সমুদ্রের ঠিক উত্তর পাশে। এখানকার বড় বড় বিল্ডিং এর ছাঁদ হতে স্পষ্ট দেখা যায় সমুদ্রের ঢেউ। গভীর রাতে শোনা যায় ঢেউয়ের গর্জন৷ আজকে গর্জন শুনতে মধ্য রাতের প্রয়োজন পড়ছে না। প্রাকৃতিক হাওয়ায় ভর দুপুরেই শোনা যাচ্ছে। যেনো সমুদ্র জানান দিচ্ছে “আজকে সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাবো। জমিন ভাসাবো আমার পানি দ্বারা” জনমানবের স্থান হবে পানির অতল গভীরে”
লোক মুখে শোনা গিয়েছে প্রচন্ড ঝড় হবে। ৩০০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে আম্ফান নামক ঘূর্ণিঝড়। পাহাড় ধঁসে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এবং পানি বাড়ছে হু হু করে। আশেপাশের শহর গুলো পানিতে ভেসে গিয়েছে। যে কোনো মুহুর্তে এই শহরটাও পানির তোপে ভেসে যেতে পারে। হঠাৎ করে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য মোটেও কেউ প্রস্তুত ছিলো না। তাই তো হা হা কারে মেতে উঠেছে গোটা শহর।
চিন্তিত অভি পূর্ণতাকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে এক পুরোনো আমলের রংচটা বিল্ডিং এ। দুই তালা বিশিষ্ট এই বিল্ডিং এর নিচ তালা পড়ে আছে অবহেলায়।
ভয়ে তার বুক কাঁপছে অভির। এই জায়গা থেকে ওদের তাড়িয়ে দিলে কোথায় যাবে? ঝড় বৃষ্টি মাথায় করে নতুন আশ্রয় স্থল খুঁজবে কি করে?
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
পূর্ণতা কাচুমাচু হয়ে বসে আছে। পরনের শাড়ি খানা পেঁচিয়ে নিয়ে গোটা শরীরে। বাতাসের তীব্রতায় ঠান্ডা লাগছে। পাতলা কাপড় খানা ঠান্ডা নিবারণ করতে অক্ষম তবুও একটু চেষ্টা মাত্র।
ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি। গরমটা বেশ। এতো গরম কখনো পড়েছে কি? পূর্ণতার মনে পড়ে না। বা এই ভাদ্র মাসে এরকম কিয়ামতের ন্যায় ঘূর্ণিঝড়ই বা হয়েছে কি? আল্লাহ কি এসবের মাধ্যমেই জানান দিচ্ছে “কেয়ামত আর বেশি দূরে নয়?”
কাল রাতে এক মুঠো ভাত খেয়েছিলো অভি পূর্ণ তারপর থেকে অভুক্ত। সকাল গড়িয়ে দুপুর এখন। ঝড় বৃষ্টি না থাকলে সূর্য মামা ঠিক মাথার ওপরে থাকতো।
অভি উঁকিঝুঁকি মেরে আশপাশটা দেখার চেষ্টা করে। ঝড়ের পূর্বাভাস শুনে এতো দ্রুত বেগে এখানে চলে এসেছে যে আশপাশটা দেখার সুযোগ পায় নি।
ইতোমধ্যেই ঝমঝম শব্দ তুলে বৃষ্টি পড়তে শুরু করেছে। তারই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বাতাসের তীব্রতা। অভি হাত বাড়িয়ে বৃষ্টির পানি স্পর্শ করে। কোথাও শুনেছিলো “বৃষ্টির পানি ছুঁয়ে দোয়া করলে আল্লাহ মনের আশা পূরণ করে”
বিগত কয়েকদিন প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ মানুষ সহ পশুপাখি একটু শান্তির জন্য হাহাকার করেছে। বাতাসের খোঁজে ছুটেছে এদিক ওদিক। সেই হাহাকার কমাতেই আল্লাহ তরফ থেকে রহমত নাজিল হয়েছে। গরমের তীব্রতা কমে জমিন শান্ত হয়ে গিয়েছে।
অভি বিরবির করে আওড়ায় একখানা দোয়া
“আল্লাহুম্মা সয়্যিবান নাফিয়া
অতঃপর আসমান পানে তাকিয়ে বলে
“ইয়া আল্লহ কি করবো আমি? কোথায় যাবো? কি করে ভালো রাখবো আমার স্ত্রীকে?
