প্রেমঘোর পর্ব ১৪

প্রেমঘোর পর্ব ১৪
নার্গিস সুলতানা রিপা

…সাদাদ আর নৌশিন পাশাপাশি চেয়ারে বসে….সাদাদ আড় চোখে নৌশিনের দিকে তাঁকিয়ে….এমন সময় নৌশিনের ভাবী এসে পড়লো….সাদাদের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসে বলে”কি ব্যাপার জামাইবাবু?রাতে কি দেখতে দেয় নি?যে এখন দেখছো এভাবে তবুও আবার সবার সামনে??”
“আরে ভাবী তুমি কখন এলে?”(সাদাদ)(কথা শোনার আগে খেয়াল করে নি)
“এই তো সবে মাত্র…”(নৌশিনের ভাবী)
“কি রে নৌশিন???দেখতে দিস নি রাতে??”

“ভাবী..তুমিও…তুমি তো এগুলো বলতে না কখনো আগে….আজ কি বলো এসব??”(নৌশিন)
“আগে কি তোর বাসার হয়েছিলো আরও যে আমি বলবো”(নৌশিনের কানের কাছে মুখ এনে)
“ভাবী!!!”(নৌশিন)
“হয়েছে ব্লাশিং হতে হবে না এতো…আমি যাই ঐ দিকটাতে…তোরা থাক…”
…..সাদাদ মুচকি হেঁসে বিদায় জানায়…..
“সাদাদ তুমি বললে আমার ডিপার্টমেন্টেরর সবাই নাকি এসে গেছে…বাট আমরা তো কখন থেকে বসে কোথায় কেউ তো নেই…এখানে তো সব তোমার আমার বাড়ির লোকজন”(নৌশিন)
“হুম এসেছে মে বি খাচ্ছে বা আশে পাশে কোথাও”(সাদাদ)
“রাক্ষসেরর দল…আগে দেখা তো করবে….খাবার কি ওবে যাবে নাকি…”
“তোমার মতো তো না…রিসেপশনে এসে পেট পুরে খাওয়া টাই আসল মজা…যদিও তুমি সেটা বুঝবে না….”(সাদাদ)

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“হুম…তুমি বুজো তাহলেই আমার হবে”(নৌশিন)
“এই বিয়ে বাড়ির কিন্তু আরও একটার দারুণ দিক আছে…”(সাদাদ)
“কি??”(নোশিন)
“তোমার বাড়িতে যে মেয়ে গুলো এসেছিলো সেগুলোকে আস্ক করে দেখো কালকে আমার সাথে যাওয়া ছেলেগুলোর থেকে কে কয়টা প্রপোজ পেয়েছে বা কে কে ফোন নম্বর বিলি করছে…আমি তো শিউর কালকে সব মেয়েরা তোমার বাসায় গিয়ে বিপদে পড়ে গিয়েছিলো ঠিক যেমন তুমি লাবণ্যের বিয়েতে পড়েছিলে,আর তোমার বাসার মেয়েদেরও সেইম অবস্থাই হয়েছিলো ছেলেদের জ্বালায়(লাবণ্য সাদাদের ক্লোজ ফ্রেন্ড)…আমি আগে জানলে তোমাকে সেখানে(লাবণ্যের বিয়ে)নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবতাম ই না…”(সাদাদ)

“ও।।।এই মজার কথা বললা….এটা সবাই জানে…শুধু কাল কেন??আজ দেখো কি হয়….আমার ডিপার্টমেন্টেরর ছেলেগুলো তো কাল আমার বাসার সব মেয়েকে জ্বালাইছে নাকি…আজও তো কম সুন্দরী মেয়ে রা আসে নি আর ছেলেও অনেক…হবে সে রকম অনেক কিছু…(নৌশিন)
….সাদাদ আর নৌশিন কথা বলে চলেছে….অপরদিকে ওদের পরিবারের লোকেরাও একে অপরের সাথে কথা বার্তা চালিয়ে যাচ্ছে….হঠাৎ করে একদল ছেলে মেয়ে দৌঁড়ে আসে সাদাদ আর নৌশিনের কাছে……
“আরে..ভাবী…..কিয়্যা বাদ হ্যা….কিতনে মোলাকাদ হয়ি???😃😃”(সবাই এক সাথে চিল্লিয়ে ওঠে)…..সবগুলো নৌশিনের বন্ধু…এতক্ষণ ওপরে ইনজয় করছিলো সাদাদ আর নৌশিনের আসার খবর পেয়ে দৌঁড়ে এসেছে…এরা সবাই যেমন নৌশিনের ক্লোজ তেমনি সাদাদের….সাদাদ ভাই বলতে অঙ্গান সবাই আর মারুফ তো নিজের বড় ভাইয়ের মতো সম্মান করে সাদাদকে…..

