প্রেমঘোর পর্ব ৮১+৮২
নার্গিস সুলতানা রিপা
সাদাদ নৌশিনকে ঝাপটে ধরে ঘুমিয়ে আছে।
দুজনেই বিভোর।
সুখের ঘুম বলে কথা।💜💜
রাফসা সাদের বুকের উপর মাথা রেখে শুয়ে আছে।সাদ রাফসার মাথায় একটা হাত রেখে অন্য হাত দিয়ে রাফসাকে জড়িয়ে রেখেছে।
দুজনেই একটা পাতলা চাদরে আবৃত।💜💜সারা রাত ঘুমাতে দেয় নি সাদ টা।পাগল হয়ে গিয়েছিলো বোধহয়।
সাদ আবারও রাফসার চুলগুলো সরিয়ে ঘাড়ে কিস করছে।রাফসার চোখ টা লেগে এসেছিলো প্রায়।সাদের দুষ্টুমিতে তন্দ্র টা কেটে গেলো।
“উমহু…..সাদ,প্লিজ একটু ঘুমাই……..”💜💜💜সাদ উল্টো হয়ে রাফসার উপর আবারও শুয়ে পড়লো।কোনো কথা ছাড়াই গলায় মুখ গুজলো।
নেশা কাটে নি এখনো বেচারার।
রাফসা সাদকে আটকাতে পারছে না আজ।যেনো কত দিন পর তাঁর বউকে কাছে পেয়েছে এমন একটা ভাব।
রাত তিনটার বেশি বাজে এখনো পাগলামি কমছে না।
“সাদ,কি করছো???পাগল হয়ে গেছো???”
“হুম……পাগল…….আদর তো আমি করছি….তোমার তাতে কি……”
“ছাড়ো না,সকাল হতে চললো,একটু না ঘুমালে সারা দিন থাকতে পারবো না।কত কাজ সারা দিন”
“হুশশশশশ…..কিসের কাজ।কে করতে বলে কাজ তোমায়।কাল থেকে যেনো কোনো কাজ করতে না দেখি।দরকার পড়লে আরও সার্ভেন্ট লাগাবো।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সাদ রাফসার হাত টা টেনে নিয়ে বললো,”কত নরম হাতটা কে শক্ত করে ফেলতেছো কাজ করতে করতে।কাল থেকে শুধু আমাকে আর ছেলেকে সময় দিবে।নো কাজ।….”
“আচ্ছা….করবো না।এখন তো সরো….”
“উমহু,বলছিলাম না সাত বছর আগে যা করেছিলাম আজ তাই করবো……..
অবশ্য সে দিন কষ্ট হচ্ছিলো তোমার একটু।প্রথম ছিলে তো।ইশশশশ সারা শরীরে দাগ করে দিয়েছিলাম রে বউ……”
রাফসা লজ্জা পেয়ে বললো,
“ধ্যাত…….আজে বাজে কথা সব……”
“আচ্ছা!!!!তাহলে আজ আরও দাগ করি নাকি!!!!”
বলেই ঠোঁটে চুমুর বদলে প্রথমেই বিট দিতে শুরু করলো।রাফসা সামলাতে না পেরে ইচ্ছামতো খামচি দিয়ে চলেছে।তবুও সাদ থামছে না।ঠোঁটের আশে পাশেও কামড়ে দিচ্ছে।
গলায়ও বিট বসিয়ে দিচ্ছে।
রাফসা বারবার হার মানছে সাদের কাছে।চুল খামছে ধরে সাদকে গলার আরও গভীরে নিয়ে যাচ্ছে।কোনো বারণ নেই।না আছে কোনো বাঁধা।দুষ্টুমি করতে করতে সাদ,রাফসাকে নিজের বুকের নিয়ে একসময় ঘুমিয়ে যায়।
আযান দেয় নি এখনো।ফোনের আওয়াজে ঘুম ভাঙে সাদ আর রাফসার।
রাফসার ফোন বাজচ্ছে।
“ওহ্ এতো রাতে আবার কে…বউকে নিয়ে একটু মিষ্টি আদর করবো তার উপায় নেই……..”(ঘুম ঘুম গলায় বললো সাদ)
“দেখি,উঠতে দাও…..এতো রাতে কে ফোন করলো আবার……”
“উঠতে হবে না……”
সাদ রাফসাকে বুকে নিয়েই হাত বাড়িয়েই বেড সাইড টেবিল থেকে রাফসার হাতে ফোন টা দিলো।
“সাড়ে চারটা বাজে,আর পাপার ফোন এতো রাতে???”
রাফসা জলদি কলব্যাক করলো,
“হ্যালো,পাপা।কি হয়েছে???অরূপ ঠিক আছে তো??”(ঘাবড়ে প্রশ্ন করছে রাফসা)
সাদ রাফসার কথা শোনে রাফসাকে নিয়ে উঠে বসলো।প্রশ্ন করলো,
“কি হয়েছে??”…….”কি জানি……পাপা,হ্যালো…….অরূপ ঠিক আছে তো…..”
“হ্যাঁ হ্যালো…..শুনতে পাচ্ছো??”
“হ্যাঁ পাপা,শুনতে পাচ্ছি….বলছি অরূপ ঠিক আছে তো…….”
অরূপের কান্নার আওয়াজ ভেসে আসলো ওপাশ থেকে।
“পাপা,ও কাঁদছে কেনো???”
“চিন্তার কিছু নেই,বাসায় যাবে এখন বায়না ধরেছে।তোমার মা বুঝিয়ে শান্তত করেছে।এখন আবার কান্না শুরু করেছে তোমার সাথে কথা বলবে।নাও কথা বলো….”
“দাও দাও……(সাদের দিকে তাকিয়ে বললো)…আগেই বলেছিলাম!!!ছেলে কাঁদছে এখন…..”
ওপাশ থেকে অরূপ ফোন কান্না নিয়ে কান্না কন্ঠে বলে উঠলো,”আম্মুমুুমুমুমু………”
ধুক করে উঠলো রাফসার বুক।
“বাবা……..কাঁদছো কেনো????”
“আমম্মু……..আমমম্মু……”
“বাবা,কাঁদে না সোনা……..ও বাবা নানু,নানু ভাই আছে তো সেখানে কাঁদছো কেনো বাবু…..আম্মুর কষ্ট হয় তুমি কাঁদলে…..”
“আম্মু আমার কষ্ট হচ্ছে……তুমি আসো…..”
“আব্বু আমার কাঁদে না সোনা।কষ্ট হবে না বাবু,ঘুমাও এখন।আম্মু প্রমিস করছে সকাল সকাল এসে যাবে তোমার কাছে”
“ঘুমিয়েছিলাম আম্মু,তোমাকে ছাড়া হয় না ঘুম।চলে গেছে……”(কান্না করছে এখনও অরূপ)
“বাবা,আমায় ছাড়া এতো কষ্ট হচ্ছে সোনা…তাহলে আসলে না কেনো তোমার সন্ধ্যায়??”
“আব্বু তো আসে নি,নানুভাই আব্বুকে আসতে দেয় নি।তখন তো আমার কষ্ট হয় নি।এখন হচ্ছে
আসো তুমি আম্মু।এখনি আসো।আসো আসো আসো আম্মু……আম্মুমু…..”
রাফসাও কেঁদে দিলো বলে…..চোখে পানি এসে গেছে রাফসার।সেটা দেখে সাদ রাফসার কাছ থেকে ফোন নিয়ে নিলো।রাফসা সাদের বুকে মুখ রেখে এবার আর কান্না আটকে রাখতে পারলো না।
সাদ অরূপের সাথে কথা বলছে,
“আব্বু,তোমার আম্মকে নিয়ে সকালেই এসে যাবো…..”
“আব্বু,এখনি আসো….আমি বাসায় যাবো…..”
“বাবাই আমরা এখনি রওনা দিবো আসতে তো সময় লাগবে।তুমি ততক্ষণ তোমার নানুর কাছে ঘুমাও….”
“আম্মুকে ছাড়া ঘুম আসে না আব্বু……”
“বাবা,একটু ঘুমাও…..তোমার আম্মু আর আমি তুমি ঘুম থেকে উঠার আগেই এসে যাবো…….”
সাদ অরূপের সাথে কথা বলছে।অরূপ কাঁদছে না আর।রাফসা সাদের বুক থেকে সরে গিয়ে এক রকম দৌঁড়ে একটা শাড়ি নিয়ে ওয়াশরোমে ডুকে পড়লো।
পনেরো মিনিটের মতো হয়েছে।তাড়াহুড়ো করে বরিয়ে এলো।
সাদ ফোন বুকে নিয়ে শুয়ে আছে দেখেই মাথা টা গরম হয়ে গেলো রাফসার।
“এখনো শুয়ে আছো তুমি??উঠো,ফ্রেস হও…..আর তাড়াতাড়ি করে গাড়ি বের করো……..”
সাদ কিছু না বলে রাফসার দিকে কেমন একটা ভাব নিয়ে তাঁকিয়ে আছে।
“আতেলের মতো চেয়ে আছো কেনো…..উঠো প্লিজ……আমার ছেলে কাঁদছে…..”
“মানে কি??আযান দেয় নি এখনো।।।এখনি শশুড় বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিবো???”
“সাদ,ছেলে কাঁদছে….আর তুমি এখন এসব বলছো??”
“আরে এখন শান্ত হয়েছে,এসো ঘুমাই একটু….সাত টায় রওনা দিবো নি………নয় টায় পৌঁছে যাবো……”
রাফসা হাতের টাওয়েল টা সাদের শরীরে ছুঁড়ে দিয়ে বললো,
“যেতে হবে না তোমায়।ঘুমাও তুমি……..”
হেয়ার ড্রায়ার নিয়ে তাড়াতাড়ি চুল শুকিয়ে নিচ্ছে।সাদ দেখে যাচ্ছে রাফসা কি করতে চলেছে।চুল টা কোনো রকমে খোপা করে হিজাব কোনো রকমে প্যাঁচ দিয়ে নিলো শুধু।
কি যেনো খুঁজচ্ছে এখন।
ড্রয়ার,টেবিলের উপর সব জায়গায় কিন্তু পাচ্ছে না।
অবশেষে সাদকে ঝাড়ি দিয়ে বললো,
“গাড়ির চাবি কোথায়???”
মুঁচকি হাঁসলো সাদ,জবাব না দিয়ে কাঁথার ভেতরে মুখ ডুকিয়ে নিলো।
রাফসা আগুন হয়ে আছে একদম।কাঁথা টা এক টানে সরিয়ে দিলো সাদের শরীর থেকে,রাগে কষ্টে চোখে পানি এসে গেছে বেচারীর।
“চাবি কোথায়???কানে যায় না আমার কথা???ছেলে কাঁদলো ফোনে,কোনো ইনটেনশন হলো না তোমার???এখনো শুয়ে আছো….আর চাবি আমি চাইছি তবুও দিচ্ছো না……তুমি চাবি দাও আমি একা যেতে পারবো…….”
“বললাম তো সাত টাই……”
রাফসা নিজের ঠোঁট কামড়ে ধরে,কান্না শুরু করলো,
“দিবে না তুমি???সাত টায় না আমি এখনি যাবো……”
“আরে,আবার!!!!!!”
“চাবি দাও তুমি……যাওয়া লাগবে না তোমার……আমার ছেলে আমি একাই যাবো……”
বাধ্য হলো সাদাদ বিছানা ছেড়ে উঠতে।
“আরে পাগলী,ঘুমাচ্ছে তোমার ছেলে……”
“সরো তুমি,একদম দরদ দেখাতে আসবে না…..চাবী দাও আমায় না হলে আমি হাঁটা শুরু করবো….পাঁচ টার পরেই বাস পাবো………”
“আরে আরে,,,কোথায় যাচ্ছো…..মা ছেলে পারোও বটে……..পাঁচ মিনিট দাও গোসল টা সেরে আসি।রাতে কম কিছু করি নি….. গোসল টা করা দরকার তো…..”
“যাবে তুমি???”(ধমক দিয়ে)
“আরে যাচ্ছি আস্তে……এতো আদর করে কি লাভ হলো,সকাল না হতেই ঝাড়ি…..”
“তাড়াতাড়ি যাও তো…..”