আমাকে পথ দেখান। আমি যে বড্ড অসহায়”
চোখের কুর্ণিশ বেয়ে দু ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ে অভির। ছোট বেলায় মা হারা হওয়ার পরেও এতোটা অসহায় লাগে নি। কখনো কান্না পায় নি। তবে আজকে চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে। জীবনটা এমন নাহলেও পারতো। মৃত বোনের আদল খানা মনে পড়ে। বলা বাহুল্য মনে পড়ছে মনোয়ার নামক পাষাণ বাবার মুখটাও। অসহায় অভিরাজ হাতের উল্টো পিঠে চোখের পানি মুছে নেয়।
আল্লাহর কাছে ফের আর্জি জানায়
“আমি আমার স্ত্রীর মুখে দু মুঠো খাবার তুলে দিতে পারছি না। একটু থাকার জায়গার ব্যবস্থাও করতে পারছি না। আমি ব্যর্থ। এই পৃথিবীর সব থেকে নিকৃষ্ট ব্যক্তি আমি। আমি ভালো ছেলে হতে পারি নি। ভালো ভাই হতে পারি নি। ভালো স্বামী হতে পারি নি। ভালো বাবা হতেও পারবো না। আল্লাহ আমাকে শাস্তি দিন আপনি। কঠোর শাস্তি দিন। শুধু আমার স্ত্রী এবং সন্তানকে ভালো রাখুন। ওদের সুখে রাখুন।
সিঁড়ি বেয়ে একজন মধ্য বয়সী লোক নেমে আসে। পড়নে তার সাদা রংয়ের পাঞ্জাবি এবং সাদা লুঙ্গি মাথায় টুপি।
অভি চোখ খুলে পেছনে ফিরতেই তাকে দেখতে পায়। ভয়ে কলিজা কেঁপে ওঠে অভির। এবার বুঝি এখান থেকে চলে যেতে বলবে? কি করবে অভি? লোকটার পা জড়িয়ে কাঁদবে তবুও এখান থেকে যাবে না। মনে মনে ভেবে নেয়।
লোকটা পূর্ণতার পাশে বসে। পূর্ণতার কাচুমাচু হয়ে বসে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে ছিলো।
“মা তুমি এখানে?
চমকায় পূর্ণতা। চট করে চোখ খুলে পাশে তাকায়। অচেনা এক পুরুষকে দেখে ভয় পায়। আশেপাশে নজর ফিরিয়ে অভিকে খুঁজে। এবং পেয়েও যায়। অভিকে দেখে সাহস ফিরে পায় পূর্ণতা একটু হাসার চেষ্টা করে বলে
” চাচা বড় বিপদে পড়ে আপনার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। আমাদের যাওয়ার মতো কোনো জায়গা নেই। বৃষ্টি না কমা ওবদি একটু থাকতে দিন।
অভিও ততক্ষণে লোকটার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। লোকটা বলে
“তোমরা চাইলে আমার বাড়িতে থাকতে পারো।
ভাড়াটিয়া খুঁজছি আমি।
অভি চোখ দুটো চকচক করে ওঠে। লোকটা কে? কেনো এখানে থাকতে দিচ্ছে? আদৌ মতলব ভালো না কি খারাপ। কিছুই মাথায় আসছে না তার। সে কৃতজ্ঞতার সহিত বলে
