প্রেমঘোর পর্ব ২৬
নার্গিস সুলতানা রিপা
ঘড়ির কাটায় সকাল ৮.১৫
“নৌশিন……..নৌশিন……..কি রে ঘুম হলো তোর?…….”
দরজার বাইরে নৌশিনের ভাবী কড়া নাড়ছে কিন্তু ভেতর থেকে কোনো সারা না পাওয়ায় নৌশিনের নাম ধরে ডাকাডাকি করছে বাট তবুও কারও কোনো পাত্তা নেই…………
“এই নিউ কাপল…..আপনাদের কি ঘুম হলো?নৌশিন……কি রে আর কত ঘুমাবি?আমি কিন্তু এবার দরজা ভেঙে ভেতরে ডুকবো………..”
বাইরে ডাকাডাকির শব্দে সাদাদের ঘুম ভেঙে যায় অবশ্য ডাকা ডাকি তে সাদাদের ঘুম সহজে ভাঙে না কিন্তু সাদাদ রোজ আট টায় ঘুম থেকে উঠে জিম করে তাই গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলেও অভ্যাসবসত এসময়ে ডাক পড়ায় ঘুম টা ভেঙে যায়…..
চোখ খুলে সাদাদ,দেয়াল ঘড়ির দিকে তাঁকিয়ে দেখে ৮.২০।।।।।আর বুকের উপর ঘুমন্ত একটা পরী……
সাদাদ ডাকাডাকির ধরণ শোনেই বুঝতে পারে যে ‘ভাবী ডাকছে’……………
তাই নৌশিনকে ডকতে শুরু করে…..”নৌশিন,…….উঠো….সাড়ে আট টা বাজে…….”
নৌশিন নিশ্চুপ………
সাদাদ নৌশিনের গায়ে একটু নাড়া দিয়ে “নৌশিন….উঠবে না?।।।।”
নৌশিনের জন্য ঘুমের পারফেক্ট সময় এটা…..
তাই এ সময় সাদাদ ডাকাতে নৌশিন একটু বিরক্ত ই হয়….অবশ্য এই সময়ে ও রোজ ই বিরক্তিকর বোধ করতো ওর বাবা মায়ের ডাকাডাকির চোটে……
আর আজ এই সাদাদ ডাকাডাকি শুরু করেছে…..
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সাদাদের নাড়া খেয়ে নৌশিন সাদাদকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে…..
ঐ দিকে বাইরে নৌশিনের ভাবী এখনও দরজার বাইরে ডেকে চলেছে……
“নৌশিন উঠো টেডি বেয়ার,ভাবী ডাকাডাকি করছে……”
“ইশশশ,আর একটু ঘুমাই….”
নৌশিনের ঘুম ঘুম গলার আওয়াজ সাদাদ এতো দিন ফোনে শুনতো,আর আজ রিয়েল লাইভে……
বেশ লাগছে সাদাদের!!!
আবারও যেন মুগ্ধ হয়ে গেছে এমন ঘুম ঘুম কন্ঠে….
বাইরে ভাবী দাঁড়িয়ে ডেকে চলেছে,
“আরে ভাবী আসছে……”
“আর একটু প্লিজ…..”
সাদাদ আর ডাকাডাকি না করে নৌশিনকে আস্তে করে ছাড়িয়ে বালিশের উপর মাথা রেখে নিজেই দরজা খুলে দেয়…………….
“আরে,তুমি?তা তোমার বউ এখনও উঠলো না?…..”
“ঘুমাচ্ছে আর কি…..”
“হুম,ওর যত ঘুম তো সকাল বেলা,তা আপনারও কি সকালবেলা ঘুমের অভ্যাস আছে নাকি?”
“সাড়ে সাতটা বা আট টা….”
“আহা রে,আর একটু বেশি হলেই দু জন সেইম হতো….তাহলে কিন্তু একটা ফেভার হয়ে যেতো দুজনে সকালে ঘুম আর রাতে…….”
সাদাদ ঘাড় চুলকিয়ে মুচকি হাঁসে,আর সাদাদকে ব্লাশিং হতে দেখে ভাবী ও হেঁসে ফেলে……….
“আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে জামাইবাবু,দেখি আপনার বউয়ের কি অবস্থা………..”
ভেতরে ডুকে দেখেন নৌশিন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন…….
“নৌশিন…….নৌশিন……এই মেয়ে……উঠ….”
এমনি ডাকায় কাজ না হওয়ায় গায়ো ঠেলা দিতে শুরু করেন ভাবী………….