“এই কে তোদের ভাবী??”(নৌশিন)
“কেন??আপনি??”(বন্ধুরা)
“কি হচ্ছে কি???কিসের আপনি??কিসের ভাবী???”(নৌশিন)
…..আরে আপনি আমাদের ক্যাম্পাসের সবার প্রিয় বড় ভাই…সাদাদ ভাইয়ের ওয়ান এন্ড ওনলি ওয়াইভ….তো আপনকে অবশ্যই ভাবী বলে সম্মান দেওয়া উচিত….
…সাদাদ ওদের কথায় মুচকি হাঁসতে থাকে….
“হ্যাঁ হ্যাঁ…ঠিক বলেছিস তোরা”(সাদাদ)
“সাদাদ….কি বলো??তার মানপ তুমি ই ওদের নাটের গুরু??”(নৌশিন)
“নাটের গুরুর কি আছে…ওরা সবাই আমার আদরের ছোট ভাই বোন তো আমার বউকে ভবী আর আপনি বলেই তো ডাকবে নাকি???”(সাদাদ)

“এই…ভালো হবে না কিন্তু…তাই বলে সবাই আমায় ভাবী বলে ডাকবে নাকি….নেভার…এটা হবে না….”(নৌশিন)
“এটাই চলবে…”(সাদাদ)(নৌশিনকে ক্ষেপানোর জন্য)
….বাট এই নৌশিনটা এতো সহজে ক্ষেপে না…কি করে যে ওর মাথায় সব কিছু থেকে বাঁচার জন্য একটা বিকল্প বুদ্ধি সব সময় তৈরী থাকে তা একমাত্র উপর ওয়ালা ই ডাকে…
“ওকে…ডাক তোরা ভাবী…নো প্রবলেম…বাট শুধু ছেলেরা ডাকবি…ছেলেরা তোদের প্রিয় সাদাদ ভাইয়ের দলে গিয়ে আমায় ভাবী বলে ডাক…বাট শোন এতো দিনের ফ্রেন্ড তোরা আমার তো আমার পক্ষেও কেউ থাক….সো মেয়েরা আমার দিক থেকে সাদাদকে জিজু/দোলাভাই বল ডাকবি….ওকে???”(নৌশিন)
“এই না না…কিসের দোলাভাই…আমি শুধু ভাই..”(সাদাদ)
“না না সাদাদ ভাই…আমি কিন্তু নৌশিনের দলেই আছি…”(আশা)
“দেখছিস সবাই….বেস্টি আসলেই বেস্টি হয়….আর তোরা নিজের স্বার্থে সব কয়টা সাদাদ ভাইয়ের দলে….”(নৌশিন)

“এই একদম না…আমিও কিন্ত তোকে ভাবী ডাকি নি…”(সোহান)
“যা… আমি তো তোদের দুজনের কাছ থেকেই বেশি আশা করেছিলাম রে…”(সাদাদ)
“হু হুম….সব আশা পূরণ হয় না…এখন তোরা ডিসাইড কর কি বলে ডাকবি আমায়???”(নৌশিন)
“এই না আমি তো দোলাভাই/জিজু ডাকবোই না…”(নেহা)
..নেহার সাথে তাল মিলিয়ে সব মেয়েই ‘না’জানিয়ে দেয়…
“তবে???? “(নৌশিন)

“ওকে… ডান তুই আমাদের ই রইলি…ভাবী ক্যান্সেল…আর সাদাদ ভাই-ভাই হয়েই থাকুক..”(মেয়েরা)
“আমারও একটা মতামত আছে সাদাদ ভাই…”(হৃদয়)
“তোর আবার কি হলো??”(সাদাদ)
“এই মেয়েটা তো(নৌশিনের মাথায় চড় মেরে)…ডিপার্টমেন্টের সব চেয়ে পিচ্চি একে কি ভাবী ডাকা ঠিক হবে??আমার তো কেমন জানি লাগে….”(হৃদয়)

“বাদর,আমি পিচ্চি…এই সবাই ভাবী বলে ডাকবি আমায়…তোরা সবাই আন মেরিড শুধু আমি মেরিড সো আমি সবার সিনিয়ার…ভাবী বলো ডাকবি সবাই-সম্মান দিয়ে কথা বলবি”(নৌশিন)
“হুপ…মেরিড তো কি…বিয়ে করে কি পাঁচ ফুট ছয় হয়ে গেছিস নাকি???সেই তো পাঁচ ফোট দুই ই আছিস…আর দেখতে তো ঠিক চড়ই পাখির বাচ্চা”(মুগ্ধ)
“তোর কি রে…এই তুমি দেখছো না??তোমার সামনে তোমার বউকে কেউ এভাবে ইনস্টাল করছে চোখে পড়ে না তোমার???”(নৌশিন)
“আহ্…মুগ্ধ ছাড় না…এভাবে বলিস না বউ হয় আমার☺”(সাদাদ)
….এভাবেই সবাই মজা করতে থাকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে…….

প্রেমঘোর পর্ব ১৩

ধীরে ধীরে গেস্টরা আসতে শুরু করে…সবার নজর যেন নৌশিনের দিকে…এমন ছেলের বৌ আনায় পাড়া পড়শি রা সাদাদের মায়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ…….দুই ছেলের এমন বৌ পেয়ে সাদাদের মা যেন আজ একটি পরিপূর্ণ আত্না……………………….

প্রেমঘোর পর্ব ১৫