প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ৪৮
জান্নাত নুসরাত
হিটার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত রুম। রুমের চারপাশ গ্লাস দ্বারা আবৃত। ডিজাইনিং টেবিলে ডেস্কটপ সহ চার পাঁচটা ল্যাপটপ রয়েছে। জায়িন গ্লাসের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। এক হাত ফরমাল প্যান্টের পকেটে রেখে গ্লাসের বাহিরের দিকে তাকিয়ে রইলো। রাস্তায় গাড়ি চলাচল এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে দেখতে লাগলো।
জায়িনের চিন্তার ব্যাঘাত ঘটিয়ে কল আসলো। পকেট থেকে মোবাইল বের করে নির্লিপ্ত চোখে তাকিয়ে রইলো ফোনের দিকে। ফোন বাজতে বাজতে কেটে যাওয়ার সেকেন্ড আগে জায়িন ফোন ধরলো। লাউড স্পিকারে ফোন রেখে জায়িন সালাম দিয়ে বলল,”কি হয়েছে আম্মু? এখন কল দিচ্ছ কেন?
“তোকে আমি কল দিতে পারিনা। এভাবে পর করে দিলে তুই আমায়।
জায়িন গলা স্বর নরম করে কথা বলতে চাইলো। কিছুটা ধীর স্বরে বলল,” আমি সেটা কখন বললাম!
“তুই বলিসনি এক্ষুণি তো বললি! আচ্ছা যাই হোক, বউমার ফোন লাগছে না কেন?
জায়িন আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করল,
“বউমা কে?
” আরে ইসরাতের কথা জিজ্ঞেস করছি। কল দিচ্ছি রিং হচ্ছে, পিক করছে না।
জায়িন কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,
“হয়তো কোনো কাজে বিজি তাই কল ধরছে না!
লিপি বেগম বেজায় রেগে গেলেন। চোখ মুখ কুঁচকে বললেন,” হয়তো কি? ও তোমার স্ত্রী জায়িন! তুমি হয়তো বিজি কেন বলছ?
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
“আ আম্মু শুনো….!
” কোনো শুনা শুনি নেই! তুমি কেন বলবে হয়তো ও কোনো কাজে ব্যস্ত? তুমি ওর কোনো গ্যারান্টি দিতে পারছ না জায়িন! তোমার স্ত্রী কেন কল ধরছে না তা তুমি কেন জানবে না? তুমি এক্ষুণি ইসরাত কে কল দিবে এবং সে কেন কল ধরেনি তার খোঁজ করবে?
জায়িন ফোড়ন কেটে বলল,
“কল না ধরলে!
লিপি বেগম কঠোর গলায় আদেশের স্বরে বললেন,
” কল যদি না পিক করে তুমি প্রয়োজন হলে ইসরাত কেন কল ধরছে না, তা জানার জন্য তোমার এপার্টমেন্টে যাবে। এবং খোঁজ নিবে কল না ধরার কারণ কি? অলরাইট জায়িন! আমি আর কোনো কথা শুনতে চাই না। এক্ষুণি কাজে লেগে পরো। কেন আই ক্লিয়ার ইট!
জায়িন গম্ভীর গলায় বলল,
“ইয়াহ মম!
লিপি বেগম রুঢ় গলায় বললেন,
” তোমার কাছ থেকে আমি এটা আশা করিনি জায়িন। আমি তোমাকে কি বলেছিলাম? মনে আছো তো! আশা করি এতো তাড়াতাড়ি ভুলে যাবে না।
“জি আমার মনে আছে সব!
” গুড!