“ঐ ঘুম পাগলী উঠ……পড়ে ঘুমা…….এখন উঠ।…….”
“উমমম….আর একটু…..”
“না তুই এখনি উঠ….উঠ বলছি….মা ডাকছে তোকে,কি রে উঠ…….”
সাদাদ নৌশিনকে এভাবে ডাকতে দেখে হাঁসি থামিয়ে রাখতে পারছে না……………
“ভাবী এভাবে বোধহয় হবে না……এই নাও এটা কাজে লাগাও………”(সাদাদ)
ভাবী সাদাদের দেওয়া পানির গ্লাস টা হাতে নিয়ে অল্প পরিমাণ পানি নৌশিনের মুখে ছিটিয়ে দেয়…..আর নৌশিন “ইশশশশ…….”বলে একটু বিরক্ত হয়ে পাশে থাকা একটা বালিশ নিয়ে নিজের মুখের উপর দিয়ে রাখে কিন্তু চোখ এখনও খুলে নি…………
“তুই কি উঠবি না……..”ভাবী নৌশিনের হাত ধরে একটু ঝাঁকি দেয়……….নৌশিন তন্দ্রায় ডুবে ঘুম ভাঙা স্বরে বললো,
“সাদাদ জান প্লিজ রাতে অনেক হয়েছে আর কিছু করো না……..একটু ঘুমাতে দাও প্লিজ সোনা……..”
ভাবী নৌশিনের কথা শুনে সাদাদের মুখের দিকে তাঁকিয়ে এমন একটা ভাব দেখালো,মনে হয় যেন ওনি জানেন না রাতে কি হয়……
তারপর আবার পর মুহুর্তেই অট্ট হাঁসিতে মেতে উঠে…….আর সাদাদ টাল সামলাতে একটু লজ্জা লাগলেও নিজেও হেঁসে ফেলে…………
ভাবী এবার নৌশিনের মুখের বালিশ সরিয়ে আবার পানি ছিটিয়ে,
“আরে আমি তোর ভাবী,তোর জান-সোনা না…..”
“হু….ম……” এখনও ঘুমিয়ে ই আছে……….
সাদাদ নৌশিনকে এমন মরার মতো ঘুমাতে দেখে ভাবীর হাত থেকে পানির গ্লাস নিয়ে পুরো পানি নৌশিনের মুখে ঢেলে দেয়……আর নৌশিন সাথে সাথে চমকে উঠে এক লাফে বসে পড়ে……..
চোখ খুলতেই দেখে এক পাশে সাদাদ আর অন্য পাশে আর অন্য পাশে ভাবী…….নৌশিন হাবলার মতো একবার সাদাদের দিকে তো আরেক বার ভাবীর দিকে তাঁকাচ্ছে…..
ভাবী আর সাদাদ নৌশিনের কান্ড দেখে হাঁসতে হাঁসতে শেষ……
তার উপর নৌশিন আবার ঘুম ঘুম গলায় বলে,
“কি হয়েছে…………”
এতে ওদের দু জনের হাঁসির মাত্রা আরও বেড়ে যায়………ভাবী কোনো মতো হাঁসি থামিয়ে বললো,
“কিছু হয় নি জান,রাতে কি হয়েছিলো সোনা??……”বলেই আবার হাঁসি শুরু করে………
নৌশিন সাদাদের মুখের দিকে হা করে তাঁকিয়ে আছে রোমে কি হয়েছে বুজার চেষ্ঠা করছে……
পরক্ষণে ভাবী আবার বলে উঠে, “কি হয়েছিলো জান রাতে,বললা না তো……….”
নৌশিন কিছু একটা বুজতে পেরে চোখ বড় করে দুজনকে দেখে এক লাফে খাট থেকে নেমে দৌঁড়ে ওয়াশরোমে চলে যায়……..
ওয়াশরোম থেকে বের হয়ে দেখে ঐ দুটো বকবক করছে আর পাগলের মতো হেঁসে চলেছে………………………
Extra Part:
নৌশিন মুখ মুছতে মুছতে ভাবীর সামনে গিয়ে দাঁড়ায়……
ভ্রু কুঁচকে বলে “খবিশদের মতো হাসছো যে?কি হয়েছে,,,দুই বদমাইশ আমার আরামের ঘুম নষ্ট করে এখন হাঁসা হচ্ছে তাই না??”