সাদ সাওয়ার নিলে আযান দিতে শুরু করে।
“আচ্ছা,তাহলে নামায টা পড়ে যাই বাসা থেকে”(রাফসা)
“হ্যাঁ।সেটাই ব্যাটার…..”
দু জনে একসাথে নামায পরে তাড়াহুড়ো করে রোম থেকে বেরিয়ে গেলো।সাদ যতই মুখে রাফসার সাথে উল্টাপাল্টা বলুক ছেলের জন্য ওর মনটাও খুঁচখঁচ করছে।
“আমি গাড়ি বের করছি,তুমি ততক্ষণে কাউকে বলে আসো যে আমরা যাচ্ছি……..”
“আচ্ছা,আমি নৌশিনকে বলে আসছি……”
নৌশিনের রোমে নক করতেই সাদাদ এসে দরজা খুলে দেয়।উদ্বিগ্ন হয়ে প্রশ্ন করে,
“কি হয়েছে ভাবী,এমন দেখাচ্ছে কেনো তোমায়???”
“অরূপ না কাঁদছে খুব,ফোন দিয়ে কথা বলছিলো আর কাঁদছিলো,আমাকে ছাড়া নাকি ওর ঘুম আসে নি…….আমি আর তোর ভাইয়া যাচ্ছি………মা কে এতো সকালে ডাকলাম না……বলিস তুই…..”
“আচ্ছা,আচ্ছা…..ব্যাপার না যাও তোমরা…….সাবধানে যেও……..”
রাফসা কিছু না বলে জলদি করে নিচে নেমে এলো।রাফসার এমন ছুটাছুটি দেখে হাঁসলো সাদাদ।আনমনে মুখ থেকে বেরিয়ে এলো”হাইরে মা!!!!”
নৌশিন সাওয়ার নিচ্ছিলো এতক্ষণ।ভাগ্যিস সাদাদকে জাগিয়ে গিয়েছিলো না হলে রাফসা নক করতে করতে কাহিল হয়ে যেতো তবুও সাদাদের ঘুম ভাঙতো না।
নৌশিন চুল মুছতে মুছতে এসে সাদাদকে প্রশ্ন করে,
“কে এসেছিলো গো??”
“ভাবী….”
“এতো সকালে??কিছু বললো??”
“অরূপ নাকি কান্নাকাঁটি করছে তাই যাচ্ছে সেখানে,এটাই বলে গেলো….”
“কাঁদছে অরূপ!!!!!ভাইয়া টাও না কি হতো ছেলে টাকে সন্ধ্যা সময় নিয়ে আসলে……”
“বোধহয় রোমান্স পেয়েছিলো…..”(হাসতে হাঁসতে বললো সাদাদ)
“মানে???”
সাদাদ নৌশিনের কাছে দাঁড়িয়ে ওর হাত থেকে টাওয়েল নিয়ে চুল মুছে দিচ্ছে আর বলছে,
“ভাবী,তো সারাক্ষণ ছেলে নিয়েই থাকে।আমার ভাই টার প্রতি নজর দেওয়ার সময় কোথায় পায়?সব সময় তো ছেলে ওনার।রাতেও মে বি আমার ভাইকে কোনো সুযোগ দেয় না।তাই ভাইয়া এই সুযোগ টা কাজে লাগিয়েছে…….রাত ভর সময় টা হয়তো একান্ত নিজের করে পেতে চেয়েছে…..”
নৌশিন সাদাদের হাতে ঘুষি মেরে বললো,
“অসভ্য কোথাকার……..”
“আরে এমনি অসভ্য হয়ে গেলাম……”
“শোনো ভাবীর বাবা না করেছিলো ভাইয়া যাওয়ার জন্য তাই ভাইয়া যায় নি….আর ওনি আছে…..”
“আরে সেটাই তো সুযোগ ভাইয়ার……”
“সাদাদ!তোমার লজ্জা করে না ভাইয়া,ভাবীর সর্ম্পকে বলতে এভাবে…..”
“লজ্জার কি আছে?তুমি আমি যা করি ওরা তো তাই করে…..”
“আসলেই তুমি না…….”
“এই জানো,আগে তো বুঝতাম না….এখন বুঝি….”
“কি??”
“আরে মা-বাবা না মাঝে মাঝে আমাকে আর আপুকে দাদুর কাছে রেখে বাংলোতে কোনো কাজে যেতো……..আর ভাইয়া তো স্কুলেই থাকতো……..”
“সাদাদ!!!!!!!মা-বাবা?????”
“তো কি হয়েছে????আমার বাপ টা বেশি ছিলো জানো…..অনেক দিন আমি দাদুর কাছে থাকবো না বলে কান্না কাটি করতাম।আর মা আমাকে ঘুম পাড়িয়ে রেখে যেতো দেন বাবা মাকে নিয়ে ওদের রোমে চলে আসতো…..আমি তো উঠেই মা কে পাশে না পেয়ে চিৎকার শুরু করতাম…….আর একটা জিনিস তোমাকে বলা হয় নি,”আমি তো রাতে বাবা,মার সাথে ঘুমাতাম ক্লাস টু অবদি,আমারও না মাঝখানে থাকতে গরম লাগতো অরূপের মতো।তাই মায়ের পাশে ঘুমাতাম।বাট মাঝে মাঝে মাঝ রাতে উঠে যখন বুঝতাম,মা আমাকে জড়িয়ে না ধরে বাবার কাছাকাছি আছে তখন উঠে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করতাম।
কারণ এটা ভাবতাম যে,মা শুধু আমাকে আদর করবে আর কাউকে না।তাই কতদিন তো বাবাকে আমার জেদের জন্য অন্য রোমেও থাকতে হয়েছে।তখন আপু আসতো থাকতে মায়ের কাছে।আপু তো তিন ইয়ার বড় আমার চেয়ে।।।আমার জন্য বেচারীও মায়ের কাছে থাকতে পারতো না…..যখন আসতো তখনি আমি কান্না কাটি করতাম।ভাবতাম ও আসলে মা আমাকে আদর কম করবে।আর আপু তো আমাকে অনেক সময় রাগে দুঃখে পিটিয়েছে পর্যন্ত।তবে আপুকে বাবা যা আদর করতো।অফিস থেকে বাসায় ডুকার আগে থেকেই “নিপা মা,নিপা মা….”শুরু হয়ে যেতো…….।তবে আপু আর ভাইয়াকে মায়ের পাশে সহ্য করলেও আমি বাবাকে মায়ের পাশে সহ্য করতাম না।বাবা মায়ের পাশে বসে হাত ধরলেই আমি মায়ের হাত টা নিয়ে আমার বুকে জড়িয়ে ধরতাম।আর তখন বাবা”সিট,”বলে উঠে যেতো সেখান থেকে।আর মা হাঁসতো শুধু।……আহা রে আগে যদি বুঝতাম।রোমান্স কি জিনিস তাহলে তো বাবাকে এতো কষ্ট দিতাম না।বেচারা আমার জন্য তাঁর বউকে ঠিকমতো পেতো না……”
নৌশিন তো সাদাদের কথা শোনে হা।ছোটো বেলা থেকেই সাদাদ এতো পাঁচি!!!!আর এখনও সে সব কাহিনী মনেও আছে!!!!
“এই বউ,আমার শশুড় শাশুড়ী এমন করতো না কি???আমার শশুড় এখনো যা ইয়াং দেখতে।করতো নাকি তোমার শশুড়ের মতো।জ্বালাতে তুমি???”
নৌশিন কিছু না বলে,সাদাদের হাতে টাওয়েল টা রেখে দিয়ে ড্রসিং টেবিলের সামনে বসে যায়।
“আরে বউ বলো না।জ্বালাতে তুমি ওদের???”
নৌশিন অসহ্য হয়ে গেছে।এই পাগলের কথা বার্তা শোনে।চেঁচিয়ে উঠলো এবার,
“সাদাদদদদদদদ……”
“আস্তে ভাই…..”
“যাও সাওয়ার করো…..বদ কোথাকার।আর শোনো আমি তোমার মতো হিংসুটে ছিলাম না।খুব শান্ত ছিলাম।সারাক্ষণ ভাইয়ার সাথে মজা করতাম।বাবার কাঁধে চড়ে ঘুরতাম।কখনো বাবার বুকে কখনো মায়ের বুকে ঘুমাতাম।আর আমি না ইচ্ছা করেই কোনো দিন ভাইয়ার সাথে ঘুমাতাম।আর সকালে উঠে দেখতাম বাবা পাশে আমি আর মায়ের পাশে ভাইয়া শুয়ে আছে।বাবা-মা পাশাপশি বসলে আমি বাবার হাত মায়ের হাতে ধরিয়ে বলতাম”বাবা,তুমি আমাকে যেভাবে আদর করো,মাকেও একটু করো….”
তখন,বাবা,মা দুজনেই হাঁসতো কিন্তু বুঝতাম না তখন বাবা কেনো মাকে আদর করে না আমার মতো বাট এখন তো বুঝি বাবা আমাকে সবার সামনে আদর করলেও মাকে আলাদা করে করতো…….”
“আরে,বউ এতো ভালো ছিলে তুমি?????হায় হায়……”
“তোমার মতো না…. ছোট থেকে বাঁদড়ামি!!!!মা বাবাকেও শান্তি দাও নি আর আপুকেও না।”
সাদাদ নৌশিনকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললো,
“আমার ছেলে মেয়েকেও ওদের নানু বাড়ি পাঠাবো বেশি বেশি।বলা তো যায় না যদি ওদের বাবার মতো হয় তাহলে তো আমার বউকে আমি আদরি করতে পারবো না….”
নৌশিন সাদাদের দিকে আয়না দিয়ে রূক্ষ দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে আছে।পেটে কনুই মরে বলছে,
“মোটেই না,আমার বেবী অল টাইম আমার কাছে থাকবে।।।যখন আমি যাবো তখন যাবে আমার সাথে ওদরে নানহ বাড়ী”
“ইশশশশ বললেই হলো,তোমার ছেলে হলে ওকে তো আমি নানু বাড়ী রাখবো সপ্তাহে দু দিন।আম সিউর ও তোমাকে আমার কাছে আসতে দিবে না।আর মেয়ে হলে সপ্তাহে কেনো মাসেও যেতে দিবো না…..”
“কেনো??কেনো??”
“কারণ আমার বিশ্বাস,ও তাঁর মায়ের মতো কিউট আর শান্ত-মিষ্টি মেয়ে হবে।যে তার বাবাকে বলবে তাঁর মাকে ওর মতো আদর করতে…..”
হাঁসলো নৌশিন সাদাদের কথা শোনে।পাগল একটা!!!
“হয়েছে যাও,এবার সাওয়ার নাও…..নামায পড়তে হবে তো….”
সাদাদ নৌশিনের ঘাড়ে একটা চুমু খেয়ে ছেড়ে দিলো ওকে।বললো,
“যো হুকুম মেরে আঁকা…….”
মুঁচকি হাসলো নৌশিন আবারও।
“আচ্ছা!!!!যাও এবার…..”
সকাল সাত টা বাজে প্রায়।অভ্যাস বসত এই সময়ে ঘুম থেকে উঠে যায় অরূপ।চোখ খুলতেই মুখে খুশির ঝলক।
কারণ ওর পাশে ওর মা শুয়ে আছে।অপর দিকে চোখ ফিরাতেই আরও খুশি হয়ে যায় ওর বাবাকে দেখে।দুপাশে দুজন মাঝখানে অরূপ।সাদ আর রাফসা এসেছে একটু আগে।অরূপ ঘুমাচ্ছিলো,রাফসা ইচ্ছমতো আদর করেছে ঘুমন্ত ছেলেকে।
রাতে ঘুমাতে পারে নি,তাই শুয়ার পর পরই চোখ লেগে এসেছে।
অরূপ এতটাই খুশি হয়েছে বলার বাইরে।ওর মায়ের বুকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে জোরে চিৎকার করে বললো,
“আম্মু……” আর গালে সমানে চুমু দিচ্ছে।সাথে সাথে ঘুম ভেঙে যায় সাদ আর রাফসার।
রাফসাও ছেলে জড়িয়ে ধরে।
“আম্মু……তুমি আসো নি কেনো????আমি কত্ত কেঁদেছি….”