” চাচা আমি অগ্রিম টাকা দিতে পারবো না৷ তবে মাস শেষে দিয়ে দিবো যতটাকা ভাড়া চাবেন ততই।
লোকটা এবারেও হাসে। কি সুন্দর তার হাসি। দাঁড়ি গুলে বুক ছাড়িয়ে লাভি ওবদি গিয়ে পড়েছে। দেখতে বেশ সুন্দর লাগে।
“সমস্যা নেই বাবা। তোমরা থাকতে পারো।
আমি নিঃসন্তান। এতো বড় বাড়িতে দুটো মানুষ থাকি। তোমরা থাকলে আমাদেরও ভালো লাগবে। গল্প করার মানুষ পাবো।
অভি পূর্ণতার পানে তাকায়৷ মূলত পূর্ণতা বললেই থাকবে সে। না বললে নয়৷
পূর্ণতা স্বামীর নজর বুঝতে পেরে লোকটাকে বলে
” চাচা আমাদের একটা ঘর দিবেন। আমরা মাস শেষে ভাড়া পরিশোধ করবো।
লোকটা মাথা নেরে সম্মতি জানায়। পূর্ণতাও থাকতে রাজি হয়৷
ছোট একটা ঘর দেওয়া হয় তাদের। ঘরে একটা থাকার রুম একটা রান্নাঘর এবং একটা বাতরুম। এই তো। তবুও পূর্ণতার বেশ পছন্দ হয়। রংচটা দেয়াল, ভাঙা জানালা। ছোট একটা চৌকি ছাড়া আর কোনো আসবাবপত্র নেই।
পূর্ণতা ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকে সবটা। রান্না ঘরে গিয়ে দেখতে পায় খানিকটা ভিজে গিয়েছে। ইট সিমেন্ট এর ছাঁদ। ভিজলো কি করে? চিন্তিত পূর্ণতা ছাঁদের পানে তাকিয়ে দেখতে পায় ফুটো রয়েছে বেশ কয়েকটা। ফিক করে হেসে ওঠে। বিরবির করে বলে
“বৃষ্টি এসে বুঝিয়ে দেয় ঘরের ছিদ্র কোথায়
আর বিপদ এসে বুঝিয়ে দেয় কাছের মানুষ কে?
কষ্ট করে খুঁজতে হয় না আর।
পূর্ণতাকে বাসায় রেখে অভি ফের চলে গিয়েছিলো লোকটার কাছে। তার নাম মাওলানা কাশেম। এই এলাকায় ছোটখাটো একটা মসজিদ আছে সেখানকার ইমাম তিনি। তার থেকে ধার করে একটা কাঁথা এবং একটা বালিশ আনে। ওদের জন্য খাবারও দেয় তিনি।
বেশ ভালো লাগছে অভির। অবশেষে একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়ে গেলো যে। এবার আর পেছন ফিরে তাকাতে হবে না। কোনো রকমের একটা চাকরি জোগাড় করতে পারলেই পূর্ণতাকে নিয়ে সুখে বসবাস করতে পারবে। দুঃখ আর তাদের ছুঁতেই পারবে না।
ছোট কাঠের চৌকিতে বসে আছে পূর্ণতা। অভিরাজ কোথায় গেলো তাকে রেখে? বড্ড চিন্তিত সে। বাইরে প্রবল বর্ষণ। একটুও থামার নাম নিচ্ছে না। বৃষ্টি মাথায় করে লোকটা কোথায় পাড়ি জমালো?