“না জান,কিচ্ছু না…..তা সোনা,তোমার ঘুম হয়েছে কাল রাতে?”(ভাবী)
“কি সব জান,সোনা বলছো,ছিঃ……লজ্জাও নাই তোমার ভাবী……..”(নৌশিন)
“ও,আমি বললেই লজ্জা নাই আমার তাই না?আর নিজে বললে কিছু না…..”
“আমি!!!…….”
“তা বরকে জান,সোনা এসব ডেকে কি বেঁধে রাখার ফন্দি করছেন আপি জি……..”
নৌশিন লজ্জা পেয়ে গেলো-
ও কিছুটা মনে করতে পারছে,কারণ ও জানে ঘুমের ঘুরে অনেক কিছু ই বলে……..
“ভাবী…….”
“হা হা হা……..ঠিক ই আছে……”
“হুম কিচ্ছু ঠিক নেই,ওকে আমি এসব বলে বেঁধে রাখতে যাবো কেন??ও কি গরু না ছাগল…….গরু ছাগলকে বেঁধে রাখা যায় স্বামীকে না……আর সে তো এমনি ই আমার তাই বেঁধে রাখার প্রশ্ন ই আসে না…….”
সাদাদের দিকে তাঁকিয়ে মুচকি হাঁসে নৌশিন……..
“বাব্বাহ্ আমার ননদিনী তো অনেক কিছু বুঝে রে…..হুম,দোয়া করি যেন সারা জীবন তোর ই থাকে……..বাঁধে নয় ভালবাসায় আকড়ে রাখিস…….”
“আরে ব্বাস……..আমি তো সুপার ম্যান হয়ে গেলাম ভাবী……”(সাদাদ)
“জি না,আপনাকে সুপারম্যান হতে হবে না……ম্যান হয়ে ই থাকুন……..আর হ্যাঁ অন্য কারও না শুধু আমার হয়ে……..”
“হা হা হা হা……….”(সাদাদ)(ভাবী)………
“হয়েছে হয়েছে চল এবার,সেই কখন মা ডাকতে পাঠিয়েছে …এখন না গেলে মা নিজে ই ডাকতে আসবে…..অনেক্ষণ হলো খাবার রেডি……কাল রাতে তো কিচ্ছু খান নি আপনারা…….সো জলদি আসেন……আমি গেলাম….”
ভাবী চলে নিলে….নৌশিন পেছন থেকে চিল্লায়,
“আরে শোনো এতো সকালে আমি খাবো না……..”
পেছন না ফিরে ই ভাবী জানায়,
“তোর খেতে হবে না তোর বর কে নিয়ে আয়…….”
………………………………….
“যাহ্,চলে গেলো…..এতো সকালে মানুষ খায় নাকি….নয় টা বাজতে এখনও পনেরো মিনিটের বেশী সময় আছে,ধুর ভাল লাগে না………”
“আমার পেটে কিন্তু বিড়াল নাঁচানাঁচি করতেছে…….সো প্লিজ চলো…..”(সাদাদ)
“এই তোমার এতো ক্ষুদা লাগে কেনো বলো তো?আর আমি তো শুনছি ক্ষুদা লাগলে নাকি পেটে ইঁদুর বা চুচু দৌঁড়ায় তোমার পেটে ডিরেক্ট বিড়াল!!?….”
“আরে বোকা…….আমার বেশি ক্ষুদা লাগছে তাই ইঁদুর বিড়ালে কনর্ভাট হয়ে গেছে…..আর এখন ভাবীর মুখে খাবারের কথা শুনে বিড়াল টা বেশি লাফালাফি করতেছে……আফটার অল শশুড় বাড়ির খাবার বলে কথা ব্যাপার টা ই আলাদা…..কত কিছু খাবো!…..আহ!…….”
নৌশিন ভেংচি কেটে,
“রাক্ষস একটা…..”
“হুপপপ……..কাল রাতেও কিন্তু শশুড় বাবার সামনে খাওয়া নিয়ে বলছো আর এখন আবার…..বেশি বললে সব বাদ রেখে সারা দিন তোমাকে খাবো……”
চোখ টিপি দিয়ে “তখন ভালোভাবে বুজবে ‘রাক্ষস কি জিনিস’……”
“ছিঃ ছিঃ…….চলো….”
সাদাদ মুঁচকি হেঁসে বললো,
“হুম….চলুন….”
দুজনে খাবার টেবিলের দিকে যেতে থাকে,নৌশিনের বাবা আর ভাই আগে থেকে ই ওদের জন্য ড্রয়িং রোমে ওয়েট করছিলো…….সাদাদ আর নৌশিনকে দেখে নৌশিনের বাবা উঠে দাঁড়ায়,
“এই তো সাদাদ এসে গেছে……চলো বাবা ব্রেকফাস্ট সেরে নিবে…..”