“পাগল আমার,এই তো এসেছি।তুমি কেনো কাঁদছিলে???নানু-নানুভাইয়ের কাছে থাকা যায় না বুঝি??আর তোমার বড় আম্মুও তো ছিলো…..”
“ওরা তো ছিলোই তুমি তো ছিলে না।নতুন বউও ছিলো না।আর আব্বুও তো ছিলো না আম্মু…..”
“মানিক আমার,আর এমন হবে না।তোমাকে একলা কখনো পাঠাবো না।তুমিই তো আসার জন্য বায়না ধরেছিলে।”
“আর আসবো না।তুমি আসলেই আসবো।তোমাকে ছাড়া ভালোই লাগে না আমার।নানুভাই অনেক মজা এনেছে আমি একটাও খাই নি।নানু জোর করে শুধু একটা ডিমম খাওয়াতে পেরেছে।তোমাকে ছাড়া খেতেও ইচ্ছা করে নি আম্মু।”
রাফসা ছেলের কপালে চুমু খেয়ে বললো,
“যখন আমি থাকবো না,তখন কি করবে শুনি??”
সাদ রাফসার এই কথা শোনে অগ্নিদৃষ্টি নিয়ে ওর দিকে তাঁকিয়ে আছে…….
“কেনো আম্মু??কোথাও যাবে তুমি??”
“বারে মানুষ তো এক সময় হারিয়ে যায়।আমিও তো একদিন হারিয়ে যাবো….”
অরূপ রাফসার গলায় মুখ লুকিয়ে বলে,
“না আম্মু,তুমি হারাবে না…..তুমি সব সময় আমার কাছে থাকবে……”
“আচ্ছা….আচ্ছা থাকবো….”
পাশ থেকে সাদ বলে উঠে,
“আর কোনো দিন যদি এমন কথা শুনি তাহলে কি হবে চিন্তাও করতে পারবে না…..”
রাফসা ছেলেকে জড়িয়ে ধরেই বললো,
“আমি জাস্ট ওকে বুঝাচ্ছিলাম…..তেমন ভাবে বলি নি…..”
“নেক্সট যেনো না শুনি…..”
“আচ্ছা!!!সরি…..আর বলবো না…….”
“মনে থাকে যেনো…….”
অরূপ ওর মায়ের বুক থেকে উঠে।বিছানার মাঝখানে বসে পড়ে।তারপর কি যেনে কি ভেবে ওর আব্বুর গলা জড়িয়ে ধরে লম্বা একটা কিস করে গালে।ওর আম্মুর দিকে তাঁকিয়ে একগাল হেঁসে দিয়ে বলছে,
“আম্মু,আব্বুর রাগ কমে গেছে….তোমার হয়ে আমি আদর করে দিয়েছি……”
হাঁসছে রাফসা।
সাদ ছেলেকে বুকে জড়িয়ে অনেকক্ষণ আদর করার পর রাফসার দিকে তাঁকিয়ে বললো,
“তোর মাকে আদর করতে বল একটু আমাকে……সাথে তোকেও করুক…..”
অরূপ রাফসার হাত ধরে টানছে,”আম্মু আসো এদিকে……এখন তুমি আব্বুকে আর আমাকে আদর করো.।।।”
“এই না না……তোমরা দুজন দুজনকে আদর করো……আমি উঠবো এখন……”
“না আম্মু একটু আদর করো…..বেশি না…..”
“আরে করলে কি হয়…..তোমার অরূপকে আদর করবে আমি চোখ বন্ধ করে রাখবো আর আমাকে আদর করবে অরূপ চোখ বন্ধ করে রাখবে।তাই না অরূপ??”
“হ্যাঁ হ্যাঁ….আব্বু তুমি চোখ বন্ধ করো আম্মু প্রথমে আমাকে আদর করবে……..পরে আমি চোখ বন্ধ করবো আর আম্মু তোমাকে আদর করবে….”
“ওকে ডান,তোর হয়ে গেলে আমাকে বলিস কিন্তু চোখ খুলবো…..”
“আরে কি হচ্ছে…….”
“প্লিজ আম্মু একটু একটু…দেখো আব্বু চোখ বন্ধ করেছে……”
অবশেষে বাবা-ছেলের পাগলামোতে হার মানলো রাফসা।ছেলের দু গালে আর কপালে কিস করে দিলো।
অরূপও ওর মাকে কপালে,নাকে কিস করলো।
“আব্বু,আমার হয়ে গেছে…..এবার তোমার টা
……”
চোখ খুললো সাদ।রাফসা কি করবে ভাবছে,ছেলের সামনে কি ভাবে কি!!!!!
রাফসা উঠে চলে আসতে চাইলে অরূপ আর সাদ দুজনেই টেনে ধরে ফেললো।
“এটা তো হবে না,শুধু নিজের ছেলেকেই আদর।আর শাশুড়ির ছেলেকে কিচ্ছু না….”
“সাদ!!!!কি হচ্ছে….ছেলের সামনে…..”
“আরে,অরূপ তো দেখবে না….চোখ বন্ধ থাকবে ওর…..তাই না অরূপ তুই চোখ অফ রাখবি না??”
“হ্যাঁ, আম্মু্…তুমু একটু আদর করো আব্বুকে আমি এই যে(হাতে চোখ বন্ধ করে)চোখ বন্ধ করলাম…..”
এই সুযোগে সাদ রাফসাকে এক টানে নিজের বুকের উপর ফেললো।রাফসার দিকে তাঁকিয়েই বললো,
“চোখ খুলিস না অরূপ,আমার হয়ে গেলে তোকে বলবো।”
“ওকে আব্বু…..খুলবো না….”
রাফসা সাদকে চিমটি দিচ্ছে।তবুও ছাড়াতে পারছে না।সাদ রাফসার চুলের পেছনে মুঠির মতো করে ধরে রাফসাকে বালিশের উপর শুইয়ে দিয়ে…ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে দিলো।চুমুর সাথে সাথে নরম ঠোঁটে কামড় না দিতে কোন হাজবেন্ডের ভালো না লাগে!!
সাদও তাই করছে।
দু তিন মিনিট যাবত সাদ একি কাজ করে যাচ্ছে।রাফসা কোনো ভাবেই ছাড়াতে পারছে না।এর মাঝে অরূপ বলে উঠলো,”আব্বু,খুলবো চোখ???”
হোশ আসে সাদের যে ছেলে রোমে।এই সুযোগে রাফসার গলায়ও একটা চুমু দিয়ে দেয়।রাফসা ভেবেছে ছেড়ে দিবে।জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে।কিন্তু সাদের মাথায় অন্য কিছু।গলা থেকে মুখ নিয়ে আবারও রাফসার ঠোঁটে লেহন দিচ্ছে।
অরূপ আবারও চোখ খোলার কথা বললে,ইচ্ছা করেই রাফসাকে ব্যাথা দেওয়ার জন্য জোরে জোরে দুটো কামড় বসিয়ে দেয়।রাফসা না পারছে চিৎকার করতে,না পারছে বাঁধা দিতে।ছেলের সামনে ঐসব আওয়াজও মুখ দিয়ে আসছে না।এই সুযোগটাই সাদ কাজে লাগিয়ে এতো জোরে দুটো কামড় বসিয়ে অবশেষে শান্ত হলো।রাফসাকে ছেড়ে দিয়ে দপাস করে শুয়ে পড়লো সাদ।রাফসার সব শক্তি চলে গেছে।
জীবন আর একটু হলেই শেষ হতো বোধহয়।এভাবে কেউ ঠোঁটে!!!!আর কামড় প্রথম থেকে দিলেও লাস্ট কামড় দুটো তো ঠোঁটের বারো টা বাজিয়ে দিয়েছে।রাফসার ঠোঁট কেঁটেও গেছে একটু।
পরে হয়তো ফুলেও যাবে।
সাদ রাফসার অবস্থা দেখে মুঁচকি হাঁসলো।রাফসা ঠোঁটে হাত দিয়ে হাঁপাচ্ছে।
সাদ রাফসার ঘন শ্বাস নেওয়ার কারণে বুকের দিকে নজর দিয়ে বললো,
“হবে নাকি??”বলেই নিজের নিজের ঠোঁটে লিক করলো।
রাফসার আর বুঝতে বাকী রইলো না কিসের কথা বলছে সাদ।লজ্জায় তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে উঠে এক দৌঁড়ে রোমে বাইরে।আর অরূপ আর অপেক্ষা করতে না পেরে চোখ খুলে তখন।
“ওফফ,আব্বু এতক্ষণ লাগে???আম্মু চলে গেলো??”
সাদ অরূপকে বুকে নিয়ে বললো,
“হ্যাঁ রে বাপ….এতোক্ষণ লাগে……..তোর আম্মু বেশি আদর করছিলো তো আমায় তাই…..”
“ও….কিন্তু বেশি কেনো??”
“আমি যে তোর চেয়ে বড়….তাই……”
“ওওওওও
……..”
“হুম…চল আমরা আর একটু ঘুমাই…….”
“ওকে আব্বু….তাহলে মাথায় হাত বু্লিয়ে দাও……”
রাফসা এক দৌড়ে ওর দাদীর রোমে।দাদী ঘুমাচ্ছে….এই সুযোগে আয়নার নিজেকে দেখছে।ইশশশশশ কাল সারা রাত!!!আর এখনও ঠোঁটে।
ভাবতেই বিয়ের পরের কথা মনে পড়লো রাফসার।
সাদ বিয়ের দিন রাতে!!!
কাল আবারও সেটা রিপিড করেছে।যদিও এমন অনেক করেছে সাদ।তবুও রাফসার সাদরে এই সারা রাত জেগে আদর করা টা কেমন অদ্ভুত লাগে।নিজেই ভাবে ক্লান্ত হয় না নাকি সাদ।তবে রাফসার খুব ভালো লাগে সাদের এসব পাগলামী।
রাফসা আঁচল টা সরিয়ে নিলো।কাল রাতে সাদের ভালোবাসার চিহ্ন গুলো ফুঁটে আছে শরীরে।হেঁসে দিয়ে চুল টা খুলে দিলো।ঠোঁটে একটু আগে যা করলো।লাল হয়ে গেছে পুরো।কেঁটেও গেছে একটু তবে সেটা বাইরে থেকে বুঝা যাচ্ছে না।
এমন সময় কারও সর্প্শ পেয়ে পেছন ফিরতেই দেখলো ওর দাদী বাঁকা হয়ে দাঁড়িয়ে রাফসার দিকে তাঁকিয়ে হাঁসছে। রাফসা লজ্জায় জড়িয়ে ধরলো দাদীকে,”দাদী……..”
“আহা রে….লজ্জা!!লজ্জা!!!”
কিছু দাঁত পরে গেছে দাদীর তাই ভাঙা আওয়াজ আসে কথার।
“দাদী……”
“দেখি দেখি…..আমার নাতনীর এতো লজ্জা…..”
নিঁচু হয়ে হাঁসছে রাফসা।
“ইশশশশ,বিয়ে হুলো এতো বছর।একটা তো বেরও করছিস।তারপরও এতো…… জ্বালায় আগের মতোই???
শরীর দেখি আরও ত্যানা ত্যানা করে ফেলছে……এমনিতেই আমার নাতনী কত নরম….বেহায়া ছেলেকে সুযোগ টা ছাড়ে নি আর…..তা হ্যাঁ রে…..শক্তি কমে না তোর মরদের???”
ইশশশশ রাফসা যেনো মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে।কি সব বলছে দাদী।
“বুড়ি,ভালো হবে না কিন্তু…..”
“রাখ তো ছুড়ি,ঐ চায় নাকি আরও দু একটা ছাও????”
“দাদী,বেশি করতেছো তুমি…..”
“চুপ কর তো…..আয়নায় ভালো করে দেখ…..ঠোঁটে তোর মরদের কামড়ের দাগ…..(আঁচল টা একটু সরিয়ে,চশমা রা ভালো করে নিলো)আহা রে নাতনী টা রে কি করছে আমার……”
“বুড়ি তুমি না…..”
“আরে শোন শোন….এতো লজ্জা পাস কেনো???চায় কিছু আরও????এতো আদর করে দে আরও কিছু……”
“ওফফ…..সরো তো….বুড়ি বেশি যুবতী হতে চাও নাকি???”