তখনই অভি আসে। এক হাতে তার খাবারের প্লেট। মাথায় কাঁথা আর বালিশ। সেটা অপর হাত দ্বারা ধরে আছে। পূর্ণতা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। অভি পূর্ণতার কাছে এসে বসে। তখনই কেউ দরজায় টোকা দেয়। শোনা যাচ্ছে ইমাম সাহেব এর কন্ঠস্বর। অভি দরজা খুলে দেয়। তিনি এক জগ পানি এবং গ্লাস এগিয়ে দেয়। অভি কৃতজ্ঞতার সহিত ধন্যবাদ জানায়। তিনি চলে যায়। পূর্ণতা ভ্রু কুচকে তাকাতেই অভি জানায় ইমাম সাহেব দিয়েছেন এগুলো। এবং এও বলে “আমি যখন চাকরি পাবো তখন ইমাম সাহেবকে দাওয়াত করে খাইয়ে দিবো। তাহলেই শোধ বোধ হয়ে যাবে”
পূর্ণতা অনবরত মাথা নেরে সম্মতি জানায়।
অতঃপর অভি আর পূর্ণতা খাওয়া শুরু করে। পূর্ণতাকে নিজ হাতে খেতে দেয় না অভি। খাইয়ে দিতে থাকে। খেতে খেতে পূর্ণতা পরখ করতে থাকে অভিরাজকে। চেহারার লাবন্য হারিয়ে গিয়েছে। শ্যাম বর্ণের মানুষটিকে কালো দেখাচ্ছে। অযত্ন এবং চিন্তার কারণেই এমনটা হয়েছে। পরনের শার্ট খানা বেশ ময়লা হয়েছে। ঘনকালো চাপ দাঁড়ি গুলো বেশ বড় হয়েছে। মাথা ভর্তি ঝাঁকড়া গুলো কপাল ছুঁয়েছে। বড্ড অগোছালো এমপি সাহেবকে। এমন অভিরাজকে কখনোই দেখে নি পূর্ণতা। বুক চিঁড়ে দীর্ঘ শ্বাস বেরিয়ে আছে। পরমুহূর্তেই দুষ্টুমি ভর করপ মনে।
বলে ওঠে
” আপনার মনে হচ্ছে না? এই লোকটা কেনো আমাদের থাকতে দিলো? এমনি এমনি?
অভি নিজ মুখে ভাত পুরতেই যাচ্ছিলো। পূর্ণতার কথা শুনে থেমে যায়। চোখে চোখ রেখে জবাব দেয়
“ইফতিয়ারের হাত আছে । লোকটাকে ইফতিয়ারই বলেছে আমাদের সাহায্য করতে।
“লোকটা কতো ভালোবাসে আমায়।
তারপর নিজ পেটে হাত দিয়ে রসিকতার স্বরে বলে
“দেখেছিস বাবু?
তোর মা কতো ভাগ্যবতী। দুই দুইটা পুরুষ তার জন্য জান দিতেও প্রস্তুত।
অভির মলিন মুখ খানা মুহুর্তেই গম্ভীর হয়ে ওঠে। মাথা নিচু করে খাবারের পানে তাকিয়ে বলে
“দোয়া করো পূর্ণতা। ইফতিয়ারের হৃদয় থেকে যেনো তোমার নামটা মুছে যায়। আমি সহ্য করতে পারি না। আবার ইফতিয়ারের মায়া ভরা মুখ পানে তাকিয়ে কিছু বলতেও পারি না।
পূর্ণতা বুঝতে পারে অভি কষ্ট পেয়েছে। তাই অভির বাহু জড়িয়ে ধরে। কাঁধে মাথা রেখে বলে
” আমি মজা করেছি এমপি সাহেব। আপনি ছাড়া পূর্ণতা আর কোনো কিছুর পরোয়া করে না। কারো ভালোবাসাই পূর্ণতা হৃদয় স্পর্শ করতে পারে না।
মমতা বেগম এর একমাত্র কন্যা আদূরি চলে এসেছে সূদুর সিঙ্গাপুর থেকে। মনার মৃত্যুর খবর পৌঁছে গিয়েছে তার কানে। এটাও জেনেছে অভিরাজ তার মেয়েকে খু ন করেছে।
মমতা বেগম আদূরিকে কিছু বলার চেষ্টা করে। ক্রোধে আকৃষ্ট আদূরি শুনতে নারাজ।
তিনি গর্জে উঠে বলে
“আমি অভির জীবনটা নরক বানিয়ে দিবো। ওর কলিজা কতো বড় দেখে ছাড়বো।
ইফতি আদূরির সঙ্গে তাল মিলায়।
” ওর কলিজা ওর বউ। পূর্ণতাকে সরাতে পারলেই অভির খেল খতম।
অভি ছলচাতুরী করে ইফতি পাঠিয়েছিলো সিঙ্গাপুর। এতোদিন সেখানেই ছিলো সে। গতকালই আদূরির সঙ্গে বাংলাদেশে এসেছে।
পূর্ণতার প্রতি দুর্বলতা তার রয়েছিলো আগে থেকেই। এখনো সেই দুর্বলতা কমে নি।
ইফাদ নিজ কক্ষ হতে বেরিয়ে আসে। আদূরিকে আশ্বস্ত করে বলে
“তুমি চিন্তা করিও না ফুপি। অভিকে আমি আর ইফতি দেখে নিবো।
আদূরি শান্ত হয়ে বসে জমিদার সাহেব এর মখমলে আসনে। গালে হাত ঠেকিয়ে বলে
” কি করবি তোরা?