“রিমা তোমাদের হলো?…”(নৌশিনের ভাই)
“হ্যাঁ,হ্যাঁ……সব রেডি এসো তোমরা….”(রিমা-নৌশিনের ভাবী)
……………সাদাদ,নৌশিন,নৌশিনের বাবা,ভাই সবাই মিলে ডায়নিং এর দিকে এগিয়ে যায়……
“বসো সাদাদ……”(নৌশিনের ভাইয়া)
“আরে!আমি কি মানুষ না গরু…..আমি ও তো খেতে ই এসেছি আর তোমরা শুধু ওকে ই বলে যাচ্ছো তখন থেকে……আমার নাম তো মুখেই আসছে না তোমাদের……”
“হা হা হা,পাগলী মেয়ে……তুমি তো ইজিলি আসে বসতে পারবে মা আর সাদাদ বাবা তো নতুন…..তাই আর কি…..”
“হুম,ছাই……সব আদর এখন সাদাদের জন্য……আমার জন্য কিছুই না……”
“আরে,তোকে খাবারের সময় কি আদর করবো বল তো?তুই কি খেতে জানিস নাকি??”
“এএএ,বললেই হলো,আমি অনেক খেতে পারি,জানো ভাইয়া কাল না আমি বিফ খেয়েছি…….”
“আল্লাহ্ গো কন কি আফা,আপনে গরুর গোসতু খাইছেন…….”(একজন সার্ভেন্ট)
“তাই নাকি??কিভাবে সম্ভব……”(ভাই)
“আরে,সাদাদ জোর করে মুখে ডুকিয়েছে আর আমি গিলেছি শুধু বমি ই করতাম বাট সবার খাওয়া নষ্ট হবে তাই পানি খেয়ে কোনে রকম আটকিয়ে রেখেছিলাম……..”
মেয়ে টার কমন সেন্সের একটু অভাব না হলে,বাবার সামনে বলে নাকি যে ‘বর জোর করে মুখে খাবার দিয়েছে’……….
“যাক….তাইলে দোলাবাই আপনারে মানুষ করবার পাইবো…….”(সার্ভেন্ট)
“আরে,তোর কি মনে হয় রে আমি মানুষ না??”
“হ মানুষ……তবে খাওইয়ো মানুষ না……দোলাবাই আপনে আপা রে খাওয়া ডা একটু শিখাইয়া নিয়েন…..”
সাদাদ মুচঁকি হেঁসে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়……..
………একটা অল্প বয়সী ছেলে দৌঁড়ে এসে নৌশিনের পাশে বসে,
“আরে আপু,তুই তো জামাই পেয়ে আমাকে ভুলে গেলি একদম…..আমি যে তোদের বাসায় আছি সেটা তোর খেয়াল ই নেই….তোর বর কি আমার চেয়ে হ্যান্ডসাম নাকি যে আমাকে তোর মনে ই পড়ে না…..”(আরফান-নৌশিনের মামাতো ভাই)
“হুহু…..তোর মতো হ্যান্ডসাম কেউ আছে নাকি??আর আমি তোকে একদম ভুলি নি,কাল আমি যখন আসছি তুই ঘুমাচ্ছিলি আর আমি কেবল উঠে এলাম……সো তোকে ডাকার চান্স পাই নি…….”
“হয়েছে তোর আর বলতে হবে না…….তুই তোর বরকে নিয়ে ই সুখে থাক…..আমার কথা তোর ভাবতে হবে না……”
“হাই ভাইয়া……আমি…”
“আরফান,রাইট?….”(সাদাদ)
“একদম পাক্কা…….আচ্ছা ভাইয়া বলো তো আমি কি কোনো দিক থেকে কম হ্যান্ডসাম?তবু তোমার বউ টা আমার মন বুজলো না………”(আরফান)
“কে বলেছে,তুমি শুধু হ্যান্ডসাম ই না একদম পারফেক্ট হ্যান্ডসাম,তোমার তুলনায় আমি তো জিরো…..”
আরফান নৌশিনের চুল ধরে টান মেরে,
“দেখছিস খালি তুই ছাড়া সবাই আমার মর্ম টা বুজলো…..”