“হইলে তোর টা দিবি নাকি???”
“দাদী!!!!!!”
“হা হা হা……মজা করি রে মজা করি….কত দিন পর আসলি…..পাই তো না তোরে…..”
রাফসা জড়িয়ে ধরলো ওর দাদীকে।দুজনেরই পরশ আবেশে চোখে পানি এসে গেছে।দু জনেই স্বাভাবিক হয়ে নিলো।রাফসার দাদী রাফসার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো,
“কেমন আছিসস??”
“খুব ভালো দাদী….খুব….তুমি??”
“আমিও……আদর করে এখনো???”
“হুম……”
“চায় আরও কিছু….তুই না বলছিলি মেয়ের খুব শখ ওর….”
“কালকেও বলছিলো।এবার নাকি মেয়ে লাগবেই……”
“কি বললি তুই???”
“কি আর বলবো……শোনে আমার কথা!!!”
“ও তারমানে আদায় করে নিবে……তোর কোনো ইচ্ছা নাই??”
“ইশশশশ….আছে তো…..একটা পুতুলের মতো মেয়ে হবে……রাজার মতো তো আছে একজন…..আরেকটা রানী হলে সব আশা পূরণ আমার…..”
“দিবি দিবি,যা চায় তাই দিবি….তোরে কি কম দেয় নাকি…..তোরে যা সুখ দেয় তুইও দিবি সব
…..”
“দাদী…….”(আবারও জড়িয়ে ধরলো)
“হুম,খুব তাড়াতাড়ি যেনো শুনি তোর মরদের আশা পূরণের কথা…..”
মুঁচকি হাঁসলো রাফসা।
“আচ্ছা,যা এখন….তোর মায়ের কাছে যা।ভালো করে কথাও বলিস নাই হয়তো…..আর বাবুন(অরূপ) তেমন কিছু খায় নাই তোকে ছাড়া।ওর জন্য কিছু কর তাড়াতাড়ি।বাপরেও যেমন আঁচলে বাঁধছোস,ওর পোলা রেও মায়ায় আটকাইছিস….”
কিছু বললো না রাফসা।হাঁসলো শুধু।
“হইছে,যা এখন তোর জামাইরে আসতে বলিস আমার রোমে।।।।আর তোর মায়ের সাথে হাত লাগা একটু,কাল তো তোর মরদও বেশি কিছু খায় নায়……যা জলদি তোর মায়ের কাছে….”
রাফসা চলে গেলো।এখানে আর থাকা সম্ভব না।যা দুষ্ঠু ওর দাদী টা।বাধ্য হয়ে ওর মায়ের কাছেই চলে গেলো।আর ঐ দিকে সাদ আর অরূপ মনের সুখে ঘুমাচ্ছে।
রোজকার মতো রিদি আজও অফিসে চলে গেলো।ভালো লাগে না আজ কাল আগের মতো।তাই বাসা থেকে তাড়াতাড়িই বেরিয়ে পড়লো।নৌশিন আর সাদাদকে একসাথে দেখলে কষ্ট টা বহুগুণ বেড়ে যায়।আর সাথে তো প্যারা দেওয়ার জন্য পরশের দেওয়া আংটি টা আছেই।ইচ্ছা হয় রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দিতে।কিন্তু মায়ের কড়া বারণ আছে।তাই পারছে না।
আনমনে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে।হঠাৎ সামনে আরেক টা প্রাইভেট কার আসছিলো কোনো মতে ব্রেক কষলো রিদি।না হলে উল্টাপাল্টা কিছু হয়ে যেতো।খেয়াল ই করে নি সামনে গাড়ি আসছিলো।
কোনো কাজে মন দিতে পারছে না আজকাল।কাল অফিসেও কাজে ফল্ট হয়ে গিয়েছিলো।যা আগে কখনো হয় নি।আর আজ ড্রাইভিং এ ও!!!!!!
ভাবতেই পারছে না রিদি।যা আগে কখনো হয় নি সেসব ই হচ্ছে ওর সাথে।হবেই না কেনো??
মন যে আর নিজের মাঝে নেই।সেটা তো সব সময় সাদাদের কাছেই পড়ে থাকে।
এসব ভাবতে ভাবতে আর খেয়াল হ নি বেচারী যে রাস্তার মাঝে।গাড়ির হর্ণে হোশ আসে।পেছনে ছোট খাটো একটা জ্যামও লেগে গেছে।তাড়াহুড়ু করে আবারও গাড়ি সার্ট দিলো।মোড় টা ক্রস করতেই সামনে আবারও একটা প্রাইভেট কার।তবে এটা রিদির ভুল না।গাড়ি টা রং সাইড থেকে রিদির গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়।রিদি কিছু বুঝে উঠার আগেই।ওর গাড়ির দরজা খুলে কেউ পাশে বসে পড়ে।
“আরে,আপনি???”
“গাড়ি স্টার্ট দাও…..”
“বাট আপনি এখানে কেনো…..”
“যা বলছি তাই করো…….পেছনে জ্যাম লেগে যাবে না হলে…..”
“আপনি নামুন আগে….তারপর আমি গাড়ি ছাড়বো……আমি অফিস যাবো…..নামুন আপনি…..”
পরশ রিদির কমড় ধরে এক ঝটকায় নিজের সাথে চেঁপে ধরলো।
পরশের ছোঁয়ায় রিদির ভেতরে একটা কম্পন বয়ে যাচ্ছে।এই প্রথম কোনো ছেলে রিদির এতোটা কাছে।সাদাদকে তো রিদি নিজে জড়িয়ে ধরতো।সাদাদ কখনো ধরে নি।তাই সে রকম কোনো ফিলিংস আসে নি রিদির মাঝে।কিন্তু আজ পরশ এতটা কাছে!!!!!
“কি করছেন,ছাড়াুন আমায়……..”
পরশ অপলক তাঁকিয়ে আছে রিদির দিকে।পলক পড়ছে না।
“আরে,ছাড়ুন আমায়………”
পরশ কিছুটা স্বাভাবিক গলায় বললো,
“যাবে না আজ অফিসে…..”
“মানে কি????আমি অফিসে যাবো…..ছাড়ুন আপনি আর নামুন……”
পরশ রিদিকে আরও চেঁপে ধরে রাগী গলায় বললো,
“হ্যায় লেডি,শেষ করে ফেলবল একদম…..যা বলবো তাই করতে হবে……..পরশের চয়েস তুমি,সো পরশের মতো করে চলতে হবে…….চুপচাপ বসবে…..গাড়ি আমি চালাবো……”
“আরে।আমি চালাবো গাড়ি……”
রিদিকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে পরশ রিদিকে একটানে ও যে জায়গায় বসেছিলো সেখানে এনে বসালে।রিদি অবাক!!!কি শক্তি মানুষটার।এক হাতেই রিদিকে এক সিট থেকে অন্য সিটে নিয়ে এলো।পরশ গাড়ি চালু করছে দেখে রিদির মাথা গরম হয়ে গেলো।দরজা খুলে বের হতে যাবে,এমন সময় পরশ আবারও রিদিকে আটকে ফেলে।সিটের সাথে চেঁপে ধরে,রিদি কি বুঝে উঠার আগেই ঠোঁটে ঠোঁট ডুবায়।
রিদির সারা শরীর কারেন্ট বয়ে যাচ্ছে।কি হচ্ছে এসব!!!!!
একটা ছেলের ছোঁয়ায় এতো কিছু!!!!!!ভাবতেই পারছে না রিদি।পরশ পাগলের মতো শুষে নিচ্ছে রিদির ঠোঁট।রিদি বেশ খানিক টা সময় ছাড়ানোর চেষ্ঠা করেও পারলো না শেষমেষ হাল ছেড়ে দিলো।
পরশ মনে হয় হারিয়ে গেছে।জেদের বশে কামড়েও দিচ্ছে রিদির ঠোঁটে।রিদির ফার্স্ট লিপ কিস এটা।এমনিতেই অন্য রকম হচ্ছে।তার উপর পরশের কমড় এতো জোড়ে লাগছে,চোখ দিয়ে পানি পড়ছে রিদির।ছাড়াতেও পারছে না রিদি।দম বন্ধ হয়ে আসছে।চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে শুধু।পাক্কা দশ মিনিট পর পরশ রিদিকে ছাড়লো।রিদি যেনো নতুন জীবন ফিরে পেলো।
পরশের দিকে তাঁকিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে আর কান্না টাও আরও বেড়ে যাচ্ছে।
কাঁদতে কাঁদতেই রিদি বললো,
“আপনি এতোটা খারাপ!!!!!আমাকে…..”
আর বলতেও পারলো না কান্নায় ভেঙে পড়লো।
দশ মিনিটে পেছনে অনেক গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে।
রিদির কান্না পরশের মনে দাগ বসিয়ে দিচ্ছে।দেরী করলো না পরশ।গাড়ি সার্স্ট করলো……..
গাড়ি রিদির অফিসে যাচ্ছে না……..বুঝতে পারলো রিদি,খিলক্ষেত পার হচ্ছে….
তার পর আজিমপুর,উত্তরা…হাউস ব্লিডিং ক্রস করছে গাড়ি টা। তার মানে ঢাকার বাইরে!!!!!!
সিটে গা এলিয়ে দিলো রিদি।
বাইরের দিকে তাঁকিয়ে থাকা ছাড়া আর কিছু করার নেই ওর।এই লোকটার সাথে পেরে উঠবে না রিদি,এই কিছু দিনে এটা বেশ ভালো করে বুঝে গেছে সে।চোখের বাঁধ ভেঙে গেছে রিদির।থামছেই না কোনোভাবে।হোক যা হওয়ার সব ছেড়ে দিয়েছে রিদি।যাক যেখানে নিয়ে যায় যাবে সে………….
মনের আসল চাওয়া টাই যখন পূরণ হলো না,আর কোনো চাওয়া পাওয়া নেই এই জীবনে।চলুক না জীবন নিজের মতো……………………….
গাজীপুর থেকে যখন গাড়ি মোড় নিচ্ছিলো তখন রিদি চোখ মুছে পরশের দিকে তাঁকায়।জানতে চায় কোথায় যাচ্ছি আমরা।☺উত্তর দেওয়ার বদলে বহুমূল্যবান একটা হাঁসি দিলো।
রাগ হচ্ছে রিদির।রিদি আচমকা গাড়ির চাবি লক করে দেয়।গাড়ি চলন্ত ছিলো আর এভাবে গাড়ি বন্ধ করায় গাড়ি দু তিন বার আপ-ডাউন করা শুরু করে।এমন ভাবে গাড়ি ঘুড়ছিলো রিদি ভয় পেয়ে যায়।তাল সামলাতে না পেরে রিদির মাথা আর জানালা ভালো ভাবেই বারি খায়।পরশও স্টেয়ারিং এর সাথে ধাক্কা খেয়েছে তবে বেচারা কিভাবে যেন সামলে নিয়েছে।
রিদির দিকে রাগী নজরে তাঁকানোর জন্য দৃষ্টি পাত করতেই শকড হয় সে।জানালার সাথে কপাল এতটাই জোরে লেগেছে কপাল টাই কেঁটে গেছে।হায় রে গাড়ি!!!থামলি তো থামলি শুধু শুধু মালিককে ব্যাথা দিলি আর কি।
পরশ রিদির কাছে গিয়ে দেখে কপাল থেকে রক্ত পড়েছে।আর রিদি সেটা চেঁপে ধরে রেখেছে।পরশ ধরতে চাইলে ধরতে দিলো না রিদি।পরশের মাথায় রাগ চেঁপে যায়।
রিদির হাত টা শক্ত করে ধরে সরিয়ে নেয়……..দু হাত চেঁপে ধরে বলছে,”এই মেয়ে কিসের এতো তেজ তোমার??হুম???একে তো গাড়ি এভাবে থামালে আর কপাল কেঁটে গেছে ধরতেও দিচ্ছো না…..কি প্রব তোমার….”