লিপি বেগম কল কেটে দিলেন। জায়িন বাহিরের দিকে তাকিয়ে থেকে ইসরাতকে কল দিল। দু-বার রিং হওয়ার পর আর রিং হলো না। জায়িন চিন্তিত ভঙ্গিতে কিছুক্ষণ পায়চারি করে কেবিন থেকে বের হয়ে বসের রুমের দিকে এগিয়ে গেল।
নুসরাত গোসল থেকে বের হয়ে গুণগুণ করে সুর তুলল। নুসরাতের গলা স্বর ততোটা ইসরাতের গলার মতো এতো সুরেলা নয়, তারপর ও গান গাইল। নুসরাত অনেক সময় যখন গান গায় তখন ইরহাম বলে কাকের গলা তোর থেকে সুন্দর আছে। প্লিজ গান গেয়ে এর ধর্ষন করিস না? নুসরাত তবুও গান গায়! কারণ সে নিজের মর্জি মতে চলে! অন্যের কথায় সে কিছু মনে করে না! অলওয়েজ চিল! নুসরাত রুমে আরশকে দেখেও সুর তুলে গান গাইতে লাগল,
“Secrets I have held in my heart
Are harder to hide than I thought
Maybe I just wanna be yours
I wanna be yours, I wanna be yours.
নুসরাত একটু বেশি করে গুনগুন করল,
” সিক্রেট’স আই হেভ হেল্ড ইন মাই হার্ট.
আরশ কিছুক্ষণ আইঢাই করলো। নুসরাত কে কিছু জিজ্ঞেস করতে গিয়ে ও জিজ্ঞেস করতে পারলো না।ল্যাপটপ থেকে চোখ তুলে চোরা চোখে কিছুক্ষণ পর পর নুসরাতের দিকে তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিল।
“চুরের মতো না তাকিয়ে সরাসরি তাকান! লজ্জা পেলে বলুন আমি চোখ বন্ধ করে আপনার সামনে বসে থাকবো। আর আপনি মন ভরে দেখবেন। এরকম চুরের মতো তাকিয়ে নিজে কি প্রমাণ করতে চাইছেন? আপনি চুর..!
আরশ গলা পরিস্কার করে নিয়ে বিভ্রত বোধ একপাশে ফেলে নুসরাতকে জিজ্ঞেস করলো, ” কি এমন গোপনীয়তা যেটা তুই তোর হৃদয়ে লুকিয়ে রেখেছিস?
নুসরাত চোখ দিয়ে হাসল। ভিজে চুল থেকে টাওয়াল খুলতে খুলতে আরশের দিকে এগিয়ে আসলো। আরশের পিছন থেকে হালকা ঝুঁকে নুসরাত ফিসফিস করে কানের কাছে বলল,”সেটা তো বলা যাবে না!
সারা রুম কাঁপিয়ে নুসরাতের মোবাইলে কল আসলো। আরশ কিছুক্ষণ বিরক্তির চোখে নুসরাতের মোবাইলের দিকে তাকিয়ে চোখ ঘুরিয়ে নুসরাতের দিকে তাকাল। নুসরাতের শরীর থেকে আবার সেই কস্তুরি আর ভ্যানিল ফ্লেভারের ঘ্রাণ আসছে। আরশ নাক টেনে ঘ্রাণ নিল। কি সুন্দর ঘ্রাণ?
হঠাৎ কল আসায় নুসরাত ঝুঁকা থেকে উঠতে নিল। উঠতে পারল কই? আরশ হাত দিয়ে পেঁচিয়ে নুসরাতের ঘাড় চেপে ধরলো। নুসরাত ভ্রু বাঁকিয়ে তাকালো। আকস্মিক আরশ তার ঘাড় চেপে ধরেছে কেন? মুখ বাঁকিয়ে তাকিয়ে থেকে কিছু বলতে নিবে আরশ গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করল,” কি পারফিউম ইউজ করিস তুই?
নুসরাত বিরক্তির চরম শিখড়ে পৌঁছে গেল। রেগে জিজ্ঞেস করলো, “এটা জিজ্ঞেস করার জন্য এভাবে ঝাপটে ধরে রেখেছেন? মানুষের মতো জিজ্ঞেস করা যায় তো? আমি পালিয়ে যাচ্ছি না কোথাও?
আরশ নির্লিপ্ত চোখে তাকিয়ে থেকে মাথা নাড়ালো। নুসরাত বিরক্তি নিয়ে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলো, পারল না! বুঝল উত্তর না দিলে এই গন্ডার থাকে ছাড়বে না। হার মেনে আরশকে বলল,” ভাইয়া আমি ব্ল্যাক টাই সেলিন পারফিউম ইউজ করি! এবার ছাড়ুন!