হাসে ইফতি।
“আমার নাম ইফতি আর চৌধুরী বাড়ির একমাত্র সন্তান ইফতিয়ার। নামের মধ্যে বড্ড মিল আছে না? এই মিলটাকেই কাজে লাগাবো।
পূর্ণতাকে অভির দূরে করবো আমি। আর নাম পড়বে ইফতিয়ারের।
তার আগে ইশান ইমনকে সরাতে হবে আমাদের রাস্তা থেকে। বড্ড পাকনা দুজন।
মমতা বেগম বলে
“ওদের ব্যবস্থা আমি করবো। তোদের চিন্তা করতে হবে না।
এক কাপ চা হাতে নিজ কক্ষের বেলকনিতে বসে আছে ইফতিয়ার। দৃষ্টি তার বৃষ্টির পানে। বড় বড় ফোঁটায় বৃষ্টি পড়ছে। কালো গোলাপ বাগানটা বেঁকে গিয়েছে। মিষ্টির কবরের মাটি ধসে গিয়েছে। ইট সিমেন্ট এনেছে ইফতিয়ার। মিস্তিরি কাজে আসার আগেই চলে আসলো মুষল ধারার বৃষ্টি।
মিষ্টির ডাইরির এক পাতায় লেখা ছিলো
” চৌধুরী সাহেব আমার বড্ড সখ আপনার সাথে একদিন বৃষ্টি বিলাস করবো। মুষলধারা বৃষ্টিতে আপনার হাতে হাত রেখে পিচ ঢালা রাস্তায় অনেকটা পথ হাঁটবো। বৃষ্টির পানিতে ভিজে জবুথবু হয়ে থাকা নাম না জানা একটা ফুলগাছ সামনে পড়বে আমাদের। আপনি সেখান থেকে একটা ফুল নিয়ে আমার কানে গুঁজে দিবেন।
আমার শখ পূরণ হবে চৌধুরী সাহেব?
না হলেও আফসোস নেই।
শুধু আপনাকে পেলেই আমি ধন্য। এক জীবনে আমার আর কিছুই চাওয়ার নেই।
ইফতিয়ারের বড্ড ইচ্ছে করে মিষ্টির কাছে যেতে। মেয়েটা ম রে গেছে। পৃথিবী থেকে চলে গিয়েছে। কিন্তু ইফতিয়ারকে ছেড়ে যায় নি৷ ক্ষণে ক্ষণে বুঝিয়ে দেয় “আমি আপনার আশেপাশে আছি”
প্রিয় পূর্ণতা পর্ব ৫৭
আর এটাই বড্ড যন্ত্রণার।
ছুঁতে চাওয়ার বড্ড ইচ্ছে
মাঝখানে দেয়াল
যখন ছিলাম আশেপাশে
কেনো রাখো নি খেয়াল?
থাকতে মানুষ কদর মেলে না
চলে গেলে বাড়ে ভালোবাসা
তুমি আমি আবার এক হবো
বেঁচে আছি এই আশায়
আর একবার কাছে এসে
সুযোগ দাও ছোঁয়ার
এবার আর ভুল করবো না
আগলে রাখবো তোমায়