কপাল কেঁটে যাওয়ায় রিদির যতটা না ব্যাথা হচ্ছে পরশ তার হাত চেঁপে ধরায় তার চেয়ে দ্বিগুণ ব্যথা লাগছে।….”ওহহু…..ছাড়ুন আমায়।আমার লাগছে।বেশি বেশি সব সময়…….”
“এইইই…..”পরশ আরও জোরে চেঁপে ধরে রিদির হাঁত।দাঁত কটমট করছে রাগে।
কি শক্ত হাত এই ছেলের।
রিদির মনে হচ্ছে ওর হাতে কেউ লোহা দিয়ে চাপ দিচ্ছে।
না চাইতেও চোখে পানি এসে গেলো রিদির।
“প্লিজ ছাড়ুন,ব্যথা পাচ্ছি……”
“ব্যথা????এতো নরম??”…..”ছাড়ুন প্লিজ…..”
আরও একটু মোচড় দিলো পরশ রিদির হাত দুটো।রিদি ভয় পাচ্ছে এখন।এই লোকটা এমন কেনো????কুঁকিয়ে উঠলো রিদির ব্যথার চোটে।
হাত ভেঙে যাবে বোধহয় যেভাবে চাপ দিচ্ছে।
“ও মা…….লাগছে আমার খুব….”
কান্না করছে রিদি।তবুও পরশের কোনো মাথা ব্যথা নেই।
“হ্যায় গার্ল,তুমি এতো নরম??নাকি সব মেয়েরাই এতো নরম??কোনটা???”
“ছাড়ুন, আমায় ব্যথা পাচ্ছি তো……..”
“ইশশশশশ।বেশ ব্যথা তাই না??দেখাও তেজ এখন???? পারবে না তেজ দেখাতে????”
রিদির মাথায় হঠাৎ একটা বুদ্ধি হলো।কামড় দিয়ে হাত ছুটানোর জন্য মুখ টা পরশের হাতের কাছে নিতেই পরশ নিঁচু হয়ে রিদির ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে দিলো।আবারও সেই কারেন্ট!!!
আবারও সারা শরীর জোড়ে কম্পন।ভাবতে পারছে না রিদি!!কি হচ্ছে এসব!!!!
ও তো সাদাদের এমন সর্প্শ চেয়েছিলো।কিন্তু এখন ভাবছে, অনেক ভালো হয়েছে সাদাদের সাথে এমন কিছু হয় নি।পরশের ছোঁয়ায় তো শরীরে আগুন লাগছে মনে হয়।কেমন সব নেতিয়ে যাচ্ছে।ছেলেদের ছোঁয়ায় সব মেয়ের কি এমন হয়!!!!সাদাদের ছোঁয়ায় যে নৌশিন সাউন্ড করে!!তার মানে সাদাদের ছোঁয়াতেও নৌশিনের শরীর এতো কম্পিত হয় এতো অশান্ত হয়ে উঠে।নৌশিন তো সাদাদকে ভালোবাসে।ওরা হাসবেন্ড ওয়াইফ।কিন্তু পরশ??কে হয় ও আমারা???
ওর ছোঁয়ায় আমার কেনো এমন হচ্ছে???শুধু কি ও ছেলে আর আমি মেয়ে বলে?????
রিদির ভাবনায় ছেদ ঘটলো পরশের কামড়ে।পরশ ঠোঁটে কিস করার সাথে এবার একটা বিশাল কামড়ও বসিয়ে দিয়েছে।রিদির চোখ এতক্ষণ বন্ধ ছিলো।ভাবছিলো অনেককিছু।ঠিক কতক্ষণ পরশ তাঁকে কিস করেছে বলতে পারবে না।কামড় খেয়ে বাস্তবে ফিরে এসেছে।চোখ খুলতেই আরও অবাক।কখন পরশ ওকে গাড়ির পেছনে নিয়ে এসেছে বলতে পারবে না সে।সিটে শুয়ে আছে রিদি।আর তার উপর পরশ আধশোয়া হয়ে রিদির উপর।
পাগলের মতো কিস করছে রিদির ঠোঁটে।আর রিদি পরশের চুল আঁকড়ে ধরে আছে।কি হচ্ছে রিদি কিচ্ছু বুঝতে পারছে না।পরশ যেন মাতাল একটা হওয়া।নিজেও নেশা করেছে রিদিকেও নেশা করাতে এসেছে।রিদির কল্পনার বাইরে ছিলো এটা।পরশ রিদির ঠোঁট ছেড়ে রিদির গলায় মুখ ডুবায়।রিদির বুকে ঝড় বয়ে যাচ্ছে।কমশ্র নিচের দিকে যাচ্ছে পরশের মুখ।রিদির ভেতর টায় আগুনের তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে সময়ের সাথে।কিন্তু যখন পরশের হাত রিদির শার্টের বোতামে চলে যায়।রিদির মনে একটা ভয় ডুকে যায়।যতই হোক মেয়ে রিদি!!!!কোনো মেয়েই চায় না এভাবে এসব।সাদাদকে শুধু খারাপ ভাবে বলেছিলো যেনো সাদাদকে আটকে রাখতে পারে।কিন্তু সেভাবে ভেবে বলে নি!!!আজ বুঝতে পারছে,একটা মেয়ের জন্য তার বুক কতটা সম্পত্তি।কতটা অহংকারের জিনিস।না না রিদি কিছুতেই তার অহংকারের এতো বড় অসম্মান হতে দিবে না।রিদি মেয়ে একজন।ওর শরীর পবিত্র রাখবে ও।পরশেরর লোভ লাগতেই পারে।ছেলে ও।তাই বলে রিদি নিজেকে এভাবে গাড়ির মধ্যে নিজেকে বিলিয়ে দিবে????অসম্ভব!!!!
উনত্রিশ বছরে চরিত্র কোনো দাগ লাগায় নি।আজও লাগতে দিবে না রিদি।কিন্তু পরশের সাথে তো পারছে না সে।
পরশ এমন কেনো করছে??
পরশ কি বুঝে না রিদির মনে কি চলছে???পরশ কি নিজের মাঝে নেই???নাকি রাগের বশে এমন করছে।
রিদির শার্টের একটা বোতাম পরশ খুলে ফেলেছে এতক্ষণে।রিদির চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে।বাধ্য হয়ে রিদি পরশের হাত চেঁপে ধরলো এক হাতে।আর অন্য হাতে পরশের মাথার পেছনে ধরে দুজনের ঠোঁট এক করলো।
আর কোনো উপায় ছিলো না রিদির কাছে।শক্তিতে কখনো পরশকে আঁটকাতে পারতো না।কিন্তু ঠৌঁটের আবেশে ঠিক পারবে!!!!রিদি পরশের হাত টা ছেড়ে দিলো।দু হাতে পরশের মাথার পেছনে আর ঘাড়ে রেখে পরশে নিজের ঠোঁটের আবেশে বেঁধে রেখেছে।চোখ বন্ধ করে উপভোগ করছে পরশ।মহাসুখে আছে পরশ।তার রিদি তাঁকে ভালোবাসার পরশ দিচ্ছে।কোনো জোড় করছে না পরশ।
দুজনেই দুজনকে ভালোবাসার ছোঁয়ায় মাতিয়ে তুলেছে।রিদি একের পর এক কিস করে চলেছে পরশকে।তা ছাড়া কোনো উপায় নেই,পরশের রাগ কমানোর।একটা সময় রিদি বুঝতে পারে পরশ পরম আবেশে রিদিকে হালকা করে ধরে রেখেছে রিদি এই সুযোগ টা কাজে লাগালো।পরশ কে সাথে সাথে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো নিজের উপর থেকে।উঠে বসলো নিজে।পরশের দিকে তাঁকালো না পর্যন্ত জলদি করে গাড়ির দরজা খুলে সামনে গিয়ে বসে।আয়না টা নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে দেখছে নিজেকে।পরশের চিহ্ন লেগে আছে ঠোঁটে গলায়।যেমন টা বিয়ের পরের দিন রিদি নৌশিনের ঠোঁটে আর গলায় দেখেছিলো।কিন্তু শার্টের একটা বোতাম খুলা দেখে মাথায় রক্ত চড়ে যায় রিদির।ছিঃ লোক টা কি খারাপ!!!শরীর চাই ওনার।ইচ্ছে করছে খুন করে ফেলি।রিদি হঠাৎ খেয়াল করলো ওর মাথায় ব্যান্ডেজ করা।কিন্তু এটা কখন হলো!!!!
কিছুই বুঝতে পারলো না রিদি।সে কি ঘুমিয়ে গিয়েছিলো।কামড় খেয়ে ঘুম ভেঙেছে নাকি!!!!আর কিছু না ভেবে রিদি মোবাইল টা বের করলো।…মাথায় যেনো আকাশ ভেঙে পড়লো।সকাল সাত টা বাজে দেখে।এটা কি করে সম্ভব!!!!…রিদি তো গাড়ি থামিয়েছিলো এগারোটার দিকে।আর এখন সকাল সাতটা।কি ভাবে সম্ভব!!!…তার মানে রিদি এগারো টা থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত পরশের সাথেই আছে।চমকে উঠলো রিদি।বাইরের দিকে তাঁকিয়ে দেখলো একটা খোলা মাঠে ওর গাড়ি।সকালের সূর্য একটু আগে যে উঠেছে বুঝা যাচ্ছে।তার মানে রাতেও সে পরশের সাথে বাইরে রাত কাটিয়েছে।।।।আর ভাবতে পারছে না রিদি।
মাথায় পুরো আকাশ ভেঙে পড়েছে।বাড়ির লোক নিশ্চয় চিন্তা করছে।রিদি কখনো রাতে বাড়ির বাইরে থাকে নি।পার্ট করলেও বারোটার মাঝেই বাসায় চলে গেছে।আর কাল রাতে কি না!!!ছিঃ..
পরশ সামনে এসে বসলো।
সিটে হেলান দিয়ে রিদির দিকে তাঁকিয়ে মিটমিট করে হাঁসছে।
গা জ্বলে যাচ্ছে রিদির।
রাগ ফুসছে।…”মিস.হটি শার্টের বোতাম টা লাগান আগে,তারপর রাগ দেখান…..”
রিদির চোখ যায় ওর শার্টের দিকে।ভুলেই গেছিলো শার্টের কথা।পরশের অন্য দিক ঘুরে শার্টের বোতামটা লাগিয়ে নিলো।পরশের দিকে ফিরে বললো,”আচ্ছা,আপনি এতো খারাপ কেনো???লোস কোথাকার….আমার সাথে এমন করেন কেনো???”
হাঁসলো পরশ,সামনের দিকে তাঁকিয়ে বললো,”তুমি এমন তাই……”
“মানে???”
“এরপর থেকে আমার সামনে আসলে ওড়না নিয়ে আসবা।ইভেন আজকের পর থেকে ওড়না পড়বে তুমি।ফ্রেন্ডদের কাছে শুনতাম “মেয়েদের বুকটাই নাকি ছেলেদের বেশি আকর্ষণ করে…….” আজ বুঝলাম ছেলেদের ইনটেনশন টা আসলে মেয়েদের শরীরের কোথায় কোথায় যায়…..যদিও ভালোবাসার একটা ব্যাপার আছে।আমার তো অন্য মেয়েদের সব দিকে নজর যায় না।যায় তোমার টার দিকেই…তেমনি সব হাসবেন্ডের ক্ষেত্রে…আর যারা অন্যের জিনিসে নজর দেয় তারা তো চরিত্রহীন…আমি নিশ্চয় তাদের দলে পড়ি না…”
রিদি অবাক!!!এই ছেলের মুখে কোনো লাগাম নেই।তবে কথাটা ঠিক,ওড়না পড়া উচিত সব মেয়েদের।ভাগ্যিস আজ রিদি ফিরাতে পেরেছিলো বলে।না হলে সর্বনাস হয়ে যেতো।ছেলেদের তো আল্লাহ্ এভাবেই সৃষ্টি করেছে নিজের ভালোবাসার মানুষকে এভাবে দেখলে লোভ তো লাগবেই।
তবুও পরশ টা বেশি নির্লজ্জ।
“পড়বো না আমি ওড়না..আপনার কি???হ্যাঁ?আমি আপনার খাই না পড়ি?কে আপনি??”