কথাটা বলতে বলতে নুসরাত আরশের হাত থেকে নিজের ঘাড় ছাড়ানোর চেষ্টা করলো। আরশ ছাড়ল না! নুসরাত মুচড়া মুচড়ি বাঁধ দিয়ে আরশের দিকে পূর্ণ দৃষ্টি জ্ঞাপন করলো।
“পারফিউমের নাম বলেছি এরপর ও কি চাই? ঘাড় ব্যথা হয়ে গিয়েছে এভাবে থাকতে থাকতে!
আরশ নুসরাতের ঘাড় ধরে টেনে পিছন থেকে সামনে নিয়ে আসলো। নুসরাত আরশের মতো সুঠাম দেহের ব্যক্তির কাছে হার মানল। সে তো আরশের কাছে চুনোপুঁটি। চুপচাপ তাকিয়ে রইলো ঘাড় বাঁকিয়ে আরশের দিকে। আরশ শক্ত গলায় বলল ,”আমি তোর ভাইয়া?
নুসরাতের মনে হয় ঠোঁটের আগায় উত্তর ছিল। আরশের প্রশ্নের সাথে সাথে বলল,” আপনি আমার ভাইয়া না তো কি?
“কে বলেছে আমি তোর ভাইয়া?
নুসরাত ঠোঁট বাঁকিয়ে শয়তানি হাসি হাসল।
“ওমা কে বলতে যাবে? আপনি ভাইয়া নাহলে, কি আমার চাচা?
আরশ বিকট শব্দে চিৎকার করে বলল,
“কি?
আরশের হাত কিছুটা ঢিলে হতেই নুসরাত হাতের নিচ দিয়ে বের হয়ে গেল। ফোনের কাছে গিয়ে দেখল টেন প্লাস মিসডকল ইসরাতের নাম্বার থেকে। ঝটপট কল ব্যাক করলো।
নুসরাত হ্যালো বলার আগেই ইসরাত ওপাশে থেকে বলল,
“লাউড স্পিকারে কল থাকলে ফোন সাউন্ড কমিয়ে নে! আর ভাইয়া রুমে থাকলে ব্লুটুথ কানেক্ট কর। ইম্পর্ট্যান্ট কথা আছে! ফাস্ট নুসরাত….!
নুসরাত পুরো রুম তন্ন তন্ন করে খুঁজে ও ব্লুটুথ খুঁজে পেল না। শব্দ করে ডাকিয়ে রুম থেকে বের হয়ে বারান্দায় চলে গেল। গ্লাস ভালো করে লাগিয়ে বারান্দায় রাখা বাঁশের বেত দিয়ে তৈরি চেয়ারে বসে হ্যালো বলতেই ইসরাত সব খুলে বলতে লাগলো।
আরশ ল্যাপটপ থেকে চোখ তুলে তাকিয়ে রইলো স্লাইডিং ডোর এর দিকে। ফোনে কথা বলতে বলতে নুসরাতের ভাব ভঙ্গি বার বার পরিবর্তন হচ্ছে। একবার পায়ের নখ দিয়ে টাইলস খুঁটছে তো একবার হাতের নখ কামড়াচ্ছে। কিছুক্ষণ পর পর আবার ঠোঁট কাঁপছে! কান্নায় নয়, রাগে! ঠোঁটে ঠোঁট চেপে নুসরাত চিৎকার করে উঠলো। নুসরাতের চিৎকারে আরশের মনে হলো কানে তালা লেগে গিয়েছে।
অবাক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো। আরশ কে অবাক করে নুসরাত দাঁত কিড়মিড়িয়ে চিৎকার করে বলল,
“তুমি ওখানে বসে বাল করছিলে? হাত চালাতে পারোনি! এখন সব বাল হয়ে যাওয়ার পর বোনের কথা মনে পরছে। এই তুমি ওখানে কি করছিলে? আঙুল চুষছিলে বসে। এখন কি করবে? ভেবেছ কিছু!