“আহ্……হারামি চুল ধরিস কেন?তোর মর্ম আমার বুজা লাগবে না,বেশি পেঁচাল না পেরে চুপচাপ খেয়ে নে……”
“হু,তোর মতে না যে না খেয়ে ই থাকবো…..ও ফুপি খাবার দাও তাড়াতাড়ি……”
দু-তিন জন সার্ভেন্ট একের পর এক খাবার ডিস রেখে যাচ্ছে………নৌশিন তো পুরো হা………..
“আরে আরে,আর কত খাবার আসে?এতো খাবার কে খাবে?”
“ঐ তুই চুপ কর তো আপু,তোর খেতে হবে না তুই শুধু দেখ আমরা খাই……”(আরফান)
“খা খা….রাক্ষসের দল সব…..”(নৌশিন)
এতো খাবার টেবিলে জায়গা ই টান পড়ে যাওয়ার মতো……..আসলে নতুন জামাই য়ের খাতির করবে বলে কথা তার উপর আবার বড় লোকের কারবার,
“আরফান,আমিও তোমার সাথে একমত বাট খাবার আসলেই ওভার দেখা যাচ্ছে…..”(সাদাদ)
“কি বলো বাবা,কিচ্ছু ওভার হয় নি……সব কিন্তু খেতে হবে…..”
“এ্যা…..”
“জি ভাইয়া এ্যা না বলো হ্যাঁ,তুমি না পারলে আমি তো আছি……….”(আরফান)……….
নৌশিনের ভাবী হাতে একটা ট্রে নিয়ে খাবার টেবিলে রাখে,
“এই চুপ কর তো আরফান,চুপচাপ খা…..”(ভাবী)
সাদাদ এতো খাবার দেখে যত টা না অবাক হয় তার চেয়ে বেশি অবাক হয় ভাবীর আনা ট্রে তে খাবার বাটিগুলো দেখে………
“সাদাদ অবাক হওয়ার কিছু নেই,এগুলো তোমাকে খেতে হবে না……এগুলো তোমার ওনির খাবার…….”
নৌশিন এতক্ষণে বাটিগুলোর দিকে তাঁকায়……খাবার দেখে তো মহা খুশি…………
“আ……ভাবী……উমমম-লালশাক,আলু ভর্তা,মলা শুটকি,লেবু পাতা ভর্তা…….আআআ,প্রাণ তো জুড়িয়ে গেলো আমার,তাড়াতাড়ি গরম গরম গরম ভাত দাও……..আর সামলাতে পারছি না…….”
বলেই নৌশিন নিজের প্লেট ওর ভাবীর দিকে এগিয় দেয়…….
“আরে দাও দাও আগে আমাকে সাদা ভাত দাও,পরে তোমাদের জামাই আদর শুরু করে…..আমার আর তর সইছে না……..”
“এই থাম তো তুই…..”(নৌশিনের ভাইয়া)
“ভাইয়া,তুমি জানো কত দিন পর মলা শুটকি খাবো আমি…..ইইইইই ভেবে ই আমার নাঁচতে ইচ্ছে করছে…..”(নৌশিন)
“তবু আমার অন্য জনকে রাক্ষসী বলে,শালা শুটকিখোর…….”(আরফান)
রান্নাঘর থেকে,
“আরফান,কি সব ভাষা তোর?দাঁড়া তোর কপালে থাপ্পর আছে….”(নৌশিনের মামী)
আরফান আবার নৌশিনের চুল ধরে টেনে ফিসফিসিয়ে বলে,
“হারামি তোর জন্য আম্মুর কাছে বাঁশ খেতে হয়……”
“আআআআআআ……মামী,তোমার ছেলে আামার চুল হাত দিচ্ছে কিন্তু…….”
“আরফান……..কি করছিস তুই,দাঁড়া আমি আসছি…..”
নৌশিনের দিকে চোখ পাঁকিয়ে,
“ওমমমমম……”
“এই আরফান,বাবা দুষ্টুমি করে না…….খেয়ে নাও-তোমার ফেবারিট ডিসও তো আছে দেখছি……”
“জ্বি আঙ্কেলে…….হুম হুম…..”
প্রেমঘোর পর্ব ২৫
সাদাদ শুধু বসে বসে ওদের কান্ড দেখছে,একে তো জামাই আদরের খাবার ওভার দেখা যাচ্ছে…..দ্বিতীয়ত নৌশিন আর আরফানের খুনসুটি,আর সবচেয়ে অবাক হচ্ছে নৌশিনের খাবার ডিস দেখে যার জন্য নৌশিন এতো এক্সসাইডেড হয়ে গরম,সাদা ভাতের জন্য প্লেট পেতে বসে আছে…….