পরশ রিদির কাছাকাছি দিয়ে আবারও হাঁসলো…….হাত টা রিদির কপলা থেকে নাক নাক থেকে ঠোঁটেও স্লাইড করছে।।।কমশ্র গলা আর আরও নিচে নামতেই রিদির আঙ্গুল টা ধরে ফেলে।নিজের অজান্তেই বলে ফেলে,”প্লিজ পরশ….আপনি এমন কেনো???গায়ে হাত শুধু,কেমন জানি লাগে আমার।দূর থেকেও তো কথা বলা যায়।”..পরশ রিদির কথা চোখ বেটে শুনছে।রিদি কথা বলার পর খেয়াল করলো।ওর ভয়েস টা ওর নিজের কাছেই অনেক আকর্ষণীয় আর লজ্জা মাখা মনে হচ্ছিলো আগে তো কখনো কথার মাঝে লজ্জা খুঁজে পায় নি সে।তাহলে আজ?তবে কি আসলেই পরশ ওর জীবনের রং বদলাতে এসেছে।
সাদাদকে ভুলিয়ে দিতে এসেছে।”রাফসা ভাবী তো বলেছিলো,সব মেয়েই নাকি বরফের মতো হয় আর তাদের গলাতে আগুন হয়ে সব মেয়ের জীবনে একজন বীর পুরুষ আসে…যে কিনা শুধু শরীর না,মন-চিন্তা-আবেগের সবটা জোড়ে রয়ে যাবে…..যার প্রথম ছোঁয়ায় নাকি দুনিয়ার সব কিছু এলোমেলো হয়ে যায়…যার ভালোবাসার চিহ্ন গায়ে থাকলে নাকি নিজের সব চেয়ে সুখী মনে হয়……যার বেহায়ার মতো কথাগুলো শোনতে খারাপ লাগে না…..যার নজর শরীরের গভীরে থাকলেও তাঁকে খারাপ বলা যায় না…যার বেহায়পনা গুলো সব চেয়ে ভালো লাগে…যে নাকি ভুলিয়ে দিতে পারে…জান্নাতের সুখও দিতপ পারে…..”।পরশের দিকে তাঁকিয়ে ভাবছিলো রিদি।সত্যিই রিদির সাথে কেনো এমন হচ্ছে।পরশ কি আসলেই ওর জীবনে আগুন হয়ে এসেছে।যে রিদিকে গলিয়ে ফেলবে।যার ছোঁয়ায় রিদি দুনিয়া ছেড়ে জান্নাতের আবেশ পাবে।হঠাৎ পরশ রিদির সামনে তুরি বাজলে ঘোর কাঁটে রিদির।রিদি বোকার মতো চেয়ে আছে পরশের দিকে।
হাঁসি দিয়ে বললো,”তোমার মতো সুন্দর ফিগারের মেয়ে যদি আমার সামনে সারা রাত ঘন নিশ্বাস নিতে নিতে ঘুমায়….দিনের বেলা ঘুমের ঘুরে আমাকে জড়িয়ে ধরে…সকালের আবেশে আমাকে কাছে পেয়ে আরও কাছে টেনে নেয়…আর নিজেকে বাঁচানোর জন্য বাধ্য হয়ে ঠোঁটে ঠোঁট ডুবায়…তার শরীরে তো আমার টান থাকবেই তাই না??”
রিদি পরশের থেকে একটু দূরে সরে গেলো।এর সাথে বকবক করার কোনো মানে হয় না।
পরশও নিজের সিটে বসে একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললো,
“আমি জানি রিদি তুমি আমাকে আবেগের বসে বা ভালোলাগা থেকে ঠোঁটের ছোয়া দাও নি..তোমার নিজেকে বাঁচাতে আমার মনোযোগ অন্য দিকে নিয়েছো।অনেক ধন্যবাদ তোমাকে।আসলে আমি ভুল করতে যাচ্ছিলাম।নিজের মাঝে ছিলাম না।ঐ মুহুর্তে তুমি না ফিরালে আসলেই অপরাধী হয়ে যেতাম……তো সরি ফর দেট ইনটেনশন।বার নট ফর লিপ কিস এন্ড বিট…”
রিদি রাগ করবে না হাঁসবে বুঝতে পারছে না।সরি বললো আবার পেছনে লেগুড়ও রেখে দিলো।
পরশ রিদির সিট ব্লেট টা বেঁধে দিতে দিতে হাঁসি দিয়ে বললো,
“তবে বিয়ের পর কিন্তু কোনো চালাকি হবে না। মনোযোগ ঘুরাতে চাইলেও কোনো কাভ হবে না।একবার যখন নজর পড়েই গেছে তৃষ্না তো মেটাবোই….বউয়ের জিনিস বলে কথা….ব্যাপার টাই আলাদা।।”
রিদির বেশ লজ্জা লাগছে।কি অসভ্য ছেলে টা।মুখে কিছু আটকায় না।রিদি ধাক্কা দিয়ে পরশকে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে দিলো।”চুপচাপ নিজের সিটে বসুন,লুচু কোথাকার।কত মেয়ের দিকে নজর দিয়েছেন কে জানে???আর শুনুন রাতে একলা পেয়ে আবোল তাবোল কিছু করেন নি তো??”
“হ্যায়…..ভাব নিয়ো না।কাল দিন থেকে বিকাল পর্যন্ত সেন্সলেস ছিলে।ব্যান্ডেজ করানোর পর ঘুমের ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিলো।এক ঘুমে সকাল সাত টা বেজিয়েয়ে ফেলেছো।শরীরের দিকে তাঁকিয়ে দেখো তো হাতা টা যেভাবে ফোল্ড করা ছিলো ওভাবেই আছে।সকালে এতো ঘুন নিশ্বাস নিচ্ছিলে আর গ্রামের দিকে আছি তাই শীত পড়ছে একটু একটু নিজেই জড়িয়ে ধরেছিলে…তাই উষ্নতা দিচ্ছিলাম একটু পরে লোভে পড়ে গেছিলাম।ব্যাস এই টুকুই…”
রিদি মনে মনে একটু খুশি হলো।যতটা খারাপ ভেবেছিলো লোকটাকে ততটা খারাপ মা লোক টা।তা হলে রাতে চাইলেই উল্টা পাল্টা কিছু করতে পারতো।আবার জ্ঞানও ছিলো না নাকি মাথায় লাগার কারণে তখনও কিছু করে নি।শার্ট পেন্টের দিকে নজর দিয়ে বুঝতে পারলো কোথাও একটু পরিবর্তনও নেই।যাক বাঁচা গেছে।
“হয়েছে।অনেক সাধু আপনি।এবার আমি বাসায় যাবো…কোথায় এনেছেন আপনি?আর সারা রাত আমাকে গাড়ির মধ্যে রেখেছিলেন।বদমাইশ লোক…বাসায় গিয়ে আমি কি বলবো সারা রাত কোথায় ছিলাম??”
“আমার দাদু বাড়ি ছিলে….”
“মানে?”
“মানে আমি তোমার বাসায় ফোন করে জানিয়েছি তোমাকে আমি আমার দাদুর গ্রামের বাড়িতে এনেছি।দাদুকে দেখাতে।সো নো টেনশন।…”
“আজব…মিথ্যা কেনো বললেন??”
“তো কি বলতাম??তোমাকে নিয়ে আমি একা গাড়িতে ছিলাম??কি ভাবতো জানো??”
“মানে?”
“ভাবতো তোমার সাথে আসল কাজ করছি আমি….”
হাঁসতে লাগলো পরশ……
রিদি পরশের বুকে সজোরে একটা ঘুষি দিলো।লেগেছে পরশের তবুও হাঁসছে।
“আপনি আসলেই বেহায়া….”
“আসলেই খুব রে সুন্দরী…..তবে সত্যি বলতে আসল কাজ টা কিন্তু শীর্ঘই করবো…..সে দিন অবশ্য শার্ট পেন্ট থাকবে তোমার….লাল শাড়ি গা ভর্তি গহনা……ভাবতে পারছো তুমি একটা ইয়াং সুঠাম ছেলের সাথে এক বেডে থাকতে।তোমার গয়না,শাড়ি সব আস্তে আস্তে…..”
রিদি লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে।লোকানোর জায়গা থাকলে লুকিয়ে পরতো।তার তো উপায় নেই।পরশ রিদির অবস্থা বুঝতে পেরে আর কিছু বললো না।মুঁচকি হেঁসে গাড়ি চালু করলো।
“একি আপনি,কোথায় যাচ্ছেন?”
“দাদু বাড়ি যাবো…”
“কেনো??বাসায় যাবো আমি….”
“দাদু বাড়ি গিয়ে দাদুর সাথে দেখা করিয়ে আনি তা না হলে বিয়ের দিন দাদু তোমাকে চিনবেই না পরে বাড়ির লোক ভাববে তুমি এক রাত কোথায় ছিলে।দাদুকে বুঝিয়ে বলবো সারা রাত তুমি কোথায় ছিলো তাহলেই হবে।কেউ দাদুর কাছে জানতে চাইলে বা কোনো কারণে প্রশ্ন উঠলে দাদু বলবে তুমি দাদুর বাড়িতেই ছিলে……”
কিছু বললো না রিদি।অবাক হয়ে তাঁকিয়ে আছে শুধু।একটা মানুষ এতটাও ভাবতে পারে তাঁকে নিয়ে।তাঁর যেনো জবাব দিহি করতে না হয় তার জন্য মিথ্যা বলতেও পারে।গুছাতেও পারে সব কিছু।
পরশ বলে উঠলে,
“শুধু এই টুকু না সব পারবো তোমার জন্য…আর শোনো ফোন ধরবে বুঝলে???সে দিন রাতে ফোন ধরো নি আবার বন্ধ করে রেখেছিলে তাই এভাবে হামলা করেছি।পরের বার এমন করলে খবর খারাপ করবো..”
অজান্তেই হাঁসলো রিদি।
“পাগল একটা”
“কিছু বললে??”
“না কি বলবো…….”
“হুম,গুড…একটা কথা কি জানো রিদি??”
“কি??”
“তুমি যদি সত্যিই আমাকে ভালোবেসে কাজ টা করতে তাহলে আমার কতটা ভালো লাগতো বুঝাতে পারবো না যদিও এমনিতে ভালো লেগেছে বাট পরিমাণে কম…..”
রিদি খুব ভালো করেই বুঝেছে পরশের কিসের কথা বলেছে তাই আর কথা বাড়ালো না।
কিছুক্ষণ পর রিদিই বলে উঠে,
“আমি কি এভাবেই যাবো???”
পরশ একবার তাঁকালো রিদির দিকে।বোধহয় রিদির কথা ধরতে পারে নি।
তাি রিদি আবারও বললো,
“দাদুর সামনে কি শার্ট পেন্ট পড়ে যাওয়া ঠিক হবে???ঐ দিন আপনার বাবা-মা কে দেখে মনে হচ্ছিলো ওনারা গুছানো মেয়ে পচ্ছন্দ করেন তাই মনে হয় ওনারা অবশ্যই শার্ট পেন্ট পরিহিতা মেয়ে তেমন একটা পচ্ছন্দ করেন না। তাহলে নিশ্চয় দাদুও পচ্ছন্দ করবে না…..”
পরশ কোনো কথা না বলে গাড়ি থামালো।আসলেই তো দাদুর বাড়ি গ্রামে।আর প্রথমবার কোনো বউকে এভাবে শার্ট পেন্ট পড়িয়ে নিয়ে গেলে বিষয়টা কেউ ভালো ভাবে নিবে না।
“এখন তোমার জন্য ড্রেস কোথায় পাবো আমি??”
“আমি জানি নাকি??আমার মনে হলো তাই বললাম বাকী টা আপনার ব্যাপার….”
“ঢাকা থেকে প্রায় নব্বই কিলো এসে গেছি……রির্টান করতে দু ঘন্টার মতো লাগবে আর দাদু বাড়ি আর মাত্র আধা ঘন্টা…”
“আচ্ছা,চলুন এভাবেই যাবো তাহলে….যদি দাদু বউ পচ্ছন্দ না করে বিয়ে ভেঙে দেয় তাহলে আমার চেয়ে খুশি কেউ হবে না…”
পরশ রিদির কথা শোনে রেগে যায়।দাঁতে দাঁত কষে বলে,
“বিয়ে করার শখ নেই??”