” না কিছু ভাবিনি! আর তুই চিৎকার করছিস কেন? তোর চিৎকারে পুরো বাড়ির মানুষ চলে আসবে তোর রুমে আস্তে কথা বল!
“এখন কি ভেবেছিস? ঝটপট বল!
ইসরাত মিনমিন করে বলল,
” এখনো কিছু ভাবিনি!
নুসরাত বিশ্রী গালি দিয়ে উঠলো।
” হ হ এইসব করো শালি! কি বইলা দিছি? কেউ তেড়ি বেড়ি করলে এক চটকানা দিয়া কান লাল কইরা দেওয়ার জন্য। তোমারে আইসা অপমান কইরা, তোমারে তোমার বাসা থেকে বাইর কইরা দে আর তুমি শালি আঙুল চুষো! আত্মসম্মান বোধ দেখানো বের করছি তোমার? এখন ফোন রাখ! পরে কিছু ভেবে কল করবো! আর শোন যেখানে আছিস সেখানে স্টে কর! আমি ভাবছি কি করা যায়? যে বাসা থেকে বের হয়েছিস আর ওই বাসায় ফিরে যাবি না! আমি কিছু ভেবে জানাচ্ছি!
নুসরাত ফোন কেটে দিয়ে বারান্দায় কিছুক্ষণ বসে নখ খুঁটল। তারপর রুমে এসে ঠাস করে বিছানায় শুয়ে পড়ল।মাথা ব্যথায় সবকিছু অন্ধকার দেখছে। বিছানায় শুয়ে পড়তেই মনে হলো নুসরাতের পুরো দুনিয়া দুলে উঠছে। হাত দিয়ে খামচে ধরলো বেডশিট! চোখ বুজে কিছুক্ষণ ওভাবে পড়ে রইলো।
আধ ঘন্টা পরে আবার উঠে বসলো নুসরাত। রুমের এ-মাথা থেকে ও-মাথা পায়চারি করতে লাগলো। আরশ কাজ করছিল ল্যাপটপে কিছু কিন্তু নুসরাতকে পায়চারি করতে দেখে কাজ করা থেকে কনসেন্ট্রেশন হারিয়ে নুসরাতের দিকে তাকালো। ওভার সাইজড টি-শার্ট দলা পাঁকিয়ে আছে। প্যান্টের এক পা নেমে মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছে আর অন্য পা হাঁটু থেকে কিছুটা নিচে নেমে আছে। চুল গুলো বরাবরের মতো দলা পাকিয়ে মাথার মাঝখানে খোপা করে রেখেছে। মুখের চারপাশে চুল ছরিয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। কপালে ঘামের রেশ! নুসরাত দু-হাত দিয়ে মুখ মুছে পায়চারি করতে লাগলো।
আরশের চিন্তার ব্যাঘাত ঘটিয়ে রুমে আসলো আহান। গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে বলল,”বড় আপ্পি!
নুসরাত ফিরে তাকাতে পারল না।,তার আগেই আহান চিৎকার করে বলল,” আই লাভ ইউ বড় আপু!
আরশ রসগোল্লার মতো চোখ বড় বড় করে নিল। নুসরাত আহানের পানে তাকাতেই আহান এসে নুসরাতের পেট জড়িয়ে ধরলো।
আরশ ধমকে উঠল আহানকে।
“এই আই লাভ ইউ এসব কোথায় থেকে শিখেছিস?
আহান অবাক হয়ে বলল,
” কেন? তুমি ও কি শিখতে যাবে ভাইয়া?
“চুপ! এসব কথা যেন আর না শুনি! তুই জানিস এর অর্থ কি?
” হ্যাঁ জানি তো!
“দেখি বল তো!
” আই লাভ ইউ অর্থ আমি বড় আপুকে ভালোবাসি!
“তুই কেন ভালোবাসবি ওকে?
” কারণ আমি বড় আপুকে ভালোবাসি তাই! ভালোবাসি আর এই কারণেই ভালোবাসি! তোমার কি হয়েছে? আপিকে আই লাভ ইউ বললে?