“আপনাকে না…”
“কাকে???”
“আমার ভালোবাসার মানুষকে……”
পরশের মনে হচ্ছে কেউ ওর বুকে লাথি মারছে।
রিদির মুখ চেঁপে ধরে….খুব জোড়ে….
“এই,খবরদার…খুন করে ফেলবো….তোমার কবে কে ভালোবাসার মানুষ ছিলো আমার জানার কোনো দরকার নেই…জানতেও চাই না…একটা কথা সে দিন বলেছিলাম তুমি ‘পরশের চয়েস’ আবারও বলছি তুমি ‘পরশ চৌধুরীর চয়েস’….কবে কাকে তোমার ভালোবাসা দিয়েছো তাতে বিন্দু মাত্র আগ্রহ নেই আমার….এখন থেকে আমাকে ভালোবাসতে হবে….”
পরশ এমনভাবে ধরেছে রিদির জীবন যায় যায় অবস্থা।চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে।আর লোক টার চেহারা তো বাঘের মতো হয়ে আছে। মনে হয় কাঁচাই গিলে খাবে।ভয় করছে রিদির খুব।
পরশ ছেড়ে দিলো রিদিকে।
রিদি ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো।
“ঐ কাঁদবা না একদম…আরও বলবা আগের বি.এফ এর কথা??”
ভয়ে রিদি মাথা নাড়িয়ে না জানায়…..
“গুড……”
পরশ রিদির গালের দিকে খেয়াল করলো খুব চাপ দিয়ে ধরায় দু পাশে ওর হাতের ছাপ বসে গেছে।
পরশ রিদিকে নিজের কাছে টেনে নিলো।বুকে জড়িয়ে ধরলো খুব শক্ত করে।রিদির যেনো সব কিছুতে নতুন অভিঙ্গতা হচ্ছে।পরশের বুকে মাথা রেখে অন্য রকম অনুভুতি হচ্ছে।পরশ রিদিকে বুক থেকে তুলে গালের দু পাশে হাত দিয়ে বলছে,
“খুব ভালোবাসি তোমায়…ভালো লাগা টা ভালোবাসায় গড়িয়ে নিয়েছি আজকাল….আমি ভালো থাকতে চাই সব সময় আর তার জন্য তোমাকে দরকার খুব..খুব দরকার…..জানি না তোমার জীবনে কেউ ছিলো কি না বা আছে কি না…..যদি সেটা সম্ভব হতো তাহলে তোমার পরিবার তাঁকে ছেড়ে আমার সাথে তোমার বন্ধন শুরু করতো না…তারমানে এমন,যে কেউ নেই, বা কেউ ছিলো যে পাস্ট…বা যে আছে সে তোমার সাথে যায় না…তার মানে তোমার জীবনে শুধু আমিই সম্ভব..খুব ভালোবাসবো তোমায় খুব…কোনো আক্ষেপ রাখবো না…দেখো..কোনো আক্ষেপ রাখবো না…”বলেই দু গালে লাল হওয়া জায়গায় চুমু এঁকে দিলো।
গাড়ি চালু করলো আবারও।
রিদি বাইরের দিকে তাঁকিয়ে আছে।গ্রামের একটা হাঁটে পরশ গাড়ি থামায়।রিদি জানতে চায় না কেনো থামালো।পরশ রিদিকে নামতে বললে রিদি কোনো কথা ছাড়াই নেমে আসে গাড়ি থেকে।।বাজার টা বেশ ছোট কিন্তু আশে পাশে সব রকমের দোকান আছে।এমনকি জামা-কাপড় জুতার দোকানও আছে।সকাল নয়টা বাজে বোধহয় তবুও অনেক ভীড়।
হবে হয়তো হাট বার।গ্রামে তো এমনি হয় সপ্তাহে এক-দু দিন বড় ফাঁকা কোনো জায়গায় হাঁট বসে।
পরশ রিদিকে নিয়ে নামার সাথে সাথে ওদের কে ঘিরে ছোট খাটো ভীড় তৈরী হয়।
বড় গাড়ী….এমন পোশাকের মানুষ সহজে তো আর হাঁটে আসে না।তাই সবার নজর যেনো ওদের দিকে।বিশেষ করে রিদির দিকে।পরশ রিদির হাত ধরে একটা শাড়ির দোকানে নিয়ে যায়।
রিদিকে জিঙ্গেস করছে না কোনো কিছু।সব শাড়িই তো কম দামের এখানে।তবে দু একটা শাড়ি চোখে ভালো লাগার মতো সেগুলো তাঁতের।
পরশ রিদির গায়ের উপর শাড়ি ফেলে দেখছে কোনটা রিদিকে মানায়।কিন্তু এতো মহা বিপদ।
রিদির গায়ে সব কটা শাড়িই বেশ লাগছে।লাগবে না কেনো??রিদি কোনো দিক থেকে কম না।লম্বায়,গায়ের রং এ,দেহের গঠনে,চুলে দিক থেকে একশতে একশো।
পরশ কি যেনো ভেবে রিদিকে দোকানে রেখেই গাড়িতে গেলো।আবারও ফিরেও এলো।দোকানদারের হাতে মোটা অঙ্কের একটা বান্ডেল ধরিয়ে কি যেনো বললো।
রিদি বেশ অবাক!!!!দু লোক মিলে দোকানের সব ভালো শাড়ি প্যাকেট করা ছাড়াই গাড়িতে রাখছে।অনেক শাড়ি।সত্তর টার মতো হবে।সবগুলোই বারো তেরশোর মাঝে।কিন্তু তবুও এতো শাড়ির কি মানে হয়।রিদি সব দেখে যাচ্ছে।পরশ কাজ শেষে রিদির হাত ধরে টেনে গাড়িতে বসায়।
রিদি বাধ্য হয় আবারও কথা বলতে,
“এতো শাড়ি কেনো??”
“তোমার জন্য….”
“এতো???”
“হুম…….কম দাম তবে ব্যাপার না……আপাতত চলো আজকের দিন টা……”
“আপনার সাথে না পাড়া খুব মুশকিল….”
“মুশকিল না…বলো অসম্ভব
….”
.
পরশ একটা ফাঁকা মাঠের এক পাশে গাড়ি নিয়ে যায়।
“এখানে কেনো আনলেন??”
“শাড়ি পড়ে নাও…..”
“মানে???”
“মানে আবার কি??বাজারে শাড়ি পড়তে নাকি??এখানে ফাঁকা জায়গা আছে শাড়ি পড়ে নাও…..”
“এটা কি করে সম্ভব???”
“মাঠে চেন্স করতে বলছি না তোমায়….গাড়িতে করো….”
“না…….”
“এই মাথা গরম করবা না বললাম….”
রিদি ভয়ে ভয়ে বলে,
“আপনি যে……”
“আমি তো কি??”
“আপনার সামনে???”
“কেনো প্রবলেম??”
“প্লিজ এমন করবেন না……”
“ওকে,ভয় পেতে হবে না….আমি দূরে দাঁড়াচ্ছি….আর চিন্তার কিছু নেই কেউ আসবে না……..হয়ে গেলে ডেকে নিও আমাকে…..”
মাথা নাঁড়ালো রিদি।
পরশ মেনে একটু দূরে দাঁড়ালো।রিদি বললো,
“আরও একটু সরুন…..”
পরশ রাগী লোকে একবার রিদির দিকে তাঁকিয়ে আরও একটু দূরে সরে গেলো।
কোন শাড়ি টা পড়বে ভেবে পাচ্ছে না রিদি।
অনেক কষ্টে সাদা আর হলুদ রংয়ের একটা শাড়ি নজরে আসলো।হলুদের হালকা রেখা আঁকা সাদা তাঁতের উপর।সেটাই অনেক সুন্দর লাগছে।
তাঁতের সব শাড়িই অসাধারণ।
তবে এটা একটু অন্য রকম সুন্দর।
কিন্তু কিভাবে পড়বে এটা???
কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছে না।
“এই যে শোনোন….”
এগিয়ে আসলো পরশ…”বলো??”
“কিভাবে পড়বো??”
“ওয়াট???”
“হুম…পড়া যাবে না শাড়ি….”
“কেনো??পড়তে পারো না শাড়ি???”
“না না পাড়ি তো….কিন্তু আপনি তো শুধু শাড়িই কিনেছেন।আরও যে জিনিস গুলো লাগে সেগুলো তো কিনেন নি??”
“আরও কি লাগে????”
“আরও…..”
“বলবা তো কি কি লাগবে??না হলে বুঝবো কি করে???”
“আস্তে বলুন না……শাড়ি কি এমনি পড়া যায় নাকি??”
“বলো কি কি লাগবে আমি এনে দিচ্ছি….”
“এনে দিবেন মানে???”
“ওয়াট টা রাবিশ???তো কি আমি জাদু করে বানাবো?? ”
“না মানে….ওগুলো তো বানাতে হয়….আপনি কিনলেই যে আমার মাঁপে হবে তা তো না??”
“কি লাগবে এটা তো বলবে??”
“আপনি কি সত্যিই বুঝতে পারেন নি??না কি মজা করছেন আমার সাথে???”
“রিদি!!!!!!!!”
“ব্লাউজ,পেটিকোট……”ভয়ে চোখ বন্ধ করে বলে দিলো রিদি।
পরশ গাড়িতে একটা ঘুষি বসিয়ে “ওহ্….সিট……”
কেঁপে উঠলো রিদি।চোখ খুলতে ভয় লাগছে তবুও খুললো।
সাহস নিয়ে বললো,
“তাহলে অন্য কোনো দিন দেখা করবো.?? ”
অগ্নি দৃষ্টিতে তাঁকালো পরশ।
“না না আজকেই যাবো….কতটা পথা এসেছি…..”
পরশ কিছু বললো না।দরজা খুলে গাড়িতে ডুকে কোনো কিছু বলা ছাড়াই রিদির শার্টের নিচের দিকের বোতামে হাত লাগায়।চমকে উঠে রিদি।রিদি ধপ করে পরশের হাতটা দু হাতে আটকে নেয়।পরশ আবারও চোখ রাঙিয়ে তাঁকিয়ে আছে রিদির দিকে।
“প্লিজ,আপনার পায়ে পড়ি,এমন করেন কেনো আমার সাথে???প্লিজ এমন করবেন না…..আপনি যা যা বলছেন আমি তো তাই তাই করছি।।আমি কি করবো?আমি কি জানতাম যে আপনি জানতেন না বা ভুলে গেছেন শাড়ির সাথে পেডিকোট আর ব্লাউজ লাগে………প্লিজ এমন করবেন না খুলবেন না বোতাম টা…….”
“জাস্ট স্যাট আপ….রাবিশ……”
রিদির হাত এক ঝটকায় সরিয়ে বোতাম গুলো খুলতে লাগবো।আর রিদি তো কেঁদেই দিলো সব কিছু হারানোর ভয়ে।
কিন্তু রিদি যখন বুঝতে পারলো পরশের আসল ইনটেনশন টা কি তখন আর কান্না করতে হয় নি তাঁকে।
তবে খুব লজ্জা করছিলো খুব!!!!!!
“দেখি,এতো ছটফট করো কেনো কোলে বসে???ঠিক করে বসো……গাড়িতে এমন করে কেউ???”
“আম্মু,আম্মু দেখো…..কি সুন্দর গাড়ি…….কিনবো আমি…..”