“তুই আমার বউকে আই লাভ ইউ বলবি কেন?
আহানের কথা আরশের মুখ হা হয়ে গেল।
” তোমার বউ মানে তো আমার ও বউ!
“এই তুই আমার বউকে নিজের বউ বলছিস কেন?
” বড় আপু আমার বউ তাই বলছি।
“তোকে কে অধিকার দিয়েছে আমার স্ত্রী কে তোর বউ বলার।
আহান গালে হাত দিয়ে কিছুক্ষণ ভাবলো। কিছু মনে হওয়ার পর বলল,”বড় আপু নিজেই বলেছে একদিন আপু আমাকে বিয়ে করবে! আমার বউ হবে!
আরশ ভেংচি কেটে বলল,
” এ্যাঁ বললেই হলো! তুই কত খাটো দেখ ওর তোলনায়। তোর সাথে যায় ওর।
আহান নুসরাতের দিকে মাথা তুলে তাকালো। আহানের কাছে মনে হলো নুসরাত একটু বেশি লম্বা! এতো লম্বা হতে কে বলেছিল? গালে হাত দিয়ে কিছু ভেবে চেয়ার টেনে নিয়ে আসলো। নুসরাতের পাশে চেয়ার রেখে দাঁড়িয়ে গেল। তারপর ও তিন কি চার ইঞ্চির ডিফারেন্স থেকে গেল?
“এই দেখো আমি আর বড় আপু সেম সেম! এখন আমি আর আপু স্বামী স্ত্রী! তুমি থার্ড পার্সন! তাই আমাদের স্বামী স্ত্রী রুম থেকে বের হও।
নুসরাত চুপচাপ কিছুক্ষণ দু-জনের দিকে তাকালো। আহানের দিকে তাকিয়ে হালকা হেসে গালে ঠেসে চুমু খেয়ে বলল,” হয়েছে আর ঝগড়া করতে হবে না। যাহ আমি তোর বউ!
আহান ভাব নিয়ে নিজের গেঞ্জির কলার ঠিক করে নিল। আরশকে জিহ্বা বের করে ভেঙ্গিয়ে বলল,” দেখো, আমার বউ আমাকে চুমু খেয়েছে! তোমাকে খেয়েছে কোনোদিন? হুহ!
নুসরাত হাসল শব্দ করে এবার। নুসরাত কিছু বুঝে উঠার আগেই আরশ এক হাতে নুসরাতের কোমর চেপে ধরে টেনে নিয়ে আসলো। আহানের দিকে গম্ভীর চোখ তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিল। নুসরাত কিছু বলার পূর্বেই নুসরাতের কথা আটকে দিয়ে আরশ নুসরাতের গলার ভাঁজে চুমু খেল। অদ্ভুত অনুভূতিতে নুসরাতের পুরো শরীর শিরশির করে উঠলো। আরশ গলায় চুমু খাওয়ার সময় খোঁচা খোঁচা দাঁড়ির ঘর্ষণ কণ্ঠনালির পাশে অনুভূত হলো। চোখ মুখ বড় বড় করে নুসরাত আরশ কে ছুটাতে চাইলো, আরশ ছাড়লো না, শক্ত করে চেপে ধরে গলায় আরো বেশি করে নাক আর ঠোঁট দাবিয়ে দিল।
প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ৪৭
আহান দু-জনের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে উঠলো। এক দৌড়ে আরশের রুম থেকে বের হয়ে সেকেন্ডের ভিতর পুরো বাড়িতে খবর ছড়িয়ে দিল আরশ ভাইয়া নুসরাত আপিকে জোর করে ধরে গলায় কামড় মেরে দিয়েছে। যেভাবে নুসরাত আপি তার গালে কামড় মারে। আর নুসরাত আপি থাকে ছোটানোর চেষ্টা করছে কিন্তু আরশ ভাইয়া নুসরাত আপিকে ছাড়ছে না।
আহান বাড়িতে চক্কর কাটতে গিয়ে পথে যার সাথে দেখা হলো তাকে ঝাপটে ধরে বলল,”এই ভাবে ধরেছে ভাইয়া আপুকে!