“এই না….কতো গাড়ি বাসায়…..চুপ করে বসো….না হলে পেছনে চলে যাবো কিন্তু।তোমার আব্বু একাই সামনে থাকবে……”
কাল থেকে গিয়েছিলো রাফসা।সাদ দশটার দিকে অফিসে গিয়েছিলো।বিকাল বাসায় গিয়েছিলো।কিন্তু রাতে রাফসা জোর করায় ডিনার করে ওদের বাড়িতে রয়ে যায়।আর বাপের বাড়ি থেকে সব গুছিয়ে নিয়ে আসতে রাফসার তো দুপুর ই হয়ে গেলো প্রায়।অরূপ টা যা দুষ্টু নানা-নানীর সাথেও কম করে না।ওকে সামলাতেই হীমসীম খাচ্ছিলো রাফসা।আসার সময় রাফসার মা আরও একদিন থাকার জন্য খুব জোর করছিলো।কিন্তু সাদ রাফসাকে নিয়ে ফিরবে বলে অফিসে যায় নি আর তাই রাফসার বাবা আর জোর করতে দেয় নি।
গাড়িতে উঠার সময় রাফসা অরূপকে নিয়ে পেছনে বসতে চায়।কারণ অরূপ গাড়ি চালু হওয়ার সাথে সাথে লাফালাফি শুরু করে।এতে সাদের ড্রাইভিং এ প্রবলেম হতে পারে।কিন্তু সামনে বসার জন্য এমন বায়না ধরলো যে বাধ্য হয়ে রাফসাকে ছেলেকে কোলে নিয়ে সামনের সিটেই বসতে হয়েছে।জানালা খোলা রাখতে হবে এই পিচ্চি ছেলের জন্য।বাইরে ছোটখাটো কোনো খেলনার দোকানও চোখে পড়লে বায়না শুরু করবে।চাই ই চাই।
“আব্বু আমি নিবো ঐটা……”
সাদ ড্রাইভ করতে করতে সামনের দিকে তাঁকিয়েই জবাব দিলো,
“ছোট গাড়ি দিয়ে কি হবে আব্বু??তোমার তো কত বড় গাড়ি আছে…….”
“না আব্বু আমার ঐটাই লাগবে…..মারুফের আছে ঐরকম।আম্মুকে বলেছিলাম ঐদিন,আম্মু দেয় নি কিনে…..”
“ওফফফ,অরূপ চুপ করো…..বেশি সব সময়।গাড়ি আছে তো বাসায়……..”
মায়ের ধমক শোনে কান্না স্বরে আবার বাবার কাছে আবদার করছে,
“আব্বু নিবো………আব্বু…….”
সাদ কোনো কথা বলেছে না দেখে অরূপ কিছু না বলেই সাদের যে হাত টা স্টেয়ারিং এ ছিলো সে হাত ধরে টানতে থাকে।আর গাড়িও ডানে বায়ে এলোমেলো ঘুরতে থাকে।সাদ খুব সাবধানে কন্ট্রোল নিয়ে আসে।রাফসা অরূপের হাত সরিয়ে নেয় দ্রুত সাদের হাত থেকে।নিজের দিকে ফিরিয়ে ধমকের সুরে বলে,
“এতো পাঁজি হয়ে গেছো তাই না????কি করছিলে???এক্সিডেন্ট হচ্ছিলো তো…বেশি বাড়াবাড়ি তোমার তাই না????রেখে আসবো আবার একা থাকবে তোমার নানুর কাছে……দুষ্টু কোথাকার…..এতো দুষ্টু হচ্ছিস দিন দিন…….”
কান্না করা বাকী ছিলো।সেটাও হয়ে গেলো।
“বাপ রে,গাড়ি তো চালাস ভালোই…..এতো বায়না তোর……চুপ কর বাপ….”
রাগে গজগজ করছে অরূপ।কেঁদেই জবাব দিলো,
“লাগবে না আমার……উউউউ…..”
“এই চুপ….চুপ থাকবি একদম…”
“হেয়,ছাড়ো না…….”
“তুমি তো কথাই বলবে না।বায়না পূরণ করতে করতে এমন অবস্থা হয়েছে ওর।যা দেখে তাই লাগবে……….এই বস চুপ করে।রাস্তায় ফেলে দিয়ে যাবো কিন্তু……..”
“আহ্….রাফসা….শান্ত করাও…..”
“করাও তুমি।যা চায় তাই দাও…..বাড়াও লোভ আরও…………(অরূপের চোখ মুছে দিয়ে)থাম,কান্না করবি না একদম…..”
“আবার কাঁদছিস????কোল থেকে নামিয়ে দিবো কিন্তু….”
অরূপ রাফসার গলা ঝাপটে ধরে কাঁদতে থাকে।যেনো রাফসা ওকে কোল থেকে নামাতে না পারে।ঘারে মুখ লুকিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।
রাফসা আর সাদ ছেলের অবস্থা দেখে দুজনে দুজনের দিকে তাঁকিয়ে হাঁসছে।
“দেখি,মুখটা দেখি……..”
“হয়েছে আব্বাজান আর কাঁদতে হবে না…..নামাবে না কোল থেকে…….”
“কাঁদে না আর নামাবো না……. “(পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে রাফসা)
“কিনে দিবো গাড়ি….সামনেই মার্কেট………”
গলা জড়িয়ে ধরেই দু হাতে চোখ মুছে বললো,
“কিনবো না আমি……”
“আহা রে কত রাগ!!!!!!”(হাঁসলো রাফসা)
সাদও হাঁসলো।
লাগলো বুঝি অরূপের গায়ে।মা-বাবা দুজনেই ওকে নিয়ে হাঁসছে!!!!এটা কি ওর সম্মানে লাগবে না?????তাই কাঁদতে হবে তো।হলোও তাই……………
“এই না না……আর হবে না বাবা…….হাঁসছি না তো….দেখো তোমার বাবাও হাঁসছে না…….”
সাদ একটা শপিং মলের সামনে গাড়ি থামালো।অরূপকে গাড়ি থেকে নামানো দায়।জেদ একটা কাকার মতো।রাগী ভোষ একটা।
অনেক কষ্টে শপিং মলের ভেতরে নিলেও গাল ফুলিয়ে রেখেছে।এতো বড় ছেলেকে কোলে নিয়ে রাফসার পক্ষে সারা মার্কেট ঘুরা কষ্টকর হয়ে যায় একটু।আর যা লাফালাফি করে অরূপ রাগ উঠলে।এমনিতে তো করেই রাগ উঠলে আরও বেশি।তাই সাদ কোলে নিলো।কিনবেই না গাড়ি আর দেখাবেও না মারুফের গাড়ি কেমন।
রাফসাকে একদিন এনে দেখিয়েছিলো কিন্তু রাফসা এতোটা খেয়াল করে নি।অনেক কষ্টে মনে করে মারুফের গাড়ির মতো একটা গাড়ি পেলো রাফসা।সেটা নিয়ে নিলো।কিন্তু অরূপের রাগ এখনো কমে নি।নিবে না গাড়ি।
“বাবা,এতো রাগ করে???দিলাম তো কিনে…….মারুফের তো এরকম ই ছিলো….তুমি এরকম ই তো দেখিয়েছিলে না আমায়???নাও…..”
অরূপ কোনো কথা বলছে না।
“আব্বু,নাও…..তোমার আম্মু দিচ্ছে তো……..”
“লাগবে না আমার……”
“অরূপ……”
“রাফসা ছাড়ো……অরূপ যদি না নেয় তাহলে থাকুক গাড়ি চলো বাসায় চলে যাই…….”
“হ্যাঁ তাই বেটার……..না নিলে কি আর করার…..”
রাফসা গাড়ি টা রেখে দিতেই।অরূপ চেঁচিয়ে উঠলো,
“আমি নিবো…….”
হাঁসলো রাফসা…..’বাচ্চা আসলেই বাচ্চা হয়’।
“কেনো এখন কেনো.??”(রাফসা)
“আব্বু নিবো ঐটা……”
“আচ্ছা আচ্ছা…..নাও রাফসা নিয়ে নাও……চাইছে যখন আমাদের বাবা নিতেই হয়…….আর কিছু লাগবে???দেখো কত খেলনা…..”
“এই আর কি???হ্যাঁ….চলো আর না……”
অরূপ সুযোগ একবার পেয়েছে।আর ছাড়ে নাকি।
চারদিকে তাঁকিয়ে আরও দুটো বড় গাড়ি,আর ট্রেন পচ্ছন্দ করলো।রাফসার কড়া বারণ সত্বেও সাদ নিয়ে নিলো সব।
গাড়িতে এবার নেঁচে নেঁচেই পেছনে বসলো একা।রাফসা বসতপ চাইলেও বসতে দেয় নি।খেলবে এখন সে পেছনে বসে তাই।
রাফসার আর কি করার সামনেই বসলো।
নৌশিন সুস্থ মোটামোটি।হাঁটা চলা কম করে।সাদাদ হেল্প করে সব কাজে।বেশ কয়েক দিন সাদাদ অফিস যায় না।নৌশিন সকালে কিছু খেতে পারে নি।তার উপর দু তিন ধরে মাথাটাও ভালোই প্যারা দেয়।
তাই সাদাদ আজও অফিসে যায় নি।
নৌশিনকে জোড় করে খাওনোর চেষ্ঠা করছে।কিন্তু ভালো লাগছে না নৌশিনের।
নৌশিন ভালোবাসে তাই ওর শাশুড়ি ছোট মাছ রেঁধেছে নিজ হাতে।কিন্তু নিতে পারছে না নৌশিন।গা গোলাচ্ছে শুধু।অনেক কষ্টে সাদাদ কিছু ভাত খাওয়াতে পারলো।
হাঁটুর উপর মাথা রেখে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে সাদাদ।নৌশিন পরশ আবেশে চোখ বুঝে আছে।
“সাদাদ,আমাদের ছেলে হলে বেশি খুশি হবে নাকি মেয়ে???”
“অবশ্যই মেয়ে…..”
“ইশশশশশ…..আমি তো অরূপ আর রাফিন(নৌশিনের ভাইয়ের ছেলে)এর মতো একটা ছেলে চাই…….”
“হ্যায় ছেলে তো আছেই দু টে……মেয়ে আসুক না আমাদের…..”
“আচ্ছা….সেটা পড়ে দেখা যাবে…….বাট সাদাদ ধরো আমার বেবী হওয়ার সময় কিছু একটা হয়ে গেলো তুমি কি করবে তখন??”
চমকে উঠে সাদাদ।কি সব আজে বাজে কথা।
“কি বললে????”
বুঝতে পারে নৌশিন সাদাদ চটে গেছে।চোখ খুলে সাদাদকে জড়িয়ে ধরে বলে,
“আরে কথার কথা….”
“দরকার নেই আমার বাচ্চার।প্রয়োজনে বাচ্চা ই নিবো না….”
“ইশশশশ….কত প্রেম…..”
সাদাদ নৌশিনকে হাঁটু থেকে তুলে বসিয়ে নিলো।গালের দু পাশে হাত রেখে বললো,
“হুম,প্রেম…..খুব প্রেম রে বউ……ভাবতে পারি না তোকে ছাড়া…..”
“আচ্ছা সরি….আর বলবো না….”
সাদাদ নৌশিনের একটু কাছে গিয়ে বলে,
“বলেছিস যখন তখন শাস্তি তো পেতেই হবে……”
“মানে????এই খবর দাড় কাছে আসবে না….সব সময় তাই না……একদম না……এজন্যই অফিসে যাও নি….তাই তো…..ইশশশশ….ছাড়ো বলছি….”
সাদাদ নৌশিনের খুব কাছে যাচ্ছে।খুব।নৌশিন পেছনের দিকে যাওয়াতে এক সময় খাটের সাথে লেগে যায়।সাদাদ মুঁচকি হাঁসে।নৌশিনকে জড়িয়ে ধরে বিছানায় ফেলে দেয়।গায়ের আঙুলের ভাজে আঙুল গুছে দেয়।চোখ বন্ধ করে আছে নৌশিন।জানে তো কি হতে চলেছে তাই।
সাদাদ নৌশিনের ওড়না টা সরিয়ে নিলো। হেঁসে নিয়ে ঠোঁট ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।
ছরফট করছে নৌশিন।
প্রেমঘোর পর্ব ৭৬+৭৭+৭৮+৭৯+৮০
হাত চাদরে ঘষর্ণ করছে।সাদাদ বুঝতে পেরে আরও শক্ত করে চেঁপে ধরলো দু হাত।
গলা,ঘাড়…কানের লতি সব জায়গায় ভালোবাসার শাস্তি দিচ্ছে সাদাদ।
আরও শাস্তি আরও গভীর…..
জানলার সব পর্দা পড়ে গেলো।লাইট নিভে যায়।চাদরে আবৃত হয়ে যায় ভর দুপুরে দুটি মানুষ।
মাতাল হয়ে ভালোবাসা দিচ্ছে সাদাদ।ভাসে যাচ্ছে দুজনে